সোমবার, ২০ জুন, ২০১১

মনের আয়না

মনের আয়নাতে কার মুখ ভাসে
মেঘের ভেলায় চাঁদের অস্পস্ট আলোর মতন করে
ভাপ ভাপ ধোঁয়া ওঠে
হ্রদয় পোড়া গন্ধ ছোটে
আয়নাতে ও মুখ দেখে।

মেঘে ঢাকা কালো অন্ধকার আকাশের পানে
চাতকের পিপাসায় তাকিয়ে রয় আঁখি দুটি
খুঁজে ফেরে কার মুখ, মেঘের ভেলার মাঝে
চশমার ঘসা কাঁচ ঝাপসা হয়ে আসে
মনের আয়নার মাঝে যেনো দেখে তোমাকে।

বর্ষার প্রথম কদম ফোটা বৃস্টির ভোরে
ঝিরিঝিরি বারি ঝরে চারিদিক ঘিরে
আঁখি মেলে খোঁজে মন শুধু তোমাকে
বাদল দিনের প্রথম কদম খানি
গুজে দিতে তোমার খোপাতে।

বৃস্টির রাতে শার্শি বেয়ে জলধারা নামে
বাস্প হয়ে আসা কাঁচের ভেতর দিয়ে তাকাই
দূর পানে ঝাপসা কাকে যেনো দেখতে পাই
সে কি তুমি না তোমার ছায়া
মন পড়ে রয় জানি শুধু কার পানে
সে কি তুমি? না মনের গহীন কোনো কায়া?

রবিবার, ১৯ জুন, ২০১১

হ্রদয়ে অনুভবে


কিছু কিছু অনুভব আছে
যা মানুষ চেস্টা করেও অর্জন করতে পারে না
কিছু কিছু অনুভুতি আছে
যার জন্য চেস্টা করতে হয় না।

কিছু কিছু মানুষ আছে
যারা ভালোবাসা বুঝে না
কিছু কিছু মানুষ আছে
যাদের ভালো না বেসে পারা যায় না।

কিছু কিছু বোধ আছে
যা শুধু হ্রদয়ে ধরে
কিছু বোধোদয় আছে
যাতে শুধু কস্ট বাড়ে।

কিছু কিছু দিন আসে
অন্যরকম খুশির দোলে
কিছু কিছু রাত আসে
শুধু অস্রু নিয়ে ঘরে।

কিছু কিছু মন আছে
যাদের দেখলে আনন্দ বাড়ে
কিছু কিছু হ্রদয় আছে
যাতে শুধু কান্না ঝরে।

কিছু কিছু চোখ আছে
যাতে অনন্দ খেলা করে
না বলা কিছু কান্না আছে
ভেসে ওঠে চোখের পরে।

কিছু কিছু ঠোঁট আছে
যেথায় হাসি ঝরে পরে
কিছু কিছু বেদনা আছে
কান্নায় ঠোঁট বাঁকা করে।

কিছু কিছু হ্রদয় আছে
যারা হ্রদয়ে বাস করে
কিছু কিছু মন আছে
দূর থেকেই মন কাড়ে।

কিছু কিছু মানুষ আছে
যার সাথে ভালোবাসা হয় না
কিছু কিছু মানুষ আছে
যাকে ভালো না বাসলেও হয় না।

অপেক্ষার প্রহর কাটে
খুঁজে ফেরে মন
যাকে না ভালোবেসে
আমি আমাতে রইনা।

বুধবার, ১ জুন, ২০১১

আয়না কন্যা

আদরে আদরে প্রায় বাঁদর হয়ে যাওয়া ছোট্ট মেয়ে রূপকথা।

বাবার অতি আদরের মেয়ে, ৫ ছেলের পর বাবার অনেক আশার, অনেক স্বপ্ন দেখার, অনেক দিন গোনার পালা শেষে কোল আলো করে পথিবীতে এসেছে ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান - বাবার কাছে এ যেন এক রূপকথার অধ্যায় তাই মেয়ের নাম রেখেছেন রূপকথা। মা তার এই মেয়েকে কি খেয়াল রাখবে? বাবা যেন একাই মা ও বাবার সব দ্বায়িত্ব এক হাতেই পালন করে যাচ্ছেন। মেয়েকে বিছানায় রাখেন না মশা খাবে বলে, মাটিতে রাখেন না পিঁপড়া কামড়াবে বলে। বাবা যতক্ষন বাসায় থাকেন মেয়ে যেন বাবার কোলে লেপ্টে থাকে। বাবার এই অতি আদরে মায়ের গা জ্বালা, বাবাকে টিপ্পনি কাটতে মা এর একটুকু ভুল হয় না। আদর দিয়ে মেয়েকে বাঁদর বানাবে। মাসের শেষে দিন যায়, দিন গড়িয়ে বছর। এর মধ্যেই মেয়ে বাঁদর থেকে হনুমান এ পরিণত হল। ভাইগুলোর এক মুহূর্ত স্বস্তি নাই, একমাত্র ছোট বোনের যন্ত্রনায় অস্থির সবাই। কোন খেলনা দিয়ে তাকে স্বস্থির রাখা যায় না, শুধু মাত্র আয়না পেলে একমনে খেলে যায় আর নিজে নিজে কথা কয়। যেন আয়নায় কোন রূপকুমারির দেখা পেয়েছে যে তাকে যাদু করেছ। সেই থেকে তার নাম হয়ে গেল আয়না কন্য।

দিন গড়ায়, মাস আসে, বছর যায়। আয়না কন্যার প্রতি বাবার টান কমে না একফোটা বরং দিন দিন যেন কি এক ভাবাবেগে মেয়েকে আরো বেশি করে কাছে টেনে নেন। সারাদিন শত কস্টের মাঝেও অনেক রাতে অফিস থেকে বাসায় ফিরে মেয়ের ঘরে বসে কিছু খুনসুটি না করে ঘুমাতে যান না। আর মেয়েও বাবার জন্য সারাদিন বসে থেকে তার সমস্ত আবেগ অনুভুতি ভালোবাসা কস্ট তার সাথে শেয়ার না করে ঘুমাতে যায় না। বাবা মেয়ের মধ্যে ব্যাখ্যার অতীত এক সম্পর্ক গড়ে ওঠে সময় বাড়ার সাথে সাথে।

আজ রূপকথা ৫ বছর এ পা দিয়েছে, সকাল থেকেই বাড়িতে যেন কি এক পার্বনের উৎসব উৎসব ভাব। সকাল সকাল বাবা এসে মেয়ের ঘুম ভাংগিয়েছেন পাশে শুয়ে। আয়না কন্যা নিজেকে আবিস্কার করল দেয়ালের এপাশ থেকে অপাশ ঘেরা বিশাল এক আয়নার প্রতিচ্ছবিতে। চোখ মেলেই বিছানায় শুয়ে থেকে দেয়ালে দেখতে পায় আয়না কন্যা শুয়ে আছে এক গাদা খেলনার মাঝে, অভিভুত হয়ে একটু তাকিয়ে থেকে জড়িয়ে ধরে তার সবচেয়ে প্রিয় পুতুলটাকে - পাশে শুয়ে খুনশুটি রত বাবাই তার সবচেয়ে প্রিয় পুতুল। সব খেলনা ঠেলে সরিয়ে ধরে বাবা নামক পুতুলটাকে তার ছোট্ট বুকে চেপে ধরে বলে আই লাভ ইউ বাবা। আমার এইসব খেলনা লাগবে না, তুমি আমার সবচেয়ে বড় উপহার। এভাবে সব সময় আমার পাশে থেক ভালোবেসে, আমার আর কিছুই চাই না।

সারাদিন ধরে বাসায় চলে উৎসবের আয়োজন, কত লোক যে আসছে, যাচ্ছে খানা খাচ্ছে তার কোন সীমা নাই। ভাইয়েরা দেখে আর হিংসায় জ্বলে, তাদের কারো জন্মদিনে এতবড় আয়োজন কখনো করা হয় নি। সন্ধ্যায় কেক কাটা হবে, মা, মেয়েকে সাজিয়েছে লাল টুকটুক শাড়ি পড়িয়ে একবারে ছোট্ট বধু বেশে। জন্মদিনে সবাই পড়ে নানা রঙ এর সুন্দর সুন্দর ড্রেস কিন্তু আয়না কন্যার সাজ কি আর অন্য ১০ জনের মত সাধারন হলে চলবে, তাই সে সেজেছে একবারে বধু বেশে। ভাইয়েরা টিপ্পনি কাটছে, মায়ের কাছে বায়না ধরছে - আদরের মেয়েকে বধু সাজিয়েছ যখন চলো ওকে বিয়ে দিয়ে দেই আজ। তাদের হয়তো ধারনা হয়েছে বিয়ে দিয়ে বিদায় দিতে পারলে বাবা মা এর আদরের ভাগ তাদের ভাগ্যে বাড়বে। বাবাকে বলতে ধমক খেল, জন্মদিনে বাবা ডিক্লেয়ার করলেন আমার মেয়ে প্রতি জন্মদিনে বধু বেশে সাজবে কিন্তু সত্যিকার মেয়ের বিয়ে দেব ঢাকা শহরের সমস্ত লোক দাওয়াত দিয়ে ধুম ধাম করে মেয়ে মাস্টার্স ফাইনাল পরিক্ষার পর।

মেঘ, বৃস্টি ও চাঁদ




চাঁদের আকাশেতে কোন বাতি জ্বলে
মেঘ এসে কেন ঢাকে আলো ছায়ে ছায়ে
মেঘের ফাঁকেতে চাঁদ আলো দিতে চায়
মেঘ তবু ঝরে পরে কার কান্নায়।