বৃহস্পতিবার, ৩১ মে, ২০১২

ভালোবাসার খেলা


কষ্টগুলো দানা বেঁধে আছে বুকে
মন যেন মরে গিয়েছে আমার সে দিন থেকে
যেদিন থেকে খেলা শুরু করেছিলি আমার অনুভুতিগুলো নিয়ে
আমার সকল অসহায় দুর্বলতাগুলোকে নিয়ে।

ভালবাসা হয়তো তোর জন্য কিছু সময় পার করা
অলস দুপুরগুলো কাজে লাগানো
কিংবা বিষণ্ণ বিকেলবেলায় কিছু মধুর সান্নিধ্য
ভালোলাগার মানুষের সাথে খেলা মিছে মিছি
কিন্তু আমার কাছে ভালোবাসা মানেই যে ছিলি তুই
দিন রাত্রিতে মনের কাছা কাছি।

তোর প্রতিটি নিঃশ্বাস চেনা হয়ে গিয়েছে আমার
প্রতিটি রক্তকণিকার ছুটোছুটি আমার অনেক দিনের চেনা
প্রতিক্ষণের ভাবনাগুলো যেন খোলা বইএর পাতা
তবে আজ বড্ড কষ্ট হয় যেন চিনতে
তোর এই অচিন খেলা আমাকে ঘিরে
প্রতিদিন প্রতিক্ষণ আঘাতে আর আঘাতে।

তুই আজকাল কেমন জানি অবুঝ হয়ে যাচ্ছিস
মোহের নেশায়
আঘাত করে যাচ্ছিস প্রতিনিয়ত খেলার ছলে
কি জানি হয়তো বা ভালোবাসার আশায়
কি জানি হয়তো বা বুঝে কিংবা না বুঝেই।

ভালোবাসা তোর কাছে কি?

শুধু কষ্ট দিয়ে যাওয়া ক্ষণে ক্ষণে
কথার আঘাতে জর্জরিত করা
সমস্ত দুর্বলতাকে পুঁজি করে।

কিংবা অভিমানের কান্না আপনমনে
অবুঝের মত কিছু চাইতে গিয়ে ধাক্কা খাওয়া
সময়ের বাস্তবতা বা বুঝে।

হয়তো ভালোবাসা তোর কাছে খেলা মাত্র
খেলারাম খেলে যার মত করে
শরির নিয়ে কিংবা মন নিয়ে।

আমার কাছে ভালোবাসা মানে শুধু যে তুই
আর তোর দেয়া কষ্টগুলো
মনের ভেতর সাজিয়ে রেখেছি থরে থরে।

তোকে নিয়ে আমার ভালোবাসা হয়ে আছে যেন
অসমাপ্ত একটা ছবি
রংতুলি হাতে নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে আছি ভেবে ভেবে;
ক্যানভাসের পিছনে যেন উঁকিমারে আকাশটা
মেঘে ছেয়ে আছে আজ ধুসর হয়ে
আমি রংতুলি হাতে ঠায় দাঁড়িয়ে আছি
ভালোবাসার রঙ আঁকব বলে আকাশের নীল রঙে রাঙ্গিয়ে।

তোকে নিয়ে আমার ভালোবাসা হয়ে আছে যেন
এক অসমাপ্ত কবিতা
দাঁতে পেন্সিল চেপে বসে আছি ভাবনার ঘরে
সাদা কাগজে আকিঝুকি লেখা কিছু ফুটে ওঠে
কেন রক্তের রঙ এ
তারি মাঝে কালো ছোপ ছোপ কিছু জেগে রয়
যেন জীবনের খেলায় হেরে যাওয়া
মানুষের একটা পোড়ানো হৃদয় ।

জীবনের কাছে হেরে গিয়েছিলেম
আমি তো অনেক অনেক দিন আগেই
ভালোবাসার ছলনায় কেন তবে দিয়েছিলি
নতুন করে বেচে থাকার প্রেরণা?
আমার দুর্বলতাগুলোকে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করবি বলে
নাকি আমাকে মন থেকে ভালোবাসার বিষটুকু তুলে নিবি বলে
কিংবা খেলার পর ছুড়ে ফেলে দিবি বলে।

আজ আমি জ্বলন্ত সিগারেটের অর্ধেক পোড়া ছাই হয়ে বসে আছি
ভালোবাসার মানে জানব বলে এক পোড়া অবয়ব নিয়ে
হয়তো তোর কাছ থেকে আসা কোন এক দমকা ঝড়ে
ঝরে পরার অপেক্ষায় ...
কিংবা ভালোবাসার পরিসমাপ্তিতে ক্লান্ত হৃদয়ে
শান্ত ঘুম এর আশায় ...


সোমবার, ১৪ মে, ২০১২

জীবন



ঝড়ের রাতে মনের ভেতর খামখেয়ালীর কালো আকাশ
হঠাৎ কেন জাগে মনে মনখারাপের পাগলা বাতাস
অভিমানে উল্টো ঠোঁটের একটু রেখা যদি দেখি
মনের ভেতর ঝড়ের নাচন এটাই বুঝি ছিল বাকি
কাজল কালো চোখের নিচে কালি ফেলা কাহার লাগি
অপেক্ষার ঐ প্রহর নিশি তোমার লাগি রাত্রি জাগি
মন ভুলানো ছোট্ট কথায় তোমার মুখে হাসি আনে
বলছি তোমায় অষ্টপ্রহর ভালোবাসি কানে কানে
হারিয়ে ফেলার ভাবনা যতই থাকুক তোমার মনে মনে
পাশেই তোমার থাকি আমি খুব নিশীথে সংগোপনে।



রবিবার, ১৩ মে, ২০১২

স্বপ্নের বাস্তব রূপ



অনেক দিন ধরে একটি স্বপ্ন গাঁথছিলেম মনে মনে
তোরে নিয়ে অনেক দূর কোথাও হারিয়ে যাব
একটি দিনের জন্য
থাকব নিজেদের মতন করে
হয়তো বনে চলে যাব
হয়ে যাব মোরা বন্য।

অনেকদিন ধরে কল্পনার জাল বুনে চলেছিলেম মনে মনে
একসাথে সারারাত জেগে বসে রব
জ্যোৎস্নায় ভাসিয়ে নিয়ে যাবে চারিধার
আমি তোরে একটু একটু করে
আবিস্কার করব
বন্য সে জ্যোৎস্নায়।

আজ আমরা দুজনে
বসে আছি মুখোমুখি
তবু কথা নেই কারো মুখে
তুই চুপ
আমি চুপ
হাত ধরে হাতে হাতে
চুপচাপ বসে থাকি
একটুকু ছোঁয়াছুঁয়ি
হাতে হাতে ঠোঁটে ঠোঁটে
কত কথা জমা আছে
দুজনার মনেতে
তবু যেন কথা নেই
কারোরই মুখেতে
তুই চুপ
আমি চুপ
বসে আছি ধরে হাত
মুঠো করে হাতেতে।



চিতার ধোঁয়া


চিতায় শুয়ে আছি আমি আজ
চন্দন কাঠ জোটেনি আমার
থরে থরে থাক দেয়া বাঁশের দেয়ালে
সাজানো হয়েছে চিতা আমার
আগুন দেবে কে?

চিতায় শুয়ে আছি আমি আজ
ঘি দিয়ে কে জ্বালাবে আমায়
কেরোসিন তেল পাওয়া গেছে কিছু
ঢালা হয়েছে চিতার ওপরে অল্প কিছু
আগুন দেবে কে?

সবাই গোল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে চিতা ঘিরে
আগুন দেয়ার লোক পাওয়া যাচ্ছে না
এত মানুষের ভীরে, তুমি এখনো আসনি বলে
শব হওয়ার আগে আমি বলে গিয়েছিলেম
সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করে যে আমায়
আগুন দেবে সে আমার চিতায়।

তোমার দেয়া আগুন জ্বলবে দাউ দাউ করে
পুড়ে নিঃশেষ হব আমি কালো ধোঁয়ায় উড়ে
পাপ কাঁটা যাবে তাতে হয়তো কিছু আমার
তোমার ঘৃণার আগুনে পুরে কিছু পুণ্য হবে সঞ্চয়
ধোঁয়াগুলো পাক খেতে খেতে উড়ে যাবে আকাশের দেশে
চাঁদের দেশ ছাড়িয়ে মঙ্গলের দুটি জ্যোৎস্নায়
ভাগ হবে তাঁরা দুটি ভাগে সেখানে।

উপরওয়ালা দেখবেন দুটি ধোঁয়ার ভাগ
একটিকে দেবেন পাঠিয়ে নরকের আগুনের ধোঁয়ায়
যদি কিছু ভালো থেকে থাকে আমার
সে ধোঁয়ার ভাগটুকু আবার পাঠিয়ে দেবেন ধরাচরে
মেঘের পরে ভর করে
আবার হয়ত ফিরে আসব তোমাদের কাছে
টাপুর টুপুর বৃষ্টির বেশে
তোমার গাঁয়ে পড়া বৃষ্টির ফোঁটা যদি চিনতে পার সেদিন
একট মুঠো রেখে দিও বোতলে ভরে
যদি আমার কথা মনে পড়ে।

শনিবার, ১২ মে, ২০১২

বৃথা অপেক্ষা


বর্ণহীন অলস দিনগুলো কেটে গেছে তুই আসবি এই প্রতিক্ষায়
কত নিদ্রাহীন রাতগুলো জেগে বসে ছিলেম তোরই অপেক্ষায়
পথ চলতে চলতে কোন কোন খামখেয়ালীর বিকেল বেলায়
চমকে উঠে থমকে দাঁড়াই মাঝ রাস্তায়
ধুলো উড়িয়ে সামনে দিয়ে কালো এক জীপ চলে যায়
কালো টিনটেড গ্লাসে ঢাকা আয়নায়
একটি চেনা মুখ কি উঁকি দিয়ে দেখলো আমায়?

হঠাৎ করেই কত কথা আসে ভাবনায়
সবই কল্পনা আর দিবাস্বপ্ন আমার হায়
আমি হেটে চলি আনমনে, বিকেল ফুরিয়ে সন্ধ্যা গড়ায়
মিছে তোর কথা ভেবে ভেবে সময় কেটে যায়
তোর পথ চেয়ে চেয়ে হয় না কোন কাজ এ ধরায়
জানি আর কখনো ফিরে আসবি না, অপেক্ষা যাবে বৃথায়
তুই তবু তোর ভাবনা প্রতিমুহূর্তে কেন হৃদয়ে রক্ত ঝরায়?


শুক্রবার, ১১ মে, ২০১২

সেদিন আর আজ


সেদিন ছিল চোখে কিছু বর্ণহীন কান্নার জল
তারি সাথে বুক চেরা বেদনার ঢল
ছিল অনেক অনেক ভালোবাসার মায়া
মাথার পড়ে ছিল তোর জ্যোৎস্নার ছায়া
কিছুই সেদিন পারেনি তোরে রাখতে আটকিয়ে
অভিমানে গিয়েছিলি চলে, আমায় ভাসিয়ে।

তারপর অনেক দিন গেছে চলে
আমি পড়ে ছিলেম একাকীত্বের গহীন জলে
সময় কেটে গেছে তাঁরা গোনার ছলে, রাতের কালে
থমকে থাকা দিনগুলি কেটে গেছে একটু একটু করে
কষ্টের বোঝাগুলি ভারি হতে হতে পাহাড় গিয়েছে ছাড়িয়ে
তবু আমি বেঁচে আছি আজো, তোকে হারিয়ে।

আজ হঠাৎ করেই চমকে যদি উঠিস মুঠোফোনের শব্দে
কিংবা বিরহের কোন সুর গেয়ে ওঠে তোর মনে
কারণে আর অকারণে
ঠিক তখনি বুঝে নিস, আমি ডাকছি তোরে
মনে মনে অনেক দূর হতে, তোকেই ভেবে ভেবে।

আজ হঠাৎ করেই যখন তোর চোখ ভিজে ওঠবে লবন জলে
ঝাপসা হয়ে আসবে চারিধার কারো কথা মনে পরে
কারণে আর অকারণে
ঠিক তখনি ভেবে নিস, আমি দেখছি তোরে
চোখ বুঁজে অনেক দূর হতে, তোকেই ভেবে ভেবে।



খেলোয়াড়


খেলোয়াড় তুই যে অনেক বড়
মন নিয়ে খেলে যা
একজনের পর একজন এসে
ফাঁদে তোর দিবে পা।

একের পর দুই তিন চার
খেলে যাচ্ছিস টানা
খেলিস যে তুই মন নিয়ে আর
কত যাবে হাতে গোনা।

ভালোবাসা নয়কো কাঁচের দেয়াল
আঘাত পেলে হয় চুরমার
আঘাত যদি পাস কখনো
বুঝবি সেদিন করে মুখভার।

রূপের দেমাগ যতদিন রবে
একে একে এসে পুড়িবে সবে
চিন্তা করিস একটু বসে
কি করেছিস দিনের শেষে।

অহংকারের আজ আকাশে উড়িস
বুঝতে যদি তুই কখনো পারিস
আঘাত পাওয়ার যন্ত্রণা কভু
অনুশোচনার আগুনে একটু পুড়িস।

পাকা খেলোয়াড় হোস না যতই
প্রকৃতি একদিন নেবেই শোধ
আঘাত পেয়ে ভাঙবি যেদিন
সেদিন হবে তোর ভালোবাসার বোধ।


বুধবার, ৯ মে, ২০১২

ভালোবাসার ঋণ


চারিদিকে আজ কোথাও আমায় খুঁজে পাচ্ছ না তুমি
কারণ তোমার জীবন থেকে হারিয়ে গিয়েছি আমি
জ্বলে জ্বলে পুড়ে পুড়ে নিজেকে সরিয়েছি অনেক ভাবনার পরে
তোমার আমার সম্পর্ক কভু সফল হবে না বলে
বোঝ নি আমায়, বুঝতে চাওনি তুমি বোঝার মতন করে
মোহের নেশায় অন্ধ হয়ে চোখ যে বুঁজে ছিলে
ভালোবাসার ঋণে আমাকেও যে ভাসিয়ে দিয়েছিলে
ভুল সময়ে ভুল মানুষকে ভালোবাসার ঘরে টেনে
ভুল করেছিলে সেদিন তুমি একথা নাওনি মেনে।

ঝটকা লেগেছিল হঠাৎ করেই আঘাত যখন এলো
পায়ের নীচ থেকে তোমার সেদিন মাটিটুকু সরে গেল
নিজেকে আমি সরিয়ে নিয়েছিলেম তখন আলতো করে
তোমার সমস্ত অমঙ্গল আশঙ্কা মুক্তো করে দিয়ে
বুঝতে দেই নি তোমাকে সেদিন মনের যত কথা
মনের ভেতর লুকিয়ে রেখেছিনু আমার যত ব্যথা
শুধু তোমার ভবিষ্যতের কথা ভেবে
সরে গিয়েছিলেম দূরে
তোমা হতে বহুদূরে
তোমার মনে ঘৃণার বীজটুকু বুনে দিয়ে।

আমার কথা আর মনে রবে না, আজ থেকে বহুদিন পরে
স্বামী সংসার নিয়ে মেতে রবে তুমি, তোমার সুখের ঘরে
ফুলের মত একটি শিশু খেলবে তোমার কোলে
কাঁদলে তাকে ঘুম পারাবে রাবণের গল্প বলে
হয়তো তোমার ভাসবে মনে রাবণ ছিলেম আমি
ভুলেও তখন দুফোঁটা জল ফেল নাকো যেন তুমি
যতটা ঘৃণা করছ এখন করে যেও চিরদিন
ঘৃণা পেতে পেতে একদিন আমি শুধিব তোমার ঋণ।


মঙ্গলবার, ৮ মে, ২০১২

ভুলে যাওয়ার চেষ্টা



আমি জানি তো
আজ আমি নিশ্চিন্ত ভাবে জানি
ভুলে গেছ তুমি আমায় চিরদিনের মতন
হৃদয় থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে;
হয়তো কোন এক দুর্বল মুহূর্তে উঁকি দিয়ে যায়
আমাদের স্বল্প সময়ের কাটানো কিছু সুন্দর জীবন যাপন
পর মুহূর্তেই তীব্র ঘৃণা এসে খুলে নিয়ে যায় সব
সুন্দর মুহূর্তের স্মৃতিগুলো আর ভালোলাগার বসন।

মনের সাথে অনেক যুদ্ধের পর
আজ আমি দাঁড়িয়ে আছি এখনো
কোন ধরনের আশা ছেড়ে দিয়ে
ছিল যা মনে সেদিনো তখনো।

হয়তো আমি থাকব দাঁড়িয়ে
নিজ পায়ে দিয়ে ভর
ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলে সেদিন
করেছিলে যেদিন থেকে পর।

বিদায় বেলায় বলেছিলেম যাহা
ভুলে যাওয়ার কথা দিয়ে তোমায়
চেষ্টা করেছি কথা রাখতে
মনে না করতে তোমায়।

একটুকু দয়া কর আমার পথে
এসোনা কখনো আর
ভালোবাসা যত দিয়েছিলে তুমি
সেটুকু ভোলা যায় কি না তোমার।

অনু কবিতা - নিজের সাথে কথপকথন -১


বৈশাখী দুপুরে আগুনের হলকা বয়ে চলে
আগুন ধরিয়ে যায় কৃষ্ণচুড়ার ডালে ডালে
মনের মাঝে আগুন নেচে চলে
পুড়িয়ে কষ্টগুলো ধামাচাপা দেবে বলে
লাল আঁচে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে চারিধার
ধাউ ধাউ করে পুড়ছে মনের ভার
মধ্যদুপুরে আজ আগুন দেখে না সে
আগুন জ্বালিয়ে, যে চলে গেছে।


শনিবার, ৫ মে, ২০১২

দূরে সরে যাওয়া


অনেক দূরে গিয়েছি আমি তোর থেকে আজ সরে
তোর কথা মনে করে আমার ভুবনে একলা রয়েছি পরে
যোজন যোজন ভালোবাসার ব্যবধান নিয়ে, রয়েছি অনেক দূরে
হাত বাড়িয়েও পাবি না আমায় আগের মতন করে।

হৃদয়ের কথা বলতে পারি না সে আমার বশে নয়
তোরই ভালোবাসায় পুড়ে পুড়ে সে যে অনেক হয়েছে ক্ষয়
এভাবেই হয়তো ভালো থাকবি তুই একদিন ভুলে গিয়ে মোরে
কিছু দেবার নেই তোকে যে আমার তাই তো গিয়েছি সরে।


পেয়েছি অনেক তোর কাছ থেকে যত না ছিল আশা
হৃদয়ে রাখব প্রাপ্তিটুকুই, আর দিয়েছিলি যত ভালোবাসা।

বৃহস্পতিবার, ৩ মে, ২০১২

অন্যরকম মাতাল সময়


আমরা আজ বাস করছি এক অন্য সময়ে
আমরা আজ বাস করছি এক মাতাল সময়ে
শৃঙ্খলিত এক সময়ের ঘেরে বন্দী হয়ে আছে আমাদের জীবন
কাম, ক্রোধ, লোভ, লালসার বঞ্চনায় ভরা চারিদিক
আজ ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো ভাইয়ের হাত
বোনের গলায় পেচানো ওড়নার ফাঁস
আজ বাবা মায়ের স্থান হয় ওল্ডহ্যম নামক বাড়িতে
আজ মায়ের মুখ ছেলে দেখে না কোন এক নারির কারনে
নাড়ির টান যেন হয়েছে ছিন্ন
কিছু অসহায় ভালোবাসা নামক কালো ভাইরাস ব্যধিতে।

আজ বোনের সংসারে ভাত নেই
তার ছেলেমেয়ের পড়ার কাপড় নেই
তবু একবার খবর নেয়ার সময় হয় না বোনের টানে
ওদিকে ভাই, স্ত্রীর দুঃসম্পর্কের আত্মীয় নিয়ে সংসারের ঘানি টানে
নির্লিপ্তে, খুশিমনে।

অফিস পাড়ায় আজ কিছু মহিলারা যোগ দিয়ে চাকরিতে
অভাবের সংসারের কিছু বোঝা হালকা করছে
এদিকে লোলুপ কলিগেরা চেয়ে থাকে আর
বসের জিব বেরিয়ে থাকে, লালসার লালা ঝরছে
কামের তাড়নায় ভাদ্রের কুকুরের মত পাগল হয়ে আছে
ঘড়ের বউতো তাদের ডাল বড়াবড় আছেই
একটু বাইরের খানা যদি জোটে
মিছে ভালোবাসা নামক ভাইরাসের ছলনার চোটে।

স্বামী পড়ে থাকে আজ বড় বড় ডিলিংসের সন্ধানে
ক্লাবে বা মদের আড্ডায় কখনো দেশে কিংবা বিদেশে
ঘড়ে পালা বৌয়ের দিকে নজর দেয়ার সময় কোথায় তার
বৌ তো আছেই ঘড়ে পড়ে আসবাব পত্রের মত করে যার যার
একদিন যায়, দুদিন যায়
যায় মাস বছর গড়ায়
স্বামীহীন সংসারে তেতো বেড়ে যায়, মানুষ তো সে
আছে কাম বাসনা তারো যে
যার যার মত রাস্তা খুঁজে নেয় সে।

এর মাঝ হতেই কিছু মহিলা চাকরিতে চলে আসে
কিংবা ফ্যাশনের নামে
পার্লারের নামে দোকান খুলে বসে
প্রয়োজন নেই তাদের টাকা পয়সার
স্বামীর অবর্তমানে শুধু কিছু সময় পারাপার;
এর মাঝেই মনে মনে খোঁজে বান্ধব তার
হয়তো কিছু সময় পার করার
আসলে বুভুক্ষ হৃদয় হাহাকার
আদিম সে কাম বাসনার।

নতুন বন্ধু হয়, নতুন করে পরিচয়
হাত ধরে এগিয়ে চলে ভালোবাসার অভিনয়
হয়তো শারীরিক কিছু কামের তোড়ে
একদিন দুইদিন যায়, মাস কাটে হয়তো কাটে বছর
লুকিয়ে প্রেম করার কালে
কিংবা খেলতে খেলতেই ধরা পড়ে যায়
ভালোবসার জ্বালে।
একসময় ধরা পড়ে যায়, সমাজের কাছে
নিজের কাছে, সংসারের কাছে

অতঃপর…

সেই অতি পুরাতন আদি কথন, নিত্য ঝগড়া গালাগালি
একসময় ধৈর্যের বাধ ভাঙে
গড়ায় ডিভোর্স নামক ছিন্নতায় এক যুগের সংসার
কিংবা হয়তো না পেরে গলায় ফাঁস একজনের
আরেকজনের ঠাই হয় জেলের গড়াদের ভেতর
যার কোন দরকার ছিল না যদি পারতেম আমরা
একটু সহানুভুতিশীল হতে, দুজনে দুজনের দিকে
একটু সময়, একটু নজর সংসারের দিকে।
কিন্তু হায় আজকের দিনে টাকাই যে সব
টাকায় সব বিকোয়
সম্পর্ক, ভালোবসা, মূল্যবোধ
আজ বড় অন্যরকম সময়
আজ বড়ই মাতাল সময়।

একটুখানি সহানুভুতিশীল কি আমরা হতে পারি না
একটুখানি সময় দেয়া
সংসারের দিকে, ভাইবোনের দিকে, বাবা মার দিকে
ছেলেমেয়েগুলোকে কি আরেকটু বেশি সময় দেয়া যায় না
যাতে করে তারা ড্রাগস নামক ব্যাধির সংস্পর্শে না আসে
বাবা মার ছাড়াছাড়ির সংসারে
সবচেয়ে ভুক্তভোগী কিন্তু এই সন্তানগুলো
যাদের অবশেষে থাকে না কোন চাল চুলো
ধীরে ধীরে ঝুঁকে পরে নেশার গলিপথে
বাসার সমস্ত দুঃখকে ভুলে যেতে
যারা হতে পারে আমাদের সোনালী ভবিষ্যত
আজ তারাই পরিণত হয় এডিক্ট নামের কলংক হিসাবে।
আজ বড় অস্থির সময়
আজ বড় অন্যরকম সময়
আজ কেমন জানি মাতাল সময়
চারিদিকে চারিদিকে।

ছোট থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত বাবা মা বুকে আগলিয়ে রাখে
সন্তানদের বুকে করে
তাদের ভবিষ্যত চিন্তা করে
নিজের জন্য সারাজীবন সব সুখ আহ্লাদ বিসর্জন দিয়ে
ছেলে বড় হবে, বড় চাকরি করবে, বড় ব্যবসায়ি হবে
ডাক্তার হবে, ইঞ্জিনিয়ার হবে – বাবা মার মুখ উজ্জ্বল করবে
একসময় ছেলে বড় হয়, কিছু কিছু বড় হয়ে মানুষ হয়
দেয় বাবা মার ত্যাগের প্রতিদান।
আবার কিছু সন্তান বড় হয়, অনেক বড় হয়
কোন এক সময় অনেক আশায় বাবা মা ঘড়ে আনে বৌ
তার পর থেকে শুরু হয় ঘরের ভেতর কুকুরের ঘেউ ঘেউ
দুদিন যায়, দুমাস যায় কখনো বছর গড়ায়
লেলে পেলে মানুষ করা ছেলে তখন বৌ এর গোলাম
পান থেকে চুন খসলো তো ঝাড়ুর বাড়ি খেলাম
বাবা মা তখন ছোট বাসায় অবাঞ্ছিত হয়ে যায়
বৌ এর ছোট বোন কিংবা ভাই থাকবে বলে
ঘর কম পড়ে যায়
হায় শিক্ষিত সন্তান!

নিত্য নতুন ঠোকাঠুকি লাগে
তার থেকে কুরুক্ষেত্র
একসময় সময় আসে বেছে নেয়ার বৌ অথবা বাবা মা…
অনেক নিমের তেতো গিলে স্থান হয় বাবা মার
শেষ পর্যন্ত সেই ওল্ডহ্যামের কোনে।

একটু কি চিন্তা করে দেখেছি আমরা নিজেদের ভুলগুলি নিয়ে?
পেছন ফিরে তাকাবার আজকে কি আর কোন সময় আছে?
না হয় আমরা বাস করছি আজ এক অন্য সময়ে
না হয় আমাদের বসবাস এক মাতাল সময়ে।

তবুও আমরা মানুষ
আশায় পথ চেয়ে দেখি কোন এক মাতাল হাওয়া
কোথাও থেকে এসে উড়িয়ে নিয়ে যাবে
আমাদের অন্যকোন সময়ে
বদলে দিয়ে যাবে আমাদের মাতাল সময়গুলোকে।
নিরাশার চোখ বুজে না থেকে
না হয় আজ দেখার চেষ্টা করি আশার সূর্যকে
লিলুয়া বাতাস আসবেই একদিন ভাসিয়ে নিয়ে যাবে
আজকের অন্যরকম মাতাল সময়কে
অন্য এক শুভ দিনের দিকে।



বুধবার, ২ মে, ২০১২

মেঘের ভাবনা

বিকেল হতে না হতেই আকাশে মেঘ গুড় গুড়
চারিদিক অন্ধকার সেজেছিল আজ মেঘবিদুর
ইচ্ছে জেগেছিল ঝুম বৃষ্টিতে ভেজার
অনেক দিন কাকভেজা হওয়া হয় নি আমার
অফিস থেকে বের হয়ে রাস্তায়
হাঁটা ধরলাম ঝুম বরষায়।

কি যে ভালো লাগল চারিদিক দেখে চোখমেলি
যুবক যুবতি কতগুলি করছে হাতধরে জলকেলি
মাঝে মাঝে একটি দুটি গাড়ি রাস্তায় ছোটে
ভিজিয়ে দিচ্ছে আরো কাদামাখা জল ছিটে
আমি পথ হাঁটি একা রাস্তায়
ময়ূরের ঝাঁকে যেন কাক শোভা পায়
আমায় দেখে তারা মুখটিপে হাসে
ক্ষণিক না যেতে বারি ধরে আসে
মেঘের করুণাধারা শুধু মানবের তরে
আমি রাস্তায় নামতেই তাই মুখ ভার করে।

হয়তো তোমার মত মেঘেরাও ভাবে
মানুষ আমি নই, হয়তো জন্তু স্বভাবে
করুনার বারিধারা থামিয়ে সে দিল
আজ মেঘগুলোও আমা হতে মুখ ফিরিয়ে নিল
ঠিক তুমি নিয়েছিলে যেভাবে।

মঙ্গলবার, ১ মে, ২০১২

মেঘলা আকাশ



আজ সারাটা দিন ধরে আকাশের মুখটা ভারী হয়ে আছে
একটু পর পর গুমরে গুমরে উঠছে
তবুও অস্রু ঝরে পড়ছে না তার চোখ থেকে তার
মন খারাপের হাওয়া এসে লাগছে আমারও মনে।

তার মুখ ভারের কারণ খুঁজতে গিয়ে পাই
তোমার মনটা ভারী হয়ে আছে গভীর বেদনায় তাই
আকাশের মতই গুমরে উঠছে তোমার মন একটু পরে পরে
কান্নাগুল দলা বেধে আছে তোমার বুকেরো তরে।

দেখনা একটু চেষ্টা করে দু ফোঁটা মুক্তো ঝড়াতে পার কি না?
হয়তো আকাশটা কান্না ঝরিয়ে ধুয়ে দেবে তোমার যাতনা।