বুধবার, ২৯ মে, ২০১৩

সন্ধান

সন্ধান
-যাযাবর জীবন

পাখি যতই ওপরে ডানা মেলুক
নজর তার ধরিত্রীতে;
সৌন্দর্যের সকল উপাদান
সেখানেই যে মজুদ আছে
খুঁজে নিতে চায় ডানা মেলা উড়াল-পঙ্খী
রূপ রস গন্ধে ভরা পৃথিবী
কিংবা খুব আপন নিজের এক সাথী।

মানুষ যতই ওপরে উঠুক
সীমাহীন খ্যাতি আর সম্পদের পাহাড়ে চড়ে
নজর থাকে তার চারিদিকে
খুঁজে নিতে আপন সাথীরে
আপন করে পেতে নিজের তরে
রূপ রস গন্ধে ভরা এই ধরিত্রীর পরে
এখানে যে মানুষ বাস করে;

কেও খুঁজে পায় তার সাথীরে
কেও পায় না
কেও উপভোগ করে নেয়
পৃথিবীর রূপ রস গন্ধ
কেও সব হারায়
সৌন্দর্যের পিপাসায়;

তাতে ধরিত্রীর কি আসে যায়?
সে তার সৌন্দর্যের ডালি নিয়ে
বসে থাকে নির্লিপ্ত অপেক্ষায়।



সোমবার, ২৭ মে, ২০১৩

ভবের কথা

ভবের কথা
- যাযাবর জীবন

সুখের কথা বোঝে সবে
সুখের ঘরে বাস করে
দুঃখের কথা কে বুঝিবে
নিত্য সাথী যার না হবে;
মানুষ বোঝে টাকার ভাষা
নিত্য দিনের স্বার্থ খেলা
টাকার পিছে দৌড়ে মরা
ছন্নছাড়া পাগল মেলা;
কে বুঝিবে মনের ভাষা
লোভের মনে পাপের বাসা
স্বার্থে আঘাত মুষড়ে পড়া
পাগল পাগল ছন্নছাড়া;
জীবন যাপন পাপে ভরা
মাটির তলায় যাবো মোরা
আড়াল তুলে মনের ঘরে
ভুলে যাই কেন এই কথারে;
বোধোদয়ের মনের ঘরে
বলুক পাগল সবাই মোরে
কি এসে যায় কি এসে যায়
আমার তাতে পাগল হলে;
বললি তোরা পাগল আমায়
যার ভাবে আজ মুড়েছি মাথা
সে জানে আর আমি জানি
আর কে জানে ভবের কথা।

তোর খ্যাতির বিড়ম্বনায় আমার থাকা আর না থাকা

তোর খ্যাতির বিড়ম্বনায় আমার থাকা আর না থাকা
- যাযাবর জীবন

কেমন আছ?
কেমন আছেন?
কেমন আছিস?

কত জনের কত প্রশ্নবাণে বিদ্ধ আমি
মানুষের প্রশ্নের জবাব দিতে এখন আর ভালো লাগে না
কখনো তুই নিজে এসে দেখে যাস -
কেমন আছি আমি
তোকে ছাড়া, যদি সময় পাস
ব্যস্ততার ভীরে যদি কখনো আমায় মনে পড়ে।

এখন তো অনেক অনেক উপরের তলার মানুষ হয়ে উঠেছিস তুই
টাকা পয়সায়, খ্যাতিতে
ওহ তোকে তো আজকাল অনেক বড় বড় অনুষ্ঠানে দেখা যায়
টিভি স্ক্রিনে
কি ঝলমল করছিলি তুই?
আমার একটুও বুকে বাজে নি সেদিন
কোন ঈর্ষায় কাতর করতে পারে নি আমায়
শুধু চোখের দেখা দেখে গিয়েছি
আর মনে মনে হেসেছি;
যাক এতদিনে তোর স্বপ্ন সফল হলো
খ্যাতিমানের ছাতার তলায় খ্যাতির বিড়ম্বনা কেমন লাগছে
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।
তবে একটু সামলে চলিস
খ্যাতির বিড়ম্বনা সবার সয় না
হয় মাটিতে মিশে যায় কিংবা আকাশে উড়তে থাকে
ডানামেলা পাখির মতন করে।
এত বড় সেলিব্রেটির মাটির সাথে মিশে থাকা মানুষের
খবর নেয়ার সময় কোথায়?
আমি বুঝি।

তাই কারো প্রশ্নের জবাব দেই না
যদি তোর কথা চলে আসে জবাবে?
তোকে তো ছোটো করতে পারব না কোনভাবেই
তাই, আমি কাওকে জবাব দেব না
শুধু যদি তুই জানতে চাস তাহলে চলে আসিস
সেই আগের জায়গায়
আমি সেখানেই আছি তোর অপেক্ষায়
ঠিক তেমনই;

মানুষ বুঝবে না
তবে তুই বুঝবি ভালো করে
একবার আমার সামনে এসে দাঁড়ালেই বুঝে যাবি
আমি কেমন আছি।
তোর থেকে ভালো করে আমাকে কেও চেনে না
তাই কাওকেই এ প্রশ্নের কোনো জবাব দেই না
আসলে কেমন যে আছি তা কোনো ভাষাতেই বর্ণনা করা যায় না।

বুধবার, ২২ মে, ২০১৩

শূন্য

শূন্য
- যাযাবর জীবন

অংকে আমি বড়ই কাঁচা
তবু কষে যেতে হয় নানা অংক
খাতা পত্র দিয়েছি ছুটি সেই কবেই
তবু পিছু ছাড়ে না কিছুতেই
জীবনের ঐ অংক গুলো;
হিসেব নিকেশ সব মনের ভেতর
নিজে নিজে যোগফল বিয়োগফল
আর গুন ভাগ করে যাচ্ছে
ফলাফল বরাবরই পাচ্ছে "শূন্য"।

জীবনের অংকে নেই কোন ফর্মুলা
পাই এর মান বলে কিছু নেই
পাটিগণিত, বীজগণিত আর ক্যালকুলাস
কোথাও কোনো সূত্রের মিল নেই
এ যেন এক আজব ফর্মুলা
যার যার নিজের তৈরি করা
কেও লাভবান হয়
কারো ভরে ওঠে লসের খাতা;
দুর্ভাগ্য আমার, জীবনের কোনো সূত্রই
তৈরি করা হলো না
তবু বাধ্য করে মন খুব মাঝে মাঝে
ফিরে তাকাতে জীবনের দিকে
মনের অগোচরে যেন অংক মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে
তখনই ফলাফল দেখে
বারবার মিলিয়ে দেখে জীবনের খাতাটা
উল্টে পাল্টে নানা ভাবে
কোথাও যদি ফলাফল আসে ভিন্ন
হায়! সকল অংকের অবসান কষে
নির্লিপ্ত চেয়ে দেখে
জীবনটাই বড় একটা "শূন্য"।

শুক্রবার, ১০ মে, ২০১৩

ঘুণপোকা

ঘুণপোকা
- যাযাবর জীবন

ছোট্ট একটি কাঠ বাঁশের কুঁড়ে ঘর আমার
ভালোই মানিয়ে চলছিলাম এতদিন
সাপ খোপ আর পোকা মাকড়ের সাথে
এখন বাসা বেঁধেছে ঘুণপোকা
কুর কুর কুর কুর করে খেয়ে যাচ্ছে
আমার সাধের কুঁড়ে ঘরখানি
ঝুরঝুরে ঝরে পড়ছে ঘুণ-বালি
হতাশ নয়নে তাকিয়ে থাকি
ঘুণপোকার কুড়কুড়ে শব্দ শুনি
কানের ভেতর।

ছোট্ট একটি আশার স্বপ্ন গেঁথেছিলাম তোকে নিয়ে
ভালোই চলছিল দিনগুলি আমাদের
রাগে দুঃখে অভিমানে আর ভালোবাসায়
সবকিছু মিলিয়ে
কোথা থেকে জানি ঘুণপোকা এসে বাসা বেঁধেছে
আমাদের স্বপ্ন ঘরে
কুরকুর করে স্বপ্নগুলোকে খেয়ে ফেলে
ঝুরঝুরে করে রেখে গিয়েছে আমায়
মস্তিষ্কের অনেক গভীরে ঘুণপোকার শব্দ শুনি
হাড় মাংস মজ্জা খেয়ে এখন মস্তিষ্ক খাচ্ছে
কুরকুরিয়ে, হৃদয়ে ঘুণপোকা বাসা বাঁধলে
আমার আর অস্তিত্ব কোথায়
সেখান থেকে তোর নাম যদি মুছে যায়
খেয়ে ঘুণপোকায়?
আমি হারিয়ে যাচ্ছি ক্রমশই অতল অন্ধকারে।

বুধবার, ৮ মে, ২০১৩

অনুভব

অনুভব
- যাযাবর জীবন

অন্ধকার আকাশ মেঘে ঢাকা
জল ঝরছে
কিংবা কান্না
আকাশেরও মাঝে মাঝে কাঁদার সাধ জাগে
আনন্দে না বেদনায় আমার জানা নেই
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।

বিষণ্ণ প্রকৃতি বিষণ্ণ হিমেল হাওয়া
সবুজ সতেজ গাছপালা
বর্ষণের আনন্দ ছড়াচ্ছে
কিছু মানুষের হেঁটে চলা
মাথায় করে ঘন বৃষ্টির ধারা
হয়তো মনে নীল বেদনা
কিংবা বৃষ্টি বিলাস
আমার জানা নেই
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।

জানালার শিক ধরে দাঁড়িয়ে আমি
ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির ধারা
ঝড়ে পড়ছে আমার গায়
হাতে জ্বলন্ত সিগারেট
ধোঁয়া উড়ছে
ভাবনার ঘোরে হারিয়ে
পড়তে পড়তেও ঝুলে আছে
অর্ধেক পোড়া ছাই
ঠিক আমারই মত
তুই এখন কি করছিস?
জানি না, বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।

ভালোবাসার মৃত্যুকে অনুভব করেছে কে?
হৃদয়ের গভীর অনুভূতি থেকে
আমার মতন করে
জানি না
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।

বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০১৩

ভালোবাসাবাসির সময়সীমা

ভালোবাসাবাসির সময়সীমা
- যাযাবর জীবন


কতগুলো যৌবন পাড়ি দিয়ে এসেছি
হিসেব রাখি নি,
কতটা বয়স হলো
কখনো ভাবি নি,
তবু আমরা এখনো মনেতে
যুবক আর যুবতী;
চলতে থাক না এভাবেই
ভালোবাসাবাসির দিনগুলো
কিছু মান অভিমান মধ্যে না হয়
যতি চিহ্ন হয়ে রইলোই
তবুও তো এক হয়ে রয়েছি
দুজনে দুজনার হয়ে
দিনাতিপাত করে যাচ্ছি
সুখে দুঃখে মিলে মিশে।

একশত যৌবন পাড়ি দিয়েও
আমি ঠিক এমনই থাকতে চাই
মনেতে যুবক হয়ে
তোর কাছে
একশত বছর পরেও
আমি ঠিক এভাবেই চাই তোকে
পূর্ণ যুবতী রূপে
যদি ততদিন ভাগ্যতে মরণ না আসে।

মনের টানেতে এখনো আমরা বাঁধা পড়ে আছি
সেই কত হিসেব না রাখা যৌবন পাড় হয়ে
প্রেমেতে এখনো যুবক আর যুবতী
ভালোবাসার আবার বয়স সীমা আছে নাকি?