বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

তিনশত পঁয়ষট্টি দানব

 পাহাড় পাথর, পাহাড় মাটি

বন সবুজ, বন হরিৎ 

সাগর নীল, সাগর পানি 

মানুষ রক্ত হাড় চামড়া; 


পাহাড় পাথর কোথাও মাটি  

অথচ পাথর আর পাথরের কাঠিন্যে কতই না পার্থক্য! 

পার্থক্য মাটি আর মাটির রঙে 

পার্থক্য মাটি আর মাটির ধরণে

পাহাড় সবুজ, অবুঝ অবুঝ

পার্থক্য পাহাড়ের সবুজে আর গাছপালার সবুজে; 

আমি আশ্চর্য হয়ে জলরাশির দিকে তাকিয়ে থাকি

পানির রঙ কে বলতে পারে? 

অথচ পানিকে এক এক জায়গায় দেখি এক এক রূপে এক এক রঙে 

যখন ঝর্ণা থেকে নেমে আসে! - বর্ণহীন স্বচ্ছ টলটলা 

তারপর মাটি বেয়ে নামতে নামতে কিঞ্চিৎ ঘোলা ঘোলা 

নদীতে নামে প্রবল বেগে, নদী গড়ায় তীব্র স্রোতে 

রঙ বদলাতে থাকে নদীর জল - নাব্যতার সাথে সাথে 

কোথাও ঘোলা, কোথাও সবুজাভ, কোথাও নীলাভ, 

সাগরে পড়তেই জলের রঙে রঙ লাগে 

কোথাও সবুজাভ কোথাও সবুজ, কোথাও নীলাভ কোথাও নীল

কোথাও বা ফিরোজা হতে হতে সবুজাভ নীল 

সাগরের পানি রঙ বদলায় কোথাও সাগরের গভীরতায়

কোথাও প্ল্যাংটনের রঙের সাথে,

অথচ আঁজলা ভরে যে কোন জায়গা থেকে পানি নাও! 

  - রংহীন স্বচ্ছই দেখবে হাতে; 


আকাশটা বড্ড রং বদলায় - আলোর সাথে সাথে

সকালে লালচে হতে হতে সাদা হয়ে নীল

বিকেলে নীল থেকে ধুসর হতে হতে লালাভ 

কুয়াশা আর বৃষ্টির দিনে মন খারাপের ধোঁয়াটে সাদা 

সূর্যের বাতিটা নিভে গেলেই হালকা আঁধার নেমে আসে

রাতে চাঁদ বাতি জ্বললে মায়াবী সোনালী

আর চাঁদ ঘুমিয়ে থাকলে নিকষ কালোর মাঝে তারার ঝিলিক 

আচ্ছা! আকাশটা তৈরি কি দিয়ে? 

কি দিয়ে তৈরি রংধনু?


মানুষগুলোর দিকে তাকাও! 

এক একজন এক একরকম 

কারও চেহারার সাথে কারও মিল নাই

মিল নাই এক অঞ্চলের মানুষের রঙের সাথে আরেক অঞ্চলের মানুষের রঙের 

মিল নাই এক একজন মানুষের মানসিকতার সাথে অন্য আরেকজন মানুষের 

অথচ নামের এরা সবাই কিন্তু মানুষ,

কি অদ্ভুত!  তাই না?

পার্থক্য সবকিছুতেই কিছু না কিছু থাকবেই, 

'মনুষ্যত্ব' কেবল মাত্র একটা শব্দ 

শুধুমাত্র মানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট 

তাহলে মানুষের মনুষ্যত্বে কেন এত এত পার্থক্য?  

কেন মনুষ্যত্বের বিচারে একজন মানব আরেকজন দানব? 

আমার খুব মানুষ হতে ইচ্ছে করে 

অথচ মনুষ্যত্বের খোলসে একজন দানব পুষে যাচ্ছি অহর্নিশি তিনশত পঁয়ষট্টি।


#কবিতা 


তিনশত পঁয়ষট্টি দানব 

 - মোঃ আহসানুল হক 


ফটিকছড়ি 

১৯ ফেব্রুয়ারি,  ২০২৪

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন