বুধবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

এলোমেলো ভাবনাগুলো

কালের ঘুণপোকা সব বাসা বেধে চলেছে
নিউরণ কোষের ভাজে ভাজে
কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে যেন আমার
বেঁচে থাকা স্মৃতির অবশিস্ট ওই টুকরোগুলোকে।

আজকাল কোন কিছুতেই যেন
মন বসাতে পারি না
আসলে আমার কোন কিছুই
আর এখন মনে থাকে না।

সামনে মানুষের ভির লেগে থাকে
কত কি যে কথা বলে যায়
একে অপরের সাথে
মাঝে মাঝে হয়তো আমারো সাথে।

সব কথা বুঝি না, আসলে মন দিয়ে শোনা হয়না
সব কিছু কেমন জানি ভাসা ভাসা লাগে
হঠাৎ হঠাৎ চমকে উঠতে হয়
সামনে বসে থাকা মানুষগুলোর প্রশ্নবানের মাঝে।

কি নিয়ে কথা বলছে, কি জিজ্ঞাসা করে
কিছুই মাথায় ঢোকে না; ফ্যালফ্যাল চেয়ে থাকা
আর মাথা নেড়ে যাওয়া কথার পিঠে পিঠে
যেন সব বুঝে গেছি তাদের ওই কথা মালা ভিরে।

আসলে হয়তো তখন ভেসে বেড়াচ্ছি আমি
নীল সাগরের তীরে কিংবা পাহাড় চূড়ার পরে
মনে মনে, মেঘের ডানায় ভর করে
স্বপ্লেরও ঘোরে, স্বপ্লেরও ঘোরে।


মাঝে মাঝে মুঠোফোন খানির
টিং টিং শব্দ বেজে ওঠে
অলস দুপুরে কিংবা ক্লান্ত বিকেল বেলায়
পাখীগুলোর বাড়ি ফেরার কালে ভর সন্ধ্যায়।

মাঝে মাঝে গভীর রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে দিয়ে
টিং টিং করে কানের কাছে বেজে ওঠে
অলস হাত বাড়াই, চুপচাপ শুনে যাই
ওপাড়ের কথাগুলি কিংবা কারো অভিমানের ফুলঝুড়ি।

মাথার ভেতর কেমন যেন ওলোট পালোট ভাব ওঠে
কিছু কথা বুঝি, কিছু যেন নতুন নতুন লাগে;
মনে করতে পারি না সব কথা
কেমন জানি অসহায় লাগে।

কথা হারিয়ে ফেলি কথার মাঝে মাঝে
নতুন কথা, পুরানো কথা মিলে মিশে
জট বেধে থাকে মস্তিস্কের ভাজে ভাজে
মনে পড়ে না ওবেলায় শোনা কথাগুলি এবেলার কালে।

হাঠাৎ হঠাৎ এক একটি নাম ভেসে ওঠে
কোন এক স্মৃতির কুয়োপাড় হয়ে, মনের মাঝে
কিছুতেই মনে করতে পারি না তার মুখছবিখানি
মনের কোনায় খুজি আতিপাতি হয়ে।

হঠাৎ করেই কোন এক চেহারা ভেসে ওঠে
মনের আয়নায় কিছু রঙ হয়ে ফোঁটে
কিছুতেই মনে করতে পারি না সে নাম অবশেষে
স্মৃতির তলদেশ খুঁজি আঁতিপাঁতি হয়ে।

আসলে আমি হয়তো আর আমাতে নেই
হারিয়ে গিয়েছি কোন এক অচিনের দেশে
যেখানে স্মৃতিগুলো হারিয়ে যায়
চিরতরে মুখ লুকোয় গিয়ে নিউরণ কোষে।

কি যে এক অপেক্ষায় পথ চেয়ে থাকি
আর প্রতিক্ষার প্রহর গুনি মনে মনে
তীব্র এক বাসনা অনুভব করি মনের কোনে
চলে যাব সহসাই আমি, ওই না ফেরার দেশে।

রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

দায়ভার

কেও বোঝে না
কেও বুঝতেও চায় না
হয়তোবা আমিই পারি না বোঝাতে
কিংবা তোমাকে বুঝতে
ব্যর্থতার দায়ভার সব আমারই।

ইদানিং সময় কাটে কেমন জানি ঘোরের মাঝে
মনে হয় দিনগুলো থেমে আছে কোথায় যেন
কেমন জানি এক থমকে থাকা গুমোট চারিধার
যেন কোথায় এক মহাপ্রলয়ের ধবংসের আহবান
চারিদিক থেকে ঘিরে রেখেছে আমায়
শুধু আমায়.............
মনে হয় শুধু যেন তুমি বোঝনা
কিংবা হয়তো বুঝেও বুঝতে চাও না
হয়তোবা আমিই পারিনি তোমাকে বোঝাতে
ব্যর্থতার দায়ভাগ তাই নিলেম সব
আমারই মাথারও পরেতে।

দহনের জ্বালা বোঝা হয়ে গেছে আমার সেদিনই
যেদিন থেকে বসে ছিলেম মুখোমুখি
টেবিলের এপার আর ওপার
মাঝখানে বাধা ছিল সংশয়ের স্বচ্ছ কাঁচের দেয়াল
হয়তোবা কিছুটা লজ্জার আড়াল
কিংবা মুখ ফুটে ভালোবাসার কথপোকথন
এর অপেক্ষার প্রহর গোনার কাল
সেদিনও বোঝনি
হয়তোবা আমিই পারিনি বোঝাতে
কিংবা তোমাকে বুঝতে
ব্যর্থতার দায়ভাগ সব আমারই
সেদিনও ছিল যেমন রয়ে গেছে আজো।

অনুরাগ, অভিমান আজ সবই বুঝি তোমার
জমে থাকা কান্না সব ওই চোখের কোনায়
তবুও কালের বাস্তবতার কাছে আমি অসহায়
নির্বাক চেয়ে দেখি বোবা কান্নায়
সময় বা কাল কোনটাই আজ অনুকুলে নয় আমার
তাই আজ মাথা পেতে নিলেম আমি
ব্যর্থতার সকল দায়ভার।

শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

কতদিন

কতদিন দেখা হয়নি তোমার সাথে
মুখোমুখি বসে, চোখে চোখ রেখে।

কতদিন কথা হয়নি তোমার সাথে
হাতে হাত রেখে বসে, চোখে চোখ চেয়ে।

কতদিন ধরে পড়ে আছি আমি
একেলা ঘরের কোনে
কতদিন আমি যাইনিকো দূরে
হরিণ ছোটার বনে
আমার পথের সাথী হয়ে তুমি
হাত ধরনি বলে।

কতদিন ধরে সূর্য হাসেনি
আমার আকাশ ছেয়ে
ঢেকে ছিল মেঘ মনের আকাশে
কুয়াশার চাদোয়া হয়ে
মনের কালোমেঘ সরিয়ে দিতে
তুমি আসোনি বলে।

কতদিন কোন দোয়েল বসে নি
আমারই আঙ্গিনা ঘরে
কতদিন কোন কোকিল ডাকে নি
মনকাড়া কুহু সুরে
আমার আঙ্গিনা আলো করে দিয়ে
তুমি আসোনি বলে।

কতদিন ধরে মনের আকাশে
মেঘগুলো হয়েছে ভারী
তবুও সে মেঘে বৃস্টি নামেনি
আকাশ দিয়েছে আড়ি
আমার আকাশে মেঘপরী হয়ে
তুমি ভাসোনি বলে।

সজনে ডালে ফুল ফোটেনি আজো
ভরা বসন্তেরও কালে
কোকিল শ্যামা দোয়েল বসেনিকো আজো
সজনে গাছের ডালে
তোমার অনুপস্থিতির কালে।

কতদিন ধরে মনের কথা সব
লিখে গিয়েছি মন চিঠিতে
কতদিন হলো চিঠি খুলে কেও
চোখ রাখেনি তাতে
শুধু মনের কথাগুলো পড়ার জন্য
তুমি আসোনি বলে।

কতদিন দেখা হয়নি তোমার সাথে
মুখোমুখি বসে, চোখে চোখ রেখে।

কতদিন কথা হয়নি তোমার সাথে
হাতে হাত রেখে বসে, চোখে চোখ চেয়ে।

তবু তোমার উপস্থিতি রয়ে যায় অনুভবে
যেনো আমার পুরোটা অস্তিত্ব জুড়ে।