শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১১

তুমি, তুমি আর তুমি

নিঃস্তব্ধতা খেলা করে কোলাহল মুখরিত ব্যস্ত নগরীর ভাজে ভাজে
কোথায় যেন ডাকাতিয়া সুরের করুন আর্তনাত কেঁদে ফেরে
আছরে পড়া কাঁচের ঝনঝন শব্দে ভেংগেচুরে তচনচ করে নিতে
মনের গভীরে বাসা বেঁধে থাকা ওই নিঃস্বংগতা ভেঙ্গে দিতে।

নিঃস্বংগতা রয়ে যায় হাজার মানুষের ভিরের মাঝে মাঝে
কে যেন হাত বাড়িয়ে ডাকে আয় আয় রবে অচিন কোন ভূবন থেকে
ভালোবাসায় ভাসিয়ে দিয়ে চায় যেন মনের ভেতরেতে গেড়ে বসে
হ্রদয়ের গভীর হতে টেনে হিচরে নিঃস্বংগতাগুলি বের করে নিয়ে এসে।

শুন্যতার হাহাকার কথা কয় এক জীবনের সকল পাওয়ার মাঝে থেকে
না দেখা সব স্বপ্নগুলো তবু জেগে রয় নিদ্রাহীন আঁখির পলকে
হাতছানি দিয়ে ডেকে নিয়ে যেতে চায় কে যেন আমায় নিজের করে নিতে
না পাওয়া সব বেদনাগুলির মাঝে বসবাসরত সব শুন্যতাগুলি ভরে দিতে।

একাকীত্ব বয়ে চলে শত নদীর টন টন পানির স্রোতের টানে টানে
না বলা কথামালাগুলো মনে গেথে রয় ফুলোমালা গাঁথা হলো না বলে
সুঁই এ সুতো ভরা হলে ফুলের সন্ধানে কোন পথ পানে ছুটে চলে আনমনে
আমার একাকীত্বের কবর দেয়া হবে বলে ফুলগুলো সব গাছ হতে পেড়ে আনে।





শিরিষ কাগজে ঘসা স্কাল্পচারের মূর্তি খানি দেখি
অনভ্যাস্ত হাত বুলিয়ে চলি ভাস্কর্যের গায়ে
কোন এক বোদ্ধা খোঁজে কিংবা আমি খুঁজে বেড়াই
তোমার স্পর্শ ওই ভাস্কর্যের মূর্তির গায়।

রাতের কোলাহলে ব্যস্ত রাস্তায় কোন পথে হেঁটে চলি
আলো দিতে থাকে মাঝ রাতের সোডিয়াম লাইটগুলি আমার গায়
হলুদ আলোগুলি খুঁজে ফেরে তোমাকে কিংবা আমার আঁখিদুটি
হারিয়ে যাওয়া তোমাকে যদি পাই তাই হেঁটে যাই ক্লান্ত পায়।

অন্ধকারের তারার ভিরে জ্বলে ওঠে চাঁদ আকাশে আলো দিতে
খুঁজে পেতে তোমাকে ওই অন্ধকারের ঘুটঘুটে পথে
অন্ধকারের তারা খোঁজে কিংবা জোনাকি আলো জ্বেলে
তোমার রূপের আলোর দিশা গভীর অন্ধকারের ভিরে।

একটু একটু করে যেব অবয়ব হয়ে ধরা পড় তুমি
ছায়া ছায়া হিম কুয়াশার ওপার তীরে
তোমারই ছায়া যেন খুঁজে ফিরি আমি
আলোর দিশা রূপে আজো অন্ধকারের ভিরে।

স্বপ্নের মাঝে তুমি আছ আছ তুমি আমারই কল্পনায়
হাত বাড়িয়ে আলো আধারে খুঁজি তোমায় তায়
রেখেছিলে আমায় তুমি কতনা ভালোবাসায় মুড়ে
তাইতো আছ তুমি আজো আমার সাড়া অস্তিত্ব জুড়ে।

শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১১

নির্বাসন এ একা

শুভক্ষণে বন্ধু বেশে হয়েছিলে পরিচয় তোমার আমার সাথে
বন্ধুত্বের সীমার মাঝে প্রতিদিন কত কথামালা বাদাম খাওয়ার ফাঁকে
তারপর সময় গড়িয়েছে অনেকখানি বন্ধুত্বের গন্ডি পেরিয়ে
একান্ত কথাগুলো ফাঁকে দিয়েছিলে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে।

পারিনি এড়াতে তোমাকে না পেরেছি তোমার ডাক
তাইতো গিয়েছিলেম ভেসে এসেছিল সে বন্য রাত
উজার করা ভালোবাসার গানে বেধেছিলেম কত সুর দুজনে
তোমাতে ডুবেছিলেম আমি ভালোবাসা নিয়ে প্রানে।

ডাকতে তুমি বন্য হয়ে পারিনিকো থাকতে ছেড়ে
গাছের ডগায় তুলে দিলে আনতে পেড়ে চাঁদ
পারিনি তোমায় শত বোঝাতে বামন আমি
ধরতে চাঁদেরে ওই পর্যন্ত যায়না আমার হাত।

অভিমানে মুখ গুড়িয়ে অন্যদিকে বসে
মনের ঝাল মিটেয়েছ তুমি বস্তাহীন এই পিঠে
তোমার রাগের পুতুল আমি চেয়েছিলেম মাফ
করলে নাতো করুনা আমায় করলে তুমি রাগ।

একটি দুটি মাশুল গুনি ব্যর্থতারই মাঝে
দিনে দিনে দ্বগ্ধ আমি ব্যর্থতাতেই লাগে
মন কি কোমল হয় কখনো? করনিকো ক্ষমা
তবু চেস্টা করে যাচ্ছি যা আছে সব আমা।

চদ্ররাতে একনৌকায় শুয়ে ছিলে বুকে
হঠাৎ উঠেই ধরলে মাতম না পাওয়ার সব শোকে
নিঠুর তুমি ধাক্কা দিয়ে নৌকা থেকে ফেলে
বাচালো আমায় মাঝ দরিয়ার দুঃখি যে এক জেলে।

মধুচন্দ্রিমার আবেশ ঘনা রাতের বেলার হাসি
করে দিলে ঘরের বাহির হাতে বাঁশের বাঁশী
বললে ডেকে আজকে থেকে এ দরজা বন্ধ
তোমার প্রেমে আমি ছিলেম তখনো যে অন্ধ।

ভালোবাসার হাতছানিতে দিয়েছিলে ডাক
করেছি ভুল দিচ্ছি মাশুল নেই জীবনের স্বাধ
ভালোবাসার অবুঝ খেলায় গিয়েছিলেম হেরে
তাইতো তোমার একতরফা ভালোবাসা গেছে মরে।

কোন এক ভুলক্ষনে ভালোবাসা জেগেছিল মনে আমার
সেই থেকে আজ অবধি পারিনি ভুলে যেতে তোমায়
সেই থেকে তুমি, রক্তে মিশে গিয়ে রক্তে মিশে যে আছো
আমাতে আমা হয়ে আমারই হয়ে গেছ।

তবুও তোমাকে খুঁজি কেন জানি না জানি না
ভাবি না কখনো আর পাবো কি পাবো না
যেথা আছ ভালো থেকো আমাকে ভেবো না
তোমাকে ভোলা কভু হলো না হলো না।

বাস্তবতায় হেরে গেছি তবু মনের কাছে বাঁধা
তাইতো এখন কাটছে জীবন তোমার শোকে কাঁদা
ক্লান্ত শরীর ক্লান্ত মনে ক্লান্ত চোখে দেখা
তাই তো আমি পড়ে আছি নির্বাসন এ একা।

তোমায় ফিরে পাওয়া

তোমার দেয়া যত কস্টগুলো তোমার দেয়া যত বেদনাগুলো
তোমার দেয়া ভালোবাসার স্মৃতিগুলো সব
তোমার দেয়া অপমান আর উপেক্ষার ডালি
কেন যে ক্ষরণ জাগায় মনে প্রতি নিয়ত একটু একটু করে।

উড়ে চলা গাংচিলের ডানায় ভর দিয়ে
যদি উড়িয়ে দিতে পারতেম তোমার ভাবনাগুলো
প্রতিনিয়ত যেগুলো কুরে কুরে খাচ্ছে আমায়
তোমায় মনে করে।

বয়ে চলা নদীজলে ঝরা পাতার মত
যদি ভাসিয়ে দিতে পারতেম দুঃখ বেদনাগুলো
বুক ভার করে চেপে ধরে আছে যা বজ্রআটুনির মত
শুধুই তোমার দেয়া অমূল্য উপহার হয়ে।

হিমবাহের গলা বরফগুলোর মত
তোমার হ্রদয় কি কভু গলবে কখনো
অভিমানে দূরে চলে গেলে কত তুচ্ছ কারনে
আমার এই মন ভেংগে দিয়ে।

ফুটন্ত জলীয় বাস্প গুলোর মত
উবে যায় না কেন তোমার দেয়া সব যাতনাগুলো
তোমার যত দেয়া উপহাসের ডালি
ধরে হ্রদয়ে ক্ষরণ আজো, শুকায় কখনো?

পাহাড়ের মত ওই পাথর হ্রদয়ে তোমার
ভালোবাসার কষাঘাতে করেছি জর্জরিত বারে বারে
তবু পাষাণ হ্রদয়ে একটু কি আঁচর
ফেলতে পেরেছিল কখনো?

সাগরের ঢেউ এর মত
কস্টগুলো আছরে পরে অবিরত
যখনি তোমার কথা মনে পড়ে
যখনি তোমার ভাবনা উঁকি মারে।

ধুসর কুয়াশার মত করে
হারিয়ে গেছ ধীরে ধীরে অস্পস্ট হয়ে
আমার জীবন থেকে কোন অভিমানে
ফেলে রেখে আমাকে আজ কোন অন্ধকারে।

বৃষ্টির ঝরা কান্নার মত করে আজ
হ্রদয় কাঁদে কেন শুধু তোমায় মনে করে
এখনো তোমাকে আবার ফিরে পাওয়ার ভাবনা উঁকি মারে কেন
হারিয়ে ফেলেছি যাকে অমাবস্যার সেই গহীন অন্ধকারে।

এলোমেলো রাতের বেলায় কেন যেন এলোমেলো হয়ে যাই আজো আমি
হ্রদয় মেলে তাকিয়ে শুধুই এদিক ওদিক খুঁজে বেড়াই তোমাকেই আজো
কোন এক দূর পানে হাত বাড়িয়ে দেই আমি, এখনো তোমার আশায়
ফিরে পাওয়ার সুপ্ত বাসন যে রয়ে গেছে আজো মনের গহীন কোনো কোনে
তোমাকে ফিরে পাবার
শুধু, তোমাকেই ফিরে পাবার।

বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১১

ভালোবাসার দূরত্ব

যোজন দূ্রের অচিন পাখি
হাত বাড়িয়ে তোমায় ডাকি
দাওনা ধরা মনের ঘরে
একলা আমি রই যে পরে।

এত করে তোমায় ডাকি
দিলে তবু আমায় ফাঁকি
গেলে চলে আমায় তুমি ফেলে
ভালোবাসার মূল্য কি আর দিলে।

জাগরনে একা একা
কেন যে পাই তোমার দেখা
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন আঁকি
সেইখানে তেও তোমায় দেখি।

দিন ভরা যে অনেক কাজ
মনের ভেতর মেঘের সাজ
কাজগুলি সব গেল বয়ে
মনখারাপের কান্না হয়ে।

উড়িয়ে ঘুড়ি দূর আকাশে
ভাসিয়ে দেই আজ মেঘের দেশে
লাটাই থেকে সুতো ছেড়ে
কোন দূরে যায় হাওয়ায় উড়ে।

ঘুরে ঘুরে ভেসে ভেসে
এদিক ওদিক তাকায় যে সে
নেয় কেন ঠাই আপন মনে
তোমার ঘরের কোনে।

জাগরনে ঘুমের ঘোরে
কাজের মাঝে অবসরে
ভাসিয়ে দেয়া ঘুড়ি আমার
আসে না আর ফিরে।

অভিমানে গেলে চলে
একলা ঘরে আমায় ফেলে
একটি বারও পিছু ফিরে
শুনলে না ডাক একটি বারে।

ভালোবাসার মনের ঘরে
ভালোবাসাই বসত করে
একলা আমি রইলাম পরে
যোজন যোজন দূরে।



বুধবার, ১২ অক্টোবর, ২০১১

তোমাতে হারায় মন

মনে মনে ভাবি আমি যেন পাশে আছ তুমি
খাতার পাতা ভরে ওঠে কবিতার কথাগুলি
কলমের আঁচরেতে, একটু একটু রূপে।

মনে মনে ভেবে চলি যেন পাশে আছ তুমি
তুলির টানে আঁকা হয় তোমারই ছবিগুলি
মনের ক্যানভাসে, বহুরূপে বহুরূপে।

কখনো তুমি ঢেকে যাও অন্ধকারে মুখ লুকিয়ে
দুচোখ হারায় তখন অমাবস্যার কালো আঁধারে
কালির প্রলেপ পড়ে যেন তোমারই দুধআলতা গায়ে।

কখনো দিয়ে উঁকি সলজ্জ ধনুকের মত বাঁকা চোখে
লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলো কেন তুমি চোখেরই পলকে
খুশির ঝলক ছুটে চলে রিনঝিন নূপুরের পায়ে পায়ে।

অধির অপেক্ষায় রেখে প্রতি পক্ষে একবার এসে
দেখা দিয়ে যাও তুমি আমাকে, পূর্ণিমায় হেসে
জ্যোৎস্না মেখে চলি আমি সারা গায়ে, সারা গায়ে।

নারকেল পাতার ফাঁক গলে চুইয়ে নেমে আসে সাদা জ্যোৎস্নার হাসি
মনে বড় স্বাদ জাগে স্নান করে নেব আমি সারাগায়ে পূর্ণিমা মেখে
ধুয়ে নেব মনের যত গ্লানিগুলি, পাশে নিয়ে তোমায়।

চাঁদনি রাতে চাঁদের খেলায়, মন যে হারায় মন যে হারায়
জ্যোৎস্না বেলায় তারার মেলায়, আমার এ মন তোমাতে হারায়
যতবার দিয়ে যাও দেখা তুমি প্রতি চন্দ্রবেলায়, প্রতি চন্দ্রবেলায়।

তাইত সারাক্ষণ ভাবি আমি, যেন পাশে আছ তুমি
তোমার কথায় তাই ভরে ওঠে কবিতার খাতাগুলি
কলমের আঁচরেতে, নবরূপে নবরূপে।

আর স্বপ্নেতে জাল বুনি, মনে মনে দেখি তুমি
তুলির টানে এঁকে যাই তোমারই ছবিগুলি
মনের ক্যানভাসে, রংমেখে বহুরূপে।


মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০১১

ডাক

কচ্ছপের পায়ে ভর দিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে সে যে
নিঃশব্দ পায়ে পায়ে, তার পদধ্বনি শুনি
হিম নিঃশ্বাস এর হালকা পরশ পাচ্ছি একটু একটূ করে
ঠান্ডা হয়ে আসা গায়ে, তাই মৃত্যুর প্রহর গুনি।

একটু একটু করে যাত্রা অন্য ভূবনের পানে
ভালো লাগে না আর ধীর পায়ে এগিয়ে চলা
ঢিমা তালে ধীর লয়ে গুনগুনানো মত্যুর গানে গানে
বড্ড ক্লান্তিকর লাগে আজ সুদূর এই পথ চলা।

আলোছায়া খেলা করে আজ জ্যোৎস্না ঢালা রাতে
মেঘের সাথে লুকোচুরি যেন চাঁদের
হাওরে বাতাস বয় গা হিম করা হো হো শব্দে
ওপারের অলুক্ষুনে ডাক পরে আজ তাদের।

কস্টগুলো দানা বেধে আছে ওই দূর আকাশের গাঁয়ে
কখন জানি ঝরে পড়বে বৃস্টিফোটায় ভর করে
ধুয়ে মুছে নিয়ে চলে যাবে গ্লানিগুলি সব
পড়ে ছিল সকলই যা হ্রদয়ের ধার ধরে।

তিল তিল করে এগিয়ে চলা ওই অচেনা ভূবনের পানে
ইচ্ছে করে না চলতে এ পথ হাঁটি হাঁটি পায়ে
এসো হে মরন আলিঙ্গন করি তোমায় একবারে মন প্রানে
মৃত্যুর ঠিকানা লেখা হোক আজ কবরের গায়ে গায়ে।

চোখের ওপরে কালো ছায়া ফেলে আজ শকুনেরা উড়ে চলে
শব হতে তাই মৃত আত্মারা উড়ে যেতে চায় আকাশেতে ডানা মেলে
ওপারের ডাক যেন শুনতে যে পাই একটু একটু করে
কবর যে আজ ডেকেছে আমায়, চলে যেতে হবে দূরে, বহু দূরে।

রবিবার, ৯ অক্টোবর, ২০১১

না বলা কথাগুলি

বলা হয়নি কথাগুলো সব
ছিল যা মনের কোনে,
গুনগুনিয়ে গান গাওয়া হয়নি
তোমারই কানে কানে।

গাঁথা হয়নি কথামালাগুলো
ছিল যা হ্রদয় কোনে
পড়িয়ে দিতে পারিনি যে আমি
ঝুমকো গেঁথে কানে।

হ্রদয়ের কথা হ্রদয়েতে ধরে
ছিলেম চুপটি করে
আশা ছিল মনে বুঝে নেবে তুমি
বুঝনিকো তুমি মোরে।

আশার দুপুর গড়িয়ে বিকেল
সন্ধ্যা নামে পথ চলতে
দ্বিধা ভরা রাত গড়িয়ে সকাল
মুখ ফুটে তবু পারিনি বলতে।

ঠারেঠোরে ইশারাতে
কত কথা বলি যে তোমায়
ভালোবেসেছি যে শুধু তোমাকে
একথাটি কেন বোঝ নিকো হায়।

ভালোবাসি তোমায় এ কথাটি বলতে
এত দ্বিধা ভোগে কেন যে মন
তুমি ছাড়া সেথা আর কেহ নাই
খুলে দেখ হ্রদয়ের প্রতিটি কোন।


শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১১

প্রতিক্ষার প্রহর আর অপেক্ষার ভোর

প্রতিক্ষার প্রহর কাটে একাকি বসে গান শুনতে শুনতে
আর তারি সাথে মিশে রয় এক অজানা অপেক্ষার ঘোর
প্রতিক্ষার প্রহর কেটে যায় সারারাত ধরে তারা গুনতে গুনতে
আর অপেক্ষার রাত শেষ হতে না হতে নেমে আসে ভোর।

নির্ঘুম কেটে যাচ্ছে একটি একটি করে প্রতিক্ষার দিনরাত্রি
জন্ম জনম কেটে যাচ্ছে এভাবেই যেন এক শুন্যতায় বসবাস
শেষ হয় না যেন আপেক্ষার, আর তারা গোনার কালরাত্রি
জনম জনম কাটে প্রতিক্ষায় তোমার, যেন নিয়তির নির্মম পরিহাস।

সূর্য ওঠে ভোর হয় আবার সূর্য ডোবে, নেমে আসে অন্ধকার
তবু কাটে না যেন প্রহরগুলি তোমার জন্য আমার প্রতিক্ষার
চাঁদ ওঠে জ্যোৎস্না হাসে, নেমে আসে অমাবস্যা নেমে আসে আঁধার
চেয়ে থাকি কোন পথ পানে কাটে না সময় যেন আমার অপেক্ষার।

জন্ম জনম কাটে আমার নিয়ে হাত ঘড়ি, শুধু তোমার প্রতিক্ষায়
জনম জনম গেল হ্রদয় রক্তাক্ত করি, শুধু তোমারই অপেক্ষায়।



শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০১১

ঘৃনা না ভালোবাসা

ঘৃনার অপর পিঠে বাস করে ভালোবাসা
কেও বোঝে, আর কেও বোঝে না
সারক্ষণ মেতে রই অভিনয়ের খেলায়
তবুও কেন জানি মন মানে না।

কাঁচের আয়নায় প্রতিবিম্ব খুব যেন মুখ চেনা
ঘষা পারদের আয়নায় মুখ চেয়েছ কি কভু
হায় মনের ওপারের কালিমাখা অন্ধকার ভুবন
কেন আমায় দেখিয়েছিলে হে প্রভু।

মনের কল্পিত সব ভাবনাগুলির মাঝে
অসচ্ছ এক পর্দা পরে থাকে
ভয় হয় পর্দার ওপারে উঁকি দিতে
কালকেউটেরা সব ফনা তুলে থাকে।

ঘুমঘরে কাটে রাত নির্ঘুম চোখে
তারা গুনে গুনে ভোরের আলো যে ফোটে
ভাবনারা ফনা তোলে ভালোমন্দে মিশে
হায়, এ পোড়া কপালে তবু কি ঘুম জোটে।

মানুষের দেয়া একটি দুটি সব ঘৃনার বীজগুলি
গুনতে গুনতে বয়ে চলে যে কাল
ভালোবাসার সুবাতাসটুকু তারি মাঝ হতে
কখনো খুঁজে পাবে কি মহাকাল।



বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১১

তারে দেখার স্বাদ

মেঘের কোলে ভাসে যার মুখ
ছায়া পড়ে তার ঘন কালো দীঘির জলে
একটু একটু করে অস্পষ্ট ভাবে দেখা দিতে চায়
রংধনু রঙের অস্পষ্ট আলোর ঝলকানিতে
আমি অপার তাকিয়ে রই যদি একটিবারের তরে
দেখা যায় তারে, মন ভরে মন ভরে।

দেখা যায় তার দূর থেকে ধুসর কুয়াশার মত মুখ
মধ্য দুপুরের কাঠ ফাটার রৌদ্দ্রের মাঝে মিটিমিটি জ্বলে
চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে থাকি আমি
যদি একবারের মত ভালো করে তার
মুখখানি দেখতে পাওয়া যায়।

ঘন বরিষনে বৃষ্টির রিমঝিম শব্দে তার গান শোনা
কিংবা বৃষ্টির মাঝে চশমার কাঁচ ঘশে
তাকে দেখতে পাওয়া চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া
কিংবা জ্যোৎস্না রাতে আলোর আকাশের দিকে তাকিয়ে
তার প্রতিবিম্ব দেখা,
মনে আশা যদি তারে একবার দেখা যায় স্পষ্ট করে।

লাল গাড়ীর ঘন কালো কাঁচ ঘেরা আধো অন্ধকারে
ভুস করে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে কাঁদা পানি ছিটিয়ে
সামনে দিয়ে রানীর মত চলে যায় সে যে
তবুও নির্লজ্জ আমি এক বেহায়া তার পথ চেয়ে
প্রতিদিন তার নীল গেট এ দাঁড়িয়ে প্রতিক্ষার প্রহর গুনি
সাথে করে হ্রদয় গোলাপ আর ভালোবাসার ডালি
যদি মুহূর্তের তরে দেখা যায় তার সাথে।

কি বোকা আমি ছিলেম আজ অবধি
কখনো খুলে দেখিনি আমারই হ্রদয় আয়না খানি
সে যে রয়ে গেছে মোর হ্রদয় কোনের
আলোকিত ওই আয়নাঘরে
যেথা হতে চোখ বুজেই দেখা যায় তারে।

মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০১১

ভুলের অবসান

ব্যর্থ হয়ে থাকে যদি
প্রণয়ের সব আয়োজনগুলি
এ জীবনের সকল চেস্টা জুড়ে।

বাধ ভাঙ্গার আওয়াজ শুনি
হ্রদয়ের গভীরে একদম ভেতর থেকে
তোমার আমার না হওয়া মিলনের
হ্রদয় ভাঙ্গা মনের ঘরে।

চলে এসো তুমি
আগামী জনমের কালে
রাখব তোমায় মনের ঘরে।

হবে কথোপকথন দুজনে
তোমার আর আমার মাঝে
চোখে চোখ রেখে
সামনা সামনি হলে।

মিটিয়ে নেব সব
ভুল বুঝাবুঝি গুলির
চির অবসান
একসাথে দুজনে মিলে।

জীবনের সেই বাঁকে এসে
যদি সাধ হয়
পড়ে এসো তুমি
আমার দেয়া সেই নীল সারি খানি।

অদ্ভুত এক নীল জ্যোৎস্নায়
বড় সাধ জাগে একবার দেখতে তোমায়
নদী পাড়ে বা সবুজ ঘাসের বনে
যেথায় জোনাক পোকারা সাজায় থরে থরে
মিটমিটে আলো সারি সারি।

নীল সারিতে তুমি সেজে এসো সেদিন কিন্তু
হয়ে আমার নীল পরী।

হবে কথোপকথন দুজনে
তোমার আর আমার মাঝে
চোখে চোখ রেখে
সামনা সামনি হলে।

মিটিয়ে নেব সব
ভুল বুঝাবুঝি গুলির অবসান
চিরতরে আর চিরতরে
একসাথে দুজনে মিলে।

রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০১১

তোমাকে মনে পড়ে

কোথায় যেন এক শুন্যতা কাজ করে
যখনি তোমায় মনে পড়ে
কোথায় যেন হারিয়ে যাই শত মানুষেরও ভিরে
যখনি তোমার কথা মনে পড়ে।

হাজার কাজের ব্যস্ততার মাঝে মন সরে রয় দূরে
যখনি তোমায় মনে পড়ে
সোনালী ল্যম্পপোস্টের আলোয় একাকি পথ চলি ফুটপাথ ধরে
যখনি তোমার কথা মনে পড়ে।

মেঘ বৃস্টি হয়ে ঠিক কান্না ঝরায় চারিদিক কালো করে
যখনি তোমায় মনে পড়ে।
চাঁদ ঠিক ঠিক মেঘের কোলে মুখ লুকায় জ্যোৎস্না হারায় দূরে
যখনি তোমার কথা মনে পড়ে।


শয়নে স্বপনে কিংবা জাগরনে মন ছুটে চলে কোন সুদূরে
যখনি তোমায় মনে পড়ে।
পাওয়া আর না পাওয়ার টুকরো বেদনাগুলি হ্রদয় ভার করে
যখনি তোমার কথা মনে পড়ে।

কোথায় হারিয়ে গিয়েছ আজ কোন সীমানার ওপাড়ে
এখন শুধু যে তোমার কথাই মনে পড়ে
আর মনে পড়ে আর মনে পড়ে
সহস্র কাজেরও ভিরে।