বয়সে প্রৌঢ় কি সে খুব বেশি?
হওয়ার কথাতো ছিল তার যেন
রূপ যৌবনে একাদশি।
৭১ এ বিজয় দেখেছি
নিস্পাপ এক শিশু,
৭৫ এ কলংকিত সে
ক্রুশবিদ্ধ যেন যিশু।
৭৭ এ সিপাহি বিপ্লব
রক্তে রাঙ্গানো মাটি,
৮২ এ কেন রাঙ্গা হতে হল
চট্রগ্রামের মাটি।
৮৫ এ এসে হায়না খেদাও
আন্দোলনের ডাক,
৮৭ এ এসে ঝাটাপেটা খেয়ে
বুঝ বুঝি এলো তার।
খোলা মঞ্চে গান গেয়ে গেয়ে
ফাসির কাস্ঠে বিচার,
নূর হোসেনকে জীবন দিতে হল
বুকে একে স্বৈরাচার।
৮৭, ৯২, ৯৭ আর ২০০২
একই রূপ ধরে আসে সরকার
আপনি, তুমি আর তুই।
পালা বদলের চলে একই খেলা
দেশ মাত্রিকাকে ধর্ষন করে তাদের
কাটে যে জীবন বেলা।
প্রতিবারই কাঁপে আন্দোলনে
আকাশ বাতাস মাটি
সরকার হটাও দেশ বাচাও
বেছে নাও সোনা খাঁটি।
বার বার করে পালা বদলের রূপ
এ যেন পুতুল খেলা
দেশ মা আমার গোল্লায় যাক
ভরছে আমার ঝোলা।
শাসক রূপে যে আসে দেশে
দেশ গড়ব ভাব করে যে সে
দেশকে বানাব সোনার ঢেলা
একদম করে খাটি,
কিছু দিন গেলে
বনে যায় সে যে
স্বৈরাচারের ঘাটি ।
দু হাজার পাঁচ,
তত্বাবধায়ক সরকার নামে
দেশে এলো এক অভিশাপ
ছাড়লো কুরশি ছিবড়ে করে
দেশকে করল ফাক।
আজ দেশে নতুন সরকার
বয়স মাত্র সাড়ে তিন
এর মাঝেই শেষ রিজার্ভ টাকা
করতে হচ্ছে তাকে ঋণ।
হায়রে আমার বাংলা মাতা
কত শত বীর সন্তানের জননী তুমি
গর্ব ভরে রত্নগর্ভার
কদমে কদমে চুমি।
শহীদ সালাম, জাব্বার, বরকত আর
কত শত তাদের নাম
আবার দিয়েছ জন্ম কাত শত
রাজাকার আর কুলাংগার সন্তান।
দেশ মা আমার রত্নগর্ভা
গর্বে ভরে যে বুক
যখন দেখি সালাম বরকত আর
জিয়া, মুজিবের মুখ।
সেই মাই আবার প্রসব করে
সর্প যেন তার রূপ
স্বৈরাচার, রাজাকার, হায়নার দল সব
দুঃখে যে ভাঙ্গে বুক।
৭১ এ বিজয় দেখেছি
মায়ের কোলেতে বসে
মায়ের হাসিতেই বিজয় মালা
অনেক আশের আশে।
৭৫ এ কালোরাত এলো
১৫ই অগাস্ট রাত
বাবার চোখেতে দেখেছি কান্না
পাতে নেই নি সেদিন ভাত।
৮২তে এসে কেদেছি নিজে নিজে
অসহায়ত্তের কালো বোঝা বুকে নিয়ে,
যৌবনের প্রথম কান্না ছিল সে যে
দেশ মায়ের তরে
করেছি সেদিন প্রার্থনা
বীর শহীদের অকাল প্রান বধ
বন্ধ কর - আর না, আর না।
৮৫ থেকে ৮৭ পর্যন্ত
আন্দোলনের মাঝে কেটেছে দিন রাত
স্বৈরাচার খেদাও দেশ বাচাও
অবশেষে, স্বপ্ন হয়েছে সাচ।
এর পর থেকে গুটিয়ে গেলাম ‘
দেখলাম রাজনীতি
আসলে সকলেই ফাঁকা বুলি ঝাড়ে
নেইকো কারো কোন নীতি।
আমরা সবাই গুটি, কতক সব
দাবার বোর্ডে সাজানো
রাজা মশাইরা খেলছে একেলা
বড়িগুলো সব আগানো।
মোহরা বানিয়ে খেলছে সবাই
পাইক পেয়াদায় পরিবিস্ঠ
সৈন্য এগিয়ে দেখছে খেলা
কে, কে থাকে তাদের অবশিস্ট।
যৃণা জন্মেছে সেদিন থেকে
যেদিন দেখেছি খেলা
মানুষ নিয়ে খেলছে তারা
বসিয়েছ মরন মেলা।
মানুষ রূপী কুকুর দেখেছি
দেখেছি বুনো হায়না
ডাকিনী দেখেছি শকুনি দেখেছি
আর দেখেছি তাদের অসচ্ছ আয়না।
আমি আয়নার মাঝে দেখেছি সকলই
দু টুকরো মাংসের লড়াই
মানুষ রূপী দুটি কুকুরের
কামড়া কামড়ি লড়াই।
কুকুরেরে ওপর ঝাপা ঝাপি করে
হায়েনার দল সে সব
পেট চিড়ে বের করে খেয়ে
করে তারা উৎসব।
দেখেছি আমি ডাকিনির বেশে
শকুনীর কালো থাবা নিয়ে হিংস্র উল্লাসে
হায়নার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে
পেট চিরে বের করে আনে
নিজের খাদ্যের পরে।
শুধু দু টুকরো মাংসের লোভে,
এরাও মানুষ,
কিংবা মানুষরূপী দানব সকল।
আজ আমার বাংলা মা
প্রৌড়ে পরেছে, ৪০ বয়স হল
নব যৌবনের কমনিয়তা হারিয়েছে
এখন তাকে চিমশানো বুড়ি বল।
আজ বিজয় আমার
দাঁত বের করা লোলুপ হায়েনার
কালো কুৎসিত মন,
আজ বিজয় আমার
আশি বছরের থুথ্থুরী বুড়ির
চিমশানো দুটি স্তন।
আজ বিজয় আমার
প্রি ম্যাচিওরড সন্তানের
আকালে পৃথিবির ডাক,
আজ বিজয় আমার
কুমারী মাতার
অকাল গর্ভপাত;
আর সাথে নিয়ে কিছু
অমানুষ, হায়েনার
দুষিত রক্তস্রাব।
আজ বিজয়েরই মাস
আজ বিজয়েরই দিন
আজ ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস
আমাদের আনন্দের দিন
পেরেছি কি শুধিতে এখনো আমরা
বাংলা মায়ের ঋণ।
আজ আমি বিজয় দেখেছি
বিজয় দেখছি, নির্বাক নয়নে চেয়ে
জানি না সামনে আরো কত শত বাধা
আসছে যে ধেয়ে ধেয়ে।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন