মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই, ২০১২

দ্বিতীয় স্বত্বা


একটি ভিন্ন কবিতা লিখতে চাই মানবতা নিয়ে
একেবারে ভিন্ন একটি ছবি আঁকতে চাই প্রিয়ার চাহনিকে ঘিরে;
যে ছবিগুলো আঁকা আছে আমার মনসপটে প্রথম স্বত্বার মাঝে।

তবু যেন নিজের দিকে তাকিয়ে চমকে যাই
প্রথম স্বত্বাকে ঠেলে দিয়ে কেন বের হয়ে আসে আমার
কালো কুৎসিত দ্বিতীয় স্বত্বার থাবা, আমার সব ভালো ছাপিয়ে।
যৌবনের নোংরা কাম লালসায় বের হয়ে থাকা কালো জিহ্বা
সাপের মত ছোবল মেরে বিষ ঢেলে দিতে চায় যেখানে সেখানে
দৃষ্টিতে যেন আমার লালসা ফুটে ওঠে
রাক্ষসের মত কদর্য চেহারা দেখলেই যেন ঘৃণা জেগে ওঠে মনে
আমি আমার দ্বিতীয় স্বত্বার কথা এখানে কেন লিখে যাই?

বাঁধ না মানা যৌবনের লিপ্সা মানে না কোন
তরুণী, যুবতি কিংবা প্রৌঢ়ার অসহায়ত্ব
নোংরা লোলুপ দৃষ্টির সামনে কুঁকড়ে যায় যেন কি এক ভয়ের শিহরণে
যেন চোখ দিয়েই ধর্ষণ করে যাচ্ছে যৌবনের নেশায় নারীরূপ সামনে পেলেই
কিংবা কদর্য যৌনতার নোংরা চোখ দিয়ে চেটে পুটে করছে তৃষ্ণা নিবারণ
জাগে না ভাবনা মনে তার, এ যে আমাদেরই মায়ের জাত
যার গর্ভে থেকে নয় মাস অসহ্য যন্ত্রণা দিয়ে বের হয়েছে
এক যৌন লোলুপ মানব দানব
কি অকাতরে করে যাচ্ছে আজ জন্মদাত্রী গোত্রের চরম সর্বনাশ।

আমার প্রথম স্বত্বা যুজে চলে প্রতিনিয়ত দ্বিতীয় স্বত্বার সাথে
প্রায়শই হেরে যায় ভালো মন্দের এই যুদ্ধের মাঝে
আমি ক্লান্ত চোখে স্তব্ধ হয়ে চেয়ে রই দ্বিতীয় স্বত্বার দিকে
যে কিনা নারীর অঙ্গে খুঁজে বের করে বেশ্যার মানসরূপ
করে তাকে পণ্য কাম-লিপ্সায় হিতাহিত শূন্য
নোংরা যৌবনের জয়ধ্বনি বেজে ওঠে আমার অস্তিত্ব জুড়ে
আমি অসহায়, আমার প্রথম স্বত্বা কেঁদে ওঠে হায়
মা জননী আমায় তুমি ক্ষমা কর
আমি আজ হেরে গেছি আমার নিজের কাছে
হৃদয়ে রক্তক্ষরণ নিয়ে দেখি নিজেরই আরেক রূপ

বিবেকের কঠিন কষাঘাতে যেন চিনি আপনারে
জীবনের কঠিন সত্য ফুটে ওঠে গাঢ় বেদনাতে
আমিও আর দশজনের মতই পরাজিত জীবন যুদ্ধে
লালসার কাছে, ধিক আমায় ধিক।

লেখা হয় না ভিন্ন কবিতা মানবতা ঘিরে মানুষের কল্যাণে
নষ্ট যৌবনের পরাজয়ের কথা লিখে যাই অকপটে
আঁকা হয় না আর মনের ছবিটা প্রিয়ার মুখটাকে মনে করে
একে যাই বেশ্যার কদর্য লোভনীয় দেহটারে
জীবন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পচে গলে নষ্ট হয়ে গেছি লালসার কাছে
ধিক আমায় ধিক।


সোমবার, ৩০ জুলাই, ২০১২

মনের মাঝে তুমি


কখনো চেষ্টা করেছ কি আমার মনটাকে খুলে পড়তে
কখনো আমার নিউরন কোষে উঁকি দিয়ে দেখেছ
সেখানে কার নাম লেখা আছে?
কখনো আমার বুকে কান পেতে দেখেছে
হৃদয়ের ধ্বক ধ্বক শব্দ কার নাম করে সেথায়?
কখনো আমার হাত কেটে গেলে সেখান থকে রক্ত ঝরতে দেখেছ
গাড় টকটকে লাল রক্তকণিকায় ফোঁটা ফোঁটা করে চুইয়ে পড়ে
যেন তোমার দেয়া সকল কষ্টগুলি রক্ত হয়ে ঝরে পড়ছে
নীল বেদনা দেখেছ কখনো, তোমায় হারানোর কষ্টে হয়েছে গাঢ় নীল
আসলে তুমি কিছুই দেখনি
শুধু অবুঝ ভালোবাসায় ভাসিয়ে নিয়ে গেছ আমাকে
মরনের ওপাড়ে, যেখান থেকে আর
ফিরে আসা যায় না কোন কালে।

আমি দেখেছি তোমার ভালোবাসা আমার মনের গভীরে
খুলে দেখেছি আমার প্রতিটি নিওরোন কোষ বারে বারে
হৃদপিণ্ড খন্ড বিখন্ড করে দেখেছি সেথা
লোহিত কণিকার প্রতিটি ফোঁটা চিড়ে দেখেছি
সবখানেই তোমার নাম লেখা পেয়েছি
তুমি আছ, তুমি ছিলে; তুমিই থাকবে চিরকাল
মনের মাঝে, আমার মনের রূপবতী চাঁদ হয়ে।

রবিবার, ২৯ জুলাই, ২০১২

ভরা জ্যোৎস্নায় অপেক্ষা তোমার



মেঘমেদুর আকাশেতে ক্ষণে ক্ষণে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে চাঁদ
যেন পূর্ণিমার আগমনের আভাস দিয়ে যাচ্ছে
সামনে পূর্ণিমা
ফকফকে জ্যোৎস্নার পথ চেয়ে বসে আছি আমি
কথা ছিল আমাদের দেখা হবে জ্যোৎস্না রাতে
তুমি পড়ে আসবে আমার দেয়া নীল সাড়ি খানি
নীল পরীর বেশে
আমাকে কিনে দিয়েছিলে হলুদ একটি পাঞ্জাবী
আমি তোমাকে বলেছিলেম হলুদ আমার অত্যন্ত অপছন্দের রঙ
তুমি কথা শোননি, আমাকে দেখতে চেয়েছ হিমুর বেশে কেন জানি।

আমি এখন প্রতি জ্যোৎস্না রাতে তোমার দেয়া হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে
অপেক্ষায় থাকি, তোমার অপেক্ষা
তোমার দেয়া হলুদ পাঞ্জাবীটি বড্ড আগলে রেখে দিয়েছি যতন করে
যাতে সেথায় কোন দাগ না পড়ে
আজো প্রতি জ্যোৎস্না রাতে আলমিরা থেকে বের করি
ইস্ত্রির ভাজ খুলে গায়ে চড়াই তোমার দেয়া পাঞ্জাবী
তারপর অপেক্ষার পালা
একে একে সেই কত দিন কেটে গেছে
কত জ্যোৎস্না ঢলে পড়েছে অমাবস্যার গায়ে
কত বছর যে কেটে গেছে এখন আর তার হিসেব করে পাই না।

তুমি কথা রাখনি
একবারও আসোনি আমায় দেখা দিতে
আমার দেয়া নীল সাড়ি পড়ে
তবুও আমি অপেক্ষার প্রহর গুনি
প্রতি চন্দ্রবেলার হিসেব কষি সব কাজ ফেলে
যদি ভুল করে তুমি চলে আস সেই সুদুরের ওপার থেকে
তোমার হিমুর দেখা পেতে।



শনিবার, ২৮ জুলাই, ২০১২

তোমায় হারিয়ে



মস্তিস্কের মাঝে সব জট পাকিয়ে যাচ্ছে ইদানিং
আবোল তাবোল সব ভাবনাগুলো একে একে মনের মাঝে উঁকি দিয়ে যায়
তোমায় নিয়েই যত ভাবনাগুলো
ভাবায় আমায় রাতদুপুরে অতি সংগোপনে।

সকাল বেলায় সূর্যলোকের কিরণ দিয়ে দিনের শুরু
তবু যেন মনের মাঝে মেঘের ডাক গুরু গুরু
ডাকছ আমায় কোথা থেকে কোন সুদুরে বসে থেকে
ওলোট পালট সকাল থেকেই কাজের দিনে হলো শুরু
ঘর থেকে যে বাহির হলাম, চৌকাঠেতে হোচট খেলাম
মা বললেন একটু বসে যা বাছা,
কোথায় জানি তোর লাগি কার মন পুড়ছে কোথা
কে জানি মনে করছে তোর কথা
আমি জানি কোথায় বসে ভাবছ তুমি
শুধুই আজ আমার কথা।

ঝাঁ ঝাঁ রোদ মাথার ওপর তবু পথে হেটে চলি
ছাতিম গাছ আর কোথাও নেই ভালো করেই সেটা জানি
তবু জানি কোথায় বসে শাড়ির আঁচল পেতে
মাথার ওপর ধরে আছ একটু ছায়া দিতে
রোদকে আমার বড় যে ভয়
ভালো করেই জানতে তুমি।

মধ্যাহ্নের অলস বেলায় তোমার কথা মনে পড়ে যায়
খাবার হাতে বসে থাকি তোমার কথা ভাবি
হঠাত করেই বিষম খেলে খুশিতে ভরে মন
কোথাও বসে ভাবছ তুমি আমার কথাই এখন
পানির গ্লাসটি এগিয়ে ধরে বলছ যেন আমায় তুমি
লক্ষ্মী ছেলে এক ঢোকেতে খালি কর গ্লাসের পানি।

বিকেল বেলায় বৃষ্টি নামে ঝুমঝুমিয়ে নুপুর পায়ে
ভিজতে মনে স্বাদ যে জাগে তোমার পাশে গুনগুনিয়ে
মনে মনে হাতটি বাড়াই যেন তোমার স্পর্শ যে পাই
দুজন মিলে বৃষ্টিবিলাশ দুজন মিলেই সন্ধ্যে হারাই
বর্ষা পাগল ছিলে তুমি বৃষ্টি পাগল ছিলেম আমি
বর্ষাদিনে কদম তলায় মধুর সুরে ডাকতে স্বামী।

কালের ফেরে ভাগ্যদোষে আজ আমারা ছিটকে গেছি
দুই ভুবনে দুজন বসে তবু আমরা ভালোবাসি
দুজন আছি দুই ভুবনে তবুও আছি মনের কোনে
যেন কাছে আছি দুজন মিলে মিশে মনে মনে
ভাগ্যকে দোষারূপ কোর না কিন্তু আর
একটুও মন খারাপ কর না যেন
সব সময়ই আছ তুমি আমার সাথে মিলেমিশে
আমার বুকের মধ্যখানে
হয়তো আবার আমাদের দেখা হবে অন্যভুবনে অন্যবেশে
সেদিন দেখো, তোমাকে ঠিক খুঁজে নেব আমি
হারাতে দেবনা আর কোন ছলনাতে।





শুক্রবার, ২৭ জুলাই, ২০১২

বিশ্বাস আর অবিশ্বাস এর টানাপোড়ন


ঝরা পাতা পড়ে থাকে রাস্তার ধার ঘেসে
বিবর্ণ হলুদাভ পাতাগুলো
একটি পুরো বসন্ত কাটিয়ে
সুখের আমেজে।
আমার মস্তিস্ক থেকে ঝরে পড়া সুখের স্মৃতিগুলো
বিছিয়ে রেখেছি জীবনের ফেলে আসা দিনগুলোতে
ঠিক ওই বিবর্ণ ঝরা পাতার মত
কোন একদিন গাছে শোভা পেত কচি সবুজ পাতা হয়ে
বিশ্বাস যখন ছিল গাড় সবুজ দুজনের মাঝে
আজ অবিশ্বাসের কালো ডানা মেলেছে সম্পর্কের আকাশেতে
কালো মেঘে ছেয়ে আছে দুজনার প্রেমের আকাশ
দুজনার সুমধুর সম্পর্ক আজ
নরম সুতোর মত ঝুলে আছে একটুখানি কোথায় যেন
হালকা হাওয়ার অপেক্ষায়
তারপর সম্পর্কের সমাপ্তি
বিবর্ণ হয়ে পড়ে থাকবে রাস্তায়
সম্পর্কের ইতি;
তবু আমরা বেঁচে থাকব দুজনে দুজনার মত
হয়তো সুখের দিনগুলির কথা মনে করে
কিংবা অবিশ্বাসের টানাপোড়নের সেই সব ভয়াল স্মৃতিগুলো ভেবে
যা খুব সহজেই মিটিয়ে ফেলা যেত একটু সংযত আচরণে
মিলেমিশে দুজনে দুজনে।


বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০১২

দুঃস্বপ্ন তোমায় নিয়ে


আমি আর স্বপ্ন দেখতে চাই না
দুঃস্বপ্নের বিভীষিকায় নিদ্রাহীন রাতগুলোকে
বড্ড ক্লান্ত মনে হয় আজকাল
চোখে স্বপ্ন ভর করে বসে বলে
আমি মুক্তি চাই দুঃস্বপ্নের কারাগার হতে
তবু স্বপ্নের কারিগর স্বপ্ন বানিয়ে যাচ্ছে ওপরে কোথায় বসে
যন্ত্রণার আদলে কি এক যন্ত্র দিয়ে ঝুলিয়ে দিচ্ছে আমার দু চোখে
তোমাকে নিয়ে।

ইদানিং ঘুম ভাঙ্গে প্রায় প্রতিরাতেই আমার
স্বপ্নে দেখি অজানা গন্তব্যের যেন কোন এক মরুভূমির বুকে পথ চলছি
একা একা পথ চলতে চলতে ক্লান্ত আমি, পথ হারিয়েছি যেন কোথায়
তৃষ্ণায় ছাতি ফেটে যাচ্ছে আমার তবু হেটে চলেছি
কোন এক সুদূর থেকে ডাকছ তুমি যেন আমায়
আয় আয় আয়।

দুঃস্বপ্নের রাত্রি যেন আর ভোর হতে চায় না
অনন্ত নক্ষত্রের রাতে ঢলে পড়ে চাঁদ পূবাকাশে
বিষাদের ছায়া দীর্ঘ হতে দীর্ঘতর হয়
কোথা হতে জানি তোমার ডাক ভেসে আসে
কোন এক সুদূর থেকে ডাকছ তুমি যেন আমায়
আয় আয় আয়।

ক্ষরণ টের পাই মনের খুব গভীর হতে
তোমায় না পাওয়ার বেদনা আঁচড়ে দিচ্ছে প্রতিদিন
ছোট ঐ হৃদপিণ্ডের টুকরোটাকে;
হ্রদয়ের বিন্দু বিন্দু ক্ষরণগুলো জমাট বেধেছে রক্তজবা লালে
অথচ মানুষ বলে বেদনার রঙ নাকি নীল হয়
তবে আমার হৃদয়ের ক্ষরণে লাল হয়ে উঠছে কেন চারিধার;
আমারই পৃথিবী?
তোমায় ভেবে ভেবে।

কোন এক সন্ধ্যার গোধূলি লগ্নে হাত ছুঁয়ে বসেছিলে
দেখিয়েছিলে স্বপ্ন দুচোখে পথচলার একসাথে
সেই থেকে তোমার স্বপ্নে দিশেহারা
বিবর্ণ, নির্জীব অশ্বথের মত পড়ে আছি আমি
যেন বোধ বুদ্ধিহীন মৃত এক জীবন্ত ফসিল।

একটুকু দয়া কর আমায়
স্বপ্নে আর ডেকনা সেই অজানা কুহু সুরে
লালের বন্যায় আমায় ভাসিয়ে দেবে চিরকাল
এ কেমন বিচারবোধ তোমার
এ কেমন স্বপ্ন দেখাও তুমি আমায়
প্রতিদিন প্রতিরাতে এসে
দুচোখের পাতায়।


মঙ্গলবার, ২৪ জুলাই, ২০১২

স্মৃতিতে চির অম্লান - হুমায়ূন আহমেদ একটি নাম।


নূহাশ পল্লী

একটু আগে বৃষ্টি হয়ে গেছে এক পশলা, অল্পক্ষণের ঝুম বৃষ্টি। মেঘ কেটে গেছে আকাশ থেকে, পঞ্চমীর চাঁদ হেসে উঠেছে আকাশে, গাছের ফাঁক গলে পঞ্চমীর জ্যোৎস্না চুইয়ে পড়ছে কবরের গাঁয়ে - হুমায়ূন আহমেদ স্যারের কবর। দুপুর বেলা ওনাকে চির নিদ্রার অন্ধকার ঘরে শুইয়ে গিয়েছিলেম আমরা সবাই মিলে। এমন একটি রাতের কথা ভেবেই স্যার হয়তো লিখেছিলেন -

আসমান ভাইঙ্গা জ্যোৎস্না পড়ে
আমার ঘরে জ্যোৎস্না কই
আমার ঘরে এক হাটু জল
পানিতে থৈ থৈ।

কবরের চারিধার ধরে সার বেধে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছেন কতগুলো চরিত্র।

হলুদ পাঞ্জাবি পড়ে এসেছে হিমু তার দেখা দেখি আজ হলুদ পাঞ্জাবী গায়ে চড়িয়েছে বাদল।
মাজেদা খালা নিথর হয়ে বসে আছেন কবরের এক মাথায়, খালুজান আজ আর তার বোতল খুলতে পারেন নি, চুপ করে দাঁড়িয়ে আছেন মাজেদা খালার পাশে। খালা একটু পর পর ডুকরে উঠছেন আর খালু পরম মমতায় তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।

রূপা, টুনি আর তিথী বসে আছে কবরের আরেক ধার ঘেসে, টুনির চোখ ভিজে উঠছে একটু পর পর; তিথীর হাত থেকে নীল তোয়ালে নিয়ে চোখ মুছছে বার বার করে। জরী আর পরী আলুথালু বেশে বসে আছে তাদের পাশে।

শুভ্র আর মিসির আলী শুন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন আকাশের দিকে চেয়ে কবরের আরেক কোনায় বসে।

একে একে নতুন নতুন আগন্তুকের আগমন ঘটছে কবরকে ঘিরে। স্যার এর লেখার প্রতিটি চরিত্র যেন আজ স্যারকে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছে নূহাশ পল্লীতে। মহামতি ফিহা এসেছেন অন্যভুবন থেকে, তার সাথে এসেছেন বদি, মজনু, বাকের ভাই।

এভুবন থেকে কবরকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে কতগুলো চরিত্র - হুমায়ূন আহমেদ স্যার এর নাটক আর সিনামায় তৈরি করা কিছু বিখ্যাত চরিত্রের রূপদানকারী ব্যক্তিত্বরা। বহুব্রিহীর মামা আলী যাকের, আয়োময়ের জমিদার মীর্জা সাহেব - আসাদুজ্জামান নূর, ছোট মীর্জার বৌ - সারা জাকের, কোথাও কেও নেই এর মুনা - সূবর্ণা মুস্তফা, এইসব দিনরাত্রির ভাবী ডলি জহুর, মিসির আলীরূপী আবুল হায়াত, দাদী দিলারা জামান তার বহু নাটকের নায়ক জাহিদ হাসান ও মাহফুজ আহমেদ। এছাড়া আছে অব্দুল কাদের, বিপাশা হায়াত, এজাজুল ইসলাম, সালেহ আহমেদ এবং আরো অনেকে।

ওপারের ভুবন থেকে আজ কবর ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন হুমায়ুন ফরিদী, আবুল খায়ের, চ্যালেঞ্জার আর মোজাম্মেল হক।

কারো মুখে কোন কথা নেই, সবার চোখেই জল। শুধু একটু পর পর শব্দ করে ডুকরে উঠছে বাদল।

আজ, স্যার এর যাত্রা অনন্ত নক্ষত্রবীথির দিকে। তার তৈরি করা চরিত্রগুলো বাকহারা আজ স্যারকে ছাড়া। কেও বুঝতে পারছে না কি করবে।

এসেছেন গুলতেকিন, নোভা, শীলা সব ভেদাভেদ ভুলে।
এসেছে শাওন তার দুই ছেলে নিশাত আর নিনিত এর হাত ধরে।

রাতের দ্বিপ্রহরে কবরের পাশে এসে দাড়ালো হলুদ পাঞ্জাবী পড়ে নূহাশ।

সবাই তাকিয়ে আছে নূহাশের দিকে -
যেন জানতে চায় "তারপর কি"?

তারপর কেও কি আমরা বলতে পারি? নির্বাক নূহাশ অপলক চেয়ে থাকে বাবার কবরের দিকে......


“লোকশিল্পী গিয়াস উদ্দিনের লেখা 'মরিলে কান্দিস না আমার দায়' গানটি খুবই প্রিয় ছিল হুমায়ূন আহমেদ স্যার এর। তিনি তার জীবিত অবস্থায় কখনো চাননি কেও তার মৃত্যুতে চোখের পানি ফেলুক। অথচ আজ লক্ষ মানুষের চোখে কান্নার ঢল নামিয়ে দিয়ে তিনি চলে গেলেন অন্যভুবনে।

তার অন্যভুবনে যাত্রা শুভ হোক।

"মরিলে কান্দিস না আমার দায়'" - http://youtu.be/hQkebCvpRXE





বৃহস্পতিবার, ১২ জুলাই, ২০১২

ভালোবাসা


ভালোবাসা কি?
সংজ্ঞা খুঁজে যাচ্ছি
ডিকশনারির পাতা ঘেটে শেষ করে ফেলেছি
নেট এ খুঁজে যাচ্ছি সেই কত কাল ধরে
এখনো জানতে পারি নি
ভালোবাসা কি।

তোমার সাথে কথা না হলে যে কষ্ট হয় বুকে
তার নাম কি ভালোবাসা?
তোমায় না দেখলে মনটা যেমন উদাস হয়ে ওঠে
সে কি ভালোবাসা?
তুমি অভিমান করলে মনের মাঝে যে উথাল পাথাল ঝড় বয়ে যায়
তার নামই কি ভালোবাসা?
তোমায় খুঁজে না পেয়ে যে ছন্নছাড়া দিন কাটাই
তাকে কি ভালোবাসা বলে?
কি জানি
কিছুতেই ভালোবাসার মানে বুঝতে পারি না।

কেও বলে ভালোবাসা একটা অনুভুতি
যা চাইলেও পাওয়া যায় না,
আবার অনেক সময় না চাইতেও পাওয়া যায়
কেও কেও এত বেশি পায় যে ভালোবাসার যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে যায়;
যেমন তুমি।
আবার অনেকে ভালোবাসা না পেয়েও যন্ত্রণায় কাতরায়
ভালোবাসার কাঙাল হয়ে থাকে
যেমন আমি,
তোমার ভালোবাসার পথ চেয়ে থাকি
আর ভালোবাসার মানে খুঁজে বেড়াই
শুধু তুমিই বোঝো না
কিংবা বুঝেও না বোঝার ভান ধরে থাক
আমায় কষ্ট দিতে।

ভালোবাসা কি জ্যোৎস্নার চেয়ে সুন্দর
ভালোবাসা কি কবিতার চেয়ে কষ্টের
ভালোবাসা কি ফুলের সৌরভ
ভালোবাসা কি সাগরের বিশালতা
কিংবা নদীর বয়ে যাওয়া জল
আমি বুঝতে পারি না
আমার কাছে ভালোবাসা মানে
তোমার বাড়ানো হাত আমায় কাছে টানার
কিংবা "শুধুই তুমি"।

আমি কষ্ট কষ্ট সুখ পেয়ে যাচ্ছি
তোমার প্রতিক্ষার প্রহর গুনে
তুমি যেন আবার কষ্ট কষ্ট দুঃখ পেয় না
ভালোবাসার নষ্ট খেলা খেলতে গিয়ে।





শুক্রবার, ৬ জুলাই, ২০১২

কালের বিবর্তন


ভালোবাসার লু হাওয়া মাঝে মাঝে স্তব্ধ হয়ে যায়
যেন ঝড়ের পূর্বাভাস
থমথমে হয়ে থাকে চারিধার
হয়ে থাকে তোমার মুখভার।

মাতাল সময় কাটাই তপ্ত দিনগুলিতে
ভয়ে ভয়ে দিন কাটে,রাত নামে
ঝড়ো হাওয়া এই বুঝি আসে
ওলোট পালোট করে দিতে চারিধার।

একটা সময় ছিল আমাদের
অনেক পুরোনো, সেই চিঠি লেখালেখির যুগের;
ভালোবাসাবাসি হত চোখে চোখে
হঠাত হঠাত করে বছরে
কিংবা ছ মাসে একবার করে।
খুব মাঝে মাঝে চিঠি লিখতাম
দুজনে দুজনে
মাসে একটা কিংবা দুটো অনেক ভয়ে ভয়ে
তোমার চিঠি দেওয়ার ঠিকানা ছিল
আমারই এক বন্ধুর মেস বাড়ি
আর তোমায় আমি চিঠি দিতেম
তোমার সমবয়সী খালার ঠিকানাতে
খুব ভয়ে ভয়ে,
যদি কারো হাতে পড়ে যায়
ভালোবাসার নীল খামে লেখা চিঠিগুলো;
কতই না দ্বিধা সংকোচ, লোকলজ্জা ছুঁয়ে থাকত
আমাদের মাঝে,
যদি লোক জানাজানি হয়ে যায়?
সে দিনগুলোর কথা তোমার কি আজ মনে পড়ে?

আর এখন দেখ যুগের কি আশ্চর্য পরিবর্তন এসেছে
প্রতিদিন এখন আমাদের কথা হয় মুঠোফোনে
কতই না কথা, কত ভালোবাসাবাসি
দুজনে দুজনে;
তবুও কেমন জানি একটা ভয় কাজ করে
যত বেশি কাছাকাছি চলে এসেছি আমরা
যুগের পরিবর্তনের হাওয়ায় ভেসে
পরিবর্তিত হয়ে গেছে যেন আমাদের ভালোবাসাবাসি গুলো।
এখন আমাদের সাত দিনের প্রেমালাপে
তিন দিন কাটে অভিমানে
তিন দিন যায় অভিমান ভাঙ্গাতে
আর একদিন হয়তোবা দুজনে কাছাকাছি
ভালোবাসাবাসি।

সেই পুরাতন যুগের প্রেম আর আজকের প্রেমের মধ্যে
কোন পার্থক্য কি খুঁজে পাও?
সেদিনের সেই নীলখামের চিঠির কোথাও কিন্তু অভিমান ছিল না
ছিল না প্রাত্যহিক মান ভাঙ্গানোর পালা
হয়তো কিছু অনুযোগ রয়ে যেত
তাও খুব হঠাত করে
অনেক দিন না দেখা হওয়ার অন্তরালে।

আর এখন দেখ যুগের পরিবর্তনে কি নিদারুন সময় কাটাচ্ছি
ভয়ে ভয়ে
সাপ্তাহিক ঝড়ের পূর্বাভাস মাথায় করে
দুজনে আর দুজনে।

সে কাল আর আজকের ভালোবাসায় পার্থক্য কতটুকু বলতে পার?


বৃহস্পতিবার, ৫ জুলাই, ২০১২

আমি আজ বৃদ্ধাশ্রমে


কিছু বলতে ইচ্ছে করে
কিছু লিখতে ইচ্ছে করে
আমাকেই নিয়ে
আমার পশুত্বকে নিয়ে
যখন কোন এককালে দিয়েছিলেম
স্নেহ মায়া মমতার বিসর্জন;
এখন সেই পুরোনো দিনের কথাগুলো মনে পড়ে
সেদিন গুলোই যেন আজ আমার নিজের জীবনে
বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে।

আজ আমার সময় হয়েছে তোমাদের ছেড়ে চলে যেতে
নির্বাসনে একা একা সময় কাটাতে
হয়তো কিছু আমারই মত বৃদ্ধের সাথে
বৃদ্ধাশ্রম নামক সেই ভয়াবহ কারাগারে
যেথায় একদিন ঠেলে পাঠিয়েছিলেম আমারই জন্মদাতা পিতাকে
একা একা নির্বাসনে, ওই বৃদ্ধাশ্রমে।

সেদিনের কথা আজো কেন মনে ভাসে
কতই না অনুনয় বিননয় করেছিলেন তিনি
চোখের জলে ভেসে;
ওরে খোকা আমায় যাস নে ফেলে একা
এই নির্বাসনের কারাগারে;
আমি নিশ্চুপ পড়ে রব তোর ঘরের এক কোণে
না হয় এক বেলা কিছু খেতে দিস আমায়
যদি জনকের কথা মনে পড়ে
আর না হয় ভুখা পেটে রয়ে যাব
টেপের পানি খেয়ে, চুপেচাপে ঘরের এক কোণে।
তবুও তো দেখতে পাব তোকে সারাদিনে একটিবারের তরে
আমার দাদুভাইকে একবারের জন্য হলেও তো কোলে তুলে নেব
গভীর ভালোবাসায় জড়িয়ে।
আমার থাকার কোন ব্যবস্থা করতে হবে না তোকে
না তোষক না বালিশ না লাগবে আমার শীতের চাদর
তোর মারা ছেড়া শাড়ি জড়িয়ে পড়ে রব ঘরের এক কোণে
তোর দামী কারপেটের বিছায়ায় শুয়ে
তাতেও তোদের অসুবিধা হলে না হয় পড়ে রব স্টোররুমের অন্ধকার কোণে
তোদের ফেলে দেয়া শত নোংরা আবর্জনার মাঝে একটু ঠাই করে নেব
সারে তিন হাত মাটির বিছানা ফেলে
তোর মায়ের ঘামের গন্ধমাখা শারীর আঁচল বুকে ধরে।
আমায় ঠেলে ফেলে দিস না রে বাপধন
ওই বৃদ্ধাশ্রমের নির্জন কারাগারে।

হায় আজ আমারই সন্তান আমারই পথ ধরে
রেখে দিয়ে গিয়েছে আমায় নির্বাসনে
সেই একই বৃদ্ধাশ্রমের নির্জন কারাগারে
যেথায় রেখে গিয়েছিলেম আমার জন্মদাতা পিতাকে
কোন এক অতীতকালে
সকল স্নেহ মায়া মমতাকে ভুলে
আজ আমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হচ্ছে
আমাকে একা রেখে যাস নে বাবা
তোর ঘরের কোন এক কোনে আমাকে ফেলে রাখ
তবুওতো দেখতে পারব তোকে, আমার দাদুভাইকে
লাভ নেই জানি
এটাই নিয়তি
এটাই কর্মফল আর তার পরিণতি।

ধিক আমায় ধিক
উপরওয়ালার খেলা দেখে গেলাম এ জীবনেই
আমার কর্মফল ভোগ করতে হবে আমাকেই
সকল ভুলের খেসারত দিয়ে যেতে হবে
এই পৃথিবীতেই প্রতিটি মানুষের
কোন না কোন সময়, আমার মতন করে
ফিরে পাবে যার যার কর্মফলের পরিণতি
আজ নিজেকে দিয়ে নিজেই আমি বুঝি।

হয়তো আমার পরবর্তী প্রজন্মগুলো নিজ থেকেই চলে যাবে
বৃদ্ধাশ্রমের কারাবাসে, একটা নির্দিষ্ট সময় পার হলে
কাওকে কিছু না বলে,
শুধু তার পূর্ব কর্মফলের কথা ভেবে
যা সে করেছিল তার পূর্বপুরুষের সাথে
নিম্নগামী ভালোবাসার তবুও হয়তো জেগে রবে
শুধুই মনে মনে।
আমরা কি ঊর্ধ্বগামী ভালোবাসার প্রকাশ কখনো দেখতে পাব?
যখন বৃদ্ধাশ্রমে যাবার কালে সন্তান পিতার হাত ধরে বলবে কখনো হয়তো,
বাবা, তুমি যেও না আমাদের ছেড়ে
কিংবা তার অনুজের অনুনয় হাহাকার হয়ে রবে
দাদুভাই, তুমি থাক না আমাদের সাথে আমাদের অংশ হয়ে
হয়তো সেই সুদিনে দাদুভাই এর চোখ ভিজে উঠবে অঝর লবন জলে
নিম্নগামী ভালোবাসার নাড়িছেড়া টানে।



অর্ধমানব



অর্ধমানব;
আমায় তুমি এই নামেই তো ডাকো, তাই না?
কেন ডাক?
আমি কি আসলেই অর্ধমানব?
অর্ধমানবের সংজ্ঞা যে আমি জানি না।
কি জানি?
হয়তো বা হতেও পারি আমি অর্ধমানব;
তুমি বলেছ যখন।

জানো, মাঝে মাঝে তোমার এই ডাক শুনে
আমি নিজের দিকে তাকাই
নিজেকে বুঝতে চেষ্টা করি
মাঝে মাঝে কিংবা প্রায়ঃশই;
কখনোবা আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকি
অপলক চোখে
যদি সেথা অর্ধমানবের ছবি ফুটে ওঠে।

চোখের সামনে দুটি হাত মেলে দেখি
নাহ্, হাত তো আমার দুটিই আছে
পায়ের দিকে তাকাই, সেথাও দুটি দেখতে পাই
আঙ্গুলওতো গুনে পাই ১০টি করে সেথায়
হাতে আর পায়ে;
মাঝে মাঝে আয়নার সামনে দাঁড়াই
আয়নায় প্রতিবিম্ব দেখি নিজের;
দুটি চোখ, চোখের জায়গায়
নাক, কান, মুখ, গলা সবইতো আছে
নিজ নিজ স্থানে
তবে অর্ধমানব হলাম কিভাবে?
কি জানি?
হয়তো হতেও পারে
তুমি বলেছ যখন।

হঠাৎ কি মনে হতে মনের ভেতরে একবার উঁকি মেরে দেখি
একটু একটু করে হৃদয়ের ভাঁজ খুলে দেখি
নাহ, হৃদয়তো এখনো ধ্বক ধ্বক করছে প্রতি মূহুর্তেই
তোমাকেই মনে করে
দিন দিন যেন তোমারই ভালোবাসার ভাবনা
ছুটে বেড়াচ্ছে আমার লোহিত কণিকা জুড়ে
তোমাকে কাছে পাওয়ার কামনা যেন
প্রতি অনুতে পরমানুতে ছড়িয়ে পড়ছে
আগের থেকে অনেক অনেক গুন বেশি করে।

তবে কি তোমায় এত ভালোবাসার কারনেই
আজ আমি অর্ধমানব এ পরিণত হয়েছি
তোমার কাছে।

যদি তাই হয়
তবে আমি অর্ধমানব হয়েই বাঁচতে চাই
তোমাকেই ভালোবেসে, শুধুই তোমাকে।


বুধবার, ৪ জুলাই, ২০১২

ইচ্ছে


কেমন জানি এক ঘোরের মাঝে কাটছে সময়
কোন দিক দিয়ে সকাল হয়
কোন দিক দিয়ে সন্ধ্যা নেমে রাতের আঁধার ঘনিয়ে আসে
কিছুই বুঝতে পারি না আজকাল
শুধু মনের মাঝে ধোঁয়া ধোঁয়া তোমার মুখ ভাসে
আর আমিও ভেসে যাই কেমন জানি
ভাবনার ভেলায় ভেসে।

এখন আর পথের কোন ঠিক ঠিকানা নেই
যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাই
যেখানে মন চায় ঘুরে বেড়াই
একা একা
সাথে কিন্তু তুমি থাক
হৃদয়ের মাঝে করে তোমাকে বয়ে বেড়াই
যেখানেই চলে যাই
মনের ভেতরের অনেক গভীরে যে তোমার বাস
কখনো বুঝতে পেরেছ আমায়?
নাকি ধরতে পেরেছ আমার শুন্যতার অনুভব
তোমাকে ছাড়া।

সময়ের কারাগারে অনেক অনেক দিন আটকে আছি আমি
এখন কেমন জানি ইচ্ছে করে মুক্তি পেতে
জীবনের কারাগার হতে
হায় জীবন, তুমি ছাড়া শুন্যতায় ভরা;
লোহার গারদের ওপারে যে তোমার বাস
মুক্তির আশায় বসে আছি আমি
তোমার কাছে যাব বলে
পারবে কি আমায় আপন করে নিতে
আজ এতদিন পরে?
পুরোনো ভালোবাসার কিছু ছিটেফোঁটা কি আজো আছে
তোমার হৃদয় জুড়ে,
সেই পুরতন ভালোবাসার কথা কি তোমার
এখনো মনে পড়ে?

তবু শেষ বিদায়ের আগে একবার তোমাকে দেখতে বড্ড ইচ্ছে করে
তোমার বুকে মাথা রেখে সেই আগের দিনের মত করে
একটিবার শুধু একটিবার
গভীর আবেগে জড়িয়ে ধরব বলে
তারপর না হয় চলে যাব আমি
সেই না ফেরার দেশে
চিরদিনের তরে।