মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৩

প্রতীক্ষা

প্রতীক্ষা
-যাযাবর জীবন

সীমান্তের এ পাড়ে আমি
তীর্থের কাক
কাঁটাতারের বেড়ার অনেক অনেক ওপাড়ে তুই
স্বপ্নের নদী যেখানে নিয়েছে বাঁক।

ফাগুনের আগুনে দুচোখ জ্বলে
মচমচে ঝলসানো রৌদ্দুরে বসে
তৃষ্ণায় চৌচির ছাতি, কাঠ ফাটা গরমে
ইতিউতি অবেলার পাখি উড়ে যায়
ঐ তো দেখা যায়
তৃষ্ণার জল পান নদীর ধারায়।

আমার আর সীমান্ত পার হওয়া হয় না,
সমাপ্ত মেয়াদের ভিসার দিকে তাকিয়ে
তীর্থের কাক হয়ে বসে আছি এপারে,
তৃষিত নয়নে চেয়ে সীমান্তের ওপাড়ে;
মিঠে কড়া ভালোবাসা বুকে জড়িয়ে
তোর জন্য
শুধুই তোর জন্য
তীর্থের কাক
একবার সীমান্তের ওপাড়ে
তোকে একনজর দেখার সাধ।

কি জানি? হয়তো দেখা হবে একবার
শুধুই না হয় চোখের দেখা এক ঝলকের
নয়তো ধীরে ধীরে আশাগুলো ঝরে পড়বে
মনের মুঠোর ফাঁক গলে
ঝুরঝুরে বালির মত করে
প্রতীক্ষার পথ চেয়ে চেয়ে;
বুকের গভীর কোণে তবু রয়ে যাবে
একরাশ ভালোবাসার মায়া
খুব সযতনে, তোর জন্য।

সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৩

অতীতের সেই তুই

অতীতের সেই তুই
- যাযাবর জীবন

আকাশের গায়ে গা জ্বালা ধরানো জ্যোৎস্না
তীব্র দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে শরীর
তোর আঁচলের ছায়াহীন
ঢেকে দেয়ার কেও নেই আজ
তুই বিহীন।

আঁধার চিড়ে জোনাকির ঝাঁক
চোখে বড্ড লাগছে
বড্ড প্রাণবন্ত জোনাক ফুল দেখা হয় না
অনেক দিন হয়ে গেছে
দেখতাম দুজনে মিলে
আজ তোর চোখের দিকে তাকাতে ভয় হয়
যদি জ্বলে যাই তীব্র দাবদাহে।

ফাগুনের রঙ লেগেছে প্রকৃতিতে
লালে লালে ছেয়ে আছে কৃষ্ণচূড়ার ডালগুলো
আমার চোখে আগুন
পরাগ রেণু জ্বালা ধরাচ্ছে
অন্ধত্বের নিষক কালো
এর থেকে যেনো অনেক ভালো।

বৈশাখের ঝড়ো নৃত্য মাঝে মাঝে প্রকৃতিতে বয়ে যায়
আমার মনে তুই নামক ঝড় চিরকাল রয়ে যায়
বৃষ্টি নামে প্রতিদিন অঝোর ধারায়
কান্না দেখার কেও নেই
নোনা জলগুলো শুষে নেয়ার “তুই” নামক এক অতীত
ওষ্ঠের ছোঁয়া পায় নি অনেক দিন
নোনা জল শুষে নেয়ার
চোখ হয়ে মনের ভেতর থেকে
শুধু তুই নেই বলে।

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৩

অভিমানের বাস্প

অভিমানের বাস্প
-যাযাবর জীবন

আজকালকার যুগে অভিমান অচল
বোঝে না আমার মতন বোকার দল
অভিমানের বাষ্প আকাশে উবে যায়
শুধু শুধুই নষ্ট সম্পর্কে কষ্ট হয়;
বোঝে না কেও সম্পর্কের দহন
পুড়ে ছারখার হয় কত যে মন
আঘাতের পর আঘাত করে যায়
সম্পর্কে ছিলে যে অতি আপন;

সময় লাগে গড়তে অনেক
একটি মধুর সম্পর্ক
ভাঙতে সেকেন্ড দুজন দুদিকে
রয়ে যায় অভিমানের বাষ্প।


প্রহর

প্রহর
- যাযাবর জীবন

আয়নায় তাকাই না কতদিন হয়ে গেছে
সেখানেও প্রতিবিম্বে তোর মুখ ভাসে
তাচ্ছিল্যের তীব্র চাহনি তির্যক হাসে;
চোখ রাখি না হৃদয়ে এখন আর
যদি প্রশ্ন জাগে তুই কার
উত্তর তো জানা নেই আমার;
আমার দেখা আর বোঝার পালা শেষ হয়েছে কবে
হৃদয় জুড়ে "তুই" চিরকাল রয়ে যাবে
তোর বোঝার পালা শেষ হবে কবে
প্রতীক্ষার প্রহর গুনছি।

নস্টালজিক ভাবনা

নস্টালজিক ভাবনা
- যাযাবর জীবন

বৈশাখের মধ্য দুপুরে
আকাশ মেঘলা হলে
ধুসর রঙ ছড়ায় মনের দেয়ালে
নস্টালজিয়া এসে সব ভর করে
মনের মাঝের গহীন ঘরে
কেনও জানি কাছে পেতে ইচ্ছে করে
বুকের খুব গভীর ভেতরে, তোরে;
আবার সেই আগের মতন করে
মনের নৌকো পাল তুলে
হাল ধরে আপন মনে
পৌঁছোতে চায় তোর নদী তীরে
নস্টালজিক সব স্বপ্নগুলোর ভীরে।

এ কোন মায়ায় জড়িয়েছিস আমায়?
পাগল করে
ভালোবাসার সুতো আলগা করে দিয়ে;
যতই ছেড়ে দিচ্ছিস ততই জড়িয়ে যাচ্ছি
মোহ মাকড়সার জালে
তোকে ছাড়া খাঁ খাঁ করে চারিদিক
বিষণ্ণতার শূন্য হাহাকারে।

জীবনের চলার পথে যদি একবার
রিওয়াইন্ড অপশন পেতাম
তবে নিশ্চিত ভাবে আবার নতুন করে
সব ভুলের অবসান ঘটাতাম
নস্টালজিয়ার অপশন অফ করে দিয়ে
জীবনের পটভূমি ঘুরিয়ে দিতাম
শুধরে নিতাম একটি একটি ভুল গুলোকে
আবার আপন করে নিতাম আগের মতন
খুব একান্ত নিজের করে, আমি তোকে।
ধুসর বিষণ্ণ বিকেলে আকণ্ঠ ভালোবাসার তৃষ্ণা
শুধু আকাশ বর্ষণে কখনো মেটে না
প্রেমিকের পিপাসা কবিতায় কথা কয়
আলুথালু ভাবনারা এগুলো কবিতা নয়
নস্টালজিক সকল ভাবনাগুলো
শব হয়ে শব্দজটের ভীরে পড়ে রয়।



সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৩

নর সমাজের নিষিদ্ধ কথন

নর সমাজের নিষিদ্ধ কথন
-যাযাবর জীবন

নারী নাক্ষত্র জানে আকাশের তাঁরা
সূর্যে সূর্যে হাঁটে
কলাগাছ জানে ষোলো কলা তাঁর
কে কোন গাছে থাকে;
অসহায় ভগবান সৃষ্টিকে দেখে
অসহায় পুরুষ না বুঝে চেয়ে থাকে
পোকামাকড়ে জানে কর্মকাণ্ড
পাতায় পাতায় হাঁটে।

লোহিত কণিকা শিউরে ওঠে
রক্ত প্রবাহ স্রোতে
নিউরন কোষগুলো বোকা হয়ে রয়
দেখে অনুভবগুলো কিভাবে সযতনে ঢাকে;
ওপর ওয়ালাই হতভম্ব না বুঝে তারই সৃষ্টির মন
অনেক সযতনে বানিয়েছিল তাঁদের
ঢেলে দিয়ে প্রাণ মন
চন্দ্র বিজয় করেছে মানব বোঝে না নারীর মন।

প্রতি মুহূর্তে রঙ বদলায়
অসহায় শিল্পী তুলি হাতে হায়
মুহূর্তে বদল চেহারাতে তায়
তুলি হাতে সংশয়
সাদা ক্যানভাসে ফোঁটাতে না পাড়া
নারীবিম্বের অবক্ষয়
কবির ভাবনায় নারী মাত্রই শতরূপা হয়ে রয়
পরাজিত হয় শব্দমালা তবু কবিতা কথা না কয়।

দৈহিক বলে অবলা নারী ছলনায় নরের ভয়
এখানে এসেই নারীর কাছে নরের পরাজয়।


রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৩

সম্পর্কের নিয়তি

সম্পর্কের নিয়তি
- যাযাবর জীবন

কখনই বন্ধু হতে পারি নি আমরা
সম্পর্কটা ছিল বন্ধুত্ব থেকে অনেক বেশি
হৃদয়ে ভালোবাসার কমতি ছিল না কারো
তবু ভালোবাসতে পারি নি, দুজনই
অনুভূতির তীক্ষ্ণতা ছিল ধারালো ছুড়ি
শুধুই হৃদয় চিড়ে রক্তাক্ত করেছি
অনুভবের কমতি ছিল না কারোরই
তবুও দূরে সরে গিয়েছি, দুজনই
যখন ভালোবাসার সময় ছিল
শুধুই অনাহূত লড়ে গিয়েছি
যখন কাছে আসার সময় ছিল
পরস্পর দূরে সরে গিয়েছি
যখন একজন আরেকজনকে জড়িয়ে রাখার কথা ছিল
অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি, দুজনই
আমরা দুজনই
সম্পর্কের কি নির্মম খেয়ালি পরিণতি
নির্ধারিত ছিল আমাদেরই জন্য, এটাই নিয়তি।

রবিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৩

যাযাবর জীবন

যাযাবর জীবন
-যাযাবর জীবন

অপেক্ষার ভয় নেই আজ নতুন বছরে
আজ সূর্য উঠবে না নতুন করে
ছেয়ে আছে চারিদিক মেঘের আঁধারে
কালবৈশাখীর আনাগোনা মনের ভেতরে
অনন্ত যাত্রা পথে পথ দেখা মেঘের ঘর্ষণে
বিজলির চমকিত ঠমকে ঠমকে
চিনে নেয়া অন্ধকারের যাত্রাপথ
কিংবা নিজের ভেতরের কালো অন্ধকার
সময় এসেছে কালরিপু গুলোর দমনে
কিংবা ডুবে যেতে মিশমিশে ঘন অন্ধকার ভুবনে
আলপিন ঠুকছে বেদনার স্মৃতিগুলো
সারা দেহে ক্ষত
রক্তাক্ত ক্ষতে পুঁজ জমে আছে
হৃদয় জুড়ে কত
পথ চলাতে কত পেরেক ছড়িয়ে রাখা
তোমাদেরই উপহার আমার পথে দেয়া
রক্তাক্ত পায়ে তবুও পথ হাঁটা
সময়ের হাত ধরে জীবনের প্রয়োজনে
জীবন থেমে থাকে না কারো জন্য
বছর আসে প্রতি তিনশত পঁয়ষট্টি দিন পর পর ঘুরে
নিয়ে আসে নতুন কোনো বার্তা
তোমাদের জন্য আনন্দের
আর আমার জন্য বেদনার
সভ্যতার দ্বারপ্রান্তে আমি এক অসভ্য নাগরিক
যাযাবরের জীবন বাস্তবতার লড়াইয়ে বিপর্যস্ত
হাত বাড়ালেই গা পোড়ানো বজ্রাঘাত
মন বাড়ালেই অঙ্গারের কঠিন লাল হাত
পথ চলতে চলতে শেষ বেলায় এসে
যাযাবর আজ বড্ড ক্লান্ত।
নতুন বছরের নতুন সূর্য আনন্দের বার্তা আনে
যাযাবরের তিনশত পঁয়ষট্টি দিন একই ভাবে চলে
জীবন যুদ্ধে ধুঁকে ধুঁকে
কি এক অজানা হাতছানির আহ্বানে।

অনুভূতি

অনুভূতি
-যাযাবর জীবন

কামারের কাজ দেখি অবাক চোখে
আগুনের হাপরে তাতানো লোহার টুকরো
লাল হয়ে আসতেই ছন্দবদ্ধ হাতুড়ীর শব্দ
ধীরে ধীরে জড় লোহার পরিণতি
নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু-সামগ্রী
দা, বটি, কোদাল কিংবা শাবল
কি সুন্দর হাতের কাজ
অভিভূত হয়ে দেখি।

অপরদিকে তোর কর্ম দেখি
অনুভূতিহীন চোখে
আমাকে আগুনে না পুড়িয়েই
আঘাতের পর আঘাত করে যাচ্ছিস
কি যে বানাতে চাস, তা তুই ই জানিস
ভোতা হয়ে গেছে অনুভূতিগুলো ঘা খেতে খেতে
শুধু শুধুই লাশের গায়ে ঘা দিয়ে যাচ্ছিস
না কি তুই নিজেই অনুভূতিহীন হয়ে পড়েছিস?

বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৩

বিধাতার বিধান

বিধাতার বিধান
- যাযাবর জীবন

পাঠিয়েছি তো তোরে করে নেংটা
মায়ের জঠরে ভরে
উঠিয়ে নিয়ে যাব আবার নেংটা
মাটির ঘরেতে পুরে।

বিধান পাঠিয়েছি যুগে যুগেতে মহামানবদের হাতে করে করে
সাবধান বাণী দিয়েছি বার বার, পা পিছলে বিপথে না পরে
যার যার সময়ের কালো যুগেতে ফেরাতে পথে হে মানব জাতি
বড্ড ভালোবেসে বানিয়েছি তোদের, সৃষ্টিতে আমার সর্ব শ্রেষ্ঠ জাতি
সইতে পারি না আমি তোদের অর্বাচীন বিপথ গমন
নরের সাথে নারী জুটি দিয়েছি, তবুও করিস বিপথে রমণ
ভালো মন্দের পথ নির্দেশ দিয়ে গেছি তোদের যুগে যুগে
পরে দেখিস নি আমার বিধান, স্রষ্টার স্মরণ কষ্টে ভুগে।

জাতিভেদ করেছিস নিজেতে নিজেতে আমার বিধান ভুলে
ভাল মন্দের বিভেদ ভুলেছিস ঠুনকো কিছু অহংকারের ধোঁয়া তুলে
মানুষ তোরা শ্রেষ্ঠ প্রাণী বানিয়েছি আমি ভুলে যাস কেন
কাদামাটির ঢেলায় প্রাণের প্রতিষ্ঠা মনের মাধুরী মিশিয়ে যেন
চলেছিস তোরা পাপাচারের পথে আমার দেয়া বিধান ভুলে
কেন ভুলে যাস পৃথিবী থেকে আবার একদিন নেব আমি তুলে
আস্তিক আর নাস্তিক নামে বিভাজ্য তোরা মানব জাতি
আমার কাছে ফিরে আসার পর কি জবাব দিবি হবে কি গতি
একটি একটি হিসেব নেব ভালো আর মন্দের পাল্লা ধরে
আবার যেদিন ল্যাংটা শুয়ে থাকবি সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে
নাস্তিকতার দোহাই দিয়ে পাবি না সেদিন পরিত্রাণ
যুগে যুগে নবী রসূল পাঠিয়ে করেছিলাম তোদের সাবধান।

সব ধর্মে একই রূপ আমার বলেছিলাম তোদের বারে বারে
আমার বিধান একই রূপে লেখা সকল ধর্মের প্রতিটা কিতাবে
সব নবী রসূলই ধর্মের কাণ্ডারি পাঠিয়েছিলাম মানবের কল্যাণে
সময়োপযোগী করে যার যার যুগে মানব জাতিরই প্রয়োজনে
আজ তোরা করিস কুৎসা রচনা আমার গ্রন্থ ফেলে
অনেক যে সময় তোদের হাতে দিন রাত দিস ঢেলে
সময় হয় না তোদের কখনো আমার কিতাব পড়ার
জানতে পারতি কি নেই তাতে মানবের মঙ্গল গড়ার।

মানুষ হয়ে বিধান বানাস ধর্ম ব্যবসার নামে
মানবের মাঝে মানব বিভক্ত বেচাকেনা নানা দামে
শুধিস তাদের সৃষ্টি করতে জড় বস্তুতে একটু প্রাণ
প্রমাণ মিলবে তাতেই তোদের কে করতে পারে জীবন দান
এ পৃথিবীতে মৃত্যুর চেয়ে শাশ্বত আর কিছু নেই
ফিরে আসবি মায়াজাল কেটে সে তো রে আমার ঘরেই
নিয়তি লিখে রেখেছি প্রত্যেকের কপালে এটাই আমার বিধান
ফুরিয়ে যায় নি সময় এখনো, ক্ষমাতে আমিই মহান
কালের বিবর্তনে নানা ধর্ম পাঠিয়েছি করতে মানবের কল্যাণ
যুগে যুগে এক একটি নাম হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ আর মুসলমান
যার যার ধর্মের কিতাব পাঠিয়েছি এক একটি নাম দিয়ে
সময় হয়নি তোদের পড়ার একটুকু মন দিয়ে
মূল কথাগুলো একই আছে সব গ্রন্থে - সৃষ্টিকর্তা মহান
যে কিতাবই খুলে দেখিস না কেন - বেদ, ইঞ্জিল, বাইবেল আর কোরআন।

সময় যায় নি এখনো পড়ার আমার পাঠানো সকল গ্রন্থ
ত্রিভুবনের স্রষ্টা আমি - এটাই সব ধর্মের মূল মন্ত্র
আমার বিধান মানতে হবে লেখা আছে প্রতিটি ধর্ম গ্রন্থে
পাপাচারের পথ পরিহার জপন করিস মন্ত্রে মন্ত্রে
যখন দেখি আমার অনুসারীদের ওপর নাস্তিকেরা উঠে লাফে
জেনে রাখিস হে মূর্খ মানব আমার আরশ তখন কাঁপে
ধর্মের নামে হানাহানি বারণ করেছি আমি বার বার
যুগে যুগে মূর্খ মানবের দল একই কাজ করে যায়
কে শোনে কথা কার?
কেন ভুলে যাস এ ত্রিভুবন আমার।
যার যার ধর্মে আমিই সৃষ্টিকর্তা একেক ধর্মে একেক নাম
নানা রূপে তোরা জানিস আমায় - ঈশ্বর, আল্লাহ কিংবা ভগবান।

আস্তিক হোক আর নাস্তিক হোক মৃত্যুতেই তোদের শেষ পরিণাম
আখেরাতের দিনে আবার তোদের দেহে দেব আমি প্রাণ
কঠোর শাস্তি তোদের জন্য আমার নির্দিষ্ট করা
এই কথাটি আমার কিতাবে হয় নি তোদের পড়া?
শুধিতে হবে রে এ পৃথিবীর সকল কর্ম ঋণ
শেষ বিচারে প্রাপ্য পাবি হে মানব, আখেরাতের দিন
স্বর্গ নরক আমারই সৃষ্টি বার বার বলে গেছি
প্রতিটি কিতাবে প্রতিটি ধর্মে সাবধান বাণী দিয়েছি
সৃষ্টির সেরা মানুষ করেছি সে আমারই অবদান
চাই না আমি দিতে রে তোদের শাস্তির কঠোর বিধান
দোযখ করেছি অনেক ভেবে মাত্র সাতটি
বেহেস্ত বানিয়েছি আমার অনুসারীর লাগি বেশী একটি
যুগে যুগে অনেক নাস্তিক আসে ধর্ম অবমাননাকারি
ভরব দোযখ তাদের দিয়ে ঘৃণ্য সারি সারি
দখলিবে স্থান দোযখ জুড়িয়া নাস্তিকেরা কর্ম ফলে
হাসিবে সেদিন আমার আনুসারিগন ভরিয়া ফুলো ফলে।

মাটি হতে তোদের সৃষ্টি করেছি শ্রেষ্ঠ জাতি করে
আবার তোদের ফিরিয়ে আনবো মাটিতে বিলীন করে
হিসেব কষব পাই পাই করে এনে তোদের মাটির ঘরেতে
বুঝবি সেদিন খুব ভালো করে - সৃষ্টিকর্তা কে?

মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৩

কালো ধাগার বন্ধন স্বার্থের বাঁধন

কালো ধাগার বন্ধন স্বার্থের বাঁধন
-যাযাবর জীবন

গাঁথার কথা ছিল সোনালি সুতোয় সম্পর্কের মালাগুলো
মধুর ভালোবাসায় পরস্পর জড়িয়ে থাকার কথা
মধুর সম্পর্কের বিনি-সুতোয় গাঁথা
তবু আজ দেখি স্বার্থের কালো সুতোয় গাঁথা সম্পর্কগুলো
বহমান যুগের চোরাবালিতে আজ যেন ডুবন্ত
মধুর স্মৃতিতে আঠা দিয়ে গাঁথা সম্পর্কগুলো
ফিকে পড়ে যায়।

ভাই আর বোন রক্তের সম্পর্ক ওপর ওয়ালার দান
স্বার্থের পাকানো দড়িতে রক্তের বজ্র আঁটুনি
খুলে যেতে দেখি, দেখি সম্পর্কের অপমান
তুচ্ছ স্বার্থের পরে যে যার পথ দেখে
রক্ত সম্পর্কের সমাপ্তির বিধান;
বন্ধু বান্ধব সুসময়ে চারিধার ঘিরে থাকে
অসময়ে দেখি দুধের মাছি
চাকের মধু শেষ না হতেই উড়ে চলে যায়
যে যার ভুবনে, নতুন আরেকটি সম্পর্ক স্থাপনে।

সুসময়ে আত্মীয় স্বজনে মুখরিত চারিদিক
মধ্যমণি হয়ে থাকি, পাই ভালোবাসার ঝিলিক
অসময়ে নামে মাত্র আত্মীয় সম্পর্ক
প্রয়োজনে হাত বাড়ালে শূন্য চারিদিক;
স্বামী-স্ত্রী দুটি প্রাণী
গাঁটছড়া বেধে দিয়ে পাঠিয়েছেন ওপর ওয়ালা
করে পরিপূরক পরস্পরের
অঙ্গা অঙ্গী জড়িয়ে থাকার অঙ্গীকার বদ্ধ করে
সংসারে অর্থের কিংবা সম্পর্কের তুচ্ছ টানাপোড়ন
মধুর এ সম্পর্ক ইতিহাস হয়ে রয়
ছিটকে দুজন দুদিক পানে।

সন্তান সন্ততি নাড়ী ছেঁড়া ধন
বড্ড কষ্ট করে বাবা-মা করেছেন লালন
আজ স্বার্থের প্রয়োজনে বুড়ো বুড়ির স্থান
এ প্রজন্মের নতুন আবিষ্কার - বৃদ্ধাশ্রম
কালের আবর্তে এ কেমন স্বার্থের প্রয়োজন?
না কি যুগের নামে অজানা এক নতুন বন্ধন।

অপরদিকে বাবা-মা
কি অপার স্নেহেই না মানুষ করেছিলেন
এক একটি সন্তান
ভালোবাসা আর মমতায় সারা দিন মান
তাদের চোখে না কি সকল সন্তানই সমান
তবে কেন ছেলে মেয়ের উপার্জনের নিক্তিতে
ভাগ হয় আজ ভালোবাসার পরিমাণ?
একজন টাকার পাহাড় গড়ে
বাবা মায়ের উচ্ছ্বাস ঝরে
দামী গাড়িতে করে নতুন করে হানিমুন করে
তাঁদেরই অন্য আরেকটি সন্তান সংসারের লাঙ্গল কাঁধে
জীবন যুদ্ধ করে জীবিকার সন্ধানে
পীড়িত, নিপীড়িত বাবা মায়ের সংসার থেকে নির্বাসিত
কুলাঙ্গার খেতাব নিয়ে
যেহেতু কিছু করতে পারে নি জীবনে
অসুস্থ সন্তান ধুঁকে ধুঁকে মরে
ভাই বোন বাবা মা মুখ ফিরিয়ে রয় নির্বিকারে।
দেখেছি আমি সম্পর্কের সবগুলো রূপ
স্বার্থের প্রয়োজনে সকলেই বিমুখ।


এ কেমন ভালোবাসার জোয়ার চারিদিক জুড়ে
স্বার্থের পাল্লার মাপকাঠিতে
সম্পর্কের নিক্তিতে এ কোন চোরা মাপ?
স্বার্থের মূল্যে সম্পর্কের পরিমাপ।

কথা ছিল সম্পর্ক গুলোর বিনি-সুতোয় মালা গাঁথার
তবু বাস্তব জীবনে কালো ধাগায় বাধা হয়ে রয়
স্বার্থের একটু টানেই ছিঁড়ে যেন যায়
মধুর সম্পর্কের মুক্তোগুলো পড়ে রাস্তায় হারায়
ওদিকে জীবনের প্রয়োজনে জীবন গড়ায়।

সোমবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৩

পাপ-ঘড়ি

পাপ-ঘড়ি
- যাযাবর জীবন

ঘড়ির কাঁটা বয়ে চলে টিক টিক করে
সময়কে দেখায় বুড়ো আঙ্গুল
এগিয়ে চলে ধাবমান কালের স্রোতে;
সন্ধ্যে না হতেই রাত গড়িয়ে আসে
আঁধারে চারিদিক ছেয়ে নিতে
অন্ধকারে ঐ রাতের রমণীরা
সাজের জৌলুষে
কাম দেবতার আরাধনা চলে
আধো আলো আধো অন্ধকারের দেশে
টুং টাং মদের গ্লাসে
মৃদু হাসি রাতের রমণীর মুখে
শীৎকার কামের আবেশে
তারপর ভদ্রলোকেরা যে যার ঘরে ফেরে
অনাবিল এক বিজয় উৎসবে
রাতের রমণীকুল সকালের সূর্যোদয়ে
দু-মুঠো চাল কিনে বাড়ি ফেরে
কাজের ছলনায় কামের বলি হয়ে
সময় গড়িয়ে চলে টিক টিক করে
পাপ-ঘড়ির দোদুল্যমান কাঁটায়।

ঘরের মাঝেও শুনি
ঘড়ির টিক টিক ধ্বনি
ফিকে হতে থাকা বিনম্র অন্ধকার
ছেয়ে যায় গাঢ় কালিমায়
সময়ের পথ ধরে
ফাটল ধরা সম্পর্ক গুলো
ধীরে ধীরে অন্ধকারে লুটায়
বিচ্ছিন্নতায় পর্যবসিত সম্পর্ক
স্বামী-স্ত্রী, পড়ে রয় বিছানার দু কোনে
পাপ-ঘড়ির কাঁটা দোদুল্যমান দোলে
নির্বিকার, ঘরের এক কোনে।

রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৩

ভিন্ন দু পথ, ভিন্ন জীবন

ভিন্ন দু পথ, ভিন্ন জীবন
- যাযাবর জীবন

ভিন্ন ধাঁচের জীবন আমার
নদীর জলের মত
এখান ওখান ভেসে বেড়াই
কচুরিপানার মত
অন্য রকম জীবন তোমার
সংসার দায়ে বাঁধা
হাঁড়িকুঁড়ি স্বামীর পায়ে
শেকল তোমার আঁটা।

মনের ধাঁচে দুজনেরই মনটা থাকে বাধা
একের জন্য অন্য জনার নিয়তি আজ কাঁদা।

এক নদীতে ভাসিয়ে নৌকো দুজন আজ দুদিক
ভিন্ন হতেই দোষী হলো নদীর জোয়ার ভাটা
একই পথে রওয়ান দিয়েও ভিন্ন হলো পথ
তোমার বাঁধন সংসারেতে আমার পথ হাটা।

সমীকরণ


সমীকরণ
-যাযাবর জীবন

মেলে না সহজ সমীকরণ
কোনো অংকেরই
হোক তা সরল বা জটিল
কিংবা জীবনের;
লসাগু, গসাগু, ক্যালকুলাস
মেলাতে পারিনি কখনো
পাই এর মান অজানা এখনো;
যাদব ঘোষ, পিথাগোরাস
কিংবা আর্কিমিডিস এর সূত্র
সব গুলিয়ে যায় মাথার ভেতর
একসাথে জোট পাকিয়ে
সমীকরণ মেলানোর চেষ্টায়
অঙ্ক মেলে না
অসমাপ্ত সমীকরণ সমাপ্তি চায়।

সমীকরণ মেলে না জীবনেরও
মেলাতে গিয়ে জীবনে সরল অংকগুলো
অথৈ জলে হাবুডুবু খেয়ে যাচ্ছি
সম্পর্কের মাকড়শার জালে অঙ্কগুলো কেমন আবদ্ধ হয়ে থাকে
একটি জট খুলতে না খুলতেই জড়িয়ে যায়
নতুন করে মাকড়শার লালা গ্রন্থি নিঃসৃত সুতোয়
পুরনো বোনা জালের সুতাগুলো
কখন যে ছিঁড়ে গেছে অন্যদিকে
বুঝেও উঠতে পারি না;
জীবনের লাভ ক্ষতির হিসাব করিনি কখনো
ভেবেছি জীবন তো জীবনই
হয়তো এভাবেই চলে, এভাবেই চলবে;
নতুন সম্পর্কের আগমন হয়তো নতুন কোনো অঙ্কের সূত্র
সে যাদব ঘোষ কিংবা পিথাগোরাস যারই হোক না কেন
নিয়মের সূত্রে ফেলে দিলেই
সূত্রের ধারায় অঙ্কের মিলবেই;
জীবনের শেষপ্রান্তে এসে
আজ নতুন করে বোধোদয় হয়
জীবনের হিসেব মেলাতে গিয়ে
হিসেব আসলে মেলে নি কখনোই
অঙ্ক কিংবা জীবনের সমীকরণে।

এখন আর নতুন কোনো সমীকরণ করি না
অঙ্কের কিংবা জীবনের
পুরনো অনেকগুলো সমীকরণ মেলানো বাকি।

বৃহস্পতিবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৩

নস্টালজিক ভাবনায় তুই

নস্টালজিক ভাবনায় তুই
-যাযাবর জীবন

এই নির্জন রাতে
এই মোহময়ি চন্দ্রালোকে
দূর, বহুদূর হতে
রাতের বাদুর ডানায় ভর করে
ধেয়ে আসে, ধেয়ে আসে
নস্টালজিক সব ভাবনারা;
রাতের নিস্তব্ধতা কেড়ে নিতে
কোলাহল মুখরিত মনের আঙ্গিনায়
কেন আবার নতুন করে একটি মুখ ভাসে?
চমকে তাকাই সে মুখ পানে
ভালো করে চেয়ে দেখি,নতুন কেও নয়
এ যে আমার হারিয়ে যাওয়া “তুই”।

কি যেন সব কথা রাতের কানে কানে
ভেসে আসে, ভেসে আসে
আমায় ভাসিয়ে নিয়ে যেতে
তোর পানে, তোর পানে
নতুন দিনে আবার নতুন করে
নতুন ভাবনার আলো দিতে;
আমি স্থির চেয়ে থাকি
অনন্ত ঐ আলোকের দিকে
নস্টালজিক ভাবনায় তোর রূপের আলোকচ্ছটা
আকাশের গায়ে, চাঁদের সাথে মিলেমিশে
মনের কারাগার থেকে
উঠে আসে, উঠে আসে
নতুন করে আমার মনের মাঝে।

আমি হারিয়ে যেতে চাই না আবার
ঐ কালো অন্ধকারের অতল গহ্বরে।

উন্মত্ত ভালোবাসা

উন্মত্ত ভালোবাসা
-যাযাবর জীবন

হৃদয়ে জ্বালিয়েছ ঘৃণার আগুন
শরীর জ্বলবেই
আগে বোঝনি?
ঝড়ো হাওয়া উড়িয়েছ খোলা চুল
আঁচল সামলাও এখনই
উড়ে যাওয়ার আগে;
কামনার আগুন খেলায়
মেতেছ শরীরের
অঙ্গারে ভয় কি?
বিসর্জনে ভালোবাসা
কামনায় মত্ত মথ
অনুতাপে একদিন পুড়বেই।

ভেসে যাবে দিবাস্বপ্ন
অন্ধকারের বুক চিরে
যৌবনের প্রান্তরে;
হায়েনার দল খুবলে খাবে
কামনা মত্ত শরীর
উল্টোপথে ধরবে হাঁটা;
শকুনের দল উড়ে যাবে
ডানা মেলে
রক্তমাখা ঠোঁটে;
পড়ে রইবে শুধুই
দেহাবশেষটুকু
যৌবনের সমাপ্তিতে।

বালুচরি অন্ধকারে
যখন রইবে না কেও পাশে
আমাকে ডেকো সেদিন
বুকে তুলে নেব অসাড় দেহ
ঠিক আগের মত ভালোবেসে।


নির্ঘুম রাতের বেদনা

নির্ঘুম রাতের বেদনা
-যাযাবর জীবন

অস্বাভাবিক একটি জীবন করছি আমি পার
মরণ থেকে হাতাশ হয়ে থাকি যে মুখ ভার
নির্ঘুম এর ই রাত্রি কাটে থাকি চোখ মেলে
ঘুমের রেশ যে ভর করে সূর্য উঁকি দিলে।

ফজরেরই নামাজ আমি পরি প্রতি দিন
নির্ঘুম রাতের প্রতিদানে সুধি খোদার ঋণ
জোহর কাটে ঘুমের ঘোরে মাগরিব এ তে রাজা
আলসেমিতে আসর নামাজ হয়ে যায় যে ক্বাযা
সূর্য ডুবে রাত্রি আসে মনের মাঝে ভয় যে ঢুকে
নতুন একটি নির্ঘুম এর ই আরেক রাতের আগমনে
আশায় আশায় প্রহর গুনি কখন আবার সূর্য ওঠে
এশার নামাজ পরতে বসি মধ্য রাতে একমনে।

মধ্যরাতের নির্ঘুমেতে দেখায় খোদা অন্ধকার
কবরেরই জীবন যেন পারি আমি করতে পার
তাই মনে হয় রাতের প্রহর একা কাটাই যেন দিন
শোকর মানি খোদার কাছে তার কাছে যে অনেক ঋণ
চাহাস্তের জায়নামাজে মাঙ্গি দোয়া খোদার সনে
মরণ আমার হয়না কেন অস্বাভাবিক এই জীবনে।


আরাধনা

আরাধনা
-যাযাবর জীবন

নিদ্রা দেবীর আরাধনায়
রাত্রি হলো পর
সূর্য দেবের আগমনে
নিদ্রা করে ভর
যন্ত্রণারই রাত যে কাটে
ঘুমের ঘোরে দিন
বাঁচতে পারে এই ভাবে তে
মানুষ কত দিন
সন্ধ্যাদীপের আলোকচ্ছটায়
নিদ্রা যায় যে ভেঙ্গে
নতুন একটি নির্ঘুম এর ই
রাত্রি এলো নেমে।

কর্মযোগী ঘুমের ঘোরে
অর্থ দেবী গেলো উড়ে
ঘোরের মাঝে দিনরাত্রি
কাটে বারো মাস
উদাসীন এক জীবন কাটে
কুড়ে ঘরে বাস
টাকা পয়সা এমন জিনিস
কেও না করে দান
কর্মের বিনিময় খাদ্য
এটাইতো স্বাভাবিক প্রতিদান
কর্ম বিহীন জীবন যাপন
পেট তো মানে না
কর্ম ছাড়া অন্ন সংস্থান
উপায় নেই জানা।

অন্ন দেবী মুচকি হাসে
ক্ষুধায় যায় যে প্রাণ
এতো দেবীর পুজো করে
বিপর্যস্ত জীবন যাপন পেলাম প্রতিদান
জীবন ভারে জর্জরিত
বাঁচতে করি ঋণ
ক্ষুধার পেট যে আর মানে না
একটু অন্ন বিহীন
একই ভাবে জীবন কাটে
মাসের প্রতি দিন
বাঁচতে পারে এই ভাবে তে
মানুষ কত দিন।

মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০১৩

সংজ্ঞা

সংজ্ঞা
-যাযাবর জীবন

মায়া, মমতা
একটু কাছে পাওয়ার আশা

ভুল, ভ্রম
আর মিছে হতাশা

ক্ষরণ, দহন
হৃদয় পোড়ানো জ্বালা

কাছে আসা, পাশে থাকা
তারপর গাঁথা বিচ্ছেদের মালা

আশা, নিরাশা
নাকি দুরাশার হতাশা


না পাওয়ার সকল
যন্ত্রণার ব্যথা
তার থেকে কবি লেখকের
কল্পিত মনের ছবি আঁকা

জ্যোৎস্না রাতে উদাসী মন
হৃদয় মাতোয়ারা
কবিতার শরীরে
শব্দের টাপুর টুপুর বৃষ্টির ধারা

কামনা, বাসনা
আর একটু শারীরিক স্পর্শ
কোনো এক অচেনা রিপুর তাড়নায়
শিহরিত প্রাণ, দোলে মন হর্ষ

মোহ, কাম কিংবা
ষড়রিপুর মাঝে লুকায়িত একটি রিপু
নাকি অন্য কিছু?
হয়তো সপ্তম একটি অজানা রিপু
আমি জানি না
সত্যি সত্যিই আমি জানি না।

ভালোবাসা কি?
সংজ্ঞা খুঁজছি।

সোমবার, ১ এপ্রিল, ২০১৩

ভালোবাসার বৈপরীত্য

ভালোবাসার বৈপরীত্য
-যাযাবর জীবন

হেঁটে চলে সে
হেঁটে চলি আমি
খানা খন্দে ভরা ভাঙ্গা রাস্তায়
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে জীবনের পথ চলা

দৌড়োয় সে
দৌড়ৌই আমি
বহমান সময় ফুরোয় নিমিষে
জীবনের বাস্তবতা

ধুঁকে চলে সে
ধুঁকে চলি আমি
রোগশোক যখন আসে
অস্থির মনটা

ধেয়ে আসে সে
পালাতে চাই আমি
মরণে হাত থেকে
ফাঁকি দেবার উপায় নেই জানা

অপেক্ষার পাল্লায় থেমে থাকে
সময়ের নিক্তি
অসহ্য মনে হয়
প্রতীক্ষার দিনরাত্রি

স্থবির হব আমি
সমাপ্তি ভবঘুরে পথ চলা
যেদিন হাত ধরবি বুকে চেপে
ভালোবেসে কাছে টানে

আর নয়তো সমাপ্তি মরণে
নিষ্ফল জীবন যাপন
শুধু এক টুকরো ভালোবাসার আশায়
তোর কাছ থেকে যা ছিল আমার পাওনা

এখনো চুপচাপ বসে থাকা
পেছন ফিরে দুজন দুজনে
এখনো বৈপরীত্যের পথে চলা
যে যার উল্টো পথে
এখনো অভিমানের কান্না
ভেজানো দুটি চোখে
এখনো ক্ষরণ
দুটি হৃদয় থেকে;

এ কেমন ভালোবাসা?