বৃহস্পতিবার, ১ নভেম্বর, ২০১২

ঘষা কাঁচের আয়না

ঘষা কাঁচের আয়না

- যাযাবর জীবন


ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব
একটু দেখা যায় হঠাৎ করেই
খুব মাঝে মাঝে
কখনো খেয়াল করা হয় না
ভাঙা একটা ঘষা কাঁচের আয়না
ঘরের কোণে একটা পড়ে আছে
নিজেকে দেখার জন্য
কখনো দেখা হয় না
তবুও মাঝে মাঝে চোখ চলে যায়
ঘষা কাঁচের আয়নায়
পথ চলতে
খুব মাঝে মাঝে।

আয়নায় নিজেকে দেখার মধ্যে
আনন্দ খুঁজে নিতি তুই
বড় একটা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
প্রতিদিন প্রায়ঃশই
সকাল কি বিকেলে
সন্ধ্যে কি রাতে;
কি যে আনন্দ পেতিস
সে তুই ই জানিস
নিজেকে ঘুরে ঘুরে দেখতিস
বড় ওই আয়নার মাঝে;
আয়নার ওই প্রতিবিম্ব কি
তোর থেকে সুন্দর কিছু?
নাকি ঈর্ষা ছিল মনে
ঐ প্রতিবিম্বের পিছু?
নিজেকেই দেখে নিজে
সুন্দরের পূজারী
ঈর্ষায় জ্বলে মরে।

আমি খুব মাঝে মাঝে
একটু মুচকি হাসতাম
হয়তো একটু টিটকারি সুরে
কিছু না কিছু বলতাম
আয়না সুন্দরী
কিংবা
আয়না কন্যা
বলে তোকে ডাকতাম
এখন আর খুব ভালো করে মনে পড়ে না
শুধু দেখি পড়ে আছে ঘরের এক কোণে
ঘষা কাঁচের ভাঙা এক টুকরা ওই আয়না।

আজ কি যে হলো জানি না
হঠাৎ করেই যেন নিজেকে দেখার ইচ্ছা জাগলো
আমার মতই হাড়গিলে বুড়ো
ঐ ঘষা ভাঙা আয়নায়
নিজের মুখোমুখি হতে সাধ জাগলো;

অনেক দিন পর নিজের প্রতিবিম্ব দেখছি
আর নিজেই অবাক হচ্ছি
বয়স মানুষকে কোথায় নিয়ে যায় ভাবছি;
আয়নায় কার মুখ দেখা যায় ওটা?
কুচকে আছে মুখের চামড়া
সাদা সফেদ দাঁড়ি কিছু, সারা মুখ ভরা
মাথায় চুলহীন এক লোলচর্ম বুড়া।

ও কি?
কপালে ওটা কিসের দাগ?
ক্ষত হয়ে আছে যেন বুলেটের আঘাত;
নাহ, ভুল বললাম
এটা তো তোর দেয়া শেষ উপহার আমায়
অনেক দিন আগের সেই শেষ দেখায়;
ক্ষতটা শুকিয়ে গিয়েছে অনেক আগেই
তবু হঠাৎ আয়নায় দেখে মনে হলো
এখনো যেন জ্বলজ্বল করছে
এইমাত্র পাওয়া আঘাতেই;
অনেক অনেক দিন পড়
আয়নার সামনে দাঁড়িয়েছি বলে হয়তো
অনেক কথাই মনে পড়ে যাচ্ছে তাইতো;
উফফ...... মনে হলো
এইতো সেদিনের ক্ষত
তোরই দেয়া,
এখনো যেন অনেক তাজা
রক্ত ঝরছে কপাল চুইয়ে
না, না; হৃদয় থেকে
আঘাত তো শরীরে দিস নি কিছু
দিয়েছিলি সব মনে;
ধুর ছাই......
কেন যে দেখতে গিয়েছিলাম নিজেরে
ওই অলক্ষ্মী আয়নার মাঝে
কথা কইতে গিয়েছিলাম
ওই আয়নার সনে?






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন