রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৩

ছবি

ছবি
-যাযাবর জীবন

ছবি আঁকার চেষ্টা করছি
শূন্য মন সাদা ব্যকগ্রাউন্ড
রংতুলি হাতে দ্বিধা
রঙের খেলা খেলিনি কখনো
মাথায় ঢুকছে না
এক খাবলা ছুড়ে দিলাম
হলুদ বেদনা
মেশাই নীল কষ্ট, খুব গাড়ো
মনের মত;
তখনই হাতে ওঠে ধুসর শূন্যতা
চোখ ঝাপসা
কোনো অবয়ব পায় না ছবি
সময় থেমে থাকে
একটু জ্যোৎস্নার আলো মাখি
রংতুলিতে
যাহ সব ঝাপসা
কেমন ঘষা কাঁচের মত লাগছে
ভঙ্গুর আমার চেয়ে বেশি দেখতে
নাহ, কিছু হলো না
কি যেন নেই ওতে
সতেজ সবুজ কোথাও খুঁজে পাই না
তার বদলে পেলাম ক্ষরণের লাল
ছিটিয়ে দিলেম রংতুলি ঘষে
ইশশ, নষ্ট হয়ে গেল সবই
সাদা ক্যনভাসটা কালো হয়ে গেছে
আমার দুষিত রক্তে।
তুলি থেমে যায়
ছবি আঁকা হয় না।

শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৩

লেনা দেনা

লেনা দেনা
-যাযাবর জীবন

কিভাবে ভালোবাসলে?
সোনার কাঁঠি ছোঁয়ালে পদতলে
রুপোর বাঁশি বিষাদ সুরে
অবহেলার নিষ্ঠুর অট্টহাসি
লজ্জায় মুখ লুকোয় হো হো ঝড়ের তাণ্ডব
ঘন কুয়াশা হয়ে জ্যোৎস্না কাঁদে
নীলাভ হয় না আকাশের তারা
মিটমিট করে তাকিয়ে দেখে
লজ্জায় মুখ লুকোয় মেঘের আড়ালে
তোমার তীব্র ভালোবাসার স্বরূপ দেখে
আসলে কিভাবে ভালোবাসলে? তারা বুঝলো না;
আমি বুঝেছি, খুব ভালো করে
ছিল যে মনেতে প্রেমের সাধ
ধুতুরার বিষের চেয়ে মিঠে কড়া স্বাদ
মৌমাছির হুলে মধু চেখেছি
তোমার ফুটন্ত কামনার কড়াইয়ে
মাখামাখি ভালবেসেছি।

কি দাও নি আমায় তুমি? ভালোবেসে;
কয়লার অঙ্গার ঢেলেছ গায়ে
ফোস্কা পড়েনি তোমার মনের মত
পুড়ে ছাই হয়ে গেছে
তীব্র ভালোবাসার দহনে
গ্রীষ্মের রৌদ্র দাহে মাঠে ফেলে
দিয়েছ গা জুড়ানো তপ্ত-বালুর লু হাওয়া
শিমুলের রঙ দেখো নি তুমি
দেখিয়েছ আমায়, হল্কা আগুন লাল
আমার কঙ্কাল দেহের ডালে ডালে
শিমুল ফুটিয়েছ, খুব ভালো;
কাঠঠোকরার নিষ্ঠুর ঠোকর
ক্ষয়ে যাওয়া রক্তাক্ত হৃদপিণ্ডে, মন জুড়ালো;
চরম ভালোবাসার প্রকাশ? সে যাই হোক
তবু মন থেকে একবারও করলে না ক্ষমা;
সয়ে যাচ্ছি সবই আজ প্রাণ হীন দেহে
অবিচ্ছিন্ন ভাবে ভালোবাসার আবেগে
এখনো তোমাকে;
আবার কোনো একদিন শুনবো ভেবে
তোমার মাতানো কথাকলি, ভ্রমরের গুঞ্জনে
হয়তো অনুতাপের লজ্জায় পলাশ রাঙা হবে
আর নয়তো চুকে যাবে মৃত্যুর সাথে সাথে
অপরিণামদর্শী ভালোবাসার সব লেনা দেনা।

বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০১৩

তেলাপোকা, রাজাকার আর ঘৃণা

তেলাপোকা, রাজাকার আর ঘৃণা
-যাযাবর জীবন

পশু প্রাণীর মাঝে সবচেয়ে বেশি করি ঘৃণা
তুচ্ছ এক প্রজাতি নাম তার তেলাপোকা
ঘৃণায় গা রি রি করে
ঘৃণার পরিনামে মনে কেমন এক ক্রোধ জাগে
দেখলেই আরশোলা
পায়ে পিশে মারি যখন দেখি তখনই
যেখানে পাই সেখানেই
স্যান্ডেল পায়ে না থাকলে খালি পায়ে পিষে
ক্রোধের আগুন বাতাসে যায় মিশে
এ যেন আসলে ঘৃণা নয় ক্রোধেরই আরেক ধরণ
কেন এমন হয়, ঠিক জানি না
তবে এটাই আমার নিয়তি করেছি বরণ।

মনুষ্য প্রজাতির মাঝে
এক প্রকার দানব বাস করে
নাম দেয়া হয়েছে তাদের রাজাকার
ওদের নাম শুনলেই ঠিক আমার
মনে ক্রোধ ভর করে তেলাপোকা দেখার;
ইচ্ছে করে পায়ে পিশে মেরে ফেলি তাদের
ঐ তুচ্ছ তেলাপোকার মত করে।

মনেরে অনেক ভাবে শুধাই
কোনোভাবেই জবাবটা মেলে না রে ভাই
কেন আমি কোনো পার্থক্য করতে পারি না
আরশোলা আর রাজাকারের মাঝে
একটা তুচ্ছ ডানায় ভর করা প্রাণী
বসবাস তার আবর্জনায়, কমোডের চিপায় চাপায়
আরেকটা বিশাল এক দানব
মন ভরা পুতি দুর্গন্ধ যুক্ত ডাষ্টবিনের ময়লা
মনুষ্য সমাজ থেকে পালিয়ে বেড়ায়;
দুটোকে দেখলেই ক্রোধ ভর করে মনে
একটাকে পদদলিত পায়ের স্যান্ডেলে
আরেকটাকে পুড়িয়ে মারতে ইচ্ছে করে
কেরোসিনের আগুন জ্বেলে পুড়িয়ে করতে গনগনে কয়লা
কিংবা ঝুলন্ত ফাঁসি কাঠে মনে মনে
প্রতিদিন প্রতিক্ষণ ঝুলিয়ে রাখি ঘৃণার আবেশে।

ঘৃণা আর ঘৃণা মিশ্রিত ক্রোধের মধ্যে
আসলে কি কোনো পার্থক্য আছে
আমি তো আমার মনের ভেতর থেকে কোনো
পার্থক্য খুঁজে পাই না
যেমন পাই না
তুচ্ছ তেলাপোকা আর রাজাকারের মাঝে।

তোমরা কেও পার কি? পার্থক্য করতে
এ দুটো প্রাণীর মাঝে
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।



বুধবার, ২৭ মার্চ, ২০১৩

নারী ও আমি

নারী ও আমি
-যাযাবর জীবন

কেন এত এত প্রশ্ন কর তোমরা?
কেন এত কৌতূহল তোমাদের?
কাকে আমি ভালোবাসি
কাকে আমি চিঠি লিখি
কার জন্য গান বাঁধি
কার জন্য আমার কবিতার সাতকাহন?

কিভাবে তোমাদের শত প্রশ্নের উত্তর দেব?
আমি কি আর আমার মাঝে আছি?
কত নারী জীবনে এসেছে
ভালোবাসা দিয়েছে অঙ্গার জ্বালিয়ে মনে
কত নারী সুখের দিনে এসে সুখ কেড়ে নিয়ে গেছে
কত নারী দুঃখের দিনে কাছে এসে দুঃখের সাগরে ভাসিয়ে গেছে
কত নারী যৌবনের কালে কামাগ্নির ক্ষুধা মিটিয়ে নিয়েছে
কত নারী প্রেমের ছলনায় ঘৃণার অঙ্গার জ্বেলেছে
কত নারী
কত নারী......
কার কথা বলব?

আমার মনের মাঝে নারী নাম আজ বিভীষিকা
ক্ষতের উপর ক্ষত
তার উপর ক্ষত
শুধু নিজ নিজ স্বার্থের প্রয়োজনে
ছিল তাদের বহুরূপী আনাগোনা
কিছু কামের বাসনায়, কিছু সময় কাটানো
কিছু বা স্বার্থের প্রয়োজনে।

সত্যি কথা বলতে কি আজ আর মনে করতে পারি না
কোন নারী সত্যিকারের ভালবেসেছিল
কিংবা আমায় আপন করেছিল;
তবে কেন তাদের কথা মনে রাখব?
তারা তো কখনো প্রেমের দাগ ফেলে নি মনে
শুধুই ছলনা আর প্রতারণা।
কি পাইনি আমি তাদের কাছ থেকে?

আমার কাছে আর কখনো জানতে চেয় না
নারী কিংবা আমার প্রেম কিংবা প্রেমিকা;
যদি জিজ্ঞাস্য কিছু থাকে তবে জানতে চেয়
বৃষ্টির কান্না, হৃদয়ের ক্ষরণ
আর অশ্রুনদীর জল
লবণাক্ত লোহিত সাগরের উৎস
কিংবা হেমলকের বিষের স্বাদ
সর্পের ছোবলের দাগ
মাথা থেকে পা পর্যন্ত।

আমার গান
আমার সুর
আমার লেখা তাদের নিয়ে কবিতা
সকলই ঐসব নারীদের কাব্য-গাথা।

চাঁদের খেলা - গান

চাঁদের খেলা
- যাযাবর জীবন


চাঁদ খেলা করে মেঘের লুকোচুরিতে
বিষাদ ছুঁয়ে থাকে অন্ধকার ঘিরে
তারা কথা কয় নিহারিকার সনে
আমি পড়ে আছি তিমির অন্ধকারে
মন ভালো নেই
আজ মন ভালো নেই
শুধু তুই নেই বলে।
আলোর খেলা অন্ধকারে্
জোনাক জ্বলা রাতের ভিরে
চাঁদের কথা মেঘের সনে
আমি একা অন্ধকারে
মন ভালো নেই
আজ মন ভালো নেই
শুধু তুই নেই বলে।
বিষণ্ণতা আকাশ ছোয়া
মনে মনে তোরে চাওয়া
একা একা কথা বলা তোরই সনে
আমি একা অন্ধকারে
মন ভালো নেই
আজ মন ভালো নেই
শুধু তুই নেই বলে।
বৃষ্টি ঝড়া রাতের শেষে
হাত বাড়িয়ে তোকেই খুঁজে
ভাবনাগুলো কান্না ঝড়ায়
বৃষ্টি জলে চোখ ধুয়ে যায়
মন ভালো নেই
আজ মন ভালো নেই
শুধু তুই নেই বলে।
মনের ভেতর কান্না ছায়ে
তোর কথাটি মনে হলে
অপেক্ষারই প্রহর কাটে
একা পড়ে অন্ধকারে
মন ভালো নেই
আজ মন ভালো নেই
শুধু তুই নেই বলে।


স্বপ্নের ঘর - গান

স্বপ্নের ঘর
-যাযাবর জীবন


মন পবনের নাওরে
তুমি কোথায় কোথায় যাও
কোথায় কোথায় ঘুইরা বেড়াও
কোথায় পাল ওড়াও
অন্তরেতে চাইয়া দেখ বসত তাহার তোমার মনে
মন পবনের নাও ভাসাইয়া খোঁজো কেন নদী বনে
নদী বাইয়া একুল ওকুল কাহার পানে চাও
মনের ভেতর তারে রাইখা ঘুরো হাওর বাও।

মনের মাঝের স্বপ্ন গুলায়
কারে লইয়া বান্ধ ঘর
কারে লইয়া বসত গড়
বালুর ঘরে বাসা তোলো
ঘুমের থাইকা উঠলে পড়ে
আকাস থাইকা জমিন পড়
কেন রে ও মন শুধু শুধুই
অমন অলিক স্বপ্ন দেখ
মনের মাঝে আছে সে যে
ভালো কইরা ঝাক মার
পাইলে তারে মনের ঘরে তালা দিয়া বাইন্ধা রাখ।

স্বপ্ন গুলি ভাইঙ্গা গেলেও ভালোবাসার মানুষ থাকে
মনের মত প্রেম দিলে
বান্ধা পড়ে প্রেমের ঘরে
স্বপ্ন দেইখা প্রেম হয় না অলিক কল্পনায়
স্বপ্নের ঘর উইড়া যায় একটুখানি হাওয়ায়
প্রেমে যদি শক্তি থাকে
ফস্কা গিরু আইটকা বসে
ভালোবাসার শক্তি যত
প্রেমের ঘরে বসত তত
মনের মাঝে প্রেম থাকলে
যত্নে তারে রাখো
ভালোবাইসা ঘর বাইন্ধা
সুখের ঘরে থাকো।

পুণ্যের বাত্তি - গান

পুণ্যের বাত্তি
-যাযাবর জীবন

যাইতে চাইনা ওরে আমি
ছাইড়া এই সুন্দর পৃথিবী
যাইতে চাই না আমি ঐ
মাটিরও কবরে
চাই না যাইতে আমি ঐ
সাড়ে তিনহাত ঘরে।

কয়দিন আইছি আমি ধরায়
জড়াইলাম পৃথিবীর মায়ায়
চক্ষু ভইরা আমার কিছু দেখা হইলো না
ছাইলা পাইলা পরিবাররে দেখবার পারলাম না
চারিদিকে কত কিছু
আছে যে সুন্দর
মন ভইরা দেখার আগে
যমে দেখায় ডর।

দিনের বেলায় একে একে
ভির জমায় চারিদিকে
বইসা থাকে আমারে ঘিরা
আপন জনা রা
আপন লাগে তখন সবাইরে
ঘিরা থাকে যখন আমারে
যেন আমায় পরপারে
যাইতে দিব না
রাইত হইলে একে একে
ফিরা যায় যে
যে যার ঘরে
বাত্তি জ্বাইলা পইরা থাকি একলা বিছনায়
পরপারে আমার এখন যাইতে না মন চায়।

হঠাত হঠাত যেন দেখি
যমে আইসা পাশে বসে
আলো আ ধে কেমনে হাসে
বইলা যায় যে তোরে বেশী
সময় দিব না
হঠাত কইরা একদিন আইসা
নিয়া যাব তোরে আমি
অন্যভুবন তোর বিহনে
পূর্ণ হবে না।

নিয়তির বিধান আমার মন যে মানে না
আমি এখন ঐ ভুবনে যাইতে চাই না
সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে
রইব কেমনে অন্ধকারে
সেইখানেতে কেহ আমায় বাত্তি দিব না
ওরে আমি সেই ঘরেতে যাইতে চাই না।

যমের পায়ে একটু ধরি
চাই যে সময় বেশি করি
সামান বান্ধার রইছে বাকি
কাটান দিতে পাপের বোঝা
আর কয়দিন সময় পাইলে
বাত্তি কিনা রাখমু ঘরে
তখন আমার ডর লাগব না
যাইতে মাটির ঘরে
পূন্যেরও বাত্তি আমি
জ্বালাইমু কবরে।

নিয়তি .........
হায়, নিয়তি রে.........
শেষ হইয়া গেলে সময়
পুণ্যের বাত্তি খোঁজে
সময় থাকতে কেহ রে ভাই
এই কথা না বোঝে।

মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০১৩

ভেতর বাহির - গান

ভেতর বাহির
- যাযাবর জীবন


রূপ দেইখা আইজ হইলি পাগল দেখলি না রে মন
রূপ কি আর চিরস্থায়ী? ভাঙলি প্রেমিক মন
রূপের ছটায় আইজ চোখ ঝলসায়
হইলি পাগল ঐ রূপের ভরসায়
বয়স হইলে যাইব কই রূপ
আয়না তে যে দেখবি স্বরূপ
খুঁজবি তখন মন
ও তোর খুঁজবি প্রেমিক ধন
রূপ দেইখা আইজ হইলি পাগল দেখলি না রে মন
বাহির দেইখা প্রেমে মজলি ভেতরটারে দূরে রাখলি
চকচক দেইখা সোনার লাহান দিয়া দিলি মন
বাঁধলি সোনার ধন
দেখলি না রে ভেতর টারে কয়লা নাকি সোনা ঝরে
দোষ দিব আমি কারে বল রে সবাই একই ভুল করে
বাহির দেইখা প্রেমে মজে
দেখে নারে ভেতরটারে
ঘর করিতে ভেতরটারে দেইখা প্রেমী আঁতকায় ওঠে
সুন্দর চামড়ার নীচে পায় যে কালো একটা মন
ও হায় কালো একটা মন
খুঁজে তখন পাগল হইয়া
পুরাণ প্রেমিক ধন
বাহির দেইখা প্রেমে মজলি দেখলি না রে মন
সোনা দানা টাকা পয়সা দেইখা হয় যে মাথা আউলা
ঠেইলা ফালায় প্রেমিক রে তার ছিল যে তার প্রেমে বাউলা
মনে লইয়া বড় আশা বড় ঘরে বান্ধে বাসা
দুই দিনে তে ভুইলা যায় যে দিছিল যে প্রেমের ভরসা
কোথা যায় যে প্রেমের কথা কোথায় রয় প্রেমের বাস
প্রেমিক তাহার বাউলা হইয়া ঘুইরা বেড়ায় হইয়া হতাশ
আজকের আমীর কালকের ফকির জানে নারে মানুষ জন
চক্র ঘুইরা ঘুইরা চলে নিয়তিরই নিঠুর কলে
টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ি থাকে হারায় যে নিয়তির কোলে
বোধোদয়ের উদয় হয় যে পুরাণ প্রেমিকের খোঁজে পরে যে
হায়রে কেমন মন
ও হায় নিয়তির বাঁধন
ধন দেইখা ঘর বাঁধিলি
প্রেমের ডালি পায়ে ঠেলিলি
এইতো মানব মন
ও হায় নিয়তির লিখন
খুঁজে তখন পাগল হইয়া
পুরাণ প্রেমিক ধন
টাকা দেইখা প্রেমে মজলি দেখলি না রে মন
মানুষ হইয়া মানুষগুলা প্রেমের ডালায় লাথি মাইরা
বাইছা লয় যে ধন
ওরে বাইছা লয় রে......
ভুলে ভরা এক নিয়তির বাঁধন
সাইজি বলে.........
অন্তর দেইখা বাধিস প্রেমের ঘর
রূপ না দেইখা মনটা দেইখা খুইজা নিস তোর বর
টাকা পয়সা হাতের ময়লা
আজকে সোনা কালকে কয়লা
ভুল করিস না লোভে পইড়া
বান্ধিস রে ঘর প্রেমিক দেইখা
বান্ধিস সুখের ঘর।
টাকা দেইখা প্রেমে মজলি দেখলি না রে প্রেমিক মন............
বাহির দেইখা প্রেমে মজলি দেখলি না রে ভেতর মন............
রূপ দেইখা আইজ হইলি পাগল দেখলি না রে সাদা মন...............

কবরের দেশে - গান

কবরের দেশে
- যাযাবর জীবন


ওরে জাইজ্ঞা থাকি আন্ধার রাইতে
সওয়ায় নিতে চক্ষুটারে
মনের মইধ্যে ডর যে লাগে
যাইতে হইব মাটির তলে
একলা একলা থাকতে হইব
সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে
অন্ধকার............
বড় কঠিন অন্ধকার.........

সরাই নিছি নিজেরে ও রে
তোমগো থাইক্কা অনেক দূরে
একলা একলা থাকি আমি
সওয়ায় নিতে নিঃসঙ্গতারে
একলা একলা থাকতে হইব
সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে
অসহায়............
বড়ই অসহায়.........

ও হায় বিছনা বালিশ ছাইড়া দিসি
মাটির মইধ্যে সিথান রাখি
মাটি ই যে হইব আমার
নিত্য দিনের সাথী
আরাম আয়েশ দুই দিন এর ই
বুইজ্ঝা গেছি অখন আমি
রঙ্গিন এই দুনিয়াদারি
দুই দিন এর ই বাহাদুরি
থাকতে হইব সারা জীবন
সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে
সিথান বিহীন মাথার পরে
সিলাই বিহীন এক কাপড়ে
তবু রে মানুষ.........
কত অহংকার
হায় রে মানুষ তোর কতই না
কাপড়ের বাহার
হায় রে মানুষ
নাই রে তোর ভাবনা ওরে
পরের দুনিয়ার
ওরে ও মানুষ
একবার ভাবিস হইব রে কি গতি তোর
পরের দুনিয়ার

অন্ধকার............
বড় কঠিন অন্ধকার.........
একলা একলা থাকতে হইব
সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে
সিথান বিহীন মাথার পরে
সিলাই বিহীন এক কাপড়ে
অসহায়............
বড়ই অসহায়.........


সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০১৩

স্বাধীনতার বীজ বাঙালির রক্তে

স্বাধীনতার বীজ বাঙালির রক্তে
- যাযাবর জীবন


পঁচিশে মার্চের শহীদদের স্মরণে –




একাত্তুরের কালরাত
ভয়াবহ পঁচিশে মার্চ
স্তব্ধ নিশিরাত
ট্যাঙ্কের ঘরঘর শব্দ শুনি
আঁতকে ওঠে মানুষ
আঁতকে ওঠে ঘর বাড়ি
একটানা মর্টারের বুম বুম ধ্বনি
রাজারবাগের পুলিশ লাইন
সার দিয়ে ঘুমিয়ে বাংলার পুলিশ বাহিনী
মেশিনগান আর বন্ধুকের শব্দে জেগে ওঠে পৃথিবী
গ্রেনেড চার্জ আর ট্যাঙ্কের গোলাগুলি ধ্বনি
রক্তের বন্যা ভেসে যায় ভূমি
নরপশুর উল্লাস হো হো হাসি শুনি
মানুষ না পশু তারা আজো বুঝিনি।

সহায় সম্বলহীন নিরীহ জনগণ
বিছানো ছালায় সার দিয়ে শুয়ে ছিল রাস্তায় সেদিন
শীতার্ত রাতে জড়িয়ে একে অপরকে
শিশু ওম নেয় মায়ের বুকেতে
হঠাৎ ট্যাঙ্কের ঘর ঘর ধ্বনি
চমকে ওঠে মানুষজন বুম বুম শুনি
পিশাচেরা নির্দয় মেশিনগানের গুলি
কেড়ে নেয় কত প্রাণ সে রাতে অগুনতি
প্রাণহীন মায়ের বুকে শিশু লুটায় কাঁদে
গুলিতে ছিন্নভিন্ন শিশুর দেহ, স্তব্ধ মা বসে রয়
এদিক ওদিক পড়ে থাকা শত মানুষের লাশ
কারো মা, কারো বোন, স্বামী সন্তান আর বাপ
স্তব্ধ তারা, স্তব্ধ পৃথিবী
থেমে থাকে সময় কাঁদে ধরিত্রী
পিশাচদের মুখে হায়েনার হাসি
গুড়ো করে দিয়ে স্বাধীনটার আশা
স্তব্ধ করেছিল সেদিন বাঙালির ভাষা
ঘরে ফেরে তারা মুখে একরাশ হাসি
মানুষের রক্তে পিশাচের হোলি।

পেরেছিল কি তারা স্তব্ধ করতে বাঙালির আশা
দামাল বাংলার ছেলেদের বুকে ছিল না সেদিন কোনো ভাষা
শুধুই ধিকি ধিকি আগুনের জ্বালা
হারিয়ে প্রিয়জন বাঁধে নতুন করে মন
রুখে দিতে হায়েনাদের হো হো করা হাসি
শাবাশ বাঙালি;
মাত্র নয় মাসে দেশ ছাড়া করে
পিশাচের দল সব লেজ গুটে দৌড়ে
পালিয়ে যায় তারা নিজ নিজ ঘরে
বিজয়ের বীজ বপন হয় বাংলা মায়ের কোলেতে
মাত্র নয় মাস
মাত্র নয় মাসের অঙ্গার সইতে না পেরে
পালিয়ে গেল পিশাচেরা অন্ধকার গর্তে।

নয় মাস ধরে
পঁচিশে মার্চের শোধ নেয়া হয়
তবু সেই সব শহীদরা আজো জেগে রয়
ষোলো কোটি বাংলার মানুষের মনে
জেগে আছে আজো সেই ঘৃণার আগুন
সত্যিকার বাঙালির হৃদয় আর মনে
নরপশু পিশাচ তোরা পাকসেনা
মানুষ রূপী তোরা বর্বর হায়েনা
বেয়াল্লিশ বছর তোদের মুখে থুতু ছিটিয়েছি
পরিণামে তোদের দোসর
ঐ রাজাকারদের আজ ফাঁসি দিয়েছি
শাহবাগ চত্বরে বসে
মাত্র কিছু বাংলা মায়ের দামাল ছেলে।

তবু কোথায় যেন বুকের ভেতর বাজে
তিরিশ লক্ষ শহীদের আত্মারা কাঁদে
বাংলার মাটির আনাচে কানাচে
ভুলবো না তোমাদের হে মহান
যতদিন বাঙালির দেহে আছে প্রাণ।



রবিবার, ২৪ মার্চ, ২০১৩

ঘৃণ্য পাক হানাদার তোদের করে যাই ঘৃণা


আজকের এই কালরাতে আর কোনো লেখা নয়, শুধু পঁচিশে মার্চের ঐসব শহীদদের স্মরণে –


ঘৃণ্য পাক হানাদার তোদের করে যাই ঘৃণা

- যাযাবর জীবন

হঠাত করেই
ঠা ঠা ঠা ঠা বুম বুম
গুলি চলছে বৃষ্টির মত
ঢাকার রাজপথে, অলিতে গলিতে
মানুষগুলো ঘুমিয়ে ছিল শান্তির পরশে
যদিও একটু দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভয়
ছিল সারাদিন ময়
কি জানি কোথা থেকে কি হয়!!!

নববধূ শুয়েছিল বিছানার পরে
নতুন বিবাহের আবেশ ঘোরে
স্বামীর বুকের ওপর মাথা রেখে
কথা বলছিল প্রেমভরা মনে
খুব আস্তে আস্তে গুনগুনে
প্রেমের যত কথা.........
হঠাৎই ঠা ঠা শব্দে গুলির বৃষ্টি
স্বামীর লাশ বুকে পড়ে
মেহেদীর লাল রঙ মুছে গেল লাল খুনে
কিংবা স্ত্রীর লাশ বুকে ধরে
বোবা স্বামী গুমরে মরে।

সন্তান বুকে ধরে ঘুমিয়েছিল মা
সারাদিন ক্লান্তিতে এলিয়ে দিয়ে গা
শিশুটাকে বুকের পরে আগলে ধরে
ঠা ঠা গুলির শব্দে চারিদিক কেঁপে ওঠে
জানালার শিক গলে কোথা থেকে একটি বুলেট
কেড়ে নিলো বুকের ধন
লাল রক্তে ভেজা বিছানা
হু হু কেঁপে ওঠে মায়ের গা
ডুকরে ওঠে সন্তানকে বুকে ধরে;
কিংবা হয়তো ঘুমন্ত সন্তানের জানা ছিল না
কেন বুকের দুধের বদলে মুখে লেগেছিল রক্তের স্রোতধারা
মায়ের বুক চিরে বেরিয়ে যাওয়া বুলেটের ঘা
মা হারা করেছিল ঐ শিশুটারে।

রাজারবাগ পুলিশ ব্যারাকে
ঠা ঠা রবে বুলেট ঝরেছে
তাণ্ডব চালিয়ে চলে গেছে পাক সেনা
রক্তের বন্যা ভাসিয়ে দিয়ে
শত শিশুকে এতিম করে
কত স্ত্রী কে বিধবা করে
পৈশাচিক এক আনন্দ খেলায়
ঠা ঠা ঠা ঠা বুলেট আর গ্রেনেড
নির্লিপ্ত চালিয়েছিল যেন অবহেলায়
হানাদার ঐ পাক সেনাদের দল
আজকের এই পঁচিশে মার্চের রাতে।

অনেক কেঁদেছে সন্তান হারানো মা
অনেক কেঁদেছে স্বামী হারানো স্ত্রী
সেদিন ছিল না জানা তাদের কি কারণে
তবু আজ করে যাচ্ছে তাঁদের স্মরণে
বর্বর এ হানাদার বাহিনী সর্বস্ব কেড়েছে
শুধু মাঠ ঘাট প্রান্তর জুরে কান্না ঝরেছে।

ঝরেছে হাজার জীবন মুছে গেছে সিঁদুরের লাল
তবু পারে নি রুখতে তারা স্বাধীনতার চাঁদ
মুক্তি-সেনারা এসে হয়েছিল তাঁদের ঢাল
ঝরে যাওয়া চাঁদ তারা জাগবে না কোনো দিন
তবু সেদিনের হাজারো শহীদের স্মৃতি বাংলার বুকে সদা রবে অমলিন।

মানুষ নামের অমানুষ তোরা
ধিক তোদের ধিক ঐ পাকসেনা
বাংলার মাটি যতদিন থাকবে
প্রতিটি বাংলাদেশী তোদের করে যাবে ঘৃণা।




শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০১৩

ভালোবাসায় ঘৃণার সাপ

ভালোবাসায় ঘৃণার সাপ
- যাযাবর জীবন

ভালোবাসার তীর ছুঁড়েছিলি একবার
বিদ্ধ করেছিল
ক্ষত হয়েছিল
কিছু রক্ত ঝরেছিল সুখের অনুভূতিতে
আর কিছু আনন্দাশ্রু তোকে পাওয়ার আশায়;

ঘৃণার ছুরি বসিয়েছিস বার বার
রক্তের বন্যায় তোর বন্যতা থামে নি
পৈশাচিক এক উল্লাস দেখেছিলাম তোর চোখে
মরমে মরণ হয়েছিল আমার সেদিন থেকে;

সরে এসেছিলাম সেদিন তোর কাছ থেকে বহুদূরে
তবু ঘৃণা উগরানো আজো থামে নি
আর কত বিষে নীল করবি?

শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৩

একাকীত্বের নাবিক

একাকীত্বের নাবিক
- যাযাবর জীবন

একাকীত্বের গভীর রাতে
কষ্টেরা ধেয়ে আসে
রিপুর সন্ত্রাস রক্তের ভেতরে
ছিন্নভিন্ন করে দেয় নিজেই নিজেরে
ক্রোধের ডামাডোল বাজে মনের পর্দায়
নির্ঘুম চোখের যন্ত্রণায়
হৃদয় গভীরে;
স্মৃতির অতল কারাগার থেকে ভেসে আসা
কোনো এক ললনার মুখচ্ছবি ভাসে
কোন এক অচিন যুগে জন্ম নিয়েছিল
প্রেমের নৌকোর কোনো পথভুলা নাবিক
জলের ওপর বসে স্তব্ধ জলে ভাঙ্গা তরী বাইছিল
স্বপ্নিল ভালোবাসায়
আজো নোনাজলে হৃদয় ভাসায় বোবা কান্নায়।

লোহিত সাগর

লোহিত সাগর
-যাযাবর জীবন

এক ফোঁটা
দু ফোঁটা
তিন ফোঁটা
অবিরাম ঝরছেই
জন্মের পর থেকে
কারণে আর অকারণে
ব্যথা আর বেদনায়
দুঃখ কষ্ট আর অপমানে
অশ্রু কিংবা রক্ত
ফোঁটায় ফোঁটায়
স্বাদে লোনা
লোহিত সাগরে রক্তিম আভা
লোনা লাল জল
প্রতিচ্ছবি ক্ষরণের।

মানচিত্র বদল বয়সের দোষে
প্রেমের হাওয়া
ছোঁয়াছুঁয়ি একটু বেশি
কামনার ঢেউ আঙুলের স্পর্শ থেকে
নেমে আসে চুম্বনে ঠোঁটে
স্পর্শ বুকে, চেপে ধরা ওষ্ঠ অধর
শিহরিত তনু মন
কামাগ্নির বিগ ব্যাং
তারপর শান্ত
উড়ে যায় উড়াল পাখি
কিছু পালক পড়ে রয় স্মৃতি
তারপর......
এক ফোঁটা দু ফোঁটা তিন ফোঁটা
বানভাসি অশ্রু আর রক্তের মিলিত
লোহিত সাগর
প্রতিচ্ছবি স্মরণের।

স্মৃতির ভাঁজ খুলে দেখি সেই সব চেনা মুখ
টরেটপ্পার দিনগুলো হতে আধুনিকতার এই যুগ
বাবা মা ভাই বোন স্বামী স্ত্রী সন্তান
সকলেরই ছিল কিছু না কিছু অবদান
লোনা জল সাদা কিংবা লাল
বয়ে গেছে আমারই হৃদয় চিরে
মিশেছে গিয়ে লোহিত সাগরে
বাস্তব জীবনে।

বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ, ২০১৩

আলো অন্ধকার

আলো অন্ধকার
-যাযাবর জীবন

আলো কি? সূর্য রশ্মি
ক্যান্সারের ক্ষতের জন্য অতি বেগুনি
কামনাতপ্ত দেহের আগুন নেভাতে না পারা
কাঠ কয়লার বুনকো ধোঁয়া
অশ্রাব্য গালাগালির রাজনীতির আলোকচ্ছটা
কাশফুল, ঝাউ-বন মন উদাস করা
মায়ের কোলে শুয়ে থাকা শিশুর মনকাড়া ছবিটা
নাকি প্রেম, বাউলের একতারা সুরের বন্যা
কিংবা মন উদাসী এক কবিতা।

রাত্রি কাকে বলে? অন্ধকারের আবেশ
পুড়ে যাওয়া পাতিলের তলদেশ
পৃথিবী থেকে আলোর বিদায়
নাকি আমার ক্ষয়ে যাওয়া নির্ঘুম চোখ
এইতো আছি বেশ
নয়তো চিরস্থায়ী বাসস্থান হবেইতো একদিন
অন্ধকার ঐ কবরের দেশ।

জড় পদার্থ

জড় পদার্থ
- যাযাবর জীবন

আকাশে ডানা মেলা হংসমিথুন ছায়া
মেঘ আর রৌদ্দুরে দেখা আবছায়া
উড়ছিল পাখা মেলে
কিংবা মেঘেরা উড়ে চলে
কালো হয় না মনের মেঘের মত
ছায়া পড়ে রয়
বৃষ্টি ঝড়ে না;
তাণ্ডব ঝড়ের আকাশে বাতাসে
মনের ভেতরের উথাল পাথাল
একাকার.

আজকাল যেন কোন কিছুর বিভেদ চোখে পড়ে না
জড় পদার্থে কি প্রাণ আছে?
চোখ আছে
কান আছে
ঘ্রাণেন্দ্রিয়তে পচা কিছু ডাস্টবিনের গন্ধ
কিংবা পচে যাওয়া হৃদয়ের
মন বলে কোথাও কিছু নেই
তাই বিবেকের আঁচর কোথাও কেটে বসে না
হংসমিথুন ছায়া আমার দেখার কথা নয়
শকুনের ছায়া মনের ভেতর....

মানুষটা মরে গেল কেন?

বুধবার, ২০ মার্চ, ২০১৩

আমড়া কাঠের ঢেঁকি

আমড়া কাঠের ঢেঁকি
- যাযাবর জীবন


স্রোতের অনুকূলে ভাসিয়ে গা
যথা ইচ্ছা তথা যা
নদীর কিংবা জীবনের
কুলে পৌঁছুতে সময় লাগবে না
কিংবা লক্ষ্যের
তাই তো করতে চাই আমরা
বন্ধ করে চোখ
বন্ধ মুখ
বন্ধ বিবেক আর মনুষ্যত্ব
তীরে তরী ভেড়ানোতেই আমাদের লক্ষ্য।


প্রতিকুলে সাঁতরাতে পারে ক জন?
কষ্ট সইতে?
ভার বইতে?
তবু কলুর বলদ হতে হয়;
কারো অল্প সময়ের জন্য
বুদ্ধি মাথায় খেললে স্রোতে গা ভাসিয়ে
ভার লাঘব;
আর কারো টেনে যেতে হয় বোঝা
বিসর্জন না দিতে পারায় মনুষ্যত্ব;
লোকে দূর থেকে বলে আঙ্গুল তুলে
আমড়া কাঠের ঢেঁকি।


মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০১৩

অবাস্তব স্বপ্ন

অবাস্তব স্বপ্ন
-যাযাবর জীবন

হলুদ বেদনারা রঙ ছড়াচ্ছে
রক্তিম লালিমায়
ভাংছে ভেতরে কোথাও
হৃদপিণ্ডে আঁচর
নিশ্চুপ চেয়ে দেখা অপেক্ষার প্রহর
ফোঁটায় ফোঁটায় চুইয়ে পড়ছে
লাল রক্ত;
তাতে কি?

স্বপ্ন বুনে কি আর ঘর বাঁধা হয়?
ইট কাঠ আর কঙ্কাল কাঠামো
ছিল না কিছুই বুননে স্বপ্ন
সাধ ছিল কিছু হাড় জিরজিরে
রক্ত মাংসের কঙ্কাল ঘিরে
চোখ মেললেই পদদলিত হবে
আশ্চর্যের কি আছে?

গড়াক না কিছু রক্ত ফোঁটায়
প্রেমের পাঁজর ভেঙে
বোধোদয় যদি কিছু হয়
নয়তো পরাজয়।

রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০১৩

দেরি না হয়ে যায়

দেরি না হয়ে যায়
- যাযাবর জীবন

তোর ফোন নাম্বারটা এখনো মুছি নি আমি মোবাইল থেকে
কোনো একদিন হয়তো আবার মুঠোফোনে ঐ নাম্বার উঠবে ভেসে
রূপবতী ঐ চেহারা আজো আমার চোখের সামনে ভাসে
কোনো একদিন হয়তো আবার তুই দাঁড়াবি আমার সামনে এসে
তোর মধুর কণ্ঠস্বর আজো আমার কান জুড়ে গুঞ্জরিয়া ওঠে
কোন একদিন হয়তো আবার শুনব ঐ পাখির কুঞ্জন কান পেতে
অভিমানিনী ঠোঁটের সেই অপরূপ রূপ আজো আমার দুচোখ জুড়ে
কোন একদিন বসবি সেভাবেই আবার আমার টেবিলে গাল রেখে
বক্র চোখের ইশারার কথাগুলো আজো আছে মনে গেঁথে
কোন একদিন আবার ঐ ভাষা হয়তো বুঝে নেব দূর হতে
ঐ চুমুর দংশন আজো লেগে আছে আমার ঠোঁটে
কোন একদিন আবার হয়তো চুমু খাবি ভালোবেসে
কোন একদিন
কোন একদিন
কোন একদিন
দেখিস, খুব বেশি দেরি না হয়ে যায় যেন
প্রায়শ্চিত্তের আগুনে জ্বলতে হবে যে তোকেই।

কালের আবর্তে নির্ঘুম রাত কাটে

কালের আবর্তে নির্ঘুম রাত কাটে
-যাযাবর জীবন

ইদানীং ঘুমের সাইকেলের বারোটা বেজে গেছে
আমার শরীরের কলকব্জার মত
নির্ঘুম চোখে আটচল্লিশ ঘণ্টা পার করলাম
ঠিক সেই আগের দিনের মত।

এই তো সেদিনও ছিয়ানব্বই ঘণ্টা পার করেছি
নির্ঘুম চোখে
যেদিন তোর কথার মরিচের ঘষা জ্বলেছিল চোখে
দেখে কেও বুঝতে পারে নি,
আমার নিজেরও তখন কিছুই আসে যায় নি
বয়সটা তখন মানিয়ে নেবার ছিল হয়তো
শরীরের কলকব্জাগুলোতে জং ধরে নি নয়তো।

এবার যেন অন্যরকম লাগছে ভেতর থেকে
আগের নির্ঘুম কালের অর্ধেক পার না হতে
প্রিয়জনেরা দেখে বলছে চোখ মুখ বসে গেছে
আসলে আমি তো বুঝেছি বয়স ভাইরাস
কালের কাছে পরাস্ত হয়েছে
সময়ের কাছে কখনো না কখনো পরাজিত হতেই হবে
মানুষ রূপে জন্মেছি যবে।

সেদিনও চোখের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলি তুই
আজো চোখের ঘুম কেড়ে নিস তুই
ঠিক আগেরই মতন করে
মার্চ মাসে কেমন জানি ভ্যাপসা গরম পড়ে;
তোর আর আমার প্রথম দেখা হওয়ার মাস
সেদিন নির্ঘুম কাটিয়েছিলেম তোর কথার বেদনায়
আজ নির্ঘুম কাটাচ্ছি তোকে হারানোর যাতনায়
মার্চের এই ভ্যাপসা গরমের মাসে, তোকে মনে করে
আমাদের প্রথম দেখা হওয়া মাস কে স্মরণ করে
ওপর ওয়ালার নিদারুণ প্রহসন আমারই কপালে জোটে
কালের আবর্তে তোকে মনে করে তাই আজো নির্ঘুম রাত কাটে।

সেই প্রথম দেখা হওয়ার দিন থেকে নিয়ে আজ অবধি
প্রতিটা দিনের কথা আজো মনে পড়ে
ভালোবাসা, টুকরো কথা, বুকে ঝাঁপিয়ে পড়া
প্রেমের সাগরে বাসর গড়া
কিংবা অভিমানের দিকশুন্য নৌকা বেয়ে চলা।

ভালোবাসার শুরু কোথায় কিংবা শেষ কোথায় আমি জানি না
কিভাবে ভালোবাসতে হয়, তোর কথা মত হয়তো তাও জানি না
তবে কিভাবে ঘৃণা করতে হয় তা তোর মাঝে দেখেছি
ভালোবাসার মধুর সম্পর্কের মৃত্যুকে আমি চেখেছি;
তবু আজো একটুও কমে নি তোর জন্য ভালোবাসা
তাইতো আজ নির্ঘুম কাটাই ভেবে প্রথম এই মার্চ মাসের দেখা;

তোর জন্য আমার সকল ভালোবাসার একদিন সমাধি হবে রে
যেদিন শেষবার এসে দেখে যাবি আমায় কবরে।

শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০১৩

ওপর ওয়ালার আরাধনা

ওপর ওয়ালার আরাধনা
-যাযাবর জীবন


মসজিদে আযানের ধ্বনি
অজুহাত হয়ে রয় শুধু একটু পানি
ওজু ছাড়া নামাজ হয় কিভাবে?

মন্দিরে পূজারী অপেক্ষার প্রহর গোনে
ভক্তের দেখা নেই দূর দূর পানে
প্রাসাদ গড়ায় ভগবানের থালায়।

গির্জার ঘণ্টি ঢং ঢং বাজে
আজ ছুটির দিন, বেড়াতে যে যাবে
পরের সপ্তাহটা না হয় চার্চের জন্য থাকলো।

মনুষ্য সমাজের বড্ড সুখের সময় কাটছে আজকাল
আল্লাহ্‌, ঈশ্বর কিংবা ভগবান
এখনই কি প্রয়োজন তাঁকে করার স্মরণ
মরার এখনো ঢের বাকি আছে
যাক না আরো কটা দিন
বুড়ো-কালে একবারে শুধিয়া নিব তাঁর ঋণ
তাঁর পায়ে মাথা ঠুকে;
ওপর ওয়ালা দূর থেকে দেখে
তাঁর সৃষ্টির লীলা মুচকি হেসে।

সময় ঘড়ি বিগড়ে যায় হঠাৎই
সুস্থির জীবনে বিপর্যয় নানামুখী
অস্থির সময়, অস্থির মানুষ, অন্ধকার অনির্বাণ
হে আল্লাহ্‌ , ও ঈশ্বর, হায় ভগবান
মাথা ঠুকি তোর পায়ে তোকেই প্রণাম
দয়া কর প্রভু মোরে এবারের মত
ক্ষম হে অপরাধ করেছি যত
কর আমায় উদ্ধার অন্ধকার হতে
ধর্মের চর্চায় রই মোরা মেতে
ওপর ওয়ালা দূর থেকে দেখে
মুচকি হাসির করুণাধারায়
ভক্তের দুর্দিন দূর হয়ে যায়।


......
......
......


সময় গড়ায়
সময় গড়ায়
আবার সুদিন ফিরে আসে ধরায়
সময় ঘড়ির কাঁটা সুখে বয়ে যায়
ওপর ওয়ালা ভক্তের দিকে চায়
মুচকি হেসে।

ভক্ত-গন অজুহাতের ধ্বজা তোলে
আজ নয় কাল, আবার সময় হলে
দেখা হবে নিশ্চিত ঐ ওপর ওয়ালার সাথে
আবার কখনো দুর্দিন এলে......

ক্রমশ......

চলতেই থাকে

ওপর ওয়ালা দূর কোথাও বসে মুচকি হাসে
তার সৃষ্টির সেরা জীবের পানে চেয়ে।

বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৩

সমান্তরাল ভালোবাসা

সমান্তরাল ভালোবাসা
-যাযাবর জীবন

পাশাপাশি চলছি আমরা সমান্তরাল,
সমান্তরাল চলছে আমাদের ভালোবাসার রাস্তা
একই দিশায় এক দিকে
একজন আরেকজনকে ভালোবেসে
ঠিক ঐ রেললাইনের পাত দুটির মতন;
তবু কেও কারো হাত ধরতে পারছি না
কারণে আর অকারণে,
কমতি নেই কারোরই ভালোবাসায়
তবু শুধু সমান্তরাল পাশাপাশি পথ চলা
মাঝে মাঝে আমাদের ভালোবাসার কথা মনে করে
তাকাই সুদূর ঐ রেললাইনের পাত দুটির দিকে
ঝাপসা হয়ে আসে দৃষ্টিসীমা কোন এক বিন্দুতে ঠেকে
মনে হয় কোথাও না কোথাও গিয়ে এক সাথে মিশে গেছে
তবু কেও কারো স্পর্শ পাই না
অথবা পাই না বাড়ানো হাতের ছোঁয়া
তবুও চলছে সমান্তরাল ভালোবাসার খেলা
সেই কতকাল ধরে;
নিয়তির কি নির্মম উপহাস।

সোমবার, ১১ মার্চ, ২০১৩

বোঝা

বোঝা
-যাযাবর জীবন

ভালোবাসার অবহেলায় আত্মহননের পথ খুঁজে না পেয়ে
সেই তো আমার বুকেই কেন আছড়ে পড়লি রে তুই আবার
আমি তোকে কতভাবে বুঝিয়েছি কতবার!

এখানে ভালোবাসার কোনো স্থান নেই
এখানে শুধু নির্বাসিত মন পোড়ে
এখানে ভালোবাসার শব পোড়ে
এখানে হৃদয়ে ক্ষরণ হয় না
শুধু কষ্টের পাখিগুলো ডানা মেলে ওড়ে
তাইতো তোকে ভালোবেসে সরিয়ে দিয়েছি অনেক দূরে
যাতে ভালোবাসার নীল বিষের জ্বালা কখনো তোকে সইতে না হয়
তবুও কেন বারে বারে ফিরে আসিস আমার দুয়ারে
কেনও বুঝিস না আমি আর নষ্ট কষ্টের দুঃখগুলো বইতে পারব না।

অর্থ আর অনর্থ - গান

অর্থ আর অনর্থ
-যাযাবর জীবন

হায় অর্থ.........
হায় আজব দুনিয়া দারি
হায় রে অর্থ
তুই বিনে জীবনের সকলই অনর্থ।

বাবা মা ভাই বোন কিবা রে স্বজন
পরিবার সন্তান কিবা পরিজন
পকেটে আছে তো টাকা আছে সম্মান
শূন্য পকেট তোর কিবা তোর দাম

সম্পর্ক টিকে আছে
আছে যদি অর্থ
কে বা কার নইলে
সবই অনর্থ

পকেট ভারীরে যখন মৌমাছি ওড়ে
গুনগুন গান গায় চারিদিক ধরে
শূন্য পকেট তোর গড়ের ময়দান
কে দেয় তোরে আজ চার পয়সার দাম

টাকাতে বিকোয় আজ পরিজন সবে
অর্থের মূল্যে আছে তারা ভবে
বাবা মা ভাই বোন কিবা রে স্বজন
পরিবার সন্তান কিবা পরিজন

কালকে ছিলাম আমীর পকেট ভারী
মৌমাছি গুঞ্জন স্বজন সারি সারি
আজকে পথের ফকির কপালের ফের
উড়ে যায় স্বজন সব বলে যায়
সম্পর্ক তোরে আমি দিয়েছিলেম ঢের
হায় রে অর্থ
তুই বিনে জীবনের সবটাই অনর্থ।

ভাই বোন চারিদিক স্বজনের ভিরে
পকেটে অনেক টাকা আছে তারা ঘিরে
হলি তুই নিঃস্ব কপালের ফেরে
কেবা ভাই কে বা বোন চিনিতে না পারে।

বুকে ধরে লালন পালন করেন বাবা মা
কত তার আয়োজন আহ্লাদ আর ঝড়ে পরে না
সন্তান বড় হবে গড়বে টাকার পাহাড়
কপালের ফেরেতে আজ কাটে অনাহার
কু সন্তান পেটেতে ধরেছি আহাজারি করে
ওদিকে অসুস্থ সন্তান ধুঁকে ধুঁকে মরে।

পরিবারের আহাজারি ফকিরের সংসার
কতই টানিব তোরে করে মুক ভার
টাকার পিছু ছোটে তারই পরিবার
ভারী আরেকটা পকেট দেখে ভাঙ্গে সংসার।

যখন ছিল টাকা পকেটেতে ভরা
সন্তান ছিল তখন বুক আলো করা
আজ তুই নিঃস্ব কপালের ফেরে
স্থান হবে তোর জানিস......
ওল্ড-হোমের ঘরে

হায় অর্থ.........
হায় আজব দুনিয়া দারি
হায় রে অর্থ............
তুই বিনে জীবনের সকলই অনর্থ।

বাবা মা ভাই বোন কিবা রে স্বজন
পরিবার সন্তান কিবা পরিজন
পকেটে আছে তো টাকা আছে সম্মান
শূন্য পকেট তোর কিবা তোর দাম

সম্পর্ক টিকে আছে
আছে যদি অর্থ
কে বা কার নইলে
সবই যে অনর্থ।

স্পন্দন

স্পন্দন
- যাযাবর জীবন

তোর হৃদয়ের স্পন্দন অনুভব করতে হলে
তোকে আমার পাশে পাবার দরকার নেই;

আমি যোজন যোজন দূর থেকেই
তোর হৃদয় ছুঁয়ে দেখতে পারি
তোর হৃদয়ের প্রতিটা ধ্বক ধ্বক শুনতে পারি
তোর হৃদয়ের প্রতিটা অনুভূতি পড়তে পারি
তুই বুঝবি না কখনোই কারণটা;

ওটা যে আমারই হৃদয়, বেঁধে রেখে এসেছি একসাথে করে
তোর হৃদয়ের সাথে, অদৃশ্য এক ভালোবাসার সুতোয় বেঁধে।

শুক্রবার, ৮ মার্চ, ২০১৩

টুকরো কথামালা সাজিয়ে কবিতায়

হাবিজাবি সাক্ষর -


উপেক্ষিত অপেক্ষার প্রহরে সাদা কাগজে
তোরই মুখ ছবি একে করে যাই কিছু সাক্ষর
নিস্তব্ধ রাতের আঁধারে কলমে কাগজে
ফুটে ওঠে রংহীন ভালবাসার কিছু অক্ষর
হয়তো সেগুলো কিছু কবিতার ঢঙে ফুটে ওঠে
নয়তো হারিয়ে গিয়ে আকাশে তারা হয়ে ফোটে।


স্বপ্ন -


আমি স্বপ্নের ঘোরে দেখছি তোরে
হাত বাড়িয়ে ডাকছিস আমারে
বড্ড দেরী করে ফেলেছিস রে বাবু
অন্যভূবন থেকে সাড়া দেয়া যায় না।



পৃথিবী গোল -


ঘূর্ণায়মান পৃথিবীতে ঘুরতে ঘুরতে
আবার তোর সাথে আমার দেখা হবেই
কমলালেবুর আকৃতির এ পৃথিবীতে
আবার তোর গোল মুখখানা আরেকবার দেখতে ইচ্ছে করে
যদি দৈব ক্রমে দেখা হয়েই যায় আমাদের দুজনের
সেদিন মুখ ঢাকবি কি দিয়ে বড্ড জানতে ইচ্ছে করে
নাকি মনে তখনো রইবে একরাশ ঘৃণার আগুন
তবে উগরে দিস আমার মুখের পরে
যদি ততদিন বেঁচে থাকি আমি
আবার আমাদের দেখা হওয়ার কালে।




বন্ধন-


আমার পশ্চিমে তুই পূবে তুই
উত্তরে তুই দক্ষিণে তুই
ঈশানে তুই জলে তুই
আমার জীবনটা ভরে আছে
তুই তুই আর তুই এ
আমার দৃষ্টি সীমা শুধু তুই পর্যন্তই সীমাবদ্ধ
কি এক অকরুণ ভালোবেসে আমারে করেছিলি আবদ্ধ।



আজকালকার প্রেম-

আজকালকার প্রেম দেখে মনে হয়
জমে থাকা কচু পাতার পানি
কিছু সময় ঠায় বসে থাকে অন্তরে গেড়ে
একটু হাওয়া পেলেই গড়িয়ে নেমে যায় চলে
নতুনত্বের সন্ধানে, বসন্ত বাতাসে পাখা মেলে



আকাশ পাতাল-

আমার থেকে দীর্ঘ আমার ছায়া
পশ্চিমের হেলে পড়া রোদে;
আমার থেকে অনেক বড় মানুষ তুই
তবু তোর জন্য ভালোবাসায় আজো মন কাঁদে।
রোদের নিয়মেই তার কাজ আমার ওপর পড়া
আমারই ভুল ছিল না বুঝে তোর প্রেমে পড়া
পূব আর পশ্চিম এক সাথে মেলে না কখনো
তুই আকাশ আমি পাতাল, বুঝিনিরে তখনো।




ক্ষণিকের অতিথি-


আমার কষ্টগুলোকে জানতেই হবে রে তোর
এমন তো কোনো কথা নেই হে ক্ষণিকের অতিথি
আমাকে বুঝতে চাইলে আরো দুঃখ পেতে হবে যে তোর
তাই তো চাই না করতে তোরে আর মনের প্রতিবেশী



জন্ম-মৃত্যু -

জন্মটা সুখের, বেঁচে থাকাটা অনিশ্চয়তা
ভালোবাসাটুকু সুখের, সংসারে অকিঞ্চিৎকর প্রাত্যাহিকতা
জীবন সুখে দুঃখে মেলানো, কোনো বাঁধা মানে না
মৃত্যু অবধারিত, তবু মন মেনে নিতে পারে না।


ভালোবাসা-

ভালোবাসি বলাটা খুব সহজ
ভালোবাসার মানুষকে আপন করে নেয়াও হয়তো সহজ
ভালোবাসার মানুষের ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দেয়া খুব কঠিন
ভালোবাসা ঘৃণায় পর্যবসিত হওয়া - এটা কেমন ভালোবাসা?
আমার মাথায় ধরে না।



সম্পর্ক -


একজন স্ত্রী তার স্বামীর ১৫ আনা পুরোপুরি জানে
একজন স্বামী কি তার স্ত্রীর ১ আনা আসলে চেনে?



মাটি-


অমাবস্যা যার জীবনে জ্যোৎস্নায় তার কি আসে যায়
চাঁদনি যদি থাকে জীবনে তবে চান্নিপসরে মৃত্যুতে কি আসে যায়
ঘৃণাতেই সকল ভালোবাসার হয় যে ক্ষয়
মাটির শরীর মাটিতে মিশবেই মরণে কিবা ভয়.........




ওপারের ডাক-

কিভাবে দিন কাটছে জানি না
কিভাবে রাত যাচ্ছে বুঝি না
বেঁচে থাকাটাই বড্ড যেন যন্ত্রণার হয়ে যাচ্ছে আজ কাল
জীবনে আজ আর কোনো সুখ নেই
নেই কোনো দুঃখ
নেই আনন্দ বেদনার কোনো কাব্য
হাসি কান্না? সেও তো ভুলে গিয়েছি সেই কবেই
যেদিন থেকে জীবন আর মৃত্যুর মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে রয়েছি;
এখন আর কোনো কিছুতেই কিছু যায় আসে না
এখন আর মন বাড়িয়ে কাওকে খুঁজি না
জীবনের কাছে আর নেই কোনো চাওয়া পাওয়া
শুধু অসহায় দিন কাটা আর নির্ঘুম রাত জাগা
ও ভুবনে কি অপেক্ষা করছে জানি না
তবু তীর্থের কাকের মত ওপারের ডাকের অপেক্ষা।


মন-


মন পবনের পানসী নাও
কোথায় তুমি যাও?
কারে খোঁজো এদিক ওদিক
ঘুরো হাওর বাও......


বিনিময়-

বোকা ঐ মানুষ কিছু
সুখ কিনতে চায় অর্থের বিনিময়ে
মূল্য গোনে টাকায়
সুখগুলোই অসুখ হয়ে দাঁড়ায়
অর্থ যখন অনর্থ ঘটায়;
বোঝে না ঐ বোকার দল
সম্পর্কের টানাপোড়নে অর্থের ভূমিকা
কেড়ে নেয় সাধের সুখ সকল।


নিয়তি-

প্রতিটা নতুন সকালে নতুন করে আলো ফোটে
নতুন সূর্য ওঠে
আর আমাকে টেনে নিয়ে যায় ঘন অন্ধকারের
অতল গহ্বরে..................




দহন-


জীবনে আর যাই করিস না কেন
আমার মত ভালোবাসিস না
দহনের জ্বালা সইতে পারবি না............



ঘৃণা-

কতই আর জ্বালিয়েছিস প্রেমের আগুনে
আগুন পিয়ে গেছি তোর ঘৃণাগুলো উগরে দিয়ে
শুদ্ধ করে নিয়েছি আমায় আবার
তোরে ভালোবাসার তরে..................




জীবন-


জীবন থেমে থাকে না কারো জন্য
থমকে যায় জীবন হয়তো কিছু সময়ের জন্য
খুব প্রিয়জনকে হারিয়ে
বেদনার লাল রঙ মাড়িয়ে
হয়তো খুঁড়িয়ে চলতে হয়ে কিছুদূর পথ একা একা
তারপর আবার জীবন চলে জীবনের মত করে ছকে আঁকা
আগের সেই আনন্দ সুর হয়তো বাজে না
হয়তো বেজে যায় করুণ সানাইয়ের কান্নার ধ্বনি
আগের সেই ছন্দবদ্ধ লয় হয়তো থাকে না
ধিমা লয়ে ছন্দপতন বারে বারে কান পেতে শুনি
তবুও জীবন বয়ে চলে বাস্তবতার পঙ্কিল কর্দমাক্ত পথ ধরে
জীবন কেটে যায় ক্যাকটাসের কাঁটা ঘেরা পথ বেয়ে
জীবনটা আসলে এমনই
থেমে থাকে না কারো জন্য
শুধু খুঁড়িয়ে চলা জীবন যুদ্ধে।





অনুভবে ভালোবাসা-


হাজার কথায় ভালোবাসা হয় না
ভাষাটাও খুব একটা বাঁধা হয় না
এক পলকের একটি দেখা
চোখেতে চোখের ভাষা পড়া
হৃদয় হৃদয়ে ছোঁয়া
অনুভবে হয় ভালোবাসা
কারণে বা অকারণে.........




গুরুদক্ষিণা-



আমি জানি হিংসে রিপু মানুষের থাকতে নয়
তবুও আমার কেন যে তোরে এত হিংসে হয়?
আমি অবাক তাকিয়ে তোর মুখখানি দেখি
অপলক চেয়ে চেয়ে
মানুষের চোখমুখ আর হৃদয় থাকে কি করে
এমন ভাবলেশ হয়ে?
আমায় একবার শিখিয়ে দিয়ে যা না
মৃত্যুকে দেব তোর গুরুদক্ষিণা............


ইচ্ছে-

পোকা মাকড়ের বাস যখন দেহের ভেতর কিংবা মনে
ব্যাকটেরিয়া আর ভাইরাসের কিংবা ভালোবাসার দহনে
কুড়ে কুড়ে খায় দেহ মন আর হৃদয়
তখন হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে অন্য কোথাও, অন্য ভুবনে
ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায়।



কেনাবেচার হাট-

তুমি আমার হতে পারনি যখন এত ভালোবাসা নিয়ে
কখনো কি পারবে অন্য কারো হতে নিয়তিরে সয়ে?
কিংবা হয়তো আমারই বোঝার ভুল
হয়তো নিত্যই তুমি হয়ে থাকো কারো নতুন করে
তোমার প্রেমের বেচাকেনার হাটে।







































মনের মাঝে তুই

মনের মাঝে তুই

- যাযাবর জীবন




আজ তুই ব্যথায় একটু "উহ" করলি

আমি চোখে অন্ধকার দেখলাম

আমার ভুবন হয়ে গেল ওলোট পালট

মনে কি জানি এক অশনি শঙ্কা বয়ে গেল

কি জানি তোর কি হলো!

ফোনে ফোনে ডাক্তারের অবস্থা খারাপ

এ ঔষধ সে ঔষধ আমি পাগল পারা

আমার ডাক্তার বেটার মাথা খারাপ

আমারই ফোনের যন্ত্রণায়

এম্বুলেন্সের পোঁ পোঁ ধ্বনি নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে দিল

রাতের প্রহরের

শুধু তোর একটুখানি ব্যথা

তাতেই আমার এ অবস্থা

শুধু তোর "উহ" শব্দটি সইতে পারি নি বলে।



আজ হৃদয়ে খুব গভীরে এ এক নতুন অনুভূতি খেলে গেলো

মনের মাঝে এ এক সম্পূর্ণ অন্যরকম অনুভূতি

আজ নতুন করে বুঝলাম

মনে প্রাণে কি যে অপরিসীম ভালোবাসি তোরে

আমার মনের ঘরে তুই

আমার অস্তিত্বে তুই

আমার পুরোটা হৃদয় জুড়ে শুধুই তুই, তুই আর তুই।

বুধবার, ৬ মার্চ, ২০১৩

প্রেম
-যাযাবর জীবন



প্রেম কি আমি জানি না
এ কি শারীরিক টান?
নাকি কোনো ক্যামিক্যাল রিয়াকশন
শরীরের প্রতি শরীরের
কিংবা মনের প্রতি মনের?

কত কবি কত গুণিজন কত ভাবে এরে
করিয়াছে বর্ণন
তবু আমি আজো ভালোবাসা বুঝি নি
এ কেমন তর আয়োজন?

কেমন করে ভালোবেসে কাছে ধরে রাখতে হয়
আমি আজো শিখিনি
তাইতো মনে হয় আমা থেকে তুই অনেক অনেক দূরে
তোকে আমি চোখে দেখি নি
তবে মনের চোখেতে দেখেছি অনেক বার
তাই হয়তো আমা হতে আছিস তুই সরে;

তোর সাথে কথা হয় নি কখনো আমার
তবু কথা বলে গিয়েছি স্বপ্নে বার বার
তোকে আমি ছুঁয়ে দেখিনি একবার
তবু তোর ছোঁয়া যেন লেগে আছে সারা গায়
তুই থাকিস আমা হতে যোজন যোজন দূরে
তবু থাকিস কেন রে মোর হৃদয় জুড়ে
এরে কি ভালোবাসা বলে?
নাকি প্রেম এভাবেই কথা বলে?
আমার স্বপ্ন রাজ্যে হানা দিয়ে মনটাকে কিনে নিয়েছিস যেন
না হলে, না দেখা মানুষের প্রতি হৃদয় ভরা এত প্রেম কেন?




পুরুষের রূপ

পুরুষের রূপ
-যাযাবর জীবন

কে গো তুমি সুন্দরী ওগো মায়াময়ী
দেখিতে তোমায় যেন লাগে রূপবতী
আঁকাসের চাঁদ তুমি মাটিতে নামিলে
হৃদয় মাঝে কেন আলো করে দিলে
কেন ওগো সুন্দরী এত আলো ছড়াও
তোমাতে হেরিছে মন পাগল কেন করাও।

ওহে চাঁদ দেখ এসে জ্যোৎস্না নেমেছে
ধরার বুকেতে আজ অন্ধকার থেমেছে
সুন্দর ও মুখেতে এ কি কালো ছায়া
কার লাগি মন পোড়ে কারে করো মায়া
কারে দাও ভালোবাসা কার লাগি ধরাতে আসা
কার লাগি মন পোড়ে খোঁজো তুমি কার বাসা।

কেন তোমায় দেখে এত চেনা চেনা মনে হয়
তবে কি পৃথিবীতে নেমেছ বুকে দিতে আরো ক্ষয়
অনেক তো দিয়ে গেছ আগের জন্মে ঘৃণা
অভিমানে চলে গেছ ফেলে আমায় তুমি হীনা
মেটেনি কো তবু সাধ ফিরেছ ধরায় আজ
তোমারে দেখিয়া আজ ভালোবাসায় লাগে লাজ।

ফিরে যাও রূপবতী তোমার ভূবনে
ভালো আছি একা আছি আমার আঙনে
তুমি হীনা কাটিয়েছি যখন এতটা দিন
মনে রেখে হৃদয়েতে তোমারই প্রেমের ঋণ
ফিরে এসো অন্যদিন নিয়ে যেতে আমায়
যেদিন আমি শব হয়ে পড়ে রব কাফনেতে হায়
অভিমানের রূপ আমি দেখেছি তোমার মাঝে
পুরুষের রূপ দেখিবে তুমি আমার লাশের মাঝে।


দুঃস্বপ্ন

দুঃস্বপ্ন
-যাযাবর জীবন


দুঃস্বপ্নের হাত থেকে মুক্তি চাই
জেগে থেকে দেখা সব দুঃস্বপ্ন;

হানাহানি রাহাজানি
চারিদিক জুড়ে আজ কেমন অস্থির জানি;
ভাইয়ে ভাইয়ে, ভাই বোনে
বাবা মা, স্বামী স্ত্রী আর সন্তানে
তুচ্ছ স্বার্থ, দুটো টাকা
কেঁড়ে নেয় যেন সব মানবিকতা;
চাল ডাল নুন তেল
আকাশ ছুঁয়েছে দাম
পেটেতে ছুঁচো নাচে
কোথাও নেই কোনো কাম
মানুষের ঢল যেন সব শহর মুখি
গ্রামেতে আজ আর কেও নয় সুখী
রাজনীতির খেলা গ্রামে গঞ্জে শহরে
কার ঘারে পা রেখে কে কারে মারে
ঘুমন্ত মনুষ্যত্ব বিবেক ঘুমায়
দুঃস্বপ্ন জেগে রয় চোখের পাতায়
মানুষ আমরা মনুষ্যত্বের নেই কোনো দাম
পশু সমাজে তবু মানুষের কত সম্মান।

ঘুমের মাঝে দেখি আমরা নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন
আসলে জেগে জেগে দেখি গাঁ কাটা দিয়ে ওঠা দুঃস্বপ্ন।



ইচ্ছেগুলো

ইচ্ছেগুলো
- যাযাবর জীবন

কেন জানি মাঝে মাঝে,খুব মাঝে মাঝে
নিজেকে হারিয়ে ফেলি নিজেরই মাঝে।

কখনো ঘন কুয়াশার অশরীরী অন্ধকারে
কিংবা কবরের নিস্তব্ধ জগতের মাঝে
কখনো বালিয়াড়ির বিশাল প্রান্তরে
কখনো বা অতল সাগরের গভীর তলদেশে
কখনো মায়াবিনী চাঁদের জ্যোৎস্নায় অবগাহন শেষে
অমাবস্যার তাঁরার মেলায় জোনাকের ঝাঁকে;
পথ হারিয়ে নিজেই পথ খুঁজে বেড়াই,পথের শেষে;
তবুও হারানো আমি’কে আর খুঁজে পাই না অবশেষে।

ইচ্ছে করে,আমার বড্ড ইচ্ছে করে
হারানো আমি’কে খুঁজে পেতে
হারানো পথের দিশা পেতে
হারানো ভালোবাসাটুকু ফিরে পেতে
সমস্ত না পাওয়া গুলোকে খুঁজে পেতে
আর নিজের মাঝেই হারিয়ে যাওয়া আমি’কে খুঁজে নিতে
আবার মানুষ হয়ে ফিরে আসার তরে
মানব সমাজে,মানবের বেশে।












মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০১৩

দেয়াল

দেয়াল
- যাযাবর জীবন


বাঁধাগ্রস্ত আমার দৃষ্টি সীমা
চারিদিকের কৃত্রিম দেয়ালে বন্দী
আমাদেরই তৈরি করা মনের দেয়ালে
খুব কি বেশী পার্থক্য অন্ধত্বের সাথে
নিজেকে বন্দী করে রাখার এ তৈরি দেয়াল
কিংবা স্বেচ্ছায় নিজেকে বিভ্রান্ত করে রাখা
মনকে চোখের আড়াল করার খেয়াল?

আমরা আজ দেখতে চাই না চোখ মেলে চারিদিকের
অশোভন চারিত্রিক সব মনুষ্যত্ব
চোখ বুজে নিজেকে আড়াল করে রাখি
দেখতে যাতে না হয় মানুষের সব পশুত্ব;
ক্ষুধায় জর্জরিত পৃথিবীর রূপ
শীতার্ত মানুষের অভিশপ্ত জীবন যাপন
নারী লোলুপ অমানুষদের গণ ধর্ষণ এর শিকার
মানুষরূপী হায়েনাদের বর্বর নিঃশংস হত্যাকান্ড আর অত্যাচার।

পালিয়ে থাকি আমরা নিজের মাঝে নিজে দু চোখ বন্ধ করে
চোখের সামনে মনের আড়াল তুলে
কিংবা মনের সামনে অন্ধত্বের এক মেকি দেয়াল তুলে;
এভাবে আর কতকাল?
নিজেকে করে রাখব আড়াল;
নিজে হতে?

সময় এসেছে আজ দেয়াল ভেঙ্গে ফেলার
দেখি না কতটুকু হয়েছে আজকের সভ্যতার অগ্রগতি
কিংবা অসভ্যতার পরিণতি!
আজ সময় হয়েছে দেয়াল ভাঙ্গার, মনের ও চোখের
আর কিছু না হোক চারিদিকে অসংলগ্নতা দেখে
মনেতে জাগবে তো একটু ভয়!
আর যদি কোনো কারণে বিবেক একটু কথা কয়
তবে চোখেতে আসবেই একটু জল
দেখে চারিদিকের অযাচিত কোলাহল।

তবুও তো নিজেকে একটু সান্ত্বনা দিতে পারব –
আমি এখনও মানুষ আছি
আমি আজো মানুষ হয়ে বেঁচে আছি।






সোমবার, ৪ মার্চ, ২০১৩

অগ্রিম বোধোদয়

অগ্রিম বোধোদয়
- যাযাবর জীবন

চাঁদ নেই আজ আকাশের কোথাও
জ্যোৎস্না ঘুমিয়ে পড়েছে সবে
অমাবস্যা তিথির আগমনের আগেই

বাতাস নেই আজ ধরাতে কোথাও
গাছগুলো নেড়া হয়ে আছে, পাতাগুলো উধাও
থম ধরে আছে চারিধার, ঝড়ের পূর্বাভাষের আগেই

সূর্য নেই আজ আকাশ অন্ধকার
মেঘের আনাগোনা আকাশে চারিধার
তবু ভিজে যাই অশ্রুজলেতে বৃষ্টি পড়ার আগেই

স্পর্শ নেই আজ শরীরের কোথাও
অনুভূতিগুলো হারিয়ে গিয়েছে কবে
হৃদয়টা মরে যাওয়ার আগেই

কষ্ট নেই আজ আর বুকের খাঁচায়
দুঃখগুলো উধাও কোথায়
পাজরের হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার আগেই

তুই নেই আজ শূন্য চারিধার
কষ্ট কষ্ট দুঃখগুলো বোবা কান্নার
শব হয়ে পড়ে আছি মরে যাওয়ার আগেই।


রবিবার, ৩ মার্চ, ২০১৩

ভালোবাসার লোনাজল

ভালোবাসার লোনাজল
- যাযাবর জীবন

বুকের ভেতর জমে থাকা ভালোবাসার কষ্টের লোনাজল গুলো
নদীরে আমি করেছিলাম সমর্পণ
ভাসিয়ে নিয়ে যেতে সাগরের জলে;
লবণাক্ততা বাড়ুক না আরেকটু
লোনা জল সঙ্গমে
আমারই বয়ে যাওয়া সকল কষ্টের লোনাজলে।

অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে আজ সকল দুঃখ কষ্টগুলো
জমে ছিল যত রক্ত মাংস আর কঙ্কালের শবাধারে
ঠুকে ঠুকে ঘৃণার পেরেক যত গেঁথেছিলি বুকে
বইয়ে দিলেম সবই আজ লোনাজলে
নদী বয়ে চলে যাক সাগর সঙ্গমে
আরেকটু লবণাক্ত হতে।

যেদিন তোর প্রিয় মানুষের হাত ধরে ঘুরে বেড়াবি সাগর পাড়ে
সোহাগী আদরে মধুচন্দ্রিমায় ঢলে পড়ে
সেদিন বড্ড গর্ব করে বলিস তারে;
এ আমারই দেয়া কষ্টের লোনা জল
চেখে দেখে চিনে নাও আমারে, আরেকটু ভালো করে;
আমার ভালোবাসার চুমুর সাথে মিশিয়ে, একসাথে পান করে।


হিপোক্রেটিক স্বপ্ন জগৎ

হিপোক্রেটিক স্বপ্ন জগৎ
- যাযাবর জীবন

অলস দুপুর আলসে রাজপথ
কেমন যেন ঝিম ধরে আছে
একা একা পথ চলি ধুলোমাখা পথে স্যান্ডেল ঘসে ঘসে
তারি মাঝে তোর কথা হাঠাৎ করেই মাথায় চলে আসে
ইশশ, শুধু তুই যদি থাকতি আজ আমার সাথে
বড্ড মিস করি রে তোকে; বাস্তব জগতে।

খুব মাঝে মাঝে বাতাসে গুলির শব্দ ভেসে আসে
আমি কান পেতে তোর হাসির শব্দ শুনতে শুনতে এগোই দিবাস্বপ্নের দেশে
থেকে থেকে জানি টায়ার পোড়ার গন্ধ নাকে আসে
আমি তোর গায়ের গন্ধটুকু নাকে নিয়ে পথ হাটি সবকিছু অবহেলায় ফেলে হেসে
কিছু যায় আসে না আমার হরতালের রাজনীতিতে
সারাটাক্ষণ তুই যেন থাকিস আমায় বুকে ধরে জড়িয়ে
আমার বাস যে তোকে নিয়ে স্বপ্ন জগতে
হয়তো বড্ড ঠুনকো কাঁচের গ্লাসের মত
তবুও তাতে মনের মাধুরী মিশিয়ে স্বপ্নের বুদবুদগুলো যাই উড়িয়ে।

দিবাস্বপ্নের ধ্রুপদী বুদবুদগুলো মিলিয়ে যেতে থাকে সন্ধ্যে নামার সাথে সাথে
ধুসর কুয়াশার চাদর পরে যখন রাত্রি নেমে আসে
অনেক কষ্টগুলোকে বুকে চেপে পথ চলি তবু আমি ঠুনকো ঐ স্বপ্ন জগতে
মনের সাথে যুদ্ধ করে তোকে নিয়ে থাকি মেতে, ঐ স্বপ্ন জগতে;

ভাব ধরি ভালো আছি, সুখে আছি – চারিদিক মাতিয়ে রাখি
আসলে কি জানিস? এক ঘোরের মধ্যে স্বপ্ন বাস গড়ি তোকে বুকে ধরে রাখি
আসলে বাধ্য হয়ে হিপোক্রেটিক এক সাগরে জীবনের তরী ভাসাই
চারিদিকে লোকজনকে দেখাই
এসো দেখো আমি ভালো আছি – অনেক অনেক ভালো
(আসলে আমি নিজেই জানি কি এক অসহনীয় বেদনায় হয়ে আছে চারিদিক কালো)
মানুষ দেখে, আমি কোজাগরী পূর্ণিমায় রাত জাগি সুখের ভেলায় ভেসে
(আসলে তোর যাতনায় নিদ-পরী এসে বসে না আমার চোখে)
হয়তো এভাবেই বাকিটা জীবন সন্ন্যাস কেটে যাবে, পায়ে হেঁটে হেঁটে
(ধুলো মাখা পথে দিবাস্বপ্নে ইতস্তত ধীর চরণ ফেলে ফেলে)
তবুও মনের কোনো এক কোণে রয়ে যাবে তোকে পাবার আশা
(যদি চোখে পড়ে সেই চরণচিহ্ন গুলো, তবে চিনে নিস আমার অম্লান ভালোবাসা)।

বড় কঠিন রে এ কাজ
প্রতিনিয়ত হিপোক্রেসির সাথে বসবাস
জগতের কোথাও নিত্য কিছু নয়, তবু করে যাই ছলনা আর অভিনয়
তোকে হারিয়ে কষ্টের ধ্রুব সত্যির সাথে হয়েছে আমার পরিচয়।


শনিবার, ২ মার্চ, ২০১৩

অভিমানের ভেলায় ভেসে

অভিমানের ভেলায় ভেসে
- যাযাবর জীবন

মাথায় করে রেখেছিলেম তোরে কি যে ভালোবাসার বন্ধনে
হলুদাভ এক প্রেমের জন্ডিস ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে
পাগল বলেছিলি আমায় তুই, তবু নিয়েছিলি আপন করে
রাগিণী সুর বাজিয়েছিলি আমার মনের ঘরে, আমায় পাগল করে;

খারাপ এক বাতাস এসে লেগেছিল কোথা থেকে আমাদের ঘরে
নহরের মাঝে অভিমানের ভেলায় ভেসে প্রেম সরে গিয়েছিল বহুদূরে।