হাবিজাবি সাক্ষর -
উপেক্ষিত অপেক্ষার প্রহরে সাদা কাগজে
তোরই মুখ ছবি একে করে যাই কিছু সাক্ষর
নিস্তব্ধ রাতের আঁধারে কলমে কাগজে
ফুটে ওঠে রংহীন ভালবাসার কিছু অক্ষর
হয়তো সেগুলো কিছু কবিতার ঢঙে ফুটে ওঠে
নয়তো হারিয়ে গিয়ে আকাশে তারা হয়ে ফোটে।
স্বপ্ন -
আমি স্বপ্নের ঘোরে দেখছি তোরে
হাত বাড়িয়ে ডাকছিস আমারে
বড্ড দেরী করে ফেলেছিস রে বাবু
অন্যভূবন থেকে সাড়া দেয়া যায় না।
পৃথিবী গোল -
ঘূর্ণায়মান পৃথিবীতে ঘুরতে ঘুরতে
আবার তোর সাথে আমার দেখা হবেই
কমলালেবুর আকৃতির এ পৃথিবীতে
আবার তোর গোল মুখখানা আরেকবার দেখতে ইচ্ছে করে
যদি দৈব ক্রমে দেখা হয়েই যায় আমাদের দুজনের
সেদিন মুখ ঢাকবি কি দিয়ে বড্ড জানতে ইচ্ছে করে
নাকি মনে তখনো রইবে একরাশ ঘৃণার আগুন
তবে উগরে দিস আমার মুখের পরে
যদি ততদিন বেঁচে থাকি আমি
আবার আমাদের দেখা হওয়ার কালে।
বন্ধন-
আমার পশ্চিমে তুই পূবে তুই
উত্তরে তুই দক্ষিণে তুই
ঈশানে তুই জলে তুই
আমার জীবনটা ভরে আছে
তুই তুই আর তুই এ
আমার দৃষ্টি সীমা শুধু তুই পর্যন্তই সীমাবদ্ধ
কি এক অকরুণ ভালোবেসে আমারে করেছিলি আবদ্ধ।
আজকালকার প্রেম-
আজকালকার প্রেম দেখে মনে হয়
জমে থাকা কচু পাতার পানি
কিছু সময় ঠায় বসে থাকে অন্তরে গেড়ে
একটু হাওয়া পেলেই গড়িয়ে নেমে যায় চলে
নতুনত্বের সন্ধানে, বসন্ত বাতাসে পাখা মেলে
আকাশ পাতাল-
আমার থেকে দীর্ঘ আমার ছায়া
পশ্চিমের হেলে পড়া রোদে;
আমার থেকে অনেক বড় মানুষ তুই
তবু তোর জন্য ভালোবাসায় আজো মন কাঁদে।
রোদের নিয়মেই তার কাজ আমার ওপর পড়া
আমারই ভুল ছিল না বুঝে তোর প্রেমে পড়া
পূব আর পশ্চিম এক সাথে মেলে না কখনো
তুই আকাশ আমি পাতাল, বুঝিনিরে তখনো।
ক্ষণিকের অতিথি-
আমার কষ্টগুলোকে জানতেই হবে রে তোর
এমন তো কোনো কথা নেই হে ক্ষণিকের অতিথি
আমাকে বুঝতে চাইলে আরো দুঃখ পেতে হবে যে তোর
তাই তো চাই না করতে তোরে আর মনের প্রতিবেশী
জন্ম-মৃত্যু -
জন্মটা সুখের, বেঁচে থাকাটা অনিশ্চয়তা
ভালোবাসাটুকু সুখের, সংসারে অকিঞ্চিৎকর প্রাত্যাহিকতা
জীবন সুখে দুঃখে মেলানো, কোনো বাঁধা মানে না
মৃত্যু অবধারিত, তবু মন মেনে নিতে পারে না।
ভালোবাসা-
ভালোবাসি বলাটা খুব সহজ
ভালোবাসার মানুষকে আপন করে নেয়াও হয়তো সহজ
ভালোবাসার মানুষের ত্রুটিগুলো ক্ষমা করে দেয়া খুব কঠিন
ভালোবাসা ঘৃণায় পর্যবসিত হওয়া - এটা কেমন ভালোবাসা?
আমার মাথায় ধরে না।
সম্পর্ক -
একজন স্ত্রী তার স্বামীর ১৫ আনা পুরোপুরি জানে
একজন স্বামী কি তার স্ত্রীর ১ আনা আসলে চেনে?
মাটি-
অমাবস্যা যার জীবনে জ্যোৎস্নায় তার কি আসে যায়
চাঁদনি যদি থাকে জীবনে তবে চান্নিপসরে মৃত্যুতে কি আসে যায়
ঘৃণাতেই সকল ভালোবাসার হয় যে ক্ষয়
মাটির শরীর মাটিতে মিশবেই মরণে কিবা ভয়.........
ওপারের ডাক-
কিভাবে দিন কাটছে জানি না
কিভাবে রাত যাচ্ছে বুঝি না
বেঁচে থাকাটাই বড্ড যেন যন্ত্রণার হয়ে যাচ্ছে আজ কাল
জীবনে আজ আর কোনো সুখ নেই
নেই কোনো দুঃখ
নেই আনন্দ বেদনার কোনো কাব্য
হাসি কান্না? সেও তো ভুলে গিয়েছি সেই কবেই
যেদিন থেকে জীবন আর মৃত্যুর মাঝামাঝি দাঁড়িয়ে রয়েছি;
এখন আর কোনো কিছুতেই কিছু যায় আসে না
এখন আর মন বাড়িয়ে কাওকে খুঁজি না
জীবনের কাছে আর নেই কোনো চাওয়া পাওয়া
শুধু অসহায় দিন কাটা আর নির্ঘুম রাত জাগা
ও ভুবনে কি অপেক্ষা করছে জানি না
তবু তীর্থের কাকের মত ওপারের ডাকের অপেক্ষা।
মন-
মন পবনের পানসী নাও
কোথায় তুমি যাও?
কারে খোঁজো এদিক ওদিক
ঘুরো হাওর বাও......
বিনিময়-
বোকা ঐ মানুষ কিছু
সুখ কিনতে চায় অর্থের বিনিময়ে
মূল্য গোনে টাকায়
সুখগুলোই অসুখ হয়ে দাঁড়ায়
অর্থ যখন অনর্থ ঘটায়;
বোঝে না ঐ বোকার দল
সম্পর্কের টানাপোড়নে অর্থের ভূমিকা
কেড়ে নেয় সাধের সুখ সকল।
নিয়তি-
প্রতিটা নতুন সকালে নতুন করে আলো ফোটে
নতুন সূর্য ওঠে
আর আমাকে টেনে নিয়ে যায় ঘন অন্ধকারের
অতল গহ্বরে..................
দহন-
জীবনে আর যাই করিস না কেন
আমার মত ভালোবাসিস না
দহনের জ্বালা সইতে পারবি না............
ঘৃণা-
কতই আর জ্বালিয়েছিস প্রেমের আগুনে
আগুন পিয়ে গেছি তোর ঘৃণাগুলো উগরে দিয়ে
শুদ্ধ করে নিয়েছি আমায় আবার
তোরে ভালোবাসার তরে..................
জীবন-
জীবন থেমে থাকে না কারো জন্য
থমকে যায় জীবন হয়তো কিছু সময়ের জন্য
খুব প্রিয়জনকে হারিয়ে
বেদনার লাল রঙ মাড়িয়ে
হয়তো খুঁড়িয়ে চলতে হয়ে কিছুদূর পথ একা একা
তারপর আবার জীবন চলে জীবনের মত করে ছকে আঁকা
আগের সেই আনন্দ সুর হয়তো বাজে না
হয়তো বেজে যায় করুণ সানাইয়ের কান্নার ধ্বনি
আগের সেই ছন্দবদ্ধ লয় হয়তো থাকে না
ধিমা লয়ে ছন্দপতন বারে বারে কান পেতে শুনি
তবুও জীবন বয়ে চলে বাস্তবতার পঙ্কিল কর্দমাক্ত পথ ধরে
জীবন কেটে যায় ক্যাকটাসের কাঁটা ঘেরা পথ বেয়ে
জীবনটা আসলে এমনই
থেমে থাকে না কারো জন্য
শুধু খুঁড়িয়ে চলা জীবন যুদ্ধে।
অনুভবে ভালোবাসা-
হাজার কথায় ভালোবাসা হয় না
ভাষাটাও খুব একটা বাঁধা হয় না
এক পলকের একটি দেখা
চোখেতে চোখের ভাষা পড়া
হৃদয় হৃদয়ে ছোঁয়া
অনুভবে হয় ভালোবাসা
কারণে বা অকারণে.........
গুরুদক্ষিণা-
আমি জানি হিংসে রিপু মানুষের থাকতে নয়
তবুও আমার কেন যে তোরে এত হিংসে হয়?
আমি অবাক তাকিয়ে তোর মুখখানি দেখি
অপলক চেয়ে চেয়ে
মানুষের চোখমুখ আর হৃদয় থাকে কি করে
এমন ভাবলেশ হয়ে?
আমায় একবার শিখিয়ে দিয়ে যা না
মৃত্যুকে দেব তোর গুরুদক্ষিণা............
ইচ্ছে-
পোকা মাকড়ের বাস যখন দেহের ভেতর কিংবা মনে
ব্যাকটেরিয়া আর ভাইরাসের কিংবা ভালোবাসার দহনে
কুড়ে কুড়ে খায় দেহ মন আর হৃদয়
তখন হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে অন্য কোথাও, অন্য ভুবনে
ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায়।
কেনাবেচার হাট-
তুমি আমার হতে পারনি যখন এত ভালোবাসা নিয়ে
কখনো কি পারবে অন্য কারো হতে নিয়তিরে সয়ে?
কিংবা হয়তো আমারই বোঝার ভুল
হয়তো নিত্যই তুমি হয়ে থাকো কারো নতুন করে
তোমার প্রেমের বেচাকেনার হাটে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন