শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১৪

ভুল


ভুল
- যাযাবর জীবন

আজ খুব ভোর বেলায়
যখন সূর্যেরো ঘুম ভাঙ্গে নাই
আমার পা চলে গিয়েছিল হেঁটে হেঁটে
তোর বাড়ির রাস্তায়;
প্রাতঃভ্রমণ?
নাহ, ঠিক তাও না
কেমন যেন ঘোরের মাঝে
দম দেওয়া পুতুলের মত, পায়ে পায়ে;
তোর বাড়ির সামনে দাঁড়াতেই
চোখ চলে গিয়েছিল বারান্দায়
খালি বারান্দাটা দেখে মন কেমন কেমন,
মনের মাঝে সেই সেদিনের তপ্ত দুপুরের স্মৃতি
ঝাঁপিয়ে চলে এলো খুব সহসায়
সেদিনের সেই ভুল চোখের ওপর
যখন তখন নেচে বেড়ায়
আমি অপলক চেয়ে দেখি অসহায়;
তোর ভুল ছিল আমায় কাছে ডাকা
আমার ভুল ছিল তোর কাছে যাওয়া
আমাদের ভুল ছিল দুজনার এক হওয়া
খেসারত গুনছি দুজন আজ
দু-ভুবনে
বিচ্ছিন্ন হয়ে;

এখন হাত দেখলেই বড্ড ভয় পাই
যদি আবার কেও হাত বাড়ায়?
যদি আবার চলে যাই একই ভুলের দোরগোড়ায়?
তার থেকে এই ভালো
তুই
আমি
আর আমাদের ভুলগুলো
আর মাঝে মাঝে স্মৃতির জাবর কাটা।









একা একা



একা একা
- যাযাবর জীবন

এ আমি কোথায় চলে এলাম?
এ কেমন তর জীবন?
এখানে দিন রাতের পার্থক্য বুঝি না
কখন সূর্য ওঠে ভোর হয়
কখন ডুবে গিয়ে সন্ধ্যা নামে
কখন চাঁদ হাসে আকাশের কোলে
কিছুই বুঝি না;
এখানে সব কেমন যেন ঘোলা ঘোলা
অনেক দিন হয়ে গেলো কারো সাথে কথা হয় না
অনেক দিন হয়ে গেলো চাঁদ দেখা হয় না
অনেক দিন হয়ে গেলো রাত জাগা হয় না
অনেক দিন হয়ে গেলো ভালো করে ঘুমও হয় না
ইদানীং কেমন যেন ঘুম আর জাগরণের মাঝামাঝি
কেটে যাচ্ছে দিন আর রাত্রি
কেমন এক ঘোরের ঘোরে;
আজ বড্ড রাত জাগতে ইচ্ছে করেছে
আজ বড্ড চাঁদ দেখতে ইচ্ছে করছে
আজ কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছে কোনো মানুষের সাথে
যেন তেন একজন মানুষ হলেই হয়
যে কথা বলবে আমার সাথে;
ইদানীং মানুষগুলো জানি কেমন হয়ে গেছে
সামনে দিয়ে চলে যায়
যেন দেখেও দেখে না
কোন কথা তো বলেই না
ভদ্রতা জ্ঞান হারিয়েছে নাকি সবাই মিলে?
এই যে ভাই একটু তাকান না এদিকে
ও ভাই!
হ্যাঁ আপনাকেই বলছি
এই যে আমি এখানে,
নাহ্
অন্য সবার মত ইনিও দেখলেন না আমায়।

আমি একজন মানুষ খুঁজছি
একটু কথা বলার তরে
একা একা আমার যে বড্ড দম বন্ধ লাগে
এই সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে।




সোমবার, ২৭ অক্টোবর, ২০১৪

ভোরের স্বপ্নে



ভোরের স্বপ্নে
- যাযাবর জীবন

ভোরটাই আজ অন্যরকম
তুই মাথার পাশে বসতেই
পাখির কিচিরমিচিরে ভৈরবী সুর
আজ রবি সেজেছে পূব আকাশে
কুসুম লাল বিশাল থালায়
স্বর্গ থেকে আসা গা জুড়ানো হিমেল বাতাস
তোর আঁচলের দোলায়
কপাল চুমেছিলি কি?

এই যাহ্‌!
ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো তোকে ধরতে না ধরতেই
আবার কবে আসবি ভোরের স্বপ্নে?




শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৪

জীবনের ঘূর্ণন


জীবনের ঘূর্ণন
- যাযাবর জীবন

আচ্ছা, ঠিক আছে
আজ তবে এইটুকুই থাক;
কাল আবার না হয় পাখির ডানার ভরে
নতুন করে ভোর হবে
আবার ভালোবাসব নতুন করে
আবার না হয় তপ্ত রবি মাথায় করে দুপুর গড়াবে
ভাটার টানে পাল তুলে বিকেল ধেয়ে যাবে
অস্তগামী সূর্যের পানে
ভালোবাসার গুনগুন গানে,
পাখিদের কলকাকলিতে নেমে আসবে সন্ধ্যে
তারপর আবার নতুন একটি অন্ধকার রাত
আবার মন খারাপ
আবার অনুযোগ আবার অভিমান
আবার নতুন করে বাঁধব না হয় বিষণ্ণ কিছু গান;
আজ না হয় এইটুকুই থাক
পুরনো অনুযোগের অভিমান ভরা রাত।

ক্রমাগত বাঘবন্দি খেলায় আজ আমি ক্লান্ত
অনুযোগের বাক্স-পেটরাগুলোও উপচে পড়েছে আজ
আজ না হয় এইটুকুই থাক;
তারপর আবার না হয় কালকে আসবে নতুন প্রভাত
নতুন করে ভালোবাসতে
নতুন ভাবে মত্ত হতে প্রেমে
নতুন করে আবিষ্কার দুজন দুজনে
তারপর আবার নতুন অনুযোগের পাহাড়ে
নতুন অভিমানের চারাগাছ
এভাবেই প্রতিদিন অঙ্কুরে মৃত্যু নতুন নতুন প্রেমের আশ
তারপর নতুন নতুন দীর্ঘশ্বাস;
দিন তো কেটে যাচ্ছেই হাসি আনন্দে
রাত্রি বিষণ্ণতার ভারে
তুই
আমি আর আমাদের
নিত্য নতুন প্রেম
তুই
আমি আর তোর
নিত্য নতুন অভিমান
চাঁদ সূর্যের মতই
প্রকৃতির দান।




বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৪

চাঁদের কপালে চন্দ্রবিন্দু



চাঁদের কপালে চন্দ্রবিন্দু
- যাযাবর জীবন

তোর কথায় তোর মুখে
তোর লেখায় তোর হাতে
আগুনের স্ফুলিঙ্গ;
বরফ গলা পানি গড়িয়ে পড়ুক
ঠান্ডা হতে ধরণী।

তোর বানানো দুঃখের সাগরে
ঢেউ উঠুক এলোমেলো
এলোচুল উড়ুক উড়ুক
আকাশে চাঁদ উঁকি
চাঁদের কপালে ভালোবাসা, চন্দ্রবিন্দু।

অনির্ধারিত দিনক্ষণ মেপে ভালোবাসা হয় না
নির্ধারিত পথের শেষে নেই কোন হাতছানি
তারচেয়ে ভাল
তোর শরীরে ও মননে চন্দ্রচ্ছটা;
যদি জ্যোৎস্নারাত তবে প্রেম
যদি অমাবস্যা তবে বিরহ
এভাবেই কেটে যায় ভালোবাসার প্রহরগুলো
সুখ
দুঃখ
হাসি
আনন্দ
কান্না
আর বেদনার কোলাজ।

তুই কর জ্যোৎস্না স্নান
আমি নিজেই অন্ধকারের গান।



মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৪

এখনো তুই ষোড়শী


এখনো তুই ষোড়শী
- যাযাবর জীবন

চায়ের কাপে চামচের টুংটাং
কিংবা তোর হাতে চুড়ির টুংটাং
দুটোই আমার কাছে গান

টিনের চালে বৃষ্টির রিমঝিম
আর তোর পায়ে নূপুরের রিমঝিম
দুটোই তো আমার গানের তান

সাগরের জলরাশি, জোয়ার ভাটার টান
আর তোর চোখে বয়ে যাওয়া অভিমানের বান
দুটোরই স্বাদ তো'রে লবন

তোকে দেখে ভাবুক না লোকে যা ইচ্ছে
বয়স্কা, প্রৌঢ়া কিংবা হেলে পড়া যৌবন,
আমার চোখে এখনো তুই সেই প্রথম দিনের
কিশোরী ষোড়শী, চির নবীনা,
এখনো তোকে দেখতেই ডামাডোল বাজিয়ে
মনেতে প্রেমের পদার্পণ;

প্রেম পাত্র একই আছে এখনো
কানায় কানায় পূর্ণ প্রেম সরোবর
ভালোবাসার পাত্র একই রকম টই টুম্বর
চুমুকে চুমুকে পিয়ে যাই তোকে প্রতিদিন
দিন আর রাত্রির অষ্টপ্রহর।


প্রতিকূল জীবন


প্রতিকূল জীবন
- যাযাবর জীবন

বাতাসের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে কে?
কিংবা
স্রোতের?

বুদ্ধিমানে পাল তোলে বাতাসের অনুকূলে;

কেও কেও বৈঠা বায় স্রোতের প্রতিকুলে
কাওকে হেঁটে যেতে হয় বন্ধুর পথ ধরে;

মরণের খুব পাশাপাশি হেঁটে চলেছে জীবন,
সমান্তরালে;

আমি ক্রমাগত বিপরীত পথ চলায়,
ডুবে যেতে যেতে ভেসে ওঠার চেষ্টায়
জীবনের পথ পরে।