করোনা হয়েছে তোমার?
আমি জানি, কি ভয়াবহ এক অসহায় একাকীত্বে সময় কাটাচ্ছ,
আমারও হয়েছিলো;
চৌদ্দ বা একুশ দিন একঘরে বন্দী জীবন
ওরা বলে কোয়ারেন্টাইন
আর যদি কপাল আরও খারাপ হয় তবে সাত বা দশদিন হসপিটাল
সেটা তো আরও ভয়াবহ
বাসায় না হয় একঘরে, তবুও কেও তো আছে দরজার ওপারে!
হাসপাতালে? ওখানে কেও নেই
ওয়ার্ডে জায়গা পেলে তো তোমার মতই আরও দু চার জন
আর কেবিন নিয়েছ তো মরেছ
ওখানে কিছু তেলাপোকা কিছু মশা আর নয়তো এরোসলের গন্ধ
আর বাকি সময়টা একা
সকাল দুপুর রাত্রি, প্রহর প্রহরের প্রত্যেকটা সময় বড্ড একা
আর মনের পুরোটা জুড়ে বড্ড ফাঁকা আর ফাঁকা;
উঁহু! একদম একা বোধহয় বলাটা ঠিক হবে না,
নার্স আসছে সকাল দুপুর রাতে
ডাক্তার দিনে এক বেলা
টাকা আছে তো সাথে রাখো সার্বক্ষণিক ওয়ার্ড বয়
আর নয়তো চব্বিশ ঘণ্টার নিস্তব্ধতা বৈ তো নয়;
সারাদিন পথ চেয়ে চোখ মোবাইল স্ক্রিনে
কেউ কি ফোন করলো একটা?
রিং হতে যা দেরি, একাকীত্বকে কিছুক্ষণ মারি!
ওহে! কয়জন ফোন করেছে একাকীত্বের এই একুশ দিনে?
একুশ জন গুনতে পারবে?
অথচ তোমার রক্ত সম্পর্ক তো অনেক
আত্মীয়-স্বজন? গুনে শেষ করা যাবে না
বন্ধু-বান্ধব?
আরে ফেসবুকে হাজার পাঁচেক!
স্কুলে, কলেজে, ইউনিভার্সিটিতে, অফিস কলিগ? তাও হবে হাজার খানেক
অথচ একুশ দিনে মাত্র একুশটি কল
তাও পাও নি?
তোমার থেকে অভাগা আর কে আছে?
শোনো!
তোমার যদি কখনো করোনা হয়
যখন একাকীত্ব তোমাকে ছেয়ে রয়
আমাকে জানিও কিন্তু একবার,
আমি জানি, একাকীত্বের কষ্ট
আমি জানি, একটা ফোনের মূল্য
ঐ ওরা বুঝবে না
ওরা তো কোয়ারেন্টাইনে ছিলো না।
২৫ মার্চ, ২০২১
#কবিতা
কোয়ারেন্টাইনের দিনগুলো
- যাযাবর জীবন
ছবিঃ নেট থেকে সংগৃহীত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন