ইফতারের সময় হয়ে আসছে, রিক্সা খুঁজে পাচ্ছি না।
একের পর এক রিক্সা সামনে দিয়ে চলে যাচ্ছে, একের পর এক রিক্সাওয়ালা জিজ্ঞাসা করছি - ভাই বনানী যাবা? কেউ কেউ মুখে না করছে, কেউ মাথা নাড়ছে কেউ আমার কথার পাত্তাই না দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে চলে যাচ্ছে। যেন ওদের কোথাও যাওয়ার কোন তাড়া নেই, যেন আজকের ইনকামের কোটা পূর্ণ হয়ে গেছে, যেন একজন দুজন বৃদ্ধ রাস্তায় আমাকে পৌঁছে দেও বলে চিৎকার করতে থাকুক; তাদের কিছু আসে যায় না।
বৃদ্ধদেরও মেজাজ খারাপ হয়, গরমের মধ্যে হাঁটতে হাঁটতে আমার মেজাজ তখন তুঙ্গে। সামনে এক রিক্সা দেখলাম হেলতে দুলতে প্যাডেল মারছে। ডাকলাম এই বাবা বনানী যাবা? শুনলো না। আবার ডাকলাম এই রিক্সা বনানী যাবা? পাত্তাই দিলো না। এবার জোরে ডাকলাম এই রিক্সাওয়ালা - উঁহু, শালা পাত্তাই দিচ্ছে না; নাকি শুনছে না। আবার কয়েকবার এই রিক্সা এই রিক্সা করে ডেকে শেষমেশ রাগের চোটে কর্কশ স্বরে ডেকে উঠলাম এই ব্যাটা বয়রা। আশেপাশের অনেকগুলো রিক্সায় বসে থাকা লোকজন হো হো করে হেসে উঠলো। রিক্সাওয়ালা রক্তচক্ষুতে আমার দিকে তাকিয়ে বলে - বয়রা ডাকেন কেন চাচামিয়া? আমি বললাম - এতক্ষণ তরে বাবা, সোনা কতকিছু কইলাম; তুই পাত্তাই দিলি না। বয়রা কইয়া ডাইক্কা দেখলাম তুই আসলেও কানে খাটা কিনা? ফিক করে হেসে দিয়ে বললো উঠেন।
আমি দিরং না কইরা রিক্সায় উইট্টা বইলাম। আশেপাশের রিক্সা থেকে তখনো লোকজন টিটকারি মারতাছে - ঐ বয়রা! ঐ বয়রা! ঐ বয়রা।
১৯ এপ্রিল, ২০২২
#হিবিজিবি_মন
ঐ বয়রা
- আহসানুল হক
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন