শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২৩

কাডলের চাপ - রম্য

 কাডলের চাপ 

 - আহসানুল হক 


পোলায় আজকা বায়না ধরলো কাডলের চাপ খাইব। 

আমি তব্দা খাইয়া জিগাইলাম, এত জিনিষ থাকতে তুই কাডলের চাপ খাইবার চাস কেরে? 

পুলা কইলো, তোমার অত বুঝার দরকার নাই। আইজ ইউনিভার্সিটিতে বেবাক্তে কাডলে চাপের কত আলুচুনা করতাছিল তাই আমি কাডলের চাপ খামু। মনে অয় খাইতে অনেক মজা হইব। 

আমি মাতা চুলকায় কইলাম - বাবা, অহন কাডলের দিন না, বাজারে দেকছি বড় তরমুজ নামছে। তরমুজ ওজনে কাডলের সমান। তুই চাইলে তরে তরমুজের চাপ খাওয়াইতে পারি। 

পুলা কতক্ষণ আমার দিকে চোখ দিয়া আগুন ঝরাইয়া ধারাম কইরা দরজা লাগাইয়া বইয়া রইলো। 

অহনকার পুলাপানরে লইয়া এই হইছে এক জ্বালা। যেইডা বায়না ধরে হেইডা না দিবার পারলেই ঘরের ভিত্রে গিয়া কেওর মারে আর ধারাম কইরা বাড়ি মাইরা রাগ দেহায় ঘরের কেওরের লগে। 

আমি মনে মনে কই, বাপ রে! তরা কেওরে বাড়ি মারস আর বাড়ি লাগে আমার কইলজার মইধ্যে। বাড়িডা তো তরা বানাস নাই, বানাইছি আমি। কত চাইলে কত ভাত হেইডা তরা বুঝবি কইত্থন?  

আমি মনে মনে বিড়বিড়াইতে থাহি, খাওনের আর কোনো কিছু পাইলো না! কাডলের চাপ খাইব! আরে বাবা আমার সাইজ কাডলের থাইক্কা কম নি? একবার মুঞ্চাইতাছিলো কই - আয় চেয়ার ধইরা ভালামত ব, আমি তরে চাপ দেই। কাডলের চাপের থাইক্কা কম জোরে দিমু না। 

এরারে কিছু কওনও যায় না। হাজার হোক পুলা। জোর গলায় কিচু কইতে গেলে হের মায়ে যতনা তাইড়া আহে তার থাইক্কা বেশি তাইড়া আহে আমার মায়ে। আমার নাতিরে তুই নানতা কস কেরে? হেয় যা চায় তা আইন্না হাজির কর। 

যদি কহনো কই - কইত্থন হাজির করুম? তহন আমার মায় ছ্যাঁত কইরা উডে, কে তর বাপে তুই যা চাইছস হাজির করে নাই? হেইতান কতা ভুইল্লা গেছস? 

আমি চুপ মাইরা থাহি। আমার বাপের কাছে সারাজীবনে কি কি বায়না করছি তা আঙ্গুলের কড়া গুইন্না কইতে পারুম। বাপের চোহের দিকে চাইলেই পেডের ভিত্রে গুড়গুড় কইরা উঠতো, তার কাছে আবার বায়না! কিন্তুক হেই কতা আমার মায়েরে কে বুঝাইব? উনার স্মৃতিশক্তি প্রায় লোপ পাইছে। মন মনে যা মনে কইরা লয় তাই তেনার কাছে সত্যি, আর আমরা মাথা কুইট্টা মইরা গেলেও ওনার মনকলারে আপেল বানাইতে পারুম না। 


যাউজ্ঞা, আমি রাগের চোটে বাজারের দিকে রওনা দিলাম, যদি অসময়ের কাডল পাই!

কিন্তুক বাজারে গিয়া আমি নিজেই তব্দা খাইয়া গেলাম। বেবাক দোকানে দেহি কাডল সার দিয়া পইড়া আছে।  

আমি বেক্কলের লাহান দোকানদাররে জিগাইলাম, কিরে? অসময়ে বাজারে এত কাডল কেরে? 

দোকানদার এমুন এক দৃষ্টিতে তাকাইলো যেন আমি সইদ্য পাবনা থাইক্কা ছাড়া পাইয়া আইছি। 

মনে মনে চিন্তাইলাম - পুলায় যহন কাডলের চাপ খাইতে চাইছে তার মানে হইলো গিয়া অহন কাডলের চাপ খাওনের ট্রেন্ড আইছে। তাইলে কি একটা কাডল কিনা লইয়া যামু? আবার মনে হইলো একটা কাডল দিয়া চাপ খাইব কেমনে? চাপ খাইতে হইলে তো পুলারে মইধ্যে বহায়া দুই দিক দা দুইট্টা কাডল ফটাশ কইরা বাড়ি দিতে হইব। তাইলেই না কাডলের চাপে জোর হইব। 

আবার চিন্তাইতাছি, আরে পাকনা কাডল যদি জোরে দুই দিক থাইক্কা বাড়ি দেই তাইলে কাডলের কোষ ফাইট্টা তো বিচিতে ঘরদোর সয়লাব হইয়া যাইব! কাডলের আঠার কতা নাইলে বাদই দিলাম (সইস্যার তেল মাইক্ষা লমু নে)। কিন্তুন যদি ঘরদোর কাডলে আর তার বিচিতে ছয়লাব হইয়া যায় তাইলে বিবি সাহেবে আইসা নি আমারে দিয়া পরিস্কার করায়! এইডাও এক চিন্তার বিষয়। আজকাল ওনার মেজাজ মর্জি যা হইছে না? তেলের মইধ্যে না ছাইড়াই ওনারে দিয়া বেগুনি খাওন যাইব। 

আমি চিন্তাইয়া কিচু না পাইয়া শেষে দোকানদারে স্মরণাপন্ন হইলাম। কইলাম ভাই রে! পুলায় কাডলের চাপ খাতি চাইছে। তুমি পাকনা দেইহা বড় দুইক্ষান কাডল দেও দেহিন। 


দোকানদার চেইত্তা গিয়া কয়, বুড়া মিয়া! মসকরা করেন?

আমি কইলাম, না তো রে ভাই। পুলায় কাডলের চাপ খাইতে চাইছে, হাছা কতা। একটা কাডল দিয়া তো চাপ দেওন যাইব না। তাই দুইট্টা কিনবার চাইছি। কেন ভুল কিচু কইলাম? 

দোকানদার উদাস স্বরে বিড়বিড়াইতাছে - আমার কি! বড়লোকের পুলারা কত কিচু খাইবার চায়! তাও ভালা, চাপ খাইবার চাইছে। কয় নাই যে কাডলের বোত্তা চিবায় চিবায় খাইব। এরার মাতায় কুনু বুদ্ধি নাই। যহন যে হুজুগ উডে হেইডাই। বাপের জন্মে হুনি নাই কাডলের চাপ, বড়া, শিংগারা, সমুচা। এইতান নয়া জামানার খাওন আইয়া কাডলের দাম দিসে আকাশে উডাইয়া। যাউজ্ঞা আমার কাডল বেচা দা কতা। বিড়বিড়াইতে বিড়াইতে আমারে কইলো - চাচামিয়া কাডল কিন্তু কেজি হিসাবে। আড়াই হাজার টিয়া কেজি। অহন আমনে যত কেজির কাডল ইচ্ছা নেন। 

আমি চেইত্তা গিয়া কইলাম, ফাইজলামি কর নি? কাডল কবের থন আবার কেজি হিসাবে? আর আড়াই হাজার টিয়া কেজি? মগের মুল্লুক? তোমার এই বড় কাডল তো দশ কেজির কম না। পঁচিশ হাজার টিয়া দা কাডল? তাও চাপ খাওনের লাইজ্ঞা? 

দোকানদার চেইত্তা গিয়া কয়, ঐ মিয়া পুরা কাডল কেউ কিনে নি? অহন ছটাক হিসাবে মাইন্সে কিনা লইয়া যায়। পুলাপাইনে কি কি সব চাপ চুপ খায়।

 

আমি চেইত্তা ঐ দোকান থাইক্কা বাইর হইয়া অন্য আরেক দোকানে গেলাম। ওমা! ঐহানেও দেহি কেজি হিসাবে। ইট্টূ ছুডু কাডল হইলে কেজি বাইশশ, আর বড় কাডল কেজি পঁচিশশ। 

আমি কিনুম এমুন একখান ভাব দেহাইয়া কাডল টিপ্পাটুপ্পা দেখতাছি। বেবাক দেহি কাঁচা কাডল, এইডি আদৌ পাকব? একবার ভাবলাম একখান কাঁচা কাডল কিন্না লইয়া বৌ রে কই গরুর মাংস দা কাডলের তরকারি রাইন্ধা দিতে। আবার দাম দেইহা ঢোক এর লগে ইচ্ছাও গিল্লা ফালাইলাম। দোকানদাররে কইলাম, ঐ মিয়া মশকরা করো? তোমার দোহানের বেবাক কাডল তো কতু, এইগুলা বাইত নিলেও পাকব না। কাঁচা কাডলের এত দাম হয়? আমি আরও চিন্তা করলাম অসময়ের পাকনা কাডল দেইহা এত দাম দাইতাছ। 

দোকানদার কতক্ষণ আমার দিকে চাইয়া থাইক্কা দীর্ঘশ্বাস ফালায় কইলো - চাচামিয়া যাইন দেহি এহান থন। হুদাই কাডল হাতাইয়া কাডলে দাগ ফালাইয়েন না।   

আমি পকেটে হাজার খানেক টিয়া লইয়া আইছি। মনে করছি তরমুজের কেজি যহন পঞ্চাশ টিয়া তহন কাডল আর কত হইব? ভাবছিলাম শ পাঁচেক টিয়ায় দুইক্ষান কাডল কিন্না বাইত লইয়া যামু। নাহ! পুলার কপালে আইজ কাডলের চাপ নাই। আমি এক হাজার টিয়া দা দুইক্ষান বড় চাইয়া তরমুজ কিন্না বাইত আইয়া পড়লাম। 


ঘরে ঢুকতে না ঢুকতে গিন্নির চিক্কুর। কাডল আনছ? 

আমি কইলাম না, কাডলের চাপ খাওন লাগব না, বড় দেইহা তরমুজ আনছি; তরমুজের চাপ কাডলের থাইক্কা খুব একটা কম হইব না। দশ কেজি কইরা দুইট্টা। তোমার পুলায় বিশ কেজি চাপ সইহ্য করবার পারব? 

বৌ অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ কইরা কইলো - আমার পুলারে চাপ দিবা মানে? তোমার সাহস তো কম না? 

আমি মিনমিন কইরা কইলাম, আমি কি করুম? তোমার পুলায় হেই বিকাল থাইক্কা কাডলের চাপ খাইব, চাপ খাইব কইরা আমারে দরজায় চাপ দা প্রায় মাইরাই ফালাইছিলো। এই অসময়ে কাডলের চাপ খাওনের কি দরকার হইলো তাই মাতায় আহে নাই। আমি কইলাম আয় বাপ তরে আমি চাপ দিয়া দেই, হেই হেইড্ডা শুনার পর ঘরত গিয়া ঠাস কইরা দরজা লাগায় দিলো। আর ইট্টু হইলে আমিই দরজার চাপে অক্কা পাইছিলাম। 

এইবার বৌ অগ্নিশর্মা হইয়া কইলো কেন খালি আবোলতাবোল বকো? পুলা কত শখ কইরা একটা জিনিষ খাইতে চাইলো তার তুমি ঢং শুরু করছ যেন কিচ্ছু বুঝো না। 

আমি অবাক হইয়া প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে বৌ এর দিকে চাইয়া রইলাম। আইজকাল হেরা কি সব কয় আমার মাতায় আসলেও ঢুকে না। পুলাপাইনের আধাখেচরা শর্টকাট ইংরাজি বুলির দশ ভাগ বুঝি আর নব্বই ভাগ মাতার উপ্রে দা যায়। তা যাক গিয়া, নিজের পুলাপাইন তো! ইশারা ইংগিতে ভাবের আদান প্রদান কইরা লইতে পারি। তয় বৌ এর কথা আইজকাইল নিরানব্বই ভাগই বুঝি না - এই হইছে এক জ্বালা। যতক্ষণ আপিসে থাহে ততক্ষণ আমি ঘরের রাজা, যেই না বাড়িত আইলো আমি মিউ মিউ কইরা মাইয়ার পিছে পলাই। আইজকাইল ঐ মাইয়াডাই যা ভরসা। 

আমি না বুইজ্ঝাই আবার কইলাম, জানস বৌ! বাজারে গিয়া দেহি এক তামশা। বেবাক দোকানে অসময়ের কাডল, আর তার কেজি কত জানস? আড়াই হাজার টিয়া। আরে গতবছর সবচেয়ে বড় কাডলডা আনছিলাম তর মনে আছে? মাত্র পাঁচশো টিয়া দা ঐ যে প্রায় আঠারো কেজির কাডলডা আনছিলাম! যেইডা লইয়া তুই আমারে দুইন্নার কতা শুনাইছিলি? কি মজাই না ছিলো ঐ কাডলডা! কোষগুলা মুহে দিতেই মাখনের লাহান গইল্লা গইল্লা গলার ভিত্রে যাইতাছিলো গা। কইয়াই বৌ এর দিকে চাইয়া আবার থাইম্মা গেলাম। - মনে পড়লো এই কাডল লইয়া কত কিত্তিই না হইছিলো! এই বাড়িতে আমি ছাড়া আর কেউ কাডল খায় না, কাডল নাকি উনাগো ষ্ট্যাণ্ডার্ডের লগে যায় না। হেই কাডল পুরা সাত দিন ধইরা আমারেই খাইতে হইছে। সকালে কাডল, দুপুরে কাডল, রাইতে কাডল এমন কি বিকালে নাস্তার লগেও আমারে কাডল আর মুড়ি দিসে। ঐ কতা মনে কইরা আবার চুপ মাইরা গেলাম। 


বৌ এর বুঝি এইবার ইট্টু মায়া হইলো, আমারে কইলো - আরে তুমি যা ভাবছ তা না। এই চাপ হেই চাপ না। আজকাল পুলাপাইনে কতরহম খাওন বাইর করছে! অহনকার ট্রেন্ড হইলো গিয়া কাঁচা কাঠাল দিয়া নানা রকম চাপ চুপ বড়া সিংগাড়া ইত্যাদি খাওয়া। এইগুলা তুমি বুঝবা না। কাঠালের চাপ বলতে ঐ যে গরুর চাপ, মুরগির চাপ আর খাসির চাপ কিন্না আনো না? ঐগুলির মত খাওয়ার জন্য কাঠালের চাপ বাইর হইছে। 

আমি মাতা খাউজ্জায় কইলাম - ওওওওওওও বুজছিইইইইইইইইই। হেইল্লাইগাই তো কই পুলায় খালি চাপ চাপ করতাছে কেরে? তাও কাডলের চাপ। 

তুই তো জানসই বৌ আমার বুদ্ধি কম, পুলায়ও তো জানে। হেয় আমারে ইট্টু বুঝায় কইলেই তো হইতো! হুদাই আমি বাজারে গিয়া দোকানদারগো আবোলতাবোল কতা হুইন্না আইলাম। 

তারবাদে আবার কইলাম - আইচ্ছা বৌ তাই বইলা কাডলের কেজি আড়াই হাজার টিয়া? আরে তুই না হেইদিন কইলি যে, পুলার লাইজ্ঞা এতলি টিয়া দা বেঙ্গলমিট থাইক্কা গরুর টিবোন না খালাতো বোন না ফুফাতো বোন কিন্না আইনা চাপ বানায় খাওয়াইলি! হেইডার দামও তো দেড় হাজার এর বেশি ছেলো না। আর কাডল আড়াই হাজার? আর যদি এত দামই অয় তাইলে এতলি টিয়া দা কাঁচা কাডলের চাপ খাওয়াইতে হইব? 

তার থাইক্কা গাছের কতু ইট্টু বড় হইলে ঐডা নামাইয়া আমারে কতু রাইন্দা দে আর ঐহান থন ইট্টু কাডল রাইহা দিস তর পুলার চাপ চুপ খাওনের লাইজ্ঞা......... 

কইয়া তার মুহের দিকে চাইয়াই পরের কতাগুলা গিল্লা ফালাইয়া ঢোক গিল্লা কইলাম, আইচ্ছা যাউজ্ঞা! পুলাই তো! টিয়া তো হেরার লাইজ্ঞাই............ কইতে কইতে আমার বাল্বের ফিউজ কাইট্টা গেলো। 

আমি চোখে সরিস্যা মাইক্ষা আন্ধার হইয়া ঘরের কোনে সুবোধ হইয়া চুপ মাইরা বইয়া রইলাম।       

        


#রম্য 


২৯ মার্চ, ২০২৩ 


কাডলের চাপ 

 - আহসানুল হক 


এটি একটি #রম্য কাহিনি

কারও জীবনের সাথে মিলে গেলে আমারে দোষ দিতে পারবেন না কিন্তু। 


আইচ্ছা আমি ধান বানতে গিয়া যবের গীত থুক্কু পূবের গীত থুক্কু কি জানি কার গীত? যাউজ্ঞা হুদাই গীত গাইতাছি কেরে? তাও আবার আমার ভাষা থুক্কু তোমগো লাইজ্ঞা খাস গাইয়া ভাষায়? 

ওহ, মনে পড়ছে। আমার দোস্ত Irfan Ullah Khan ইদানীংকার একটা ফানি রিল ভিডিওতে আমারে ট্যাগাইয়া জিজ্ঞেসা করতাছিলো ঐ ওনার মত আমিও কি বিশ্বাস করি নি যে বাংলাদেশের জাতীয় পশু হ্যাল থুক্কু হিয়াল থুক্কু শিয়াল? ভিডিওটা লেখার সাথে আপলোড কইরা দিলাম। হালা বদমাইস দাড়িওয়ালা কাউরে দেখলেই মনে করে ঐডা আমি। অসভ্য জানি কুনহানকার। দুইন্নায় আর মাইন্সের দাড়ি নাই? আর আমার কি ভিডিওর ঐ বুড়ার মত অত বুদ্ধি আছে? আপনেরাই কইন দেহি! 

শিয়াল কইলেই আমার Jackal আর ঐহান থাইক্কা Dr Jekyll and Mr Hyde এর গল্প মনে পড়ে। আবার Jackal কইতেই কেন জানি Jackfruit থুক্কু কাডলের কতা মনে আহে। মাতা খ্রাপ মানুষের কুন কতা থাইক্কা কুন কতা মনে পইড়া যায়!

এই শিয়ালডা কিন্তুক আমার ক্যামেরায় তোলা। কোন এক শীতের সকালে কেরাণীগঞ্জে গেসিলাম ছবি তুলতে। হঠাত কইরা লম্বা ঘাস বনের থাইক্কা উনি বাইর হইয়া আমারে কতক্ষণ অবাক চাইয়া রইলো! হয়তো ভাবতাছিলো শিয়ালের বনে কইত্থেকে আবার মানুষ নামক এই নিকৃষ্ট প্রাণীর আবির্ভাব ঘটলো। তারপর নিতান্ত তুচ্ছতাচ্ছিল্যের এক চাউনি মাইরা উনি ঘাসের বনে ঢুইকা গেলেন। 

এবার ওনার একটু পরিচয় দেই। 

উনি হচ্ছেন Golden Jackal কিংবা বাংলায় লাল শিয়াল, একে পাতি শিয়ালও বলা হয়। গ্রাম বাংলার বনে বাদাড়ে এখনো এনাদের প্রচুর পাওয়া যায়। সচারাচর দিনে দেখা না পাওয়া গেলেও সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে এদের সমবেত হুক্কা হুয়া শোনেন নি এমন অভাগা খুব কমই দেখতে পাওয়া যায় (তবে আজকালকার শহরে বড় হওয়া অভাগা বাচ্চাদের কথা বলছি না, ওরা সত্যিই অভাগা - নাহলে কারও মনে জাতীয় পশু কুত্তা কিংবা হ্যাল মাথায় আসে কিভাবে? এইসব রিল সাধারণত এদের উর্বর মস্তিস্ক থেকেই আসে)।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন