রবিবার, ৩০ জুন, ২০১৩

শব্দের কোলাহল

শব্দের কোলাহল
- যাযাবর জীবন

জলের কোলাহল শুনি বুকের ভেতর কান পেতে
ভেসে আসে সমুদ্রের গভীর তলদেশ থেকে
কোথায় জানি এক বাঁশরিয়া সুর তুলেছে
হাহাকার জাগানিয়া সুরে
হৃদয় গভীরে এক দীর্ঘশ্বাস ভেসে ওঠে
রাতের নৈঃশব্দ্য ভেঙে খান খান করে
বুকের ভেতর হাহাকার শব্দের কোলাহলে খন্ড বিখন্ডিত আমি
নিঙড়ানো হৃদয়ে তোকে বড্ড মনে পড়ে।

শনিবার, ২৯ জুন, ২০১৩

বিবর্ণ স্বপ্ন

বিবর্ণ স্বপ্ন
- যাযাবর জীবন

প্রতিদিন কিছু নতুন আশার জন্ম লয়
খেয়ালী মনের ভাবনায়
অযত্নে অবহেলায়
তিলে তিলে প্রতিরাতে মৃত্যুতে পরিণয়।

প্রতিদিন কিছু নতুন ইচ্ছের পাহাড়
ডানা মেলে মনের আকাশে
মুখ থুবড়ে পড়ে দিনশেষে মাটিতে
নিষ্ঠুর বাস্তবের কাছে মানে হার।

প্রতিরাতে কবর খুঁড়ি নতুন আশার
প্রতিরাতে মাটি চাপা ব্যর্থ সব ইচ্ছার
স্বপ্ন দেখার কিংবা দুঃস্বপ্ন ভালোবাসার
করুণ সানাই শুনি নৈঃশব্দ্য নিরাশার।

তারপর কালের গহ্বরে হারিয়ে যায়
পুরনো সব ইচ্ছে আর আশাগুলো
মনেতে বাস ছিল যেগুলোর অপূর্ণ
শুধু বেঁচে রয় বাস্তবতা, স্বপ্নগুলো করে চূর্ণ।

কি হবে স্বপ্ন দেখে?
তারচেয়ে
এই পাহাড়
এই সমুদ্র
বিস্তীর্ণ জলাভূমি
ধানক্ষেত আর সবুজের সমারোহ
পাখ পাখালির কুঞ্জন
চাঁদনি রাতের জ্যোৎস্নার ঢল;

অন্ধকারে জোনাক ফুল
শিউলি বা হাস্নাহেনার ভেসে আসা গন্ধ
আরো কত কিছু আছে হে দেখার!!
আরো আছে তমার চারিধার ঘিরে
কিছু অতি বাস্তব মানুষের কোলাহল।


বাস্তববাদী হও হে যাযাবর
স্বার্থের নৌকোয় পাল তুলে দাও
বাতাসের অনুকূলে
সময় থাকতে
নইলে ঠুকরে খাবে যত হায়েনার দল
নখদন্ত মেলে
বসবাস তাদের তোমারই চারিপাশে;
আশাগুলো মনের খুব গোপন ঘরে
তালা মেরে রাখো বন্দী করে
অলীক ইচ্ছাগুলোকে কর চূর্ণ
দিবা স্বপ্নগুলো বড্ড যে সাদাকালো
রঙচটা আর বিবর্ণ।


শুক্রবার, ২৮ জুন, ২০১৩

ইচ্ছে বিলাস

ইচ্ছে বিলাস
- যাযাবর জীবন

ঝুম ঝুমান্তি বৃষ্টি গায়ে ভিজে এলাম ছাঁদের নায়ে
ইট পাথরের শহর খানা খুঁজে না পাই নৌকা খানা
ইচ্ছে ছিল ভিজি নায়ে, নাইয়ার মাঝি হয়ে
পাশে যদি থাকতি রে তুই যেতাম নৌকা বেয়ে
বৃষ্টি ভেজা রাতের বেলায় মনটা ভেজা তোরই হেলায়
ভালোবাসার মূল্য দিলি অনেক বেশী অবহেলায়।

লোকে আমায় পাগল বলুক
আমার তাতে কি যায় আসে
বৃষ্টি রাতের হিমেল জলে
তুই যদি মোর থাকিস পাশে।

ওলোট পালট জীবন ধারায়
যেমন ইচ্ছে তেমন চলা
ইচ্ছা খাতায় আঁকি ঝুঁকি
মনের সাথে কথা বলা।

শ্রাবণের মেঘে মনের বরিষণ

শ্রাবণের মেঘে মনের বরিষণ
- যাযাবর জীবন

টাপুর টুপুর টাপুর টুপুর রিমঝিমাঝিম ঝরে
শ্রাবণেরই মেঘগুলো সব আকাশ থেকে পড়ে
রিমঝিমাঝিম রিমঝিমাঝিম রিমঝিম ঝিম ঝরে
শ্রাবণেরই মেঘগুলো সব বৃষ্টি হয়ে পড়ে


খেলছে রে দেখ ঐ মাঠেতে দামাল ছেলের দল
ভাবনা চিন্তা নেই তো কিছু পড়ায় ফাঁকির ছল
বই খাতা সব টেবিলেতে আলসে পড়ে রয়
বৃষ্টি দিনে পড়ার ফাঁকি আজ খেলার সময়

আলসে গায়ে চাদর মুরি বাবা বিছানায়
মা যে আমার রান্নাঘরে খিচুড়ি চুলায়
ভাইটি আমার পড়া ফেলে দামাল ছেলের দলে
বোনটি আমার আলসেমিতে ঘুম ঘুম চোখ ডলে
শ্রাবণ দিনের মেঘের আকাশ নানা রঙের খেলা
মন যে আমার শূন্য কেমন গড়িয়ে যায় বেলা
বৃষ্টি ভেজা মেঘের দিনে তোকে মনে পড়ে
আমার হয়ে মেঘগুলো সব কান্না হয়ে ঝরে


রিমঝিমাঝিম রিমঝিমাঝিম রিমঝিম ঝিম ঝরে
শ্রাবণেরই কান্নাগুলো আকাশ থেকে পড়ে
টিপটিপ টিপ টিপটিপ টিপ টিপটিপ টিপ করে
তোর কথাটি মনে হলেই অশ্রু চোখে ঝরে

মেঘলা আকাশ বাউল বাতাস
শ্রাবণ মেঘের ঘরে
একটুখানি মন খারাপে
কান্না হয়ে ঝরে

মেঘ থমথম গুড়ু গুড়ু শ্রাবণ দিনের খেলা
এখন সূর্য এখনই মেঘ ইচ্ছে হাওয়ার মেলা
টিপ টিপ টিপ সারাটি দিন ঝিরি ঝিরি ঝরে
মন বসে না কোন মতেই একলা আমার ঘরে

যখন তখন খেয়ালী মন
আকাশ কালো করে
তোর কথাটি মনে হলে
কান্না ঝরে পরে

রিমঝিমাঝিম রিমঝিমাঝিম রিমঝিম ঝিম ঝরে
শ্রাবণেরই কান্নাগুলো আকাশ থেকে পড়ে।

বৃষ্টির অনুভূতি

বৃষ্টির অনুভূতি
- যাযাবর জীবন

টিনের চালে যখন বৃষ্টির ঝমঝম
মনের ভেতরে অনুভূতি নয় কিছু কম
ইট কাঠের শহরে আজকাল অনুভূতিগুলো হয়ে গেছে ভোঁতা
লোভ লিপ্সা আর স্বার্থের খেলায় সবাই মাতা
কি আসে যায় তাদের বৃষ্টির কান্নায়
আকাশের অশ্রু বর্ষণ অনুভূতির বেদনায়
এখনো যারা বৃষ্টির কান্নায় মাতে
অনুভূতির কিছুটা মনে হয় বাকি আছে
চায়ের পেয়ালায় জানালায় মাথা ঠেকে
পুরনো স্মৃতিগুলো খুলে খুলে তাঁরা দেখে
সুখ দুঃখ হাসি কান্নায় ভরা জীবনের কিছু ঋণ
আকাশের কান্না আজকে সারাটা দিন।

আর বাকি সবার জন্য স্যাঁতস্যাঁতে জ্বালাময়ী শুধুই একটি দিন
মানুষ নামের যন্ত্র এরা, জলাঞ্জলি হলো তাদের স্বার্থের এক দিন।

প্রতিবিম্ব

প্রতিবিম্ব
- যাযাবর জীবন

আয়না কথা কয়
প্রতিবিম্বে নিজেকে দেখি
অনেক দিন পর আয়নার সামনে
কিংবা নিজের।

বয়স থেকে যেন দ্বিগুণ বয়স্ক এক লোক দেখা যায়
চিনতে কষ্ট হয়
দুটি লাইট একসাথে জ্বালাই
আবার আয়নার সামনে যাই
নাহ ঠিকই তো আছে
প্রতিবিম্বে একই বুড়োটে চেহারা;
শেষবার প্রতিচ্ছবি দেখেছিলাম নিজের
খুব বেশী দিন হয় নি
কালের যাত্রা ধ্বনি
যেন মাদল পাগল
সময়ের আগে ঘোড়ার রেস
একটির পর একটি আঘাতের রেশ
চেহারায় প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে
বয়সের আগে জীবন দৌড়ে।

একসময় ফুরিয়ে যাবে জীবন যুদ্ধ
আজ বড্ড ক্লান্ত
সইতে কালো থাবা স্বার্থের
কিংবা বইতে জীবনের।



বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০১৩

অজানা পথ হাঁটা

অজানা পথ হাঁটা
- যাযাবর জীবন

চলার পথের শেষ আছে কোথাও না কোথাও
আমার চলার পথ হয়ে গেছে বাঁকা
দূর দূরান্ত জুড়ে শেষ দেখা যায় না
বন্ধুর পথ মোর নিয়তিতে আঁকা
বনভূমি সবুজের প্রান্তর ঘুরে
পথের সমাপ্তিতে দেখি নতুন পথের আয়না
প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠে সেই আয়নায়
পথ ঘুরে ফিরে চলি কোন অজানায়.........

সইবে না

সইবে না
- যাযাবর জীবন

হাত দিয়ে যে যায় না ছোঁয়া
হৃদয় ছুঁতে হয়
মন যে বাঁধা হৃদয়টাতে
প্রেমের পরিচয়;
চাঁদ ধরতে আকাশেতে হাত বাড়ায় কয়জন
আমার মত মাথা মোটা আছে কতক জন।

চুড়ির হাতে ধরিস নে আমায়
একটু এদিক হলে
কেটে গেলে রক্ত ফোঁটা
কান্না আমার গলে
সইতে পারি সব বেদনা
কোন কথা না বলে
তোর গায়েতে ফুলের টোকা
ক্ষরণ কথা বলে।

অলীক স্বপ্ন

অলীক স্বপ্ন
- যাযাবর জীবন

কফির কাপে চুমুক
ঝিরিঝিরি বৃষ্টি
নাই বা থামুক
যদি পাশে থাকিস তুই;
দমকা হাওয়াতে
কোথা থেকে ভেসে আসে
পাহাড়িয়া বাঁশীর মন কাড়া সুর
বিহ্বল হয়ে রই;
খুব মাঝে মাঝে হাতে হাত বাড়িয়ে
তোর হাতটাকে একটুকু ছুঁই
কফির কাপে চুমুক দু-জনা একসাথে
যদি পাশে থাকিস রে তুই।

সীমা নেই কোনো স্বপ্ন দেখার
ফুটপাতে চায়ের কাপে চুমুক
পকেটে হাত
সিগারেটের টাকা হবে কি?
না হয় বিড়ি, শুধু একটি......
আজকের মতন
কালকেরটা কাল বুঝব;
তুই বড্ড জ্বালাস স্মৃতি হয়ে
যখন তখন।




বুধবার, ২৬ জুন, ২০১৩

চলে এসো তুমি সময় ফুরনোর আগে

চলে এসো তুমি সময় ফুরনোর আগে
-যাযাবর জীবন

শেষ রাত, আঁধারের কালিতে অন্ধকারের আলপনা আঁকছি। নাই বা গেল দেখা খালি চোখে তিমির অন্ধকারে। দেখার চোখ যে তোমার নেই, মরে গেছে। অন্ধত্বের চোরাবালিতে ডুবে গেছে তোমার অন্তর; সেই যেদিন থেকে ছেড়ে চলে গেছ আমার ঘর। তবুও অন্ধকারে আমি রংধনুর সাত রঙ একে চলেছি, মনের চোখে দেখে। অন্ধত্বের ঠুলি আমি পড়িনি এখনো, আলোর দিশায় আজো চোখে স্বপ্ন আঁকানো। তুমি ফিরে আসবে বলে যত আয়োজন করে রেখেছি। যদি ভুল ভাঙ্গে, যদি ফিরে আস আবার আমার ঘরে! কি জবাব দেব তোমায় অগোছালো হয়ে থাকলে পরে।

আমি রঙ কুড়চ্ছি একটি একটি করে। শ্রাবণের মেঘ থেকে হালকা আর কালো মেঘের রঙ তুলে নিয়েছি, পলাশ ফুল থেকে টকটকে লাল। সূর্যমুখী থেকে হলুদ কিছু রঙ এনেছি, সাথে একটু আঠালো মধু মাখানো, ছিনিয়ে নিয়েছিলেম যা মৌমাছির হুল থেকে।

জ্যোৎস্নার আলো থেকে হালকা হলুদ, কুয়াশার চাদর থেকে হালকা ধুসর, সাপের ফণা থেকে তুলে এনেছি নীল বিষ। আকাশ থেকে রঙ তুলে এনেছি বিভিন্ন সময়ে, সকালের হালকা নীল, দুপুরের পুড়ে যাওয়া স্মৃতির গন্ধ মাখা গাঢ় নীল, বিকেলের রক্তিম লালাভ কিছু রঙ। তোমার ঘৃণার নীল বিষের সাথে মিশিয়ে রেখেছি।

ঝমঝমে বৃষ্টি থেকে ফোঁটায় ফোঁটায় তুলে রেখেছি কান্নার অশ্রুজল, ক্যানভাসে জলরং মেলাবো বলে। শুধু শুকনো রঙে তো আর ছবি হয় না, সাথে জলরং মেলাতে হয় কিছু। ভেবো না, অশ্রু জলে টান পড়লে হৃদয় চিড়ে বের করে নেব টকটকে কিছু লাল রঙ, ব্যথার জ্বালা সয়ে এখনো ধরে রেখেছি তোমারই জন্য, একটুও নষ্ট হতে দেই নি।

তুমি আসবে বলে স্বপ্ন সাজিয়েছি, রঙের বাহার আমার চারিদিক জুড়ে। তুমি ঘরে এলেই জলরঙে আঁকব অন্ধকারের আলপনা। ততদিনে আমি নিশ্চিত তোমার চোখের ঠুলি খুলে পড়বে, সূর্যের প্রখর রোদে তুমি দেখবে জ্যোৎস্নার জলরঙে আঁকা তোমার ছবিখানা।
সেদিন যেন আবার তুমি কেঁদো না। তুমি তো খুব ভালো করেই জানো তোমার অশ্রুজল আমি সইতে পারি না।
তবে খুব বেশী দেরি করো না, একটি করে তোমার দিন শুরু হয় আমার হয় হাতেগোনা দিনের সমাপ্তি। স্বপ্ন নিয়ে বসে আছি, যাবার আগে তোমার ছবিটা এঁকে দিয়ে যাব – তারপর স্মৃতি হয়ে যাব; হার মেনে নিয়তির কাছে। চলে এসো তুমি দিয়ে অন্ধকার পাড়ি। মাটি ডাকছে আমায়, চলে যেতে হবে খুব তাড়াতাড়ি।

মাটির অপেক্ষা

মাটির অপেক্ষা
- যাযাবর জীবন

অনেক ময়লা আমার গায়ে
পরতে পরতে জমে আছে
কি করব বলো? বসবাস আমার কাঁদা মাটির কোল ঘেঁসে
মাটির গন্ধ আমার অনেক আপন মনে হয়
মাটিতেই সৃষ্টি মাটিতেই ক্ষয়
তাই আজকাল মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে রই
নাক কুঁচকানো ঘৃণার মুখচ্ছবি দেখতে বড্ড কষ্ট হয়
তোমাদের উঁচু নাকে যদি বু আসে
বসবাস তোমাদের ইট কাঠের দালানের মাঝে
ছুঁতে চাও আকাশ, বসবাস তোমাদের আকাশের খুব কাছে।

আমার মাটি মাখা ময়লা গায়ের গন্ধ তোমাদের যাতে সইতে না হয়
তাই আমি দূরে সরে এসেছি
অনেক অনেক দূরে
কাঁদা মাটির খুব কাছে
অপেক্ষার প্রহর গুনি মাটিতে মাটি হতে।

মঙ্গলবার, ২৫ জুন, ২০১৩

টুকরো কথা

টুকরো কথা
-যাযাবর জীবন

টুকরো কথায় সাজাই লেখা
টুকরো টুকরো হয়ে
ব্যথার জলে পা ডুবিয়ে
অশ্রু নহর বহে।

মনের আকাশে ডানা মেলে না এখন আর গাংচিল
রাতের আকাশ চিঁরে জেগেছে এখন ভোরের নীল
উল্টে গেছে সময় পাল্টেছি আমি
উল্টো কাঁটায় ঘুরছে আজ আমার সময় ঘড়ি
উল্টো পথে চলা আর উল্টে গেছে রীতি
তন্দ্রাচ্ছন্ন হচ্ছি আমি জেগেছে প্রকৃতি;
ইদানীং কি বড্ড বেশী হিসেব করছি?
সময়ের উল্টোদিকে যেন পথ চলছি।

আরেকটি নতুন সূর্যোদয় আরেকটি দিন শুরু তোমার
জীবন থেকে আরেকটি দিনের সমাপ্তি হলো আমার।

ভালো মানুষ

ভালো মানুষ
-যাযাবর জীবন

নামে নামধারী মানুষ আছে কিছু
কর্মে মানুষ নয় স্বার্থে যেন পশু
পরিচয়ে ভালো মানুষ অতি ভালো জন
ব্যবহারে মনে হয় তারাই স্বজন।

মিঠে কথার ফুলঝুরি মুখে ফুল ফোটে
স্বার্থের একটু টোকায় কাঁটা গলে জোটে
অর্থের লিপ্সায় লোভের কাঙাল
নখ দন্ত বিকশিত হায়েনার হাল।

পরিষ্কার কাপড়েতে সমাজে ঘোরে
ডাস্টবিনের ময়লা মনের ভেতরে
সুযোগের ব্যবহার ভালোই করতে জানে
মিঠে কথার মালা গেঁথে খুব কাছে টানে।

স্বার্থের সিদ্ধিতে কর্ম সাবাড়
টিকিটির দেখা নেই তারপর তার
সকল আয়োজন যোগাযোগে ব্যর্থ
অর্থটাই মূল ছিল সম্পর্কের অনর্থ।

অস্পষ্ট উপলব্ধি

অস্পষ্ট উপলব্ধি
- যাযাবর জীবন

অন্তরে বাঁশির সুর বাজে না যে আর
অশ্রুতে ভিজে ছিঁড়ে গেছে তানপুরার তার
মনের ভাবনাগুলো কানামাছি খেলা করে
কষ্টগুলো কান্না হয়ে ঝরে
খাতা আর কলমের আঁকিঝুঁকি খেলা
মরা মনে খেলে সব অসুস্থ ভাবনার মেলা
কলমের নিবে নৈঃশব্দ্যের মাছি ওড়ে
নিস্তব্ধ অন্ধকার চারিধার রয় ঘিরে।

অনাদরে অবহেলায় নষ্ট কষ্টগুলো পড়ে রয়
মনের গহীনে অমূল ঘৃণার অস্তিত্ব কথা কয়
ক্ষরণের লালে হৃদয় খাতায় কবিতা দেয় না ধরা
অস্পষ্ট ভালোবাসার গল্পগুলো রয়ে যায় অধুরা......

সোমবার, ২৪ জুন, ২০১৩

ভালোবাসার উপলব্ধি

ভালোবাসার উপলব্ধি
- যাযাবর জীবন

যতই চেষ্টা করে যাই
সরাতে পারব না নিজেকে জীবন থেকে তোর
এমনই বলেছিলি কথা;
অনেক বুঝিয়ে অনুরোধে সরাতে পারি নি তোরে
দেমাগে অহংকারে ভালোবেসে বলেছিলি একটিমাত্র কথা
আমি তোরই জীবনের অংশ - "পারলে ঠেকা";
মনে আছে কি তোর কিছু বলি নি সেদিন
শুধু মুখ চেয়ে থেকেছি
আর একটু মুচকি হেসেছি।

তুই রেগে বলেছিলি -
হাসিস কেনরে গাধা
আমিই তোর রাধা
যতই চেষ্টা করিস পারবি না আলাদা হতে
আমা হতে, আমা হতে;
আমার মুচকি হাসির পেছনের কারণ
তুই বুঝতে পারিস নি সেদিন।

আজ হয়তো বুঝেছিস কিছু
ভালোবাসা মিলন তো নয় রে
সে যে অন্য কিছু
দংশন বিবেকের
ক্ষরণ হৃদয়ের
আর লোনা জলের নহর
খর রৌদ্দুরে বালু-ভাজা অষ্ট প্রহর
আজ কি বুঝেছিস?
না কি আবারও ভুল পথে পা বাড়িয়েছিস
জানি না।

তবে তোর দেমাগি ভালোবাসার অহংকার
ঠেকিয়ে দিয়েছি আমি, হয়েছি পুড়ে অঙ্গার
ভালোবাসার নষ্ট কষ্টগুলো বুকেতে পুষেছি নিজে
শুধুই তোর ভবিষ্যতের কথা ভেবে;
জাগিয়েছি একটু একটু করে তোর মনে ঘৃণা
চেপেছি কান্নার ধারা, বয়ে গেছি যাতনা,
কি লাভ কি ক্ষতি হিসেব সেদিন করি নি
একদিন অনুভবে বুঝবি, প্রতারণা করিনি।

অসম ভালোবাসায় অমঙ্গলের কালো ছায়া
তবু প্রেমিক প্রেমিকা মেতে থাকে দুজনা
দেখে না দূর ভবিষ্যৎ সংসারের মায়া
ভালোবাসায় মিলন চায়, অন্য কিছু বোঝে না
তোকে সরিয়ে দিয়ে খুব ভালো নেই আজ আমি
তবুও সঠিক কাজটি করেছি মনে মনে জানি;
উপলব্ধির নতুন পাতা ছড়াবে একদিন তোর ডালে
যখন তোর সংসার ভরে উঠবে অনেক ফুলে ফলে
আজ ক্ষমা নাই বা করলি মোরে অনেক ঘৃণায়
সেদিন ঠিকই দু ফোঁটা অশ্রু গড়াবে তোর বিছানায়।





রবিবার, ২৩ জুন, ২০১৩

দু ভুবনের হিসেব

দু ভুবনের হিসেব
- যাযাবর জীবন

চড়াই উৎরাইয়ের জীবন
পাড়ি দেয়া হলো
বেশ অনেকটা পথ,
অনেক হলো দেখা
অনেক হলো জানা
কাণ্ডারি জীবন রথ।

শেখায় নি কেও পথ চলতে
দেখে শেখার তালিম ছিল না জানা
দ্বারে দ্বারে শিখেছি ঠেকে
তবু রয়ে গেছে কত অপার অজানা।

আশীর্বাদের বাড়ানো হাত পাই নি কখনো জীবনে
পথ চলতে হোঁচট সামলেছি কতবার পড়ে ধরণী তলে
দেখেছি কত প্রিয় মুখ ভেবেছি আপন যারে
পেছন ফিরতেই তাচ্ছিল্যের হাসি মুখটিকে বাঁকা করে
সামনে থাকতে মধুর ফুলঝুরি মুখ ফুটে ঝরে পড়ে
পেছন ফিরতেই ছোরা বিঁধিয়েছে আমারই পিঠের পরে
রিপুর কথা শুনেছে সবে দেখেছে কে তার রূপ
আমি দেখেছি কালো থাবা মেলা ষড়রিপুর আসল স্বরূপ
স্বার্থের নায়ে মাঝি সকলে
যার যার নিজস্ব বৈঠা হাতে
এ যুগে বল কোন বোকা আছে
বাদাম তোলে শান্তির নায়ে
ভেসে যেতে মৃদু সমীরণে;
রেসের ঘোড়ায় চাবুক আরো জোরে
পৌঁছতে হবে কে কার আগে
একজন আরেকজনের পথ মাড়িয়ে
মেঠোপথের ধুলো কে মাখে পায়ে?

ঠকায় সবাই স্বার্থের খেলায়
জীবনের প্রতি বাঁকে
বোঝে না মানুষ খেলোয়াড় নই আমি
দূরে সরে রই তাই ফাকে
বোকা বলে কত অপমান করেছ সবাই মিলে
তোমাদের তথাকথিত স্বার্থের খেলা আমি বুঝিনি বলে
সুযোগ হয়েছে যখনি যার
স্বার্থের খাঁড়ার নিয়েছি ভার
তাচ্ছিল্যের মালা গলে পড়েছি
মেনে নিয়ে মণিহার
স্বার্থের খেলায় তোমাদের জিত
আমার হয়েছে হার।

হিসেবে আমি বড্ড কাঁচা
পাওয়ার হিসেব করিনি তাই
সারে তিন হাত মাটির তলায়
সকলেরে যেতে হবে রে ভাই;
হারের মণিহার গলে পরে
এ-ভুবনে না হয় ন-মানুষ হলাম
ও-ভুবন রয়েছে পড়ে
স্বার্থের খেলা যতই খেল
যেতেই হবে তার কাছে।

টাকা কড়ি বাড়ি গাড়ি নিয়ে যেও সেদিন
পোটলা বেঁধে সাথে করে
একটি কড়িও যেওনা রেখে
সাত-ভুতে তবে খাবে যে লুটে
মানুষ ঠকিয়ে পাহাড় গড়েছ আজ উপচে পড়ছে টাকা
নির্মম সত্য ভেবেছ কখনো? মাটির তলায় রইবে চাপা।

তোমাদের সকল কর্ম কাণ্ডের আসল হিসেব শুরু হবে যেদিন
ন-মানুষ কিছু আছে পৃথিবীতে তাদের অল্প কিছু হিসেব দেবে সেদিন
তোমাদের কাছে নয়, তোমাদের কাছে নয়
ওপরওয়ালার কাছে, ঐ দূর আসমানে যে বসে আছে।

শনিবার, ২২ জুন, ২০১৩

প্রেমের খেলা

প্রেমের খেলা
- যাযাবর জীবন

প্রেমের খেলায় মত্ত সবাই
দুজন জুটি হলে
ভালোবাসা পেখম মেলে
চারিদিক যায় ভুলে।

এ খেলাতে খেলোয়াড়
মাত্র দু জনা
কেবা জেতে কেবা হারে
বল না রে তুই মনা।

খেলার কোনো নিয়ম নেই
যে যার মত খেলে
মনের কথায় শরীর স্পর্শ
প্রেম পাখা মেলে।

খেলার মত খেলা হলে
দুজন জুটি বাঁধে
মান অভিমান খেলার ফাউল
রাগে অনুরাগে।

মত্ত যখন প্রেমের খেলায়
চরম আসক্তি
ফাউল হলেই জীবনেতে
আসে বিরক্তি।

রেফারি নেই এই খেলাতে
যে যার মনের রাজা
একটুখানি এদিক ওদিক
প্রেমের ব্যান্ড বাজা।

কোথায় ওরে প্রেমের বাস
রাগের উদয় হলে
করে নিজের সর্বনাশ
বিবেক বুদ্ধি ভুলে।

খেলা যখন জমে ওঠে
ভায়োলিনের সুর খেলে
মনের মাঝে প্রেম আকাশে
ইচ্ছে-ঘুড়ি ডানা মেলে।

হেরে গেলে প্রেমের খেলায়
অনিয়মের জীবন চলে
রাতের ঘুম হারাম করে
কান্নার জল চোখে ডলে।

অনেক হলো প্রেমের খেলা
জীবন খেলার মাঝে
কষ্ট কষ্ট বীণার সুর
মনের মাঝে বাজে।

হেরে গিয়ে দুজন দুদিক
তবুও মন পোড়ে
মনের মাঝে কষ্ট কলি
কান্না ঝরে পড়ে।

শুক্রবার, ২১ জুন, ২০১৩

অভিমানী রাজকন্যা

অভিমানী রাজকন্যা
- যাযাবর জীবন

ঘুম ভাঙ্গানিয়া স্বপ্ন কন্যা
আমার আদরের অভিমানী রাজকন্যা;
জীবনে এসেছিলি কেড়ে নিতে ঘুম
গুনগুনিয়ে গান শুনিয়েছিস
আদরে সর্বাঙ্গে ভরে চুম
অভিমানে মুখ ফিরিয়েছিস
কে শোনাবে আজ ঘুম গীতি
মুঠোফোনটা নিশ্চুপ পড়ে রয়
এ তোর কোন খেয়ালী রীতি
বেলিগুলো সব শুকিয়ে গিয়েছে
জড়ো করে রাখা কুঁড়িয়ে তোর লাগি
গাঁথা হয় নি মালাগুলো আজো
লাটাই সুতো ছেড়ে দিলি
কদম কুড়িয়ে জড়ো করে রেখেছি
খোপায় পড়াব বলে
অভিমানিনীর মান ভাঙেনি
শুকিয়ে এলো বলে
কোথায় গিয়েছিস বলে যাস নি
একলা আমায় ফেলে
জানি না নির্ঘুমের কাল রাত জাগার
সমাপ্তি কোথায় আছে
পথ চাওয়ার কবে শেষ হবে
আসবি তুই মোর পাশে।

ময়ূরপঙ্খী নাও পাঠাবো বল না রে কোন দ্বীপে
বালুচরি পূর্ণিমা একলা জেগে তোর প্রতীক্ষায় কাঁদে
মেঘ গুড়গুড় আকাশ কালো
মুখভার তোর কোথা নেই আলো
বৃষ্টি ঝরাচ্ছে শ্রাবণ মেঘেতে
কান্নার জল সব ধুয়ে দিতে
পথ চেয়ে আমি আজো রাত জাগি
সেই আগের মতন
ভালোবেসে বুকে তুলে নিতে।




নতুন প্রজন্ম

নতুন প্রজন্ম
- যাযাবর জীবন

গাছের ডালে ডালে
সময় বয়ে গেলে
নতুন কুঁড়ি পাখা মেলে
নবীন পাতারা হেসে খেলে ওঠে
একটি কুঁড়ি থেকে দুটি, তিনটি চারটি কিংবা অধিক
পরস্পর বেড়ে ওঠে হেসে খেলে
মাঝে মধ্যে কেও কারো ছোঁয়া পায়
বাতাসের ধাক্কায়
মাঝের দূরত্ব একই রয়ে যায়
তবুও একটি ডালে ঝুলে রয় হেসে খেলে;
সময় গড়ায় কালের গহ্বরে
নবীন পাতারা প্রবীণ হয়
কচি সবুজ থেকে গাঢ় সবুজ রঙ ধরে
সতেজ ভাব নুয়ে পড়ে
তবুও একই ডালে ঝুলে রয়
দূরত্ব ঠিক আগের মতই
মাঝে মাঝে ছুঁয়ে দেয় একে অপরকে
মৃদু মন্দ বাতাসে হেলে-দুলে
তারপর রঙ ধরে হলদেটে
একসময় ধুসর হয়ে ঝড়ে পড়ে
পাতা-ঝরার দিনগুলোতে;
গাছ গাছের মত দাঁড়িয়ে থাকে
পাতা-শূন্য হয়ে, কালের সাক্ষী হয়ে
আবার নতুন দিন আসে
নতুন কুঁড়ি, নতুন পাতা তারপর ক্রমাগত.........

কাল থেমে থাকে না কারো অপেক্ষায়,
আমি গাছের দিকে চেয়ে থাকি আর ভাবি
মানুষের জীবনটাও তো ঠিক এমনি;
দুটি কচি পাতা সতেজ সবুজ
অথচ দুটি আলাদা মাংসপিণ্ড
রক্ত আর মাংসে গড়া
প্রকৃতি খেলা করে আপন স্বার্থে;
রক্তের মত লাল ওড়না উড়িয়ে
একজন ঘুরে বেড়ায় সাগর তীরে,
অন্যজন মুগ্ধতায় চেয়ে থাকে
পরস্পর কাছে আসে অনাবিল এক আকর্ষণে;
ছোঁয়াছুঁয়ি প্রকৃতির প্রয়োজনে
তারপর একে অপরের হয় জীবনে
নবীন কচি পাতার সতেজতা নিয়ে
দুজন দুজনে মেতে
দুটি রক্ত মাংসের পিণ্ড এক হয়ে রয়
নতুন শিশুর জন্ম হয়
সেও প্রকৃতির প্রয়োজনে
অথচ পরস্পরে কোথায় যেন এক দূরত্ব রয়ে যায়
ঠিক ঐ কচি দুটি পাতার মত।

কালের দিন গড়ায়
সতেজতা নুয়ে পড়ে গাঢ় সবুজ পাতায়
প্রৌঢ়ত্ব কিংবা বার্ধক্য
তবু নুয়ে রয় একে অপরের ছোঁয়ায়
সংসারের প্রয়োজনে
ঠিক ঐ হলদেটে পাতার মত
ঝরে পড়ার অপেক্ষায়
জীবন থেকে
মাটি হয়ে মাটিতে মিশে
রক্ত মাংসের পিণ্ড।

কখনো আমরাও দুজন ছিলাম কালের গাছে দুটি নবীন পাতা
সখ্যতা ছিল পরস্পরের কাছাকাছি থাকা
তবুও কোথায় যেন ছিল যোজন যোজন দূরত্ব
শুধু মাত্র পরস্পরকে ছুঁয়ে গেছি;
আজ হলদেটে হয়ে নুয়ে পড়েছি
তবুও পরস্পরকে আঁকড়ে পড়ে আছি
ঠিক ঐ হলদেটে পাতাগুলোর মত।
হয়তো তুই আগে ঝড়ে যাবি কিংবা আমি
অপেক্ষায় মাটিতে পড়ে মাটি হতে
ঠিক ঐ পাতা-ঝরার দিনের মত
একজন পড়ে রবে মাটিতে
হলকা বাতাস হয়তো অপরকে নিয়ে আসবে কাছাকাছি
ছুঁয়ে দিতে তারপর দুটি জীবন খাতার পাতাই
মিলেমিশে মাটিতে মাটি হতে।

কোথাও না কোথাও তো মিলন হতেই হতো আমাদের
ছোঁয়াছুঁয়ি আর নিবিড় সান্নিধ্য
যতটা না ভালোবাসায় তারচেয়ে বেশি প্রকৃতির প্রয়োজনে
নতুন মাংস পিণ্ডের জন্মের নিমিত্তে
তারপর ছুটি, পুরনো পাতাগুলোর মত
নতুনের আবাসভূমি নতুন প্রজন্ম
আবার, আবার, আবার
এভাবেই ক্রমাগত ...............

প্রেম মোহ ভালোবাসা - রমণের আয়োজন
প্রকৃতির খেলা - নতুন প্রজন্মের সৃষ্টি
তারপর মাটিতে দৃষ্টি
অপেক্ষা মাটিতে মিশে মাটি হওয়ার
এভাবেই গড়ে উঠছে সংসার
তারপর ক্রমাগত.........
এভাবেই চলছে নিয়তির খেলা এ ভুবনে
কিংবা প্রকৃতির খেলা নতুনের প্রয়োজনে
তারপর আবার হয়তো দেখা হবে
অন্যভাবে অন্য কোনো ভূবনে।






বৃহস্পতিবার, ২০ জুন, ২০১৩

একটি কণ্ঠস্বর

একটি কণ্ঠস্বর
- যাযাবর জীবন


দুপুর বেলা বৃষ্টির রিনঝিন গানে
ঘুম ভাঙ্গালো আমার কানে কানে
বিছানায় অলস গড়াগড়ি
তারপর দুপুর গড়িয়ে বিকেল
ঝুম বৃষ্টি পান করছিলাম চায়ের কাপে
আবেশে চুমুকে
অলস বিকেল কর্মহীন অন্যান্য দিনের মত
কি সব ভাবনাগুলো ভর করে মাথায় আসছিল যত;
মুঠোফোনটা আজকাল বন্ধ পড়ে থাকে
খুব মাঝে মাঝে সাইলেন্ট মুডে
হঠাত চোখ গেল অনেকগুলো মিস কল
একটি নাম্বার থেকে, অপরিচিত।
কল ব্যাক করা হয় না সাধারণত
কি মনে হতে কলব্যাক করলাম......

একটি কণ্ঠস্বর
অনেক দিন পর
চমকে উঠলাম আমি
চমকাল আকাশ
থমকাল বাতাস
মেঘ পালালো কোন দূর দেশে
বিকেলের সূর্য ডানা মেলে দিল
বিষণ্ণ বৃষ্টিঝরা দিনটাই বদলে দিল
সোনা রোদে ঝলমলে চারিধার...
শুধু একটি কণ্ঠস্বর
অনেক অনেক দিনের প্রতীক্ষিত আকাঙ্ক্ষার
যেন হলো অবসান।

আজ অনেক অনেক দিন পর ঘর ছাড়লাম
গায়ে মেখে নিতে বিকেলের সোনালু রৌদ্দুর
সেই থেকে সারারাত হেঁটে বেড়িয়েছি
অজানা গন্তব্যে এখানে ওখানে
ল্যাম্পপোস্টের হলদেটে আলো গায়ে মেখে
মনে রৌদ্দুরের আবেশ রেখে
আর বয়ে কানে করে
স্মৃতির মিনারে
শুধু ঐ একটি আকাঙ্ক্ষিত কণ্ঠস্বর......

বুধবার, ১৯ জুন, ২০১৩

ভুলে ভরা জীবন

ভুলে ভরা জীবন
- যাযাবর জীবন

ভুলে ভরা জীবনের অথৈ অন্ধকারে ডুবে
কুড়িয়েছি লাঞ্ছনার পাহাড়
গঞ্জনা পড়ে নিয়েছি গলায় মণিহার
তবু ক্রমাগত যত ভুল
ইচ্ছা বা অনিচ্ছাতে করে গেছি বারে বার।

কি করতে পারতাম?
হয়তো পারতাম জীবনকে বদলাবার
গা ভাসিয়ে স্রোতের অনুকূলে
বিবেকের বাঁধা না মেনে
স্বার্থের খেলায় কুকুরের মত হাড্ডির জন্য লড়াই
টাকার খেলায় বিসর্জন বিবেক
সম্পর্কের খেলায় শেয়ালের ধূর্ততা
কিংবা ভালোবাসার খেলায় শুধু শরীরে মাতা;
বন্ধু বান্ধব পরিজন
কত বুদ্ধি দিয়েছে আপনজন
ভাসাতে কালের স্রোতে গা
আমি উজান ঠেলে এগিয়েছি
ভুলে ভরা জীবনে ফেলেছি পা
স্রোতের প্রতিকূলে গিয়ে
বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতা নিয়ে
বোকার মত ভুলে ভরা জীবনে।

চাই না একালের স্বার্থের বিসর্জনে সোনার চামচ
চাই না কটি টাকার জন্য হারাতে মূল্যবোধ
অনেক বড় হও তোমরা ভাসিয়ে অনুকূল স্রোতের গায়ে
আমি উজান ঠেলে পাড় হতে পারি এখনো দাঁড়িয়ে শক্ত পায়ে
ভুলে ভরা এ জীবন দেখি না কতটা নিয়ে যেতে পারে গভীর অন্ধকারে
তোমাদের তথাকথিত ভুল আমি পড়ব গলার পরে
বারে বাড়ে একই ভুল করে
নিজের বিবেকের সাথে লড়ে;
নয়তো তলিয়ে যাব অতল অন্ধকারে
নিয়ে ভুলে ভরা জীবনের গ্লানি আমার মাথার পড়ে।

প্রতিদিন হয়েছি স্বার্থের কারাগারে বন্দী
শিকল ছিঁড়তে পারিনি
অক্ষমতা আমারই
তাইতো জীবন খাতার পাতায় পাতায় ভুলে ভরা
জানি না কোনটা ভালো, খারাপ কোনটা
স্রোতের অনুকূলে গা ভাসিয়ে জীবন্মৃত বেঁচে থাকা
নাকি বিবেকের দংশনে প্রতিদিন একটু একটু মরা।

স্বার্থের আলোকিত মদির সুধায় বড্ড বিতৃষ্ণা আমার
তাইতো হাজারো ভুলে ভরা ভুলে জীবনটাকে করছি পার
সয়ে লাঞ্ছনা আর গঞ্জনার পাহাড়
আর আশে পাশের মানুষগুলোর ক্রমাগত তিরস্কার।

শনিবার, ১৫ জুন, ২০১৩

মানুষ না পশুর জীবন?

মানুষ না পশুর জীবন?
- যাযাবর জীবন

"আমি প্রত্যেক মানুষের ভাগ্য তার গলায় হারের মত পড়িয়ে দিয়েছি" - সুরা বনি ইসরাইল

আমরা সবাই গলায় এই অদৃশ্য হার পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি
কারো হার কেও চিনি না
আমারটা আমি নিজেও দেখি নি
তবে অনুভবে বুঝতে পারি এর ওজন বওয়ার ক্ষমতা আমার নেই
তবুও অপারগ বয়ে যাচ্ছি অদৃশ্য এ হার
নিয়তির লিখন না যায় খণ্ডন।

আজকাল মানুষ প্রশ্ন করে - কেমন আছি?
কি উত্তর দেব তাদের? আমি নিজেই যে উত্তর জানি না
বেঁচে আছি এই তো অনেক বেশি
ওপরওয়ালার দেয়া অদৃশ্য মালা গলায় পড়ে দিন কাটাচ্ছি।

ইদানীং দিন আর রাতের পার্থক্য করতে কষ্ট হয়
কখন যে ঘুমের ঘোরে থাকি আর কখন জেগে থাকি নিজেই জানি না
বিসর্জনে কর্মক্ষেত্র সেও তো অনেক দিন হয়ে গেল
বেঁচে থাকতে টাকা কড়ি কুকুরের মত কামড়াকামড়ি
আমাকে দিয়ে হয় না;
মানুষের পরিচয় সেও খুব ভালোভাবে জানা হলো
জীবন জানিয়ে দিল - স্বার্থে ডিঙ্গিতে ভাসিয়ে
কতগুলো মানুষ নামের কুকুর জীবনটাকে ওলটপালট করে দিল;
তবুও যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি জীবনের সাথে
ঠিক যেমন বেঁচে থাকার জন্য পাড়ার কুকুর গুলো
যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় পরস্পরের সাথে
ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া ময়লা আবর্জনা নিয়ে,
আমিও যুদ্ধে যুদ্ধে কাটাচ্ছি জীবন
কতগুলো স্বার্থান্বেষী মানুষ নামক কুকুরের সাথে
মাঝে মাঝে নিজেকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে হয়
ওপরওয়ালা কি ভুল করে মানুষ নামক এক জীবন দিয়ে
পাঠিয়েছে আমাকে এ পৃথিবীতে? - কুকুরের বদলে?

হায়েনার দল যেন খুবলে খায় দলা দলা পচা গলা মাংস আমার
স্বার্থের টানাটানিতে, বড্ড হীন লাগে আজকের মানুষ পরিচয়ে
সব বিলিয়ে দিয়েছি নিঃস্ব হয়ে
যদি বাঁচা যায় ঐ হায়েনাদের কবল থেকে।

মাঝে মাঝে টেনে ছিড়তে ইচ্ছে করে অদৃশ্য হাতে
অদৃশ্য ঐ নিয়তির মালা
বড্ড খুলে দেখতে ইচ্ছে করে কি লেখা আছে তাতে
খুব দেরী নেই বোধহয় জানতে আর
কি লেখা ছিল এ মালাতে আমার
অপেক্ষার প্রহর গুনি অদৃশ্য এক ডাকের
অন্য কোন ভুবন থেকে।


বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন, ২০১৩

Sorry

Sorry
- যাযাবর জীবন

ইংরেজীতে একটি শব্দ আছে, নাম তার "Sorry"
কবে যে কার সৃষ্টি পাইলে দিতাম ঝাড়ি
ইচ্ছা কইরা ভুল করি - Oh I'm Sorry
মাফ করলে ভালো না করলেই আড়ি
কইছি না তোরে আমি Sorry?

প্রেমিকা যদি Sorry কয়
গইল্লা পইড়া আচল ধরে
বন্ধু যদি Sorry কয়
মিজাজ খারাপ থাবড়া মারে
বউ যদি ভুল কইরা কয় একবার - Sorry
মাঝে মাঝে মিজাজটা এমুন আউলা হইয়া যায়
ইচ্ছা করে থাপড়াইয়া পাঠাই দেই বাপের বাড়ি
তারপর আমি ও না হয় কইয়া দিমু খুব মনখারাপ কইরা - Sorry!!

শালার Sorry' র সৃষ্টিকর্তারে সামনে পাইলে
কইষ্যা দিতাম ঝাড়ুর বাড়ি
গুষ্টি মারি খেতা পুড়ি তোর - "Sorry"।

ভবের কথা

ভবের কথা
- যাযাবর জীবন

লালন বলে দ্বীনের কথা
আমি দেখি রাতের ব্যথা
সভ্য হতে বলে লালন
চারিদিকে দেখি সবই অসভ্যেরই বেশে
লালন বলে ভবের কথা
আমি শুনি ভাবের ভাষা
কানের কাছে চারিপাশে
গুঞ্জরিয়া ওঠে

লালন বলে মোহ মুক্তি মানবের কল্যাণ
তার পথে যে ধরে, ভবে হয় যে অপমান
স্বার্থ বিহীন মানুষ কোথায়
মুখোশ-ধারি ঘুরে বেড়ায়
লজ্জা শরম বালাই যে নাই
টাকায় কেনা গোলাম সবাই
মনুষ্যত্ব বিকোয় টাকায়
কড়ির পিছে যায় ছুটে যায়
জলাঞ্জলি মনুষ্যত্ব
তাতে আবার কি এসে যায়?

দুপেয়ে মানুষ মোরা
লালন বুকে করি সাধনা
চারপেয়ে প্রাণীর কাছে
হেরে যায় মানবে যে
বোধ বুদ্ধি লোপ পেয়ে
যখন টাকায় বিকোয় গিয়ে
ভেবে দেখো ভবের কথা
বলে গেলাম কিছু কথা
মানুষ যদি হই আমরা
টাকার গোলাম হয়ে
চার পেয়ে প্রাণীর কাছে
যাব আমরা হেরে।

আল্লাহ খোদা মনে তে যার
পীর ফকিরের দরকার কি তার
বুঝের মানুষ অবুঝ হয় রে
পাপের গোলাম হলে
আসবে রে ডাক যে কোনোদিন
যেতে হবে চলে
টাকা কড়ি বাড়ি গাড়ি
সবই যাবি ফেলে
সারে তিন হাত মাটির তলায়
থাকবি অন্ধকারে।

যেতে হবে রে ঐ ভূবনে
চাইবে হিসেব তোর ভগবানে
জবাব দেব কি বা তারে
মনুষ্যত্ব বিসর্জনে
আখেরাতের দিনে
দ্বীনের পথে চলার সময়
যায় নি রে কো থেমে।

মঙ্গলবার, ১১ জুন, ২০১৩

সিদ্ধান্তের যাতনা

সিদ্ধান্তের যাতনা
- যাযাবর জীবন

একজন মানুষ অথচ মানুষ নয় আজ
একটাই জীবন অথচ নামমাত্র বেঁচে থাকা
একটা প্রেম সর্বনাশের সূচনা
একটা ভালোবাসা হৃদয়ের যাতনা
একটা ভুল বোঝাবুঝি অভিমানের বোঝা টানা
একটা সিদ্ধান্ত ছাড়াছাড়ি দুজনা।

এখনো মন পোড়ে তোর জন্য
অথচ আমাদের মাঝে এখন যোজন যোজন দূরত্ব
এখনো ভালোবাসা কাঁদায় রাতের গভীরে
অথচ পড়ে আছি দুজন সাত সাগরের ওপারে;
ভালোবাসার সমাধিতে দিয়েছিলেম মাটি চাপা
দুজনে একসাথে মিলে
তবু কোথায় যেন বেঁধে রেখেছিস আজো তুই আমারে।

পারি দিচ্ছি একটি করে আশার দিন পথ চেয়ে
পার হচ্ছে নির্ঘুম রাত একরাশ বেদনা নিয়ে
একটা সময় ছিল আমাদের ভালোবাসার
একটা সময় ছিল আমাদের কাছে আসার
আমি জানি সেদিনগুলো আর ফিরে আসবে না
তবু হৃদয়ের বোবা কান্না বাঁধ মানে না।

একটা সিদ্ধান্ত, ছিল সেদিন ভুলে ভরা
এখন যাতনার আগুনে জ্বলে মরা
খেসারত দিয়ে যাচ্ছি আজো অব্ধি
তুই আমি দুজনে মিলে
ছোট্ট একটু ভুলের পাহাড় সমান মাশুল গুনছি
তুই, আমি; দুজনেই।

সোমবার, ১০ জুন, ২০১৩

অস্থির প্রেম

অস্থির প্রেম
- যাযাবর জীবন

ঝড়ের গতিতে আসা প্রেম
খুব সাময়িক
স্বল্পতে ঝরে যায়
ঝড়ের সাথে সাথে
তচনচ করে জীবনটাকে;
ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা বিশ্বাস
ভালোবাসা অর্জন
আজীবন রয়ে যায় হৃদয় গভীরে
শত বাঁধা দূরে ঠেলে।
প্রতিনিয়ত খিটিমিটি হঠাত আসা প্রেমে
সেখানে লুকিয়ে আছে চোরা কাঁটা
বিধে প্রতিদিনে
হৃদয় গভীরে,
বিশ্বাস ভালোবাসায়
মধু হৃদয়ে;
ধুতুরার বিষ আর অমৃতের তুলনা কি হয়?
গভীর ভালোবাসার কোথাও নাই ক্ষয়।

তবু প্রলয়ঙ্করী ঝড়ের হাতছানি
না মানা মন
অস্থির সময়
ডুবন্ত প্রেমের ভেলা আঁকড়ে ধরা
অথবা বিষণ্ণতায় ছেয়ে থাকা
মানব চরিত্রের বড় বিচিত্র দিক
কালান্তর ইচ্ছার কাছে নতি স্বীকার
পরিণামে বিরহের দিনকাল
এভাবেই বেঁচে থাকা
ভালো আর মন্দের মিলনে
জ্বলে পুড়ে মরা প্রেমে
আর বিরহের অনলে
ঝড়ের ডাকে সাড়া দেয়া
বিবেক
কাল
প্রতিকূলতা
অস্থির সময়
জীবনের নিয়মে জীবন পার হয়
নিয়তি দূর থেকে হেসে মরে
মানবের মাঝে দানব বাসা গড়ে।

রবিবার, ৯ জুন, ২০১৩

পাপাচার

পাপাচার
- যাযাবর জীবন

ঘুমের নেয়ামত উপরওয়ালার সৃষ্টি
নির্ঘুম রাত কাটে চোখে এক পশলা বৃষ্টি
খুব সংগোপনে হৃদয় গভীরে
তলের ঠাই নেই খুঁজি তারে অতলে
মাঝে মাঝে হালকা হাওয়ার ছোঁয়া
ঠান্ডা এক পশলা
উড়ে এসে মুখে পড়ে
স্বপ্নের ভুবনে দেখি তোর শাড়ির আঁচল
কতদিন দেখা হয় না আমাদের
হয়না চোখাচোখি হয়না মুখোমুখি
টেবিলের এক প্রান্তে তুই আরেক প্রান্তে আমি
ভালোবাসার অনুভব হৃদয়ে ধরে
তোরই নাম লেখা পাই পুরোটা জুড়ে
বুকের খাঁচার অনেক ভেতরে
প্রতিদিন প্রতিরাতে তোর কথা মনে হলে
সত্যি কি ভালোবাসা হবে
নাকি হৃদয় নিংড়ানো অসম প্রেমে
করে যাচ্ছি পাপাচার
সারা রাত ধরে।

মানুষ কিংবা ন-মানুষ

মানুষ কিংবা ন-মানুষ
- যাযাবর জীবন

অভিমানে মুখভার করে রয়
খুব কাছের মানুষগুলো
সব জেনেশুনে
তবু বোঝে না সীমাবদ্ধতা
এ কেমন বন্ধুত্ব
এ কেমন ভালোবাসা?

আজকাল আর কোনো কিছুই মনে থাকে না
মন মানে না, শরীর কুলোয় না
তবু জীবনটাকে শুধু টেনে নেয়া।

কারো জন্মদিনে শুভকামনা
হয়তো চলমান রীতি;
যার নিজের জন্মদিনের কথা মনে থাকে না
সে কি করে অন্যকে শুভকামনা জানাবে?
এটা কারো মাথায় থাকে না
অভিমানের বাষ্পে বর্ষণ আকাশে
কান্না বাঁধ মানে না;
কেও কেও রাগ করে মন থেকে ছুড়ে ফেলে দেয়
একটুও মনে বাধা জাগে না
এ কেমন বন্ধুত্ব আর ভালোবাসা
আমার মাথায় ধরে না।

মুঠোফোনটা পড়ে থাকে সাইলেন্ট হয়ে
আমি হয়তো গভীর ঘুমে
চোখ মেলে মিস কল দেখি
কল ব্যাক করি
অভিমানে ফোন তোলে না
এ কেমন বন্ধুত্ব আমি জানি না।

কেও হয়তো দাওয়াত দিল মন খুলে
সেদিন হয়তো আমি বেমালুম গেলাম ভুলে
সম্পর্কের হলো ইতি
ইদানীং আমার এমনই নিয়তি
ভালোবাসা সংজ্ঞা আজো জানা হলো না
বন্ধুত্ব আর ধরে রাখা হলো না।

খুব কাছের মানুষগুলো জেনেশুনে
কেন ভুলে যায় আমি তাদের মতন নই
কেন বোঝে না আমার সীমাবদ্ধতা?
অভিমান আর রাগের বাষ্পে উড়িয়ে দেয়
সকল সম্পর্ক
গড়েছিলেম অনেক ভালোবাসায় যেগুলো;
যখন আমি তোমাদের মত ছিলেম
তখনকার দিনগুলো থেকে
অনেক আদরে ভালোবেসে
একটু একটু করে গড়া মধুর সব সম্পর্ক
বন্ধুত্ব আর ভালোবাসায় গড়া
নিমিষেই যায় কি ভোলা?
আমার মাথায় খেলে না।

তবু মেনে নেই ইদানীং আমি
সম্পর্কচ্ছেদ যেন প্রতিদিনের বাণী
হৃদয়ে ক্ষরণ হয়
বোবা কান্নার নদী বয়
কোনো প্রতিবাদ করি না
তবুও ভালো থেকো সবাই এই দোয়াই করে যাই।

আমি আজ তোমাদের মত নই
অনেকে বলে আসলে "মানুষ নই"
হয়তো সত্যি, হয়তো অন্যকিছু
মানুষের বেশে বোবা এক গাছ
যার দিন আর রাত কাটে ঘোরে
প্রতিদিন অনুক্ষণ নিজেতে নিজে মরে
কি এসে যায় তাতে কার?
অভিমানের বাষ্পগুলো বাতাসে উবে যায়
সম্পর্কের ইতি টেনে
তবুও জীবন কেটে যাচ্ছে জীবনের নিয়মে।

"মানুষ কিংবা ন-মানুষ" আজ জীবন যুদ্ধে দিন কাটায়
আরো কটা দিন বেঁচে থাকার আশায়।


শনিবার, ৮ জুন, ২০১৩

অস্থির জীবন

অস্থির জীবন
- যাযাবর জীবন

ঘনিয়ে আসলে সন্ধ্যের ছায়া
অন্ধকারে ডুবে যায় ধরা
আমার সাথে মিশে
ভাবনার ভব ঘরে ডুব দিয়ে
দেখি অতল অন্ধকার
প্রলয়ঙ্করী ঝড়ে তচনচ হাহাকার
মনের ভেতর;
অথচ প্রকৃতি শান্ত নিরব।
ঘরে ফেরে মানুষ প্রিয়জনের কাছে
দুহাত বাড়িয়ে পথ চেয়ে আছে
অথচ আমার কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই;
অন্ধকার গভীর হলে
বিধ্বংসী ঝড় বুকে নিয়ে
বন্দী করে নিজেকে নিজে
আঁচরে কামরে নিজেকে ক্ষত বিক্ষত হৃদয়ে
হাজারো ভুলের ভেলায় ভেসে
পাড়ি দেই তমসার ঘন অন্ধকার
উল্টো রথে চড়ে বসেছি আমি
নিয়ে জীবনের হাহাকার
এ কেমন অস্থির জীবন আমার?

বৃহন্নলা জীবন

বৃহন্নলা জীবন
- যাযাবর জীবন

নির্ঘুম চোখে চেয়ে দেখি পৃথিবীর রূপ
রাতের অন্ধকারে মানুষের স্বরূপ;
কত রঙে কত ঢঙে রাতের মানুষেরা চলাচল করে
কত উদ্দেশ্য বিধেয় তাদের মনে
কে কার কথা জানে?

একদিকে ঔজ্জ্বল্য চোখ ধাঁধানো আলো
খুব ভালো খুব ভালো
আরেক দিকে চেয়ে চেয়ে মানুষের রূপ দেখি
রাতের চেয়ে কালো
রাতের অন্ধকারের রূপের সাথে বেশ মিলিয়ে যায়।

এখানে মানব মানবীতে কত খেলা খেলে
কত হাসি কত গান কত টাকার কত অপমান
যৌবনের পসরা সাজিয়ে বসে ছোট্ট ছোট্ট কিশোরী কিছু
স্কুলে যাওয়ার বয়স তাদের
কিংবা তলে থাকার কথা মায়ের আঁচলের;
কেও তারা রঙ মেখে সং সাজে
দামী হোটেলের মদিরার গ্লাস টুং টাং বাজে
জীবনকে উপভোগ একটু অন্যভাবে
শুধুই জৈবিক প্রয়োজনে
সাথে উপরি কিছু টাকার আমদানি
ভদ্র মনুষ্য সমাজে এদের নাকি রাতের সঙ্গী বলে
খুব ভালো।
কারো কারো রঙ মাখার ভাগ্যও হয় না
শুধুই রাস্তার মোরে মোরে দাঁড়িয়ে থাকা
খদ্দেরের আশায়
পেটের ক্ষুধা মেটাতে হবে যে তায়
মনুষ্য সমাজে দেহ-পসারিণী তাদের বলে
ভদ্র সমাজের কথকথা
নিশিকন্যা নতুন নাম-গাথা
কি আসে যায়?
সেই তো দাঁড়িয়ে পথের মোড়ে খদ্দেরের আশায়
ক্ষণিকের রমণ দামী গাড়ির সিটের পড়ে
কটি টাকা ফেলে দিয়ে ভোঁ দৌড় যে যার কাজে
শিশ্নের ক্ষুধা মিটল তার
কি যায় আসে রূপের ছটায়
শরীরে কথা কয় শরীরের ভাষায়
খুব ভালো।
একটু শক্ত হয়ে গেল কি নোংরা কথাটি?
কি জানি বাপু
আজকাল মুখের আড় সয় না
যা আসে মুখে
যা দেখি চোখে
বলে দেই সরল ভাষায়
অনেকে আবার এসব কথায় মনে ঘা খায়।
হয়তো আমারই দোষ
আমার নির্ঘুম চোখ
কেন যে দেখে যায় এইসব যত রাতের কালো?

সবই দেখছি সবাই মিলে
কারো কিছুই করার নেই
যুগের সাথে চলছি আমরা তাল মিলিয়ে
যাদের করার কথা তারা তো করছেই
হয় দামী হোটেলে সুন্দরী তন্বী সঙ্গী করে
সারারাত ভরে মৌজ মাস্তি
কিংবা জৈবিক প্রয়োজনে খুব তাড়াতাড়ি
দামী গাড়ির সিটের আড়ালে
পৌরষত্বের জাহির সমাজের চোখ লুকিয়ে
কিংবা ঘরের বৌ এর;
এ কি পৌরষত্ব নাকি নপুংসক জীবনের আরেক রূপ
কে জানে?

আসলে কারো কিছু বলার নেই
কিছু করার নেই
মাঝে মাঝে শুধুই বড় বড় কথা
এরাই বলে
"সমাজে নারীর মর্যাদা" নামক সেমিনারে
আসলে গুড়ো ধুলোর মত্ত ঘোরেতে
কাটিয়ে যাওয়া এক বৃহন্নলা জীবন
আমি, তুমি, আমরা সবাই মিলে।

শুক্রবার, ৭ জুন, ২০১৩

যাযাবর জীবনের নিয়তি

যাযাবর জীবনের নিয়তি
- যাযাবর জীবন

দেহ-ঘড়িটা চলছে এখনো
অনেক পুরনো জংধরা
কালের ব্যবহারের বিবর্তনে ক্ষয়ে যাওয়া,
তবুও হৃদয়ের ধুকপুক ধুকপুক শব্দে
জানিয়ে যাচ্ছে তার সচলায়তন অবস্থান;
আমি হৃদয় মানচিত্রে আঠা সেঁটে দিয়ে
আজ ইতিহাস হয়ে রয়েছি
খবর নেয়ার কেও নেই
পিতা মাতা পরিজন কিংবা আমারই সন্তান সন্ততি
ধুলোবালি কাদায় ডুবে থাকা অবহেলায়
এটাই 'যাযাবর জীবনে'র নিয়তি.........
এখন অপেক্ষার প্রহর গোনা
দেহ-ঘড়িটার টিকটিক শব্দের সমাপ্তির।

আজকের মরা নদী

আজকের মরা নদী
- যাযাবর জীবন

একটি নদী দুর্দান্ত খরস্রোতা
একই নদী আজ শুকিয়ে গেছে জলধারা
একটি নদী বন্যায় বান ডাকে
একই নদী পানি না পেয়ে তৃষ্ণায় কাঁদে।

একটি নদী দুকুল ছাপানো জল
একই নদীতে কান্নার কোলাহল
একটি নদী পাড় ভাঙ্গানিয়া ঢেউ
এখন চারিদিক ধু ধু বালুচর কোথাও নেই কেউ।

করুণ চোখে তাকিয়ে দেখি
সরু এক জলধারা, আমারই
অথচ আমি ছিলাম এক খরস্রোতা নদী
ছাপিয়ে দুকুল ভাসিয়ে কুলকুল
ধসিয়ে গুড়িয়ে ভেঙ্গেচুরে নদী পাড়
তাণ্ডব বন্যা মাঝে মাঝে
আজো সেই দিনগুলোর কথা বুকে বাজে
কি যে এক দিন ছিল আমারই।

চিন্তিত নদী মগ্ন বিভোর, ভাবে;
আজ তার কেন এ মরণ দশা হবে
অনেক ভেবেছে কি ছিল তার দোষ
আজকের রূপ দেখে মনে মনে করে যায় খোঁজ;
ভেবে পায় না কে করল তার এই সর্বনাশ
খরস্রোতা জলে কে পেতেছিল গোপন ফাঁদ
ভেবে চিন্তে আটকে থাকা স্মৃতিতে দেখে, তারই জলধারায়
অনেক ওপরে দেয়া হয়েছিল এক মরণ বাঁধ।

বৃহস্পতিবার, ৬ জুন, ২০১৩

জীবনের লীলা খেলা

জীবনের লীলা খেলা
- যাযাবর জীবন

সিগারেটের আগুন জ্বলছে
পুড়ছে একটু একটু করে
ছাই হওয়ার তরে;
হৃদয়ে আগুনের হলকা
দাউ দাউ জ্বলছে দাবানলের মত
ছাই হবে না অঙ্গারে পোড়াবে
কোথাও ধোঁয়া নেই তবু
হৃদয় পোড়া গন্ধ
নিজেরই,
ধ্বক করে নাকে লাগে
কিংবা বুকে বাজে;
অন্তর-ক্ষরণের কারিগরি দক্ষতা দেখি নির্লিপ্ত চোখে
মনের গভীরে যা অবিরাম আঘাত হেনে যাচ্ছে
মানুষ চেয়ে চেয়ে বাইরের রূপ দেখে
অন্তরের ক্ষরণ দেখার সময় কোথায় কার
নিজেই চেখে যাচ্ছি রক্তের নোনা স্বাদ আমার।

একদিন হয়তো এভাবেই শেষ হয়ে যাবে
জীবনের বাকি কটা দিন
অবধারিত নিয়তির রহস্য লীলা বোঝা দায়
জীবন আছে, মরণ আছে
আরো কত কিছু দেখার বাকি আছে এ ধরায়
কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি কখনো বজ্রপাত
কখনো হাসি কখনো কান্না কখনো দুঃখ বিলাস
কত আর দেখব এ পৃথিবীর আজব সব খেলা
জীবনের সমাপ্তিতে মৃত্যু এসে ঢেকে দেবে সাদা কাফনে
তবেই শেষ হবে দেখা নিয়তির রহস্যময় লীলা!

বুধবার, ৫ জুন, ২০১৩

স্বার্থের পদদলে জীবনের বাস্তবতা

স্বার্থের পদদলে জীবনের বাস্তবতা
- যাযাবর জীবন


স্বার্থের খেলায় বারে বারে হেরে যাই আমি
প্রতিপক্ষ হোক সে বাবা মা ভাই বোন
স্ত্রী কিংবা প্রণয়িনী
হীন এ খেলায় হেরে যাওয়ার যন্ত্রণায়
কাতর নই আমি;
খেলতে চাই না এ খেলা
তবু জীবন খেলিয়ে নেয় প্রতিনিয়ত
যন্ত্রণার দাবদাহে পুড়ে নিঃশেষ হই
মেকি চেহারাগুলো ভেসে ওঠে চোখে
এরা যে নিজেরই সব আত্মার আত্মীয়।

একেক সময় একেক চেহারায়
দেখি তাদের রূপ
সুখের দিনে মধু পড়ে ঝড়ে
আর স্বার্থে একটু টোকা তো অনল গড়ে
বের হয়ে আসে তাদের আসল স্বরূপ;
এ কেমন সম্পর্ক?
আমি বুঝি না।

বাদ নেই কেও এর থেকে যেন
হোক সে জন্মদাতা পিতা
কিংবা দশমাস পেটে ধরা মাতা
ভাই বোন স্ত্রী পুত্র কন্যা পরিবার পরিজন
হোক সে রক্তের সম্পর্কের পরম আত্মীয় স্বজন
স্বার্থের খেলাতে বুঝি না কে কার চেয়ে এগোনো
বড্ড বোকা বনে যাই দেখে
চারিদিকের মানুষের এইসব বিচিত্র চরিত্র।

স্বার্থের চেয়ে বড় শত্রু মানবের মাঝে নাই
টাকা পয়সা জমি জমা যেখানে দেখি তাই
এ খেলায় যে বড্ড বেমানান আমি
জীবনের প্রহসনের এ খেলাতে যেন
নতুন করে আজ নিজেরে চিনি;
হৃদয়ের দহনের কাছে আগুন কি ছার
স্বার্থের কারণে কত সংসার ভেঙ্গেচুরে একাকার
সাজানো সংসার বড্ড মেকি ভালোবাসায় গড়া
এর মাঝে কোথায় যে এত ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে
নখদন্ত বিকশিত শত স্বার্থে ভরা।

মঙ্গলবার, ৪ জুন, ২০১৩

অলীক স্বপ্ন

অলীক স্বপ্ন
- যাযাবর জীবন

গোধূলি বেলায় আলো আঁধারের খেলায়
নিবু নিবু মোমবাতি হাতে
বাতাসের ঝাপটা আড়াল করে
আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে চুইয়ে পড়ে আলো
তোর মুখে
কি যে মায়াবী লাগে!

এলোমেলো শুয়ে থাকা আলুথালু বেশে
চোখ ভরা ঘুমের রেশ
কেমন স্বপ্ন স্বপ্ন মনে হয়
যেন অন্যভূবনের কোন এক পরী
আমার বিছানা আলো করে রয়
আমার ঘরে যেন অপ্সরা শুয়ে রয়
মায়াবী ঘুমের রেশ
বড্ড অচেনা মনে হয়।

বড্ড অভিমানিনী সে
কান্না লেগে থাকে ঠোঁটের আগে
কামড়ে ধরা ঠোঁটে কান্না সামলে রাখে
বড্ড মায়াবী লাগে
ভুল করে এ কোন মায়াবতী দেখি
আমার স্বপ্নের ঘরে।

নাহ,
সবই আসলে স্বপ্ন
অলীক কল্পনায় দেখা
অবচেতন মনের ভাবনা
স্বেচ্ছায় হারিয়ে যাওয়া মানুষ
কখনো ফিরে আসে না।

তবু ভালোবাসা প্রতীক্ষার প্রহর গোনে
কি এক দুরাশায়
যদি ভুল ভাঙ্গে তার
কখনো ফিরে আসার আশায়
প্রতীক্ষার দীর্ঘ রজনী
কখন যে ভোর হয়ে যায়!

সোমবার, ৩ জুন, ২০১৩

বাষ্পীভূত অভিমানের প্রতীক্ষার প্রহর

বাষ্পীভূত অভিমানের প্রতীক্ষার প্রহর
- যাযাবর জীবন

সারারাত জেগে নির্ঘুম চোখে
দেখছিস আমারে আড়ালে আবডালে বসে,
কত কথা ভাবছিস আনমনে
সূর্যোদয়ের কালে;
মনের কথাটি চুপটি করে
রেখে দিয়েছিস খুব গোপনে
হৃদয়ের অনেক গভীরে লুকিয়ে
ভালোবাসিস বলতে বড্ড দ্বিধা
কেন রে হতভাগী?
আমিতো সেদিনই বলে দিয়েছি
প্রতিদিন প্রতিক্ষণ কবিতায় এঁকেছি
তোরই জলছবি।

ভালোবাসতে তোর মনে নেই দ্বিধা
তবে কেন এই লুকোচুরি খেলা
প্রেম যদি থাকে মনের গভীরে
বলে দিস তবে খুব প্রাণ-খুলে
সারারাত জেগে প্রতীক্ষায় সূর্যদেবে
এভাবে কি ভালোবাসা হবে?
এত দ্বিধা কেন মনের ভেতরে
আমি তো তোর খুব চেনা
একবার এসে কাছে বসে দেখ
চুকে যাবে সব অভিমানের শব
মুছে যাবে সব কান্নার দিন
সময় আছে এখনো আসবে সুদিন
মিটিয়ে দেব সব ছিল অভিমান
বাষ্পীভূত করে হৃদয়ের লেনা-দেনা।

সুখ-দুঃখের বাসর

সুখ-দুঃখের বাসর
- যাযাবর জীবন

সুখ দিয়ে বাসর সাজে
ভালোবাসার অনুভবে
দুজনে দুজনাতে এক হয়ে রয়
মনে সুর জাগে মুখে গান বাজে
মনের সাথে শরীর কথা কয়
শরীরের সাথে শরীরের ভালোবাসা হয়
কিংবা মনের সাথে মনের
দুজনায় এক হয়ে রয়
মাঝে মাঝে আকাশে মেঘ জমে
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর
ব্যাঙের ঘরে ঈদের খুশি
বাকবাকুম ইচ্ছে মতন
বাসর ঘরে বৃষ্টির শব্দ
মিলেমিশে গানের সাথে
ভালোবাসা ঝরে পরে
অনাবিল অভিসারে
তৃপ্তিতে নিদ্রায় দুজন সুখের বাসর
ভালোবাসা কথা কয়।

কবিতার আছে দুঃখের ঘর
যেখানে কষ্টেরা গুমরে মরে
খুব হেলাফেলায়
মনের সাথে ভাবের প্রেম হয়
আসলে স্বপ্ন দেখা কবি মনের
এ শুধুই দুঃখের ঘর, সুখের বাসর নয়;
ভাঙ্গা ছাদে বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর
আকাশের বুকে ভালোবাসার কান্না
কবির লোনাজল ধুয়ে যায়, কেও দেখে না;
নদীর দুকুলে পাড় ভাঙ্গে অবিরত
হৃদয় ভাঙ্গার শব্দ পায় কজন?
ভালোবেসে দুঃখের সাগরে ভেসেছে যে জন।
নষ্ট কষ্টের কিছু অনুভব বুকে জেগে রয়
ভাষায় প্রকাশ করা যায় না
অনুভূতিগুলো কবিতায় কথা কয়
হৃদয়ের কথামালা কবিতা হয়ে রয়।

মাশুল

মাশুল
- যাযাবর জীবন

বন্ধুত্ব হয় নি কখনই আমার, তোর সাথে;
প্রথম দেখাতেই নিখাদ প্রেমের হাতছানি মনে মনে
হয়তো আমার কিংবা তোর কে জানে?

ভালোবাসার সুধা পান করেছিলেম দুজনে মিলে
মনের অনেক আড় ভেঙ্গে, দুজনে দুজনে;
এ প্রেমে শুধুই বিচ্ছেদের হাতছানি তাও জেনে
তবুও মেতেছিলেম প্রেমে দুজন দুজনে
তারই মাশুল গুনে যাচ্ছি আজ আমরা
দুজনে মিলে.........
তোর কি কখনো মনে খেদ জমে আছে আমাদের প্রেম নিয়ে?

না হয় স্বল্প কিছু সময় আমরা কাটিয়েছিলেম মধুর সান্নিধ্যে
হৃদয় ভরা অনেক ভালোবাসা নিয়ে
তারই অনুভব হৃদয়ে ধরে
বিচ্ছেদের মাধুর্য আজো পান করে যাচ্ছি প্রতিটি নিঃশ্বাসে
তোর মুখচ্ছবি মনে করে।

রবিবার, ২ জুন, ২০১৩

ভালোবাসার স্বরূপ

ভালোবাসার স্বরূপ
-যাযাবর জীবন

স্রোতোধারা বয়ে যায় জোয়ার আর ভাটার টানে
নিজের মতন করে
ভালোবাসাবাসির কথাগুলো ফুরোলে;
বালিহাঁস উড়ে যায় নতুনের সন্ধানে
খাবার খুঁটে খেয়ে
দৈহিক ভালোবাসার সমাপ্তিতে।

নিথর পড়ে থাকি আমি
দেহ আর মনের
এহেন শৈল্পিক ব্যবহারের রূপ দেখে।

ভালোবাসার মূল্যবোধ গুমরে কাঁদে
অসহায় অপমানে।

আজকাল বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেছি
মানুষের ভালোবাসার স্বরূপ দেখে।

গন্তব্য

গন্তব্য
- যাযাবর জীবন

চলার যত পথ
সরল সোজা রেললাইনের মত
কিংবা আঁকাবাঁকা মেঠো কাঁচা পাকা
উঁচুনিচু পাহাড়ি
মসৃণ আর বন্ধুর
আছে অনেক অনেক
হরেক রকম
এক, একাধিক কিংবা অনেক
চলার এত পথ
বাঁধা নেই পথ চলতে;
তবুও আমার পা থমকে আছে
থেমে গেছি আমি পথচলাতে
অনেক ভেবে গভীর অনুভবে
পথ চলার সমাপ্তি যে একদিন হবে
পড়ে রইবে নিথর দেহ
যে কোনো এক চলারই পথে
খাটিয়াতে করে এনে ফেলে দেবে
সারে তিন হাতের ছোট্ট এক ঘরে;
যেখানে যেতে হবে কতগুলো মানুষের কাঁধে চড়ে
আমার পা রইবে পায়ের জায়গায়
পড়ে থাকবে নিশ্চল,
হেঁটে যাওয়া হবে না আমার
নিশ্চিত সেই গন্তব্যে।


ভাবের যত কথা
স্বল্প কিছু কিংবা বাচালতা
মনের সাথে মনের কথা
কবিতার খাতায় লেখা
কাঁচা হাতে আঁকিঝুঁকি কাটা
কিংবা পাকা হাতে সুন্দর একটি কবিতা
প্রেম বিরহ আর ভালোবাসা
উচাটন মনে চাঁদ দেখা
রিমঝিম বৃষ্টিতে বিষণ্ণ মনের যত গান
সবই তো মনেরই বারতা
হৃদয়ের ঘরে অনুভবের আবীরতা;
কল্পনার ফানুস উড়িয়ে
মনের ঘরে স্বপ্নের মানুষের সাথে বসবাস
কিংবা বিরহ জ্বালায় নিজেরই সর্বনাশ
চলুক না সে তার নিজের মতন করে
বাঁধা নেই কোনো মনের ঘরে
বল্গাহীন এক হৃদয় কুঠরে;
তবুও আমার অনুভূতিগুলো থেমে গেছে
ভুলে গেছি আমি স্বপ্ন দেখতে
অনেক ভেবে গভীর অনুভবে
মনেরও যে একদিন লাগাম টানা হবে
পড়ে রইবে নিথর দেহ
হৃদয়টা ধুকপুক-হীন এক মাংসপিণ্ড হয়ে
কতগুলো চেনা বা অচেনা মানুষের কাঁধে করে
খাটিয়াতে সাদা কাফনে জড়িয়ে সযতনে
ফেলে দেবে সারে তিন হাতের ছোট্ট এক ঘরে;
আমার শত স্বপ্ন দেখা হৃদয় হয়ে রবে নিথর
সহস্র কথার ফুলঝুরি মুখ হয়ে রবে নিশ্চুপ,
চলে যেতেই যে হবে
সেই নিশ্চিত গন্তব্যে।

শনিবার, ১ জুন, ২০১৩

অপেক্ষা

অপেক্ষা
- যাযাবর জীবন

চাঁদকে ঢেকে রেখেছে আজ মেঘের ছায়া
ঠিক যেন তোর ভালোবাসার ঘরের ঢাকনা
মেঘ সরে যাবে একসময় বাতাসের ভেলায় ভেসে
তোর ভুলগুলোও একদিন ভেঙ্গে যাবে অবশেষে
কেন সরিয়ে নিয়েছিলেম তোর কাছ থেকে নিজেকে
চাঁদ অপেক্ষায় মেঘ সরে যাওয়ার
আমি অপেক্ষায় তোর ভুল ভাঙ্গার।

একলা জীবন

একলা জীবন
- যাযাবর জীবন

একলা আমি
একলা তুই
একলা ভালোবাসা
একলা রাতের নির্জনতায়
শূন্য হয়ে কাঁদা;
শূন্য আমি তোকে ছাড়া
অপূর্ণ এক প্রেমের গাঁথা
ওপর দিয়ে দেখিস যেমন
আসলে এক ছিঁড়ে কাঁথা;
থাকিস নে তুই শূন্য হয়ে
আমার মতন পড়ে
জীবন টাকে নিজের মতন
আনন্দ আর ভালোবাসায়
নিস তুই ওরে গড়ে।

"পারলে ঠেকা"

"পারলে ঠেকা"
- যাযাবর জীবন

জীবনটা তোর প্রজাপতি রঙ্গিন
চেয়ে চেয়ে দেখি আমি
দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে কোথায় যেন খুশির আবেগ
তোর প্রজাপতি রূপ দেখে
মাঝে মধ্যে শিহরিত হই আমি
হারিয়ে তোকে
শিহরিত তুই
নতুনকে সাথী করে
প্রজাপতি ডানায় রং মেখে।

আসলে আমিও শূন্য তুই শূন্য
শূন্য দুজনের ভালোবাসা
আর তোর এই শাক দিয়ে মাছ ঢাকা
প্রজাপতির ডানায় রঙ্গিন রঙ মাখা
বুঝি আমি সবই
চুপ করে থাকি
হারজিত কার হলো আমি জানি না
বলেছিলাম তোকে আমায় পাবি না
অনেক অহংকারে বলা তোর সেই কথা
মনে আছে? "পারলে ঠেকা!"

কিভাবে অকরুণ নির্মম আঘাতে ঠেকিয়ে দিয়েছি আমি
এতটুকু বুঝিস নি তুই আমার অক্ষমতা;
ভুলিয়ে দিয়েছি তোর অহংকারের বার্তা - "পারলে ঠেকা!"
মনে মনে খুব মাঝে মাঝে ফেটে পড়ি হাসিতে
নিজে নিজে
হা হা হা।

নিজেকে বড্ড নিষ্ঠুর মনে হয় আজ
তবুও সেদিন কিছু করার ছিল না আমার
বুঝবি হয়তো একদিন আমার অক্ষমতা
বাজবে বুকে যেদিন শূন্য হাহাকার।


ভালোবাসি তোরে

ভালোবাসি তোরে
- যাযাবর জীবন

মেঘলা আকাশ, ঝিরিঝিরি বৃষ্টি
কেমন যেন বিষণ্ণ চারিধার
রাতের নির্জনতা ভেঙ্গে দিচ্ছে টিপটিপ বৃষ্টির শব্দ
বুকের নির্জনতায় আঘাত করেছে পুরোনো অনেক কথা
মনের গভীরে বাড়ছে ব্যস্ত কোলাহল
একে একে ভিড় করে নস্টালজিক সব ভাবনা।

ভেজা বৃষ্টিতে স্যাঁতস্যাঁতে মনের আঙ্গিনা
ভিজে যাচ্ছে ভাবনাগুলো
ধুয়ে যাচ্ছে স্বপ্নগুলো এঁকেছিলেম জলরং ছবিতে
মুছে যাচ্ছে কবিতাগুলো লিখেছিলাম কলমের আচরে
তোকে নিয়ে, শুধুই তোকে নিয়ে।

আজ বড্ড একা মনে হয়
মেনে নিয়েছি নিয়তির নির্মম পরিণয়
একলা হাসি, একলা কাঁদি
একলা বসে আজ বৃষ্টিতে ভিজি
কারণে আর অকারণে
যখনি তোর কথা পড়ে মনে।

লোকে পাগল বলে কেওবা অহংকারী
যখন আমার দিক থেকে পায় না সাড়া
আমার কিছুতেই কিছু আসে যায় না
কিভাবে কাকে দেব সাড়া বল না আমায়
শূন্য করে দিয়ে চলে গিয়েছিস মনটা আমার
কিছু আসে যায় না যে যা বলুক আমারে
এখনো যে বড্ড ভালোবাসি তোরে
ঠিক সেই আগের মতন করে।