বুধবার, ৩১ জুলাই, ২০১৩

কবিতার প্রসব বেদনা


কবিতার প্রসব বেদনা
- যাযাবর জীবন

কি সব ছাই পাশ প্রসব করিস?
হুহ!!
কবিতা না রঙ ঢঙের আলাপচারিতা
যত্ত সব ফালতু কথা
শব্দের কারিগরিতে ধোঁকাবাজি
কেন করিস এসব ভাঁওতাবাজি?

শুনে হাসি আসে
তুই ও নাকি কবিতা প্রসব করিস।
হি হি !!!

জানিস কি কি লাগে তাতে?
একটি প্রসব বেদনাতে?
লক্ষ কোটি শুক্রাণু
একটি মাত্র ডিম্বাণু
সেখানেও যুদ্ধ চলে, তুমুল যুদ্ধ
তারপর জয়ী হয় তোর বীর্য নিঃসৃত
একটি মাত্র শুক্রাণু
সিক্ত করে বা নিষিক্ত একটিই ডিম্বাণু;
পরম সমর শান্তিতে
ডিম্বাণুর কোলে শুয়ে জাইগোট পাকে;
তারপর আরো কত কি?
ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠা
অনেক সেবা শুশ্রূষা
তারপরই তো প্রসব বেদনা
তাই নয় কি?

এত কিছু রয়ে গেছে
এত কাজ আগে
আর তুই প্রথমেই প্রসব করে বসে আছিস
কবিতার নামে কিছু দুষিত স্রাব?
আরে বোকা!
কিছু শব্দমালায় কি কবিতা প্রসব করা যায়?

তোর জরায়ু কোথায়?

মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই, ২০১৩

রঙ্গিন পৃথিবী


রঙ্গিন পৃথিবী
- যাযাবর জীবন

চোখেতে রঙ্গিন চশমা কেন রে?
চোখ ঢাকতে রোদ থেকে
নাকি লুকোতে বাস্তবতা হতে?

নাকি রঙ্গিন চশমা পড়ে
দেখার ইচ্ছে রঙ্গিন দুনিয়াদারী?
আরে আরে! ধুর বোকা,
রঙ্গিন কাঁচে কি দুনিয়াদারী দেখা যায়?
ক্ষুধা পেটের হাড় জিরজিরে ভুখা নাঙ্গার দল?
মায়ের চিমসানো বুকে ঝুলে থাকা ছোট্ট শিশুটা
দু ফোঁটা দুধের জন্য।

তাদের বাসস্থানটা একবার দেখে আয় না!
রঙ্গিন চশমায় চোখ ঢেকে
কিংবা নিত্য নৈমিত্তিক তাদের পয়ঃপ্রণালীর স্থানটাকে
একবারের তরে;
তোর ধবধবে সাদা কমোডটা কি রঙ্গিন দেখায়?
রঙ্গিন চশমায়?
কি জানি বাপু!!

চশমা খুলে দেখ একবার
পৃথিবীর সাদাকালো রূপ
সাদাকালো চোখে
সাদা মনে

জীবনটা দেখবি অন্যরকম মনে হবে।


আক্ষেপ


আক্ষেপ
- যাযাবর জীবন

ভালোবাসি কথাটি বলতে বড্ড বেশি তাড়া
কে কার আগে বলবে এই নিয়ে দিশেহারা
একটু চিন্তা হায় কেও করে না
ফল ভোগে বিরহের যন্ত্রণা;

ভুল হয় দুজনেরই
তবু ক্ষমা চাইতে বড্ড বেশি অবহেলা
আমি বলব কেন? সে বলুক না
ভেবে ভেবে কালের স্রোতে নাও ভাসে
দুজন দুদিকে ভেসে চলে;

নতুন জীবন হয়তো গড়ে তোলে
দুজনে
নতুন করে
অথচ মন পোড়ে মন পোড়ে
দুজনেরই অঙ্গারে জ্বলে জ্বলে;

তারপর অনেক অনেক দিন পড়ে -
হয়তো দেখা হয় দুজনার
কোনো এক পথের বাঁকে
আফসোস আর হতাশায় বাকরুদ্ধ
দুজনারই;
একসাথে দুজনার মনে জাগে -
ইশশ, সেদিন যদি একটু নত হতাম
ইগো থেকে বেরিয়ে এসে,
তবে আজ হয়তো
দুজন দুজনকে জড়িয়ে থাকতাম
সেই প্রথম ভালোবাসার দিনগুলোর মত।

এভাবেই ভুলের মাশুল গোনা প্রতিনিয়ত:
জীবনের নানা বাঁকে।

ফেরা


ফেরা
- যাযাবর জীবন

ভালোবাসার বোধগুলো এক
দুজনেরই আমাদের
তীব্রতায় হয়তো কিছু অন্য
কিংবা প্রকাশের ধরণ;
আসলে, মানুষ যে আমরা ভিন্ন।

তবে দিন দিন আমারই বোধগুলো মরে আসছে
সময়ের সাথে সাথে
খরা মৌসুমে সার জল না পেয়ে,
কি করব বল?
তুই ছিলি অভিমানে মুখ ঘুরিয়ে।

ভালোবাসার অনুভূতি একই আমাদের
শুধু প্রকাশটুকু ভিন্ন
আমাদের দুজনেরই
তুই যে বড্ড বন্য;
প্রেমে, ভালোবাসায় কিংবা কামে
বোধহীন জড় শরীরে পড়ে থেকে আমি ভাবি
আমায় ছাড়া তুই কি করে রবি
আমার সকল সকালের চিন্তা
রাতের চেতনা
দিনের বেদনা
শুধুই তোর জন্য।

বোধের বোধটুকু আছে আমার এখনো
আর তোর আছে তীব্র জ্বালা
অনুরাগের, অপমানের
প্রতিশোধের নেশায় এখনো ধরে আছে
তোর প্রতিটি অঙ্গ জ্বালা
প্রশমন করে নে সময় থাকতে
পরে পস্তানোর কোনো মানে হয় না।

অনেক বড় একটা ঝড়ের পূর্বাভাষ আমার মনেতে
তোর দিক থেকে
মুষলধারায় নেমে আসা শিলা বৃষ্টি বয়ে যাবে
তোর মনের সব কালো মেঘ থেকে
তারপর শান্ত চারিধার
চুপচাপ চুপচাপ।

ফিরে এসে খুঁজবি আবার আমারে
ভালোবাসার মানুষকে অবহেলা করে
বল দেখি কে কবে কোথায় থাকতে পারে?
তবে আমায় পাবি কি পাবি না
তা বলতে পারি না
এ-ভুবনে না ও-ভুবনে কোথায় থাকা হবে
তা তো জানি না
তোর ভালোবাসার ডাকে সেদিন
হয়তো ফেরা হবে নয়তো না;

তোর দু ফোঁটা কান্নার জলে হয়তো মাটি ভিজবে না
কিংবা আমি
মিশে থাকা মাটিতে মিশে
তবুও অনুভবটুকু রয়ে যাবে অবশেষে
সকালের ইকারাস অভিমানে ডানা মেলে সূর্যালোকে
ঘরে ফেরে সন্ধ্যের গোধূলিতে অবশেষে
শুধুই ভালোবেসে
আর ভালোবেসে।





সোমবার, ২৯ জুলাই, ২০১৩

দৃষ্টি


দৃষ্টি
- যাযাবর জীবন

দুজন দুজনার পানে
তাকিয়ে আছি অভিমানে
সেই কত দিন থেকে
কার ডাক আগে আসে;

স্বচ্ছ দৃষ্টি তোর
ঝাপসা আমার
জানিস ই তো ভালো করে তুই
তোর দিকে তাকালেই
কেমন ঝাপসা হয়ে আসে চশমার কাঁচ
জলীয় বাষ্প আমার চোখে হয়তো একটু বেশী
নয়তো আবেগ।

তোর দৃষ্টি স্বচ্ছ ছিল চিরকালই
অনেক ভেতর পর্যন্ত দেখতি আমায় খুলে খুলে
অনেক দূর পর্যন্তও, যেথায় আমার দৃষ্টি পৌঁছত না
আসলে স্বপ্নালু দৃষ্টিতে বাস্তব দেখা যায় না।

আমি বাস্তব আগেও বুঝি নি
এখনো বুঝি না
শুধু তোর পানে চেয়ে থেকেছি
আর ভালবেসেছি;

বোঝাবুঝির দায়িত্ব একান্তই তোর
কাছে টেনে নেয়ার
কিংবা ছুঁড়ে ফেলে দেয়ার।

চশমার কাঁচটা আবার ঘোলা হলো কেন?

দূরত্ব


দূরত্ব
- যাযাবর জীবন

দোতালার বেলকনিতে দাঁড়িয়ে তুই
আমি নীচে রাস্তায়
তোর আর আমার মাঝে ঝুম বৃষ্টির পর্দা
চশমার কাঁচটাও বৃষ্টিতে ভেজা
কেমন যেন আবছা দেখায় তোর চেহারা
কিছু আসে যায় না;
তোকে খুব কাছ থেকে দেখতেই হবে
তারও কোনো মানে হয় না;
তুই দাঁড়িয়ে আছিস বারান্দায়
আমিও আছি তোরই অপেক্ষায়
যদি আমি থাকি আর নাও থাকি আজ আর তোর মনে
তবু তোকে দেখি আমার স্মৃতির মণিকোঠায় প্রতিক্ষণে
খর রৌদ্রে পুড়ে
কিংবা বৃষ্টিতে ভিজে
রাস্তা আর তোর বারান্দার দূরত্ব অল্প একটু
তবু পাড়ি দেয়া হয় না রাস্তাটুকু;
মনের আড়
যোজন যোজন দূরত্ব
তোর, আমার; দুজনারই।

রবিবার, ২৮ জুলাই, ২০১৩

অর্থ আপন


অর্থ আপন
- যাযাবর জীবন

সবাই বলে আমি আপন
বাবা মা ভাই বোন
রক্ত সম্পর্কের আত্মীয় স্বজন;

দিতে গেলে মাইল জুড়ে লাইন
ভেবে পাই না কোথায় ছিল
আমার এত আপনজন
এত আত্মীয় স্বজন!!

চাইতে গেলে কোথাও কেও নেই
শূন্য হাতে ঘুরে বেড়াই
হায় রে আমার আপন জন
কোথায় গেল রে সব বন্ধু বান্ধব
আর অনেক আপন আত্মীয় স্বজন
এমন কি বাবা মা ভাই বোন
পরিবার পরিজন
হায় রে আমার অতি আপনার সব জন!!

অনেক ঠেকে শিখেছিরে ভাই
সবার কাছে স্বার্থ আপন
নিজের আপন যদি কিছু থেকে থাকে
তাহলে সেটা শুধু মাত্র "অর্থ আপন"
দেখে শিখিনি
ঠেকে শিখেছি;
হতে আমার অনেক প্রিয় বন্ধু বান্ধব
আত্মীয় স্বজন
আর অতি আপন রক্তের সম্পর্কের
পরিবার পরিজন;
এমন কি বাবা মা ভাই বোন!!!!!


শুক্রবার, ২৬ জুলাই, ২০১৩

অনুভূতি


অনুভূতি
- যাযাবর জীবন

জীবনটা বড্ড একঘেয়ে হয়ে উঠেছে
নিরামিষ, পানসে
অতিবাহিত দিন আর রাত্রির কাল গুলো
কাটিয়ে নির্বাসনে
বড্ড একঘেয়ে
খুব বেশী পানসে।

প্রত্যক্ষ ঘৃণার আগুনে জ্বলি না
তাও তো অনেক দিন হয়ে গেছে
সেই যে.........
জীবন থেকে নির্বাসন নেবার দিন থেকে
কিংবা মরণ থেকে একটু সময়;
পরোক্ষ ঘৃণার আগুনে ঘি পোড়া গন্ধ
এখনো আকাশ বাতাসে ম ম
দূর থেকেই তারই সু বাতাস
এখনো পাই যেন;
অদ্ভুতুড়ে এই নিরামিষ জীবন আর ভালো লাগছে না
নির্বাসনের দিনরাত্রি গুলো বড্ড একা
না পুড়ে ঘৃণার আগুনে, মানুষ বাঁচে কিভাবে?
কিংবা ভালোবাসার বন্যায় গা না ভাসিয়ে?

আমার আরেকটি বার চাই তোকে
ঠিক সেই আগের মত করে
আরেকটিবার পুড়তে ঘৃণার আগুনে
অনুভূতিতে দিতে আরেকটিবার দোলা
পোড়ানো কষ্টের, আরেকটিবার;
ঠিক সেই আগের মত।

হয়তো বুঝে নিতে
মরে বেঁচে আছি না বেঁচে মরে গেছি
কিংবা আদৌ বেঁচে আছি
বুঝে নিতে শুধু এ অনুভবখানি;
তাই, আরেকটিবার চাই তোকে
আরেকটিবার ঠিক আগের মত করে
আরেকটিবার সেই পোড়ানো কষ্টের অনুভূতিতে,
আরেকটিবার মরে বাঁচতে।

স্বার্থপরতা


স্বার্থপরতা
- যাযাবর জীবন


থেমে আছে কলম
থেমে গেছে লেখা
থেমে গেছি আমি
থেমে গেছে সময়।

তোর অভাবটা বড্ড বেশি মনে হয়
আরেকটিবার তোর কাছ থেকে
আঘাতের হয়ে গেছে সময়;

পোড়ানোর সুখে জ্বালিয়ে যা
ঘৃণার আগুনে ঘি ঢেলে
অঙ্গার না হয়, ছাই হবে
তবু কিছু সময় তো কাটবে!

আর না হলে তুলে নেব কালি কিছু
পোড়া ছাই থেকে
কলম আবার কথা কবে
কাগজে আবার হাসি কান্নার আঁচর
মনেতে আবার কবিতার শব্দের বুনন।

কেন বুঝিস না?
তোকে আজ আমার
আবারও হয়ে পড়েছে
বড্ড বেশি প্রয়োজন।

থেমে আছে কলম
থেমে গেছে লেখা
থেমে গেছি আমি
থেমে গেছে সময়।

আমারও তো স্বার্থপর হতে ইচ্ছে করে
মাঝে মাঝে, আঘাতে আঘাতে
মনের পুঁজ রক্ত বের করে দিতে
কাগজে কলমে।

শনিবার, ২০ জুলাই, ২০১৩

ফেরা

ফেরা
-যাযাবর জীবন

পথ চলার মধ্যখানে খুব যখন জমে উঠেছিল প্রেমের বেগ
ঠিক তখনই বেরসিক বাস্তবতা টেনে ধরল আবেগ
আর ঈশানে নৈর্ঋতে ছিটকে দুজন দুদিকে
পথ চলার মধ্যপথে আলাদা করে নিয়েছিলেম পথ
বাস্তব বিভেদ।
উলটোপথে উলটো-ডাঙ্গায় উলটো লাটাই ঘুড়ি
উলটো দিকের আয়নায় দেখি উলটোমুখো বুড়ি
উলটো জীবন ওলট মন পালটে গেল চলার পথ
উলটো খেলায় চড়ে বসেছি দুজনে মিলে উলটো রথ
মনটা বড্ড পোড়ে
যদিও বাঁয়ের পথে আমি, তুই ডাইনে
যখনি মনে পড়ে পুরনো যত কথা
পুরনো যত ছবি
উলটো হয়ে ভাবি
এখনো তোকেই ভাবি
তোর দেয়া যাতনাগুলো
তোর দেয়া বেদনাগুলো
তোর দেয়া যত কষ্ট
সুখ
অসুখ
চিৎকার
শীৎকার
কত যে প্রতিচ্ছবি
এখনো মনেতে আঁকা
রক্তের দাগ শুকিয়ে যায় সময়ের সাথে সাথে
স্মৃতির দাগ দিনে দিনে ক্যান্সার হতে থাকে।

বেয়ারা মন আজকাল কেন যেন কথা শোনে না
মনের ঘরে ঠিকই তালা দেয়া থাকে
তবু মন পাখিটা উড়ে চলে শূন্যে ডানা মেলে
হারিয়ে যাওয়া পথের সন্ধানে;
কবে যে হুট করে সব ছেড়েছুড়ে চলে যাব তোর কাছে জানি না
সেদিন কিন্ত আবার আগের মতন ফিরিয়ে দিস না
আমার যে আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই!!!



শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৩

চর্বিত চর্বণ


চর্বিত চর্বণ
- যাযাবর জীবন

নতুন নতুন কিছু বীভৎস কাহিনী
নতুন নতুন কিছু বীভৎস সময়
নড়বড়ে পিলারে দাঁড়িয়ে উঁচু উঁচু ভবন
হাড় ভাঙ্গা খেটে খাওয়া মজুরের ঘাম
নিঃশেষে বিলায় জীবন
ভাঙ্গা অট্টালিকার তলে থেমে থাকে দম
পোড়ে আগুনে
চাপা ভবনে;
জীবনগুলো মরণে লেখা
প্রতিনিয়ত:
তারপর ঘটনার ঘনঘটা
মৃত্যুর আহাজারি
ধুম!!!!!!!!!!!!!!!

টাকার ছড়াছড়ি
কিছু কোলাহল
কিছু মানুষের ঢল
কিছু টাকা ছড়াছড়ি
জীবনের মূল্য অর্থের বিনিময়ে
ঘটনার ঘনঘটার অবসানে
এভাবেই ক্রমাগত......

কার জীবন?
মরে কারা?
ক্ষুদ পিপাসায় কাতর যারা
জীবন সংগ্রাম লড়ে তারা
অন্নের তরে
মানবীয় না দানবীয়?
সুধায় কে?
জবাব দেবার আছে টা কে?
এই সুন্দর স্বাধীন দেশে।

নতুন নতুন কিছু বীভৎস কাহিনী
নতুন নতুন কিছু বীভৎস সময়
রাতের ফাঁকা রাজপথ
অন্ন দাসের ভিখারি হয় অন্যের দাসী
কাজের সন্ধানে কাম দেবের পুজোয় অর্ঘ্য
দেহ চাটে হায়েনারা
খুঁটে খায় দেহের ভাঁজে ভাঁজে
আঁচরে কামড়ে নখ-দন্ত মেলে
পয়সার উসুল তোলে
মনুষ্যত্ব না পশুত্ব?
প্রতিদিন একই রুটিন
তারপর হঠাত করে একদিন
খবর হয়ে ওঠে
কোন এক মানুষরূপী হায়েনার বাড়াবাড়িতে
টাকার বদলে নগ্ন শরীরটা ছুঁড়ে ফেলে দেয়
কোন এক ডাস্টবিনের কোণে
কিংবা নির্জন পার্কের একপাশ ঘেঁষে;
নতুন খবর
নতুন সময়
নতুন আয়োজন
নতুন কথার তুবড়ি
মনুষ্যত্বের ধ্বজাধারী
টপ নিউজ মিডিয়াতে......

আবার কিছু কোলাহল
আবার কিছু মানুষের ঢল
আবার কিছু টাকা ছড়াছড়ি
জীবনের মূল্য অর্থের বিনিময়ে
ঘটনার ঘনঘটার অবসানে
এভাবেই ক্রমাগত......

সুধায় কে?
জবাব দেবার আছেটা কে?
এই সুন্দর স্বাধীন দেশে।

আমি কিন্তু সুশীল সমাজের প্রতিনিধি,
সুশীল সুশীল কথা বলি
অতি শুদ্ধ ভাষায়, রাবীন্দ্রিক ঢঙে
বড় বড় বক্তৃতা
কথার তুবড়ি ছোটে মাইক হাতে পেলে;
আরে না! ধুর ছাই! কি যে বলি?
আমি অনেক বড় সাংবাদিক
কলামের পর কলাম লিখে যাই
আর্ত মানবতার সেবায়;
হাজার হোক সুশীল সমাজে নিতে হবে ঠাই
জ্ঞানী গুণী মহারথীদের সাথে
কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সুশীল সমাজে
আর ঐ সকল বোকার দল কেন বোঝে না যে?
এই সব
নতুন নতুন কিছু বীভৎস কাহিনী
নতুন নতুন কিছু বীভৎস সময়
নতুন নতুন দুর্ঘটনা
ধর্ষণ আর খুনের নিত্য ঘটনা
নতুন একটি ভবন ধ্বস
নতুন কোথাও আগুন লাগা
নতুন করে মানুষ পোড়া
নতুন লাশের সারি
স্বজন-হারা মানুষের আহাজারি
ক্ষুধ পিপাসায় ক্রন্দন
এ সবই তো জীবনের আয়োজন
সুশীল সমাজে বাক বিতণ্ডা
আর টিভি মিডিয়ায় টক শোর
সাবজেক্ট লাগবে তো!!!!
নতুন নতুন কিছু বীভৎস কাহিনী
প্রতিদিন কোত্থেকে যোগান দেবে কে?

একটি ঘটনা, এক মাসের রটনা
মুখরোচক খোরাক
ঝাঁপিয়ে পড়া মিডিয়া
মনুষ্যত্ব কথা বলে
বিবেক কথা বলে
ঘটনা ঘটে গেলে তারপরে, তারপরে।
তারপর???????
সেই একই চর্বিত চর্বণ
নতুন আরেকটি ঘটনা
পুরনোটার যবনিকাপতন
চিরতরে।

আমার মাথা মাঝে মাঝে কাজ করে না
নিত্য নতুন এই সকল ঘটনা
সত্যি কি দুর্ঘটনা?
না কি আসলে ঘটা করে এই সব আয়োজন
নতুন সংবাদের প্রয়োজন
সুশীল হতে হবে তো আমাদের
রাবীন্দ্রিক ঢঙ্গে সুন্দর কথার ফুলঝুরি
আর্ত মানবতার সেবার কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে
না হয় কাঁধে একটা একপেশে শাল ফেলে
দূর থেকে একই বক্তৃতার চর্বিত চর্বণ
হতেই হবে
আর নইলে জীবনটা যে
বড্ড পানসে হয়ে যাবে।

ধুর ছাই কি যে সব ছাইপাঁশ লিখে যাই!
মাথা মুণ্ডু কিছু নাই!
এইজন্যইতো স্থান হয় নি আমার
ঐ সুশীল সমাজে
ওরা আমায় পাগল বলে দূর দূর করে।

বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০১৩

খেলা খেলা


খেলা খেলা

- যাযাবর জীবন

খেলার ছলে হাসতে হাসতে
অল্পসময়ে দুজন দুজনে
কি জানি কি হয়ে গেল
প্রেম, মোহ, না কি অন্যকিছু
ভালোবাসা কি?
সময়ে বুঝতে পারিনি।

খেলার ছলেই কাঁদতে হলো
স্বল্প সময় বিচ্ছেদ বিজনে
উল্টো রথে রেখে পা
উল্টো স্রোতে ভাসিয়ে গা
সময়ের বিপরীত পথচলা দুজনে
হঠাৎ চপেটাঘাত বোধোদয়ে বাস্তবতার,
বিচ্ছেদ জীবনে।

কি আসে যায়?
ভালোবাসা যেমন ছিল সেদিন
আছে তেমনি আজো
থাকবে চিরকাল
দুজনেরই বুকের খুব গভীরে;
মাঝে মাঝে জোনাক রাতে
মুঠো খুলে বের করে আনব
একসাথে দুজনে মিলে, দু-ভুবনে
আবার খেলা শেষ হলে মুঠোবন্দী
মনকে নিয়ে যাব বাস্তব কারাগারে
তুই আমি দুজনে মিলে
দু-ভুবনে;

পাপ করেছিলাম আমরা দুজনে
গা ভাসিয়ে স্রোতের বিপরীতে
ভালোবাসার গায়ে পাপ লাগে নি।


বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০১৩

জলছবি


জলছবি
- যাযাবর জীবন

নানা রঙ এর বেদনা
রং নাকি বেদনা
প্রথম কে জানি না
বেদনার প্রলেপে রং মাখা
কিংবা রং এর প্রলেপে বেদনা আঁকা
জানি না
দুজনে মিলেমিশে এক ও অদ্বিতীয়
হবে হয়তো......
ছবি আঁকব।

উজানে নদীর ঢেউ
নারীর আঁচল বেয়ে পুকুরের স্নানে
ছুঁয়ে দিতে ঢেউয়ে ঢেউয়ে
বাহ! কি দারুণ!!!
জলেরও ইচ্ছে করে নারীর সনে নাইতে
খেলাধুলো শেষে নেমে যায় ভাটির টানে
শিহরণে
কে দেখতে যায় কোন স্রোত কোথা মেলে
জল ও নারী খেলা খেলে
এক হয়ে, খুব গোপনে
ছবির মত
বড্ড ইচ্ছে করে ক্যানভাসে ধরে রাখতে
একটি জলছবি আঁকতে।

হিমবাহের জমানো বরফ
গলে পড়ছে
বেগুনী রশ্মির আলোকচ্ছটায়
রং কুড়চ্ছি......
রংধনুর রংগুলো পূব আসমান থেকে
বিকেলের ঝিরি বৃষ্টি বেয়ে
দূরের নদীতে রং গোলাচ্ছে
সাত রঙে;
সূর্য পশ্চিমে হেলে পড়েছে
পূবে উঁকি দিয়েছে চাঁদ
আমি মধ্যে
চাঁদ আর সূর্যের গা থেকে অচেনা রং এর
রং কুড়চ্ছি, অন্যভূবনের।
এ কি? আমার হাত বেয়ে রং ঢুকে পড়ছে
ফুসফুসের লালাভে মিশে যাচ্ছে
দমবন্ধ হয়ে আসছে হাজারো রঙের চাপে
একটু বাতাসের জন্য বড্ড আকুতি
কিংবা একটি নারীর জন্য অপেক্ষার প্রস্তুতি।

রং তৈরি
রংতুলির অপেক্ষার কান্না;
তবু ক্যানভাসে আঁচর পড়ে না
ছবি আর আঁকা হয় না;
কিভাবে হবে?

নারীর শরীর বেয়ে জল নেমে গেছে
ভাটিতে মিশে
এখন শুধুই নগ্নতা
এ যে আমার তুলিতে আঁকা যাবে না;
অপেক্ষায় বসে আছি উজান ঢলের।




মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই, ২০১৩

অপেক্ষা??


অপেক্ষা??
- যাযাবর জীবন

ইদানীং যেন আর শরীরে নেই শরীর
আলগা কিছু অস্থির হাড়গোড়-
ক্ষয় হয়ে যাওয়া,
পচা গলা কিছু মাংস পিণ্ড-
ভাইরাসে খাওয়া;
মানুষের এক অবয়ব দাঁড়িয়ে কোনমতে
জীবন আর মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে
বড়ই আশ্চর্য লাগে
তামাশা দেখি যমদূতের
অলস বিছানায় পড়ে
মৃত্যু কারে বলে?

স্থির সময়ে ঘূর্ণায়মান পৃথিবীর রূপ
বিছানায় চিত হয়ে পড়ে থাকা
আমি স্থির, খাটটাও স্থির আমারই মত
সূর্যের অস্থির রূপ দেখি দুজনে মিলে
দিনের চৌ-প্রহরে, আলো আঁধারি খেলাতে
নক্ষত্রের ছোটাছুটি চাঁদের লুকোচুরি
রাত্রির চৌ-প্রহরে; জোনাক মেলাতে;
অষ্টপ্রহর অস্থির খেলা চারিদিকে
আমি স্থির বিছানায় শুয়ে থেকে;
আলগা কিছু অস্থির হাড়গোড়-
ক্ষয় হয়ে যাওয়া,
পচা গলা কিছু মাংস পিণ্ড-
ভাইরাসে খাওয়া;
তামাশা দেখি যমদূতের
বিছানায় পড়ে
মৃত্যু কারে বলে?
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।

জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণের সময়টায়
আজ বড্ড আশ্চর্য লাগে
কেমন হুট করে পার হয়ে গেল জীবনটা
সময়ের আগে।

অতৃপ্তি রইলো কি কিছু?
- ভেবে দেখব ওপাড়ে গিয়ে।

সোমবার, ১৫ জুলাই, ২০১৩

কীর্তি


কীর্তি
-যাযাবর জীবন

অযুত নিযুত বছর ধরে
হেঁটে চলে সে
হেঁটে চলে সময়;
সকালের কাঁধে চেপে
আসে দ্বিপ্রহর
ছোট হয় ছায়া
মাটিতে কথা কয়।

হেঁটে চলে সে
হেঁটে চলে সময়
দ্বিপ্রহরের কাঁধে ভর
বিকেল গড়ায়
ছায়া দীর্ঘ হয়
অবয়ব থেকে।

কীর্তি কথা কয়
ছায়ার মত
যার যার দেয়ালেতে......



রবিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৩

প্রতিহিংসা


প্রতিহিংসা

- যাযাবর জীবন

জ্বলছে কয়লা উনুনে
পুড়ছে হৃদয়
অন্ধকারে আগুন জ্বেলেছি, নিজ গায়ে
জ্বলন্ত মশাল তোর হাতে
লালাভ আলো, কেমন লাগছে?
মাদক-মাদল বেজেছে কি তোর বুকে
একটুখানি............
প্রতিহিংসার আগুনে পুড়িয়ে?
না হলে এখনো সোম-সূরা রয়ে গেছে
কিছুটা বোতলে
ভালো করে জীবন্ত মশাল জ্বালিয়ে নে।

চেয়ে দেখ না ভালো করে!
জীবন্ত পোট্রেট, দাউদাউ জ্বলছে তোর সামনে
থলথলে হলুদাভ মস্তিষ্ক
সাথে হৃদয় চেরা কিছু রক্ত
জলরং গুলে নিলি
হাতে তুলে নিলি তুলি সযতনে
অযতনে এ কি ছবি আঁকলি?
ঘৃণার জলছবিতে কান্নার রেশ.........
তোকে দিয়ে কিছু হবে না।

তার থেকে পিটিয়ে যা মাটির শবে ছেনি হাতুড়ী
শব্দের মালা গেঁথে কাব্য হয় না
অব্যক্ত যন্ত্রণায় কাঁদে,
থেঁতলানো কবিতার অবয়ব......

শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৩

এলোমেলো কথা



এলোমেলো কথা
- যাযাবর জীবন

দানের কোনো সীমারেখা হয় না
মানসিকতায় নির্দিষ্ট হয় পরিসীমা
নির্ণয় স্ব-ইচ্ছায়;

গ্রহণ করার ক্ষমতা কতটুকু?
সর্বচ্চ সীমারেখা নির্দিষ্ট
নিয়তির বেঁধে দেয়া;

গ্রহণের ক্ষমতা শুধুই ততটুকু
দিয়েছিলে যারে ঠিক যতটুকু......


শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০১৩

সবটুকু


সবটুকু
- যাযাবর জীবন

হাতের কাছে পড়ে আছে
খোলা কলমখানি
দিস্তা কাগজ এধার ওধার
উড়ছে সারিসারি
কত কথা মনের ভেতর গুমরে কেঁদে ওঠে
নিউরন কোষে ভাবনাগুলো সার দিয়ে আছে বসে
মনের ভাবনাগুলো আর খেলা করবে না আঙুলে
কত কথাই না লেখা হয়েছিল!
আজ অসাড় হয়ে আসা এ হাতে।

তোকে দেখলে আজ বড্ড করুণা হয়
আমার জন্য যুঝতে যুঝতে নিজেকে করে ফেলেছিস বড্ড ক্ষয়;
এভাবে আর কত কাল ঠেলে সরাবি ওপারের দূতকে
নিয়ে রনাঙ্গিনী বেশ
একের পর এক যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা
জীবন আর মরণের; এবার তো কর শেষ!!
আজ তোর পাল্লা ভারী তো কাল ওপার-দূতের
টানাহেঁচড়া তোদের; সইতে হয় তো আমারই;
তবু আমি বেশ আছি
জড় পড়ে থেকে
তোদের যুদ্ধের মাঝে।

আমার কাছে এখন স্তরে স্তরে
খুলে যাচ্ছে একটি একটি নতুন দ্বার
নতুন ভুবনের
জানি না এখানে কে কার?
এখানে বিলীন হব নব সূর্যালোকে
যেখান থেকে অন্যরকম এক বেগুনী আলো ফোটে;
সাদা সূর্য অনেক দেখেছি দ্বিপ্রহরের কালে
অস্তমিতে রাঙা দেখেছি হরিদ্রাভ থেকে লালে
আসলে সবই শূন্য মহামায়ার কালে।

আজ আমি বড্ড ক্লান্ত তবু মানাতে পারি না তোমাদের হায়
টানছিস দুজন দুদিক থেকে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায়
কারে নিয়ে, কার জন্য?

চেয়ে দেখ না ভালো করে
পড়ে আছে কে?
মানুষ না শব!!!
ভাইরাসে খেয়ে গেছে যার সবটুকু,
সব, সব সব!!!!!!



ব্যথার দানব


ব্যথার দানব
- যাযাবর জীবন

জাহাজ ডুবানিয়া ঢেউ
দেখেছে কে?
অবিরাম, ক্রমাগত
অস্তিত্ব ডুবিয়ে দিতে।

ঝড়ের তাণ্ডব
দেখেছে কে?
টর্নেডোর রূপে চারিদিক
ছিন্নভিন্ন করে দিতে।

ক্রমাগত ব্যথার ঢেউ
একের পর এক,
অবিরাম, অবিরত
আসে তারা দল বেঁধে,
অন্যকোনো ভুবন থেকে
আঁচরে কামড়ে রক্তাক্ত করে নিতে
বেঁচে থাকার অস্তিত্বটুকু
লণ্ডভণ্ড করে নিতে;
দানবের অস্তিত্বের সরব কোলাহল
মানবের নিউরন কোষে।

সয়েছে কে?


বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৩

আজ তোকে বিদায় দিলাম


আজ তোকে বিদায় দিলাম
- যাযাবর জীবন


কতদিনের সম্পর্ক?
তোর আর তোমার?
চল্লিশ নাকি পঁয়তাল্লিশ বছর!!!
আজ আর ঠিক মনেও পড়ে না
ঝাপসা ধোঁয়াটে হয়ে গেছে স্মৃতিগুলো
তবু যেন এই সেই দিন তুলে নিয়েছিলেম তোকে
দ্বিধা আর ভয়ের অনুভূতিতে
মাটি থেকে......
তারপর থেকে একটানা এতগুলো বছর
তুই আর আমি কতই না স্মৃতি দুজনার
ধোঁয়া আর ধোঁয়াটে ঝাপসা কবিতার
বিষণ্ণ অন্ধকারে একটুকরো আলোর;
তোকে ছাড়েনি কখনো এ হাত
ধরে রয়েছে সেই কবে থেকে!
ঠোঁটের উষ্ণতা কারো কম ছিল না!
তোর দেবার আমার নেবার
কফির কাপের চুমুক
হতো না তুই ছাড়া
কিংবা চায়ের
কিংবা একদিকে আইসক্রিমে কামড়
আর তোকে একটি চুমু;
জেগে থাকা সময়ের প্রতিটা মুহূর্ত
কিংবা ঘুমের ঘোরেও হাত চলে যেত
তোর পানে......
তবুও তো টিকলো না
এত গভীর একটা সম্পর্ক............
এক মুহূর্তের দমকা ঝড়ো হাওয়া
উড়িয়ে নিয়ে গেল
ভিত সহ
শেকড় সহ
উপড়ে উঠে এলো
চায়ের কাপে ধোঁয়ার মত উড়ে গেলো
আমাদেরই দুজনার এতদিনের সম্পর্ক;
এক লহমায়
বিনা কারণেই
কোনো দোষ ছিল না তোর;
শুধুই আমার স্বেচ্ছাচারিতা দায়ী
তোকে দেখানোর জন্য আমি পারি
ইচ্ছে করলেই পারি।

তোরা মানুষ হয়ে যখন নাড়ীর টান
হৃদয়ের গভীর ভালোবাসার শেকড়
টেনে উপরে তুলে এনে
মনের অঙ্গারে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিতে পারিস
তখন আমি কেন পারব না ছুঁড়ে ফেলে দিতে?
যুগ যুগের সুখ দুঃখের সাথী - ঐ সিগারেটের শলাটাকে?

বেশি কাছে টেনেছিলি
-এতটা এডিকশন ভালো না।



অসম যুদ্ধ



অসম যুদ্ধ
- যাযাবর জীবন

সংখ্যায় ওরা লক্ষ লক্ষ
একা আমি খেলি যুদ্ধ
ঘুমের দেশে উড়ি আমি
ওদের ওপর উঠে
যুদ্ধ করে ঘুমের রেশে
সেনাপতির বেশে;
জাগায় আমায় ওরাই শেষে
নাচতে আমার পিঠের পরে
বিদ্ধ করে
বিদ্ধ করে......

লক্ষ কোটি সংখ্যায় ওরা
আমি এক ও একা
তবু যুদ্ধ চলে অসম
একটুকু খন যদি বেশি
বাঁচতে পারি;
একটু খানি
খুব অল্প
কিছু সময় বেশি......

লক্ষ কোটি জীবাণুগুলো
খেয়ে যাচ্ছে হাড় মাংস......

অসহায় চেয়ে থাকি!!


শনিবার, ৬ জুলাই, ২০১৩

Who am I?

Who am I?
- যাযাবর জীবন

I'm a computer program
Corrupted by UNK virus
Antivirus program don't work on me
Instead every moment, I produce virus

My beloved friends, don't send me any Tag
It irritate my HDD and I got bend
By default I don't send tag request
Now a day, which I used to send

My birth is by nature with the sperms
From my biological father and mother
There might be some wrong when they mixed
That's why i became a computer program
And my HDD has been accordingly fixed……..

I could not be a human being
I do not have any human emotion
There was a problem
In the biological formation
A parasite has been formed
When sperms were born
Actually I'm “Virtual”
And I do not exist...............

শুকরিয়া মেহেরবান

শুকরিয়া মেহেরবান
-যাযাবর জীবন

রাত জাগানিয়া রাত্রির সকল প্রহর
ঘুম পাড়ানিয়া দ্বিপ্রহর
একা কাটানোর অষ্টপ্রহর;
সময় দোলে;
পেন্ডুলামের প্রহর দোলে
মহাকালের বয়ে চলা সময়ের পথ ধরে
সময় গড়িয়ে চলে;
ঠিকা নেয় নি "সময়" কারো প্রহর গোনা অপেক্ষার
কিংবা সকল চাওয়া পাওয়া পূরণের অবসান প্রতীক্ষার
স্বেচ্ছায় বরণ করা কারাবাস
সেটাও তো ওপর ওয়ালার নেয়ামত
প্রহর গুনে করে যাচ্ছি হজম বিষপান।

আশা নিরাশার দোদুল্যমান পেন্ডুলাম
ভোরের "আসসালা তু খাইরুম মিনান্নার"
কেঁপে ওঠে কেন মনের ভিত আমার
ঢং ঢং গির্জায় শব্দ মাথায় বড্ড বাজে
শাঁখের কুউউউ ধবনি মেলায় সন্ধ্যের ভাঁজে
পেন্ডুলামের ঝলসানো শেষ বিকেলের আলো খেলায়
প্রহরগুলো শূণ্যে দোলে আশা নিরাশায়
রাতের বেলায় ছিন্নভিন্ন হৃদয় প্রতীক্ষার
সময় ঘড়িতে কালের পেন্ডুলামের দোলার
ঢং ঢং ঘণ্টাধ্বনি সময় বয়ে যায়......

তবু সকল শুকরিয়া নেয়ামতে
যতটুকু পেয়েছি হাত না পেতে
"আল্লাহ্‌ তায়ালা বড্ড মেহেরবান"
যতটুকু পেয়েছি দুহাতে
তাতেই স্মরণ করি
"ফাবি আইয়ে আআ লা ই রাব্বিকুমা তুকাজ্জিবান"......

দায়বদ্ধতা আমারই

দায়বদ্ধতা আমারই
- যাযাবর জীবন

ছুঁতে যাই যত
ক্রমশ হারিয়ে যাও তত
দূর বহুদূরে, কুয়াশার মত;
বিষণ্ণ চাঁদ একসময় ঘুমিয়ে যায় রবির উদরে
নিয়ে আমারে......

হয়তো পাবো কিংবা নয়
তবু ধ্রুব হয়ে রয়, সীমাবদ্ধতার স্থির সময়
অপেক্ষা কিংবা প্রতীক্ষার;
বিপরীত পথ হাঁটা আমাকেই হেঁটে যেতে হবে
দূর বহুদূরে
খুঁজে তোমারে......

বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই, ২০১৩

কালের ঘড়ি

কালের ঘড়ি
- যাযাবর জীবন

কালের ঘড়ি টিক টিক ঘোরে
সময় গড়িয়ে চলে কালের যাত্রায়
উড়ালডানা মেলে
আমাদের নিয়ে যায় ধীরে ধীরে
অন্য কোন ভুবনের দিকে
মহাকালের ঘড়ি অপেক্ষায় পথ চায়
সময় হবে কখন আমার চলে যাবার
রূপ রস গন্ধ ছেড়ে
শব্দহীন ঐ মাটির ঘরে
বড্ড অনীহা সে পথে হাঁটার
যেথা ঢেকে নেই পথ সবুজ ঘাসে
তবু পথ চলি কালের ইচ্ছেয়
টিক টিক ধ্বনি শুনতে কি পাও
পথ শেষ হবে গিয়ে মাটির ধূলায়
ঘড়ির কাটা থামবে একসময়
ফুরবে যেদিন তোমার সময়
কালের সময় যাবে কাল বেয়ে
টিক টিক শব্দ রবে না আর কোথাও
নৈঃশব্দ্যের ঘরে নিঃশব্দ হয়ে।

লুটপাট চারিদিক

লুটপাট চারিদিক
- যাযাবর জীবন

লুটেরারা লুটে নিচ্ছে চারিদিক থেকে
যার যার অবস্থানে থেকে
যার যেটার অভাব রয়েছ;

লুট হচ্ছে রাস্তার মালামাল
কড়ি ভরছে পকেটে ঠিকাদার
লুটের স্বর্গে বাস রাজনীতির বড় নেতার
অভাব নেই তার স্বভাবে লুট করে
বড় বড় দাও মারে
একেক বারে।
লুট হচ্ছে বনের পর বন
সবুজের সমারোহে লুটেরার কি আসে যায়
কাটছে পাহাড় সারি সারি
লুটেরার পকেট ভারি
মাটি ধ্বসে পড়ে কান্নায়
ধ্বংসস্তূপের তলায় পড়ে মরে যাক কি কিছু অভাজন
সেখান থেকেও কঙ্কাল বিক্রির টাকায় গড়বে পাহাড় মহাজন
কি এসে যায়?
লুটে নিচ্ছে ইট কাঠের স্বপ্নের বাড়ি
অনেক কষ্টের টাকা দিয়েছিল কন্টাক্টারের হাতে তুলে
বালুতে বালু মিশিয়ে লুট হচ্ছে সিমেন্টের বস্তা
রডের মাপ যদি হয় ষোল আনা
লুট করে আট আনা
ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে মরুক না কিছু মানুষ
বিল্ডিং ধ্বসে
লুটের টাকা আসছে তো পকেটে।

লুট হচ্ছে জ্যোৎস্না মেঘের ছায়াতে
লুট হচ্ছে রৌদ্র টানা বৃষ্টির ধারায়
লুট হচ্ছে অক্সিজেন
নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে কি দরকার
মৃত্যু চারিধারে
হরেক লুটেরার বিবিধ মনের ঘরে
লিপ্সার আগুনে জ্বলে
স্বার্থের কোটা তো পূরণ হচ্ছে;
পকেট ভারী হয়
বিদেশ ভ্রমণ
নিয়ে সব পরিবার পরিজন
একটু আনন্দ না হয় হোক
পয়সা তো আসে লুটের রাজ্যে
অগুনতি, অগাধ, বেশুমার;
বিবেক বুদ্ধির কথা অচল এ যুগে
যে, যেদিক থেকে পকেট ভারী কর
লুটের রাজ্যে ভয় নেই কিছু
পেছনে আছে যে গডফাদার কিছু
সুবিধার পাহাড় লুট করে মার।

লুট হচ্ছে নারীর মন
লুটেরা দেহ চেটে ভাগছে গতিতে
লুট হচ্ছে পুরুষের মন
লুটেরার দেহ তৃষ্ণা মেটায় রিপুতে।

নিজের সাথে কথোপকথন

নিজের সাথে কথোপকথন
-যাযাবর জীবন

মাঝে মাঝে
খুব মাঝে মাঝে
প্রায়ঃশই মনে হয়
এ পৃথিবী যেন আমার জন্য নয়
আমি যেন কেমন অচল এ যুগের সাথে
মেলাতে পারি না কারো সাথে, নিজেকে
মাঝে মাঝে বোধগুলো কেমন যেন,
কেমন অনুভূতি-শূন্য মনে হয়
যেন জীবনে কোথায় একটা বিশাল শূন্যতা
কোথায় যেন বড় একটা গরমিল
জীবনের সাথে আমার
কিংবা মানুষের সাথে
কিংবা এ পৃথিবীতে
খাপ খাওয়াতে পারি না নিজেকে
চারিদিকের মানুষগুলোর মাঝে
এর থেকে বয়ে যাওয়া নদী
ধু ধু বালুচর
সবুজ ঘাসের মাঠ তেপান্তর
ধান ক্ষেত, পুঁই ডগা
আর পাখিদের কোলাহল
অনেক আপন মনে হয়
প্রকৃতির কাছে সমর্পণের সময়।

আমি যেন এক ভুল সময়ে জন্মেছি
কিংবা ভুল জগতে চলে এসেছি
যেখানে কেও কারো নয়
শুধুই নিজের জন্য নিজে
বেঁচে থাকা আর ঘানি টানা
জীবনের বোঝা
কলুর বলদকে মাঝে মাঝে আমার যেন খুব আপন লাগে
যেন আমার মতই বয়ে যাচ্ছে বোঝা কাঁধে করে
মুখ বুজে
জীবনের;
মাঝে মাঝে ঐ পাখিদের আকাশের গায়ে উড়াল ডানা মেলে
কেমন উড়ে চলেছে দূর আকাশে ভেসে
বড্ড হিংসে হিংসে লাগে।

সম্পর্কগুলো আজকাল কেমন জানি
মানুষের সাথে মানুষের
বাবা মা আত্মীয় পরিবার পরিজন
আর এই সংসার
কেমন সং সেজে থাকা মনে হয়
খুব বেশি মেকি
স্বার্থপর পৃথিবী
কিংবা হয়তো খুব বেশি আত্মকেন্দ্রিক
নিজেই আমি;
নিজের ভুবনে নিজে
পড়ে আছি স্বপ্নের দেশে
অথচ কাছের মানুষগুলো হয়তো ঘিরে আছে
আমার চারিদিকে
কাছের মানুষ ভাবতে পারি না আমিই যেন কাওকে;
সব থেকেও কি জানি একটা নেই নেই লাগে
কেমন একটা বোধহীন শূন্যতা
কাওকে বোঝাতে পারি না
পারি না কাওকে বুঝতে
হয়তো নিজেই ঠিকমত বুঝি না
আমার যেন থাকার কথা নয় এই পৃথিবীতে
হয়তো ভুল করে চলে এসেছি
কিংবা এটাই ছিল লেখা আমার নিয়তিতে
ঘুমন্ত পৃথিবী অথচ আমি জেগে থাকি
রাতভর
রাতের পর রাত
তারপর আরো অনেক রাত
কতগুলো রাত
এখন আর মনে পড়ে না
কে বানিয়েছিল ঘুমের বড়ি?

মাঝে মাঝে খুব জানতে ইচ্ছে করে
ও ভুবনে কি এমন আছে
মেলাতে পারব যার সাথে নিজেরে
অন্য রকম
অন্য মানুষ
অন্য সময়
অন্য পরিবেশ
অন্য পরিবার
না কি অন্য কোন পৃথিবী?
জানি না
খুব জানতে ইচ্ছে করে
খুব মাঝে মাঝে
প্রায়ঃশই।

বুধবার, ৩ জুলাই, ২০১৩

সত্য-মিথ্যা

সত্য-মিথ্যা
-যাযাবর জীবন

সত্যকে আমাদের কেন জানি বড্ড ভয়
জগতটা চলছে মিথ্যের ছলে – তাই নয়?
মুখে কথা বলি উত্তর মনে রাখি দক্ষিণ
ঝরে পড়ে মিথ্যের বৃষ্টি
যত অনাসৃষ্টি
থলের বিড়ালটা বেরিয়ে চলে এলে।

বলতে বাঁধা কই ইচ্ছেমত?
মনের খোলা কথা যত
যার সাথে ইচ্ছে তার সাথে
যদি মুখ আর মনের কথা এক হয়
যদি তা মিথ্যার অন্ধকারে ঢাকা নয়
তবেই তো সত্যি কথা তারে কয়।

জীবনের চরম সত্যি বের হয়ে আসে একদিন
ঢাকা ছিল যা অন্ধকারে
বলা হয়েছিল যা বড় মুখ করে
নিয়তি তা নিয়ে আসে আলোকিত করে
সত্যের জয় হয় নিশ্চয়
মিথ্যার ক্ষয়; – তাই নয়?


মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০১৩

বাবা মা ও সন্তান

বাবা মা ও সন্তান

(একটি ছোট গল্প - সত্য ঘটনার ছায়া অবলম্বনে)


- যাযাবর জীবন

আজ একটা ছোট্ট গল্প বলি তোমাদের, সত্য ঘটনা তবে স্থান কাল পাত্র গুলো পরিবর্তিত -

একদিন বুড়ো বাবা তার লায়েক ছেলের সাথে সোফায় বসে কথা বলছে, আসলে কথা না পুরনো একটা টুকরো স্মৃতি ঘাঁটছিলেন বাবা। বাইরে জানালায় একটা কাক এসে বসল।

বাবা: এটা কি ?

ছেলে: কাক

বাবা আবার জিজ্ঞাসা করলেন এটা কি?

ছেলে একটু বিরক্ত হয়ে বলল, দেখছ না এটা কাক?

বাবা তৃতীয় বারের মত প্রশ্ন করলেন - জানালায় এটা কি এসে বসেছে।

এবার ছেলে খুব বিরক্ত হয়ে: কয়বার বললাম যে এটা একটা কাক? তোমার চোখ তো এখনো অন্ধ হয়ে যায় নি।

বাবা হেসে চতুর্থ বারের মত অনেক গলায় অনেক মায়া ঢেলে জিজ্ঞাসা করলেন: বাবা জানালার শিকে এটা কি বসেছে।

এবার ছেলে ভয়ঙ্কর রেগে গেল: যদি কাক তোমাকে চেনাতে হয় তাইলে সোফায় না বসে বিছানায় শুয়ে থাক, এত বিরক্ত করতে যে পার! এক কথা বার বার জিজ্ঞাসা কর কেন? কতবার বললাম যে এটা একটা কাক, না কি তুমি কাকও চিনো না? বুড়োকে নিয়ে হয়েছে জ্বালা।

বাবা স্মিত হেসে উঠে গেলেন তার ঘরে, কিছুক্ষণ পর ড্রয়ার ঘেঁটে পুরনো একটি ডায়েরী নিয়ে ছেলেকে পড়তে দিলেন। বললেন বাবা আমার, যেদিন তোমার জন্ম হয় সেদিন থেকে আমি এই ডায়রিতে তোমার প্রতিদিনের প্রতিটা মুহূর্ত লিখে রেখেছি। তোমার যখন তিন বছর তখনকার এই লেখাটা একটু পড়ে দেখ বলে নির্দিষ্ট পাতাটি ছেলেকে পড়তে দিলেন।

ওখানে লেখা:
আজ আমার ছেলের বয়স তিন হলো, আধো আধো কথা বলে, যা দেখে তাই জিজ্ঞাসা করে। এটা কি, ওটা কি, এটা এমন কেন? ওটা অমন কেন? আমি ছেলের সাথে ছেলে হয়ে যাই তার। কি এক গভীর ভালোবাসার টানে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে তার প্রতিটা প্রশ্নের উত্তর দেই একটু বিরক্ত বোধ করা তো দূরের কথা বরং নিম্নগামী ভালোবাসার স্রোতে ভেসে তার প্রশ্নগুলোর উত্তর দেই তাকে বুকে তুলে নিয়ে, কোলে বসিয়ে অনেক আদরে একই প্রশ্নের উত্তর দেই বার বার করে।

একদিনের ঘটনা - আমি ছেলের সাথে সোফায় বসে খুনসুটি করছি আর তার নানা উদ্ভট প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। না বুঝলে বার বার বোঝাচ্ছি। হঠাত করে জানালায় একটা কাক উড়ে এসে বসে কা কা শুরু করে দিল। আমার তিন বছরের ছেলে জিজ্ঞাসা করল - বাবা এটা কি?
আমি বললাম এটা একটা পাখি এর নাম কাক। ছেলে আবার প্রশ্ন করল এটা কি বাবা? আমি উত্তর দিলাম বাবারে এটা কাক, একটা পাখি। এভাবে আমার ছোট্ট সোনামণি ২৩ বার সেদিন একই প্রশ্ন করল, আমি একফোঁটা বিরক্ত না হয়ে তাকে ২৩ বারই বুঝিয়ে বললাম একই কথা উত্তরে। কি বুঝলো কি জানে আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে নতুন খেলায় মন দিল। আমার মনটা কি যে এক আনন্দে ভরে গেল।
সন্তান বাবা মায়ের শ্রেষ্ঠ আদরের ধন, তার এই হাজার প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে আমার মনে তার জন্য হাজার গুন বেশী ভালোবাসার কেমন এক অজানা অনুভূতি খেলা করে।

একটি সন্তান একটি বাবার জীবনকে বদলে দিতে পারে, আমার সন্তান যখন অনেক বড় হবে, যেদিন সে মানুষের মত মানুষ হবে; যেদিন আমার চলার সামর্থ্য থাকবে না সে নিশ্চয়ই আমাকে বুকে করে আগলে রাখবে যেমন আমি অপার ভালোবাসায় তাকে ভাসিয়ে রেখেছি। আজকের দিনটির কথা সেদিন হয়তো আমার মনে পড়বে কিংবা হয়তো মনে থাকবে না, বুড়ো হলে নাকি মানুষ অনেক কথাই ভুলে যায়, তবে আমার ছেলেকে আমি সেভাবেই মানুষ করব যেন সে আমাদের বুড়ো বয়সে বাবা মায়ের ভালোবাসার মূল্য দেয় ভালোবাসা দিয়ে। আজ এই পর্যন্তই থাক।
(ডায়েরির সেদিনের পাতা শেষ)

ছেলে পড়লো ডায়রিতে লেখা কথাগুলো, মনে কোনো ভাব জাগল বলে মনে হলো না। শুধু বলল বিরক্ত স্বরে - এই সব বস্তাপচা কথাবার্তা আজকের যুগে অচল। বাবা "be practical". আমার অনেক কাজ আছে, তোমার সাথে পুরনো কাসুন্দি ঘাটার সময় নেই। বার বার এক কথা বলে বিরক্ত কর না। বয়স হয়েছে এখন নামাজ কালাম পড় আল্লাহ্‌ খোদার নাম নাও। আর শুয়ে শুয়ে রেস্ট কর। আমি কাজে যাচ্ছি বলে ঘর থেকে বিরক্ত হয়ে বের হয়ে গেল।

আমরা কি আসলে মানুষ হয়েছি? নাকি যন্ত্র?
যে অপার স্নেহ মায়া মমতায় বাবা মা আমাদের অনেক কষ্ট সয়ে বড় করেছেন আমাদের গায়ে ফুলের টোকা না পড়তে দিয়ে তাঁদের আমরা আজ প্রতিদানে কি দিচ্ছি? একরাশ বিরক্তি? ওল্ড-হোম নামক কারাবাস?

আমরা মানুষ? ধিক আমাদের ..................


পুনশ্চ: (মূল থিম নেট এ অন্য একটি গল্প থেকে সংগৃহীত, তবে গল্পটা নিজের মত করে লিখলাম, আমি সাধারণত গল্প লিখি না তবে এটা না লিখে পারলাম না। এ গল্পে হয়তো অনেককে হার্ট করবে, অনেকে নাক সিটকাবে, ঐ রূপ ছেলে বা মেয়ের দলগুলো, তাতে আমার কি এসে যায়! কেও তো পড়বে? কেও তো বুঝবে? এটাই বা কম কি?)



সময়

সময়
- যাযাবর জীবন

সময়, কাল; বয়ে যায়
স্রোতের মতন – কালের স্রোতে;
একে আটকে রাখার ক্ষমতা দেয় নি নিয়তি
মানুষকে;
এর শুরু কোথায়? বিগ-ব্যাং এ?
- জানা নেই;
শেষ কবে?
– সময় জানে।

লাগাম হাতে নেই কারো
তবু আটকাতে চায় সময়কে, কিছু মানুষ;
রঙ মাখে চুলে
সঙ সাজে পার্লারে
ধরতে চায় বয়সটাকে, কিংবা সময়কে
বোঝে না এ যে রেসের পাগলা ঘোড়া
ছুটে চলছে বিরামহীন গতিতে;
আদতে পড়ে থাকে সময়ের অনেক অনেক পেছনে।
আটকাতে যায় যতবার
হোঁচট খায় প্রতিবার
পড়ে যায় বারবার,
থেমে যায় একবার;
যতটুকু সময় নিয়তি বেঁধে দিয়েছে তাকে।

সময় বয়ে যায় আপন গতিতে।

অপেক্ষায় মানুষ থাকে
সময় বয়ে চলে কালের স্রোতে
নিয়তি ঘড়ির কাঁটা
শুধুই ওপরওয়ালার হাতে;
সময়ের সমাপ্তি? - হয়তো পৃথিবীর সমাপ্তিতে;
নয়তো, নতুন সময় ঘড়ির কাঁটা
নতুন করে;
আবার প্রথম থেকে
-অন্য কোন নতুন ভুবনে............

সোমবার, ১ জুলাই, ২০১৩

দুষিত রক্ত

দুষিত রক্ত
- যাযাবর জীবন

“ভালোবাসা”
একটি শব্দ
অস্তিত্ব-বিহীন
মনে হয় ইদানীং
হয়তো বায়বীয় কিংবা ভ্রম
নয়তো অন্ধকারের কালো
তবু কত কাব্য?
বুঝি কম.........

স্রোতের জলে শ্যাওলা পড়ে না
তবু পা পিছলায়
ধপাস আছাড়
বার বার
স্রোতস্বিনী নদীর জলে হারিয়ে যাওয়া
কচুরিপানার ফুল তুলতে যায় অনেকেই
ভেসে যায় স্রোতের সাথে
“ভালোবাসা” শব্দটির মানে খুঁজতে গিয়ে;
আমিও অলীক স্বপ্নে খুঁজে যাচ্ছি
চাঁদের আলোয়
অন্ধকারের কালোয়
ক্লান্ত বিধ্বস্ত তবু তারে খুঁজে পাই নি
এখন আর ঐ শব্দের মানে খুঁজি না
কি হবে এত জেনে
ইদানীং একা পড়ে থাকি
জড় বুদ্ধিহীন হয়ে, মানুষ থেকে দূরে
দূরত্বেই মঙ্গল মানুষের কিংবা প্রেমের।

তারচেয়ে পশুপাখি ভালো
কিছু আছে হিংস্র
কিছু মন কাড়া মায়াবতী
কিছু পাখি গান গায়
অস্থির লাগে
কিছু পশু কামড়ায়
খেতে পারে না
আমি ডাকি খা না আমারে
আমার রক্ত মাংস হাড়ের মজ্জা চুষে খা
হয়তো আমার মাংসে তেতো গন্ধ পায়
“ভালোবাসা”র দহনের আগুনে পুড়ে যাওয়া
রক্তের স্বাদ বদলে যায়
তেতো হয়ে গেছে হয়তো
খুব ইচ্ছে করে পান করি নিজের রক্ত
ভালোবাসা শব্দের মানে না বুঝি
হয়তো বুঝবো ধুতুরার বিষের স্বাদ;
আমন্ত্রণ সবাইকে
আমার একটু রক্ত পান করে যা।

এখন আর ঐ শব্দের মানে খুঁজতে ইচ্ছে করে না
তবু পা চলে যায় মনের অগোচরে
চাঁদের আলোয়
রাতের অন্ধকারে
যখন চাপ চাপ কষ্টগুলো না চাইতেই হৃদয় খুঁড়ে
কালো রক্তের ধারা মেশে স্রোতস্বিনী নদী জলে
তারপর হারিয়ে যায় মন থেকে।