সোমবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

কথার কামড়ে সংসার

 প্রেম করলে কথায় মধু 

প্রেম করাটাই ভার 

কথায় কথায় কথার কামড়

মৌমাছি কোন ছাড়! 


কথার কামড় হরহামেশায় 

প্রেমিক কোন ছাড়!

প্রেমিকার ঠোঁটে কথার বিষ 

কথায় অনেক ধার;


প্রেমের ঠোঁটেও অনেক বিষ 

রাগ উঠলেই মনে 

কথার কামড়ে দুজন ভোগে   

ব্যথা টনটনে,


প্রেমিক যখন গরম হয়

প্রেমিকা কিছু নরম 

তাওয়ার ওপর প্রেমিক চড়ে 

প্রেমিকা যখন চরম; 


দুজনার একজন'কে 

হতেই হয় নরম 

আর না হলে প্রেমের দশা 

কালাহারির গরম; 


প্রেম পাকলে দুজনার 

গড়ায় দাম্পত্য 

সংসার নামে দুজনার    

স্ত্রীর আধিপত্য;


ওখানেতে স্বামীর যদি 

একটু উঁচু গলা!

স্ত্রীর গলা চড়তে থাকে 

স্বামীরে তুই পালা; 


স্ত্রীর গলায় থাকবে ধার 

এটাই স্বতঃসিদ্ধ 

কথায় কথায় কথার বিষে

স্বামী হবে বিদ্ধ;   


যতক্ষণ স্বামী বেচারা

মুখ বন্ধ রাখে 

দুজনায় ঘর করে

দাম্পত্যে সুখে। 


#রম্য_ছড়া 


২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২


 

কথার কামড়ে সংসার   

 - যাযাবর জীবন 


অবোধ্য ভার্চুয়াল সম্পর্ক

ভার্চুয়ালটা এক আজব জগত   

এখানে কেউ কারো আপন নয় অথচ সবাই আপনের ভাব ধরে 

এখানে বন্ধু গড়ে শত্রুও গড়ে 

এখানে সম্পর্ক গড়ে সম্পর্ক ভাঙে

সম্পর্ক মানেই হাসি কান্না দুঃখ বেদনা,  

আমি এগুলো ঠিক বুঝি না; 


কখনো কখনো কাউকে খুব আপন মনে হয়

আপন ভেবে কখনো সুখ দুঃখের কথা কই

হাসিমুখে খোলা মনে ঠাট্টা মশকরা করি

এরা হাসে, এরা আনন্দের ভাব ধরে, ভাব করে বন্ধুত্বের

আবার পরক্ষণেই ঝাঁপিয়ে পড়ে কি জানি কি কারণে আর অকারণে  

আনন্দ পরিণত হয় কষ্টে

তবে এতদিন বন্ধুত্বে হাসি ঠাট্টার সেগুলো কি শুধুই অভিনয়? 

আমি ভার্চুয়াল সম্পর্কগুলো ঠিক বুঝি না;


কখনো কখনো ভার্চুয়ালে বন্ধুত্বের আমন্ত্রণ আসে 

কখনো কথা আমার লেখায় টুকটাক বলতে বলতে কাওকে বন্ধু মনে হলে আমি আমন্ত্রণ পাঠাই

বেশীরভাগ ক্ষেত্রে আমি আমন্ত্রণে সাড়া দিলেও মাঝে মাখে আশ্চর্য হয়ে দেখি

এতদিন যাদের সাথে মন খুলে কথা বলেছি তাদের মধ্যে অনেকেই আমার আমন্ত্রণে সাড়া দেয় না

হয়তো আমার কথা পছন্দ হলেও আমার চেহারাটায় কিছু একটা আছে, যেটা ওদের পছন্দ হয় না

একদিন, দুদিন করে সপ্তাহ পার হলে মনে কিঞ্চিৎ দুঃখ নিয়ে আমার আমন্ত্রণ ফিরিয়ে নেই, 

আসলে ভার্চুয়াল সম্পর্কগুলো আমি ঠিক বুঝিই না; 


আমি মাঝে মাঝে ভার্চুয়ালের নানা অসংগতিগুলোর কথা লিখি

সাধারণত যেসব অসংগতি ভার্চুয়ালে দেখি কিংবা আয়নায় নিজের মধ্যেই দেখি

তাই বিশেষ কারো দিকে আঙুল তাক না করে আমি আয়নার মানুষটাকেই লিখি 

কেউ কেউ বোঝে, কেউ না বুঝে বক্তব্য নিজের ঘাড়েই নিয়ে নেয় তারপর কথার আক্রমণ 

আসলে তোমাদের না বোঝাতে পারার অপরাধ আমারই, 

আমার অক্ষমতা ক্ষমা করে দিও; 


এই যে আমার ভার্চুয়াল বন্ধুরা!

যদি আমার কোন কথায়, কোন ব্যবহারে কষ্ট পাও তাহলে ক্ষমা করে দিও

ক্ষমা করে দিও মাঝে মধ্যে ভার্চুয়ালে তোমাদের সাথে ঠাট্টা মশকরা করার অপরাধ 

ক্ষমা করে দিও না বুঝে তোমাদের মনে কষ্ট দেওয়ার অপরাধ  

ক্ষমা করে দিও ভার্চুয়াল সম্পর্ক না বোঝার অপরাধ। 



২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২


#কবিতা 


অবোধ্য ভার্চুয়াল সম্পর্ক 

 - যাযাবর জীবন 


একটা চুপ দিন

একটা দিন 

একটা চুপ দিন,  

পুরো একটা চুপ দিন আমি তোর কাছে চেয়েছিলাম; 


সেদিন সারাদিন আমরা কোন কথা বলি নি 

শুধু কিচ্ছুক্ষণ পরপর পরস্পরকে একটু ছুঁয়ে দেয়া  

চুপচাপ হাটতে হাটতে হঠাৎ হঠাৎ দুজন দুজনার চোখের দিকে চেয়ে থাকা 

তারপর আবার চুপ, একদম নিঃশব্দ চুপ;


আশেপাশে গাছ থেকে কিছু পাতা খসে যাওয়ার শব্দ 

একটা দুটো কাকের কা কা রব

চড়ুই এর চিড়িক চিড়িক ডাকের ঢল 

খুব হঠাৎ কোথাও পাগলা কোকিলের কুহু কুহুরব 

আবার নৈঃশব্দ্যের কোলাহল;


হাটতে হাটতে ক্লান্ত হয়ে সবুজ ঘাস দেখে পাশাপাশি বসে পড়া  

তোর মাথাটা আমার ঘাড়ে এলিয়ে দিয়েছিলি 

তারপর শুধু সময় বয়ে যাওয়া, নিঃশব্দে 

একটা সময় শাড়ির আঁচলে আঙুল পেঁচাতে পেঁচাতে ঝট করে আমার দিকে তাকালি

ও কি! তোর চোখে পানি কেন? 

জিজ্ঞেস করতে গিয়েও আমি চুপ হয়ে গিয়েছিলাম  

আজ নৈঃশব্দ্যের দিন 

আজ কথা বলা বারণ

তবুও কেন একটা চুমু এঁকে দিয়েছিলাম তোর ঠোঁটে!  

আজো বুঝি নি কারণ, 

কিছুক্ষণ দুজনার ঘন শ্বাস পড়ার শব্দ 

তারপর আবার নৈঃশব্দ্য; 


একটা দিন, একটা চুপ দিন 

একটা পুরো দিন আমরা নৈঃশব্দ্যে কাটিয়েছিলাম 

কথা না বলেও ভালোবাসা যায় বুঝেছিলাম 

কথা না বলেও আমরা মন ভরে ভালোবেসেছিলাম, 

মনে আছে? 


আরেকটা নৈঃশব্দ্যের দিন কি আসবে জীবনে?  

কে জানে? 

সময় বলে দেবে।



২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২


#কবিতা 



একটা চুপ দিন 

 - যাযাবর জীবন 



গান গান খেলা

ইদানীং আমার এক অদ্ভুত খেয়াল হয়েছে 

এক অদ্ভুত নেশাই বলতে পারো 

আমার নিজেকে জাহির করার, 

ঐ তোমাদের ভার্চুয়ালে;


আমার গলা গানের উপযুক্ত না

আমার গলায় সুর নেই, আমি তাল লয় বুঝি না 

আমি গান গাইতেই জানি না, তবুও হেঁড়ে গলায় চেঁচাই

কখনো চেঁচিয়ে গান গাই, কখনো মনের খেয়ালে বেসুরে কবিতা আবৃত্তি করি;     

মাঝে মধ্যে দেখি ঘরের ভেতরের টিকটিকি দৌড়ে পালায়

মাঝে মধ্যে আরশোলা বের হয়ে আসে 

মাঝে মধ্যে কোত্থেকে জানি ইঁদুর বের হয়ে আসে, কুতকুতে চোখে ইতিউতি তাকায়

ওরা হয়তো বুঝতে চেষ্টা করে, বাসায় কি কোন নতুন প্রজাতির প্রাণীর আগমন ঘটেছে!  

আমাকে চেঁচাতে দেখে কিছুক্ষণ নিরস চেয়ে থাকে

তারপর চেনা মুখ দেখে আবার ঢুকে যায় যে যার গর্তে,

আমি গান গাইতেই থাকি হেঁড়ে গলায়, সুর তাল লয়হীন হয়ে

আমি আবৃত্তি করে যাই আপন খেয়ালে, ভুলভাল উচ্চারণে 

সামনে মোবাইল নামক এক যন্ত্র রেখে 

ভার্চুয়াল নামক এক অদ্ভুত জগতে নিজেকে জাহির করে যাই 

বিশাল কোন এক গায়ক বলে, কিংবা আবৃত্তিকার;

আরে ভাই, আমার মোবাইল আমিই চালাই, নেটের পয়সা আমিই দেই

আমার গলায় আমি গান গাই, কবিতা আবৃত্তি করি  

কিছু লাইক তো তোমরা দিতেই পারো! কমেন্টে একটু আহা উঁহু!  

হোক না ইচ্ছের বিরুদ্ধেই, ভার্চুয়ালে যখন বন্ধু হিসেবে আছই!

একটা লাইকে কি আর আসে যায়? কিংবা ছোট্ট একটা কমেন্টে?

এহ! তোমরা গান বুঝে উল্টে ফেলো! 

আবৃত্তির কচুটা বুঝো! 

আমার খুব জানা আছে;  

আরে বাবা! এটা আমার এক অদ্ভুত খেয়াল 

এক অদ্ভুত নেশাই বলতে পারো 

নিজেকে জাহির করা, আমার নিজেকে 

তোমাদের ঐ ভার্চুয়ালে;


আমার পড়ালেখা তোমাদের মত অতটা করা হয় নি  

আমার কলমেও জোর নেই 

হাতের লেখা তো একদমই ভালো না 

কোনটা গল্প, কোনটা কবিতা, কোনটাকে উপন্যাস বলে 

তাও জানি না,

কবিতা আর ছড়ার পার্থক্যও বুঝি না 

তবুও আজকাল খারাপ হাতের লেখা নিয়েই টুকটাক কিছু এঁকে যাই

আসলে হাতের লেখা যে খারাপ তা তো আর তোমরা দেখতে পাও না!

আজকাল কেই বা দেখতে পায়, সবাই ল্যাপটপেই লেখে 

আমিও একটু আধটু চেষ্টা করি 

মাঝে মধ্যে ঐ যে নেটের জগতে ঢুকে ভার্চুয়াল দেয়ালে পোস্ট করি 

নিজেকে জাহির করতে, কি এক অদ্ভুত নেশার ঘোরে 

যখনই নেটে ঢুকি, ঢু দিয়ে ওয়ালে দেখি

লেখাটায় কেউ কিছু বললো? কোন লাইক? কোন কমেন্ট? 

আরে ভাই হাতের লেখা যতই খারাপ হোক

লেখা কিছু হোক বা না হোক 

আমার ল্যাপটপ তো আমিই চালাই, নেটের পয়সা আমিই দেই

আমার কীবোর্ডে আমিই হাত চালাই 

কিছু লাইক তো তোমরা দিতেই পারো!

হোক না ইচ্ছের বিরুদ্ধেই, ভার্চুয়ালে যখন বন্ধু হিসেবে আছই!

একটা লাইকে কি আর আসে যায়? কিংবা ছোট্ট একটা কমেন্টে?

এহ! তোমরা যেন বিশাল বোদ্ধা! গল্প কবিতা বুঝে উল্টে ফেলো! 

হুহ! আমার খুব জানা আছে;  

আরে বাবা! এটা আমার এক অদ্ভুত খেয়াল  

এক অদ্ভুত নেশাই বলতে পারো 

নিজেকে জাহির করা, আমার নিজেকে 

তোমাদের ঐ ভার্চুয়ালে;


আমি গান গান খেলছি, না থাকুক সুর  

আবৃত্তি আবৃত্তি খেলছি, না বুঝি কবিতা 

লেখালেখি খেলছি, কিছুই না বুঝে 

তোমরাও তো খেলো দেখি মাঝে মাঝে; 


খেলো না? 



২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২


#কবিতা 



গান গান খেলা 

 - যাযাবর জীবন 

  

দাম্পত্যের রকমসকম

সেদিন খুব হঠাৎ করেই এক পুরনো বন্ধুর সাথে দেখা হলো

অনেক অনেকদিন পরে দেখা 

কেমন আছিস, কোথায় আছিস ইত্যাদি অনেক কথা বলতে বলতে জানলাম

তার খুব সম্প্রতি সময়ে দাম্পত্যের বিচ্ছেদ হয়েছে

শুনে আমাকে দুঃখিত হতে দেখে সে হেসে ফেলে বললো

 - তুই দুঃখ পাচ্ছিস কেন রে? এটা তো আমার জন্য চরম আনন্দের অনেকদিনের কাঙ্ক্ষিত একটা বিষয়; আহ! আমি মুক্ত

আমি চমকিত তার মুখের দিকে তাকিয়ে সেখানে আনন্দই দেখলাম, চোখে কি একটা খুশির আভা যেন! মানুষের চোখ মিথ্যে বলে না, সে আসলেই আনন্দিত; কিন্তু কেন? 


আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাতেই সে বললো,


শোন, জীবনের গল্প বলি

এক ছিলো টোনা আর এক ছিলো টুনি

তারা ভালোবেসে বিয়ে করলো, প্রথম বেশ কিছুদিন ভালোই ভালোবাসা হলো

তারপর হালকা কিচিমিচি, তারপর তারস্বরে, তারপর ঠোকাঠুকি 

তারপর শব্দ চলে গেলো পাশের বাড়ি, সেখান থেকে আত্মীয় স্বজন 

বাবার বাড়ি, শ্বশুর বাড়ি।

মেলানোর চেষ্টা হয়েছে দফায় দফায় কয়েক দফা

প্রথম প্রথম মিল হয়েওছিলো, ঠোকাঠুকি থেকে চুমোচুমি, তারপর সেই তথৈবচ 

ফের কিচিমিচি থেকে বাবার বাড়ি হয়ে শ্বশুর বাড়ি

তারপর ফের মিল মহব্বত আবার ঠোকাঠুকি, এভাবে ক্রমাগত

তারপর কোন একটা সময় দুজনেই ক্লান্ত বিধ্বস্ত, তারপর একদম নির্লিপ্ত 

একটা সময় কারোরই কারো প্রতি কোন টান অবশিষ্ট ছিলো না

তারপর দুজনার মতানৈক্যে সম্মানজনক ছাড়াছাড়ি 

যে যার মত করে যার যার বাড়ি;


গল্পটা বলার সময় একটু বিষণ্ণতা কি তাকে ছুঁয়েছিলো?

এক ফাঁকে কোথায় যেন মনে হয়েছিলো গলাটা ধরে এসেছিলো

তারপর আবার চটজলদি সামলে নেয়া

আজকাল অভিনয়ে সবাই আমরা বড্ড পটু। 



আরেকদিন আরেক বন্ধুর সাথে দেখা হলো

সেও অনেককাল বাদে

আমায় দেখে জড়িয়ে ধরলো, তারপর টেনে নিয়ে বসলো কফি শপে

বন্ধুকে দেখেই বুঝলাম চোখে মুখে কেমন এক সুখের আলো ছড়িয়ে আছে,

ওহ! বলতে ভুলে গিয়েছি আমরা যখন বন্ধুবান্ধব সবাই বিয়ের কর্মটি সেরে ফেলেছিলাম

তখনো আমার এই বন্ধুটি যেন ঐ পথ থেকে অনেক দূরে, বিয়ের নাম শুনলেই বলতো দূর দূর! ঝামেলা  

তারপর অনেকগুলো বছর আমাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন;


আজ অনেক বছর পরে কফির টেবিলে জিজ্ঞাস করলাম, কিরে পাগলা! বিয়ে করেছিস? 

লাজুক মুখ করে উত্তর দিলো, হ্যাঁ রে 

ঐ আর কি শেষ পর্যন্ত বাবা-মায়ের ইচ্ছে

ঢুকে গেলাম দাম্পত্যে;  


আমি হেসে বললাম, কেন তোর ইচ্ছে ছিলো না?

সেও হেসে উত্তর দিলো, ইচ্ছে যে একবারে ছিলো না তা কিন্তু নয়

আসলে হয়ে উঠে নি তখন যখন সবার সাধারণত হয়,


তা এখন কেমন আছিস? 

 - চোখে মুখে খুশির দ্যুতি ছড়িয়ে বললো, ভালো রে! অনেক অনেক ভালো


তা কবে বিয়ে করলি? আমাদের দাওয়াত দিলি না যে! 

 - সে বললো, ঐ আর কি হুট করে হয়ে গেলো।

   এই তো বছর পাঁচেক হলো


আমি বললাম, যাক দেরিতে হলেও তো হলো!

আমার ছোট ছেলের বয়সও তো তাও বছর বিশেক হয়ে গেলো 

তোর এত বছর পর হুশ হলো! তাও ভালো তাও ভালো,

সে লাজুক হেসে বললো, কি আর করব বল? 


আমি বললাম, আচ্ছা বাদ দে 

তোর সংসারের কথা বল; 



সে বললো, তবে শোন 

আমাদের বিয়েটা বাবা-মায়ের আয়োজন

বয়সের সাথে সাথে আমিও যেন বুঝতে পারছিলাম একাকীত্ব ভীষণ 

দাম্পত্যটা হয়ে উঠেছিলো জীবনের প্রয়োজন 

তারপর সে এলো, ঘর আলো হলো 

বয়সের ফারাকটা যদিও একটু বেশিই ছিলো তবুও দিনে দিনে অনেকটা এডজাস্ট হয়ে এলো

এক সাথে থাকা থেকে একটু টান তারপর ভালোবাসা 

তারপর টুকটুক করতে করতে সংসার এগিয়ে চলা 

এর মধ্যে বাবা গত হয়েছেন, তোর ভাবি শাশুড়ির অনেক খেয়াল রাখেন

আমার মাও বৌমা বলতে অজ্ঞান 

আর তোর ভাবির এটা করো না ওটা করো না করে আমার ওপর যত শাসন 

দেরিতে বাসায় ফিরলে যত অভিমান

আমারও কখন বাসায় যাব! কখন যাব! অস্থির একটা টান 

বেশ ভালোই আছি রে আমরা, 

ওহ, শোন! তুই কিন্তু চাচা হবি বলে মুখ আলো করা হাসির দ্যুতি! 



গল্পটা বলার সময় গলা থেকে একটা কি আনন্দের চ্ছটা! 

মাঝে মধ্যে বৌ এর কথা মনে করে চোখে খুশির আভা,

এটা অভিনয় হতে পারে না 

আমি বন্ধুর হাসিমুখের দিকে তাকিয়ে থাকি;



আচ্ছা! দাম্পত্যটা কি?

কারো কাছে ভালোবাসা কারো কাছে অসহনীয় বন্ধন  

কেউ ভালোবেসে কাটিয়ে দেয় জীবন কেউ বা বাধ্য হয়ে মানিয়ে নেয় দুজন

কিছু দাম্পত্য বড্ড স্বল্প মেয়াদী - এদের দুজনেই যেন ইগোর খেয়ালী 

কিছু দাম্পত্য গড়িয়ে গড়িয়ে কিছুদূর চলে - এরা মানিয়ে নিতে চায় চেষ্টার বলে 

তারপর অনেকগুলো টিকে যায়, দুজনার চেষ্টায় 

আর বাকিগুলো ভেঙে যায়, দুজনার অসহিষ্ণুতায়;

 

তবে বেশীরভাগ দাম্পত্য শেষ পর্যন্ত চলে, মরণ যতদিন ডাক না দিয়ে বলে

এগুলোর মধ্যেও কিছু আছে মানিয়ে নেয়া, কিছু মেনে নেয়া আর বাকিগুলো ভালোবাসা;


কিছু ছাড় দিয়ে কিছু ছেড়ে দিয়ে দুজনার মেনে নেয়া আর মানিয়ে নেয়াই দাম্পত্য

 - কেউ দাম্পত্যে থেকে বোঝে কেউ ভেঙে যাওয়ার পর।  


   

০৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২


#কবিতা 



দাম্পত্যের রকমসকম 

 - যাযাবর জীবন