রবিবার, ১৫ মে, ২০১১

টুকরো কথামালাগুলি ১

১.

সবার জন্য লিখি না
কারো কারো জন্য
যেমন তুমি।

সবার জন্য ভাবি না
কারো কারো জন্য
যেমন তুমি।

সম্পর্কের মালা গুলি
এক এক জনের জন্য একেকরকম গাথা হয়
তোমারটা আজো গাথা হল না।

২.

বন হংসি মনোহারিনী,
তোমার আঙ্গিনার ময়ূর খেলা করে আনমনে
তোমার ছাতিম গাছে ধান শালিখেরা বাসা বাধে নির্ভয়ে
তোমার আকাশে জ্যোৎস্না নেমে আসে আলো হয়ে
তোমারি ছাদে বৃস্টি ঝরে পরে সুর হয়ে...............

আমি অন্ধকারে পড়ে রই
কালো জোস্নার তিমির আঁধারে।


৩.

আজ কি টিপ দিয়েছিলি?
কালো, নাকি লাল?
তাকে ভেবে একটু রাঙা, হলো কি তোর গাল?

আজকের আকাশ-
মেঘ কি ছিলো তাতে?
নাকি নীল মেঘেরা চূড়ি হয়ে ভাসছিলো তোর হাতে?


৪.

বৃত্তের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছি আমি
কুল খুজে পেতে পরিধির দিকে চোখ ধায়
পূরো ব্যাসার্ধ জুড়ে আছ শুধু তুমি
সেই অসীম পর্যন্ত, যতটুকু দেখা যায়।


৫.

আমার হ্রদয়ে আঁকা ছিল যে চাঁদ
রাতের আধারেতে তোমারি বেদনায় ম্লান হয়ে যায় ডুবে
হ্রদয়ে ক্ষরণ রক্ত ঝড়ায়
ভোরের আকাশে লাল সূর্য হয়ে ভেসে ওঠে ওই পূবে।


৬.

ঝড় উঠেছে বনে
ঝড় উঠেছে মনে

বাতাস হয়েছে বাউল
তোমারো বিহনে।


৭.

রক্তের রঙ এক
অস্রু ও তেমনি
মনটা সবার কেন এক হয়না?

কষ্টেরা ছোট বড়
সুখেরা ও তেমনি
ভাবনারা তবু কেন এক হয় না?


৮.

এই আছ এই নাই
মনে ভাবি আছ তাই
চোখ মেলে দেখি নাই
শুন্যতা - একা একা
তুমি নাই পাশে নাই।



৯.

বলতে চাইনি
তবু বলতে হল
দেখত চাইনি
তবু দেখতে হল
বুঝত চাইনি
তবু বুঝতে হল
দিন থেকে রাত হল
রাত কেটে দিন এলো
বলতে চাইনি
তবু বিদায় বলতে হল
তুমি চলে গেলে
তাই একরাশ শুন্যতা রয়ে গেল।


১০.

তোমার ভেতর কে আছে হায়
লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদে !
ধরতে গেলেই পালিয়ে বেড়ায়,
আকাশ হারায় চাঁদে !

১১.

ভাবব না ভাবব না করেও মনে আসে কত ভাবনা
সামনে এগোই এক পা পেছনে টেনে ধর তুমি

রেখে যেতে চাই মনের কোনেতে কিছু
হতে হতেও কেন জানি হলো না
নুয়ে পড়ে আছে এলোচুল কিছু
মাথার পরেতে যত যাতনা

ভাবব না ভাবব না করেও মনে আসে যত ভাবনা
সামনে যে এগোতে পারি না, পেছনে টেনে ধরা আর না আর না।

১২.

বড্ড ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে
বড্ড ইচ্ছে করে তোমায় সাথে নিয়ে আকাশটাকে ছুঁতে................

জীবনের বেশিরভাগ ইচ্ছেগুলো অপূর্ণই থেকে যায়
স্বপ্নগুলো শুধু ডানা মেলে মনের আকাশে,
অল্প কিছু চাওয়া আর বেশিরভাগ না পাওয়ার যন্ত্রনায় ঘেরা
আমাদের এই যাপিত জীবন।

তবু আমি স্বপ্ন দেখি প্রতিদিন
তোমাকে পাওয়ার
কিংবা যন্ত্রনা ভোগ করি প্রতিক্ষণ
তোমাকে পেয়ে হারাবার।


১৩.

কাছে থাক, মনে হয় আছ তুমি এই
দূরে গেলে মনে হয় কেন তুমি নেই?
পাশে থাক, কথা নাই একা একা আমি,
মনে মনে কথা বলি একটু না থামি।
বাড়ালে দু'হাত তুমি দেইনা ক ছুঁতে
নেই তুমি, হাহাকার ছোঁয়াটুকু পেতে।
ভালবাসি বলিনাকো প্রেম মনে যত
শুনবার তরে মন পোড়ে অবিরত।


১৪.

সময়ে অসময়ে
মনের রংতুলি চলে আনমনে
আকে কার ছবি মনের ক্যানভাসে
একটু একটু করে অবয়ব ফুটে ওঠে কার জানি
তুলির টান থেমে থাকে মাঝপথে
শত দ্বিধা মনের তুলির আচরনে
ছবি শেষ হয়ে ওঠে না কভু
অন্যভুবনে তোমার রূপ যে দেখা হয়নি
দুচোখ ভরে
শুধু অবয়বটুকু রয়ে যায়
মনের পারদবিহীন আরশিতে
অনেক কস্টে দখতে চাওয়া ওই মুখ
মনের দৃষ্টিতে পরে না ধরা
ঝাপসা কাচের মত
ঝাপসা চোখ আর ঝাপসা একটু
অবয়ব মাত্র দেখি
থেমে থাকে মনের ক্যানভাসে আকা ছবি
অবয়ব হয়ে।


১৫.

সেদিনের সেই ছোট্ট বিকেল বেলা
দেখতে দেখতে নেমে এলো সন্ধ্যা
তুমি আর আমি মুখোমুখি
চেয়েছিলেম চোখাচোখি
নীরবে বলেছিলে মনের কথাগুলি সকলি
না বলা সেই কথামালাগুলি
শুধু হাতে হাত রেখে
আর চোখে চোখ চেয়ে.........


১৬.

একলা আমি বাহির হলাম
তাহার অভিসারে
সাথে সাথে কে চলে মোর
নীরব অন্ধকারে।

ছাড়তে চাই যে অনেক করে
ঘুড়ে চলে যাই দূরে
মনে করি আপদ গেছে
মন গেছে তারে ভুলে।

কিন্তু শুধু চোখ বুজলেই
আবার দেখি তারে
হ্রদয় যতই বন্ধ করি
ফিরে আসে সে ঘরে ।


১৭.

পুড়ছে হ্রদয় অনলে
দাউ দাউ জ্বলছে আগুন হয়ে
ভালোবাসাটুকু সামলে ধরে


১৮.

মন নিয়ে খেল না
মনে তুমি আছ .................................



১৯.

জীবনের বৃত্তটা বোধহয় পূর্ণ হতে চলেছে।
অনেক অনেক কাল আগের সেই হারানো মানুষগুলো ফিরে আসছে জীবনে আবার, যাদের স্মতিগূলোও হারিয়ে গিয়েছিল কালের আবর্তে মনের পর্দা থেকে।

একদিকে তাদের ফিরে পাওয়ার আনন্দ আবার আরেকদিকে ভাংগাচোরা বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে যাওয়া মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে কেমন যেন অসহায় বোধ করি। আয়নায় এখন নিজের দিকে তাকাতেও ভয় হয়। কি জানি যদি সামনে দেখা মানুষগুলোর প্রতিবিম্বই দেখি আয়নায়?

এটাই কি জীবনের আসল সত্যি?


২০.

হয়তো তোমায় হারিয়ে দিয়েছি
নয় বা গিয়েছি হেরে
সময়ের কথা সময় বলে দেবে
কে কাকে গিয়েছিলেম ছেড়ে।


২১.

মনের ভেলায় কিছু রঙ ভাসে
হ্রদয়ে দোলা দেয় কিছু ভাবনা
অবাক চেয়ে থাকি আঁখিপানে তার
তারে কিছু কইতে যে মন চায়
কিছু কথা কবিতা হয়ে গুনগুনায়
যখন আঁখিতে আঁখি হারায়।


২২.

একটা পুরো জীবন কেটে যায় প্রতিক্ষায়
খুজে ফিরে আঁখি সারাক্ষণ
শুধু একজন মানুষেরই পথ চায়
জীবনে শুধু একজন মানুষের
মূল্য বোঝার মত একটা শুদ্ধ মন
এক জীবনে, আদৌ কি খুজে পায়?

২৩.

আবার উড়ে চলা কিছু পথ
কিছু পাহাড়ের গা বেয়ে
নীল নীলিমার কোল ছুয়ে
আকাশেতে ডানা মেলা
আবার উড়ে চলা দিগন্তের পানে।

ক্লান্ত জীবন
ক্লান্ত সময়
তবুও ডানা মেলতে হয়
আকাশের গায়
বেচে থাকার তাগিদে
কিংবা নতুনের সন্ধানে
অথবা তোমায় খুঁজে ফিরে।


২৪.


পাহাড়ের কোল ঘেসে পাহাড়
সাড়ি সাড়ি পাথরের দেয়াল
দেখি আর মনে মনে ভাবি
হ্রদয়টা কেন যে পাথরে গড়া হল না!
তাহলে তো আর এলোমেলো ভাবনাগুলি
মনে এসে ঊকি দিত না,
তোমায় বার বার মনে করে
তোমাতে হ্রদয় হারাতো না।


২৫.


মাদল বাজছে পাহাড়ে
পাহাড় ডাকছে আমারে
দ্রিমিত দ্রিমিত পাহাড়ি মাদল
মাদকতা ছড়ায় মনে প্রানে।

পাহাড় ডাকছে আমারে
যেতে হবে দ্রিমিতার কাছে
মহুয়ার দোচোয়ানি
নেশা জাগায় প্রানে।

মাদল বাজছে পাহাড়ে
যেতে হবে আমারে।


২৬.


আয়নাতে নিজেকে খুজে
মনে মনে কি জানি ভাবে
আরশিতে ফুটে ওঠে প্রতিচ্ছবি তার
সে যে এক আয়নাকন্যার মুখ
একটু কি করে আছে ভার?


২৭.


সব সময় মনে একটা ভায় কাজ করে
কি জানি কি ভুল করে ফেলি
আগের কাজ গুলির দিকে নজর দিতে চেস্টা করি
প্রতিনিয়ত খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে চেস্টা করি
আর নিজেকে ছিড়ে খুড়ে রক্তাক্ত করি
তবুও ভুলগুলি সব এক এক করে ভেসে ওঠে চোখের সামনে
শুধু মনকে পীড়া দিতে।

কখনো কি মনকে ক্ষমা করতে পারব
কৃত সব অন্যায়গুলিকে কি শুধরাতে পারব?

বড্ড ভাবনা হয় কেন জানি আজকাল
যদি না পারি
যদি না পেরেই চলে যেতে হয়
তবে আমার ভুলগুলোকে কে শুধরে নিবে?


২৮.


একদিন তোমার জন্য
শীতল হাওয়ায় নৌকা বাওয়া
একদিন তোমায় নিয়ে
নীল দরিয়ায় হারিয়ে যাওয়া।
একদিন তোমার জন্য
অপেক্ষারই কথা বলা
আজো শুধু তোমার জন্যই
একা একা পথ চলা।

২৯.

নীল বেদনা পিছু ফেলে
নীল আকাশের নীলে ভেসে
নীল সাগর সব পাড়ি দিয়ে
নীল জ্যোৎস্না ফিকে করে
দয়িতা, তুমি আমার হবে।


৩০.

বলাকার ডানায় গা ছুয়ে দিয়ে
নীল পরী ভেসে চলে নীলাকাশের পানে
নীল সাগরের পাড় ঘেসে ঘেসে
সবুজ বনরাশি হাতছানি ডাকে
চোখে তার মায়াজাল
ওই দূর তারা দেশের স্বপ্নঘেরা হাতছানি
হাতখানি বাড়িয়ে আছে ধ্রুবতারার পানে
স্বপ্ন ধরবে বলে হাতে।


৩১.

পৃথিবীর এই আজব নাটক পাড়ায়
মঞ্চস্থ হচ্ছে কতই না নাটক প্রতিদিন
কত ভালোবাসাবাসি, কত মাখামাখি দুজনে দুজনায়
কতইনা চিঠি লিখা হয় প্রতিদিন
আনপনের কালিতে বা মনে মনে
ভালোবেসে নীল খামে করে
কত চিঠি পৌছে প্রাপকের কাছে
কত চিঠি রয়ে যায় পড়ে
পোস্টঅফিসের কোন এক নির্জন কোনে
অবহেলায়
ঠিকানাবিহীন ঠিকানায় লেখা এমনই একটি চিঠি পাঠানোর খায়েশ
তোমার কাছে আমার অনেক দিনের

দিবা নিশি অপেক্ষায় থাকি
যদি কোনদিন হঠাৎ একদিন ভুল করে পৌছে যায়
আমার চিঠিটি যথাযথ প্রাপকের কাছে .........


৩২.

পলি পরে গেছে জীবন নদীতে
লিলুয়া বাতাস থেমে গেছে কবে থেকে

আমি আজো অপেক্ষায় কারো পথ চেয়ে
হয়ত তার ফিরে আসা কভু হবে
মেঘগুলো দূরে সরে যাবে
দয়িতা তুমি আমার হবে

পলি পরে গেছে জীবন নদীতে
লিলুয়া বাতাস থেমে গেছে কবে থেকে


৩৩.

সবাই একদিন মাটি হব
মাটিতে সৃষ্টি মাটিতে বিলীন............

৩৪.

মনের ভেতর কুয়াশার মেঘগুলি এত ঘন কেন
কিছুতেই সিগারেটের ধোঁয়ার সাথে সাথে সাথে ওগুলো উড়িয়ে দিতে পারছি না।

৩৫.

আজ আমার লাশের শবচ্ছেদ হবে
আমারই হাতে নির্মম যাতনায়
বের করে নিতে হবে ষড়রিপু সকলি
হ্রদয় থেকে ধুয়ে মুছে

৩৬.

বিজয় আমার
দাঁত বের করা লোলুপ হায়েনার
কালো কুৎসিত মন,
বিজয় আমার
আশি বছরের থুথ্থুরী বুড়ির
চিমশানো দুটি স্তন।

বিজয় আমার
প্রি ম্যাচিওরড সন্তানের
আকালে পৃথিবির ডাক,
বিজয় আমার
কুমারী মাতার
অকাল গর্ভপাত;
আর সাথে নিয়ে কিছু
অমানুষ, হায়েনার
দুষিত রক্তস্রাব।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন