শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৪

দেয়া নেয়ার পালা

দেয়া নেয়ার পালা
- যাযাবর জীবন

যতক্ষণ দেবে
তুমি ততক্ষণ মহান
ধরিত্রীর বুকে তুমিই ভগবান;
যখনি তোমার হাত একটু টান
তুমি মহা বদ লোক
হাড় কৃপণ, ধুরন্ধর
মহা শয়তান।

মানুষের অনুভবগুলো ছুঁয়ে যায় আমায়
ভালো থেকে খারাপ নিত্য হতে হতে
পাথর হৃদয়ে আঁচর কাটে হয়তো
দাগ বসে না তাতে।

তুমি তো আছই দেয়ার তরে ভাই
আমার নেয়ার কোন শেষ নাই
তোমার ভাণ্ডার শূন্য
আমি উবে যাই।

বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৪

দীনতা



দীনতা
- যাযাবর জীবন


মাঝে মাঝে কুয়াশায় পথ হাঁটি
পথটাকে রাজপথ মনে হয়
ভিক্ষুকগুলো শীতে কুঁকড়ে থাকে
নিজেকে 'রাজা' মনে হয়
শীতবস্ত্রে ঢাকা আপাদমস্তক;
পথের
শীতের
না ভিক্ষুকদের
তা জানি না.........


মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৪

দিবাস্বপ্ন


দিবাস্বপ্ন
- যাযাবর জীবন

বিপরীত চরিত্রের মানুষগুলোকে কেন জানি
বড্ড ভয় হয়,
তাই তো সৎ মানুষগুলোকে এড়িয়ে চলি খুব সযতনে;
যেন সিনেমার চরিত্র থেকে উঠে আসা
একটি দুটি সৎ মানুষ,
দেখা হয়ে যায় হঠাৎ করেই
খুব মাঝে মাঝে
পথ চলতে;
চমকে উঠে দূরে সরে যাই ঠিক তখনই
মনের অজান্তে,
ভয়ে কেঁপে ওঠে অন্তরাত্মা
তাঁদের সাথে দেখা হলে;
কি জানি কখন
ঘুমন্ত বিবেক জেগে ওঠে কথা বলে
নিজের সাথে,
চাবুকের কষাঘাতে।

যদি খুব অলৌকিক ভাবে
নিজেরও সৎ মানুষ হতে ইচ্ছে জাগে?
আটপৌরে সরল সোজা ঐ মানুষগুলোর সংস্পর্শে এসে;
আমার এত পাপের কষ্টার্জিত ধনরাশি;
কে খাবে?

কিংবা যদি তাঁদের সহচার্যে এসে
পাপার্জিত সম্পদের পাহাড়
বিলিয়ে দিতে ইচ্ছে করে
খুব হঠাৎ করে;
তবে কি হবে?
আরে, আরে!
দিবাস্বপ্ন দেখারওতো একটা সীমা থাকে।


সোমবার, ২৭ জানুয়ারী, ২০১৪

নৈঃশব্দ্যের শব্দ

নৈঃশব্দ্যের শব্দ
- যাযাবর জীবন

বীজ থেকে কুঁড়ি
কুঁড়ি থেকে গাছ
সময় গড়ায়
গাছ বড় হয়
কেও জানে না
বড্ড নিঃশব্দে;
সময় গড়ায়
ঝড় ঝঞ্ঝায়
কিংবা কুঠার আঘাত
ভেঙ্গে পড়ে গাছ
চারিদিক জানান দিয়ে
ভাঙনের শব্দে।

গড়ে ওঠে চারিদিক
বেড়ে ওঠে চারিপাশ
খুব নিঃশব্দে,
ভেঙ্গে পড়ে চারিদিক
জানান দিয়ে চারিপাশ
কানে তালা শব্দে।

নৈঃশব্দ্যের শব্দ
কান পেতে শোনে ক জনা!
নৈঃশব্দ্যের শব্দ
মন দিয়ে বোঝে ক জনা!

গাত্রবর্ণ


গাত্রবর্ণ
- যাযাবর জীবন

গিরগিটি রঙ বদলায় ক্ষণে ক্ষণে
মনের রঙের সাথে রঙ মিলিয়ে
সুখে সাদা, দুঃখে কালো
আনন্দে সবুজ, বেদনায় নীল
রাগে লাল, ঘৃণায় বেগুনী
আরো কত কি?
মন বদলের সাথে সাথে রঙ বদল
চারিপাশে খোলা চোখে নিত্যই দেখি।

মানুষ হয়েও আমি
রঙ বদলানো শিখিনি
সেই জন্ম থেকে আজ অবধি
না দেহের না মনের
গায়ের চামড়ার ওপর আজো
অন্য কোন রঙ বসেনি;
লোকে বলে রঙ একটু মজা
আমি বলি পাতিলের পোড়া তলা,
দিনে কিংবা রাতে
সূর্যে আর ছায়ায়
অমাবস্যায় বা পূর্ণিমায়
কালো, সে যে কালোই থাকে,
প্রখর সূর্যতাপ পুড়িয়ে পুড়িয়ে
তাই গাত্রবর্ণ বদলাতে পারে নি।

লোকে বলে দেহ বর্ণের মত
আমার মনটাও নাকি অমাবস্যার কালো
আমি বলি, তাই ভালোরে তাই ভালো
রিপুর আছর তো তাতে পড়ে নি!
লোভে কিংবা পাপে
তাইতো আজো মনের রঙ বদলেনি।

সময়ের সাথে সাথে ভিতর আর বাইরে
গিরগিটির খোলস যে পড়ি নি।

শনিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৪

জীবন

জীবন
- যাযাবর জীবন

চলে যাব আমি
চলে যাবে তুমি
চলে যাবে তারা,
সবাই একে একে;
পড়ে রইবে স্মৃতিগুলো
ভেসে বেড়াবে প্রিয়জনের মনোরথে;
আমার ঐ কালো ফ্রেমের চশমাটা পড়ে রইবে
হয়তো টেবিলের ওপর
এক কোণে নিথর
খুব অবহেলায়,
আর কখনো দেখবে না আমার চোখ
তাকিয়ে ঐ ফ্রেমে;
তোমার ঐ দামী ঘড়িখানা
পড়ে রইবে আলমিরার কোণে
একাকী অবহেলায়,
আর কোনদিন শোভা বাড়াবে না সে
তোমার দুটি হাতে
লেপ্টে জড়িয়ে থেকে;
ধুলো ময়লার পড়ত জমবে
চশমায় কিংবা ঘড়ির কাঁচে
ধুলোর পড়ত জমবে প্রিয়জনের স্মৃতির কাঁচে;
তারপর সময় এগিয়ে যাবে
অন্তহীন পথে
ধুলোর পড়ত পুরু হতে হতে
ব্যবহারের অযোগ্য
নিত্য ব্যবহার্য চশমা কিংবা ঘড়ি
তারপর কোন একদিন ঝেটিয়ে বিদায়
স্থান ময়লার ঝুরি;
স্মৃতির কাঁচে ধুলো পুরো হয়
স্মৃতির আয়নায় নতুন স্মৃতি জমা হয়;
একটা সময় পার হয়ে গেলে
কে কাকে মনে রাখে?
নিষ্ঠুর পৃথিবীতে।













বুধবার, ২২ জানুয়ারী, ২০১৪

স্মৃতি

স্মৃতি
- যাযাবর জীবন

পাহাড়ের কোল ঘেঁষা পাহাড় সারি
দাঁড়িয়ে রয়,
জড়িয়ে ধরে কথা কয়;
সাগরের অবিরত ঢেউয়ের রাশি
আছড়ে পড়ে,
গায়ে গা লাগিয়ে রয়,
সুখে দুঃখে
পাশে থেকে
একে অন্যের ওপরে এসে
গা ঘেঁষে গায়ে মিশে
অবলীলায় ভালোবেসে;
দুঃখের ঢেউয়ে আছড়ে পড়া সুখ সুখ অনুভূতি
কিংবা সুখের পাহাড়ে রাঙ্গানো বিষ বিষ দুঃখ-তুলি
ছবি আঁকে
আঁচড়ায়
কামড়ে ধরে
মনে মনে,
পাহাড় সম স্মৃতিগুলো
রয়ে যায় খুব গোপনে
অঙ্গাঙ্গী জড়িয়ে
তোর আর আমার মনের ঘরে
তপ্ত ঘৃণায় পুড়ে পুড়ে
কিংবা ভালোবেসে মনে করে।

রবিবার, ১২ জানুয়ারী, ২০১৪

পার্থক্য


পার্থক্য
- যাযাবর জীবন

তালা লাগা শব্দে স্তব্ধ কান
চারিদিক জুড়ে চাই চাই চাই
কাছের মানুষ কেন বোঝে না যে
আমার আর অর্থের যোগান নাই;
নাই নাই নাই চারিদিকে রব
তাদের মনের তৃপ্তি নাই
অর্থের কুমীর তারা পকেট ভারী নিজের
তবু আমারটাই যে চাই।

গাড়ির ইঞ্জিন মসৃণ চলে
তেলের যোগান যতক্ষণ আছে রে ভাই
সম্পর্কের ইঞ্জিন ভাঙ্গা পিস্টন
যখনই অর্থের যোগান নাই;
অর্থই অনর্থের মূল তা জানি ভালো
তবু সম্পর্ক টিকাতে চাই
এখনো আমি মানুষ আর পশুতে
পার্থক্য খুঁজে বেড়াই।

শনিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০১৪

পথ


পথ
- যাযাবর জীবন

শুরুতে হাঁটি হাঁটি পা পা
পথের কিংবা জীবনের;
পথ চলার আনন্দে উচ্ছল
নতুন পথ খুঁজে নিতে
উড়ে চলা মন অদম্য চঞ্চল
নতুন পথ গড়ার নেশায়
পথ চলা অবিচল
জীবনের জয়গান
যৌবনের দৃপ্ত চলাচল।

জীবন রথের গাড়ি
সময়কে দিয়ে যায় পাড়ি
দৃশ্যমান পথের সমাপ্তি
খুব সহসাই
পথের কিংবা জীবনের;
বড্ড শ্রান্ত, বড্ড বেশী ক্লান্ত
টেনে নিতে পা দুটো
শেষ পথটুকুতে এসে
কিংবা জীবনের সায়াহ্নে।

চলাই গতি গতিই জীবন
চলার সমাপ্তি জীবনের সমাপন।



বৃহস্পতিবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৪

হলদেটে সময়


হলদেটে সময়
-যাযাবর জীবন

চারিদিক কেমন যেন
দমবন্ধ এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ
বড্ড অভাব যেন আজকাল
একটু বিশুদ্ধ বাতাসের,
প্রাকৃতিক, রাজনৈতিক
কিংবা খুব নিজস্ব আকাশে বাতাসে
একটু নির্মল অক্সিজেন নিতে;
কেমন যেন ওলোটপালট হয়ে আছে চারিদিক
অফিস আদালত, দৈনন্দিন কার্যাবলী
খেটে খাওয়া মজুরের এ দেশ
কিংবা, কি জানি? হয়তো বা রাজনৈতিক,
অথবা হয় সমস্টিক না হয় ব্যক্তিক।

এগুলোর কোন কিছুই মানে না
ক্ষুধা নামক লোভী কুৎসিত ঐ দানবটা,
পেটের ভেতর;
লকলকে জিভ বের করে ছোবল মারে
ক্ষণেক ক্ষণ পরে পরে
খাদ্যের আশায়
নাড়িভুঁড়ি মোচড়ায়
অশরীরী কি যেন একটা কামড়ায়
বুক চেরা আর্তনাদে খাদ্য চায়
পেটের ভেতরের ছুঁচোগুলো
গ্যাস্ট্রিক বিদ্রোহে;
অন্যদিকে সময় বয়ে চলে
রাজনীতি ধেয়ে চলে
ক্ষুৎ পিপাসার আর্তনাদে জীবন চলে গড়িয়ে;
রাজনীতিবিদ গণ যার যার খেলা খেলে
বড় বড় নেতাগণ রাজনীতি চর্চা করে
মুখো-ভাব নির্বিকার
করে চলেন তাঁরা দেশোদ্ধার;
পায়ের তলায় "জন" নামের "গন"দের মাড়িয়ে
কেমন যেন এক অশুদ্ধ হলদেটে সময়ে।