রবিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৮

ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং



ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং
- যাযাবর জীবন



সেদিন ছিল অলস দুপুর
আমি বিছানায় আড়মোড়ে
ভাতঘুমে একটু ঝিমুনি বোধহয়
ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং
এই যাহ! ঘুমের বারোটা
বিরক্তিতে ক্রাডল টা উঠিয়ে চুপ করে ছিলাম কতক্ষণ জানি না
বাতাস কেটে ভেসে আসলো হালকা গলায় হ্যালোওওও
আহহ!! জলতরঙ্গ ভেসে এলো
ঘুম উধাও হলো;

আচ্ছা, এটা কি .....................???

কেও কিছু জানতে চাইছিল
আমার কানে গান বাজছিল
সেই প্রথম তোতে হারানো
শব্দের জলতরঙ্গে...............

এরপর দেখা হলো
কথা হলো
প্রেম হলো
দুজন দুজনে ভাসলাম
দুজন দুজনে ডুবলাম
তারপর রাত এলো

এরপর নদীতে কত জল গড়িয়েছে
আকাশে কত মেঘ ছড়িয়েছে
বন কতবার পাতা ঝরে ঝরে সবুজ হয়েছে
কতবার অতিথি পাখিরা উড়ে গেছে শীতের আকাশ হয়ে
কত কত জোয়ার ভাটা
কত কত অমাবস্যা পূর্ণিমা
সূর্যোদয় সূর্যাস্ত কত কত

সূর্য একটিই, চোখ ধাঁধায়
চাঁদ একটিই, চাঁদনি ঝরায়
তুই একজনই, আমায় কাঁদায়
প্রতি অমাবস্যা ও পূর্ণিমায়

কোথায় যেন রিং বাজছে
ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং
আমি দিনের বেলায় চমকে উঠি
রাতঘুমে উঠে বসি
ঘুম আর জাগরণে মনের মাঝে বাজতে থাকে টেলিফোন
ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং .....................

দিন মাস বছর পার হয়ে যুগ যুগ
আজো তোর জলতরঙ্গ শোনার জন্য কান ব্যাকুল।





জারজ



জারজ
- যাযাবর জীবন


সঙ্গম মানেই স্বামী-স্ত্রী
একান্তে গোপন,
পশুতে রমণ
কে দেখলো আর কে দেখলো না
কি যায় আসে?
আজকাল কিছু মানুষ যেন পশু হয়ে উঠছে;

মানুষের নানা রিপু
পশুর শুধুই কাম,
স্বামী-স্ত্রীর প্রেম
বংশবৃদ্ধি সবার;

জারজ হয় না পশুর সন্তান।




দূর থেকে ভালোবাসা


দূর থেকে ভালোবাসা
- যাযাবর জীবন


ঐ দূর থেকে ভালোবাস, এই তো বেশ ভালো
যতবার কাছে আসিস ততবার রক্তাক্ত,
আমার সারা গায়ে কাঁটা কাঁটা, গিরগিটী রঙ মাখা
কাঁটা বাছতে বাছতে তুই খামোখা বিরক্ত;

দূর থেকে ভালোবাসা
এই ভালো বেশ ভালো
কেন রে কাছে আসিস?
হতে বারবার রক্তাক্ত।

চাওয়া পাওয়ার ফারাক


চাওয়া পাওয়ার ফারাক
- যাযাবর জীবন


মনে কত রকম স্বপ্নই না আশা বাঁধে
আর নির্ঘুম রাত কাঁদে চাঁদের টর্চ জ্বেলে

আমি বৃষ্টি হতে চাই তুই মেঘ হলে
ঢেউ হব তুই সাগর হলে
নীল হই তুই আকাশ হলে
রাত তো হয়েই থাকি চাঁদনি না এলে

আদতে কিছুই হওয়া হয় না আমার
শুধুশুধুই কলম ভেজায় কাগজ, কান্না ছলে।




অজানায় ভাসা ডোবা


অজানায় ভাসা ডোবা
- যাযাবর জীবন


আ তে আমি
আ তে আকাশ
তুই চাঁদনি, আমার আকাশের চাঁদ;
কিছু নীরবতা
কিছু কলরব
দিনভর ভেসে চলা, রাতভর প্রেমালাপ;

ঢেউ ছাড়া নদী
আর চাঁদনি বিহীন চাঁদ
তুই ছাড়া আমি
প্রেমহীন প্রেমালাপ

ত তে তুই
ত তে তৃষ্ণা
ঠোঁটটা বড্ড শুকনো লাগে আজকাল;
কিছু চুমু
কিছু আদর
ঠোঁটে ঠোঁটে ডুব, স্বপ্ন দেখি না বহুকাল;

চল ভাসি নদীজলে
চল ডুবি বেদনাতে
বান ডাকি ভালোবেসে
ডুবে ভেসে মিলেমিশে, একসাথে একসাথে;

চল ডুবি চাঁদরাতে
ঠোঁটে ঠোঁটে দুজনাতে
আয় প্রেম করি চাঁদের ছাঁদে
তুই, আমি, চাঁদ আর চাঁদনি, মিলেমিশে একসাথে।



মন চোর


মন চোর
- যাযাবর জীবন


টুপটাপ কুয়াশা টুপটাপ ভোর
মন পোড়ে মন ঘরে তুই মন চোর


একসাথে


একসাথে
- যাযাবর জীবন


আমি তো বলি নি তোকে চুমু খাব
আমি বলি নি তোকে ভালোবাসি;
শুধু ডুব দিতে চেয়েছি তোর ভেতর,
জলকুমারী;

বড্ড ভয় তোর মনে
যদি ভালোবেসে ফেলিস
তাই না রে?

আরে গাছের সাথে কি আর ভালোবাসা হয়?
তোর তো এখন বয়ে যাবার সময়;

দেখ, চাঁদ উঠেছে
দেখ, জল বইছে নদীতে
চল ডুবি
একসাথে তুই আর আমি,
জলকুমারী।


অজ্ঞাতবাসে


অজ্ঞাতবাসে
- যাযাবর জীবন


সেদিন অজ্ঞাতবাসের বিরতি শেষে
এগিয়ে গিয়েছিলেম তোর দিকে
তারপর?
তারপর কমলা রোদ
তারপর সূর্যাস্ত,
মনে নেই তুই ডুকরে উঠেছিলি কিনা আমায় দেখে
তবে তোর আনত চোখে ভালোবাসা ছিলো না কোথাও,
স্তম্ভিত হয়েছিলাম আমি
তারপর একরাশ অভিমান বুকে বিবর্ণ হয়েছিলাম নিজেতে নিজে
ব্যস, এইটুকু মনে আছে;

তারপর?
আবার আমি অজ্ঞাতবাসে
হলুদ বিকেল
কমলা রোদ এখনো খেলা করে
কারো না কারো মনঘরে
আমি কালো হয়ে গিয়েছি ভালোবেসে
হারিয়ে নিয়েছি নিজেকে অসীম অজ্ঞাতবাসে;

সোনালী রোদে এখনো কেও খোঁজে কি আমায়?
মাঝে মাঝে বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।




গাত্রবর্ণ


গাত্রবর্ণ
- যাযাবর জীবন


সকাল রোদে সবারই চোখ খোলে
মন খোলে ক'জনার?
রাতের কালো'তো সবার চোখেই
কারো মন অন্ধকার;

আমরা চামড়ার রঙ দেখি চামড়ার চোখে
সাদায় মন ছুটে
কালোয় অরুচি
দর্পণে নিজেকে কজন দেখি?

আয়না তো কাচেরই হয়, ভঙ্গুর সব সময়
মনের আয়নায় সৌন্দর্য দেখেছ কি?
সাদায় মন যাচে মনের আয়নায়
গাত্রবর্ণে কি এসে যায়।



রোদ পোড়া গাছ


রোদ পোড়া গাছ
- যাযাবর জীবন


এক-সাগর অজ্ঞাতবাসের পরে একদিন আবার দেখা হবে আমাদের, সাগর পারে
সেই প্রাগৈতিহাসিক অতীতের মত;

সেদিন তুই ঝিনুক কুড়চ্ছিলি উচ্ছল, আমি উদাসীন বসে
তারপর এক দমকা হাওয়া
তোর চোখ আমার চোখ
তারপর কান্না
কেও ঢেউ গুনে না, সে তো শুধু বয়ে চলা
আর প্রহর-ঢেউ এ বয়ে যায় সময়;

আমি সেদিনও গাছ হয়ে ছিলাম উদাসীন
তোর পাখি জীবন উড়াল আকাশে
হয়তো এক আকাশ অজ্ঞাতবাসের পরে
একদিন আবার দেখা হবে আমাদের, দূরাদূর ভবিষ্যতে,
তুই সেই একই উড়ে চলা পাখি আকাশে
আমি তখনো একলা ঠায় বসে
গাছ হয়ে, সাগর পারে;

আমি কালো বলে মানা নেই তোর আলো হতে
আমি গাছ বলে বাঁধা ছিল না তোর উড়ে যেতে

উড়াল ডানার পাখিকে কে বাধতে পারে?
হয়তো ক্লান্ত ডানায় একদিন বসবি আবার আমার ডালে, উদাসী মনে
গাছ সবাইকেই ছায়া দেয়, রোদে পুড়ে।




মনের গণ্ডি



মনের গণ্ডি
- যাযাবর জীবন


মনের একটা গণ্ডি থাকে,
সকলেরই;

আমার গণ্ডিতে শুধুই তুই
ব্যাস, ব্যাসার্ধ, পরিধি জুড়ে
কেন্দ্রে ভালোবাসা;

যতক্ষণ সামনে তুই ততক্ষণই বর্ষাকাল
ভেজাতে জুড়ি নেই তোর
কখনো প্রেমে, কখনো চোখের জলে,
তবুও থাক, সামনে থাক, চোখের সামনে
ভালোবাসা কিংবা না বাসায় মাখামাখি হয়ে
গণ্ডির মাঝে, পরিধি জুড়ে;

যখনই তুই চোখের আড়াল
মরুভূমি বুকের চাতাল
তৃষ্ণার্ত শুষ্ক ঠোঁটে রাত ভিজে না
আমি শীতার্ত অন্ধকার;

আজ কি চাঁদ উঠেছে?
কুয়াশা ঝরাচ্ছে মাঘের রাত
অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছিস তুই পরিধির ওপারে
ভেতর কাঁপছে শীতে,
তুইহীনা নির্ঘুম রাত বড্ড অন্যরকম।





স্বপ্নের বিরতি


স্বপ্নের বিরতি
- যাযাবর জীবন


সূর্যটা সাগর ভেঙে উঠতে ঘুম ভেঙে যায় ভোরের
আমি রাত ঘুমিয়েছি তোর স্বপ্নে
সূর্য ডাকতেই জলপরী উড়ে গেছে স্বপ্ন থেকে
আকাশের ডাকে উঠেছে সূর্য
সাগরের ডাকে ঢেউ
সবার ডাকে আমার ছুটে ছুটে চলা
কোথায় আমার কেও?

দিন ডাকছে ডাকছে কাজ
পেট ক্ষুধা হতেই বাজে, নাচে ঢাক
স্বপ্ন কোথায় স্বপ্নিল ক্ষুধায়?
চল মন কাজে, স্বপ্ন থাক।


টাকার আমি



টাকার আমি
- যাযাবর জীবন


সাগরে এলেই মন কান্না
আকাশে সরু চাঁদে চাঁদনি
ঢেউ এর সাথে যুদ্ধরত ঢেউ
পানিতে ফসফরাসের জোনাকি,
সেই অনেক যুগ আগের কোন এক ভুল
এখনো অমাবস্যায় দেখি চাঁদনি
খুব মাঝে মাঝে দিনটাও অন্ধকার
আমি চিরকালের রাত্রি;

জানিস!
সেদিন মনে ভালোবাসা না এলে হয়তো আমি হতাম টাকার
আজ শুধুই তোর আর কবিতার।


মন মুখোশ



মন মুখোশ
- যাযাবর জীবন


মুখোস তো পড়াই থাকে মুখে
সেটা কোন সমস্যা নয়,
কিন্তু মন যখন মুখোশ!!

মাঝে মাঝে আয়নার আমাকে চিনতে বড্ড কষ্ট হয়
আমারই,
রোদ লাগুক
অভিমান নামুক
বৃষ্টি পরুক
কান্না ঝরুক
ঝড় আসুক
মন পুড়ুক
আমি মুখোস মুখে,
আনন্দ বেদনার অনুভূতিগুলো খুব সযতনে
মন মুখোশে;

আজ আমার আনন্দে হয়তো হাসবে কেও
আমি হাসতে দেখেছি তাদের, আমার কান্নায়
কাওকে চোখের সামনেই আর কাওকে আড়ালে,
মানুষের আহা উহু অনুভূতিতে জীবনের কি যায় আসে?
আমার সকল অনুভব আমারই, একান্তই নিজের,
মন মুখোশে।

জীবন বোধ এক একজনের এক এক রকম
আমারটা না হয় থাকুক আমার মন মুখোশে।





মোম পুড়া মন



মোম পুড়া মন
- যাযাবর জীবন


মোম না পুড়লে আলো কোথায়?
মন পুড়ে ভালোবাসায়;

অনেক পুড়েছিস তুই নিরাশায়
দিশাহারা হয়েছিস খুঁজে আমায়;

আমি প্রেমের নই, কান্নার
আমায় ছুঁতে গিয়ে তুই হারিয়েছিস বহুবার
এবার'তো থিতু হ মনঘুমে
শান্তি নেমে আসুক তোর চোখচুমে;

আমি ছাই হয়েছি বহু আগে
এখন শুধু অপেক্ষা ঘুমোবার।



রোদের খেলা



রোদের খেলা
- যাযাবর জীবন


রোদ খেলছে জানালায়
মনে তুই,
কত রকম খেলাই না খেলে মন
হাসি কান্নার,
সূর্য খেলে দিনের সাথে
জ্যোৎস্না খেলে রাতে
রঙের খেলা রঙের সাথে
মন খেলে তোতে,
খেলা খেলায় কোন একদিন খেলতে আসবে মৃত্যু
খুব হঠাতই জীবন ঘরে
সেদিন আর ভোর দেখা হবে না আমার
আজকের মত করে
অন্ধকার খেলবে সেদিন সাড়ে তিন হাত ঘরে।




ঘুমঘুম ভোর



ঘুমঘুম ভোর
- যাযাবর জীবন


ভোরে ঘুম ভাঙতেই চোখ ঝুল বারান্দায়
রোদ রঙ মাখা লালাভ সকাল
অনেক দূরে কোথায় জানি মন খারাপের একরাশ কুয়াশা
মনের চালে ঝরছে টুপটাপ
কাল রাত ছিল তোতে মন বন্ধ
সকাল রোদে নাকে তুই তুই গন্ধ,
রোদের ডানায় চল মন আকাশ
চল হারিয়ে যাই দিগন্ত নীলে আজ।



ধুসর রাত



ধুসর রাত
- যাযাবর জীবন


স্বপ্নহীন রাতগুলো মাঝে মাঝে ধুসর হতাশা ছড়িয়ে যায় কালোর ভেতর
জ্যোৎস্নাটাও কখনো ম্যাড়ম্যাড়ে হলদেটে শাড়ি পড়ে মন খারাপ করে
আমি অতীত খুঁড়ে চাঁদনি খুঁজি মনে সূর্যের টর্চ জ্বেলে
নাকে বুনো উদাসীনতার গন্ধ লাগে মন তুই হলে
অন্ধকার পিছলে নামে নারকেল পাতায়
হো হো ব্যাঙ্গ হাসে রাত, নির্ঘুম চোখের পাতায়
আমি স্বপ্নহীন হয়ে যাই তোকে স্বপ্ন দেখাব বলে
তুই ঘুমহীন চেয়ে থাকিস রাত ধুসর করে।




অর্ধ অনুভব



অর্ধ অনুভব
- যাযাবর জীবন


অর্ধেক তুই অর্ধেক আমি
অর্ধেক প্রেম অর্ধেক ঘৃণা
অর্ধেক রোদ অর্ধেক ছায়া
অর্ধেক রাগ অর্ধেক মায়া;

আমাদের অর্ধেক জীবন কেটে যায় দ্বিধাহ্নিত অর্ধ অনুভবে,
বাকী অর্ধেক মনে হাজারো জিজ্ঞাসায় ধুঁকে -
কি, কেন, কিভাবে?

ভালোবাসা কোলকাতা


ভালোবাসা কোলকাতা
- যাযাবর জীবন


কোলকাতা কোলকাতা
ভোরের কোলকাতা
শীতের কোলকাতা
রোদের কোলকাতা,
ভালোবাসি ভালোবাসি
বারবার ফিরে আসি
ভালোবাসি কোলকাতা
ভালোবাসি ভালোবাসি।

চাঁদের সকাল



চাঁদের সকাল
- যাযাবর জীবন


সকাল হয়েছে চাঁদের
সূর্যের এখন রাত
ভালোবাসা গোধূলিতে
অভিমানে রেখে হাত

শীতের লেগেছে সর্দি
গায়ে অনেক জ্বর
ভালোবাসা কাঁপছে ঠকঠক
অভিমান করেছে ভর

আমার প্রিয় বর্ষা
তুই হেমন্ত প্রেমী
ভালোবাসা ছিল তোর
ভুল আমারই

কুয়াশা ঝরছে টুপটাপ
মন খারাপ তোর
আমি গভীর রাত
কখনো হব না ভোর।


ক্ষুধা মন



ক্ষুধা মন
- যাযাবর জীবন


সন্ধ্যে নেমেছে, ঘরে ফিরছে পাখিরা
আমি নতুন দিগন্তে
আমার ফেরা হয় না কোথাও
পিঠে কাকডানা লাগালেই কি পাখি হওয়া যায়?

জাঁকিয়ে শীত নেমেছে হলুদ শর্ষে ক্ষেতে
আমার পথচলা সর্ষেদানা পায়ে
সকাল সন্ধ্যা পেটের টানে
ফুলের সুবাসে আমার কি আসে যায়?

আমি সন্ধ্যা আর রাতের বিষণ্ণতায় আটকে থাকি
পেছনের অতীতের ছোবল, সামনে রাত
আমি এগিয়ে চলেছি অন্ধকারে
পেট চেনে ক্ষুধা, মন কোথায়?


ভালোবাসার বিন্দু ও বৃত্ত



ভালোবাসার বিন্দু ও বৃত্ত
- যাযাবর জীবন


তুই দিনের
আমি রাতের
ব্যবধান সূর্যের,
তুই জ্যোৎস্নার
আমি অমাবস্যার
ব্যবধান চাঁদের,

যদি কখনো তুই সকালের হতে চাস
আমি কিভাবে জানি হয়ে যাই বিকেলের
মাঝে ব্যবধান রয়েই যায় পুরো একটা দুপুর হয়ে;

স্বীয় অবস্থানে আমরা শুধু এপাশ ওপাশ করি
যার যার কেন্দ্রে বসে
সময় আগায়, পথ আগায় না
অভিমান দৌড়োয় ভালোবাসার কেন্দ্রে বসে
বিন্দু সম্পূরক হয় বিন্দুতে
বৃত্ত পূরণ হয় না,
তোর
আমার
কিংবা ভালোবাসার।


ভালোবাসা ও না বাসার সময়



ভালোবাসা ও না বাসার সময়
- যাযাবর জীবন


ছুঁয়ে দিস না ওখানে
হ্যাঁ, ওখানেই
বুকের বাঁ পাশটায়;

ওখানে এক টুকরা মাংসপিণ্ডের বাস
ওখানে রক্তে আলোড়ন ওঠে
তুই ধুকপুক বুঝিস বুকে কান লাগিয়ে,
হ্যাঁ, ওটাই
ওটা আমার হৃদয়,
তোর একটু স্পর্শ ওখানে আলোড়ন হয়
তোর বোঝার কথা নয়
আরে! অস্তিত্ব আলোড়িত না হলে কি ভালোবাসা হয়?

কেও শুধুই ভালোবাসে
আর কেও আলোড়িত হয়
ভালোবাসা ও না বাসার সকল সময়।


দৌড়



দৌড়
- যাযাবর জীবন


সহজলভ্যতা কোথায়?
ওহ্ মনে পড়েছে, পড়েছিলাম এক সময় শব্দকোষে,
সে অনেক আগেকার কথা
সেদিন খুব হেসেছিলাম সহজলভ্যতার মানে জেনে;

ক্ষুধা জানে খাদ্যের মূল্য
শরীর কর্মের,
সম্পর্ক? সে তো পুরোটাই স্বার্থের;

আমার জীবন হাঁটা বাস্তবতায়
কারো কারো দেখি শুধুই বিলাস,
খাদ্য বিলাস
বস্র বিলাস
স্বপ্ন বিলাস
সুখ বিলাস
দুঃখ বিলাস
হয়েছে বিলাস
হয় নি বিলাস
পেয়েছি বিলাস
পাই নি বিলাস
জীবনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিলাস,
সহজলভ্যতা বিলাসের
অফুরন্ত অবসরে
বড্ড সহজলভ্যতা বিলাসের
কর্মহীন জীবনে;

আমার ঘোড়দৌড় খাদ্যাহ্নেষণে।



শব্দ দূষণ



শব্দ দূষণ
- যাযাবর জীবন


মুখ দিয়ে কত কথাই না বলে লোকে
ক্রমাগত ক্রমাগত,
আমার কানে শব্দ গুঞ্জন অবিরত অবিরত
আদতে শুনি কতটুকু? মনপেতে;

কত রকম শব্দই না আছে পৃথিবীতে!!!
আমি ততটুকুই শুনি
ঠিক যতটুকু নিতে পারে মন,
বাকিটা বাতাসে উড়ুক
রৌদ্রে পুড়ুক
ভেসে যাক জলে
কিংবা কুয়াশা হয়ে ঝরে পরুক শীতের রাতে;
আমার কি যায় আসে?

কারো বাচালতা
আমার কানে অহেতুক গুঞ্জন
কথার গ্রহণযোগ্যতা ততটুকুই হওয়া উচিত
যতটুকু সামাজিক শোভন,

প্রেম আহ্বান?
আমি মনবধির, বড্ড সেকেলে;
আমার কানে শব্দ দূষণ।


ভালোবাসার ওম



ভালোবাসার ওম
- যাযাবর জীবন


খুব শীত পরেছে বুঝি?
স্যুয়েটারটা কেন জড়িয়ে রেখেছে তোকে?
হিংসায় পুড়ছি আমি
ওম পাচ্ছে ভালোবাসা;

রাত ভিজছে কুয়াশায়
শুষ্ক ঠোঁট অপেক্ষায়
তুই ছাড়া বড্ড ঠোঁট ফাটে
শীত গ্রীষ্ম বর্ষায়।



বুলির বলিহারি



বুলির বলিহারি
- যাযাবর জীবন


বুলির বলিহারি কারো গালভরা
কর্মে আমার অন্ন অন্বেষণ
ভার্চুয়াল কারো নিত্য জীবন
আমার কেবলই অবসর ক্ষেপণ
কাজের ফাঁকে কখনো একটু ভার্চুয়াল ঢু
আর টুকিটাকি হাবিজাবি মন কথন।



আমি বিহনে রাত



আমি বিহনে রাত
- যাযাবর জীবন


আমাদের দেখা না হলেই ভালো হতো,

কত ব্যালকনিতেই তো রোদ হেলান দিয়ে থাকে
অবহেলায় বিষণ্ণ হয়ে,
প্রেমিকার মন কেমন কেমন করে বিকেল রোদে
প্রেমিক কবিতা লিখে বিষণ্ণ গোধূলিতে;

একদিন আমার আকাশে সূর্য ডুবে যাবে,
একদিন তুই ঠিক ভালোবাসবি আমায়
কবিতার মত করে,
সেদিন বোকার মত কাঁদিস না কিন্তু আমি বিহনে রাত হয়ে।






জবর শীত তুইহীনা



জবর শীত তুইহীনা
- যাযাবর জীবন


শীত ছুঁয়ে দিতেই মন লেপ
মোজায় মোড়া গুটিসুটি অলস সময়
তুই ছুঁয়ে থাকলে রাত স্বপ্ন
বুকের ওমে জড়িয়ে নিতেই প্রজাপতি ভালোবাসা,
আমি ডুব দিয়ে উঠি তোর ভেতর থেকে
রৌদ্র পোহাবো বলে শীতের ভোরে,
শীত গড়ায় অলস দুপুরে
ঝিমানো রৌদ্দুরে কুয়াশার মেঘ
মুঠোর ভেতর সময় ভাংতে থাকে, তোকে ছাড়া
মন খারাপের গল্প লেখা হয় বিষণ্ণ বিকেলে;

আজ রাতে জবর শীত নামবে, তুইহীনা।



রাতের কাছে ফেরা



রাতের কাছে ফেরা
- যাযাবর জীবন


আমি কোথাও যাই না, মন যায়
এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ায়
আমি রাতের কাছে থাকি
অন্ধকার হয়ে,
মাঝে মাঝে চাঁদ কথা বলে, জ্যোৎস্না হলে
মাঝে মাঝে তারা জ্বলে
মাঝে মাঝে জোনাক খেলে
উড়ে উড়ে, ঘুরে ঘুরে
আমি বেশ আছি রাত হয়ে
অন্ধকার নিয়ে, একা একা, এই বেশ ভালো;

তোর ঘরে বড্ড রৌদ্দুর, বড্ড আলো
তোর মনে অনেক কানামাছি, গুঞ্জন রাশি রাশি
থমকে থাকা দুপুর, বিষণ্ণ বিকেল, সে তো আমার একার!
চাঁদ তোর, সূর্য তোর, মন তোর আলো আলো;

রাত ঘুমিয়ে গেলে অন্ধকারের কি থাকে?
আমার ঘুমনোর সময় হয়ে এলো !

কেন বারবার ফিরে আসিস রাতের কাছে?



মনকথা মনের মাঝে



মনকথা মনের মাঝে
- যাযাবর জীবন


কিছু কিছু কথা বুকের ভেতর
মাঝে মাঝে উঁকি চাদের মতন,
কিছু কিছু কথা সূর্যের মতন আলোকিত প্রতিদিন,
অনেকগুলো কথা অন্ধকার, রাতের মতন
ঘুমের আগে প্রতিরাতে মনে আসে
আর মাঝে মাঝে বিনিদ্র রাত চোখ কাঁদে,
কথার কি শেষ আছে?
মনকথা মনের মাঝে।

ঠাণ্ডার মনকথা


ঠাণ্ডার মনকথা
- যাযাবর জীবন


উফফ! বড্ড ঠাণ্ডা
আয় চুমু খাই রোদ ভিজিয়ে.....



জোড়ায় জোড়ায় জোড়া



জোড়ায় জোড়ায় জোড়া
- যাযাবর জীবন


কিছু কিছু রাত স্বপ্নময়
অপেক্ষার প্রহর আর প্রতীক্ষার সময়;

জীবন মানেই তো টুকরো টুকরো জোড়া
সময় জুড়ে জুড়ে কাল
অনুভূতি জুড়ে জুড়ে মন
ভালোবাসা জুড়ে জুড়ে দু:খ
জুড়তে জুড়তে এতটাই ভেঙে গিয়েছি যে
এখন আর স্বপ্ন জুড়ে না চোখে;
এখন আমার আর রাত জোড়া হয় না চাঁদে
দিন জুড়তে গেলেই গ্রহণ;

কত কত দিন কর্মময়!
অপেক্ষার প্রহর আর প্রতীক্ষার সময়;

আমি স্বার্থ জুড়ে জুড়ে সময় জুড়েছি
আর সময় জুড়ে জুড়ে অর্থ গড়েছি
তাই না রে?
ঠিক বলেছি?
নইলে পুড়ছি কেন চন্দ্র-স্নানে?
চাঁদে ভিজে চাঁদনি রাতে,
তুই বিহনে, তুই বিহনে।



আগুন স্নান



আগুন স্নান
- যাযাবর জীবন


উফফ! ভীষণ ঠাণ্ডা
ভিজছি তোতে
আগুনে বসে কিংবা তোর বুকে;

ভালোবাসা তো আগুনই, তাই না?
পোড়াতে জুড়ি নেই তোর, জলকুমারী;
শীত, গ্রীষ্ম কিংবা শরতে।


মন-নৌকা



মন-নৌকা
- যাযাবর জীবন


মনের মাঝে যখনই তুই ভাসে
আকাশে চাঁদ হাসে, সূর্য হাসে

আজ তুই নেই এখানে
সূর্যটা সারাদিন ছিল মনমরা
চাঁদটাও মুখ লুকিয়েছে কুয়াশার ভাঁজে
অথচ কথা ছিল ভিজব দুজন জ্যোৎস্না স্নানে
আজকের রাতে বন-বিজনে

কে জানি কাঁদছে, বনের ভেতর
ভালোবাসাও নাকি অশরীরী হয়, চাঁদ-কান্না রাতে;
কই? আমি তো কাঁদতে পারি নি কখনই
ভালোবেসে কিংবা না বেসে
পাথরের আবার কান্না কিসে?

সন্ধ্যাটা কেমন টুপ করে ডুব দিয়েছে রাতের চাদরে
কই? আমি তো ডুবতে পারি নি তোর ভেতরে!
যেখানেই থাকিস জলকুমারী
তুই কিন্তু ঠিকই আছিস আমার ভেতরে,
চাঁদ হয়ে, সূর্য হয়ে
আলো হয়ে;
আমি না হয় রাতই হলাম তোর ঘুমে।

জলডুব




জলডুব
- যাযাবর জীবন


জলকুমারী আমি রূপসায়,
ভাসছি, ডুবছি তোতে;
চলে আয় ভালোবাসি, জলডুবে.......


ভালোবাসার বোধোদয়



ভালোবাসার বোধোদয়
- যাযাবর জীবন


কখনো তো বুঝতে হবে আমি এখন অন্য কারো
বুঝতে হয় সময়, অবস্থান, পারিপার্শ্বিকতা
চোখ বন্ধ করে রাখলেই কি আর দিনভর স্বপ্ন-রাত?
ঘুম ভাঙতেই হয় কোন না কোন সময়ে;

তোর জীবনে সকাল হোক সূর্য উঠুক, সূর্য উঠুক
মনের ঘরে আলো আসুক, আলো আসুক
এবার তোর ঘুম ভাঙুক, ঘুম ভাঙুক

আমি সে নই যে তোকে ভালোবাসে
তুই সে নস যে আমায় বুঝতে পারে
হৃদয় ভরা অনুভূতি, মনে মন মেলে না
স্বপ্নঘোরে আর কতকাল ভালোবাসার ছলনা?

কেও একজন সত্যিকারে তোর জীবনে এবার আসুক
মন খুলে আপন করে হাত ধরুক, মন ধরুক
আদর করে সত্যিকারের ভালোবাসুক, ভালোবাসুক........।




সোমবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৮

উপলব্ধি বাস্তবতার



উপলব্ধি বাস্তবতার
- যাযাবর জীবন


যখন আমার সকল ভাবনা-স্বত্বা তোকে স্পর্শ করে
ঠিক তখনই তুই স্পর্শের অনেক দূরে
কারণে আর অকারণে;
যখন আমার সমস্ত ভেতর বোধ ঘিরে ধরতে চায় তোরে
ঠিক তখনই তুই বোধের অন্তরালে
কারণে আর অকারণে;

মন পাড়ি দেয়া কি এতই সহজ?
মাঝে দূরত্বের বিশাল সাগর,
দূরত্ব চিন্তা চেতনার
দূরত্ব মন মানসিকতার
দূরত্ব বয়সের
দূরত্ব সময়ের
দূরত্ব জীবনের
দূরত্বে দুজন
কারণ আর অকারণ;

হয়তো দূরত্ব নেই আমাদের ভালোবাসার
তবে বিশাল দূরত্ব পারিপার্শ্বিকতার
যেখানে অকারণই হয়ে যায় মুখ্য কারণ;

উপলব্ধি বাস্তবতার।







জীবন জীবনের ভাঁজে



জীবন জীবনের ভাঁজে
- যাযাবর জীবন


সবাই মানবিক হতে পারে না
তোমাদের মত,
শিক্ষা দীক্ষায়, আচার আচরণে;
সবাই মানসিক হতে পারে না
আমার মত,
বোঝালেও না বুঝে;

জীবনের এক এক মোড়, জীবন বোঝে;
টাকা, পয়সা, স্বার্থ, সম্পর্ক
সবই জীবনের প্রয়োজনে।

মানুষ চাকচিক্য খোঁজে
আমি জীবন যুঝি, জীবনের ভাঁজে।


নতুন বছরের শুভেচ্ছা



নতুন বছরের শুভেচ্ছা
- যাযাবর জীবন


নতুন বছর
নতুন ভাবনা
পুরাতন যা কিছু ভেতরের ময়লা
ছাই হোক পুড়ে পুড়ে মনের কয়লা
যা কিছু দুঃখ আর যে সকল বেদনা
অনেক কিছুই ছিল না পাওয়ার যাতনা
কষ্ট যা কিছু উড়ে যাক আকাশে
নতুন গন্ধ নেব নতুন বাতাসে
অপূর্ণ স্বপ্নের পুরনো ভালোবাসা
নতুন জীবনে নতুন বাঁচার আশা
অতীত থেকে ভুল যাচার শিক্ষা
আগামীর জন্য হোক সংশোধনের দীক্ষা
নতুন বছরে নতুন করে
নতুন নতুন সব ভাবনা।




চেনা অচেনা


চেনা অচেনা
- যাযাবর জীবন


নিজেকেই চিনতে পারলাম না আজ পর্যন্ত
মানুষ চিনব কি করে?

যাকে ভালোভাবে চিনতেই পারলাম না
তার ভেতর জানব কিভাবে?
অযথাই অনাবশ্যক মন্তব্য এর ওর সম্পর্কে;

আদতে লাগাম নেই আমাদের
জিহ্বার ও রিপুর.........

আগে না হয় একটু চিনি, নিজেকে।




আনাড়ি যখন তখন



আনাড়ি যখন তখন
- যাযাবর জীবন


ইচ্ছে হলেই ইচ্ছে মতন
যখন ইচ্ছে যখন তখন

একমাত্র তোকে দিয়েই সম্ভব
হে নারী

প্রেমে আমি বড্ড আনাড়ি।

খোলস



খোলস
- যাযাবর জীবন


বড্ড তাড়াহুড়া আমাদের সিদ্ধান্তে পৌঁছতে
আবার সিদ্ধান্ত বদল মুহূর্তে
সামনে যা থাকে হুটোপুটি লুটি
পেছন যাচে কে?

বাহ্যিক চাকচক্যে অভিভূত সবাই
ভেতর যাচে কে?
রংবেরঙ এর খোলস আছে যার
সেই তো সেই সে।


যন্ত্রানুভুতি



যন্ত্রানুভুতি
- যাযাবর জীবন


যে ভোর দেখেনি সে সূর্যোদয় বোঝে না
যে জ্বলন্ত রৌদ্দুর বোঝে না রাগ তার কাছে বাতুলতা
যে ঢলে পড়া বিকেল চেনে না তার মন খারাপ হয় না
যে সূর্যাস্ত দেখেনি সে অভিমান বোঝে না
যে মেঘ দেখে নি সে কান্না বোঝে না
চাঁদ দেখে যে নির্লিপ্ত থাকে সে পাথর
যে জ্যোৎস্না দেখে না সে ভালোবাসা বোঝে না
ভালোবাসা থেকে যে দূরে থাকে সে পাষাণ;

আমি ভোর, সকাল, দুপুর কিংবা বিকেল চিনি না
আমি সন্ধ্যে, রাত, অমাবস্যা ও পূর্ণিমা চিনি না
আমার কাছে সময় মানে দিন, দিন মানে কাজ
আমার কাছে সময় মানে রাত, রাত মানে ঘুম,
রাগ,দুঃখ, হাসি, কান্না
মান, অভিমান, প্রেম, ভালোবাসা
মনুষ্যের অর্বাচীন অনুভব;

আমি শুধুই জীবন লাঙলে সময় চষে
টাকা উৎপাদন করে চলেছি,
ক্ষুধা মানবানুভুতি;

যন্ত্রের আবার অনুভূতি কি?