সোমবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১২

নতুন বছরের আগমন, মনুষ্যত্বের শুভেচ্ছা স্বাগতম

নতুন বছরের আগমন, মনুষ্যত্বের শুভেচ্ছা স্বাগতম
-যাযাবর জীবন

নতুন বছরের আগমন
লাখ লাখ টাকার বাজি পোড়ে
আকাশের বুক চিরে হাউই ওড়ে
আনন্দ ফুর্তি এরে বলে।

নতুন বছরের আগমন
শীতে কাঁপছে সারা দেহ মন
কেও নেই হবে তাদের আপন
পুরনো বাতিল কত গরম কাপড়
পরে থাকে বাক্সবন্দী হয়ে
টাকা লাগে না তাতে, দুটি কাপড় দিতে
শুধু একটু মন লাগে
বাক্স খুলে দু একটি কাপড় বিলোতে।

নতুন বছরের আগমন
ফুর্তির রাত থার্টি ফার্স্ট নাইট
লক্ষ টাকার ব্যান্ড পার্টি চারিদিক জুড়ে লাইট আর লাইট
কত নামী দামি তারকার কনসার্ট এখানে ওখানে
নাচতে হবে তাঁদের গানে তাল মিলিয়ে
থার্টি ফার্স্ট এর রাতে;
টাকার অভাব হয় না সামনের সারির টিকেট পেতে
কতই বা আর দাম? পাঁচ হাজার, দশ হাজার
দেখেছি কত না এমন কনসার্ট
টিকেট কিনেছে তারা, টাকা যেন হাতের ময়লা
দাম যখন হাঁকায় পঞ্চাশ হাজার।

তবু কি কষ্টই না লাগে দুটি গরম জামা কিনে দিতে
ওই শীতার্ত মানুষের তরে
ফ্রিজে কত খাবার পচে, বাসি হয়ে
স্থান হয় ডাস্টবিনের কোনে
তবুও দুয়ারে ভিক্ষুক এলে, দূর দূর করে দেয় তাড়িয়ে
আত্মায় কুলোয় না ফ্রিজের বাসি পচা খাদ্য কিছু
দিতে গরীবেরে বিলিয়ে।

মানুষ বলি আমরা নিজেদের
মনুষ্যত্ব কোথায় ঘুমিয়ে থাকে?
থার্টি ফার্স্ট নাইটের ফুর্তির ফাঁকে
কিংবা বাক্স বন্দী গরম কাপড়ের মাঝে
তেলাপোকার খাদ্য হয়ে।
অথবা ফ্রিজে লুকিয়ে রাখা সযতনে
ডাস্টবিনে কুকুরের খাদ্য হতে।

আরেকটি বছর ঘুরে, নতুন বছরের আগমন
তোমাদের এ হীন মনুষ্যত্বকে জানাই শুভেচ্ছা স্বাগতম।


শনিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১২

পরকীয়া ভাইরাসে বিচ্ছিন্ন সংসার

পরকীয়া ভাইরাসে বিচ্ছিন্ন সংসার
-যাযাবর জীবন

কেমন যেন এক আদিম যুগে চলে যাচ্ছি আমরা
কিংবা হয়তো এটাই এ যুগের আধুনিকতা
আমার বোধগম্য হয় না
তাই হয়তো অচল আমি এ যুগের জন্য।

পরকীয়ার পতঙ্গ আজ ডানা মেলে দিয়েছে আকাশে
ভাইরাসের জীবাণু ছড়িয়ে দিচ্ছে বাতাসে
পরকীয়ার ভাইরাস ডানা মেলে পতঙ্গের মতন
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে সংসার সব মেতেছে ধ্বংসের খেলাতে।

পার্থক্য কি সহবাসে আর পরকীয়া সম্পর্কের সঙ্গমে?
দেহের সাথে দেহের মিলন, সংজ্ঞায় বলে এটাই রমণ
বিধাতা বেঁধে দিয়েছে বিবাহ নামক মধুর এক বাঁধনে
পুরুষ আর রমণী জোড়া বেঁধে দুজন দুজনে।

তবু আজ পরকীয়ার পতঙ্গ ওড়ে আকাশে বাতাসে
ধ্বংসের লীলাখেলায় মত্ত হয়ে
কি লাভ হচ্ছে একের পর এক সম্পর্ক ছিন্ন?
পুরুষ আর রমণী দেহ দুটোই তো শুধু ভিন্ন
আমার পছন্দ মোটা দেহ কিন্তু আমার সে যে চিকন
আমারটা উনি বড়ই খাটো আর সে অনেক লম্বা তখন
দেখতে দুটি দেহ হয়তো অন্যরকম
তবে মনটা তো সবারই একই রকম
স্বামী স্ত্রীর পরস্পরের ভালোবাসায় পূর্ণ;
তবে কেন করে যাই ভাইরাসের পতঙ্গ উড়িয়ে
মনটাকে পাপে পূর্ণ?
আত্মহননের সর্বনাশের পিছু
এ অর্বাচীন ছোটাছুটি কিসের জন্য?

দুটি সংসারে কতগুলো মানুষ জড়িত
ভালোবাসাবাসি আর মমতার বাঁধনে
জানাজানি হবার পর থেকে সব হয় ছিন্নভিন্ন
এই পরকীয়া ভাইরাসের আক্রমণে।

তবে এ সর্বনাশা নেশার বলি হয়ে
দুটি ঘর ভাঙ্গা কিসের জন্য?
কখনো ভেবে দেখেছি কি
মনের ভেতর থেকে একটিবারের জন্য?


শুক্রবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১২

বাস্তবতায় বেঁচে থাকা

বাস্তবতায় বেঁচে থাকা
-যাযাবর জীবন

অনেক অনেক ওপরে উড়ে যেতে মন চায়
যেখানে মেঘের ভেলা ঢেকে রাখবে আমার বিবেকবোধ
সেখানে মনুষ্যত্ব ক্রমাগত পীড়া দেবে না
অনেক অনেক দূরে চলে যেতে মন চায়
যেখানে গভীর কোনো অরণ্য ঢেকে রাখবে আমার হৃদয়টাকে
ক্ষরণের যন্ত্রণাগুলোতে মলম লাগাবে বন্য গাছের কষে
চাঁদের দেশে চলে যেতে মন চায় বড় পূর্ণিমার রাতে
স্বপ্ন-জগত থেকে উড়ে উড়ে অনেক দূরে
আমার চাঁদনিকে একবার দেখব বলে।

কিছুই করা হয় না, শুধু কল্পনার রাজ্যে বসবাস
জীবনের কঠোর বাস্তবতার সাথে যুদ্ধ করে
তিল তিল করে নিজেতে নিজে মরে
প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ, প্রতিটি মুহূর্ত
শুধুই বেঁচে থাকা সংসারকে আঁকড়ে ধরে।

অন্যরকম অনুভব

অন্যরকম অনুভব
-যাযাবর জীবন


আজ না হয় অন্যরকম কিছু হোক
অন্যভাবে অন্য অনুভবে.........

প্রতিদিনের মাছ ভাত শাক ডাল থেকে
না হয় বের হয়ে আসি আজ
চল না আজ উপোষ দেই!

কত লোক পড়ে থাকে রাস্তার আনাচে কানাচে
ঘুম আসে না তাদের চোখে
খিদে নামক কোনো এক দানবের কল্যাণে
তুই, আমি কিংবা আমরা দেখিনি সে দানব
চলনা আজ অন্যকিছু করে দেখে আসি
কিভাবে কাটায় বেলা ক্ষুধার জ্বালায় ওইসব মানব।

প্রতিদিনের একই রুটিন লেপের তলা থেকে
কিংবা হিটারের গরম থেকে চল না আজ বের হয়ে আসি
চল না একটু শীতের সংজ্ঞা বুঝে আসি।

আজ চল হেঁটে যাই শীতার্ত রাজপথে
দুজন দুজনার হাত ধরে ওই রেললাইনের বস্তির পাশ ঘেঁসে
ঘরে পড়ার প্রতিদিনের দুটো পাতলা জামা গায় দিয়ে দুজনে
চল না আজ বুঝে নেই শীত কাকে বলে!

পেপারে খবরে ব্লগে ব্লগে প্রতিদিন শুনে আসছি
আহ্বান আর আবেদন শীতার্তদের প্রয়োজনে
অবজ্ঞা অবহেলায় চ্যানেলটা ঘুরিয়ে দেই
এসব ফালতু খবর শুনতেই
সারাদিন থাকি ব্লগে, এ ধরনে একটি কথা চোখে পড়লে
খুব সাবধানে এড়িয়ে যাই অন্য কোনো মজার গল্পে;
সারাদিন কাটাই ফেসবুকে আর নেটে
এ ধরনের কোনো আবেদন শুনলে করুণা হয়তো জাগে মনে
তবে একটি লাইক একটি কমেন্টও করি না ভয়ে
যদি বিবেক বলে সাড়া দিতে এই সব আহ্বানে।

চল না আজ ঘুরে আসি শীতকে গায়ে মেখে
শীত কাকে বলে বুঝে নিতে
রুম হিটার জ্বালিয়ে
লেপের তলায় বসে কি আর শীত অনুভব করা যায়?
একদিন না হয় বের হলামই রাস্তায়
হাড় কাঁপানো শীতের সংজ্ঞা বুঝে নিতে।


যাবি তুই আমার সাথে একদিনের জন্য হলেও
তাহলে আর কখনো বলবি না কি পাগলে পেয়েছে আমায়
হাবিজাবি এসব কথা লিখে ভরে ফেলি ব্লগ
আর আবেদন জানাই ফেসবুকে
ঘুরে বেড়াই একা একা শীতার্ত রাজপথে
কিংবা রেললাইনের পাশের বস্তির কোনে কোনে।

তুইতো আমায় এমনিতেই পাগল বলিস
যখন চুপেচাপে বের হয়ে যাই রাস্তায় রাতের আঁধারে
ওই মানুষগুলোর সাথে সময় কাটাতে
চুপেচাপে বাসা বাড়ির সব শীতবস্র সাথে করে
সঙ্গোপনে তোর কাছ থেকে লুকিয়ে
কিংবা পকেট খালি করে, যৎসামান্য কিছু খাদ্য কিনে
ক্ষুধায় কাঁতর ওই মানুষগুলোর জন্য, আমার সাধ্যমত;
তুই কখনোই বুঝবি না রে
আমার যে বড্ড অন্যরকম সুখ জাগে মনে
তাদের পাশে একটু দাঁড়াতে পারলে
একটু সহানুভূতির হাত তাদের মাথায় রাখলে।

এজন্যই তোকে অনুনয় করছি, চলনা আমার সঙ্গে!
আজ না হয় আমার সাথে একটু অন্যরকম সময় কাটালি
আমার মতন করে, বস্তির ওই মানুষগুলোর সঙ্গে
অন্যভাবে অন্য অনুভবে.........

হয়তো কিছুই অনুভব করতে পারবি না তুই
কিংবা কে জানে? হয়তো তোর বিবেক মনুষ্যত্বকে নাড়া দিলে
আমি একজন সঙ্গী পাব আমার যাযাবর জীবনে।



ভালোবাসার যতিচিহ্ন

ভালোবাসার যতিচিহ্ন
- যাযাবর জীবন

আমায় ছেড়ে জড়িয়ে থাকিস তাকে
আষ্টেপৃষ্ঠে সারাটা ক্ষণ;
বড্ড হিংসে হয় আমার
তুই যেন বুঝেও বুঝিস না
মুচকি হাসি দিয়ে আমায় ছেড়ে জড়িয়ে রাখিস তারে
যেন আমাকে হিংসার অনলে পোড়াতে
হায় রে মানবীর মন?
আমি কোন ছাড়! বোঝেনি ওপরওয়ালাও যখন।

এক এক সময় মনে হয় পারতেম যদি
তাকে পুড়িয়ে দিতে আগুন জ্বালিয়ে
কিংবা ধ্বংস করে চিরতরে
তবে সেদিন হয়তো শান্তি মিলতো আমার
একটুখানি মনের ঘরে;
অন্তত সে তো তোকে জড়িয়ে ধরতে পারত না
আমারই চোখের সামনে
কিংবা বাঁধা হতে পারত না আমার দুজনার মাঝে
সারাটা ক্ষণ দুজনার মাঝে ভালোবাসার যতিচিহ্ন হয়ে।

প্রায়ঃশই আমাদের মধ্যে যখন
শারীরিক ভালোবাসাবাসি গুলোর মুহূর্ত
নিবিড় হতে চাওয়া একে অপরের সাথে
ঠিক তখনই বাঁধা পাই মনে;
যেন আড়াল করে রাখতে চায় তোকে
আমার থেকে সরিয়ে অনেক দূরে।

ভালো লাগে না প্রতিনিয়ত
আমাদের দুজনার মাঝের যতিচিহ্ন হয়ে থাকা
আর অপলক চোখে দেখা আষ্টেপৃষ্ঠে তোকে জড়িয়ে থাকতে;
হিংসায় জ্বলে পুড়ে মরি
কেন যে আমিও পারি না ঠিক তারই মতন
সর্বক্ষণ তোকে জড়িয়ে ধরে রাখতে।

একদিন ঠিক দেখিস তাকে আমি ধ্বংস করে দেব
চিরকালের মতন আগুনে পুড়িয়ে
সারাটা ক্ষণ তোকে জড়িয়ে রাখা
তোর পরনের “শাড়ি” টারে।

বৃহস্পতিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১২

অন্যরকম ভালোবাসার বন্ধন

অন্যরকম ভালোবাসার বন্ধন

- যাযাবর জীবন



আমার জীবনের সাথে অঙ্গাঙ্গী হয়ে জড়িয়ে আছিস

সেই কত কাল হয়ে গেছে

এখন আর ঠিক মনেও করতে পারি না;

কি যে এক অন্যরকম ভালোবাসার বন্ধনে

জড়িয়ে রেখেছিস এতকাল ধরে

যার কোনো নাম হয় না।

একে একে সবাই ছেড়ে চলে যায়

তবুও তুই কখনোই ছাড়িস নি আমায়।



তোর স্পর্শ ছাড়া নিদ্রাহীনতা

তোকে বুকে না জড়িয়ে ঘুমুতে পারি না

সারাটা রাত থাকিস আমার বুকের সাথে লেপ্টে

কখনো ঘুমের ঘোরে যদি পাশ ঘুরে যাই

পেছনে ঠিকই তোর স্পর্শ পাই

অনুভবে, ঘুমের ঘোরে।



ভালোবাসার এত গভীর অনুভূতি

আর কার মাঝে আছে - তুই ছাড়া?

এও তো এক প্রকার ভালোবাসাই তাই না?

সেই কতকাল ধরে দুজনে দুজনে জড়িয়ে থাকা

রাতের বেলা

বড্ড ভালোবাসিরে তোরে

ও আমার ভালোবাসার “কোলবালিশটা”।

তুই, আমি ও সে

তুই, আমি ও সে
- যাযাবর জীবন

পার্থক্য কিছু আছে তো বটেই
তার, আমার আর তোর মধ্যে।

তার আছে বাড়ি, গাড়ি, টাকা কড়ি
সমাজে সে খ্যাতির চুড়োমনি
সকলেই চেনে তাকে
টাকায় কিংবা খ্যাতিতে
আসলে কি ভালোবাসে তোকে?
না কি টাকার মূল্যে কিনে
সাজিয়ে রেখেছে দামী এক শোকেসে
অনেক মূল্যে কেনা এখান ওখান থেকে
এন্টিক সংরক্ষণে
মানসিক শান্তিতে।

আমি কাঙ্গাল, মূল্য বুঝিনি টাকার আগে
যাযাবর জীবন কাটিয়েছি এখানে ওখানে
দীন হীন হয়ে, কিংতুই, আমি ও সে
- যাযাবর জীবন

পার্থক্য কিছু আছে তো বটেই
তার, আমার আর তোর মধ্যে।

তার আছে বাড়ি, গাড়ি, টাকা কড়ি
সমাজে সে খ্যাতির চুড়োমনি
সকলেই চেনে তাকে
টাকায় কিংবা খ্যাতিতে
আসলে কি ভালোবাসে তোকে?
না কি টাকার মূল্যে কিনে
সাজিয়ে রেখেছে দামী এক শোকেসে
অনেক মূল্যে কেনা এখান ওখান থেকে
এন্টিক সংরক্ষণে
মানসিক শান্তিতে।

আমি কাঙ্গাল, মূল্য বুঝিনি টাকার আগে
যাযাবর জীবন কাটিয়েছি এখানে ওখানে
দীন হীন হয়ে, কিংবা কিছু দ্বীনের সন্ধানে;
চিন্তায় আসে নি স্বপ্ন ভাঙ্গার বেদনা
কিংবা তোকে হারাবার
মুখোমুখি হয়ে কঠিন বাস্তবতার।
আমার কিছুই নেই, জাগতিক ভুবনে
শুধু ছিল তোর জন্য এক হৃদয় ভালোবাসা
বয়ে চলেছিলাম বুকের অনেক গভীরে।

রূপে গুনে তুই অনন্যা
করে গিয়েছিস ভালোবাসার ছলনা
তাইতো ক্ষরণে পোড়ায় না তোরে বেদনা;
তোর আছে তার টাকা
যা ছাড়া আসলে বাস্তব জীবন চলে না
সাথে অনেক বেশি খ্যাতির বিড়ম্বনা
আর তার সাথে কিছু আছে উপরি পাওনা
সেটা কি বলতে পারিস?
হৃদয়ের গভীরে উঁকি দিয়ে দেখ একবার
উপরি আছে আমার কাছ থেকে পাওয়া
একরোখা সীমাহীন ভালোবাসা।

কি করবি তুই এত কিছু দিয়ে?
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।


বা কিছু দ্বীনের সন্ধানে;
চিন্তায় আসে নি স্বপ্ন ভাঙ্গার বেদনা
কিংবা তোকে হারাবার
মুখোমুখি হয়ে কঠিন বাস্তবতার।
আমার কিছুই নেই, জাগতিক ভুবনে
শুধু ছিল তোর জন্য এক হৃদয় ভালোবাসা
বয়ে চলেছিলাম বুকের অনেক গভীরে।

রূপে গুনে তুই অনন্যা
করে গিয়েছিস ভালোবাসার ছলনা
তাইতো ক্ষরণে পোড়ায় না তোরে বেদনা;
তোর আছে তার টাকা
যা ছাড়া আসলে বাস্তব জীবন চলে না
সাথে অনেক বেশি খ্যাতির বিড়ম্বনা
আর তার সাথে কিছু আছে উপরি পাওনা
সেটা কি বলতে পারিস?
হৃদয়ের গভীরে উঁকি দিয়ে দেখ একবার
উপরি আছে আমার কাছ থেকে পাওয়া
একরোখা সীমাহীন ভালোবাসা।

কি করবি তুই এত কিছু দিয়ে?
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।

বুধবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১২

ভালোবাসার ন্যায্যমূল্য

ভালোবাসার ন্যায্যমূল্য
- যাযাবর জীবন

তোর কথা ভাবলেই
থমকে যায় সময়
দম বন্ধ ঘড়ির কাঁটা
আমারই মত থাকে থমকে।

তোর কথা ভাবলেই থমকে যায় যেন যৌবন
দেহে ভর করে নপুংসকের স্বত্বা
কামনার অভিলাষ জাগে না এখন আর মনে
তুই ছাড়া তুই বিনে
মনের সাথে সাথে দেহটাও আজ গিয়েছে মরে।

যৌবনের যত আয়োজন
সব ছিলি তুই, তোরই কারণ
আমিতো নিমিত্ত মাত্র, রমণের প্রয়োজনে
উন্মত্ত ভালোবাসায় রতিক্রিয়া
দেহের মাঝে নিত্য নতুন দেহের আবিষ্কার
মনের ভেতর অসীম ভালোবাসায়
দুজনে দুজনার;
সে দিনগুলো কি কভু ভোলা যায়?

কি জানি হয়তো ন্যায্যমূল্য দিতে পারি নি আমি
তোর ভালোবাসার কিংবা কামনার
ডাক উঠিয়েছিলি যখন স্বয়ম্বরা সভাতে
বিকোতে নিজেকে
ভালোবাসা ছাড়া বুঝিনি তখন
টাকারও যে মূল্য আছে কিংবা খ্যাতির
প্রেমের খেলাতে।

অনেক মূল্য দিয়ে তোকে যে কিনে নিয়েছে
টাকায় কিংবা খ্যাতিতে তার কাছ আমি তুচ্ছ,
আজো জানা হলো না টাকায় বিকোলি
নাকি খ্যাতিমানের ধুতি পাকড়ালি;
সাবধানে থাকিস রে তুই, দেখিস আবার......
টাকার নিচে চাপা পড়ে দম বন্ধ না হয়ে যায়
জাগতিক সুখ যেন অসুখে পরিণত না হয়
খ্যাতির বিড়ম্বনায়।

কেন জানি বড্ড ভয় হয় ইদানীং তোকে নিয়ে
যখনি তোর কথা মনে পড়ে
থমকে থাকে সময়
বন্ধ ঘড়ির কাঁটাটার মতন।


সোমবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১২

অস্তিত্বে তুই

অস্তিত্বে তুই
- যাযাবর জীবন

লোহিত কণিকা, শ্বেত কণিকার ছোটাছুটি
রক্তের ভেতর; শিরা, উপশিরা আর ধমনী জুড়ে
সাথে কিছু ভাইরাস আর ব্যাকটেরিয়া
আছে যেন জড়িয়ে ধরে
কিছু ভালো হয়ে যায় ঔষধ পেলে
কিংবা তোকে কাছে পেলে
কিছু ভাইরাস কুড়ে কুড়ে খায় মৃত্যুর দিকে ঠেলে
যেদিন থেকে তুই ফেলে গিয়েছিস চলে।

শুরুটা ছিল তোর, সমাপ্তিও তোর
আমি শুধু সাজিয়ে ছিলেম মিথ্যে বাসর
ভাবনার রঙিন ফানুস উড়িয়ে
মিথ্যে স্বপ্নের বোনা জালগুলো এখন যাচ্ছি পুড়িয়ে
সেই সেদিনের পর থেকে
ব্যবহারে পুরোনো ছেড়া ন্যাকড়া
ফেলে দিলি যেদিন ডাস্টবিনের এক কোনে
সম্পর্কের সমাপ্তির ফুলস্টপ টেনে।

এখন স্পর্শের ওপারে তুই ধরাছোঁয়ার অনেক ওপরে
তবুও কেন যেন তোকে একবার ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে
এখন হৃদয়ের ওপর নিয়েছিস কতগুলো হৃদয়ের ভার
একটুখানি তোর হৃদয়টা খুলে দেখতে ইচ্ছে করে
সেখানে আমার স্থান কোথায়, কিংবা ভালোবাসার
আমার, তার কিংবা অন্য কারো জন্যে।


রবিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১২

ভালোবাসাহীন রমণ

ভালোবাসাহীন রমণ
- যাযাবর জীবন

ছেড়া কাঁথায় নষ্ট অতীত
ক্ষরণে কুঁকড়ে থাকে, ঢাকে না শীত
ফুটো কলসির মিথ্যে ভণিতাতে
হৃদয়ের ক্ষরণে কান্না ঝরে তাতে
মুখোশ পড়া এই সব প্রেমের নগরী
প্রেমহীন দেহ শুধু কামের ঘড়ি
হাতছানি দিয়ে ডাকে বিবেক বর্জিত রমণ
ভালোবাসার নামে দেহপসারিনী এমন
প্রেম বিহীন হাতছানি এইসব রমণেরে
ছুড়ে ফেল রে ডাস্টবিনে কামনারে
জীবনটা দেখে নিস অনেক সুন্দর হবে
প্রেম সেদিন মানবতার কথা কবে।

খ্যাতির বিড়ম্বনা

খ্যাতির বিড়ম্বনা
- যাযাবর জীবন

তুই ছুঁয়েছিস আজ খ্যাতির আকাশ-স্তম্ভ
তোর ওপর বরশায় এখন টাকা রাশি রাশি
বৃষ্টির রিমঝিম বর্ষায় ভেজার সময় কোথায় তোর
বৃষ্টির গানে এখনো কিন্তু মন পড়ে থাকে মোর।

তুই এখন নিজেই বিশাল একটা আকাশ
নিজেই ঢেকে ফেলেছিস নিজেরে রবির কিরণ থেকে
তোর ছায়ায় এখন গাংচিলেদের ঠাই নাই
এখন তোরে ভুলে যাওয়ার সময় হয়েছে তাই

তুই এখন জলসার কেন্দ্রবিন্দু
চারিদিকে জন-কোলাহল না হলে তোর মন আনচান
সময় কোথায় তোর শুনতে আমার সাথে লালনের গান
দুজনে মিলে একা একা? কেটে গেছে আজ ঐকতান।

চারদিক ঘিরে কত আলোকসজ্জা, স্পট-লাইটের কেন্দ্রবিন্দু তুই
আমার এখনো যে ভালো লাগে জ্যোৎস্না, জল জঙ্গলের আঁধার
অনেক আলোর ভীরে খুঁজে পাই না এখন আর তোরে
তবু পুরনো কথা মনে হলে বড্ড মন পোড়ে।

কোন একদিন বুঝবি আসলে এ সবই ছিল মেকি
যখন আশে পাশে সব চাটুকারের ভীরে খুঁজে পাবি না আমায়
সেদিন ঠিক আমার কথা মনে করিস নিঃসংকোচে
চোখ বুজলেই আমায় পাবি মনের খুব সংগোপনে।

যদি হাত বাড়িয়ে খুঁজিস আমায় স্বার্থের প্রয়োজনে
পাবি না দেখা আমার পাবি আমায় অন্যভূবনে
যদি মন বাড়িয়ে আমায় খুঁজিস তোর মনের ঘরে
ঠিকই হাজির হয়ে যাবো আমি তোর সেই ভাঙা কুটিরে।

পশু মানব

পশু মানব
- যাযাবর জীবন


ওপর দিয়ে দেখলে মনে হয় কত জ্বলজ্বল করছে কত আলো
মনের ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখনারে মন কত কালো
মনের মাঝে ঘুরে বেড়াচ্ছে কত স্বপ্ন কত সাধ
খুব সংগোপনে মনের ভেতর লোলুপ তাকিয়ে আছে কতইনা পাপ
দিনের আলোয় ডানা মেলা গাংচিলের ছানা
রাতের অন্ধকারে ডানা ঝাপটায় শকুনের ডানা
দিনের বেলায় দানবীরের মনুষ্যত্ব জেগে রয়
রাতের আঁধারে রিপুগুলো থাবা মেলে, বিবেক ঘুমিয়ে রয়
দ্বৈত স্বত্বার মাঝে বসবাস মানুষেরই
আমি, তুমি বা সে, প্রায় সবাই একই
কারো প্রকাশ প্রকট, কেও ঘুম পাড়িয়ে রাখে স্বত্বার ভেতরের দানব
খুব মাঝে মাঝে বের হয়ে আসে নখ দন্ত বের হওয়া পশু মানব।


শনিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১২

ছায়া মানব

ছায়া মানব
- যাযাবর জীবন

কোথাও না কোথাও কাঁদা লেগেই যায়
শরীরে কিংবা মনে
পানি সরে গেলে কিংবা তুমি
ছায়াতে পড়া আবর্জনা স্থির থাকে ছায়া সরে যায়
আলোতে কিংবা অন্ধকারে কি আসে যায়
ক্ষরণ জাগায় না মনে ছায়ামানবের
ভালোবাসার পিপাসায়;
ছায়ার দেহে কাঁদা লাগে না
ছায়ামানবের কান্না বাতুলতা
ছায়া হয়ে কিংবা
ছায়া মানব হয়ে জীবনটা কাটিয়ে দেয়া গেলে
বেশ হতো.........

35mm সাদাকালো ক্যামেরা

35mm সাদাকালো ক্যামেরা
- যাযাবর জীবন

দিনের বেলা সাধু বেশে
বড় বড় কথার বুলি, ওম শান্তি ওম শান্তি
সুশীল সমাজে অনেক উঁচুতে বাস, মানবতার বন্যা বয় কথাতে
বড্ড ভালো লাগে তাঁদের কথা শুনতে; দিনের আলোতে।

কালো তাঁদের বড়ই ভাল লাগে
রাতের অন্ধকারে বিড়াল চোখ খুঁজে বেড়ায় রাজপথ অলিগলি
নতুন নারী মাংস, কচি কচি রমণী; অন্ধকারে আবিষ্কার
বড্ড ভালো লাগে কামরিপুর আরাধনা; রাতের অন্ধকারে।

আমি 35mm এর সাদাকালো ক্যামেরায় দেখি
রঙ্গিন দুনিয়ার একই মানুষ দুটি রূপে
কেন যেন সাদা মানুষগুলো রঙ্গিন হয়ে ওঠে অন্ধকার হতে
আমার সাদাকালো ক্যামেরাটা কিছুই না বুঝে হতবিহ্বল হয়ে পড়ে।

শুক্রবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০১২

ঘ্রাণে মাতোয়ারা

ঘ্রাণে মাতোয়ারা
- যাযাবর জীবন

ওই তো ঘাসফুলগুলো বিছিয়ে আছে জুড়ে সারা আঙ্গিনায়
এই তো বকুলের সারি এখনো ঝরে পরছে টাপুর টুপুর
ঠিক যেমন তোর ওপর ঝরে পড়ত তোর সারা গায়ে
তুই আমার বিছানো কোলে, এই সেই ঘাস বিচালিতে শুয়ে
আঙ্গিনার কোণের দিকের হাস্নাহেনার ঘ্রাণে তুই পাগল হতি
আমি ডুবে যেতাম মুখ গুঁজে তোর গায়ের ঘ্রাণে;
আজ শুধু শূন্যতা রয়েছে ঘিরে
ঘাসফুল আর বকুলের ভীরে
হাসনাহেনার তীব্র ঘ্রাণ রয়েছে তেমনি সারাটা আঙ্গিনা জুড়ে
তবুও সব ছাড়িয়ে তোর বুকের সোঁদা গন্ধ পাই
আমার সারা অস্তিত্ব জুড়ে।

মুক্তি

মুক্তি
-যাযাবর জীবন

চারিদিকে সবুজের কোলাহল প্রকৃতিকে ঘিরে
অথচ আমার চারপাশ থাকে ঝরা পাতায় ছেয়ে
শুকনো পাতার মর্মর ধ্বনি শুনি বুকের অনেক গভীরে
যেন অনেকগুলো কুকুরের পদদলে
ছিন্নভিন্ন করে দিতে চায় আমারে
জীবনের কঠোর বাস্তবতায় ঠেলে।

হেলান দেওয়া আকাশের গায়ে পাহাড় চুড়া
শোভা পায় সেথা বরফের সারি
জল জমে কঠিন হয়ে আছে কালশীতের প্রকোপে
ওই দূর পাহাড়ের গায়ে
অথচ কি মনোরম দেখতে, দূর থেকে
তেমনি কঠোর বরফের মতনই মন আমার
হয়ে গেছে ক্রমাগত ঘা খেতে খেতে
কঠোর বাস্তবতার কুঠার আঘাতে আঘাতে।

অপ্রিয় ঢ়ূড় বাস্তবতার কঠোর বন্ধনে আবদ্ধ জীবন
তার থেকে টুকরো টুকরো কিছু সময় বের করা
অনুভবের তাড়নায় কিংবা শব্দজটের যন্ত্রণায়
মাথার ভেতর গেঁথে থাকা কিছু অপ্রিয় স্মৃতির ধোঁয়াটে কুয়াশা
কিলবিল করে কামড়ায় নিউরন কোষে
হাবিজাবি কথা দিয়ে ছেড়া সূতায় মালা গাঁথতে
নিজেরই প্রয়োজনে অনুভবের বন্ধনে
শব্দের জালবুনে লেখনীর আদলে
শুধুই নিজের প্রয়োজনে
উড়নচণ্ডী ঘাসের ডানায় মেলে উড়িয়ে দিতে
মনের ভেতর জমে থাকা সব ঢ়ূড় বাস্তবতাগুলোকে।


বৃহস্পতিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১২

অনুভূতিগুলো ক্ষরণে

অনুভূতিগুলো ক্ষরণে
- যাযাবর জীবন

আমি মনে হয় ভুল করছি
কান্না ঝরাচ্ছি
তোর বিহনে
সত্যি সত্যি ভুল করছি
রক্ত ঝরাচ্ছি ক্ষরণে।

কষ্টগুলোকে আমরা বুকে ধরে রাখতে চাই না
কান্নায় ঝরিয়ে দেই মনের যত দুঃখ গাঁথা
যখন প্রিয়জন চলে যায় অন্যভূবনে
কিংবা অন্যকোথাও অন্যকারণে
আকুল কান্নায় ভাসি অশ্রুজলে
হৃদয়ে রক্ত ঝরে কিছু ক্ষরণে
কিছু সময়ের তরে
মনের যত কষ্টগুলো সব ভাসিয়ে
লোনা জলের সাগরে
অনুভবগুলো ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে আসে
অনুভূতিগুলো যায় ধীরে ধীরে কমে
দুঃখের কিংবা কান্নার ঝরা জলে।

এ আমি কি করছি?
আমি তো এ হতে দিতে পারি না।
তোর বিরহে ভাসছি কেন কান্নার সাগরে
রক্ত বইয়ে দিচ্ছি হৃদয় ক্ষরণে
কষ্টগুলো আছে হৃদয়ে যত
তবে কি আমি তোকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করছি
মনের কোনো সংগোপনে
কিংবা তোর ভালোবাসাকে ভুলিয়ে দিতে
অশ্রুজলে সাগর করে
হৃদয় থেকে খুব যতনে।

ভালোবাসার জাগ্রত অনুভব
থাকুক হৃদয়ে অম্লান
ভাসব না আর অশ্রুজলে
রুখব হৃদয়ের সকল ক্ষরণ;
বাঁধ দিয়ে শক্ত হাতে
তোর জন্য এতটুকু ভালোবাসা
হারিয়ে গেলে কান্নাজলে
সেদিন সত্যি হবে যে আমার মরণ।

নিরাকার

নিরাকার
- যাযাবর জীবন

কেন পাথরে খুঁজিস তারে
খুঁজে দেখ তোর মনের ঘরে
সে রয়েছে তোর অন্তরে
আকারে নয় রে নিরাকারে

কেও যায় মক্কায় হজ্বে
কেও বসে হরি ভজে
ঝাক দে রে তোর মনের মাঝে
আছে সে যে নিরাকারে

মন গভীরে দেখে না আয়না
দুনিয়াদারী লেনাদেনা
মোকাম হইলো রত্নবেদী
চমকাইতে চায় ভাইগ্যজ্যোতি
কি করি কোন পথে যাই রে মন
ভাইগ্য দেবির করি আরাধন
দেব দেবীতে নাইরে সীমা
ভক্তগনের মন ভরে না
সাধক হয় না সিদ্ধ বিনা
যে করে না আরাধনা
এদিক ওদিক খুঁজিস যারে
পাবি তারে নিরাকারে।




বুধবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১২

রঙ্গিন দুনিয়াদারী - গান

রঙ্গিন দুনিয়াদারী
- যাযাবর জীবন

চারিদিকে চাইয়া দেখি কত রকম ঝকমারি
কি যে আজিব মানুষগুলা রঙ্গিন এই দুনিয়াদারী
ধুঁকে চলা জীবন আর মানুষেরই মন কাঙ্গালি
ফকিরের মন রে হায় কত দেখাস বাহাদুরী

লাল নীল বাত্তির তামশা রঙ্গিন
চিমসানো পেট আহার বিহীন
জীবনের প্রয়োজন বড়ই কঠিন
চক্ষু বুজিলেরে বাত্তি বিহীন

দিন থাকি তে কর রে মন
দ্বীনের কথা করিস স্মরণ
দেরি না হইয়া যায়
দুয়ারেতে আসলে সমন
মিটবো রে তোর বাহাদুরি
ঝকমারি দুনিয়াদারী
ভিক্ষার ভেকে করলি ফকীরি
আসলে তুই দ্বীন কাঙ্গালি
যাইতে হইব খালি হাতে
সাড়ে তিন হাত কাফনেতে
ভেক ধরা জারিজুরি
মিটব সবই বাহাদুরি।



আউলা কথা

আউলা কথা
-যাযাবর জীবন


আমারে মনে হয়ে মাঝে মাঝে ভুতে ধরে, নাইলে পাগলা কুত্তায় কামড়ায়; নাইলে কেন খামাক্ষাই শব্দ দিয়া মালা গাঁথার চেষ্টা করি? তাও সব আউলা ঝাউলা কথা, আর উল্টা পাল্টা শব্দের ব্যবহার। গেন্দার সাথে কখন যে বেলি ফুল মিশাই, গোলাপের সাথে ধুতুরা; আর সুতার তো কোন ঠিক ঠিকানাই নাই। সাদার সাথে মাঝে মইধ্যে হইলদা নাইলে সবুজ যখন যেইটা পাই হেইডা দিয়া গিট্টু মারি আর শব্দের মালা গাইত্থা যাইতে থাহি তার কোনো ঠিক ঠিকানা নাই, হুদাই হুদাই।

মালা গাঁথা কখনো শেষ হয় কখনো অর্ধেক কইরা ফালাইয়া রাখি, কত মালা যে গাঁথার আগেই ফুল শুকাইয়া গেছে তার কোনো হিসাব নাই; কত মালা অর্ধেক গাইত্থা ফালাইয়া দিসি তারও কোনো হদিস নাই। কোন কথার সাথে কোন শব্দ মিলাইয়া যে গুরুচণ্ডালী পাকাই পড়তে গেলে নিজেই আউলা হইয়া যাই। মাঝে মাঝে ভালোবাসার সাথে বিরহ মিশাই, মাঝে মাঝে মাইনসের দুঃখ কষ্ট দেইখা খামাখাই গালাগালি করি দেশের সিস্টেমরে। মাঝে মইধ্যে দুই চাইরটা মালা অন্য কারো জীবনের সাথে মিল খাইয়া যায়, মাঝে মইধ্যে দুই চাইরটা সত্যি কথা মিলা গেলে তাগো মনে, মনে লয় পিছে সুঁই বিন্ধায়; পাইলে তহনই আমারে তুইল্লা আছাড় মারবার চায়। খুব করুণ কিছু জীবনের ঘটনা যদি সুঁই সূতায় মিল্লা মালা হইয়া যায় ভাইঙ্গা পরে আকুল কান্নায়, যেন আমি কহন জানি চুরি কইরা তাগো জীবনের ঘটনা সব দেইক্ষা ফালাইয়া লেকছি, আমার ইনবক্স ভইরা মেসেজের বইন্যা বইয়া যায়।

মাঝে মাঝে হুদাই আজাইরা কিছু কতা লেহি যা মনে আহে, কহনো কহনো মাইনসে এইসব হাবিজাবি পড়ে; দুই চাইরটা ভালো কথা কয়, তয় বেশিরভাগ সময় গাইল দেয়। যাই লেহি না কেন যেই মালাই গাঁথি না কেন, সাধারণ কথা কিংবা অসংলগ্ন কিছু; কেন যে মাইনসের ধারনা হয় আর বেশিরভাগ মাইনসে ভাইবা বইয়া থাহে এইগুলি বুঝি সব আমার নিজেরই কতা। ছিড়া সূতায় উল্টা পাল্টা মালা গাইত্থা মাইনসের উপদেশের পাহাড়ের তলে চাপা পইড়া মরি প্রায়ঃশই। এখন মাঝে মাঝে ভাবি, নিজের কথাই যদি সব লেখতাম তাইলে তো মহাসাগরের অতল জলরাশির তলে ডুইব্বা মইরা যাইতে হইত উপদেশবাণীর জ্বালায়।

মাঝে মইধ্যে ব্লগে গিয়া আউলা কথা লেইক্ষা ব্লগর ব্লগর করি। কত যে কতা লেহি কত মালা গাঁথি তার কোনো ঠিক ঠিকানা নাই। কহনো দেশের সমইস্যা লইয়া, কহনো শীতার্ত মানুষগুলাইনরে লইয়া, কহনো বিবেক, কহনো মনুষ্যত্ব, কহনো প্রেম ভালোবাসা আর কহনো কিছু হুদাই আউলা কতা। বেশিরভাগ সময় দেহি মাইনসে পড়ে তয় কোন কমেন্ট দেয় না, দুই চারজন ছাড়া - যারা চিনে আমারে। ডিজিট্যাল টি আর পি তে বিশেষ কইরা এইসব বিবেক, মনুষ্যত্ব, স্বাধীনতার চেতনা এইগুলি একদম নিচের দিকে থাকে। প্রেম ভালোবাসার কথাবার্তা তাও চলনসই। তয় মজার একটা বিষয় লইক্ষ্য করছি - নারী ও সেক্স লইয়া যহনি কোন একটা লেহা পুষ্টাই ঐটার টি আর পি যেন ডিজিট্যাল মিটার আউলা কইরা দেয়। মিটার মহাশয় মনে লয় হিসাব করতে গন্ডগোল পাকাইয়া ফালায়। আর ওই সব পুষ্টে যদি খালি কমেন্ট এর বাহার দেকতেন তাইলে আপনারা নিজেরাও আঁতকা খাইয়া যাইতেন। যেন আমি একটা নারীমাংস খেকো নরপশু, কাপড়ের উপ্রে দিয়াই বেবাক দেইহা ফালাইছি। অথচ আমি নিজের চোহে দেকছি, এই সব সুশীল সমাজের বন্ধুরা আলিয়াস ফ্রসিস এ গিয়া অনেক মনোযোগ দিয়া অর্ধেক কাপড় খোলা নারী ছবির দিকে গভীর অনুরাগের দৃষ্টিতে চাইয়া থাকে, আর বড় বড় দীর্ঘশ্বাস ফালাইয়া কমেন্ট করে - বাহহহহ, কি এখখান ছবি না আঁকছে !!! ভাস্কর্য প্রদর্শনী তে গিয়া নারী মূর্তি গুলার দেহের প্রতিটা বাঁক যেন ম্যগনেফাইং গ্লাস দিয়া দেহে আর বড় বড় দীর্ঘশ্বাস ফালাইয়া কমেন্ট করে - ওয়াওওওওও এর হাতটা সোনা দিয়া বান্ধাইয়া রাকতে হইব। কি সৌন্দর কইরাই না শইল্যের বাঁক গুলাইন ফুডাইয়া তুলছে!!! আর ব্লগেও আমি খুব বালা কইরাই জানি এইতান সুশীল সমাজের মানুষগুলাইনই আমার টি আর পির চরমে পৌঁছাইয়া দিছে; যেই সব লেহা দিসিলাম ওইতান আছাল এহনকার সমাজের অল্প কিছু আউলা ঝাউলা বইখ্যা যাওয়া মাইয়াগো অসংলগ্ন কাপড় চোপড় লইয়া কটাক্ষ, কিংবা পরকিয়া ভাইরাসের বিরুদ্ধে দুই চাইরটা সাবধান বাণী লইয়া কিছু কতা কিংবা দুই চাইরটা ওই অতি দর্শনীয় আলিয়াস ফ্রসিস এর ছবির উপরে কিছু কবিতার লাইন লেখা। মাগো মাগো!!!!! কি দুষটাই না কইরছিলাম। পারলে আমারে চিবাইয়া খায়, এক সুশীল ব্লগের ব্লগাররাতো আমার বিরুদ্ধে আন্দোলনেই গেল যে নরপশুডারে ব্লগের থাইক্কা ব্লক মাইরা দেওয়া হোক। এডমিনের কাছে কি করুন আকুতি? টি আর পি আমার ডিজিট্যাল মিটারের কাঁটা ভাইঙ্গা ফালাইছে। এডমিন সাহেব সুশীল সমাজের আহ্বানে সাড়া দিয়া আমারে অই ব্লগের থাইক্কা ব্লকই কইরা দিল। হায় কপাল!!!! হায় হিপোক্রেসি!!! মনুষ্যত্ব আর বিবেকবোধ কিংবা পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়া লেখাগুলাতে কোন টি আর পি নাই, কোনো সাড়া শব্দ নাই; তহন বিবেক থাকে ঘুমাইয়া। আর যেই নারী নামে কোন একটা পুষ্ট দেহে সুশীল ব্লগাররা বেবাকতে পড়ে ঝাপাইয়া।

আরে কি জ্বালা হইলো? হুদাই আমি মনের আউলা ঝাউলা কথা গুলারে সাজাইয়া শব্দের কবিতা খেলতে যাই। হুদাই আমি বিবেক আর মানবতার কথা শব্দের মালায় গাঁথতে চাই, হুদাই আমি মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণের কতা কইতে যাই, হুদাই হুদাই সমাজের অসংলগ্নতার কথা কইয়া গাইল কুড়াই। মাথার ভিতরে হুদাই হুদাই আউলা ঝাউলা কথাগুলাইন ঘুরপাক খায়, শব্দ দিয়া কবিতার মালা গাঁথতে চায়। আমারে মনে হয় কবিতার জলাতঙ্কে পাইছে, মগজের ভিতরে কোনো একটা পাগলা কুত্তায় কামড়াইছে।

রবিবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১২

প্রেমের হাট

প্রেমের হাট
- যাযাবর জীবন

গড়িয়ে পড়া একপেশে প্রেম
হয়তো ছিল আমারই
তোমার তো প্রেমের হাটে দৈনন্দিন লেনাদেনা
নিত্য নতুন পণ্যের বেচাকেনা
প্রেম কিংবা ভালোবাসা আর নয়তো ছলনা।

হয়ত প্রেমের সংজ্ঞাই ভুল ছিল আমার কাছে
কিংবা হয়তো অন্যরকম কিছু লেখা ছিল
তোমার ভালোবাসার পাঠ্য বইতে,
হয়তো দেহ নির্ভর কিছু কামনা বাসনা
কিংবা ছলনার খেলা অল্প কিছু দিনের জন্য
তারপর ছুঁড়ে ফেলে দেয়া যথারীতি
সঙ্গী বদলের খেলায় নব্য প্রেম রীতি;
ছুঁড়ে ফেলে দেয়া পুরাতন হয়ে যাওয়া বাসি খেলনা
নতুন করে নতুন ভাবে নতুন আরেকজন খেলনা
তারপর আবার কিছুদিনের বন্ধন
আবার বদলানো হলে একটু পুরাতন
এভাবেই কি চলতে থাকে ভালোবাসা-বাসিগুলো?
কি জানি? হয়তো তোমার ভালোবাসার পাঠ্যবইয়ে
এটাই প্রেমের সংজ্ঞা ছিল।

আগে বলনি কেন?
তাহলে হয়তো তোমার সংজ্ঞায় ভালোবাসতাম তোমাকেই
দহনের জ্বালা কিছু কম হত,
এত ভালোবাসাবাসি এত ছলনা আর মোহ
বিধ্বস্ত হয়তো করত না আমাকে এখনকার মত;
টর্নেডোর দাপাদাপি চলে কিছু সময় তারপর চারিদিক নিস্তব্ধ
নতুন খেলনার সাথে চলে তোমার হুটোপুটি তারপর স্তব্ধ
ঝড়ের এত সময় কোথায় পেছন ফিরে দেখার
কিংবা তোমার?
লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ে থাকা প্রকৃতি
কিংবা হৃদয়?

তুমি আমার হতে পারনি যখন এত ভালোবাসা নিয়ে
কখনো কি পারবে অন্য কারো হতে নিয়তিরে সয়ে?
কিংবা হয়তো আমারই বোঝার ভুল
হয়তো নিত্যই তুমি হয়ে থাকো কারো নতুন করে
তোমার প্রেমের বেচাকেনার হাটে।

কিন্তু আমি তো পণ্য হতে চাই নি প্রেমের হাটে
ভালোবেসে শুধু হারাতে চেয়েছিলাম তোমাতে।

শনিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১২

স্বাধীনতা ও বিজয়

স্বাধীনতা ও বিজয়
- যাযাবর জীবন

লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি একটি পতাকা
পেয়েছি আমার বাংলা মায়ের স্বাধীনতা
অনেক বাবার রক্ত ঝরেছে অনেক মায়ের খালি বুক
অনেক বোনের সম্ভ্রম আর অনেক ভাই এর আর্তনাদের মুখ
শুধু একটি পতাকার জন্য
একটি স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য।

অনেক আশায় বেধেছিলেম বুক এদেশ স্বাধীন হলে
রাজাকার আর আলবদরদের দেখে নেব এক হাত
উন্মত্ত উল্লাসে যারা কেটে নিয়েছিল আমারই বাবার দুটি হাত
আমার বোনের সম্ভ্রম লুটেছিল পিশাচ ওই পাকসেনা
রাজাকারগুলো বিকিয়েছিল বিবেক ঘরে ঘরে দিয়ে হানা
বাবা ভাইদের বুকে ছুরি মেরে মা বোন দের ঘর থেকে তুলে
পিম্পের ভূমিকা বেজন্মাগুলোর যাই নি রে আজো ভুলে
ক্ষরণ জাগায় হৃদয়ে আমার যখন তাদের দেখি
কষ্ট হয় বিশ্বাস করতে দেখছি আজ এ কি?
স্বাধীন বাংলার পতাকাবাহী গাড়িতে চড়ে যায়
আজো এই বাংলার মানুষ তাদের এম পি আর মন্ত্রী বানায়
বড্ড কষ্ট লাগে মনে।

মনে পড়ে কত লাখো শহীদের অকাতরে আত্মদান
বাঘের মতন যুদ্ধ করেছিল সম্মুখ সমরে দিয়েছিল প্রাণ
বাঁচাতে মোদের ওই পাক হানাদের বর্বর অভিযানে
ভুলিনি আমরা আজো তোমাদের রেখেছি তোমাদের মনে
দিয়েছিল প্রাণ অকুতোভয়ে বাংলা মায়ের তরে
দামাল ছেলেরা কাতারে কাতারে শহীদের পথ ধরে।

প্রতিটি বছর বিশেষ কিছু দিন আমরা পালন করি
ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহীদদের গুন কীর্তন করি
প্রতিটি বছর স্বাধীনতা দিবসে অর্ঘ্য ঢেলে শহীদ মিনারে
বিজয় দিবসে ফুলে ছেয়ে যায় শহীদ মিনার অঙ্গনে অঙ্গনে
তবু যেন হায় বাংলার আকাশে আজো কাঁদে সব শহীদের আত্মারা
তবু যেন কোথায় শ্রদ্ধা জানাতে কি যেন বাকি রেখেছি আমরা
একটু যদি ভাবি ...............................
রাজাকার আর আলবদর গুলোকে মন্ত্রী বানাব কি?

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো লাল ওই পতাকা
সম্ভ্রম হারানো বোনের সারিতে সবুজ ওই পতাকা
পত পত করে ওড়ে স্বাধীন বাংলার আকাশে
কিছু বিশেষ দিনগুলো তাদের স্মৃতিতে না হয় অর্ধেক নেমে থাকে।

তাদের আত্মার বুকচেরা আর্তনাদ শুনতে কি আমরা পাই না?
তবে কেন ওই রাজাকারদের ফাঁসিতে ঝোলাতে পারি না?

শুক্রবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১২

শুধিব মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ

শুধিব মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ
- যাযাবর জীবন


সূর্য তার অক্ষের ওপর ঘুরতে থাকে অবিরত
ক্লান্তি বিহীন প্রতিনিয়ত
দিন কেটে রাত আসে রাত শেষে ভোর
৩৬৫ দিনে বছরটা ঘুরে আসে আবার ১৬ই ডিসেম্বর;
ভোরের প্রথম প্রহরে লোকে লোকারণ্য শহীদ মিনার
তিরিশ লক্ষ শহীদের স্মৃতির মিনার
২১শে ফেব্রুয়ারি, ২৬শে মার্চ আর ১৬ই ডিসেম্বর
ফুলে ফুলে আচ্ছাদিত বছরের কটা দিন
অবহেলায় পড়ে থাকে বাকি সব দিন
ঠিক যেন আমাদের স্মৃতিগুলোর মত;
গণ কবর গুলো ছেয়ে থাকে ঘাসের আস্তরণে
শহীদের লাল রক্তের সার শুষে শুষে, ঘন সবুজ হয়ে ওঠে
রক্ত আর ঘাসে মিলে আর মিশে
স্বাধীন বাংলার পতাকা রূপে।

বিশেষ এই দিনগুলো আসে বছর ঘুরে ঘুরে
ছোটে কবিতার তুবড়ি ব্লগের বাঁধ ভেঙে
বিজয় গাঁথা লেখা হয় পত্রিকার পাতায় পাতায়
গানের স্বরলিপি বাঁধা হয় নতুন আঙ্গিকে
চারিদিকে শতেক সেমিনারে আর সিম্পোজিয়ামে
ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা আর বিজয় দিবসের নামে
বছরের অল্প কটা দিন মাত্র, স্মরণে স্মৃতি অম্লান
তিরিশ লক্ষ শহীদেরই নাম
বছরের বাকি দিনগুলো?

এখনো ভিক্ষে মাগে পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা দ্বারে দ্বারে
এখনো অনাহারে শহীদ জননীর দিন কাটে মৃত্যুর প্রতীক্ষায়
এখনো দিলীপ কাকারা রাস্তায় ঘোরে দুমুঠো ভাতের অন্বেষণে
এখনো শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা ঝুঝে বিলুপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটার সনে
হায় স্বাধীনতা হায় বিজয়!

সত্যিকারের বিজয়ের আনন্দে উদ্বেলিত হবে বাঙ্গালি জাতি
যেদিন একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারও ভিক্ষে মাগবে না ভাতের অভাবে
যেদিন ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে থাকা পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধাদের হবে আবাসন
বিজয়ের চার দশক পরেও আজো আমরা স্বপ্ন দেখি আসবে সে সুদিন
যেদিন সত্যিই শুধতে পারব আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ।

বৃহস্পতিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১২

দেরি না হয়ে যায়

দেরি না হয়ে যায়?
- যাযাবর জীবন

মনের খুব ভেতর থেকে নানাবিধ ছোট বড় বাসনাগুলো
রিপুর বেড়াজালে পেঁচিয়ে থাকা অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু মোহ
কাম, ক্রোধ, লোভ, ঈর্ষা, ইগো আর দাম্ভিকতা
মোহ, মদ, মাৎসর্য আর মিছে কিছু আত্মম্ভরিতা
ষড়রিপুর প্যাঁচানো কারেন্ট-জালে বেজে থেকে কেমন জানি পর্যুদস্ত
কোন ভাবেই জাল কেটে বের হতে না পেরে বড্ড হতাশাগ্রস্ত
রিপুর ফাঁদে পা দিয়ে মাঝে মাঝে নিজেকে বড়ই ক্লীব মনে হয়
তবুও পশুত্ব কোথায় জানি আমাদের অস্থিমজ্জায় জেগে রয়।

মনুষ্যত্ব যদি কখনো মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে রিপুর জাল থেকে
ঘৃণার আগুনে নিজেকে প্রজ্বলিত করে যাই নিজেরই হাতে
খুব মাঝে মাঝে কখনো বিবেক কথা কইলে মনের সাথে
পশুত্বের মাথায় পেরেক ঠুকি ঝুঝে ঝুঝে ষড়রিপুর সাথে
তবুও সন্তাপগুলো কুঁড়ে কুঁড়ে খায় দহনের জ্বালায়
মানুষের রূপে এক পশু যেন দেখি স্বচ্ছ আয়নায়
বিবেক জেগে উঠলে আজ নয়তো কাল একদিন আসবেই সেদিন
বড্ড ভয় হয় দহনের জ্বালায় কি শোধ হবে সব অপকর্মের ঋণ?

বুধবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১২

মন খারাপ

মন খারাপ
- যাযাবর জীবন

হলোই না হয় রে আমার একটু মন খারাপ
আজ কিংবা কাল
তুই ভালো থাকিস রে চিরকাল

সন্ধ্যের বিষণ্ণতায় ডুবে যাক আমার মন
ঘন অন্ধকার নামুক রাতের আঁধারে
বিষাদ চুয়ে চুয়ে পড়ুক হৃদয় গভীরে
কি আসে যায়?
হিম শীতল রাতের ঝিরি ঝিরি কুয়াশায় সাঁতার কেটে কেটে
হেটে যাব একা একা
নির্জন রাতগুলো কথা কইবে আমার সাথে
কিছু পথ কুকুরের কুই কুই শব্দ
আলসে শীতের হেঁটে চলা পথে

রেললাইনের সমান্তরাল রেখা ধরে হেটে যাব একা একা
এক হাত ঝুলে থাকবে আরেক হাত বাড়ানো স্লিপারের ওপর
মনে মনে ভেবে নেব তোর হাত দুটি ধরা আছে আমার হাতে
শীতের রাতে একটু ওম ওম ভাব মনের মাঝে
দূর থেকে কু ঝিক ঝিক রেলের শব্দ ভেসে আসে
আমি নির্জন পথে হেঁটে যাব একা
রেললাইনের কালো লোহার পাত ধরে

তুই যেন আবার আমার কথা ভাবিস না রে
হিম শীতল রাতের ঘন অন্ধকারে
লেপের ওমে শীত না কাটলে না হয় মনে মনে টেনে নিস আমায়
বুকের গভীরে, সেই আগের দিনগুলোর কথা ভেবে
দূর থেকে ওম দিয়ে যাচ্ছি সে কতদিন হয়ে গেছে
ক্লান্তিহীন অবিরত তোর প্রতিটা পথের বাঁকে বাঁকে
আজ কাল কিংবা পরশু
তুই ভালো থাকিস রে চিরকাল
আমার মন খারাপে তোর কি আসে যায়?

জানতে ইচ্ছে করে

জানতে ইচ্ছে করে
- যাযাবর জীবন

ইদানীং বড্ড অসহায় লাগে রে
যখনি হাত বাড়িয়ে তোকে খুঁজি
মনের কথাগুলো বলতে তোরে

এখন বড্ড মন কেমন করে রে
যখনই মুঠোফোনটা চুপ করে কাঁদে
আমার সাথে সাথে, তোরে মনে করে

এখন আর আমার সকাল বেলায় ঘুম ভাঙ্গে না
তোর ঘুম ভাঙ্গানিয়া মুঠোফোনের শব্দে
সকাল গড়িয়ে কখন যে দুপুর আসে চলে

অসহায় দুপুরগুলো কেমন একা একা লাগে
লাঞ্চের সময় হলে, মাটির থালা ঠেলে ফেলে দেই
তোরে ছাড়া একলা খেতে ইচ্ছে করে না বলে

মনটা বড্ড কাঁদে বিষণ্ণ বিকেলে
রোদটা লালচে হলে, তোর গালে পড়ে না বলে
জানালার পর্দাটা টেনে চুপ করে বসে থাকি নিস্তব্ধ হয়ে

সন্ধ্যে হলেই একা একা রাস্তায় বের হই দুটো পা সঙ্গী করে
এখন আর রিক্সায় চড়তে ইচ্ছে হয় না
এক হাতে তোকে জড়িয়ে না ধরে, তুই পাশে নেই বলে

রাতের গভীরে হৃদয় ছেঁড়া কান্নাগুলো দলা হয়ে উঠে আসে
অপেক্ষার প্রহর কাটে একা একা
শুধু তুই নেই বলে

আচ্ছা বলতো দেখি, তোরও কি এমনই মনে হয়
নাকি ভালোবাসাবাসিগুলো ছিল তোর নিছকই অভিনয়?
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।

মঙ্গলবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০১২

কোথায় মনুষ্যত্ব?

কোথায় মনুষ্যত্ব?
- যাযাবর জীবন

কত দুঃখ বেদনা গ্লানি হতাশা, আর চারিদিকে এতো জরা
এরই মাঝে বিষফোঁড়া হয়ে রয় ষড়রিপু হৃদয়ে ভরা
ক্ষুধিত মানব খাদ্যের তরে ডাস্টবিন খুঁটে কুকুরের সাথে
শীতার্ত শিশুগুলো মায়ের বুকেতে একটুকু ওম খুঁজতে থাকে।

আহা উহু চারিধার মানব সমাজ দেইখ্যা টিভি তে এই তান রূপ
কি দুর্দিন আইলো দেশেতে কইয়া সাবে আর বিবিতে ঢাকে লেপেতে মুখ
কর্তার বিবেক যদি নাড়া দেয় ডরে ডরে কয় বুইজ্ঝা বিবির মন
বাড়িতে কতগুলা পুরানো কাপড় পইড়া আছে সুটকেসে তালা বন
ময়না সোনা কষ্ট কইরা ষ্টোর থাইক্কা এট্টু বাইর কইরো
ছিরা দেইখ্যা দুইটা কাপড় বিলাইয়া একটু নাম কামাইয়ো
ঝামটা মাইরা বিবিজান কয় দেখমুনে কাইল দিনে
অখন আমারে সোহাগ কর শীতে মরতাছি কাম বিনে
হেই কাইলকা আর আহে না কত শীত চইলা গেল
সুটকেসে বন্দি পুরাণ কাপড়গুলাইন তেলাপোকায় কাইট্টা খাইল।

হায়, আজ মনুষ্যত্ব কথা বলে না বোধ বিবেক পড়ে থাকে মড়া
মানুষের মাঝেই মানুষ তবুও ঝরে না একটুও করুণাধারা !!

বোধের ফাঁদে

বোধের ফাঁদে

- যাযাবর জীব



একা একা আবোল তাবোল মনে মনে কথা বলা

একা একাই ঘোরের ঘোরে নিজের মতন পথ চলা

ভাসা ভাসা এদিক ওদিক দুচোখেতে হঠাৎ দেখা

নানা রং এর মানুষ দেখি সাদাকালো চোখে দেখা

পুরোনো এক জীর্ণ মনে কোথাও কোন ভাব পড়ে না

লোকে আমায় পাগল বলে আমার তাতে যায় আসে না।



আমার চোখেই কেন পড়ে ভাতের থালা সামনে নিলে

হাত বাড়ানো শিশু কাঁদে, পেটের জ্বালায় খিদে পেলে

আমার চোখেই কেন পড়ে পথ-শিশু কুঁকড়ে শীতে

গরম জামা গায়ে দিয়ে পথ চলতে গভীর রাতে

তাদের মতই মানুষ আমি, বাঁধা আমি বোধের ফাঁদে

কষ্টগুলো বুকের ভেতর হঠাৎ হঠাৎ গুমরে কাঁদে।

সোমবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১২

গোপন কথন

গোপন কথন
- যাযাবর জীবন

তোর জন্য জলাঞ্জলি আজ সমস্ত ইগো
তোর তরেই ভাসিয়ে দিলেম সকল অহংবোধ
ভালোবাসি তোরেই জেনে তুই রাখিস
যদি আমার এই লেখাটি কোথাও পড়ে থাকিস
প্রেমের মালা গেঁথেছি তখন থেকে ভালোবেসেছি যখন
আমার “বাবুর” জন্যই সকল ভালোবাসা
বলে গেলাম আজ “যাযাবরের” জীবনের গোপন কথন।

অহংবোধ

অহংবোধ
- যাযাবর জীবন

বলতে পারি না আগে মুখ ফুটে লজ্জায়
ইগো, অহংবোধ আমাদের মজ্জায় মজ্জায়
আমি কেন আগ বাড়িয়ে বলব?
ভালো তো দুজনেই দুজনকে বাসি, মনে মনে দুজনেই জানি
ভালোবাসি এ কথাটি আমাকেই কেন মুখ ফুটে বলতে হবে?
ভুল তো দুজনেরই হয়, একথাও তো দুজনেই মানি
তবে প্রতিবারই কেন আমাকেই ক্ষমা চাইতে হবে?
কেন যে এত ইগো, কেন এত অহংকার?
সময় ফুরিয়ে গেলে পরিতাপ আর হতাশার হাহাকার
আহহারে, শুধু যদি সেদিন মুখ ফুটে বলতাম
ইশশ, সেদিন যদি তার কাছে ভুল স্বীকার করতাম;
তবে অবশ্যই আজ জীবনটা অন্যরকম হতে পারত
হয়তো দুজনের হাত দুজনের হাতে থাকতো;
দুই ভুবনে আজ দুইজন পড়ে রই
নির্জনে নিভৃতে বসে স্মৃতিমালা গাঁথি একা একা
না পাওয়ার সব বেদনাগুলোকে একসাথে করে
অস্থিমজ্জায় ঢুকে থাকা ইগোগুলোকে কি আমরা ঝেড়ে ফেলতে পারি না?
অহংবোধের গলা টিপে ধরে ভালোবাসার কথাগুলো বলতে পারি না?
ভুল হয়ে গেলে, সব ভুলে গিয়ে
প্রিয়জনের কাছে ক্ষমা চাইতে কেন এত লজ্জা?
তা না করে পড়ে রই আমরা সাজিয়ে বেদনার শয্যা।

মূর্খ মানব

মূর্খ মানব
- যাযাবর জীবন

এত অহংকার কেন রে তোর
টাকা কড়ি বাড়ি গাড়ি?
পাড়বি কি নিয়ে যেতে সঙ্গে করে
যেদিন অন্যভূবনে দিবি পাড়ি?
এসেছিস ল্যাংটা নিয়ে খালি হাত
মাটির পিঞ্জিরায় নিয়ে এক উড়াল পঙ্খী
যেতে হবে রে ল্যাংটা সাদা কাফনে পুরো জড়িয়ে
সেখানেও থাকবে না রে হাতে কিছু
নিয়ে যাবি মুঠো করা শূন্য হাত।
উড়ে যাবে পঙ্খী দিয়ে তোরে ফাঁকি
মাটির খাঁচাটা পড়ে রবে শুধু
মিশবে আবার সাড়ে তিন হাত মাটির ভেতর
মাটিতে মাটি হয়ে
তবে এত অহংকার কেন রে তোর
হে মূর্খ মানব!!

রবিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১২

মাটির পিঞ্জিরা

মাটির পিঞ্জিরা
- যাযাবর জীবন

চলে যদি যেতেই হবে
কেন রে তবে এত মায়া
এত ভালোবাসা
চলেই যদি যাবি রে তুই
ছেড়ে এই ভবের মায়া
তবে কেন রে বাধা
ভালোবাসার ঘর
এত মমতায় বেঁধেছিলি কেন এই সংসার
চলেই যদি যাবি রে তুই অন্যভূবনের পথে
যাত্রী হয়ে নব যানের ফুল ডালির ওই রথে।

প্রেমের ডালিতে ফুলগুলো সব
সারি সারি পড়ে রয়
সংসার নামক বন্ধনে আজ
মায়াগুলো শুধু রয়
তবুও বেঁধেছিলি তুই মনের ঘরেতে
ভালোবাসায় সাজিয়ে ঘর
সংসারের বেড়াজালে বেঁধে আপন করলি
ছিল যে তোর অনেক পর।
চলে যদি যেতেই হয় রে একদিন ছেড়ে দিয়ে সব
তবে কেন মিছে মায়ায় বেঁধেছিলি সুখের ঘর।

মাটির পিঞ্জিরা আজ মাটির তলায়
উড়ে গেছে পাখি
শূন্য খাঁচা পড়ে থাকে শুধু
দিয়ে গেল সবেরে ফাঁকি;
উড়িয়ে দিয়ে মায়া মমতা প্রিয়জনেরই মাঝে
কাঁদিয়ে ভাসিয়ে প্রিয়জনেরে, বুকেতে বড়ই বাজে
ভবের জগতে এসেছিল তুই ল্যাংটা শূন্য হাতে
সাড়ে তিন হাত মাটির গর্তে ফিরে গেলি সেই শূন্য হাতে
কাঁদিয়ে সব প্রিয়জনে
ভাসিয়ে চোখের জলে।

চলেই যদি যাবি রে তুই
মায়া ছেড়ে এই ভবের
সংসার জালে জড়িয়েছিলি কেন
অশ্রুতে ভাসিয়ে সবের।

বৃহস্পতিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১২

মোবাইল এর যন্ত্রণা

মোবাইল এর যন্ত্রণা

- যাযাবর জীবন



মোবাইল নামক এক আপদ বয়ে যাচ্ছি সেই কতদিন ধরে

একি আপদ না বিপদ কিছুতেই মাথায় ঢোকে না

হরদম বেজে যায়

ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং

উফফ জীবনটা মাঝে মাঝে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে

মোবাইলের যন্ত্রণাতে

সময় আর অসময়ে।



সারা রাত জাগরণে সকালের আলস্য ঘুম

মাত্র চোখ লেগেছে কি লাগে নি

স্বপ্ন জগতে তখনো যেতে পারি নি

ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং

ঘুমের ঘোরেই মুঠোফোন তুলে

ঘুম-জড়িত কন্ঠে বলি, হ্যালো......

ওপাশ থেকে কর্কশ কন্ঠ ভেসে আসে...

ওই মিয়াঁ, কতক্ষণ ধইরা ফুনাইতাছি ফুন দরুইন না কেন?

অক্ষণে ম্যা বাইরে আইবার কইন, বিলের মাছ মইরা সাফা...

কোথায় কল করছেন ভাই? ঘুম জড়িত কন্ঠে সুধাই,

এইডা কি কাইল্লাকইর না?

হা কপাল আমার!!!!!

না রে ভাই, রঙ নাম্বার বলে অটোমেটিক ঘুমের ঘোরে চলে যাই

হয়তো মাঝে মাঝে চাপ লেগে অফ হয়ে যায় মুঠোফোন, অজান্তেই

ঘুম ভাঙ্গে দেরি করে, হাঠাৎই

মুঠোফোনের দিকে চাই, চমকে উঠে আবার ওপেন করি

মিসকল এলার্টের মেসেজ আসতে থাকে একের পর এক

প্রয়োজনীয় কলব্যাক সেরে কিছু বকাঝকা খেয়ে বাথরুমে ঢুকি

শান্তি নাইরে ভাই, ক্রিং ক্রিং ক্রিং ক্রিং

দৌড়ে বের হই আধা ভেজা গা মুছতে মুছতে

ধরার আগেই কেটে যায়

কলব্যাক করি অচেনা নাম্বারে

ডায়াল-কৃত নাম্বারটিতে এই মুহূর্তে সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না

নাস্তার টেবিলে বসি আবার শুরু হয় ক্রিং ক্রিং

আবার নীরবতা

নামাজে দাঁড়িয়েছি তবে তো কথাই নেই, সবাই যেন ঝাঁপিয়ে পড়ে

ঠিক ওই সময়ই দরকার হয়ে পড়ে আমাকে

অলস সময়ে মুঠোফোনটি পড়ে থাকে খুব চুপেচাপে

যেন তার কোন অস্তিত্বই নেই কোথাও।



বড্ড যন্ত্রণার মধ্যে বসবাস এই মুঠোফোন নিয়ে

এরে না পারি বইতে না পারি ছাড়তে

চরম বিতৃষ্ণায় তাকিয়ে থাকি খুব মাঝে মাঝে

মুঠোফোনের দিকে চেয়ে

কতবার যে আছাড় খেয়েছে আমার হাতে

কতবার মোবাইল রিপেয়ার শপে

এখন আর তার হিসেব করতে পারি না

শুধু মাঝে মাঝে মনে হয় পুষে যাচ্ছি সাথে করে

এ কেমন এক যন্ত্রণা।

বুধবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১২

অদৃশ্য কাঁটাজাল

অদৃশ্য কাঁটাজাল
- যাযাবর জীবন

অদৃশ্য এক কাঁটাজালের বেড়ায় আবদ্ধ হয়ে আছি আমরা
আস্টেপিস্টে চারিদিক থেকে বেধে রেখেছে
আমাদের বোধ বুদ্ধি মূল্যবোধগুলি
কে যেন চারিদিক থেকে
অদৃশ্য এক কাঁটাজালের ঘেরে।

আমাদের চলা ফেরা, মন খুলে কথা বলা
আর মনের অনেক গহীনের ভাবনাগুলোও
প্রকাশ করা যায় না কারো কাছে
বাধা পড়ে থাকে কোথায় যেন এক
কাঁটাজালের অদৃশ্য বন্ধনে।

মনের ভেতরের কিছু দুঃখ ব্যথা বেদনাগুলো
কিছু কিছু খুব বেশি গোপন ওই ভাবনাগুলো
প্রকাশ করা যায় না কারো কাছে
কোথায় যেন বাঁধা পড়ে থাকে
এক অদৃশ্য কাঁটাজালের বন্ধনে।

কিছু ব্যক্তিগত মান অভিমান, খুব গোপন কিছু অপমান
সয়ে যেতে হয় নীরবে নিভৃতে
নিজেকে মনের কাছ থেকে লুকিয়ে বয়ে চলি নিজের মাঝে
ঢেকে রাখি খুব যতনে আড়ালে আবডালে
এক অদৃশ্য কাঁটাজালের বেড়ার আড়াল তুলে।

মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১২

ঝাপসা স্মৃতিগুলো

ঝাপসা স্মৃতিগুলো
- যাযাবর জীবন

আয়নাতে কার মুখ দেখি
স্মৃতিগুলো ঝাপসা হয়ে এসেছে নাকি?

সযতনে তুলে রাখা কাঁচের আয়নাতে
স্মৃতিগুলো বন্দী করে রেখেছিলেম বাক্সে ভরে।

আজ অনেকদিন পর আয়নাটা বের করে দেখি
ধুলো জমেছে স্মৃতির পাতায়, ধুলো পড়েছে আয়নায়
পারদ উঠে গেছে নাকি?

স্মৃতির মণিকোঠায় রেখেছিলেম যাকে সযতনে
পারদের সাথে সাথে মুছে গেছে তার ছবি
ঘষা কাঁচের আয়না থেকে।

স্মৃতিতেও অস্পষ্ট যেন আজ তার ছবি।

এমনই হয়, এমনই বোধহয় হতে হয়
গুরুজনেরা কয়
চোখের আড়ালে মনের আড়াল হয়ে রয়।

তাহলে আর আমার দোষ কি?
কিংবা পারদ উঠে যাওয়া, ঘষা কাঁচের আয়নার।

সময়

সময়
- যাযাবর জীবন

এখন আমার সময়গুলো অন্যরকম
এখন আমি হয়ে পড়েছি অন্যরকম
দিন আর রাতের বিভেদ মনে কোন দাগ ফেলে না
কোথা দিয়ে সূর্য ওঠে কখন যে চাঁদ ডোবে বলতে পারি না
কেমন এক ঘোরের মাঝে কাটছে অলস দিনরাত্রি।

প্রহরগুলো ঝিমধরা
সময়গুলো ছন্নছাড়া
আধো ঘুমে আর জাগরণে
কেমন জানি পাগল, পাগল, পাগল পারা।

ঘুমে কাটে সোনালী সকাল বেলা
ম্রিয়মাণ দুপুরের সোনা রোদ্দুর
ঝিমধরা আলসে সোনালু বিকেল
ধুসর কুয়াশার চাদরে মন খারাপের সন্ধ্যা
আর তারস্বরে ডাকতে থাকা রাতের আর্তনাদ
কিছুই যেন দাগ ফেলে না মনের গভীরে
শুধু কাটানো বেঁচে থাকার দিন আর রাত্রিগুলো
এখন আমার সময় কাটে অন্যভাবে
আধো ঘুমে আধো জাগরণে।

সোমবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১২

এখানে ওখানে

এখানে ওখানে
- যাযাবর জীবন

ওখানে পরিকল্পনা সাজে সব বড় বড় কাজের
এখানে ব্যবহার করা হয় লোভী কিছু বোকাদের
ওখানে অস্রের ঝনঝনানি আর পরিকল্পনার হৈ হুল্লোড়
এখানে পরিকল্পিত গুদাম লুট, সাজায় বকরিরে চোর;
ওখানে বসে পরিকল্পনা বিঘের পর বিঘে জমি লুটপাট
এখানে ব্যবহৃত হয় বস্তির কিছু আনাড়িরে করে হাত
ওখানে বিবেক কথা বললে লাশ পড়ে কারো হাতে
এখানে টাকার খেলা, ধামাচাপা নানা অজুহাতে;
ওখানে পরিকল্পনা হয় দখলের উন্মাদনায় নতুন চরের
এখানে আগুন জ্বলে, দা ছুরি বল্লম হাতে ব্যবহৃত মানুষের
ওখানে উন্মাদনার সমাপ্তি চর দখলের, পড়ে থাকে কিছু শব
এখানে টাকার খেলায় ধামাচাপা পড়ে সব, বিবেক হয়ে রয় নীরব।

ওখানে আনন্দ, মদমাছিদের হুল্লোড়ে কান পাতা দায়
এখানে অভুক্ত কিছু নরনারী ভিক্ষের হাত বাড়ায়
ওখানে মদের আসর শ্যাম্পেনে করে স্নান
এখানে পুতিগন্ধময় সুয়ারেজের লিক করা পানি পান;
ওখানে নারী ক্রয় বিক্রয় কিছু লোলুপ হায়েনার হাতে
এখানে নারীত্বের অবমাননা দুমুঠো ভাত জোটানোতে পাতে
ওখানে সব সাহেব আর মেমসাহেবদের পার্টির গুঞ্জন
এখানে মোসাহেবি তেল মারা আর পদলেহন;
ওখানে মনুষ্যত্ব টাকাতে বিকোয়
এখানে বিবেক ঘুষের বিষে নিরব হয়ে রয়।

প্রতীক্ষার প্রহর শেষে

প্রতীক্ষার প্রহর শেষে
- যাযাবর জীবন

দুই দু গুনে চারের নামতা জপার দিনগুলো শেষ হয়েছে কবে
প্রতীক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে নামতা গোনা ভুলে গেছি
রাতের প্রহর গোনা হয় না এখন আর আগের মতন করে
সূর্য ওঠে চাঁদ ডোবে সৌরজগতের নিয়ম মেনে
কি এসে যায় এখন আর প্রহর গুনে!!

ওই দূর পাহাড়ি বনের ধারে জুম চাষ হয় নিয়মিত
ওই ঘন বনের টাইগার ফার্ন ছায়া দিয়ে যাচ্ছে বনের বাঘেরে
ওই জল থপ থপ জলহস্তী জলকেলি করছে
ওই দূর আকাশে কিছু গাংচিল ডানা মেলে উড়ে চলছে
প্রকৃতির শোভা বাড়াচ্ছে , তাতে আমার কি আসে যায়?

দূর হিজল গাছের খড়ের পাতায় তোরই বোনা বাসা
স্বামী আর ছানা পোনায় বেধেছিস সংসার তোর
দিকভ্রান্ত এক উদ্ভ্রান্তের প্রতীক্ষায় তোর কি আসে যায়?
কর্ম ব্যস্ততার সংসার-চক্রে সারাদিন মান তোর গাধার খাটনি
সে তো আমি বুঝি;
তবুও মনের গহীন কোনে কেন প্রতীক্ষার প্রহর গোনা
বিপুল বেদনায় ভারাক্রান্ত উদ্ভ্রান্ত চেহারা,
সেই গোলাপি ঠোঁট, তীক্ষ্ণ দাঁতের আদরের দংশন
আহ্লাদী ঠোঁট বাঁকানো ঝুঁকে থাকা মুখ আমার টেবিলের ওপর
পাঁজরের হাড় ক্ষয় করা চাপে জড়িয়ে ধরা দুটি হাত
ঠোঁটের গভীরে ঘন নিঃশ্বাস আর ক্ষণে ক্ষণে আদরের দংশন
সে কি পরাবাস্তব জগতের কোন এক সময় ঘটে যাওয়া স্বপ্ন?
আমি বুঝি না
বড্ড অচেনা মনে হয় আমাকে নিজেরই
বড্ড অচেনা সময়গুলো বাস্তব আর কল্পনারই
যখন থাকি কল্প জগতে তোরই সাথে মিলেমিশে।

ভাবালু নিশির কালরাত শেষ হবে কবে
আমি জানি না
তবে প্রহর আর গুনব না
প্রতীক্ষার কিংবা অপেক্ষার
কারো জন্যই
যুগ পার হয়ে যাক আলোক গতিতে,
তোরে খোঁজার পালা শেষ হয়েছে!
হাতের রেখায় ভাগ্য আছে লেখা
কপালেতে ভাগ্য ছেপে দিয়ে দিয়েছেন বিধাতা
আমিও তাই আজ ভাগ্যকে মেনে নিয়েছি
সময়কে ভাগ্যের হাতে সপে দিয়েছি।

হিসেব

হিসেব
- যাযাবর জীবন

ঘুমে কাটে সোনালী সকাল বেলা
ম্রিয়মাণ দুপুরের সোনা রোদ্দুর
ঝিমধরা আলসে সোনালু বিকেল
ধুসর কুয়াশার চাদরে মন খারাপের সন্ধ্যা
আর তারস্বরে ডাকতে থাকা রাতের আর্তনাদ
কিছুই যেন দাগ ফেলে না মনের গভীরে
শুধু অলস কাটানো বেঁচে থাকার দিন আর রাত্রিগুলো
আধো ঘুমে আধো জাগরণে
কেমন যেনো শূন্যতায় ঘেরা
আসলে কিছুই হয়নি আমার দ্বারা
মেলাতে পারি নি জীবনের হিসেব
হিসেব বিজ্ঞানের ছাত্র নামক কলঙ্ক
জীবনের ডেবিট আর ক্রেডিট এর খাতাটায় চোখ পড়লে
দেখি বিশাল এক "শূন্য"।

রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১২

স্মৃতিগুলো কথা কয়

স্মৃতিগুলো কথা কয়
- যাযাবর জীবন

অনেক অনেক দিন তো পাড় হয়ে গেছে
দেখা হয় নি তোর সাথে চোখে চোখ রেখে
আমি কিন্তু এখনো ঠিক আগের ঠিকানাতেই আছি
তোকে এখনও সেই আগের মতনই ভালোবাসি
যেভাবে দেখে গিয়েছিলি ঠিক আগের অবস্থানে
ইদানীং বড্ড দেখতে মন চাইছেরে তোরে
চলে আয় না একদিন খুব হঠাৎ করে চমকে দিতে আমাকে
ঠিক সেই আগের দিনগুলোর মতন করে।

কথা না হয় প্রথমে নাই কইলি কিছুক্ষণ
চুপটি করে বসে থাকিস টেবিলের ওপর মাথা রেখে
তোর অভিমানী ঠোঁটটি বাঁকা করে
মুখে কোন কথা না বলে
একমনে চোখে চোখ চেয়ে চেয়ে
সেই আগের মতন করে
আমি না হয় চেয়ার থেকে উঠে গিয়ে অভিমান ভাঙাবো
তোর মাথাটি চেপে ধরে, আমার বুকের পরে।

মনে আছে তোর? আমার দিকে ঠায় চেয়ে চেয়ে
তোর চোখদুটি আপনাতেই ভিজে উঠত লোনাজলে
না দেখার ভান করে আমি কাজ করে যেতাম কম্পিউটারে
কীবোর্ডে হাত রেখে, মনিটরের দিকে চেয়ে
অবশেষে না পেরে, অশ্রু মুছিয়ে দিতেম তোর
আর বলতেম কাঁদিস কেন রে বাবু?
এখনো যখন বেঁচে আছি
বেঁচে থাকবো আরো কিছুদিন ধরে।

আমি ঠিক জানি অভিমান আর অহংবোধ
তোকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে, ঠিক আমারই মতন করে
কি করব বল তো দেখি? আমার তো তোর কাছে যাবার রাস্তা নেই
রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিলি তুই নিজেই বড় এক খাল কেটে
কাঁটাতারের বেড়ায় আলাদা করে নিয়েছিলি নিজেকে আমা থেকে বহু দূরে
মান অভিমানে পুড়ে পুড়ে আর কত কষ্ট পাবি নিজে আর পোড়াবি আমাকে
তার থেকে চলে আয় না একদিন খুব হঠাৎ করেই চমকে দিতে আমাকে
ঠিক সেই আগের দিনগুলোর মতন করে।



শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১২

ক্ষরণ ও ভালোবাসা

ক্ষরণ ও ভালোবাসা
- যাযাবর জীবন

শুভ্র সাদা
সে তো সবারই পছন্দের রঙ
ভালোবাসা কিংবা বেলি অথবা একগুচ্ছ সাদা গোলাপ
তবে সাদা যে আমার সয় না
বড্ড পোড়ায় শুভ্র সাদা
ঠিক তোরই মতন;
টকটকে লাল
ক্ষরণ কথা কয় রক্তের ভেতর
বেদনা কিংবা রক্তজবা অথবা একগুচ্ছ লাল গোলাপ
সে তো আবার তোর সয় না
বড্ড কাঁদাস তুই আজকাল
দিয়ে ভালোবাসার দহন।

শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১২

নির্লিপ্ত বিবেক

নির্লিপ্ত বিবেক
- যাযাবর জীবন

রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে আছে অন্ধ লোভের বাস
কাম, ক্রোধ আর ঘৃণার সব গোপন অভিলাষ
মদ, মোহ আর মাৎসর্য একসাথে মিশিয়ে বিষের পেয়ালায়
রিপুর নেশায় বুঁদ হয়ে পান করে যাচ্ছে মানুষ আজ নির্দ্বিধায়।

একটুও ক্ষরণ হয় না মনুষ্যত্বের
পশুতে পরিণত বোধ বিবেকহীন মানুষের
ঢেউ ওঠে না বিবেকের রক্ত পেয়ালায়
রিপুগুলো সব নিজেরই রক্ত বিষিয়ে দিচ্ছে হিম নির্লিপ্ততায়।

কামের লিপ্সায় কিবা নর কিবা নারী
দেহের ক্ষুধা মেটাতে ভাদ্রের কুকুর আর কুকুরী
মদের টেবিলে আছড়ে পরছে বোতলের পর বোতল
জুয়ার নেশায় জলাঞ্জলি মনুষ্যত্ব সকল।

লোভের আগুনে পুড়ে উজাড় বনের পর বন
হিংসায় জ্বলে পুড়ে একাকার পরশ্রীকাতর মন
উগরে দেয়া ক্রোধের অনল এসিডের বোতলে
মনুষ্যত্ব মেলা ভার খুঁজে হৃদয়ের অতলে।

জলাঞ্জলি বিবেকের, আজ মানুষ হয়েছে রিপুর দাস
মানুষের পৃথিবীতে যেন আজ কিছু নরপশুর বসবাস
পরাস্ত বিবেক, আজ জয়ী হয় ফাঁপা ষড়রিপুর অভিলাষ
মনুষ্যত্ব পুড়ে দগ্ধ, পড়ে থাকে অবহেলায়; বিবেকের লাশ।

ওকাল, সেকাল আর একাল

ওকাল, সেকাল আর একাল
- যাযাবর জীবন

এনালগ প্রেমের যুগ শেষ হয়ে গেছে কবে
ক্রিং ক্রিং এনালগ টেলিফোনের ঘণ্টা এখন আর বাজে না
বাবা মাকে লুকিয়ে লুকিয়ে দৌড়ে ছুটে গিয়ে
ছো মেরে ক্রাডল থেকে ফোন তুলে নেয়া
চুপিসারে ফিসফিসিয়ে প্রেমিকের সাথে দুটো কথা
দুকথায় এ সপ্তাহের মিলন স্থান আর তারিখ ঠিক করে নেয়া
সে যুগ কি আর আছে?
এনালগ তো কবেই মরে গেছে।

চিঠি লেখার যুগ শেষ হয়ে গেছে তারও অনেক অনেক কাল আগে
চুপিসারে বইয়ের ফাঁকে মনের কথাগুলোকে কাগজে কলমে
ফুটিয়ে তোলা সারা রাত জেগে জেগে
আর বইয়ের ভাঁজে সকলের আড়ালে তুলে দেয়া প্রেমিকের হাতে
বই এক্সচেঞ্জ কিংবা নোটের আদান প্রদানের মাঝে মাঝে
কত কথা কত সুখ গাঁথা লেখা থাকতো কাগজের ভাঁজে ভাঁজে
সে যুগ কি আর আছে?
চিঠি লেখার দিন তো কবেই শেষ হয়ে গেছে।

এখন সময় ডিজিটাল যুগের
মুঠোফোনের বদৌলতে সারা রাত জেগে জেগে প্রেমের আলাপন
প্রেমিক প্রেমিকা এখন আর নির্দিষ্ট নয়, বদলের খেলা চলে অনুক্ষণ
বাবা মা কে থোড়াই কেয়ার, রাতের আলাদা ঘর আলাদা বিছানা
কোলবালিশটাকে প্রেমিকা মনে করে, ডিজিটাল প্রেম করে
কত সুবিধা ইদানীং মুঠোফোন কোম্পানিগুলোর?
রাতের সাশ্রয়ী কলরেট, প্রেমের তুবড়ি ছোটানোতে
তাই হয়তো ইদানীং, প্রেমগুলোও ডিজিটাল হয়ে গেছে
পছন্দ না হলেই বদলে ফেলা, প্রতিদিন নতুন নতুন মুঠোফোনের মডেলের মত
হায় ডিজিটাল প্রেম
জয় জয়কার
বদলে গেছে সময়, বদলে দাও পৃথিবী
প্রেম এখন নতুন প্রকার খেলনা, বদলে গেছে প্রেমের ধরন
ভালোবাসা ইদানীং আর হৃদয়ে জাগায় না ক্ষরণ
আগের মতন করে, পড়ে নেই আমরা সে আদিকালের জগতে
এক রঙ নাম্বারের বদৌলতে প্রেমের বান ডাকে
একটু অনুরাগ অনুযোগ কথায় কিংবা আলাপনে
আছড়ে ভাঙ্গে মুঠোফোন, বদলে যায় প্রেমিকা
স্থান নেই তার আর মনের কোনো কোণে
এখন নিত্য নতুন প্রেমিকার সন্ধান ডিজিটাল যুগের বদৌলতে।

আমরা এনালগ থেকে ডিজিটালে বদলে গেছি
সাথে সাথে বদলে গেছে আমাদের চিন্তা, ভাবনা, চেতনা
আর মানবিক মূল্যবোধগুলো;
আমরা এর পরিণাম সইতে পারব কি?
ক্ষয়িষ্ণু মানবতা কাঁদে বিবেক আর মূল্যবোধের বিসর্জনে।

বৃহস্পতিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১২

অণুকথন – ৬

অণুকথন – ৬
- যাযাবর জীবন



আলো আঁধার:

এখন জ্যোৎস্না আমায় চারিদিক থেকে ঘিরে রয়
ভাবিস নে তুই, অমাবস্যাও আমার কিন্তু সয়
জ্যোৎস্নালোকিত রাত কিংবা জোনাক জ্বলা অন্ধকার
এখন কিন্তু হয়ে রয়েছে অংশ জীবনেরই আমার
দেরিতে হলেও মেনে নিয়েছি
তাইতো এখন বোধহীন হয়ে পড়েছি
কি আসে যায় আলো কিংবা আঁধারে আমার?


ভালোবাসা:

ভালোবাসলে কাঁদতে হয়
এ কোনো নতুন কথা নয়
তবুও আমরা ভালোবেসে যাই প্রতিদিন
কাঁদার জন্য
কিংবা আমরা কেঁদে মরি প্রতিদিন
ভালোবাসার জন্য।



সাহসিকতা:

আরেকটু বসে যা না কিছুক্ষণ পাশে একটু
কথা না হয় নাই বা কইলি কিছু
অনুভবের সাহসী হাত রাখ আমার বুকে
ভালোবাসার ঢিপ ঢিপ শব্দগুলোকে শুষে নিয়ে যা
চিরকালের মতন
যদি দুঃসাহসী না হতে পারিস
জড়িয়ে রাখার মতন।



খোঁচা:

ছেড়া হৃদয়ে সুঁই ফোটাচ্ছিস
রক্ত বেরোবে কি?
প্রেমের আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিস
ভস্মে ঢালছিস ঘি।



বন্ধন:

হরিৎ জ্যোৎস্নায় ভেজাতে পারিস নি প্রেমের সরোবর
কালো অমাবস্যায় কেন তবে বাঁধতে চেয়েছিলি ঘর।

পরশ্রীকাতরতা

পরশ্রীকাতরতা
- যাযাবর জীবন

আমার মাথার চুল উঠে গেছে সব
তবু কাক ঠোকরায় তোরই মাথায়......
.................................কেন রে?
আমার গাল ভরে আছে দাঁড়ির জঙ্গলে
তবু তোর গালে উকুন দৌড়ায়......
.................................কেন রে?
খোস পাঁচড়ায় আমার গা ভরা
তবু তোরই শরীর চুলকায়......
...........................কেন রে?

একবার নিজের মনে “কেন” গুলোর উত্তর খুঁজে দেখ
পরশ্রীকাতরতার পরাকাষ্ঠা থেকে বের হয়ে আয়
নিজের জীবন অনেক সুন্দর
অন্যের খুঁত যদি ধরতে না হয়।

বুধবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১২

জ্যোৎস্না রাতে আজো তোকে মনে পড়ে

জ্যোৎস্না রাতে আজো তোকে মনে পড়ে
-যাযাবর জীবন

কবে যে ওই চাঁদের পানে হারিয়েছিলাম মন
যেদিন থেকে আলাদা দু পথ দু দিক আমরা দু জন
জ্যোৎস্না রাতে চাঁদের সাথে প্রেম হয়েছে সেদিন থেকে
যেদিন মোদের আলাদা দু পথ দু দিক পানে গিয়েছে বেঁকে।

এখন আমি একলা থাকি সঙ্গিনী ওই চাঁদ
সঙ্গোপনে এড়িয়ে চলি ভালোবাসার ফাঁদ
কুহকিনী ওই হাতছানি যখনই আসে স্মরণ
মনে হয় তোরই কথা হৃদয়ে নামে ক্ষরণ।

খোলা ছাদে পাটি পেতে চাঁদের সনে মিশে
জ্যোৎস্না মাখি সারা রাতি হারিয়ে আমি দিশে
বিছানাটা পড়ে থাকে শূন্য একা ঘরে
ছাদের ওপর চাননিস্নানে জ্যোৎস্না গায়ে পড়ে।

আকাশেতে হাসতো চাঁদ চোখ জ্বালানো অগ্নি
অন্ধকারের রাতের বেলায় তুই ছিলি মোর চাঁদনি
তোর মাঝেতেই দেখেছিলাম স্বপ্ন-পুরীর আলো
জ্যোৎস্না থেকে তোকেই আমার লাগত বেশি ভালো।

রাত্রিগুলো চাঁদের সাথে করত লুটোপুটি
জড়িয়ে ধরে আমায় যে তুই করতি হুটোপুটি
কখনো কি ভেবেছিলেম আমায় ফেলে যাবি
একলা পড়ে চাঁদনি রাতে তোরই কথা ভাবি।

খেলায় খেলায় কাটিয়েছিলেম কত না এমন রাত
কেমন করে কোথা দিয়ে হত আমাদের প্রভাত
ভুলি নি আজো সে রাত গুলোকেএতদিনের পরে
সত্যি করে বল না রে তুই, তোর কি মনে পড়ে?


মঙ্গলবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১২

বোধের যন্ত্রণা

বোধের যন্ত্রণা
- যাযাবর জীবন

কিছু কথা রয়ে যায় মনের অনেক অনেক গভীরে
মুখ ফুটে বলা যায় না কাওকে
গোপন কিছু কথা প্রতিটি মানুষেরই খুব নিজের
লজ্জার কিছু কথা থাকে মনের ভেতর
নিজ হতেই আড়াল করে সংগোপনে
ঘুমিয়ে মনের অনেক অনেক গভীরে
বলতে পারা যায় না কাওকে
তবুও খুব মাঝে মাঝে চলে আসে মনের মাঝে
কেমন এক বোধের যন্ত্রণায় হারিয়ে ফেলি নিজেকে
ঠিক বোঝানো যায় না কথায়
ঠিক ফুটে ওঠে না ভাষায়
তবে বড্ড পোড়ায়
খুব মাঝে মাঝে।

মনের চেতন অনুভূতিগুলো আড়াল করে রাখতে চায়
মনের সে না বলা কথাগুলো, নিজের কাছ থেকেই
মনের ঘরে তালা দিয়ে
মনের অচেতন অনুভূতিগুলো খুলে ফেলে তালাবদ্ধ বাক্স
কোন চাবি ছাড়াই, যেন পোড়াতে দহনে
খুব মাঝে মাঝে
বড্ড পোড়ায়
কান্না ঝরায়
ক্ষরণ কথা বলে যেন নিজের সাথেই
অনুতাপের দহনে জ্বলে।

মানুষ হওয়ার যন্ত্রণা অনেক
অনুভূতি যদি হয় মানবের
ক্ষরণ আর অনুতাপের
না বলা সব লুকিয়ে রাখা একান্ত লজ্জার কথাগুলো মনে হলে
না বলা সব বোধের অনুভূতিগুলো জানালা খুলে দিলে
এক এক সময় মনে হয় কুকুর জীবন হয়তো অনেক ভালো
তারস্বরে ঘেউ ঘেউ চীৎকারে উড়িয়ে দেয়া যেত মনের সব না বলা কথাগুলো
মরে মরে প্রতিদিন বেঁচে থাকার চাইতে সেও হয়তো হতো অনেক ভালো।




ঝিমানো বিকেল

ঝিমানো বিকেল
- যাযাবর জীবন


খাঁ খাঁ দুপুরগুলো অলস বিকেলে গড়ায়
জানালার শার্শিতে ঝলকানো রোদে লাল রঙ ধরে
নীচে প্রাত্যহিক জীবনের কর্মব্যস্ততা
চায়ের স্টলে নিয়মিত খদ্দেরগুলো
জুতো ঠিক করছে আপন মনে মুচি বুড়োটি
অনবরত গাড়ির আনাগোনা
কান ঝালাপালা করা হর্নের শব্দ দূষণ
আমার যেন সময় কাটে না ঝিমধরা বিকেলে
বার বার মুঠোফোনের দিকে চোখ যায়
ইদানীং জিহ্বা আড়ষ্ট, কথা বেজে বেজে যায়
তবু মন কাঁদে প্রতীক্ষায়
চোখ থাকে মুঠোফোনের পর্দায়
সোনালী বিকেলে স্বর্ণালী খুশির ঝলকের প্রতীক্ষায়
যদি বহু প্রতীক্ষিত হারিয়ে যাওয়া নাম্বারটি ভেসে আসে!
নীল কষ্টগুলো রয়ে যায় বন্দী, মুঠোফোনের নীল পর্দায়
হেলানো সূর্যের কিরণে চিকচিকে অশ্রুজল অবিরাম বয়ে যায়
ক্ষরণ ধীরে ধীরে লালিমা ছড়ায় পশ্চিম দিগন্ত জুড়ে।

সোমবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১২

ভবিষ্যৎ

ভবিষ্যৎ
- যাযাবর জীবন

একদিন আমাদের সময় থাকবে না গল্প শোনার
একদিন আমাদের সময় হবে না কবিতা পড়ার
একদিন আমরা হারিয়ে যাব নিজেদের মাঝ থেকে
একদিন আমরা একাকীত্বের মাঝে খুঁজে পাব নিজেকে
একদিন গর্জে উঠবে মানুষের মাঝে সব পশুত্ব
একদিন সময়ের কাছে পরাজিত হবে মনুষ্যত্ব
একদিন ভুলে যাব বাবা মা পরিবার আর সন্তান
একদিন অনর্থের অর্থই হয়ে উঠবে মহা মূল্যবান
সে দিন আর খুব বেশি দূরে নয়
যেভাবে অর্জিত হচ্ছে তিলে তিলে পাপের সঞ্চয়
সময়ের হাত ধরে চলেছি আমরা আজ যেদিকে
মানুষ আর মানুষ রূপে খুঁজে পাবে না নিজেকে।

রবিবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১২

মনুষ্যত্ব

মনুষ্যত্ব
- যাযাবর জীবন


বাজানগো! আম্মাগো!!!
বড্ড জার করে বাজান
বড় শীত করে গো মা
একটা গরম কাপড় দিবেন?
কত পুড়াইনা কাপড়ই তো ফালাইয়া দেন আফনেরা
বড্ড জার গো, এককেরে হাড্ডির ভিতরে কামড়ায়
দেন না গো আফনেগো পুরাইন্না একটা গরম জামা
একটু জার কমাই।

শীতার্তের আর্তনাদ!!!
পৌঁছায় কি কানে কখনো আমাদের?


লেপ মুড়ি দিয়ে ওম বিছানায় শুয়ে
কিংবা কাল্পনিক দুঃখ কষ্টের বেদনা বিধুর আর্ট ফিল্ম দেখতে দেখতে
দরজা জানালা বন্ধ ওম ঘরে সাহেবের পায়ের কাছে হিটার চলছে......
বেগম সাহেবার লেপের ওম থেকে মুখ বের করে আদুরে ডাক
বন্ধ কর না গো টিভিটা, আমাকে একটু জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকো
শীতে বড্ড কাহিল হয়ে পড়েছি, ওম নেব তোমার বুকে।
হিটারের গরমেই যেন মাঝে মাঝে একটু যেন বেশি উষ্ণ হয়ে পড়ে কামরা
বাইরে শীতার্ত রাত কুয়াশার অন্ধকারে ঘেরা
ঘরে বসে আর্ট ফিল্ম দেখা সাহেব ঘেমে ওঠেন
আর্ট ফিল্মের আর্টিষ্টিক স্টাইলে গলা ফাটানো চিৎকার-
ওই বান্দির ঝি!!
কই গেলি?
হিটারটা বন্ধ কইরা দিয়া যা।
সাহেব এখন ফিল্মের দুনিয়ায়
হাত বাড়িয়ে পাশের হিটার বন্ধ করতে কি মন চায়?
বেগম সাহেবা গলা মেলায়...
ওই সকিনা, ওই বান্দির ঝি, কই গেলি?
হিটারটা বন্ধ কইরা দিয়া যা
সাবের গরম লাগতেছে শুনছ না?

রান্নাঘরের শীতল মেঝেতে পাটি পেতে শুয়ে আছে
শীতে কাঁপতে থাকা সকিনা
কম্বল জোটে নি তার সাহেব বাড়িতে.........
ধীরে পায়ে ঘরে ঢোকে বান্দির ঝি সকিনা
হিটার বন্ধ করে বেগম সাহেবার দিকে করুণ দৃষ্টি মেলে
খুব মৃদু স্বরে বলে......
আম্মাগো বড় জার করে
একটা কম্বল দিবেন আম্মা!!!!

মানুষ আমরা, মনুষ্যত্ব কোথায়?
বিবেক কি কখনো কড়া নাড়ে দরজায়?


শনিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১২

লোভ-লিপ্সা

লোভ-লিপ্সা
- যাযাবর জীবন


হা করা জিহ্বা বেরিয়ে আছে
আলজিব দেখা গেলে ক্ষতি কি?
লোভের দাস তো মানুষই হয়
রিপুর পুজোতে টাকার পাহাড়, ক্ষতি কি?
বিবেকগুলো পড়ে আছে বাক্সবন্দী
টাকার নেশায় ছুটছে সবাই
লোভ লালসার মাথা ফাটিয়ে
পকেট করছে ভারী
রাশি রাশি টাকা কড়ি।

বিধবা এক ছিল গাঁয়েতে
ভিটেমাটি আঁকড়ে স্বামীর ভিটেতে
পেল না বাঁচতে মোড়লের হাত থেকে
লোভেতে বুলায় দাঁড়ি
লাঠিয়াল বাহিনীর আঘাতে আঘাতে
দুধের শিশুকে বুকেতে জড়িয়ে
পালিয়ে দিল শহরে পাড়ি;
বিধবার ভিটেতে বাইজী নাচিয়ে
মোড়ল বুলালো দাঁড়ি
জয় হো...... লিপ্সা
পকেট হচ্ছে ভারী
সম্পত্তির পাহাড় আর
রাশি রাশি টাকা কড়ি।

লোভের আগুনে পুড়ছে বিবেক
কাড়ি কাড়ি টাকা, সম্পত্তি অনেক
সহবাস টাকার সাথে
বসবাস সম্পত্তির পাহাড়েতে
পিছ পা হয়না ছুঁড়ি বেধাতে
পর কিংবা আপনার পিঠেতে
লুটে নিতে সব ধন রাশি
জয় হো...... লিপ্সা
পকেট হচ্ছে ভারী
সম্পত্তির পাহাড় আর
রাশি রাশি টাকা কড়ি।

কাফনে বাঁধা শরীরটা পড়ে আছে
সাড়ে তিন হাত মাটি ডাকছে
কিছুই তো সাথে নিতে পারলি নারে হতভাগা
পকেট বিহীন সাদা কাফন কাঁদে একা একা।

শুক্রবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১২

মেঘের পরে সূর্য হাসে

মেঘের পরে সূর্য হাসে
- যাযাবর জীবন

প্রতিদিন আকাশ কালো হয়ে মেঘ জমবে
প্রতিদিন মনের আকাশে বৃষ্টি ঝরবে
প্রতিদিন দাবানলে পুড়ে ছারখার বনাঞ্চল
প্রতিদিন দহনে পুড়ে হৃদয় অনল
প্রতিদিন ঝড় ঝঞ্ঝা বয়ে যাবে পৃথিবীর বুক জুড়ে
প্রতিদিন আলোড়িত হয়ে যাব মনের ঘরে উথাল ঝড়ে
প্রতিদিন পথ হারাবে পথের বাঁকে যেয়ে
প্রতিদিনই প্রতীক্ষার আগুনে জ্বলা পথ চেয়ে
এমন তো কোন কথা হতে পারে না।

মেঘ কেটে যায় সূর্য ওঠে
পুড়ে খাটি হয় সোনা
ঝড়ের পরে শান্ত সবই
শেষ হয় অপেক্ষার পথ গোনা;
নতুন জীবনের আশা করতে হবে না
নতুন ভাবে সব শুরু করা যাবে না
এমন তো কোন কথা নেই।


মঙ্গলবার, ২০ নভেম্বর, ২০১২

ব্যঞ্জন জীবন

ব্যঞ্জন জীবন
- যাযাবর জীবন


কক্ষচ্যুত জীবনের ছিল না কোন লক্ষ্য, বুঝিনি আগে
ক্ষয়িষ্ণু মানবতার মাঝে হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে
গ-সাগু লসাগু অঙ্ক কষিনি কখনো জীবনের
ঘাম ঝরানো জীবনের ঘানি টেনে গেছি কলুর বলদের
ঙ আমায় করেছে কাঙাল, বোধোদয় এই শেষ বেলায়।

চতুরস্র কক্ষে আবদ্ধ জীবন গলা চেপে ধরত আমায়
ছকে বাঁধা জীবন থেকে ছিটকে গিয়েছিলাম তাই তো হায়
জগৎসংসার থেকে বিচ্ছিন্ন দিনাতিপাত বড্ড বেশি ঝুঝে ঝুঝে
ঝড়ের ঝাপটা সব সয়ে গেছি একাকী মুখ বুজে
ঞ’র কুজ পিঠে করে সয়ে গেছি সব ঝঞ্ঝা।

টাকা পয়সা গাড়ি বাড়ির অনেক বড় স্থান জীবনে
ঠকিয়েছে চারিধারে মানুষগুলো পদে পদে, বুঝিনিকো আগে
ডাকাতিয়া কোন এক বাঁশীর সুরে ঘর ছেড়ে বেড়িয়েছিলাম
ঢাকের বাঁয়া গলে করে পথে পথে ঘুরেছিলাম
ণত্ব বিধির ণিচ্ কাজগুলো মনেতে জাগাতো সঙ্কা।

তঞ্চকতা সয়ে গেছি ভেবে, যদি হয় উপকার কাছের লোকের
থতমত খেয়েছি অনেক, হয়ে বলির পাঠা ফলস্রুতিতে মানুষের
দক্ষিণায়নান্তবৃত্ত ঘুরে বেড়িয়েছি মানুষের সন্ধানে
ধকল সকল কাঁধে বয়ে জীবনের, ধন্যা এই পৃথিবীতে
নৈর্ব্যক্তিক নিরাশায় ছাওয়া বেদনাবিধুর অনুভূতিতে।

পাছে লোকে কত কথা বলে গেছে মোরে
ফানুশ উড়িয়েছি সেসব পেছনের কথাগুলোরে
বক্রোক্তির সব বঁইচির অম্ল স্বাদ খেয়েছি মধুর ভেবে
ভক্তবিটেল মানুষজন সব ভক্তবৎসল রূপে ছিল ঘিরে
মুখেতে মধু আর হৃদয়ে বিষের পেয়ালা মনেতে ধরে।

যাযাবর হতে চাইনি তবু জীবন করেছে যাযাবর মোরে
রঙ আর রূপ অনেক দেখেছি মানুষের ভেতর বাহির জুরে
লাভ-লোকশানের চুল চেরা বিশ্লেষণে আমার খাতা শূন্য
শূন্য খাতায় পাপের বোঝা মাথা পেতে নিয়ে হয়েছি ধন্য
ষটষষ্ঠী পর্যন্ত বেঁচে থাকার আমার খায়েশ নেই কোনো।

সংকীর্ণতায় ছেয়ে থাকা সং সাজা কিছু মানুষরূপী সংকর
হাসি খেলায় কাটিয়ে দিচ্ছে অবহেলায় জীবন ভর
ড় এর ওপর র উঠে যায় কামড়া কামড়ি করে
ঢ়ূড় বাস্তবে তারাই সফল টাকা পয়সার মূল্যে
য়’রা পড়ে র‘য়’ যাযাবরের মত বিফল মানুষ হ‘য়ে’
ৎ কুপোকা‘ৎ’ তাদের তৎসম জীবনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে
ং এর কংশ মামারা ওপরের মানুষগুলোর অংশ হয়
ঃ তে দুঃখ বেদনা যাযাবররা সারা জীবন ধরে সয়
“ঁ” চঁন্দ্রবিন্দু তাদের জীবনে অমাবস্যা হয়ে রয়।

অণুকথন – ৫

অণুকথন – ৫

- যাযাবর জীবন





বোধোদয়:



দেখাটা ব্যক্তি নির্ভর বোঝাটা নিজের

শোনাটা কানের শেখাটা কাজের

চিলে কান নিলো শুনে কান হাতানো

দৌড়ে চিলের পিছে নিজের কাজ পেছানো।





ভুল:



ঝরে বৃষ্টির জল সাথে কান্না

দেখতে কি পাও?

ভাঙ্গে নদী পাড় সাথে হৃদয়

শব্দ কি পাও?

তবে অমাবস্যার আঁধারে

কেন জ্যোৎস্না খুঁজতে যাও?





স্বার্থপরতা:



স্বার্থপর সকলেই আমরা

কম আর বেশী

টাকার মূল্যে স্বার্থের পাল্লা

কম বেশী থাকে ঝুঁকি

পাল্লার ফাঁক বোঝা যায় মানুষ ভেদে

জীবনের ফাঁক! মানসিকতা আর অনুভবে।







পরিণতি:



প্রেমের সাথে রক্তের কিছু স্বাদ মিলেমিশে রয়

ক্ষরণে কিংবা চোখের জলে

বিচ্ছেদের মালায় গাঁথা প্রেম কাহিনীর বড্ড করুণ পরিণয়

স্মৃতিগুলো জেগে থাকে বিস্মৃতির অতলে;

মনের চোরাবালিতে ডুবন্ত সব অপূর্ণ প্রেমের পরিণয়

হৃদয় চেরা ক্ষরণগুলোতে পুরনো স্মৃতি কথা কয়

ভাবনার ভেলায় ভেসে ভেসে কবিতার রূপ লয়

নোনতা স্বাদে রক্ত ঝরে তবু ভালোবাসা কথা কয়।

রবিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১২

ইচ্ছে খেলা

ইচ্ছে খেলা
- যাযাবর জীবন

ইচ্ছে মতন যখন তখন
কাছে টেনে দূরে ঠেলা
ইচ্ছে হলেই যখন তখন
হৃদয় টেনে উপড়ে ফেলা।
ইচ্ছে খাতায় যখন তখন
তোর কলমে আঁকিঝুঁকি
ইচ্ছে হলেই যখন তখন
মনটা নিয়ে ছুঁড়ে ফেলা।
ইচ্ছে খেলায় ক্লান্ত আমি
যখন তখন কাছে টানা
ভালোবাসার ইচ্ছে খেলায়
কান্না ঝরে কেও বোঝেনা।

জীবন ঘড়ি

জীবন ঘড়ি
- যাযাবর জীবন

টিক টিক টিক টিক টিক টিক
এগিয়ে যাচ্ছে সময়, ঘোড়ার রেসে
সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টা, দিন, মাস, বছর
কেটে যাচ্ছে সময় চোখের পলকে।
ঢিপ ঢিপ ঢিপ ঢিপ ঢিপ ঢিপ
হারিয়ে যাচ্ছে সময়, জীবন থেকে
হৃদয়ের ধুকপুক শব্দ ধুঁকে ধুঁকে স্তিমিত
আমি পথ চেয়ে নিঃশব্দ হয়ে যেতে।
সময়কে ধরে রাখা যায় না, টিক টিক বয়ে চলে
সময়ের সাথে সাথে
মৃত্যুকে বাঁধ দেয়া যায় না, গড়িয়ে পড়ে জীবন থেকে
সময়ের সাথে সাথে।

মন ভালো নেই

মন ভালো নেই
- যাযাবর জীবন

চাঁদ খেলা করে মেঘের লুকোচুরিতে
বিষাদ ছুঁয়ে থাকে অন্ধকার ঘিরে
তারা কথা কয় নিহারিকার সনে
আমি পড়ে আছি তিমির অন্ধকারে
মন ভালো নেই
আজ মন ভালো নেই
শুধু তুই নেই বলে।

আলোর খেলা অন্ধকারে্
জোনাক জ্বলা রাতের ভিরে
চাঁদের কথা মেঘের সনে
আমি একা অন্ধকারে
মন ভালো নেই
আজ মন ভালো নেই
শুধু তুই নেই বলে।

বিষণ্ণতা আকাশ ছোয়া
মনে মনে তোরে চাওয়া
একা একা কথা বলা তোরই সনে
আমি একা অন্ধকারে
মন ভালো নেই
আজ মন ভালো নেই
শুধু তুই নেই বলে।

বৃষ্টি ঝড়া রাতের শেষে
হাত বাড়িয়ে তোকেই খুঁজে
ভাবনাগুলো কান্না ঝড়ায়
বৃষ্টি জলে চোখ ধুয়ে যায়
মন ভালো নেই
আজ মন ভালো নেই
শুধু তুই নেই বলে।

মনের ভেতর কান্না ছায়ে
তোর কথাটি মনে হলে
অপেক্ষারই প্রহর কাটে
একা পড়ে অন্ধকারে
মন ভালো নেই
আজ মন ভালো নেই
শুধু তুই নেই বলে।

শনিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১২

অণুকথন – 8

অণুকথন – 8
- যাযাবর জীবন

একাকীত্ব:

হাজারো মানুষের ভীরে
বড্ড বেশি একা হয়ে যাই
তোর কথা মনে এলে;
হাজারো স্বপ্নগুলোকে
বড্ড সাদাকালো লাগে
তুই নেই বলে।

অস্তিত্বে তুই:

প্রতিদিন প্রতিক্ষণ কেন আসিস ভাবনায়?
প্রতিদিনের প্রতিটি প্রহর কেন তোরই কথা পড়ে মনে?
তোকে না পাওয়ার দহন
দুপুর রোদের বালু-ভাজা রবির কিরণ
জ্যোৎস্নার কোমল অনুভূতিতে
কোথাও তুই নেই।

অনুভূতি:

মনের বাস কোথায়
কিংবা হৃদয়ের
তোর জন্য এমন লাগে কেন?
এরে কি ভালোবাসা বলে?

চেনা অচেনা:

প্রেমের শুরুতে অনেক মজা লাগে
খটমট শুরু হলে ভালোবাসা ভাগে
মানুষ বড়ই স্বার্থপর প্রাণী
নিজেকে আমরা কতটুকু জানি?

ধামাচাপা:

নষ্ট মনেতে প্রেমের হাট
কষ্টে হৃদয়ে বিশাল ফাঁক
ছেড়া শব্দমালায় গেঁথে যাই
নষ্ট প্রেমের শব্দ বুনন;
নষ্ট হৃদয়ের ফাঁক ঢাকতে
ছেড়া প্রেমের সুতো পড়িয়ে
মনের জংপড়া সুঁই এ
সেলাই করি কবিতা কথন।

শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১২

স্বরবর্ণ জীবন

স্বরবর্ণ জীবন
- যাযাবর জীবন

অকর্মার ধাড়ি এক বোহেমিয়ান মন
আগড়ম-বাগড়ম বকে সারাক্ষণ
ইশারা ইঙ্গিত বোঝে না কেও তার
ঈপ্সা হীন এক জীবন করছে পার
উড়ু উড়ু করে তার উচাটন মন
ঊর্ধ্বচারী জীবনে শুধুই পতন
ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে সারাক্ষণ
এক পা এগোতে গিয়ে দুই পা পেছন
ঐকল্য ঘিরে থাকে জুড়ে সারা মন
ওজুহাতের বেড়াজালে শুধু পলায়ন
ঔপমিক বোহেমিয়ান যাযাবর জীবন।


বুধবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১২

প্রেমের চন্দ্রবিন্দু পরিসমাপ্তি

প্রেমের চন্দ্রবিন্দু পরিসমাপ্তি
- যাযাবর জীবন


কতদিন হয়ে গেছে
খুঁজি তোরে এখানে ওখানে
গভীর রাতের একাকী অন্ধকারে
ঘুণপোকারা বাসা বেঁধেছে মনে
ঙ মন আমার।

চোখের পলকে রেখেছিলেম তোরে
ছায়া হয়ে ছিলি হৃদয়ে
জীবনের সাথে জড়াজড়ি করে
ঝাপটা বাতাসের মত গেলি হারিয়ে
ঞ’র পিঠে চড়ে।

টুকরো করে আমায়
ঠুকরে গেলি হৃদয়
ডুকরে কাঁদে মন
ঢাকে অন্ধকার
ণত্ব বিধান ভুলে গেছি আজ।

তারাভরা আকাশের ছায়াপথ দেখি
থামাতে পারিনি আমি নিয়তি
ধীর পায়ে সময় দাঁড়ায় থমকে
ধুসর কুয়াশায় চারিধার ঢাকে
না পাওয়ার বেদনাগুলোকে।

পেছনের অনেক স্মৃতিগুলো ছিল
ফুলের সৌরভে ভরা
বিচ্ছিন্ন কেন হয়েছিলি জানা হলো না
ভেতরের ক্ষরণ চোখে দেখা যায় না
মনেতে রয়ে গেছে অনেক যাতনা।

যাবার বেলায় ফিরে চাসনি
রেখে গিয়েছিলি অনেক স্মৃতি
লেখা হয় কবিতায়
শূন্য খাতা ভরে
ষষ্ঠী চন্দ্রিমার রাতে।

সেই সব বেদনারা
হাসে আমার দিকে চেয়ে
ড় এর হুমড়ি
ঢ়ূড় বাস্তবে
য় রয় পড়ে হতাশার ঘোরে
ৎ কুপোকাৎ বেদনার সাগরে
ং তোরই অংশ হয়ে
ঃ আমাদের প্রেমের যতিচিহ্ন টানে
“ঁ” তে পরিসমাপ্তি বিফল প্রেমের।


মঙ্গলবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১২

ভার্চুয়াল প্রেম

ভার্চুয়াল প্রেম
- যাযাবর জীবন

আজকাল ভালোবাসা যেন তুচ্ছ খেলনা
বড্ড সস্তাদরের চায়না মাল
ছড়িয়ে আছে অলিতে গলিতে, রাস্তা ঘাটে
বাজারে বন্দরে আর ভার্চুয়াল নেটে।

প্রথম দিন বন্ধু হবে? নেটে নতুন পরিচয়
দ্বিতীয় দিনে উম্মা উম্মা
তৃতীয় দিনে স্কাইপি কথা কয়
চতুর্থ থেকে সপ্তম দিনে প্রেম গাঢ় হয়।

তুমি আমার জান পাখি ময়না
তোমারে ছাড়া আমি বাঁচব না......
আরো কত কিছু!!

তারপর......
ভার্চুয়াল শারীরিক প্রেম
একজন ল্যাপটপ কোলে নিয়ে আরেকজন বিছানায়
প্রেম থেকে সাত দিনে রমণ হয়ে যায়
নেটের বদৌলতে
ভার্চুয়াল জগতে
প্রেমের কি নিদারুণ পরিণাম!!!
ভার্চুয়াল প্রেম, হায় কি সুন্দর এক নাম।

বোকা মেয়েগুলা একবারও ভাবে না
এর পরবর্তী পরিণাম
হোঁচট খেয়ে হুশ ফেরে
দেখে নিজের রমণের দৃশ্য
নেটেরই বদৌলতে
ততদিনে প্রেমিক তার পগার পাড়
হতভাগিনী খুঁজে মরে তার ভার্চুয়াল প্রেমিকরে
নেটে কিংবা এখানে ওখানে
পরিণাম কিছু মাদকাসক্তি
কিংবা আত্মহনন
হায় ভার্চুয়াল প্রেম!

প্রতিদিন নতুন নতুন কত যে ঘটনা দেখি
এর থেকে আমাদের মুক্তির উপায় কি?

নিয়তি

নিয়তি

- যাযাবর জীবন


মাআআআ......
আর ভালো লাগে না এ অসহ্য যন্ত্রণা
করুণ চোখে তাকিয়ে থাকে মা
রোগশোকে ভুগে ভুগে ব্যথা বেদনায় ধুঁকে ধুঁকে
বিছানায় পড়ে থাকা ছেলের দিকে চেয়ে;

যন্ত্রণায় কাঁতর ছেলেটি ভাবে......
এভাবে বেঁচে থাকার চেয়ে একবারে মরে যাওয়া অনেক ভালো
কষ্ট কমে নিজের মুক্তি পায় কাছের মানুষগুলো
রোগের কাছে সকল চিকিৎসা কুপোকাত,
নিঃস্ব করে প্রিয়জনকে শেষ সম্বলটুকু কেড়ে নিচ্ছে সব
চিকিৎসা ডাকাত।

তবু মানুষের বেঁচে থাকার কি আপ্রাণ চেষ্টা
তবু প্রিয়জনকে বাঁচিয়ে রাখার প্রতিনিয়ত ধন্য চেষ্টা
ধন্য আমি মানুষ রূপে জন্ম আমার
ধন্য পেয়ে কাছের মানুষগুলোর ছোঁয়া ভালোবাসার
তবু হেরে যায় মানুষগুলো নিয়তির কাছে
ঠাই, সারে তিন হাত মাটির নীচে
সহায় সম্বলহীন প্রিয়জন তবু অশ্রু মালা গাঁথে
প্রিয় মুখটির স্মৃতি মনে করে।



সোমবার, ১২ নভেম্বর, ২০১২

অণুকথন - ৩

অণুকথন - ৩
- যাযাবর জীবন

হৃদয়:

পুরতে হলে আগুন লাগে
মনের মাঝে পোড়ায় কে?
কষ্ট পেতে হৃদয় লাগে
বুকের খাঁচায় নেই যে সে......


ভ্রম:

বাসনা সব নিজের করে পাবার
বেদনা পেয়ে হারাবার
যেদিকে যাই তোকে খুঁজি
যেদিক চাই তোকে দেখি
ভ্রমে বসতি
জীবনের সর্বনাশ।


সীমাবদ্ধতা:

সীমারেখা হয় না ভালোবাসার
অনুভূতি কিংবা আবেগের
ভালোবেসে করি ভুল;
তবু সীমাবদ্ধতা রয়ে যায় সম্পর্কের
মাঝে কিছু অদৃশ্য কাঁটা তারের বাঁধা
আমারই বোঝার ভুল।


প্রবঞ্চনা:

এখানে ওখানে দিনে আর রাতে
এখানে সেখানে মনের ভেতরে
নিজেতে নিজেরে খোঁজা
কিংবা কিছু হৃদয় কথন;
চাঁদেতে বাড়ানো হাত
না পাওয়ার বঞ্চনা
আর প্রাপ্ত সকল প্রবঞ্চনা
অপটু হাতে কবিতা বাঁধন।


উড়িয়ে দিলাম:

ভালোবাসার সব মিছে ছলনা
প্রেমের ভাইরাস সব দূর হয়ে যা;
কুরকুরে হৃদয়ের মুড়মুড়ে যাতনা
ফুরিয়ে যাবার আগে চিবিয়ে খা।


পরিধি:

বৃত্তের বাইরে যেতে পারি নি আজো
মনের ভেতর থেকে পাই বাঁধা
প্রেমের বিড়ম্বনা সর্বনাশা......
তোর ভালোবাসা দিয়ে আঁকা
সীমাবদ্ধ পরিধিতে ঘুরে মরছে
জ্যামিতিক ভালোবাসা.........





রবিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১২

অণুকথন-২

অণুকথন-২
- যাযাবর জীবন

অনুভব:

প্রতিদিন কিছু নতুন ক্ষত
মলম লাগায় কে?
প্রতিদিন কিছু নতুন বেদনা
আগুন লাগায় যে...............


বিলাস:

দুঃখের বেদনায় পাথর
সুখের যন্ত্রণায় কাতর
দুঃখবিলাস রক্তের ভেতর............


মুক্তোদানা:

ভালোবাসায় অবগাহন
নোনাজলে সিন্ধু-সেচন
প্রেম-সাগরে ডুব দাও
মুঠোভরা কষ্ট-মতি কুড়োও.........



ভালোবাসার নগর:

নৈঃশব্দ্যের নগরীতে অনেক কান্না জমা আছে
গুমরে মরে একা একা
নগরীর পথে ঘাটে
নিস্তব্ধ অহংকারে ভালোবাসা জেগে রয়
শব্দহীন জগতে বেদনারা কথা কয়............


নীল চাদর:

আমার জন্য তোর প্রেম একটুও কমেনি
শুধু ঘৃণাটুকু বেড়ে গেছে
ভালোবাসা ঢেকে আছে ঘৃণার চাদরে.........

ব্যস্ত সময়

ব্যস্ত সময়
- যাযাবর জীবন

ধুলো জমছে ছাপার বইগুলোতে
পড়ার সময় কই?
হেলায় পড়ে থাকে আলমিরা শয্যায়
মোটা মোটা সব বই।

ব্যস্ত পৃথিবী ব্যস্ত সময়
টাকার মূল্যে সময় বিকোয়
বড় বড় লেখা এখন আর কবিতা ধারা নয়,
অল্প কথায় ভাবের প্রকাশ
লেখার বুননে কাব্য বিকাশ
সারাংশতেই আজকের কবিতা লেখা হয়।

ব্যস্ত জীবনে সময়ের অভাব
কে পড়ে ভাবসম্প্রসারণ?
ছোট দু লাইনে ভাবের প্রকাশ
আজকের কবিতার আধুনিকায়ন।

শনিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১২

অণুকথন-১

অণুকথন-১
- যাযাবর জীবন

স্বার্থ:

যাপিত জীবন স্বার্থের কালিমায়
কিবা ভাই বোন কিবা বাবা মায়
স্বার্থের কাছে সব নত হয়ে যায়
এমন কেন রে পোড়া জীবন হায়!!!

নোনা জল:

চোখে জল আনতে পেঁয়াজের রস লাগে না
তোর উপেক্ষার তুলনা হয় না.........

কষ্ট:

ঘা খাওয়া মানুষগুলোকে দেখ
রসুনের পিছন সব এক......

যাতনা:

পোড়ানো ছাই উড়িয়ে লাভ নাই
ফুঁ তে জ্বলে না আগুন
পোড়া হৃদয় ধিকি ধিকি জ্বলে
কৃষ্ণচূড়ায় ফাগুন.........

ঘৃণা:

কিছু কথা এসে মাথার পরে বসে
খামচে ধরে মগজের ভেতরে
লেখনীতে প্রসব চায়
ধরলে কলম কাগজ হাতে
কবিতারা সব উড়ে যায়
তোর ঘৃণার যাতনায়............

শুক্রবার, ৯ নভেম্বর, ২০১২

প্রেমের কথকথা

প্রেমের কথকথা
- যাযাবর জীবন

চোখে চোখে দেখাদেখি সূচনা শৈশবে
মনেতে মনেতে প্রেম একটু যেন কৈশোরে
শরীর চলে আসে প্রেমেতে যৌবনে
শারীরিক ভালোবাসা বিবাহের বন্ধনে;
প্রেমের সমাপ্তি দেহতে ছিল যত মনে
পূর্ণতা আসে যেন কামরিপুর বন্ধনে।

কিছু প্রেম ভালোবাসা কিছু প্রেম ছলনা
কিছু প্রেম শুধুই ভাইরাস কামের বাসনা
কিছু প্রেমে ঘর ভাঙ্গা কিছুতে বেদনা
কিছু প্রেম শুধুই না পাওয়ার যাতনা;
বার্ধক্যের যত প্রেম সবই মনে মনে
স্মৃতির মালা গাঁথে বুড়ো বুড়ি দুজনে।

বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১২

ওড়ানো কবিতারা

ওড়ানো কবিতারা
- যাযাবর জীবন

হাবিজাবি অনেক কথা মাথার পাশে এসে বসে
হাত বুলিয়ে দেয় মগজের ভেতরে নীরবে নিভৃতে
তোর কথা মনে হলে, তোকে ভেবে ভেবে।

কিছু কথা কবিতা হয়ে ভাসে মনের গভীরে
অলস সময় কেটে যায় আনমনে কবিতার টুকরোগুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে
তোর কথা মনে হলে তোকে ভেবে ভেবে।

হারিয়ে গিয়েছিস জীবন থেকে, যাসনি বিস্মৃতির অতলে ডুবে
বইয়ের ভাঁজে শুকনো ফুলের পাপড়িগুলো এখনো পড়ে আছে এখনো
তোর দেয়া
আর ড্রয়ারের ভাজে চা বাগান থেকে নিয়ে আসা একটি কুঁড়ি দুটি পাতা
তোর দেয়া
তোর কথা মনে করিয়ে দিতে প্রতিদিন প্রতিক্ষণ।

সারা রাত ধরে মনের মাঝে কবিতারা কথা বলে মনের মাঝে
কাগজে কলম আঁকি আর স্মৃতিগুলোকে টুকরো টুকরো করে মালা গাঁথি
তোর ভালোবাসা আর ঘৃণাগুলো মিলিয়ে;
নিকষ কালো আঁধার রাতে স্মৃতিরা সব খেলা করে নিউরন কোষে
রয়ে যায় শুধু নির্জনতা আর আমি পড়ে রই একা
রাত শেষ হয় কাক ডাকা ভোরে;
ভোরের সূর্যের সাথে সাথে কবিতার টুকরোগুলোকে দেই
কাকেদের ডানায় বেধে উড়িয়ে
সূর্যের প্রখর কিরণে যদি ঘৃণা গুলো গলে গলে পড়ে।

অহংকার

অহংকার
- যাযাবর জীবন


এত অহংকার কিসের রে তোর
হে মূর্খ মানব............
জীবনের শুরু হয় এক ফোঁটা বীর্যে
সারা জীবন জ্বলে পুরে মরা যাতনার সূর্যে
ধুলি কণা মেখে সারা গায়
ছি! কি নোংরা বলে নাক কুঁচকায়
হায়রে মানুষ !!
মরার পর সেই তো মিশবি আবার ধুলায়
তবে এত অহংকার কিসের রে তোর?

বুধবার, ৭ নভেম্বর, ২০১২

রাতের আঁধারে কুকুর জীবন

রাতের আঁধারে কুকুর জীবন
- যাযাবর জীবন

মানুষ হওয়ার অনেক যন্ত্রণা, সব দেখা যায় না সব শোনা হয় না। তবু দেখতে ইচ্ছে করছে রাতের রাজপথ, অলি গলির অন্ধকারের জীবন যাপন। কি করা যায়??? একটা কুকুরের মাঝে যদি ঢুকে যাওয়া যেত প্রেতাত্মা হয়ে কি মজাই না হত!! আচ্ছা একটু কল্পনায় ঢুকেই দেখি না কি হয়? কুকুরের দেহে মানুষের চোখ...

সন্ধ্যে রাত

জিব বের করে হাঁটছি আমি রেললাইনের পাড় ধরে, বস্তির কিনারে। একটি শিশুর কান্নার ধ্বনি ভেসে আসে কুকুরের কানে; মা রে এ এ এ, দুইটা ভাত দে মা। হালকা শোনা যায় মায়ের ফুঁপিয়ে কান্না - বাজান রে, আইজকা ভিক্ষা পাই নাই, চাইল জুডে নাই; সাবেগো ফালাইয়া দেওয়া রুডির টুকরা একটা আনছি, আইজকা এইডা খাইয়া পেট ভইরা পানি খা, ঘুম যা বাজান।

মধ্য রাত

বস্তির কোনার দিকের একটি ঘর - নারী কন্ঠের কিছু অসংলগ্ন ধ্বনি কানে ভেসে আসে, সাথে যেন কুকুরের মত জিহ্বা বের করা হাঁপানোর শব্দ; শরীরের সাথে চলছে শরীরের যুদ্ধ, রমণের আদি শীৎকার ধ্বনি থেমে যায়, কিছু গালাগালি পুরুষ কুকুরটার। নারী কন্ঠের আর্তনাদ - ও সাব......দুইশ টেকা দেওয়ার কতা কইয়া লইয়া আইছেন, অহন কম দিতাছেন কেন? যাহ ছেমরি ভাগ, কুকুরের ঘেউ ডাক ওঠে, বেড়ার দরজা খুলে নত মুখে একটি কিশোরী বের হয়ে আসে, বিধ্বস্ত......... সাথে করে বয়ে নিয়ে কিছু নোংরা বীর্য। হয়তো বীজ বপন হয়েছে আজই আরেকটি অনাগত নতুন সন্তানের, কিশোরীর পেটে। ভদ্র সমাজে দেয়া হবে যার নাম - জারজ সন্তান…………

হাটতে হাটতে গলির মুখে আসি। দু তিনটি কুকুর শুয়ে আছে রাস্তার ধারে, নতুন মুখ দেখে ঘেউ করে ওঠে, যেন তাদের স্থান দখল করতে এসেছি, আমিও যেন ঘেউ করে বলি - ভাইয়েরা আমার, আমি এ পাড়ার নতুন অতিথি, শুধু তোমাদের দেখতে এসেছি; শুনে যেন, বুঝে তারা জাতি ভাইয়ের কথা, আবার চুপ করে শুয়ে থাকে......

গলির মুখে দু তিনটি ছেলে কি জানি নিয়ে হাসাহাসি করছে। একজন প্যান্টের জীপার খোলে, পরম আনন্দে ল্যাম্পপোস্টে জল ঢালে, যেন গাছে পানি দিচ্ছে। সিগারেট ঝোলা মুখে তৃপ্তির হাসি, আহহ..., যেন বড় একটা চাপ গেল……

একটা রিক্সা আসছে। হঠাৎ করেই যেন সাড়া পড়ে গেল তাদের মাঝে, কিছু ফিসফিসানি। ল্যাম্পপোস্টের আলোয় হঠাৎই তাদের হাতে ছুড়ি ঝিক করে ওঠে। বোরখাওয়ালি এক মহিলা সাথে আট দশ বছরের বালক একটি, রাস্তায় শুয়ে থাকা কুকুরগুলো হঠাতই যেন গা ঝাড়া দিয়ে দাঁড়িয়ে ওঠে মানুষরূপী ওই কুকুরগুলোর সাথে সাথে। হা হা করে রিক্সার ওপর চড়াও হয়, দুজনকে টেনে হিঁচড়ে নামায় রিক্সা থেকে; রিক্সাওয়ালা ভয়ে থরথর করে কাঁপে। একজন বোরখায় টান দেয়, এখানে ওখানে হাতরায়, বোনাস যদি কিছু পায় - যৌবন নামক কোন অমৃত। একজন নাক সিটকায়, ধুর শালার বুড়ি একটা জুটছে, কপালডাই খারাপ আইজকা, বলে কালো হাতব্যাগটা ছিনিয়ে নেয়, অবুঝ ছেলেটা বাধা দিতে চায়, ওমনি ছোঁড়া একটা ঝিলিক দিয়ে ওঠে - ছোঁড়া ছেলেটার পেটে ঢোকে, ফিনকি দিয়ে রক্ত ছোটে, ল্যাম্পপোস্ট লাল হয়ে যায় রক্তের ছিটায়......

হৈ হৈ করে ছেলেগুলো দৌড়ে গলির ভেতর ঢুকে যায়। রিক্সাওয়ালা পরম মমতায় ছেলেটিকে কোলে তুলে রিক্সায় ওঠায়, রিক্সা চলতে থাকে; ধীরে ধীরে দৃষ্টিসীমানা থেক অদৃশ্য হয়ে যায়………

কুকুরগুলোর মধ্যে থেকে একটি এগিয়ে যায় ল্যাম্পপোস্টের দিকে, লেগে থাকা তাজা রক্ত জিহ্বায় চাটে; তারপর যেন ঢেকুর তুলে আবার সেখানেই শুয়ে পড়ে।

নাহহ...... কুকুর জীবন আর ভালো লাগছে না, শেষ রাত আর দেখব না। বড় নোংরা এই রাতের শহর; অনেক নোংরামির সাথে হলো পরিচয়, কেন যে দেখতে গেলাম এতসব রাতের আঁধারে? মনটা বড়ই খারাপ হয়ে ওঠে।

শহুরের রাতের অনেক রূপ দেখে ফিরে এসেছি নিজের মাঝে আবার মানুষের রূপে; মনের মাঝে একটা বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন নিয়ে - মানুষ আর মানুষ নামের ওই কুকুরগুলোর মাঝে পার্থক্য কোথায়?

মঙ্গলবার, ৬ নভেম্বর, ২০১২

অভিশপ্ত জীবন

অভিশপ্ত জীবন
- যাযাবর জীবন

ভালোবাসার আশা ছাড়্ তো এবার
এখানে আছে পোড়া হৃদয় একটা
ছাই হয়ে যাওয়া কয়লার অবশেষ
কাঁটা ভরা ক্যাকটাসের ডালের মতন
অসংখ্য আঘাতে ক্ষয়ে যাওয়া
অনুভূতিহীন নিশ্চল পাথর।

ভালোবাসার চুমুর আশা ছাড়্ না এবার
অভিশপ্ত ঠোঁটে আছে শঙ্খচূড়ের নীল বিষ
আবেগের দংশনে পাবি সাপের বিষ দাঁত
কোমল দেহে বুলানো হাতে কেউটের ছোবল
আবেগহীন কিছু প্রেম কামনা
আর রতির নামে প্রেমহীন বাসনা।

আমার অভিশপ্ত জীবন থেকে দূরে সরে যা
অনেক অনেক দূরে গিয়ে নিজেকে বাঁচা।

সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১২

ভুলের খেসারত

ভুলের খেসারত
- যাযাবর জীবন


তোর এলানো চুলে সৌরভ ছিল মাদকময়
আসক্ত হয়ে পড়েছিলাম মনে মনে;
তোর হেলানো দেহ ভরা ছিল মদির সুরায়
তৃষ্ণা বেড়ে যেত পানে;
বিনিময় প্রথায় তুই ও কম যেতিস না
রাক্ষসীনি রূপ তোকে বাইরে যায় না চেনা।
হাড়ের ভেতরের কিছু অস্থি মজ্জা
পাঁজরের হাড়গুলো চিবুতে কি মজা
হৃদয় চুইয়ে পড়া রক্তের ঢল
চুমুকে খেয়ে নিয়ে বেড়েছে বল
গড়িয়ে পড়া সব চোখের জল
তৃষ্ণায় পান করার ঠান্ডা জল
একে একে সব খেয়েছিস চিবিয়ে
গ্লাসে গ্লাসে ভরে নিয়ে তৃষ্ণা মিটিয়ে
তোকে দেবার এখন আর বাকি কি আছে?
তোর নেশায় বুঁদ হয়ে ভুলে গিয়েছিলাম
অতীত বর্তমান আর ভবিষ্যৎ
হারানো বেদনায় তাইতো এখন
হয়ে আছি জীবন্মৃত শব।

বিকিকিনির হাটে যৌবনের পসরা

বিকিকিনির হাটে যৌবনের পসরা
- যাযাবর জীবন

ওখানে হাট বসে মধ্যরাতে
সীমানা নির্দিষ্ট করা আছে
রাতের গভীরতায় বাড়ে ক্রেতা সমাগম
খুব গোপনে সঙ্গোপনে
বিক্রেতারা সব সুন্দরী ললনা, লাস্যময়ী নারী
তথাকথিত সভ্য সমাজে নাম তাদের
প্রমোদ-বালা কিংবা দেহপসারিনি
পণ্য, উচ্ছল যৌবনের পসরা
ক্রেতা, কামুক কিছু নারী-লিপ্সু পশু
(বলতে মানা) এরাও সভ্যসমাজেরই অংশ কিছু
বিনিময়, অর্থ
জানাজানি হয়ে গেলেই যত অনর্থ।

এখানে খোলা হাট দিনে দুপুরে
এ হাটের স্থান করা হয়নি সীমাবদ্ধ
বড় বড় শপিং মলে
কিংবা অভিজাত কোনো হোটেলের লবি আর রেস্টুরেন্টে
পসরা, ঢলা যৌবনের অতৃপ্ত কামনা
ক্রেতা আর বিক্রেতা লিঙ্গ মানে না
কেও সফল ব্যবসায়ী স্বামী কেও লক্ষ্মী ঘরণী
(বলতে মানা) যে যার বাসাতে
বেচাকেনা ইশারায় ঠারেঠোরে
খুব গোপনে সঙ্গোপনে
বিনিময়, ক্ষণিক আনন্দ
একঘেয়ে পানসে দাম্পত্য জীবন, বড়ই নিরানন্দ।



রবিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১২

মধুর জনপদ

মধুর জনপদ

- যাযাবর জীবন

গভীর রাত
ষ্টেশনে একটা রেলগাড়ি থামে
জুবুথুবু কিছু নতুন মানুষ নামে
নতুন আশা বুকে নিয়ে
শহুরে জীবনের.........

ভোর সকাল
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল
সারি সারি নতুন মুখ
পিপীলিকার মত ঢুকছে শহরে
চর চরান্তর থেকে
নতুন আশা বুকে নিয়ে
শহুরে জীবনের............

ছোট্ট রাজধানী শহর
নিতে পারে না এত সব নতুন মানুষের ভর
ফুলে ফেঁপে বড় হচ্ছে আয়তনে
যেন জোর করে ভরা গ্যাসের বেলুন হয়ে ফুলে
কোন সময় যে ফেটে যাবে কে তা জানে?

তবু প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষ ঢোকে
পিপীলিকার সারি হয়ে
আশা আকাঙ্ক্ষায় বুকে বেঁধে
না জানি কি আছে এই মধুর শহরে!!

হায় নতুন মানুষ
শুধু জানে না তারা
প্রতিদিন মধু খেয়ে যাচ্ছে কত লোভী পিঁপড়ে
শহরকে করে ছিবড়ে
হারিয়ে যাবে একদিন এই মধুর জনপদ
কোটি মানুষের পদদলে।

শনিবার, ৩ নভেম্বর, ২০১২

অভিশপ্ত প্রেম


অভিশপ্ত প্রেম
- যাযাবর জীবন

প্রেমের জটিলতায় অভিশপ্ত জীবন
শৈশব বা কৈশোরের লুকোচুরি প্রেম
যৌবনে ঝুলে থাকা
অথবা ছাড়াছাড়ি
বিয়েতে গড়ালে মধুচন্দ্রিমা
তারপর যথারীতি
হাড়ি ভাঙা ভাঙি
রিক্সায় দুজন চুপচাপ বসে
চোখ দুজোড়া খোঁজে রাস্তার দুদিকে
চোখাচোখি
দুজনের মুখেই মিচকে হাসি
কদিন পর......
দুজন দু রিক্সায় হুড তুলে ঢাকা
সঙ্গী বা সঙ্গিনী আলাদা আলাদা
নতুন প্রেম, নাম পরকীয়া
প্রেমের জটিলতা অভিশপ্ত জীবন
তবু প্রেম চাই হোক না মরণ......



পার্থক্য

পার্থক্য
- যাযাবর জীবন

পার্থক্য কতটুকু?
দেখে শেখা আর ঠেকে শেখার মাঝে
আঘাতের ঘা খাওয়া আর পুরে যাওয়ার মাঝে
বৃষ্টি আর বেদনার অশ্রুর মাঝে
রংতুলিতে রঙ মাখানো আর রংধনুর সাজে
কবিতা কিংবা কাব্য যাতনার মাঝে
কুয়াশার রোদ আর ধুসর সূর্যাস্তের মাঝে
হিমশীতল বরফ আর তোমার হৃদয়ের মাঝে...

হাজারো প্রশ্ন ???????
উত্তর জানা নেই...............

শুক্রবার, ২ নভেম্বর, ২০১২

মানুষ নামের অপভ্রংশ

মানুষ নামের অপভ্রংশ

- যাযাবর জীবন

নীলাকাশ ভালোবাসি আকাশের পানে দেখি
উদার নির্মল আকাশ
অথচ সেও দেয়নি ছাড়
পুড়িয়েছে সূর্যালোকে আমায়;
নদীনালা খাল পুকুর
ডুবে থাকি চৈত্র দুপুর
দেখিয়েছে ভাঙ্গনের খেলা
নদী কতগুলো ;
ভালোবাসি রাতের অন্ধকার
জ্যোৎস্নার আলো
দিন এসে সব করে দিয়ে ছারখার
গুড়ে-বালি আমার রাতের শয্যার;
ভালোবাসি পাহাড়
ভালোবাসি ঘন জঙ্গল আর সবুজের অরণ্য
ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি
জঙ্গলে বলে মঙ্গল
তাই বার বার ছুটে যাই পাহাড়ের পানে
কিংবা মঙ্গলের জঙ্গলে
চোখ জুড়ানোর জন্য
কোথায় পাহাড়?
দাঁড়িয়ে আছে টিলা কতগুলো
যেন আমার মাথার মতই নেড়া;
কোথায় সেই উঁচু উঁচু গাছগুলো ?
সুন্দরী কিংবা সেগুনের বিশাল সব গাছের সারি
জঙ্গলে আর নেড়া পাহাড়ে পড়ে আছে কিছু গাছের গুড়ি
অরণ্যের সবুজ ধুঁকে মরে আজ
পাহাড় আর ভূমি দস্যুর হাতে
অরণ্যের সবুজ লাল মাটি হয়ে
পাহাড় ধ্বসে অবশেষে;
প্রকৃতির যত রঙ রূপ গন্ধ
দিবাকে রাত্রি করেছে অন্ধ
দিয়েছে আমারে ফাঁকি;
বোকার স্বর্গে বাস ছিল চিরদিনই
তাই হয়তো ছিল মানুষে অগাধ বিশ্বাস
ঠকেছি অনেক আমি
তবু বার বার আমি প্রকৃতি হতে
মানুষেরই মাঝে ফিরে আসি।

কিন্তু এ কি দেখি?
মানুষের মাঝে এত ষড়রিপুর ছড়াছড়ি
লোভ, ঈর্ষা, লিপ্সার রাজত্বে যেন সবাই আঁটছে ফন্দি
কামনা, বাসনা আর নোংরা মানসিকতার কাছে সব বন্দী;
যুবক কিছু হাতে ধরা ছুড়ি আর ক্ষুর কাঁচি
কোমরে গোজা পিস্তল আর মাথায় ঝাঁকড়া চুল
বাবরি দুলিয়ে রাহাজানি চারিদিক
বুঝি না কোনটা শুদ্ধ আর কোনটা ভুল;
যুবতি কিছু স্বল্প বসনা
চড়ে বেড়ায় এদিক ওদিক
চোখে চোখে কি সব ভাব করে
মুখেতে আমন্ত্রণের হাসি হাসে
আমি বুঝি না;
মানুষ কতগুলো, খেলে রাজনীতির খেলা
এটাই নাকি এখন সবচেয়ে বড় ব্যবসা
টেন্ডারের নামে চলছে চাঁদাবাজি
মানুষ নাকি বিকোয় এখন টাকার মূল্যে
বিবেক আর মূল্যবোধ নাকি এখন সব তুচ্ছ
এরা মিলেই নাকি গড়ে তুলেছে এক
নতুন মানব সমাজের গুচ্ছ;
আমারই ভাই, বোন আর আত্মীয় স্বজন
সবাই দেখি হয়ে আছে এদেরই অংশ
কোথাও না কোথাও
কোন না কোন ভাবে
হয়ে রসুনের কোন এক অংশ
আমারই কোন এক বংশ।

তবে আমি কোন ছাড়
সব কিছু থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবার
বোকার মত লিখে যাই কলমে আর কালিতে
যত সব আবোল তাবোল কথাগুলো যা মনেতে আসে
দিয়ে যাই মানুষের যত অকাজের সুড়সুড়ি
কবিতার বাহানায়
বিবিধ ঢঙে বহুবিধ হতাশার কথাগুলো
নানাবিধ ছলনায়
পারি না নিজে কিছু করতে, নেই কোন ক্ষমতা
কবিতার ভাষায় শুধু ঢেকে যেতে নিজেরই অক্ষমতা;
মানুষের গালি খেতে
একা একা পড়ে থেকে
হয়ে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন
কেন ভুলে যাই বার বার
আমিও তো মানুষ নামেরই অপভ্রংশ।


বৃহস্পতিবার, ১ নভেম্বর, ২০১২

ঘষা কাঁচের আয়না

ঘষা কাঁচের আয়না

- যাযাবর জীবন


ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব
একটু দেখা যায় হঠাৎ করেই
খুব মাঝে মাঝে
কখনো খেয়াল করা হয় না
ভাঙা একটা ঘষা কাঁচের আয়না
ঘরের কোণে একটা পড়ে আছে
নিজেকে দেখার জন্য
কখনো দেখা হয় না
তবুও মাঝে মাঝে চোখ চলে যায়
ঘষা কাঁচের আয়নায়
পথ চলতে
খুব মাঝে মাঝে।

আয়নায় নিজেকে দেখার মধ্যে
আনন্দ খুঁজে নিতি তুই
বড় একটা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে
প্রতিদিন প্রায়ঃশই
সকাল কি বিকেলে
সন্ধ্যে কি রাতে;
কি যে আনন্দ পেতিস
সে তুই ই জানিস
নিজেকে ঘুরে ঘুরে দেখতিস
বড় ওই আয়নার মাঝে;
আয়নার ওই প্রতিবিম্ব কি
তোর থেকে সুন্দর কিছু?
নাকি ঈর্ষা ছিল মনে
ঐ প্রতিবিম্বের পিছু?
নিজেকেই দেখে নিজে
সুন্দরের পূজারী
ঈর্ষায় জ্বলে মরে।

আমি খুব মাঝে মাঝে
একটু মুচকি হাসতাম
হয়তো একটু টিটকারি সুরে
কিছু না কিছু বলতাম
আয়না সুন্দরী
কিংবা
আয়না কন্যা
বলে তোকে ডাকতাম
এখন আর খুব ভালো করে মনে পড়ে না
শুধু দেখি পড়ে আছে ঘরের এক কোণে
ঘষা কাঁচের ভাঙা এক টুকরা ওই আয়না।

আজ কি যে হলো জানি না
হঠাৎ করেই যেন নিজেকে দেখার ইচ্ছা জাগলো
আমার মতই হাড়গিলে বুড়ো
ঐ ঘষা ভাঙা আয়নায়
নিজের মুখোমুখি হতে সাধ জাগলো;

অনেক দিন পর নিজের প্রতিবিম্ব দেখছি
আর নিজেই অবাক হচ্ছি
বয়স মানুষকে কোথায় নিয়ে যায় ভাবছি;
আয়নায় কার মুখ দেখা যায় ওটা?
কুচকে আছে মুখের চামড়া
সাদা সফেদ দাঁড়ি কিছু, সারা মুখ ভরা
মাথায় চুলহীন এক লোলচর্ম বুড়া।

ও কি?
কপালে ওটা কিসের দাগ?
ক্ষত হয়ে আছে যেন বুলেটের আঘাত;
নাহ, ভুল বললাম
এটা তো তোর দেয়া শেষ উপহার আমায়
অনেক দিন আগের সেই শেষ দেখায়;
ক্ষতটা শুকিয়ে গিয়েছে অনেক আগেই
তবু হঠাৎ আয়নায় দেখে মনে হলো
এখনো যেন জ্বলজ্বল করছে
এইমাত্র পাওয়া আঘাতেই;
অনেক অনেক দিন পড়
আয়নার সামনে দাঁড়িয়েছি বলে হয়তো
অনেক কথাই মনে পড়ে যাচ্ছে তাইতো;
উফফ...... মনে হলো
এইতো সেদিনের ক্ষত
তোরই দেয়া,
এখনো যেন অনেক তাজা
রক্ত ঝরছে কপাল চুইয়ে
না, না; হৃদয় থেকে
আঘাত তো শরীরে দিস নি কিছু
দিয়েছিলি সব মনে;
ধুর ছাই......
কেন যে দেখতে গিয়েছিলাম নিজেরে
ওই অলক্ষ্মী আয়নার মাঝে
কথা কইতে গিয়েছিলাম
ওই আয়নার সনে?






বুধবার, ৩১ অক্টোবর, ২০১২

যেদিকেই তাকাই চারিধারে তুই

যেদিকেই তাকাই চারিধারে তুই

- যাযাবর জীবন


কখনো কি ভেবেছিলো আমার অবাক এ মন
ভুলে যাবি তুই আমাকে যখন তখন?

অথচ তোর স্পর্শ আমার পুরো আঙিনা জুড়ে
এখনো যেন ছোঁয়া খোঁজে তুই কেন দূরে?
ওই যে দেখা যায় বুড়ো কাঁঠাল গাছটার নিচে
ডালপালা যেথা শুকিয়ে আছে ঠিক তার পিছে
কিংবা হাসনাহেনার নতুন গজানো পাতায় পাতায়
উড়িয়ে আঁচল সেথায় সেথায়
টবের ক্যাকটাসে নতুন ফুল ফুটেছে
ছুঁয়ে দিয়ে গিয়েছিলি কাঁটার ডালে
শিউলি গাছটা আজ মরে গেছে
ছেয়ে ছিল ফুলে
কোন বিষের যাতনায় কে দেবে বলে
ঠিক যেন আমার মতন করে
শুকনো ডালে উঠোন গেছে ভরে
যেমন শুকিয়ে গিয়েছে মনটা আমার।

তোর স্পর্শ আমার পুরো বারান্দা জুড়ে
এখনো যেন ভেবে পায় না তুই কেন দূরে?
ওই যে দেখা যায় বুড়ো কাঠের চেয়ার
আমার মতই অপেক্ষায় গিয়েছে বুড়িয়ে
কিংবা লেখার টেবিলটা পড়ে আছে একা হয়ে
বসে থাকতিস যার উপর পদ্মাসন হয়ে
টেবিলের ওপরের কাগজ গুলো এখন যত্রতত্র
অনেক যত্নে তোর গুছিয়ে যাওয়া
যেন প্রশ্ন করে আমায় কেন তুই হাওয়া?
এখন আর তোকে নিয়ে কবিতা লেখা হয় না আগের মতন
তাই হয়তো কলমটার কালি শুকিয়ে গেছে
কলমদানিটাও পড়ে আছে একা, কালি শূন্য হয়ে
ছবি আঁকা হয় না অনেক দিন হয়ে গেছে
ধুলো বালি জমে রয়
পড়ে থাকা ক্যানভাসে
রংতুলিগুলো কেমন কাটখোট্টা হয়ে গেছে শুকিয়ে
রঙ কেনা হয় না অনেক দিন ধরে
তুই নেই বলে
কার ছবি আঁকব ভেবে পাই না
তুই নেই বলে কার কথা লিখব কবিতার ছলে
ভেবে পাই না
আমিও ওই বুড়ো চেয়ারটার মতন জবুথুবু বসে রই
অপেক্ষা কিংবা প্রতীক্ষায়
পাশে খোলা পড়ে থাকে না পড়া কিছু বই।

তোর স্পর্শ আমার পুরো ঘরটা জুড়ে
এখনো যেন তাদের মন মানে না তুই কেন দূরে?
ওই যে দেখা ঘসা কাঁচের আয়না
আজ তোকে চায় আমাকে চায় না
ওখানে প্রতিদিন মুখ দেখতিস তুই
গাড় লাল করে লিপস্টিক লাগাতিস
আর আয়নার সাথে কত কথা
আমি কিছু বলতে গেলেই ধমকে উঠতি
তুই কি বুঝিস বুড়ো ভাম বেটা
আমি চুপ করে দেখতাম তোর সাজ
একা একা;
তোর চুড়ির আলনাটা
এখনো ঠিক তেমনি সাজানো আছে
লাল, নীল, হলুদ, কালো আরো কত রঙের চুড়িতে
আমি মাঝে মাঝে তাতে হাত বুলোই আর টুং টাং শব্দ শুনি
যেন তোর ফিরে আসার প্রতীক্ষায় প্রহর গুনি
তোর কিনে দেয়া বিছানাটা পড়ে আছে আজো তেমনি
একা একা শোব বলে বিছানাতো কিনি নি!!
থাকনা আরো কিছু দিন পড়ে
ঘুণে খেয়ে শেষ হয়ে যাবে আস্তে আস্তে করে
আমার মতন, হৃদয় কুড়ে কুড়ে।

এখন বেলায় বেলায় সময় গড়িয়েছে অনেক
বিদায়ের ঘণ্টা ধ্বনি শুনি যেন কানে
তবু যেন কান পেতে রই কোন সুদূর পানে
প্রতীক্ষার প্রহর গুনে গুনে
তোর ফিরে আসার অপেক্ষা
স্মৃতি বিস্মৃতির দেয়াল ডিঙিয়ে
ভ্রান্ত ভ্রমের কুয়াশার আবরণ সরিয়ে
স্তব্ধ রাতের প্রহর পেরিয়ে
গোধূলির আলো ছায়া মাড়িয়ে
হলদেটে কোন এক জ্যোৎস্না রাতে
কিংবা অমাবস্যার কালো অন্ধকারে
ফিরে আসিস একবার তোরই ঘরে;
ওই বারান্দা
ওই চৌকাঠ
ওই আঙিনা
তোর চুড়ির আলনা
তোর বিছানার ভাঁজ
তোর রেখে যাওয়া সাজানো ঘর
ঠিক তেমনি আছে
যেমন রেখে গিয়েছিলি যাবার কালে;
শুধু আমিই বদলে গিয়েছি
বদলে গিয়েছে সময়
বদলে গিয়েছে কাল
চুলেগুলো হয়তো একটু সাদা রঙ ধরেছে
যৌবনে ভাটা পড়েছে
ক্ষয়িষ্ণু কালের কাছে কে না পরাজিত হয়
এখন দেহ আর মনের সাথে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা
বেঁচে থাকার তাগিদে
একসময় যৌবন পরাজিত হয়
ক্রমবর্ধমান বার্ধক্যের কাছে
যেন গোধূলির কাছাকাছি এক সূর্যাস্তের বিকাল;
শুধু তুই আমার চোখে
ঠিক সেদিনের মতই আছিস এখনো
উদ্ভিন্ন চির যৌবনা এক সবুজ সকাল।










মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১২

হলুদ বেদনা

হলুদ ওই চাঁদ দেখেছিস কখনো?
বেদনার রঙে বিবর্ণ রাঙানো
নীল বেদনার রঙ দেখেছে সকলে
হলুদ বেদনার কান্না শুধুই আমার দখলে।




মনের মাঝে জ্যোৎস্নার খেলা

মনের মাঝে জ্যোৎস্নার খেলা

- যাযাবর জীবন



মনের গহীনে বাসা বেঁধে থাকা সব অভিমান
গলে গলে পড়ে চাঁদের রাত্রিতে জ্যোৎস্নার অবদান
চোখের ভেতর জমে থাকা সব টুকরো বেদনা
পূর্ণিমা হয়ে ঝরে পড়ে জ্যোৎস্নার কান্না।

হামাগুড়ি দিতে থাকা চাঁদ সন্ধ্যের পর হতে
মধ্য রাতে যেন আলো ঝলমলে সূর্য হয়ে ওঠে
লম্বা হয়ে পড়া তির্যক ছায়ারা ধীরে ধীরে খাটো হয়
মাথার ওপরে চাঁদ মধ্য গগনে কি যেন সব কথা কয়
আকাশে বাতাসে ফিসফিস করে কি যেন সব কথা হয়
কানাকানি করে আমায় বলে যায় জন্মেছি আমি এক ভুল সময়।

বুকের মাঝে যত যাতনার বীজ করেছি বপন
ভুলতে চাই সব করে মন-মুগ্ধ চাঁদের সাথে রাত্রিযাপন
ল্যাম্পপোস্টের আলোগুলো নতজানু চাঁদের কাছে
বন্য এক চাঁদ যখনি আকাশেতে বিশাল হয়ে ওঠে
মনের মাঝেতে কিছু নোনা কান্নার ঢেউ জাগে বুকে
জ্যোৎস্নার মাঝে হাত বাড়িয়ে যখনি পাই না তোকে ছুঁতে।

টুকরো সব হাজার স্মৃতি মনে হামাগুড়ি আসে
চাঁদের লগ্নে তারা যেন সব বসে এসে পাশে
নদী পারে বালু চরে জল জোছনা
ভেসে যায় নদী জলে নোনা কান্না।


সোমবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১২

অন্ধকারের উল্লাস

অন্ধকারের উল্লাস

-যাযাবর জীবন

অথৈ জ্যোৎস্নার ওপারে ঘন অন্ধকার
চাঁদের এক পিঠ দেখা যায়
নক্ষত্রের ওপারে তিমির আঁধার
আলোর কিরণ কোথায়?
বন্য ভালোবাসার ওপারে শব্দহীন উল্লাস হো হো করে
চোখ ঝলসানো অন্ধকার একা একা কেঁদে মরে।




খেলা খেলা

খেলা খেলা

- যাযাবর জীবন

খেলায় আমি হারতে চাই না
তাইতো আমি খেলতে যাই না
মানুষ আমায় ভুল বুঝে;

ভালোবাসা হারাতে চাই না
প্রেমে তাই বাঁধতে চাই না
মানুষ আমায় ভুল বুঝে;

যতটা তোরে ভালোবেসেছিলাম
কতটা তার প্রতিদান চেয়েছিলাম?
একবার মনে করে দেখতো!!!

কোজাগরী পূর্ণিমা ভালোবাসা ছড়ায়
প্রেমের বাতাস হৃদয় নাড়ায়
বুঝে নিতে অনুভবে একা;

মিথ্যা আমি বলতে পারি না
সত্যি আমি বলতে চাই না
ভালোবাসায় ছলনার কথা;

বড্ড কষ্ট ভালোবাসা হারানো
তাই এখন কারো ভালোবাসা চাই না
তুই আমায় ভুল বুঝিস না।