মধ্য দুপুর পর্ব –
- যাযাবর জীবন
মধ্য দুপুর
ঘেউ ঘেউ তাড়শব্দে ডাকছে কিছু পাগলা কুকুর
হয়তো আমাকেই দেখে
স্বজাতির কেও তাদের উঠোন মারাতে এসেছে ভেবে।
কখনো আমি হেটে চলেছি ঘামে ভেজা সপসপে গায়ে
খাড়া রৌদ্দুরের ঝাঁ ঝাঁ সূর্যালোক বাতির নিচে
কিংবা মাঝে মাঝে কাক ভেজা হয়ে
কোন এক বৃষ্টির দিনে মন খারাপ করা দুপুরে
জীবনের প্রয়োজনে, জীবিকার সন্ধানে
কিংবা কখনো বাদুড় ঝোলা হয়ে বাসের হ্যন্ডেলে
চেপেচুপে স্থান করে নেই কোন মতে ভিড় ঠেলেঠুলে
বাসের ভেতরে জায়গা একটুখানি কোনমতে
শত মানুষের ঘাম আর দূষিত নিঃশ্বাসের মাঝে।
আমার তো আর তোর মতন এসিওয়ালা কালো জীপ নেই
প্রশান্তিতে বসে থাকব তার ভেতর
এখানে ওখানে আসা যাওয়া লাটসাহেবের মত করে
তুই বা তোর বিরাট বড়লোক জামাইয়ের মত করে;
বৃষ্টির দিনে আমি কাকভেজা হেটে চলি
খুব মাঝে মাঝে কালো কোন জীপ এসে
আরো একটু বেশি করে
রাস্তার সব নোংরা পানিগুলো ছিটকে দিয়ে চলে যায়
পেছন না ফিরে
ঠিক তোর মতন করে একই সভ্যতায়
যেভাবে তুই ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলি আমায়;
খুব মাঝে মাঝে রৌদ্দুর ঝাঁ ঝাঁ দুপুরে
যখন আমি বাদুড় ঝোলা বাসের হ্যান্ডেলে
পাশে দিয়ে হুস করে এসিওয়ালা গাড়ি চলে যায়
হয়তো তোরই মত কেও
ঠাণ্ডার প্রশান্তিতে বসে অবহেলায় তাকায়
আমি যেন অনুভব করি
তাদের সেই চাহনির বিষের ছুঁড়ি
যাবার কালে যেভাবে চিড়ে নিতে তাকিয়েছিলি
অবজ্ঞা আর অবহেলায়;
তবু খুব মাঝে মাঝে প্রায়ঃশই মনের ভেতরে
তোর কথা মনে হলে অস্থির লাগে মধ্য দুপুরে
যেন শত না বলা কথাগুলো ধেয়ে মনে আসে
মাথার ভেতরে কোথায় যেন এক কবিতা হয়ে ভাসে;
আমি ইতিউতি খুঁজে বেড়াই কাগজ আর কলম
যদি পরে ভুলে যাই লিখে রাখব এখন
নাহ, কোথাও খুঁজে পাই না কাগজ মানুষের ভীরে
কারো পকেটে নাই কলম, সব ছুটছে এখন যার যার তীরে;
কবিতাগুলো আর লেখা হবে না ভেবে
আমি আউড়ে যাই বিড়বিড় করে
উড়িয়ে দিতে শব্দ কিছু বাতাসের গায়ে
যদি ভেসে ভেসে লাগে তোর গায়ে এসে
হয়তো এসির হিমহিম ঠাণ্ডায় একটু উষ্ণতা খুঁজে পাবি
না হয় একটু শুধু অনুভবে আমার বিষণ্ণতা ছুঁবি;
আশেপাশের লোকজন কেমন কেমন তাকায়
পাগল নাকি অন্যকিছু বুঝতে যেন চায়
সরে যায় একটুখানি দূরে
ঠিক তোরই মতন করে
যেন কামড়ে দেব তাদের শত মানুষের ভীরে
যেমন আঁচরে কামড়ে রক্তাক্ত করেছিলি হৃদয় আমায়
চলে যাওয়ার কালে, রেখে গিয়েছিস জানি কোন ঘোরে
তবু আজো কেন জানি প্রতি মধ্য দুপুরে
তোরে বড্ড মনে পড়ে।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন