শনিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

লাগাম


লাগাম
- যাযাবর জীবন

হৃদয়ে ভায়োলিন বাজার সময়টাতে
মনের চালে প্রেমের বৃষ্টিধারা
ভেজা সম্পর্কের শুরুতে লঘু সম্বোধনের ঝড়;
জান, বেবি, কলিজা, ফেপসা, গুর্দা
মিস ইউ, উম্মা উম্মা
তোমারে ছাড়া জীবন চলে না;
আরও কত কথা?

রাগ, অভিমান আর ভুল বোঝাবুঝির আগুনে পুড়ে
যখন সন্দেহের ধোঁয়ায় ছেয়ে যায় হৃদয়
গুরু সম্বোধনের টর্নেডো সম্পর্কের সমাপ্তির ঘণ্টা বাজায়;
এর বাচ্চা, ওর বাচ্চা, xxx বাচ্চা
তোর জন্য জীবন বেড়াছেড়া
ভালোয় ভালোয় বিদায় হ এবার;
মোদ্দা কথা।

সম্পর্ক গড়ে কিংবা ভাঙ্গে জিহ্বার বদৌলতে;
মুখের লাগাম দিতে জানে কজন?
শুরুতে কিংবা সমাপ্তিতে।



শুক্রবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

খেলোয়াড়


খেলোয়াড়
- যাযাবর জীবন

দেয়ালে সাঁটা ক্যানভাসে ছবি দেখে অভ্যস্ত তোমাদের চোখ
আমি লাল ছড়িয়ে দেই মৃত্যুর ক্যানভাসে
তুলির বদলে না হয় ছুরি, চাকু কিংবা চাপাতি
আমি লালে ছবি আঁকি
তোমরা মিছেই রক্ত বল।

পালা পার্বণে ফানুশ দেখে অভ্যস্ত তোমাদের চোখ
আমি আগুন ছড়িয়ে দেই জীবনের ক্যানভাসে
উৎসবে না হয় হলোই পেট্রল ব্যবহার
আমি মৃত্যুর ছবি আঁকি
তোমরা মিছেই বোমাবাজ বল।

না হয় হলোই কিছু মার বুক খালি
ভাই হারা বোন কিংবা বিধবা কিছু নারী
না হয় এতিম হলোই কিছু সন্তান
আমি তো সন্ত্রাসের খেলা খেলি
তোমরা শুধু শুধু রাজনীতি বল।

আ.জ: এই যে নেতা,
আপনার সংসারের কেও যদি খেলার বলি হয়?

নেতা: ঐ শুয়োরের বাচ্চা কাঁচা খাইয়া ফালামু।

"ঢিল যত ওপরেই মারা হোক না কেন
একদিন ঠিক মাথায় এসে পরে।"


বৃহস্পতিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

স্বামী-স্ত্রী



স্বামী-স্ত্রী

- যাযাবর জীবন

আমরা হাসি
আমরা কাঁদি
আমরা ঝগড়া করি
আমরা আদর করি
আমরা রাগ করি
আমরা অভিমান করি
আমরা ভালোবাসি
আমরা সন্তান জন্ম দেই
আমরা বংশবৃদ্ধি করি
আমরা সংসার করি;
কাছে থাকলে পরস্পরকে আমরা অনুভব করি
দূরে থাকলে পরস্পরকে মিস করি
পরস্পরের স্পর্শের জন্য আমাদের কাতরতা
পরস্পরের স্পর্শে আমাদের নির্ভরতা
আমরা দুজন দুজনার
আমাদের সম্পর্কটা অনেকের জন্য ঈর্ষার;

আমাদের সম্পর্কটা তৈরি করেছিলেন অন্য একজন
দুটি ফুলে মালা গেঁথে,
আমাদের সম্পর্কটা তৈরি হয়েছিল অন্য এক ভুবনে
ভালোবেসে, ভালোবেসে;

তোমাদের জগতে আমরা "স্বামী-স্ত্রী"।


মঙ্গলবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

অলীক ভাবনা


অলীক ভাবনা
- যাযাবর জীবন

ইদানীং লাশের রক্তে লাল আকাশে সূর্য উঠে ঘুম ভেঙ্গে
ভোরের খবরের কাগজে লাল কালিতে শব মিছিল
পেট্রল বোমা নাকি আজকাল বড্ড সহজলভ্য হয়ে গেছে
নাস্তার টেবিলে গিন্নির উনুনে পোড়া লাশের গন্ধ ভাসে;
দামাল ছেলের দল তখনো গভীর ঘুমে
ইদানীং স্কুল কলেজের বলিহারি রাজনীতির ডামাডোলে,
পড়ালেখা করে কি হবে?
দেশের কথা ভাবুক আম জনতা
আমি ভাবছি ছেলেকে নেতা বানাব
রাজনৈতিক নেতা;
সুযোগ বুঝে পাল্টি খাওয়াটা শিখিয়ে দিতে হবে
যাতে ঝোপ বুঝে মওকা-মত সঠিক কোপ'টা মারতে পারে
অতঃপর আখেরে ঠ্যাঙের ওপর ঠ্যাং তুলে পোলাও কোর্মার মিছিল
আমায় আর পায় কে?

আমজনতার বিবেক মরে গেছে সেই কবে
এখন অষ্টপ্রহর মিথ্যার মিছিল চলে যত্রতত্র।



সোমবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

লাল ক্যানভাস


লাল ক্যানভাস
- যাযাবর জীবন

প্রেম আসুক কিংবা না আসুক
হৃদয় ধ্বক ধ্বক করবেই

দুঃখ আসুক বা না আসুক
চোখে লবণ জল আসবেই

কোথায় যেন একটা গাঁটছড়া বাধা আছে
প্রেমের সাথে দুঃখের
হৃদয়ের সাথে লালের
ক্ষরণের সাথে লবণের

প্রেমের তৃষ্ণা মিলনে মেটে না
সব জলে লবণ থাকে না
সব হৃদয়ে প্রেম আসে না

হৃদয়ের ধুকপুক থেমে যাওয়ার অনেক পরে বুঝেছিলাম
প্রেম এসে আবার চলেও গিয়েছিল জীবন থেকে;
এখন লালে ছবি আঁকি হৃদয় ক্যানভাসে।


চুমুকাহন


চুমুকাহন
- যাযাবর জীবন

চুমুতে শুরু
চুমুতে আদর
চুমুতে ভালোবাসা
চুমুতে আকর্ষণ
চুমুতে বিহ্বলতা
চুমুতে কাম;
চুমুর সমাপ্তি কোথায়?

কেও অর্ধেক গ্লাস ভরা দেখে
কেও অর্ধেক খালি
তৃষ্ণা মিটে গেলে গ্লাসের প্রয়োজন ফুরোয়
কাম মিটে গেলে স্পর্শটাও কারো কাছে বিরক্তিকর
চুমুতে শুরু
সমাপ্তি বিচ্ছেদে।

ওহে প্রেমিকা, চুমু খাবে না?


রবিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

তোতে



তোতে
- যাযাবর জীবন

হৃদয়ের কাদাভেজা উঠোনে প্রেমের চিৎপটাং
হরহামেশাই,
হাতের উল্টোতালুতে চোখের লবণ চাটা
যখন তখন,
প্রেমের সূচনায়
উন্মত্ত আদর ঝড়ে উল্টানো ছাতা'তে মাছের ডিম ভাসে
বৃষ্টিতে কি যায় আসে?
কে বলেছে কামের সূত্রপাতে শুভদৃষ্টি হতেই হয়?
আগুনের পাশে বরফ থাকলে একটু তো কামভেজা হবেই,
কিংবা নারীর পাশে নর
আর আমার পাশে তুই থাকলে তো কথাই নেই,
ঠোঁটে ঠোঁট লাগানোতে তোর জুরি নেই;

সব ঠোঁটে কি আর চুমু খাওয়া যায়?
আমার শুধু তোকেই প্রয়োজন;
সেই প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত
মাখামাখি হতে
তোতে আর তোতে
ঘর্মাক্ত ভালোবাসায়।





জমিন


জমিন
- যাযাবর জীবন

জমি খালি পড়ে থাকে কতকাল?
কেও না কেও কখনো না কখনো দখল নিয়েই নেয়
জানতে বা অজান্তে
আপোষে বা জবর দখলে
সে মাটির জমিনই হোক আর মনের জমিন;
মাটির বুক চিরে শস্য ফলানো তো আর সহজ নয়
শুকনো জমিনে ধারালো ফলার কর্কশ আঁচড়ে ক্ষত ধরে
তারপর কত সেবা শুশ্রূষা
বীজ পানি সার
তবেই না অঙ্কুরোদগম
শস্যদানায় ভরপুর জমি নিজের দিকে গর্বিত নয়নে চায়
কার জমি কে ভোগ করে তাতে জমির কি আসে যায়?
কারো মনের জমিনে প্রেমের ফল্গুধারা বসন্তে বসন্তে ছায়
কারো মনে কাঠ ফাটা রৌদ্দুর ঘন বর্ষায়;
জমি খালি পড়ে থাকে কতকাল?

যন্ত্রণার কর্ষিত মনের জমিনে এখনো'তো শুধু "তুই"
মনের কপাট খুলে চাঁদনি রাতে তোকে ছুঁই
তারপর আবার অনাবাদী মনের হয়ে রই;
অমাবস্যা দেখতে হবে কতকাল?



শনিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

সময়-ঘড়ি


সময়-ঘড়ি

- যাযাবর জীবন

জীবনটা নদীর মত
বয়ে চলে
ক্ষণে জোয়ার ক্ষণে ভাটা
নদীর জলে;
সময়টা মুঠোর বালু
ঘড়ি টিক টিক চলে
যতই ধরতে যাই
সময় মুঠো গলে;

যদি সময়কে থমকে দেয়া যেত
কিংবা জীবনটাকে;
না হত বিগ-ব্যাং
না হত পৃথিবী
না থাকত সময়
না পেতাম জীবন;

অন্য ভুবনের জীবন কি পৃথিবীর মত?
ওখানেও কি সময়-ঘড়ি টিকটিক করে?
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।


শুক্রবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

জয় পরাজয়


জয় পরাজয়
- যাযাবর জীবন

যখনই মাথায় জয়ের মুকুট
তখনই তোমাদের হাত তালি
বাহবার ফুলঝুরি;
অথচ মনের গভীরে
চোরা উঁকি দিতেই
রিপুর লকলকে কালো জিহ্বা
ওত পাতা লোভের ছোবল ফণা তোলা
বিষিয়ে দিতে তোমাদের সারা গায়
ক্ষণিকের কামের সুখের অসুখ মনেতে ছায়;
কতবার কতভাবে দুমড়ে মুচড়ে ছিনিয়ে এনেছি জয়
বিবেকের টুঁটি চেপে ধরে
জয়ের নেশায় বুঁদ হয়ে
তোমাদের বাহবা পেতে
হাততালি পেতে কার না মন চায়?

তোমাদের পৃথিবীতে যতবার হয়েছে আমার জয়
রিপুর কাছে বারে বারে হয়েছে বিবেকের পরাজয় ।


ঋণাত্মক প্রেম



ঋণাত্মক প্রেম

- যাযাবর জীবন

কাপড়ের ওপরে সব সুন্দরী রমণী
ভেতরটা কারো সাদা তো কেও বহু-গামিনী
লকলকে রিপুর জিহ্বা সবারই পায়ে ঠেকে
পুরুষের বয়স; কে আর দেখে?
প্রেম প্রীতি ভালোবাসার মধুর বাণী
পুরুষের ছলা কলা, সবাই জানি
মেয়ে মানুষ! সব ধোয়া তুলসী পাতা
আড়াল লাগে তাদের, লাগে মাথার ওপর ছাতা;
প্রেম, প্রীতি, ভালোবাসা? ছলনার কথা
বিছানায় জড়াজড়ি, প্রেমের মোদ্দা কথা।





শুক্রবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

প্রেম ইদানীং



প্রেম ইদানীং
- যাযাবর জীবন

হরেক রকম নারী হরেক রকম দেহে
নারী'তে ডুবন্ত পুরুষ প্রেমে কিংবা মোহে
কাপড়ের ওপরে সকলে রঙের ছটায় রঙিন
আদতে দেখতে প্রায় একই রকম কাপড় বিহীন;
প্রেমিকের চোখে প্রেমিকা শত রূপে রূপসী
সকল নারীই সুন্দরী, কম আর বেশী
আদতে নারী দেহ দেখতে সব একই
পার্থক্য স্বামী আর প্রেমিকের দৃষ্টিভঙ্গি;
কারো দেহ টানটান, কেও বা একটু স্থুলো
স্বামীর চোখে আটার বস্তা, প্রেমিকের চোখে তুলো
ওজনে কেও স্বল্প কেও বা একটু ভারী
নব্য প্রেমিকের স্পর্শ বড্ড আনাড়ি;
কেও হয়তো ফর্সা, কেও শ্যামলা কেও বা একটু কালো
স্বামীর চোখে অমাবস্যা, প্রেমিক দেখে জ্যোৎস্নালো
কেও স্বাস্থ্যের দিকে চিকন কেও গুরু নিতম্বিনী
স্বামীর মুখে নিমপাতা, প্রেমিকের মুখে চিনি;
তবুও প্রেম নিয়ে চারিদিকে মাতামাতি হুড়োহুড়ি
আদতে শরীরের দখল নিয়ে মারামারি কাড়াকাড়ি
এ যুগের প্রেমের পরিণতি বিছানায় গড়াগড়ি
কাপড়ের ওপরে প্রেমিকা, খুললেই হয়ে যায় নারী;
নারীর মাঝে কেও হয়তো একটু লম্বা কেও বা বেটে
কি এসে যায়? প্রেম যখন জড়াজড়ি খাটে।