শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৮

ভালোবাসার হিবিজিবি



ভালোবাসার হিবিজিবি
- যাযাবর জীবন


বিরহ তো অন্ধকার
আমার চোখেতে তাপ
ভালোবাসায় তোর চোখে কেন?
বাষ্প বাষ্প ভাপ

চাঁদ জানে না চাঁদনি কেমন
আলো বিলিয়ে যায়
তুই ছাড়া আমি অমাবস্যা
মন অন্ধকারে ছায়

জল জানে না জলের মর্ম
বয়ে চলা সারাক্ষণ
'তুই' নদীতে আমার ভেসে চলা
তোতেই আমার মন

শূন্য চোখ তাকিয়ে থাকে
শূন্যতার দিকে চেয়ে
তোকে ছাড়া আমি শূন্য
ভালোবাসতে গিয়ে

এই যে এত এত ভালোবাসা!
কবিতা আর গান গেয়ে
একবার মনব্যাথা সারিয়ে দিয়ে যাস
আদর চুমু খেয়ে।







হাসি কান্নার অনুভূতি



হাসি কান্নার অনুভূতি
- যাযাবর জীবন


আচ্ছা! অনুভূতি কি দেখা যায়?

ঠোঁট হাসে, চোখ কাঁদে
হাসি ঠোঁটে খুশি দেখি
দুঃখ দেখি অশ্রু চোখে
আচ্ছা! অনুভূতি কি তবে চোখ?
অনুভূতি কি তবে ঠোঁট?
আমি জানি না;

চোখ কি শুধুই কাঁদে?
উঁহু!
আমি চোখের আরও কত কত রঙ যে দেখেছি!

কখনো চোখ হাসতে দেখেছিস? খুশিতে,
সে যে কি অদ্ভুত সুন্দর!
না দেখলে বুঝবি না;

কামনা মদির চোখ তো নিশ্চয়ই দেখেছিস,
না দেখে থাকলে ভালোবাসাবাসির সময় আয়না দেখে নিস
কিংবা আমার চোখ,
উঁহু! ভুল বুঝিস না, আমি কামুক চোখের কথা বলছি না
আমি প্রেমিক প্রেমিকার কামের কথা বলছি, কিংবা স্বামী স্ত্রীর;

রিপু অন্ধ কামুক চোখ! সে অন্য জিনিস
তুই তো নিশ্চয়ই দেখেছিস;
আমি কতবার চোখ দিয়ে তোর শরীর চাটতে দেখেছি
কতজনকে, কতভাবে!
বড্ড ঘিনঘিনে অনুভূতি তাই না রে!
আমারই তো বড্ড ঘৃণা করে
তোর তো করবেই, সেটাই স্বাভাবিক;

লোভে চকচক চোখ দেখেছিস?
অর্থের লোভ, স্বার্থের লোভ
বড্ড কুৎসিত কদাকার,
আমি আর দেখতে চাই না সে মানুষগুলোর চোখ;

চোখের কথা বাদ দে,
এবার ঠোঁটের কথা বলি;
তোর খিলখিল হাসি,
আমি কতবার পাগল হয়েছি!

ঠোঁটে কিন্তু কান্না বসে
দেখেছিস কখনো?
না দেখলে আয়নায় দেখে নিস
যখনই আমার সাথে অভিমানে থাকিস;
একটা কথা কি জানিস!
তুই কিন্তু প্রচণ্ড রেগে গেলে ঠোঁটে কাঁদিস;

তুই কথা বলিস ঠোঁটে ঠোঁটে
তোর ঠোঁটে;
ঠোঁটে ঠোঁটে চুমু খাস
আমার ঠোঁটে;

আমি আমার অনুভূতি দেখতে পাই না
দেখি তোর চোখ
দেখি তোর ঠোঁট,

আমি আমার অনুভূতি চিনি না
চিনি তোর ঠোঁট
চিনি তোর চোখ;

আমি হাসি দেখি
কান্না দেখি
তোর ঠোঁটে চোখে,

আর অনুভূতিহীন ভালোবাসি তোকে,
ঠোঁটে ঠোঁটে।




কান্নার কোলাহল



কান্নার কোলাহল
- যাযাবর জীবন


ভালোবাসায় অপেক্ষা থাকে
অপেক্ষা থাকলেই থাকে অভিমান
অভিমান থেকে রাগ
মনে রাগ এলেই মুখে আগ্নেয়গিরি
গলিত লাভায় ভালোবাসার বিনাশ
ভাঙনের কানফাটা বজ্রপাত,
সময়ের কান্না বৃষ্টিতে এক সময় লাভা ঠাণ্ডা হতে থাকে
তারপর বরফ জমা অনুতাপ;

বরফে কি আর ভালোবাসা হয়?

তুই আগুন আমি জল
আর ভালোবাসায় কান্নার কোলাহল।





প্রথম দেখা



প্রথম দেখা
- যাযাবর জীবন


সেদিনটার কথা মনে আছে তোর?
ঐ যে, যেদিন আমাদের প্রথম দেখা!

আমি তোর অপেক্ষায়
ক্ষণে ক্ষণে পথের দিকে চোখ যায়
দ্বিধাহ্নিত অপেক্ষার প্রহর কি আর সহজে কাটে?
দুপুর গড়িয়ে বিকেল প্রায় হলো
আমি তখনো ঠায় দাঁড়িয়ে, রাস্তার ধারে
আমাদের পূর্ব নির্ধারিত জায়গায়;
আজকালকার মত মোবাইলের প্রচলন আর কোথায় ছিল তখন?
যোগাযোগ বলতে তো লাল রঙের এনালগ টেলিফোন
সেও কত লুকোচুরি সাবধানে!

অনেকক্ষণ অপেক্ষার বাদে একটা রিক্সা এসে থামলো
রিক্সার হুড তোলা,
রিক্সা থামতেই আমি দুরু দুরু বুকে এগিয়ে গেলাম
ধবল পায়ে লাল টুকটুকে ফিতা বাঁধা একপাটি হাই হিল জুতো মাটিতে নামলো
তারপর আরেক পা, নূপুর পড়া
তারপর লাল চাদরে ঢাকা পুরো অবয়ব
বুকের মধ্যে কোথায় জানি একটা কষ্ট কষ্ট অনুভব!

কোথায় জানি জলতরঙ্গ বাজলও, এই যে মিস্টার হ্যালো!
কি হলো?

তোর ঠোঁট নড়ছিল, আমার চোখ কমলার কোয়ায়
তোর কাজল চোখ, আমার দীঘির জলে শ্যাওলা সাঁতার
তোর ভ্রু নাচানি, আমি রংধনু দেখছি
তারপর তুই ফিক করে হেসে দিতেই আমি ডুবে গেলাম তোর টোলে;
সেই যে ডুবলাম! আর ভাসতে পারলাম কোথায়?

বড্ড অদ্ভুত ছিল রে সে দিনটা
আমাদের প্রথম দেখা
আর সেই সেদিন থেকেই মন কবিতার খাতা;

আমি কখনো কবিতা লিখি নি
খাতার পাতায় পাতায় শুধু তোকেই এঁকেছি,
ভোরে ও সকালে
দুপুর কিংবা বিকেলে
সন্ধ্যা আর রাতে
ঘুম ও স্বপ্নে
সূর্য আর চাঁদে
দিন রাত্রির প্রতিটা প্রহরে
যখন যেভাবে তোকে দেখেছি;

কবিতা সামনে রেখে কেও কি আর কবিতা লিখে?
আমি লিখি তোকে।







অমাবস্যার চাঁদ



অমাবস্যার চাঁদ
- যাযাবর জীবন


মানুষের জীবনে কিছু কিছু সময় আসে,
খারাপ সময়
কালো সময়
রাত্রি সময়
অসহায় সময়,
ঘুটঘুটে অন্ধকার মনটাকে ছেয়ে ধরে;

অন্ধকার সময়গুলোতে কাওকে পাশে পেতে ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে কারো হাতে হাত রাখতে
ইচ্ছে করে কেও তো থাকুক! মন হয়ে, অনুভবে;

আদতে অসহায় সময়ে কাওকে পাওয়া যায় না পাশে;
জীবনে যখনই খারাপ সময়গুলো এসেছে
খুব আপনজন
আত্মার আপন, রক্তের বন্ধন
কাওকে পাই নি কাছে;

অথচ তুই ঠিক ছিলি পাশে
সময়ে কিংবা অসময়ে
বুকের একদম কাছে,
প্রখর রোদে মেঘ হয়ে
বৃষ্টিতে ছাতা হয়ে
অন্ধকারে আলো হয়ে
নির্ঘুম রাতের বালিশ হয়ে
ভালোবাসায় জড়িয়ে নিয়ে;

প্রেমিক প্রেমিকা ভালোবাসে
স্বার্থের আশে;
রক্ত সম্পর্কগুলো?
খুব চেনা হয়ে গেছে, কালো সময়ে;

দম্পতির ভালোবাসা? গভীর অনুভবে;
অন্ধকার সময়ে আলো হয়ে
যখন কেও নেই পাশে,
যদি দাম্পত্যে প্রেম থাকে;

যেমন তুই আছিস, জড়াজড়ি হয়ে;

প্রেমহীন দাম্পত্য?
মন অমাবস্যার নাম শোন নি?
কালো সময় রাতের ছলে
নির্ঘুম বিছানা কথা বলে
মন আর কান্নার জড়াজড়ি চলে;

রাত্রি সময়ে কাওকে না কাওকে কাছে পেতে ইচ্ছে করে,
জ্যোৎস্না না হোক অমাবস্যা হয়ে, অনুভবে চাঁদটা তো থাকুক পাশে!

সুসময়ে সবাই রাতের চাঁদ হতে চায়
অসময়ে চাঁদ ঘুমায়, ঘুটঘুটে অমাবস্যায়;
অমাবস্যায় চাঁদনি হতে পারে কে?
আমি দেখিয়ে দেই তোকে।
















খারাপ অভ্যেস



খারাপ অভ্যেস
- যাযাবর জীবন


চোখ আলো চেনে, চেনে অন্ধকার
মন তো দিন আর রাত চেনে না রে
মন চেনে তোকে,
মনের যখনই ইচ্ছে হয় তখনই মন তুই
যখন তখন মনে এসে বসাটা বড্ড খারাপ অভ্যেস তোর;

দিনের অভ্যেস আলো
রাতের অভ্যাস কালো,
পূর্ণিমা?
সে তো মাসে একবার
ঠিক তোর মত,
উঁহু!
তুই তো আরও এক কাঠি সরেস
ভালোবেসে কাছে আসিস বছরে এক আধবার
আর বাকি সময় আমার তারা গোনা,
তুই আমার বড্ড খারাপ অভ্যেস, ভালোবাসায় বোনা;

ভালোবাসার খুব বেশী কাছে আসতে নেই
আমিও দূরত্ব বজায় রাখি অনেকটাই,
খুব বেশী কাছে আসলে একসময় ভালোবাসার পরত খোলা শুরু হয়
তারপর পেঁয়াজের খোসার মত খুলতে খুলতে এক সময় ভালোবাসাটাই নাই হয়ে যায়;
অনুভূতিহীন শুধু তোকে দিয়ে কি করব রে আমি?
কিংবা ভালোবাসাহীন আমাকে নিয়েই বা কি করবি তুই?
তার থেকে এই বেশ আছি!
অনুভূতির পরতে পরতে ভালোবাসা জড়ানো
আর মনের পরতে পরতে তুই
বছরে দু একবার দেখা!
তাতেই সই!
একটু চোখের দেখা, একটু গালের ছোঁয়া, একটা দুটো চুমু
তারপর আবার ভালোবাসার বিরহ,
বছরে বারোটি চাঁদ গুনব প্রতি জ্যোৎস্নায়
একটি দুটি কবিতা লিখব যখন মন চায়
আর বাকি রাতগুলোতে ভালোবাসার তারা গুনব একটা দুটো করে
এখানে নির্ঘুম চোখে আমি, ওখানে ভালোবেসে তুই;

জানিস! মাঝে মাঝে বড় অসহায় লাগে
যখন তুই হুট হাট চাঁদ হয়ে আসিস মধ্য দুপুরে
সূর্য থেকে জ্যোৎস্না ছাঁকার আমার কি সাধ্য আছে বল?
ভালোবাসিস?
বড্ড বেশী?
তবে একবার চিৎকার করে বল!
তারপর ভরা জ্যোৎস্নায় দুজন অন্ধকার হই চল।





অন্ধকারের চাঁদ



অন্ধকারের চাঁদ
- যাযাবর জীবন


জ্যোৎস্না রাতে কি আছে রে?
ঘুম কোথায় দু-চোখে?
মন খারাপের বৃষ্টি ঢল
কষ্ট কষ্ট বুকে

কেও তো আছে, চাঁদনি রাতে
আমার জন্য কাঁদে
খুঁজতে গেলেই পালিয়ে যায়
আকাশ হারায় চাঁদে

কে আছে রে তোর ভেতরে?
আমার জন্য কাঁদে
কখন তোকে ফেলেছি আমি?
ভালোবাসার ফাঁদে

কি আছে রে তোর ভেতরে?
মনটা আমার কাঁদে
অমাবস্যায় চাঁদনি খুঁজি
অন্ধকারের চাঁদে।






কিছু বলা, কিছু না বলা কথা



কিছু বলা, কিছু না বলা কথা
- যাযাবর জীবন


কত মানুষের সাথে কত কথাই না বলা হয়!
কত কথা রয়ে যায় মনের ভেতর;
কত কত কথা মনে আসে, বলা হয় না মুখ ফুটে
কিছু কিছু কথা খুব হঠাৎই বের হয়ে আসে মুখ ফস্কে
কথায় কথায় নিছক কথার পিঠে
যেগুলো আসলে মনের কথা না
তবুও মুখ ফস্কে হঠাৎ বের হয়ে আসা কথার কথায় সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায় মুহূর্তেই
অথচ মনের ভেতরের কথাগুলো কেও শোনে না, কেও বোঝে না;

তোর সাথে, তার সাথে, ওর সাথে কত কথাই না হয়েছে আমার, কথায় কথায়;
তোর সাথে, তার সাথে, ওর সাথে কত কথাই না রয়ে গিয়েছে মনের খাঁচায়!
ওরা ওরা তারা মুখ ফস্কে আসা কথা ধরে নি কখনো
কিংবা কখনো জিহ্ব পিছলে আসা কোন কথায় আঘাত পেলে সাথে সাথে বলে দিয়েছে
আমি সাথে সাথে ব্যাখ্যা দিতে পেরেছি, কেন বলেছি,
ভুল হলে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি, সাথে সাথেই;

অথচ তুই?
মুখ ফস্কেছে তো রক্ষা নেই
কার সাধ্য আছে তোকে বোঝানোর?
কোন কবে কি এক কথা বলেছিলাম তা নিয়ে হাজার ইতং বিতং
কবে কখন কিভাবে কার দিকে তাকিয়েছিলাম তা নিয়ে কত শত রঙ ঢং!
মনে আছে?

আমি এর ওর সোজা কথাই বুঝি না মাঝে মাঝে
তোর এত বাঁকা কথা বুঝব কিভাবে রে?
অত বুদ্ধি কি আমার মাথায় ধরে?

অথচ দেখ!
আজ কোথায় তুই? কোথায় আমি?
কোথায় আমাদের সম্পর্ক?
আর কোথায় মনের অনুভবগুলো?
শুধুমাত্র কোন এক সময়ের জিহ্ব পিছলে আসা কথায় কথায়
ভুল করে মুখ ফস্কে বলে ফেলা কোন এক কথার পিঠে কথায়,
আজ দূরত্ব আমাদের মাঝে দূর, সুদূর;

আচ্ছা এত এত যে কথা বলেছি তোর সাথে!
কথায় কথায় একটা ছোট্ট কথা বলতে কিন্তু ভুলে গেছি
ভালোবাসি,
তোকে বড্ড ভালোবাসি
বড্ড বড্ড বেশী।





ভালোবাসার শেকল



ভালোবাসার শেকল
- যাযাবর জীবন


ভালোবাসা কারো জন্য ঘর
কারো জন্য শেকল;

তবুও মন চায় কেও ভালোবাসুক
কেও তো থাকুক জীবনে যার জন্য বেঁচে থাকা মধুর,
যাকে নিয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করে
যাকে নিয়ে রোদে পুড়তে ইচ্ছে করে
যাকে নিয়ে জ্যোৎস্নাস্নান
যার কথাগুলোই মধুর গান;

আমি ভালোবাসতে জানি না
তবে ভালোবাসা বুঝতে পারি,
বুঝেই বা লাভ কি?
সবাই কি আর ভালোবাসা গ্রহণ করতে পারে?
আমার বড্ড এলার্জি ভালোবাসা ভাইরাসে
বড্ড শরীর কেমন করে
মনে রাত ধরে;

বিনিময় দিতে না পারলে কিছু গ্রহন করতে আমার বড্ড অস্বস্তি,
আর তোর ভালোবাসা?
বড্ড তীব্র রে
খুব যন্ত্রণা দেয় আমায়
কেন এত ভালোবাসিস বলতে পারিস?

ভালোবাসার শেকলে আমার বড্ড ভয়
তোর ভালোবাসায় খুব অস্বস্তি হয়;
আমার ধু ধু প্রান্তর, খোলা আকাশ
হু হু ঝড়, পাগলা বাতাস
গহীন বন, খাড়া পাহাড়
নীল সাগর, মন সাঁতার
ভালোবাসায় কে বাঁধবে আমায়?
সাধ্য আছে কার?

তবুও তুই বসে থাকিস আমার জন্য
ঠায় অপেক্ষায়,
আমার উড়াল ডানা একা একা দূর অজানায়।



মন ছুঁয়ে মন



মন ছুঁয়ে মন
- যাযাবর জীবন


ঐ যে বাতিগুলো দেখছিস!
ঐ যে অনেক দূরে;
অন্ধকার থেকে কি চমৎকারই না লাগে!
অথচ কাছে গেলেই মন হতাশ
বিজলি বাতির কি আর এমন বিশেষত্ব আছে বল?
প্রতিদিনই দেখছি ঘরে বাইরে;
ভালোবাসাটাও অনেকটা দূর থেকে দেখা ঐ সুন্দর বাতিগুলোর মত,
কাছে থেকে খুব ম্যাড়ম্যাড়ে, একঘেয়ে
তাই না রে?

হ্যাঁ বললি কি?
তবে কেন ভালোবাসিস?
বড্ড দুঃখ পেলাম রে,
আমি ভেবেছিলাম না বলবি;
কই আমার কাছে তো তুই প্রতিদিনই চকচকে নতুন
একেবারে আনকোরা
আমি প্রতিদিন তোকে দেখি মোড়ক খুলে খুলে, মনের আয়না জুড়ে
ভালোবাসা কখনো পুরনো হয় না রে;

এই যে ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকি তোকে, মন ছুঁয়ে;
বুঝতে পারিস?
পারিস না?

ধ্যাত!
তবে তো তুই ভালোবাসাই বুঝিস না,
তবে কেন ভালোবাসি বলে শুধু শুধুই মুখে ফ্যানা তুলিস?
ভালোবাসা মুখের বুলি না রে
ভেতরের,
অনেক অনেক ভেতরের অনুভব
তুই বুঝবি না;

আমি তোকে খুব ভালোই বুঝতে পারি
তুই শরীর ছুঁতে চাস, ভালোবাসি বলে
আমি ভালোবাসি মন ছুঁয়ে ছুঁয়ে
তুই আমায় বুঝিসই না,
শরীর ফুঁড়িয়ে যায় দুজন আলাদা হওয়া মাত্র
অনুভব? সে অনেক ভেতরে রে;
যেদিন মন ছুঁয়ে দেবে মন, সেদিনই ভালোবাসা হবে
আর নয়তো কাগজের আঁকিবুঁকি, নিছক কবিতা;

এই যে ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকি তোকে,
মন ছুঁয়ে;
যদি কখনো হারিয়ে যাই
সামলাতে পারবি নিজেকে?



কষ্ট রঙের কষ্ট



কষ্ট রঙের কষ্ট
- যাযাবর জীবন


কত রকম কষ্টই না দেখি চারিদিকে
কত রঙের, কত অনুভবের!

কারো অর্থের কষ্ট কারো স্বার্থের
কারো ভালোবাসার কারো ভালোবাসাহীনতার
কারো প্রেমের কারো বিরহের
কারো ঘরের কারো বাইরের
কারো সংসারের কারো ভাঙনের;

কত রঙের, কত অনুভবের কষ্টই না ছড়িয়ে আছে চারিদিকে!
আমার নিজেরও তো কিছু গোপন কষ্ট আছে
তবে সে কষ্টের রঙ নেই
আমি নাম দিয়েছি কষ্ট রঙের কষ্ট,
আমারও কিছু গোপন অনুভূতি আছে
তবে নেই অনুভূতির বড়াই
আমি নাম দিয়েছি একান্ত গোপনানুভুতি;

কষ্ট রঙের কষ্টগুলো দেখতে দেখতে আমি কেমন জানি রঙহারা
একদিন অনেক অনেক নীল দেখতে দেখতে আমি ঠিক আকাশ হয়ে যাব,
তারপর ঐ দূর আকাশের ওপারে, যেখানে পৌঁছতে হয় নীলঘুমে;

নানা কষ্টের অনুভূতিগুলো সইতে সইতে আমি অনুভূতিহীন
একদিন অনেক অনেক গোপনানুভুতি সইতে সইতে আমি ঠিক মাটি হব,
তারপর মাটির ঘরের অন্ধকারে, স্বপ্নহীন কালঘুমে।



সময়



সময়
- যাযাবর জীবন


সময়কে ধরতে পেরেছে কে?
ধরার আগেই সময় বয়ে গেছে, কালের বাঁকে;

আনন্দের মুহূর্তগুলো চোখের নিমিষেই উধাও
বেদনার সময়গুলো খুব ধীরে কাটে, তবে বয়ে যায়
শুধুমাত্র স্মৃতিগুলো রয়ে যায়,
সুখ, দুঃখ, আনন্দ, বেদনার সব স্মৃতিগুলো
মনের খাতায়,
মানুষের সাধ্য কি সময়কে ধরার?

তুই সময় ধরতে গিয়ে কান্না ধরেছিস
আমি অন্ধকার ধরতে গিয়ে রাত
ভালোবাসার কমতি ছিলো না কারো মনেই
তবুও কেও কারো ধরতে পারি নি হাত;

দেখিস! একদিন ঠিক আমরা সময় ধরব দুজনে
আর হারিয়ে যাব, কালের স্মৃতি হয়ে;
মাটির দুটি ঘরে দুজন গভীর ঘুমে
ওখানে নিশ্চয়ই সময় স্থির হয়ে রবে।







যোগ্যতা



যোগ্যতা
- যাযাবর জীবন


ভালোবাসতে কোন কারণ লাগে না
কখন যে কাকে ভালো লেগে যায়!
আর ভালোলাগা কখন যে ভালোবাসায় পরিণত হয়!
কে বলতে পারে?

যোগ্যতা লাগে ভালোবাসা পেতে হলে,
সবাই কি আর ভালবাসা পায়?
তবে কেও কেও পায়
কারণ ছাড়াই

এই যে তীব্র আলোটা দেখছিস!
ওটা তোর ভালোবাসা
পথটা একদম ঝকঝকে স্বচ্ছ
দূর বহুদূর পর্যন্ত

ঐ যে টিমটিমে আলোটা দেখছিস!
ওটা আমার ভালো লাগা
ঘোলাটে ম্লান
যে কোন সময় হারিয়ে যেতে পারে

ভালোবাসার যোগ্য আমি নই
তবুও তুই আমাকে কারণ ছাড়াই ভালোবাসিস;
ভালোবাসা পাওয়ার সব গুণ তোর মাঝেই নিহিত
অথচ আমি তোকে চেষ্টা করেও ভালোবাসতে পারি নি
কেও ফুল ভালোবাসে কেও গন্ধ
তুই পাথর ভালোবেসে অন্ধ;

একদিন দেখিস ঠিক হারিয়ে যাব তোর আলোকিত পথ ধরে
দূর বহুদূরে
সেদিনও কি ভালোবাসবি ঠিক এমনি করে?
আমার ভালোলাগা তোকে কিন্তু পথ দেখাবে না, ঘন অন্ধকারে।




রাতের কান্না




রাতের কান্না
- যাযাবর জীবন


অন্ধকারের কিছু শব্দ থাকে
থাকে কিছু আলো
শব্দ থাকে নিস্তব্ধতার
বধির হলেও,
শব্দ থাকে রাতের, নিস্তব্ধ ও কালো;

হৃদয়ের শব্দ শোনে হৃদয়
যে ভালোবাসে,
আর বাকিদের কাছে ধুকপুক;

আচ্ছা! রাতের কান্না শুনেছ?
কিংবা হৃদয়ের?
ঐ যে একটা তারা খসে পড়লো
কখনো তো রাতের অশ্রু চেনো!

এবার কিছু ইচ্ছের নৌকা ভেড়াও, হৃদয়ের তীরে
তারপর না হয় হারিয়ে যাও অন্ধকারে, জোনাকির ভীরে।





শিক্ষার অভাব



শিক্ষার অভাব
- যাযাবর জীবন


বেঁচে থাকার জন্য কত কিছুই না শিখেছি!
শিক্ষা, দীক্ষা, ক্ষুধা নিবারণ, আয় উপার্জন
বেঁচে থাকার প্রতিযোগিতায় শিখেছি ছিনিয়ে নেয়া
ছলে, বলে, কৌশলে যেভাবেই হোক না কেন!
প্রতিযোগী কে হটিয়ে দেয়া;

শিখেছি লোভ, লালসা, রিপু, লিপ্সা
চুরি, বাটপারি, ঘুষ, জোড় করে কেড়ে নেয়া,
আরে বাবা এগুলো কি আর ইচ্ছে করে করি?
সবই তো করতে হয় বেঁচে থাকার প্রয়োজনে;
মন কে বুঝ দেয়া কতই না সহজ
তাই না?

অসম প্রতিযোগিতা,
আকাশ সম চাহিদা আমাদের পশু করে দিয়েছে;
আদতে বেঁচে থাকার জন্য খুব বেশী কিছু কি প্রয়োজন?
একটা জিনিষের প্রয়োজন তো আছেই
মানুষ হওয়া;

বেঁচে থাকার জন্য কত কিছুই না শিখেছি!
ভালোবাসার জন্য শেখা হয় নি ভালোবাসা।


স্বপ্ন আমার জন্য না



স্বপ্ন আমার জন্য না
-যাযাবর জীবন


মনে আছে নদী পাড়?
নীল পানি
সবুজ মাঠ
আর লাল টুকটুক শাড়িতে তুই;

চোখে চোখে
মনে মনে
স্বপ্নে স্বপ্নে
তোকে আমি ছুঁই;

ইশশ! জীবন কবিতা হলে কি ভালোই না হত!!

স্বপ্ন সবাইকে মানায় না
স্বপ্ন আমার জন্য না।