রবিবার, ২৯ জুন, ২০১৪

স্বার্থ চিন্তা



স্বার্থ চিন্তা
- যাযাবর জীবন

প্রথম দাঁতটা ইঁদুর খেয়েছিল
দাদীর হাতে
শেষ দাঁতটা টুপ করে ঝরে গেলো
নাতির হাতে
দু প্রান্তে দু প্রজন্ম
মাঝখানে সেতুবন্ধন আমি;
আদি থেকে পরিবারের চলমান ধারা
একসময় বনেদী ছিল
সম্পর্ক
পরিবার
অনুশাসন
ঠিক দাঁতের মতই শক্ত,
দিন বদলাচ্ছে
বদলাচ্ছে সম্পর্কের ধরণ
খুব সহজেই ফাটল
কিংবা ভেঙে যাচ্ছে সহসাই অকারণ;
দাঁতের মত শক্ত হয় না এখনকার সম্পর্কগুলো
পোকা ধরার আগেই টুপ করে ঝরে পরে স্বার্থ বাতাসে।

বৃদ্ধাশ্রমগুলোও যেন আজকাল ব্যবসায়ে পরিণত হয়েছে
আমার সঞ্চয় কি আছে? নতুন করে ভাবতে হবে।


শুক্রবার, ২৭ জুন, ২০১৪

ফেসবুক বন্ধু


ফেসবুক বন্ধু
- যাযাবর জীবন

ফেসবুকটা বড্ড মজার,
নতুন নতুন অপরিচিত কত আই ডি
সেখানে সদর্পে ঘুরে বেড়ায়,
প্রথমে পরিচয়
তারপর টুকটাক
হঠাৎ করেই বড্ড আপন;
কারো এখানে বাস
কেও থাকে অনেক দূরে
ভার্চুয়াল জগতের মিলন
এভাবেই ঘুরে ঘুরে
সময়ের সাথে সময় গড়ায়।

সকাল বেলাটা আমার বড্ড ব্যস্ত কাটে
তোর তখন রাত্রির দ্বিতীয় প্রহর
আলসে হাই এর আড়মোড়ে চোখ ঘুম ঘুম
কখনো বিছানা থেকে ধড়ফড় উঠে যাওয়া
আমার কথা মনে হলে
বড্ড আবেগী প্রেম নতুন পরিচয়ে,
কখনো বা মনের অজান্তেই চোখ লেগে যাওয়া
পাশবালিশটা বুকে জড়িয়ে
কিছু সময় স্বপ্ন জগতে বিচরণ;
সাথে কে?
আমি না বক-রাক্ষস তাতে কি এসে যায়!

আজ আমার দুপুরে বড্ড অগোছালো ছিলাম
হঠাৎ করেই মনে এলো
তোর বোধ হয় সকাল হলো
তবু পরিচিত মেসেজের আগমনে
মুঠোফোনটা এখনো টিং করলো না কেন?
একটু অস্বস্তি মনের ভেতর
ফেসবুকে উঁকি,
ওমা!!
কোথায় তুই?
এ যে বন্ধ হয়ে যাওয়া আই ডি
বরাবরের মত;
এক বার
দু বার
বার বার
অনেকবার
এতে আমি আমি বড্ড বেশী অভ্যস্ত
মনে মনে একটু হাসলাম;
বিদায় বন্ধু, ভালো থেকো।


বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০১৪

স্মৃতিতে অমলিন



স্মৃতিতে অমলিন
- যাযাবর জীবন

নিস্তব্ধ আমি
স্তব্ধ তুই
নিথর হয়ে
একলা শুয়ে রই,
উড়ে যায় পাখি
পালক ঝরিয়ে
বর্তমান কথা বলে
অতীত সরিয়ে,
বাতাসের স্পর্শে যদি পাস পালকের পেলব
ভুলে যাস তখন আমায় হারানোর অনুভব;

হারানোর বেদনা সয়ে যাবে হয়তো একদিন
স্মৃতিতে তোর থাকব আমি চিরদিন অমলিন।



শুক্রবার, ২০ জুন, ২০১৪

সত্যের দিশা



সত্যের দিশা
- যাযাবর জীবন

মাছ পচে দুর্গন্ধ ছড়ায়
মাছ পচানো হয় শুকিয়ে খায়
পচা মাছ মাটি চাপা দুর্গন্ধ এড়াতে
শুঁটকির কদর অনেক বেশি রসনা মেটাতে
পচে যাওয়া আর পচানোর মাঝে পার্থক্য কোথায়?
কোনটা সত্য?
পচে যাওয়া না পচানো?
কে জবাব দেবে?

মন নষ্ট হয় বয়সের ভারে, মরে যায় ধীরে ধীরে
মন নষ্ট করে দেয় মানুষের ব্যবহারে
নষ্ট মন নিয়ে নষ্ট কষ্টে জীবন, ধুঁকে ধুঁকে চলে
নষ্ট করে দেয়া মনে ঘৃণা, বিতৃষ্ণা আর প্রতিহিংসা জ্বলে
নষ্ট হয়ে যাওয়া আর জোর করে নষ্ট করে দেয়ার মাঝে পার্থক্য কোথায়?
কোনটা সত্য?
নষ্ট হওয়া না করা?
কে জবাব দেবে?

মনের গহীনে উঁকি দিলেই কি
জবাব পাওয়া যাবে?
নাকি সত্যের শেকড়
জীবনের আরো অনেক গভীরে।

ধ্রুব সত্য বলে কি কিছু আছে?
নাকি সবই কথার খেলা, কথার মারপ্যাঁচ
জীবনে সত্য বলে যদি কিছু থাকে
মাটির দেহ মাটিতেই যাবে
কিংবা পুড়ে ছাই হবে
সত্য, সত্যের দিশা খুঁজে নেবে।


বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন, ২০১৪

চক্র


চক্র
- যাযাবর জীবন

জানালার শিক ধরে নেমে আসে রাত
জানালার শিক বেয়ে উড়ে যায় দিন
সুখ দুঃখ
হাসি কান্না
প্রেম প্রীতি
ভালোবাসা ঘৃণা
আলো অন্ধকার
দিন আর রাত্র
ক্রমাগত, জীবনের চক্র;
আমরা ঘুরছি,
আমি
তুমি
সে
ঘুরছে পৃথিবী
জীবন চলছে অন্তহীন পথে।

অতঃপর ব্যথাগুলো এক এক করে মিলিয়ে যাবে
অতঃপর সব গান থেমে যাবে,
তারপর চুপচাপ;
অতঃপর মাটিতে মাটি ঘুমুবে,
পরম শান্তিতে;
অতঃপর স্তব্ধ চারিধার
অন্ধকার শুধুই আমার;
ছুটে চলবে তুমি
দৌড়বে সে
ছুটে চলা জীবনের,
অন্তহীন পথে।

পৃথিবীর ছুটে চলা সদর্পে
বিরামহীন পথে
নিয়মমাফিক তাঁরারা ঝরে পড়বে কিছু
আকাশ হতে
জানা আছে সবারই,
কে কার কথা মনে রাখে?
তবুও কিছু শূন্যতার অনুভব
হয়তো রয়ে যায় কোথাও
কিংবা ভালোবাসার;
অতঃপর গতিই জীবন
অন্তহীন পথে।


ভালোবাসার ঘর


ভালোবাসার ঘর
- যাযাবর জীবন


রাত্রি দেখেছ?
অন্ধকার কালো।

মনের গভীরে ডুব দেও
ওখানে ঘন অমাবস্যা
সূর্য খুঁজছ কেন?

ভালোবাসা খুঁজতে এসো না,
হেমলক থেকে অনেক বিষ বয়ে এনেছি;
নীলাম্বরী হবার এত সাধ কেন?

নীল চেন কি? হে নারী,
বিষ?
আমায় ছুঁয়ে যাও একবার
অতঃপর নীল হও
তারপর চির অন্ধকার
সাধের ভালোবাসার ঘর।

শুক্রবার, ১৩ জুন, ২০১৪

এলোমেলো টুকরো কথা - ১



এলোমেলো টুকরো কথা - ১
- যাযাবর জীবন

***********
বোধের এপারে আমি
ওপারে তুই
মাঝে অভিমানের ভাঙ্গা সাঁকো
দু-পারে দুজন অপেক্ষায়
ভালোবাসার বোধ নিয়ে মাথায়
সাঁকো পাড় হওয়া হয় না কারো............

*************

দমকা বাতাস এসেছিল একবার
গা পোড়ানো কিংবা লিলুয়া
বয়ে গেছে গা বেয়ে
ভালো করে বোঝার আগেই
দমকা বাতাস এলোমেলো করে দেয়
বোঝার আগেই।

জীবনের কোন এক মোড়ে
নারী এসে পড়েছিল বুকে এক, ঝড়ের তোড়ে
হাস্যমুখি কিংবা লাস্যময়ী
হারিয়ে গিয়েছিল আবার বুঝে ওঠার আগেই
ঝড়ো প্রেম বড্ড এলোমেলো করে দেয়
বোঝার আগেই।

**********************

কাল রাত্রে এসেছিলি
খুব চুপিচুপি;
ঘুমবালিশটায় পড়ে আছে
তোর কিছু চুল
লেপ্টে আছে এখনো কিছু ওম
রাতের আঁধারে যা দিয়েছিলি;
চোখ মেলে দেখি তুই নেই
স্বপ্ন ভাঙ্গা ঘুম চোখে
তোর গায়ের গন্ধ বড্ড লাগে নাকে,
এদিক ওদিক তোকে খুঁজি
আবার চোখ বুজি;
এরচেয়ে স্বপ্নজগৎ ঢের ভালো ছিল
অনুভবে তো তুই ছিলি।

********************


মানুষ কষ্ট পায়
মানুষ আঘাত সয়
পাথর নয়

আমায় কষ্ট দেবে কে?


*************

হাত আর তালুর মাঝের দূরত্ব কতখানি?
হৃদয় থেকে হৃদয়ের দূরত্ব - অসীম
তোর আর আমার;
ছোঁয়া আর স্পর্শের অনুভবের পার্থক্য কতখানি?
চাওয়া আর পাওয়ার মাঝের ব্যবধান - ইনফিনিটি
তোর আর আমার;
ভালোবেসে জড়িয়ে আছি দুজনে অঙ্গাঙ্গী, অনুভবে
অথচ এক হওয়া হলো না
তোর আর আমার; - "নিয়তি"।

*******************

রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে থাকে
কিছু না বলা ব্যথা;

চাঁদের কি দায় পড়েছে ব্যথাগুলো ঢেকে রাখার?

চন্দ্রাহত মানুষ স্থাণু দাঁড়িয়ে রয়
জ্যোৎস্নার রাতে,
ব্যথাগুলো লজ্জায় আরক্ত
খোলা চাঁদের আলোয়;

ব্যথারও তো মাঝে মাঝে মুখ লুকোতে ইচ্ছে করে
ঘন অন্ধকারে।

***************

অর্থের থেকে বড় শত্রু আর আছে কে?
প্রয়োজন ফুরোলেই ভুলে যায় মানুষ
কর্জ নিয়েছে সে;
পাওনাদার কখনো মনে করিয়ে দিলে
সম্পর্কের ইতি টেনে দিয়ে
তুমি কে হে?

***************

অল্প কাজ, মন দিয়ে
স্বল্পাহার, সময় নিয়ে
অল্প কথা, ওজন মত
স্বল্প বুদ্ধি, দূরে থাক
একটি প্রেম, সততা নিয়ে
একটি তুই, হৃদয় দিয়ে.........

*************

কাল সারারাত বৃষ্টি হয়েছে
আজো মুখভার আকাশের
আসুক বৃষ্টি ঝেঁপে
আমিও দেখে নেব
কতটা নোনাজল আছে তার বুকে;
চেখে দেখার সাহস কি আছে তোর?

এ কেমন ক্ষরণ?
জলের স্বাদে নুন-লবন।

**************

মুঠো খুললেই মুঠো মুঠো ফাঁকা
হৃদয় খুললে তুই আর তুই
চোখ খুললেই একদম একা

*************

কাটফাটা দুপুরে ডাবের গায়ে আগুন
দামটাকে ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করা গেলে
না হয় একটু ডাব বিলাসই হলো;
"বৃষ্টি বিলাস"?
কল্পনাতেই রয়ে গেলো।

****************

সিঁড়ি -
ওপরে ওঠার
না পতনের
জানি না
জানতে ইচ্ছেও করে না
কি হবে এত জেনে?

**************

পানপাত্র আমার হাতে নেই
নেই পানীয়
জল ঢালে কে?
ভালোবাসার মানুষটি অনেক দূরে
কিছু অনুভব আছে ঘিরে
অপাত্রে ভালোবাসা ঢালে কে?

আছে আকণ্ঠ তৃষ্ণা
পানের কিংবা ভালোবাসার।
***************

যতই সরাতে চাই
ততই জড়িয়ে যাই
জালে
কিংবা তোতে।

**********


দুপুরে আকাশে চাঁদ
জ্যোৎস্নার তাপদহ
প্রখর সূর্যালোকে ঠান্ডা হবে প্রকৃতি;
তোকে আর আমাকে
এক করে দেবার
বৈশাখী ঝড়ের সাধ্য আছে কি?

আজ তোর বৈশাখ
আমার বারোমাস চৈত্র সংক্রান্তি।

************

আগুন সুন্দরী ফাগুনেই মানায়
পলাশে কিংবা কৃষ্ণচূড়ায় ছড়ায় লাল
আমার চোখে শিমূলের কাঁটা;
সূর্য সুন্দরী আলো ছড়ায়
তীব্র আলো চোখ ধাঁধায়
কালো চশমায় আমার চোখ ঢাকা।

তুই আরেকটু কম সুন্দরী হলে
হয়তো আমাদের মাঝে প্রেম হতো।

*****************

প্রেমের উৎপত্তি মনে
পরিণতি শরীরে
মৃত্যু হৃদয়ে;

সীমাবদ্ধতা
দেহের
মনের
না প্রেমের?

***********

আমার যদি সত্যি সত্যি একটি হৃদয় থাকতো
তবে তোর হাসিতে কবেই তা গলে যেত;

পচা গলা হৃদয় বয়ে বেড়ানো থেকে
হৃদয়হীন হয়ে থাকাটা খুব একটা মন্দ নয়।

*****************

অনেক রঙের পেন্সিল হাতে বসে থাকি
অনেক রঙ এর ভাবনা
কবিতাগুলো সাদা আর কালো কেন
ভেবে পাই না।

****************

সবার চোখ থাকে ভরা গ্লাসের দিকে
তুই খালিটাই দেখলি?

ঋণাত্মক ভালোবাসা
তোর সাথেই যায়।

************





বৈশাখ ৭ ৫ ৫


বৈশাখ ৭ ৫ ৫
- যাযাবর জীবন

.........

হাওয়া খুব জোর
পাতা উড়ছে
বৈশাখী ঝড়

.........

মেঘের গুরু ডাক
আকাশে বজ্র
ঝরছে জল

.........

কোথাও তুই নেই
একলা ছাঁদ
মন উদাস

.........

আজ চৈত্রের রাত
রবি উঠবে
কাল বৈশাখ

.........

(৭, ৫, ৫)



ঘুমের নেশা



ঘুমের নেশা
- যাযাবর জীবন

অন্ধকারে পুড়ে গেছে জ্যোৎস্না
রাত পুড়ে হয়েছে নিষক কালো
ঘুম পোড়া ছাই উড়ছে রাত ভর
স্বপ্ন ধরবে বলে বইছে বাতাস
আলোর বাতি সব আঁধারে ডুবিয়ে
আগুন নিভিয়ে দিয়েছি খুব সযতনে
যদি অমাবস্যাটাও পুড়ে যায়
তবে আমার রইবে কে?

স্বপ্নগুলো এখন আর বসে না দুচোখে এসে
চোখ জ্বলে ছাই হয় রাত গভীর হতে
সূর্য জাগে রাতের বেলায় আমার দুচোখে
ঘুমাই নি সেও তো কতদিন হয়ে গেছে!

আমার আজ বড্ড ঘুমের নেশায় পেয়েছে
সূর্যের বাতিটা কেও নিভিয়ে দিয়ে যাও।



ভুল বারে বার


ভুল বারে বার
- যাযাবর জীবন

ভুল হয়েই যায়
কোথাও না কোথাও
জানতে বা অজান্তে
মানুষ বলে কথা!
প্রায়শ্চিত্ত করে শুধরে নেয় নিজেকে
মানুষ তাকেই বলে।

একই ভুল বার বার করে
ভুল কি আর তাকে বলে?
সে যে পাপ হয়ে যায়
মূর্খ মানবের বোঝার সাধ্য কোথায়।

কিছু মানুষ পাপ করে
ইচ্ছে করে
কি এসে যায় ভাব ধরে
ধুরন্ধর মানুষগুলো
দাম্ভিকতার ভরে
অমানুষ তারে বলে।




ডিজিটাল প্রেমের ভণ্ডামি



ডিজিটাল প্রেমের ভণ্ডামি
- যাযাবর জীবন

দৃশ্য - ১:
স্বামীর বুকে মাথা রেখে
চোখ বুজে নিচ্ছিস আবেশে ওম
ফেসবুক প্রেমিকের হাতছানিতে টিং করল মোবাইলটা
আধখোলা চোখে ছুড়ে দিচ্ছিস তাকে ভার্চুয়াল উড়ন্ত চুম;
মেয়েদের সাহস একটু বেশিই হয়
স্বামী নামক চিজ পরোয়া করতে নয়।

দৃশ্য - ২:
স্ত্রীকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে খুব সাবধানে
মোবাইলটা সাইলেন্ট মুডে চুপেচাপে টিপে যায় বোতামে
প্রেমিকা ওদিকে অপেক্ষার প্রহর গোনে স্বামীর বুকের পরে
উম্মা উম্মা উড়ন্ত চুম্মা
দুজনে মিলে ভার্চুয়াল চুম
মোবাইলের ইমোতে ভাসে শরীরের ওম;
ছেলেদের অত সাহস কোথায়?
অকাজ যত স্ত্রী ঘুমানোর পরে চাড়া দেয় মাথায়।

ভণ্ডামির একটা সীমা থাকা দরকার
কিংবা ডিজিটাল প্রেমের রূপরেখার।


বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০১৪


বোধে বিবি সাহেবান
- যাযাবর জীবন

ও গো বিবি সাহেবান,
অহংকারের এত কি আছে?
নিত্যই করে যান;
আপনার পেট আছে
আছে ক্ষুধা, খাদ্য খান
আপনার ঘরের ঐ বান্দিটারও তো ক্ষুধা লাগে
মোচড়ায় পেটের ভেতর
আঁচড়ায় ক্ষুধার নখর
একবারও কি চিন্তায় আসে?
তার কথা কেন ভুলে যান?
আপনারা ভাত খান, সে কি পাথর খায়?
পেট ভরলে আপনি না হয় নরম ম্যট্রেসে ঘুমান
সে মাটিতে শুয়েই ঘুম যায়
যদি পেটে পড়ে সেদ্ধ একমুঠ চাল
আপনার মাটির শরীর রক্তে মাংসে গড়া
তারও তো হাত কাটলে রক্ত বের হয় লাল;
আপনার দেহে যতগুলো ভাঁজ
তারও কিন্তু আছে সম পরিমাণ
আপনার আছে
লোভ
কাম
ক্রোধ
ক্ষমতা আছে আপনার মেটানোর সে সব বোধ;
তার নেই?
আছে, শুধু মেটানোর ক্ষমতা নেই।

আপনি না হয় স্বামী সোহাগী
ওম নেন বুকের ভেতর ঢুকে
সাহস থাকে তো ভালোমানুষ স্বামীটারে
রাতের অন্ধকারে,
একবার সুযোগ দিয়ে দেখেন দেখি!
কত দেখলাম ভদ্দরনোক!!!

লাইটের আলোতে আপনি না হয় দেখতে সাদাই হলেন একটু
সাহস থাকে তো লাইট নিভিয়ে দেখুন তো পরখ করে
তার আর আপনার মাঝে পার্থক্য কতটুকু?
শরীরের ভাঁজে
দেহের খাঁজে
অনুভূতিতে
ক্ষুধায়
যন্ত্রণায়
কামে
ও ক্রোধে;
ভেবেছেন কি একবার?
আসে কি বোধে?
তবে এত অহংকার কেন গো আপনার
হে বিবি সাহেবান।




বুধবার, ১১ জুন, ২০১৪

অশ্রুকন্যা


অশ্রুকন্যা
- যাযাবর জীবন

কালো দুচোখ দেখেছি ভাসাভাসা
পড়তে পারিনি তাঁর চোখের ভাষা
চুপ করে থেকেও যেন কবিতা বলে
কথায় কথায় হেসে ফেলে
কান্নার ফোঁটা চোখে টলটলে
যেন টুপ করে এই ঝরে পড়লো বলে!

অশ্রুকন্যা তোরে বানিয়েছেন অনেক যত্ন করে
হাত পাতি না হৃদয় পাতি
অশ্রু কোথায় ধরে রাখি?
ওপরওয়ালা এতটা ক্ষমতা দেয়নি মোরে।

প্রেমের কাকভোর



প্রেমের কাকভোর
- যাযাবর জীবন

জাগিয়ে দিলি আমায় সেই কাকভোরে
স্বপ্ন-ঘুমে কাকঠুকরে
নাইতে এলেম দুজন মিলে
কাকচক্ষু পুকুর-জলে;
এমা ছি ছি
কাকগুলো কি নির্লজ্জরে!
আরে আরে!!
দেখছে মোদের জলকেলি দুচোখ মেলে
কাকা রবে কান ঝালাপালা।

প্রেমিকের আবার লজ্জা আছে নাকি?


স্বপ্নে তুই


স্বপ্নে তুই
- যাযাবর জীবন

চায়ের কাপে টুংটাং
চামচে চিনি খানিক
ঝিরিঝিরি বৃষ্টি
কাপে আলসে চুমুক
অনুভবে তোর ঠোঁট
বড্ড মিষ্টি।

অনুভবে তুই
বিহ্বল হয়ে রই
স্পর্শে তুই
হাত বাড়িয়ে একটু ছুঁই;
এই যাহ্‌
দমকা হাওয়াতে
উড়িয়ে নিলো তোকে
উড়ে গেল স্বপ্ন
চলে গেলি তুই।

তুই বড্ড জ্বালাতন করিস স্বপ্নে এসে
চোখ খুললেই মিলিয়ে যাস পরীর দেশে।


রবিবার, ৮ জুন, ২০১৪

দাবার ঘুঁটি


দাবার ঘুঁটি
- যাযাবর জীবন

দাবার ঘুঁটি আমরা সবাই
খেলে অন্য কেও
বসে অন্য কোথাও;
শতরঞ্জির খেলায় এক ঘর হাঁটে রাজা কুঁড়ে
মন্ত্রী লাফায় বিপুল বেগে তাঁর চারিদিক জুড়ে
ঘোড়ার লাফ আড়াই ঘরে
রাস্তা কাটে হাতি পেঁচিয়ে শুরে
পাল তোলে নৌকা ওপর নীচে
এক পা, এক পা করে বাড়ে বড়ে
শতরঞ্জির পুরোটা মাঠ জুড়ে,
দাবার ঘুঁটি শতরঞ্জিতে সেজে বসে
খেলে অন্য কেও, অন্য কোথাও বসে।

শতরঞ্জির খেলার মাঠ
সাজ সাজ রব রণের মাঠ
খেলা শেষে সৈন্য সামন্ত রাজা মন্ত্রী
দাবার বাক্সে একসাথে মিলে সবাই বন্দি;

জীবন খেলায় আমরা সবাই দাবার ঘুঁটি
শতরঞ্জির মাঠে সবাই মিলে সেজে বসি
খেলে অন্য কেও, অন্য কোথাও বসে
বড়ে'র ঘোড়ার লাফ দেখে কুটিকুটি হয় হেসে;

রাজার সাথে দাবার বাক্সে পাশাপাশি শোয় বড়ে
মরার পরে সকল দেহ মাটি হবে, মাটির ঘরে।