শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০১৯

ডুবে যাওয়া সূর্যে



ডুবে যাওয়া সূর্যে
- যাযাবর জীবন


ডুবে যাওয়া সূর্যে ডুবন্ত আমি
গোধূলির আকাশে কত কত উড়ন্ত পাখি!
বড্ড চঞ্চল ওরা
বাতাসে ডানা ঝাপটানো ইতিউতি
সন্ধ্যে ঘুমানোর আগে
ডুবন্ত চোখে চেয়ে চেয়ে দেখি;
আমি কখনো মন খারাপ করা নারী দেখি নি,
আচ্ছা, পাখিদের কি মন খারাপ হয়?
আমার মত;

পাখিগুলো বড্ড ওড়ে
তোর মত করে
আমি ডুবে যাচ্ছি ধীরে ধীরে
অন্ধকার থেকে অন্ধকারে
তারপর এক সময় রাত নামতেই তুই চাঁদনি
আর সূর্যাস্তে ঘুমন্ত আমি,
আমি কখনো মন খারাপ করা চাঁদ দেখি নি,
আচ্ছা! রাতের কি মন খারাপ হয়?
আমার মত;

আমার কখনো নারী চেনা হলো না
দেখা হলো না তোকে
দেখা হলো না রাত
চেনা হলো না চাঁদ,
ভালোবাসা চিনব কি করে?
কিংবা তোকে;

একদিন ডানা ঝাপটে ক্লান্ত হয়ে গেলে
একদিন উড়ে উড়ে ডানা ভেঙে গেলে
একদিন তোর আকাশে চাঁদ ডুবে গেলে
একদিন তোর চোখে আলো হারিয়ে গেলে
ডাক দিস আমায় অমাবস্যার ওপার থেকে
সেদিন না হয় ভালোবাসতে শেখাবো তোকে
অন্ধকারের আঁধার হয়ে;

সবাই তো ভালোবাসে
আলোতে আলোতে রূপ দেখে দেখে
আমি না হয় ভালোবাসব তোকে, অন্ধকারে অন্ধ চোখে।




কোথাও মেঘ নেই



কোথাও মেঘ নেই
- যাযাবর জীবন


আমার আকাশটা বড্ড শুকনো শুকনো
ঘোলাটে নীল নীল,
একটি দুটি মেঘ না থাকলে কি ভালো লাগে?
কিংবা একটি দুটি পাখি;

তোর আকাশে বড্ড মায়া
মেঘের মত ভেজা ভেজা,
তোর বুকের সবুজ পুকুরে অনেক শ্যাওলা
ভালোবাসায় যখন তখন ভেজাতে চাস আমাকে,
আরে বোকা মেয়ে!
সবুজ কি কখনো নীলকে ঢেকে দিতে পারে?
তবুও কেন এত ভালোবাসিস আমাকে?
কেন পাখি হয়ে উড়তে চাস আমার আকাশে!
ভালো করে চেয়ে দেখ
কোথাও মেঘ নেই আমার আকাশে।




ভালোবাসার হরেক রকম



ভালোবাসার হরেক রকম
- যাযাবর জীবন


এক একটা সময়ের ভালোবাসা এক এক রকম
একটা সময়ে ভালোবাসা শুধুই শরীর
ঠোঁট, হাত, লিঙ্গ আর
কেজি কেজি মাংস,
একটা সময়ে ভালোবাসা নদী
দুজন দুজনে বয়ে যাওয়া,
একটা সময়ে ভালোবাসা পাহাড়
ঠেলেও যায় না সরানো,
একটা সময়ে ভালোবাসা সাগর
লবণ আর চোখের জল,
একটা সময়ে ভালোবাসা আকাশ
বিশাল এক নীল কষ্ট,
কোন একটা সময়ে এসে বোঝা যায়
ভালোবাসা মন
শুধুই অনুভব;

কত আর ভালবাসবো তোকে?
নদী হয়ে
পাহাড় হয়ে
সাগর হয়ে
আকাশ হয়ে;

তুই আমায় চাঁদ দিতে চাস
জ্যোৎস্না তোর কাছে রেখে
মেঘ দিতে চাস
বৃষ্টি তোর কাছে নিয়ে
সূর্য দিতে চাস
আলো হরণ করে
আকাশ দিতে চাস
নীলটুকু শুষে নিয়ে,
একবার তো তোকে দিয়ে দেখ!
শুধু মন দিয়ে
অনুভবে অনুভবে;

তুই আমায় ভালোবাসিস
পাখি হয়ে উড়ে উড়ে,
আমি আকাশ নই;
তুই আমায় ভালোবাসিস
হরিণী হয়ে ছুটে ছুটে,
আমার মাঝে বন কই?
তুই আমায় ভালোবাসিস
মাছ হয়ে ভেসে ভেসে
আমি তো নদী নই;
তুই আমায় পেতে চাস
সাপ হয়ে দংশনে,
আমি তো কবেই মরেছি তোতে;
একবার তো ভালোবাসে দেখ!
অনুভবে
নারী হয়ে;

একবার আমাতে তুই বিলীন হ
ভালোবাসার অনুভবে
ভালোবেসে মন দিয়ে,
শুধুই আমাতে।





শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৯

ইচ্ছেগুলো ইচ্ছেমত



ইচ্ছেগুলো ইচ্ছেমত
- যাযাবর জীবন


তোর ইচ্ছেগুলো প্রখর সূর্য
আমি পুড়ে যাই বারে বারে,
সূর্যকে কি আর প্রতিহত করা যায়?
আলো বিলাতে;
তুই বড্ড আলো
চোখ ধাঁধানো;

আমার ইচ্ছের ডানা নেই পাখির মত
উড়ে এসে বসতে পারে না তোর বুকে,
তবুও তুই একতরফা আলো দিয়ে যাস
অন্ধকার ভালোবেসে,
আমার ইচ্ছেগুলো যদি চাঁদ হতো
ভালোবাসা হয়তো কিছু আলো পেতো;

আমার চাঁদনি হবি তুই?
ভালো না বেসে;
যাহ্‌! তা কি করে হয়?
চাঁদনির কি দেখা মেলে?
অমাবস্যা রাতে;

আচ্ছা! অন্ধকারে কি কবিতা লিখা যায়?
রাতের কলমে সূর্য কালি কোথায়?
তবুও তোর কথা ভাবতে গেলেই মন কবিতা হয়ে যায়
আর তোকে কবিতায় আঁকতে গেলেই
চোখ থেকে ঘুম হারায়,
আমি সারারাত অন্ধকারে চেয়ে থাকি
অন্ধকার চোখে।










কোথায় কোথায় তুই?



কোথায় কোথায় তুই?
- যাযাবর জীবন


সূর্য বলে তার কাছে তুই নেই
দিনের আলোতেও তুই নেই,
নেই রাতের অন্ধকারে,
চাঁদ বলে তুই তার কাছে নেই
জ্যোৎস্না বলে নেই তার আলোতে
নক্ষত্র বলে মিটিমিটি জোনাকে তুই নেই
আকাশ ও সাগর বলে নেই তুই তাদের নীলে
চোখ বলে নেই তুই স্বপ্নে
অথচ মন বলছে তুই আছিস
কোথাও না কোথাও তো তুই আছিসই;

তোকে খুঁজতে শুরু করলাম মনের ঘরে,
মন খুঁড়তে খুঁড়তে যতই গভীরে ঢুকছি
ততই পাচ্ছি তোকে
আমার পুরো অস্তিত্বের মাঝে
হৃদয়ের খাঁজে খাঁজে
তোতে তুইময় হয়ে .........






চোখ কেন স্বপ্ন দেখে?



চোখ কেন স্বপ্ন দেখে?
- যাযাবর জীবন


সারাদিন কাজের শেষে সন্ধ্যা নামতেই
ক্লান্তিতে আমার শরীর ঘুম ঘুম
আমি স্বপ্ন দেখছি আধখোলা চোখে
- তোর সাথে প্রেম করছি

বাতাসে বাঁশের ঝাড় দুলে উঠতেই শোঁ শোঁ শব্দ
আকাশে এত্তবড় একটা চাঁদ
আর বাঁশ ঝাড় চুইয়ে জ্যোৎস্না নামছে
তোর মাথা আমার কাঁধে
আমার হাত তোর কোলে
তুই চুমু খেতেই স্বপ্ন ভেঙে গেলো

আমি গা ঝাড়া দিয়ে উঠে আবার ছুটলাম কাজে

আমার পুরাটাই শরীর
মনের স্থান কোথায় শরীরে?

তবুও চোখ যে কেন স্বপ্ন দেখে?


বুধবার, ২০ মার্চ, ২০১৯

ভাবতে চাই না তোকে




ভাবতে চাই না তোকে
- যাযাবর জীবন


তোর কথা আমি ভাবতে চাই না
দুপুর রোদে তোর কথা ভাবলেই মন মেঘলা
মেঘলা বিকেলে তোর কথা মনে এলেই মন বৃষ্টি
বৃষ্টির টাপুর টুপুরে তুই মনে এলেই চারিদিকে ঝড় ওঠে
রাতের বেলায় তোকে মনে করলেই আকাশ চাঁদনি
তোকে খুঁজে না পেলেই চোখ অমাবস্যা
ঘুমঘোর আবেশে তুই মনে এলেই চোখ স্বপ্ন
স্বপ্নে তোকে না পেলেই আমি রাত হই নির্ঘুম চোখে
এমন কেন হয় বলতে পারিস?
একে কি ভালোবাসা বলে?
উঁহু!
তুই তো সেই কবেই বলে দিয়েছিস
- "আমি প্রেম বুঝি না"
- "আমি ভালোবাসতে জানি না";
তারপর অভিমানে চাঁদ হয়ে গিয়েছিস
আমায় অমাবস্যা করে;

জানিস!
এখন আর আমি তোকে ভাবতে চাই না
তবুও কেন যে মনে আসিস? প্রতিনিয়ত ক্ষণে ক্ষণে
যখন তখন মনের ঘরে, সংগোপনে;
আমায় মেঘ করে
বৃষ্টি ঝরে
ঝড় তুলে
স্বপ্ন দিয়ে
আর চোখ কান্না হয়ে;

তোকে ভাববো না ভাববো না জপতে জপতে
আমার দিন কাটে তোকে ভেবে ভেবে
আর রাত কাটে নির্ঘুম চোখে;

একে কি ভালোবাসা বলে?










নীল স্বপ্ন




নীল স্বপ্ন
- যাযাবর জীবন


ঝিরঝির ঝিরঝির চাঁদনি ঝরছে আকাশ থেকে
সেই সন্ধ্যে থেকে,
নবমীর চাঁদে জ্যোৎস্না হয় এত?
আমি ভিজে যাচ্ছি ক্রমাগত;

ভিজে যাচ্ছে কুয়াশা
ভিজছে পাখির ডানা
ল্যাম্পপোস্টের বাতিগুলো
নারকেল পাতায় তো ঝুমঝুম নেমেছে
দেখ! চাঁদনি কেমন পিছলে পড়ছে
ফাঁকা রাস্তাটা পুড়ছে চাঁদের আলোতে
ভিজে ভিজে পুড়ছি আমি
শুধু শুকিয়ে আছে আমার ছায়া
একদম আমার পাশে থেকে,
চাঁদের কি সাধ্য ভেজায় তাকে;

অনেকক্ষণ ছায়াটার দিকে তাকিয়ে থেকে মনটা বড্ড বিষণ্ণ হয়ে গেলো
আচ্ছা একটা ছায়া কতই না ভিন্ন হয় মানুষটা থেকে
যত চাঁদের আলোই ফেলা হোক না কেন
ভেজানো যায় না তাকে,
কি?
সূর্য দিয়ে পোড়াবে?
তাও তো চেষ্টা করেছি প্রখর রোদে
পুড়েছি আমি বারে বারে
তবুও কোন ভাবেই পোড়াতে পারি নি ছায়াটাকে;

আচ্ছা ভালোবাসা কি ভেজানো যায়?
বৃষ্টিতে?
জ্যোৎস্নাতে?
পোড়ানোও তো যায় না তাকে!
সূর্যে কিংবা চাঁদে;

যতবারই ভিজতে চেয়েছি তোতে
ভিজে গিয়েছি বৃষ্টিতে
ভিজে গিয়েছি চাঁদনিতে
ভেজাতে পারি নি তোকে
ভালোবেসে;
যতবারই পোড়াতে চেয়েছি মন
পুড়েছি সূর্যে
পুড়েছি ভালোবাসায়
পোড়াতে পারি নি তোকে
ভালোবেসে;

একদিন ঝমঝম দ্বাদশী জ্যোৎস্নায় খুব ভেজার ইচ্ছে
তোর সাথে,
সেদিন কিন্তু সারারাত থাকতে হবে আমার কাছে
হাতে হাত রেখে
ঠোঁটে ঠোঁট রেখে
চাঁদে আর ভালোবাসায় চুপচুপে ভেজা হয়ে,
তারপর না হয় ভোরের রোদে পুড়ে ঘুমিয়ে যাব দুজন দুজনার বুকে;

আহহ্!
স্বপ্নগুলো এত নীল হয় কেন?







অন্য আরেকজন



অন্য আরেকজন
- যাযাবর জীবন


আমি যাকে বলি
সে শোনে না,
শোনে অন্যজন
বোঝে অন্য আরেকজন;

যার জন্য আমার মন পোড়ে
সে বোঝে না,
বোঝে অন্যজন
আমাতে মন পোড়ায় অন্য আরেকজন;

যার সাথে আমি অভিমান করি
সে বোঝে না,
বোঝে অন্যজন
আমার সাথে অভিমান করে থাকে অন্য আরেকজন;

আমি যাকে ভালোবাসি
সে বোঝে না,
বোঝে অন্যজন
আর আমায় ভালোবাসে অন্য আরেকজন;

আমার মন জুড়ে শুধুই
- 'এক তুই'
আর আমার চারিদিকে ষড়ভুজ প্রেমের অষ্ট মন;

অথচ আমার তুই আমায় শোনে না
আমার তুই কিছুই বোঝে না
না বোঝে মন
না প্রেম
না অভিমান
না অনুরাগ
না ভালোবাসা;

অথচ দেখ!
আমার পুরো স্বত্বা জুড়ে শুধুই একজন
- "ভালোবাসার এক তুই"।


যার মন ভালোবাসা



যার মন ভালোবাসা
- যাযাবর জীবন


ঝুমঝুম ঝুমঝুম বৃষ্টিতে নাকি কবিতা নামে;

বাইরে তুমুল বৃষ্টি
মুষলধারে,
কই?
কোন ভাব তো খেলা করেছে না মনের মাঝে!

অনেকক্ষণ এপাশ ওপাশ করে শেষমেশ বিছানা থেকে উঠে পড়লাম
জানালা খুলে দিতেই ঝমঝম বৃষ্টির ঝাপটা ভিজিয়ে দিলো আমায়,
বেশ কিছুক্ষণ ধরে বাইরে তাকিয়ে আছি
বৃষ্টি দেখছি
কবিতা খুঁজছি
কোথায় কবিতা?
চুপচুপে ভেজাই সার হলো শুধু
কোথাও কবিতে খুঁজে পেলাম না
অন্ধকারে কোথাও দেখলাম না ভাবের খেলা,
যতসব বাজে কথা
কে বলেছে বৃষ্টি মানেই কবিতা?
ঘণ্টার পর ঘণ্টা বৃষ্টি দেখতে দেখতে যা বুঝলাম, তা হলো
বৃষ্টি মানে ভিজে যাওয়া;

আজকের মতই কোন এক রাতে জ্যোৎস্না দেখেছি
সারারাত ভিজে
সেদিনও কোথাও কবিতা খুঁজে পাই নি
ভাবের বজ্রপাতও ঘটে নি কোথাও,
কে বলেছে চাঁদনি কবিতা?
সারারাত আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে সেদিন শুধু শুধুই চোখ ব্যথা করেছি
কোথাও কাব্য খুঁজে পাই নি;

বৃষ্টি
জ্যোৎস্না
এ সবই এক একটি ঘটনা
চোখে দেখা যায়;
কাব্য?
কবিতা?
আরে ওগুলো উর্বর মস্তিষ্কের কল্পনা,
মন মরে গেলে কি আর কবিতা হয়?

কবিতা দেখতে গিয়ে ভেজাই হলো সার,
আজ বৃষ্টিতে
সেদিন জ্যোৎস্নায়,
অনেক রাত হলো
যাই মাথা মুছে ঘুম দেই;

যার মন ভালোবাসা
সে লিখুক না হয় কবিতা।








বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০১৯

তুই'ই তো ভালোবাসা



তুই'ই তো ভালোবাসা
-যাযাবর জীবন


একটা মেয়ে,
থাকে অনেক দূরে
অথচ অনুভবে কাছে
একদম বুকের পাশে,
উঁহু, পাশে না রে
ভেতরে,
বুকের খাঁচায়
হৃদপিণ্ডের ভেতরে
রক্তের সাথে মিশে;

একটা মেয়ে,
থাকে অনেক দূরে
আমি তাকে ছুঁতে পারি না
ধরতে পারি না বুকে চেপে
অথচ সে থাকে আমার ভেতর
অনুভবে আর অনুভবে;

যখনই আমার চোখে ঘুম উধাও
আমি বুঝতে পারি তার বড্ড মন খারাপ
আমি তাকে কলমে আঁকার চেষ্টা করি
অথচ ছবি না হয়ে সে হয়ে যায় কান্না
তোমরা বলো কবিতা
ধ্যাত! আমি কি কবিতা লিখি?
আমি তো শুধুই ভালোবাসি;

তার হাসিতে আমার জানালায় রোদ
সে নীল হলে আমি আকাশ দেখি
সে ঘুমিয়ে গেলে আমার চোখ রাত্রি
যখন তার মন ভালো থাকে, সে গান গায় সেই সুদূরে
আমি ঘুমিয়ে পড়ি স্বপ্ন চোখে;

ওরে ও মেয়ে
তোর নাম কি কবিতা?
না রে! না,
আরে বোকা, তুই'ই তো আমার কবিতা;

আচ্ছা!
তোর নাম কি ভালোবাসা?
ওরে ও বোকা মেয়ে,
তুই'ই যে আমার ভালোবাসা;

তোর কথা মনে হলেই
আমি কাগজে কলম বুলাই,
কবিতা হোক আর না হোক
তোকে ভালোবাসা হয়ে যায়।








ভালোবাসায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে



ভালোবাসায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে
- যাযাবর জীবন


যখন তুই পাশে জেগে
ভালোবাসা ছুঁয়ে ছুঁয়ে;

ছুঁয়ে ছুঁয়ে তোর কালো চুল
চুল বেয়ে কপাল
কপাল থেকে চোখ চুমে চুমে ঠোঁট
আহা ছাড় না!
বড্ড ডাকাত তুই
ওভাবে কেও কামড়ে ধরে?

ঠোঁট থেকে তোর গলা ছুঁয়ে ছুঁয়ে বুকে নামতেই তুই নদী
ততক্ষণে আমি পাথর
বুক বেয়ে নাভি ছুঁয়ে ছুঁয়ে নামতেই সাগর
অনেকক্ষণ ডুব সাঁতারে লোনা হলাম দুজন
তারপর ক্লান্তিতে বুকে ঢলে পড়লি তুই
আমি তোর চুল ছুঁয়ে ছুঁয়ে আদর
আদর কপাল চুমে
ঠোঁটে ঠোঁটে
সারারাত তুই গভীর ঘুমে;

যখন তুই পাশে ঘুমিয়ে
ভালোবাসা ছুঁয়ে ছুঁয়ে;

আমি একটু পর পর তোকে আদরে চুমে চুমে
ভালোবাসাবাসির রাতে আমার কি আর ঘুম হয়?
রাতভর তুই আমার বুকে
আমি তোকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে
চুলে
কপালে
গালে
সারা শরীরে
ছুঁয়ে ছুঁয়ে
ভালোবাসায় আদরে আদরে;

তুই ঘুমা, নিশ্চিন্ত ঘুমে;
আমি জেগে আছি
ভালোবাসায় তোকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে।



রবিবার, ১০ মার্চ, ২০১৯

অক্ষমতা




অক্ষমতা
- যাযাবর জীবন


একদিন খুব ভোরে রৌদ্র কিনতে গিয়েছিলাম সূর্যের হাটে,
ওমা!
গিয়ে দেখি বৃষ্টি বিক্রি হচ্ছে মেঘের দরে,
আলো রয়ে গেলো আমার অধরা হয়ে
ধুসর মনে চলে গেলাম সাগর পারে
মন খারাপের ভেলায় চড়ে;

ইচ্ছে হলো তোর জন্য কিছু বালি কিনে নিয়ে যাই
যেই না মুঠো ভরে বালি তুলে নিলাম
অমনি এক বিশাল ঢেউ ডুবিয়ে দিলো আমায়,
শরীর থেকে লবণ ঝাড়তে গিয়ে দেখি
টনে টনে লবণ বিক্রি হচ্ছে কান্নার দরে
এক ফোঁটা কান্না হাতে নিতেই চোখ ঝাপসা হয়ে আসলো আমার
না কেনা হলো বালি, না লবণ
খালি হাতে চলে এলাম সন্ধ্যার কাছে
মনে মনখারাপ সঙ্গী করে;

ওখানে এসে দেখি বিষণ্ণতার হাট বসেছে সূর্যের লালে
দিগন্ত নীল মাঠ জুড়ে চলছে রাত্রির দেদার বেচাকেনা
আর আকাশ হাটে একটি মাত্র শুকতারা
ব্যাপক দাম হাঁকাচ্ছে তারার ব্যাপারী,
কেও কেও জ্যোৎস্না কিনে নিয়ে যাচ্ছে চাঁদের থলেতে ভরে
আমি অন্ধকার দামে কিছু স্বপ্ন কিনে হাঁটা ধরলাম তোর ঘরে;

তুই কি ঘুমিয়ে গিয়েছিস?
আচ্ছা, ঘুমা;
আমি স্বপ্নগুলো রেখে যাচ্ছি তোর চোখের কোণে
ঘুম ভেঙে ঠোঁটে লবণ অনুভব করলে বুঝবি চুমু খেয়েছিলাম ভালোবেসে
তারপর চলে এসেছি বহু, বহুদূরে
নিঃস্ব হয়ে, নিঃসঙ্গতা সঙ্গী করে;

আমি কখনো ক্রেতা হতে পারি নি রে,

না দিনের, না রাতের
না মেঘের, না বৃষ্টির
না চাঁদের, না তারার
না প্রেম, না ভালোবাসার

না হতে পেরেছি বিক্রেতা;

সারাজীবন চোখ ভরা জ্যোৎস্নার স্বপ্ন নিয়ে চোখ জ্বালিয়েছি প্রখর রোদে
আর বুক ভরা ভালোবাসা নিয়েও কাওকেই রাখতে পারি নি বুকে করে।















শনিবার, ৯ মার্চ, ২০১৯

ডাকাতিয়া



ডাকাতিয়া
- যাযাবর জীবন


আজকাল বড্ড ডাকাত হয়েছিস তুই
সূর্য থেকে ছিনিয়ে আনিস আলো
রাত থেকে কালো

আমি চাঁদের গায়ে দেখি ছোপ ছোপ কালো
তুই জ্যোৎস্না থেকে ছিনিয়ে আনিস আলো

আমার হৃদপিণ্ড কাটলে শুধুই রক্ত
তুই ছিনিয়ে নিতে চাস ভালোবাসা;
মন কি আর ছিনিয়ে নেয়া যায়?
তোকে বোঝানো দায়

ডাকাতিয়া প্রেমে আমার বড্ড ভয়,
আমি না হয় তোর মনে একটু উঁকিই দিয়েছি
মন কি চুরি করেছি?
তুই শুধু শুধুই ডাকাত হতে গেলি
না হয় ক্ষণিকের জন্য আমায় ছিনিয়েই নিলি
ধরে কি রাখতে পারলি?

এই যে মনে এত এত ভালোবাসা!
একটু চোখের দেখা, একটু কাছে আসা
তারপর তো আবার বিচ্ছেদ,
তুই কি জানিস?
তোকে ছাড়া বড্ড কষ্ট পাই
অথচ দেখ! প্রতি চাঁদ সূর্যে তোতে হারাই
আচ্ছা!
তোর মনেও কি তাই?

আমি ভালোবেসে কান্না হয়েছি
তুই ডাকাত হয়েও নিঃস্ব
জয়ী হলো কে?

হার হলো কার?
তোর?
আমার
না ভালোবাসার?








অজানা কথা



অজানা কথা
- যাযাবর জীবন


সেইসব পুরনো স্মৃতি
সেইসব পুরনো দিনের গল্প
আমাদের মাঝে ভালোবাসা ছিলো তো শতভাগ;
প্রেম ছিল কি?
অল্প!

আজো যখনই তোর বাড়ির সামনে দিয়ে যাই
মনের অজান্তেই হাত চলে যায় মুঠোফোনে
সেই পুরনো নাম্বারটা টিপে যাই,
বেশির ভাগ সময় তোর মোবাইলটা বাজতে বাজতে দম ফুরিয়ে থেমে যায়
আমি বুঝে যাই খুব ঝামেলায় আছিস তুই,
কখনো সখনো তোর কণ্ঠস্বর ভেসে আসে মুঠোফোনের ওপাশ থেকে,
সব ভুলে আমরা আবার পুরনো দিনে ফিরে যাই
সেই পুরনোর সাথে নতুন কিছু গল্প,
প্রেম ছিলো কি আমাদের?
অল্প!

জানিস!
আজকাল প্রেম ভালোবাসা নিয়ে মাথা ঘামাই না,
কি হবে আর ভালোবাসাবাসি ভেবে?
গোপন অনুভূতিগুলো থাকুক না কিছু মনে;
যখন ঝুমঝুমান্তি বৃষ্টি হবে
যখন কাঠফাটা রোদ উঠবে
যখন উথালপাথাল জ্যোৎস্না হবে
কিংবা যখন খুব কষ্টে তোর কান্না পাবে
মুঠোফোনে পুরনো নাম্বারটায় ডায়াল করিস,
কিছুক্ষণ না হয় হারিয়ে যাব আমরা নতুনের সাথে পুরনো দিনের গল্পে
দেখিস, কষ্টগুলো ঠিক উড়ে যাবে পুরনো অনুভবে অল্পে;

তোর কথা মনে হলেই
আজো মনে পড়ে যায় পুরনো দিনের গল্প,
আমাদের মাঝে ভালোবাসা এখনো তো শতভাগ;
প্রেম আছে কি?
অল্প!

থাকুক না কিছু কথা অজানা।





নীরবতাও ভাষা



নীরবতাও ভাষা
- যাযাবর জীবন


তুই আমায় প্রায়শই জিজ্ঞাসা করিস
- এই, বলো না আমি দেখতে কেমন?

আমি চুপ করে থাকি;

তুই মন খারাপ করে বলিস
- আজো চিনলে না আমায়?

আমি চুপ করে থাকি
আর মনে মনে বলি
- তুই কেমন, জানিস?
- কামিনী চিনিস?

সহজ সরল শুভ্র সাদা
তীব্র গন্ধা জটিল ধাঁধাঁ

আরে নারী!
আমার কি সাধ্য? তোরে চিনতে পারি;

তুই আমায় প্রায়শই জিজ্ঞাসা করিস
- আচ্ছা! ভালোবাসো আমায়?

আমি চুপ করে থাকি;

তুই মন খারাপ করে বলিস
- আজো মন পেলাম না তোমার;

আমি চুপ করে থাকি
আর মনে মনে বলি
- ভালোবাসা চিনিস?
- সাগর দেখেছিস?
- আকাশ দেখিস?

নীল নীল, গভীর নীল
ভালোবাসা বড্ড জটিল

ওরে নারী!
আমার হৃদয় নীল, ভালোবাসায় আমি বড্ড আনাড়ি
আমার চোখ লবণ, আমি কি ভালোবাসতে পারি?

একদিন দেখিস!
- আমি ঠিক তোকে চিনে নেব, অন্য কোনো ফুলের রূপে
- তুই যেভাবে চাস;
তবে কি জানিস?
- কামিনী আমার প্রিয় ফুল;

- একদিন দেখিস ঠিক তোকে ভালোবাসবো, মুখে মুখে
- তুই যেভাবে চাস;
তবে কি জানিস?
- নীরবতাও ভালোবাসার ভাষা।




কোথাও নেই



কোথাও নেই
- যাযাবর জীবন


কোথায় কাক? মেঘলা সকাল
আলসে তুই, ভালোবাসাতে অবহেলা
ঘুমিয়ে তুই, মন খারাপের দুপুর
ঝুম ঝুম বৃষ্টি করে মন নিয়ে খেলা

এখানে উথাল সাগর
বড্ড বেশী ঢেউ
ওখানে চারিদিকে খুঁজি
কোথাও নেই তুই।


সমুদ্রের কান্না




সমুদ্রের কান্না
- যাযাবর জীবন


আমার এখানে কাক ভোর
ঝুম ঝুম ঝুম ঝুম শব্দ ঘুম ভাঙিয়ে দিলো
জানালার পর্দা সরিয়ে দিতেই ঝুল বারান্দা পেরিয়ে সাগর পর্যন্ত বৃষ্টির পর্দা,
এক অপার্থিব দৃশ্য;
তুই নিশ্চয়ই গভীর ঘুমে,
বৃষ্টি তোকে নাড়া দেয়?
মন ভেজায়?
চোখ তো শুধু দেখে, বৃষ্টি অনুভব করে কি?
অনুভব তো করে মন,
তোর মন আছে?
তবে ভালোবেসে দেখা তো আমার মতন!

তুই মেঘ দেখিস
আমার বৃষ্টি স্নান
তোর বৃষ্টি দর্শন
আমার বুকের খাঁচায় ভালোবাসার ভাঙন;

একবার ভালোবেসে দেখ আমার মতন
সারাজীবন ভিজবি লোনা জলে,
সমুদ্র কি আর এমনি এমনি হয় রে?
কত কত ভালোবাসার কান্নাই না সে বুকে ধরে।




ভালোবাসায় লাল



ভালোবাসায় লাল
- যাযাবর জীবন


নীলাকাশে আমি উড়ে উড়ে
নীলের গায়ে তুই ভেসে ভেসে
চল একবার মাটিতে নামি জড়াজড়ি হয়ে,
তারপর লাল হই দুজন ভালোবেসে.....




সোনালী ভোর



সোনালী ভোর
- যাযাবর জীবন


সেই সোনালী ভোরের কথা মনে আছে কি?

তুই সাগর পাড়ে হেঁটে হেঁটে ঝিনুক কুড়োচ্ছিলি
আর বার বার পূবের আকাশে তাকাচ্ছিলি রাঙা সূর্যের অপেক্ষায়
পানির ভেতর থেকে ডিমের কুসুমটা তোকে ছুঁয়ে দিতেই তুই পরী হয়ে গেলি,
আমি হয়ে গেলাম বালি;

তারপর প্রতিদিনই আকাশে সূর্য ওঠে
সাগরে লাল ডিমের কুসুম হলুদ হতে হতে পুড়ে সাদা হয়ে যায়,
সূর্যোদয় কোথায়?
সূর্য গরম হয়, আমাকে পোড়ায়;

তুই ঝিনুক কুড়োলে তবেই না সূর্যোদয়
নতুবা ভোর তো প্রতিদিনই আসে,
আমায় পুড়িয়ে কালো করে;

কত মানুষ আমায় মাড়িয়ে যায়!
সাগর বেলায়,
আমি অপেক্ষায় থাকি;
কোন এক ধুসর ভোরে তুই আবার আসবি সাগর তীরে
হেঁটে হেঁটে ঝিনুক কুড়োবি সেই সেদিনের মত,
সাগর থেকে ডিমের কুসুম লাল হয়ে উঠতেই আমি সময় থামিয়ে দেব একেবারে
তোর পরী হওয়ার আগে,

তারপর তুই আমি ভিজব
সূর্যে
চাঁদে
সাগরে
প্রেমে
দুজন দুজনে
থেমে যাওয়া সময়ে;

এই যাহ!
খোলা জানালা দিয়ে হলুদ কুসুম চোখে যেতেই স্বপ্নটা পুড়ে গেলো ভোরের সূর্যে,
স্বপ্নগুলো মাঝে মাঝে বড্ড পুড়ে যায়
কিংবা আমায় পোড়ায়।




একদিন সূর্যাস্ত



একদিন সূর্যাস্ত
- যাযাবর জীবন


একদিন তুই ছিলি একদিন প্রেম
তুই আমার ছিলি আমি তোর ছিলেম

একদিন অভিমান দূরত্ব তত
দোষ ছিলো না তোর আমার ছিলো যত

একদিন তুইআমি একদিন বিচ্ছেদ
দূরে দূরে দূরত্ব, সম্পর্কের শবচ্ছেদ

একদিন পাহাড় ছিল একদিন ঝর্ণা
একদিন নদী হলো তারপর লোনা

একদিন জীবন ছিল একদিন হাটিহাটি
একদিন সূর্যাস্ত তারপর সব মাটি।




ভালোবাসার শব্দ




ভালোবাসার শব্দ
- যাযাবর জীবন


ভালোবাসা বাজছে
ঝনঝন করে
কানের ভেতর
মনের মাঝে,
মাঝে মাঝে ধীমালয়ে মাঝে মাঝে কান ফাটানো তীব্র স্বরে;
মাঝে মাঝে আমি বিভ্রান্ত হয়ে যাই
তোর নিঃশব্দ ভালবাসায়
মাঝে মাঝে একদম বধির হয়ে যাই,
তোর তীব্র কান ফাটানো ভালোবাসার শব্দে;

তবে ভালোবাসার ক্রমাগত অনুভব কিন্তু ঠিক মাদল বাজায়
বুকের মাঝে
তোর ভালোবাসার অনুভব
ক্রমাগত আর ক্রমাগত
নৈঃশব্দ্যে কিংবা ঝুমঝুম নূপুরের শব্দে
শয়নে কিংবা জাগরণে,
খুব বেশি ভালোবাসিস বুঝি?

কই! আমি তো ভালোবাসতে পারি নি তোকে
শব্দে কিংবা নৈঃশব্দ্যে,
আচ্ছা! অনুভবে কি ভালোবেসেছি তোকে?
একটু কিংবা অনেকখানি?

একদিন জিজ্ঞাসা করে দেখতে হবে মন'কে
কোন এক একলা রাতে.....