বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১৯

স্বপ্নে স্বপ্নে দূর বহুদূর



স্বপ্নে স্বপ্নে দূর বহুদূর
- যাযাবর জীবন


একদিন চল দূরে কোথাও যাই
বহু বহু দূরে, স্বপ্নের গাড়ি চড়ে,
একদিন তুই আর আমি, সারাদিন ঘুরব
আঁকাবাঁকা ধু ধু ফাঁকা রাস্তাটা ধরে;

গাড়ির স্টিয়ারিং এ তুই
আমি পাশের সিটে
তোর চোখ রাস্তায়
আমি দেখছি তোকে,
চুল উড়ছে তোর
আমি ডুবছি তোর চুলে
প্রশ্রয়ের হাসি তোর ঠোঁটে
আমি টুক করে চুমু খাচ্ছি ঠোঁটে,
মনে প্রেমের ঝড়
রাস্তায় ঝড়ের বেগে গাড়ি
বাতাসে প্রেম প্রেম গন্ধ
আমরা কেও মনের গতি দেখি নি;

একদিন দেখিস স্বপ্ন ঠিক সত্যি হবে
একদিন আমরা সারাদিন ইতিউতি ঘুরব মন ভরে,

তারপর রাত নামতেই স্বপ্ন ভেঙে যার যার ঘরে,
আচ্ছা!
ঘুম থেকে না উঠলে সত্যিই কি তুই আমার হতি?





জীবনের নানা রূপ



জীবনের নানা রূপ
- যাযাবর জীবন


আমি তোকে সব রূপে দেখছি,
তোর সবগুলো রূপে;

যখন তুই কুঁড়ি ছিলি
যখন তুই ফুল হলি
ফুল থেকে যখন ফল হলি
যৌবনের ডাঁসা ফলের রসা রূপ
পাকা ফলের ম ম গন্ধ
কুঁড়ি থেকে পাকা ফল
কিংবা ছুড়ি থেকে বুড়ি
সব রূপেই দেখেছি তোকে
সব রূপেই তুই ছিলি আমারই;

একদিন তুই শামুক ছিলি
একদিন তুই ঝিনুক
একদিন মুক্তো হলি
সবার কাছে দামী
আমি তখন গুটিয়ে গেলাম
নিজের ভেতর আমি;

একদিন তুই জীবন চিনলি
একদিন চিনলি মানুষ
একদিন তুই বুঝে গেলি
জীবন মানেই নানা রঙের ফানুস
তারপর তুই একা হলি
একদিন কাঁদলি ভীষণ
ততদিনে তুই বুঝে গেলি
সম্পর্ক জীবনের প্রহসন;

আমি সব কিছুর সাক্ষী হয়ে ছিলাম
আমি তোর ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়ে ছিলাম;

তুই সব চেয়ে ভালো ছিলি, কখন জানিস?
যখন তুই আমার ছিলি।


চোখ বেয়ে সাগর



চোখ বেয়ে সাগর
- যাযাবর জীবন


এক এক জনের সৌন্দর্য এক এক রকম
কেও চেহারায় অপরূপা
কেও শারীরিক গঠনে,
আমরা বেশীরভাগই দর্শনধারী
গুন বিচার তো অনেক পরে;

আমার একটা বড় দোষ হলো আমি মানুষ দেখতে শুরু করি চোখ থেকে,
যার চোখ টানে না সে আমায় টানে না কোনভাবেই
হোক না সে অপরূপ মানুষের চোখে
রম্ভা মেনকার জ্যোতিরচ্ছটা তার শরীর জুড়ে
আমার কাছে তারা শুধুই মানুষ
নারী কিংবা পুরুষ;

যখনই কারো চোখ টানে
আমি তার টানে,
কি ভাবছ?
চোখের পর শরীর?
উঁহু! এখানেও বড্ড ভুল কর তোমরা,
চোখের ভেতর দিয়ে আমি তার ভাবনা দেখার চেষ্টা করি
তারপর উঁকি দিতে চেষ্টা করি হৃদয়ে
একটি দুটি ক্ষেত্র ছাড়া সচরাচর ভুল হয় না আমার মানুষ চিনতে;
তবে একটি দুটি ভুলই যথেষ্ট, জীবন নাড়িয়ে দিতে
তাই নয় রে?

আমার সবচেয় বড় ভুল কোথায় হয়েছিল জানিস?
তোর বড় বড় চোখে হারিয়ে।

এখন আর কারো চোখের দিকে তাকাই না,
আম জনতার মত শরীর দেখলে ভুল হয় না
শরীর তো শরীরই
তাই না?

ভালোবাসা নেমে যায় শরীর বেয়ে বেয়ে
কাম নেমে গেলে,
চোখ বেয়ে কি নামে জানিস?

কিভাবে জানবি বল?
কখনো দেখিস নি তো সাগরের কোলাহল।







কান্নার চিৎকার



কান্নার চিৎকার
- যাযাবর জীবন


ঐ যে পাহাড়গুলো দেখছিস?
কেমন শান্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে
ওদের একটা ভালো দিক কি জানিস!
ওরা সব কিছু বুকে ধরতে পারে
সইতে পারে সব কিছু;

এখানে পাহাড়ের কাছে এসে যত ইচ্ছে চিৎকার করে বলা যায়
সব গোপন দুঃখ ব্যথার কথা
গলা ফাটিয়ে কাঁদা যায়
এখানে কোন মানুষ নেই
কেও শুনবে না ভেতরের কান্না
শুধু ঐ দূর দূরান্তের পাহাড়ের ঢাল থেকে কান্নার কিছু প্রতিধ্বনি ভেসে আসে
আর বাকি চিৎকারটুকু শুষে নেয় পাহাড়
নিজের করে;

কান্না লুকোতে পাহাড়ের জুড়ি মেলা ভার
মানুষের কান্না।

সমুদ্রে গিয়েছিস?
কি বিশাল নীলের সমারোহ
নোনা জলের একটা ভালো দিক কি জানিস!
তোর চোখ থেকে সে কান্না শুষে নেয় খুব সহজেই
তারপর নিজেই আরো একটু লবণাক্ত হয়;

সাগরের তীরে এসে যত ইচ্ছে চিৎকার করে কাঁদা যায়
সাগরের গর্জনে চাপা পড়ে যায় মানুষের চিৎকার
এখানে এসে কাঁদা যায় গলা ফাটিয়ে
ধু ধু বালিয়াড়িতে কেই বা কান্না শোনে!
সাগরের গর্জনের সাথে মিলেমিশে একাকার হয় কান্নার হাহাকার
আর চোখের জলটুকু শুষে নেয় সাগর
লোনা হয়ে;

কান্না শুষে নিতে সাগরের জুড়ি মেলা ভার
মানুষের কান্না।










মনুষ্যত্বের গন্ধ ভাসে



মনুষ্যত্বের গন্ধ ভাসে
- যাযাবর জীবন


মন তো কত কিছুই চায়,
পেটে ঠাসার জায়গা কোথায়?
তবুও টেবিল ভর্তি খাবার,
বেলায় বেলায় পদে পদে ভর্তার সমারোহ
মাছের আইটেম দুটা না থাকলে হয়?
টেবিলে মাংস না থাকলে চলে নাকি?
আরে বাবা! পেটে ধরে কতখানি?
চোখের ক্ষুধায় আমরা বড্ড অসহায়!
প্রায়শই ডাস্টবিন খায় উচ্ছিষ্ট পোলাও মাংস;
সেদিন না বাসায় জুবুথুবু এক ভিক্ষুক এসেছিলো
অসহায়ের মত খাবার খুঁজছিল
অথচ আমি তুমি সে দরজা ঠেলে দেই মুখের ওপর
কত সহজেই না বলে ফেলি মাফ কর,
জানো! মাঝে মাঝে তোমাদের অপচয়ের অশ্লীলতায়
এক একদিন না ডাস্টবিনও বলে ফেলে
এত খাবার খেতে পারব না বাপু! মাফ করো,
মনুষ্যত্বের গন্ধ ভাসে পুরো ডাস্টবিন জুড়ে;

কখনো আলমিরা খুলে দেখেছ?
কাপড়ের ওয়ারড্রব
কতগুলো কাঠের ড্রয়ার সারি সারি পড়ে রয়েছে ঘরে?
কদাচিৎ খুলে দেখা হয় একটি দুটি
তারপর কাপড় পুরনো হতে থাকে পড়ে পড়ে
তবুও মার্কেটে গেলেই কিনতে হয় একটি দুটি করে
আর ইদানীং অনলাইন শপিং তো খুব সহজ
মোবাইলে চটকদার বিজ্ঞাপন
পার্সে ক্রেডিট কার্ড
ধুমধাম অনলাইন অর্ডার
অহেতুক কাপড়ের বোঝা বাড়ে কাপড়ে
এত কাপড় কে পড়ে?
কি নিদারুণ অশ্লীল অপচয় আমাদের চোখের ক্ষুধায়!
অথচ এই তো গত শীতের কথা
খুব জাঁকিয়ে শীত পড়েছিল কয়েকদিন ঢাকা শহরে
এমনই এক শীতের রাতে জুবুথুবু শীতার্ত এক ভিক্ষুক এসেছিলো
একটুকরো শীত বস্রের জন্য
অথচ আমি তুমি সে আমরা সবাই মিলে
সেদিন দরজাটা ঠেলে দিয়েছিলে মুখের ওপর
কত সহজেই না বলে ফেলেছিলে মাফ কর,
জানো! কোন একদিন তোমার ড্রয়ার ঠিক বলে ফেলবে
কাপড়ের ভার সইতে পারছি না বাপু! মাফ করো,
অথচ ড্রয়ার খুললেই ভক করে মনুষ্যত্বের গন্ধ নাকে লাগে
ভ্যাপসা কাপড়ের স্তূপে;

আচ্ছা!
ক্ষুধা কাকে বলে?
মনুষ্যত্ব ঢাকা থাকে কোন কাপড়ে?





দুর্বোধ্য নারী




দুর্বোধ্য নারী
- যাযাবর জীবন


বড্ড দুর্বোধ্য নদী,
কত কত বাঁক পেরিয়ে তবেই না সাগর;
সবগুলো বাঁক তুমি দেখেছে?
নদীই কি দেখে তার পেছনের বক্ররেখা?
সে তো শুধুই বয়ে যায়
সামনের দিকে
সাগরের পানে;
আঁকাবাঁকা পেছনে ফেলে আসা বক্ররেখা দেখার সময় কোথায় তার?

নারীর বাঁক নদী থেকে কোন অংশে কম?
শরীর ও মনের;
নদীর মতই পেছন ফেরে না নারী
দেখে না অতীতের বক্ররেখা
সামনে ভবিষ্যতের হাতছানি
সামনে দুরন্ত জীবন
দুর্বোধ্য নয়? নারী;

আমি নদী দেখেছি
দেখেছি নারী,
দেখেছি তোকে দুর্বোধ্য চোখে
দুর্বোধ্যতায় তুইই বা কম কিসে?







রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৯

আয়নাতে কার মুখ?



আয়নাতে কার মুখ?
- যাযাবর জীবন


আয়নার দিকে তাকিয়ে কথা বলে কে?
খুঁত ধরায় ব্যস্ত সকলে;

অন্যের ঘরে উঁকি দিতে মানুষ থেকে পারদর্শী আর কে আছে?

নিজের ঘরে বিছানা থাকুক আর নাই থাকুক
কার খাটের পায়া ভাঙা, কার খাটে জাজিম নেই
সে খবর প্রতিবেশীর কাছে ঠিক থাকে;
নিজের বৌ ছেড়ে গিয়েছে সেই কবে!
তবুও এর জামাইয়ের পরকীয়ার গল্প
আর ওর বৌ এর সাথে অশান্তি ঠিক নখদর্পণে;
নিজের হাঁড়িতে ভাত রান্না হয় নি তো কি হয়েছে?
আজকের মুখরোচক গল্প কি জান?
কাল ওর চাকরিটা চলে গিয়েছে;
আমার ছেলেটা মানুষ হোক আর নাই হোক
ওর ছেলেটা উচ্ছন্নে গিয়েছে;

কে,কবে শুনেছে পশুপাখি উঁকি দেয় অন্য কারো ঘরে!

অন্যের খুঁত বর্ণনার সময় একটিবার যদি আয়না দেখতাম!
আরে, আরে!
কমতি তো সব আমারই ঘরে!
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে গলায় আয়না ঝুলিয়ে হাঁটতে;

আসলে কমতি কি আয়নার?
না মানুষের?
না মানসিকতার?
তবে তো পশুপাখিরা ঢের ভালো, মানুষ থেকে;

আমরা পশু হব কবে?
আমরা পাখি হব কবে?







আলুথালু মেয়ে



আলুথালু মেয়ে
- যাযাবর জীবন


সেজেগুঁজে সবাই সুন্দর
তুই সুন্দর আলুথালু বেশে,
আমি প্রায়শই ভেবে পাই না তুই সাজিস কেন?

ঐ যে লিপস্টিক দিয়ে রাঙা করে রাখিস ঠোঁট!
জানিস কি?
আমার পছন্দ তোর পানি ভেজা ঠোঁট
দেখতে কিংবা চুমু খেতে;

ঐ যে পার্লারে গিয়ে চুলের এত সাজ করিস!
জানিস কি?
আমার পছন্দ টপটপ করে পানি ঝরতে থাকা তোর গোসল ভেজা চুল
দেখতে কিংবা হারিয়ে যেতে;

ঐ যে রংবেরঙের দামি দামি বাহারি শাড়িগুলো পড়িস!
জানিস কি?
আমার পছন্দ তোর টাওয়াল পেঁচানো গোসল ভেজা শরীর
দেখতে কিংবা আদর করতে;

নারীর সৌন্দর্য নারী নিজেই,
সেজেগুঁজে নয়
শরীর দিয়ে নয়,
মন দিয়ে
ভালোবাসা দিয়ে;

তুই সবচেয়ে বেশী ভালোবাসিস আমায়
আলুথালু বেশে আলুথালু হয়ে;

বড্ড ভালোবাসি রে তোকে আলুথালু মেয়ে।






বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০১৯

হেঁটে বেড়ানো শব



হেঁটে বেড়ানো শব
- যাযাবর জীবন


মনে কর কোন একরাতে পুরো শহর জুড়ে লোডশেডিং
আকাশে চাঁদ নেই সে রাতে
কোন তারাও জ্বলছে না মেঘলা আকাশে
আচ্ছা! ঘুম কি এতটা অন্ধকার হয়?
মৃত্যুর মত গাঢ় কালো ঘুম;
এমন গাঢ় কালো রাতে কোথায় খুঁজবি আমাকে?
অন্ধকারে কি সাদা কাফন দেখা যায়?
তবে তো খুব সহজেই পেয়ে গিয়েছিস আমায়;
কে আর চায় কবর খুঁড়তে?

মৃত্যুর কথায় চমকে উঠলি?
আরে সে তো নিয়তি!
তোর আমার আর সবার.........
তুই কি অনেক দিন বেঁচে থাকবি?
অনন্তকাল?
অত দিন বেঁচে কি হবে?
চামড়া ঝুলে বুড়ো থুত্থুড়ে হয়ে বেঁচে থাকা
পরমুখাপেক্ষী হয়ে,
ও আমার কম্ম নয়;

খুব শিগ্রী কোন এক ঘন কালো অন্ধকার রাতে
আমি ঠিক ঘুমিয়ে পড়ব
গাঢ় অন্ধকার ঘুমে,
আজ
কাল
কিংবা পরশু,
কে জানে কবে?

আমি মৃত্যুর অপেক্ষায় জীবন দেখছি
ভাবলেশহীন শূন্য চোখে,
শূন্য চোখ পড়তে জানিস?
কোন এক মৃতের চোখ দেখে নিস,
মিল পেয়েছিস?

এবার তুই ঠিক শব চিনতে পারবি
হেঁটে বেড়ানো চলন্ত শব;
একদিন তোরা ঠেলে ফেলে দিবি সাড়ে তিন হাত মাটির গর্তে
শব ঘুমিয়ে গেলে।










নষ্টামি



নষ্টামি
- যাযাবর জীবন


একটা নষ্টা মেয়ের গল্প বলি শোনো

- প্রেমে ধোঁকা
- অভাব অনটন
- সংসারে অশান্তি, পরকীয়া

কারণের অভাব হয় না নষ্ট হতে
লাগে না সময়;

ধ্যাত! নষ্ট মেয়ের গল্প তো বইয়ের পাতায় পাতায়
আজ না হয় নষ্টামির গল্প বলি -

- প্রেমে ধোঁকা খেয়ে কাঁদলো মেয়েটি
তোমরা নাম দিয়ে দিলে নষ্ট মেয়ে
পেটে বাচ্চা এসেছে? এ মা! ছিঃ ছিঃ, কি নষ্টা মেয়ে!
কে দিলো?
আমি, তুমি, তোমরা সবাই
আরে পেটে বাচ্চা কি আকাশ থেকে পড়েছে?
তোমরা দুধ দিয়ে ধুয়ে ছেলেটিকে সাজিয়ে রাখলে ঘরে
নষ্টামি কাকে বলে?

- অভাব অনটন?
অসুস্থ স্বামী, উপোষী সন্তান
কাঁচা মাংস সোনার দরে, কে না জানে?
বাধ্য না হলে কেও কি আর শরীর বেঁচে?
তোমরা মাংস খেয়ে নাম দিলে নষ্টা মেয়ে,
কে মাংস খেলো? কেই বা নাম দিলো?
আমি, তুমি, সে, আর তোমরা সবাই
তারপর দুধে ধোয়া বাবুসাহেব বৌ এর বিছানায়
নষ্টামি কাকে বলে?

- সংসারে অশান্তি? পরকীয়া?
সংসার মানেই তো স্বামী ও স্ত্রী
নিত্য ঠোকাঠুকি
আধুনিক যুগ, যে যার পথে স্বাধীন চলি
বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড? এ আবার এমন কি?
স্ত্রী ধরা খেলো তো, ছিঃ ছিঃ নষ্টা মেয়ে, নটি বেটি
স্বামী ধরা খেলো ধ্যাত! বয়সের দোষ নয়তো কি?
সোনার চামচের দোষ ধরতে আছে?
নষ্টামি কাকে বলে?

আরে!
সবাই বলে নষ্ট মেয়ে
সবাই ডাকে নষ্টা মেয়ে
আচ্ছা! তোমরাই বলো তো দেখি
পুরুষ ছাড়া একটা মেয়ে নষ্ট হয় কিভাবে?

আচ্ছা! তোমরা একটা নষ্ট পুরুষ দেখাতে পারো?
- বলো তো, নষ্ট কাকে বলে?







মনের ঘরবাড়ি



মনের ঘরবাড়ি
- যাযাবর জীবন


রাতের কোন ঘরবাড়ি নেই
ইটের দেয়ালে কি অন্ধকার বন্দী করা যায়?
ঘরবাড়ি নেই দুপুরের
আটকানো যায় না আলো চার দেয়ালে;

চোখের পাতায় আমার ঘর
আমি ঘরবন্দী খেলা খেলি মনের খেয়ালে
যখন খুশি চোখ খুলে আলো
চোখ বন্ধ করলেই বন্দী হয়ে যায় অন্ধকার;
ইশশ!
যদি অনুভূতিগুলোকে বন্দী করতে পারতাম!
কিংবা তোকে;

ঘরবন্দী খেলায় দুপুর ছুঁতে পারে না চাঁদ
রাত ছুঁতে পারে না সূর্য
ভালো করে চেয়ে দেখে, কোথাও যুক্তাক্ষর নেই আমার চোখে
অথচ মন ছুঁয়ে থাকে তোকে
ভালোবাসায় বৃষ্টি হয়ে;

জানিস!
খুব বৃষ্টি হচ্ছে আজকাল,
বাইরে ও ভেতরে,
আমি কবিতাহীন এক পাথর জীবন কাটিয়ে যাচ্ছি কবিতা বুকে ধরে
অথচ লিখতে পারছি না তোকে,
উদাস পৃথিবীতে সূর্য উঠছে
দিন হচ্ছে
ক্লান্ত পৃথিবীতে অন্ধকার নেমে রাত,
আমারও আর ঘরবাড়ি হলো না রে
দুপুর কিংবা রাতের মত
সূর্য কিংবা চাঁদের মত,
কোথায় রাখব তোকে?
অথচ দেখ!
মনের জানালাটায় বিশাল উঁকি দিয়ে আছিস তুই
দুঃখ কি জানিস!
তোকে রাখতে পারছি না ড্রয়িংরুমে সাজিয়ে;

আসলে ভালোবাসা কোথাও রাখা যায় না,
মনঘরে তো অলিন্দ আর নিলয়
সেখানে ক্রমাগত লালের ছোটাছুটি
থাকবি সেখানে?






সোমবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৯

সংশয়ে মন, ঘুমের আয়োজন


সংশয়ে মন, ঘুমের আয়োজন
- যাযাবর জীবন


ইদানীং মন কেমন অন্যরকম
ইদানীং ঘুমাতে গেলেই মনে সংশয়
- কাল ঘুম ভাঙবে তো?
- কাল সূর্য দেখব তো?
কেমন জানি এক অন্যরকম ভয়;

একদিকে চেয়ে থাকতে চায় না ক্লান্ত চোখ
অন্যদিকে ঘুমাতে চায় না বিক্ষিপ্ত মন
কোথায় জানি কেমন সংশয় বিভাজন!
- আচ্ছা! ঘুম মানে কি মৃত্যু?

- একদিন ঘুম ভাঙবে না
- একদিন সূর্য দেখব না
- একদিন তো মরে যেতে হবেই
আচ্ছা! মরে যাওয়ার পরে কি অনুভূতি থাকে?

আমি প্রতিদিন সংশয়ে থাকি ঘুমের আয়োজনে
- এক সময় অপেক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে চোখ বন্ধ হয়ে যায়
- মন ঘুমিয়ে যায়;

একদিন,
কোন একদিন এই ঘুম আর ভাঙবে না............





অনুভবের কাল, আজ ও আগামী



অনুভবের কাল, আজ ও আগামী
- যাযাবর জীবন


কত পার্থক্যই না কাল আর আজ এর মাঝে!
পার্থক্য সময়ের
পার্থক্য সম্পর্কের
পার্থক্য অনুভবের;
আগামীটা কেমন যাবে?
কে বলতে পারে?

গতকাল সারাদিন তুই ছিলি পাশে
সময় ছিল ভালোবাসার রথে
আমরা উড়ছিলাম স্বপ্নআকাশে
ভাসছিলাম দুজন স্বপ্নসাগরে;

আজ তুই কোথায় রে?
কোথায় আমি?
মাঝখানে বিচ্ছেদের যোজন যোজন দূরত্ব দিয়েছি পারি
অথচ ব্যবধান মাত্র গতকাল আর আজকের দিনের মাঝে
খুব স্বল্প সময় নয় কি?
আচ্ছা!
আগামীকাল কোথায় থাকব আমরা?
কে বলতে পারে?

গত রাতের কথাটা চিন্তা কর তো!
সারারাত লেপ্টে ছিলি আমার বুকে
ভালোবাসায় আদরে সোহাগে,
অথচ আজ রাতে আমার বিছানাটা খালি
একলা খাটে ঘুম নেই তোর দুচোখে,
আর দুজনার মাঝে যোজন যোজন দূরত্ব সময় আর অনুভবে,
অথচ ব্যবধান মাত্র কাল আর আজ রাতের মাঝে
খুব অল্প সময় নয় কি?
আচ্ছা!
আগামীকাল রাত আমাদের কাটবে কোথায়? কিভাবে?
কে বলতে পারে?

এমন তো কতই হচ্ছে,
প্রতিদিন কতই হয়;
গতকাল পরিচয়
আজ প্রণয়
কে জানে আগামীকাল কি হয়?
হয় বিচ্ছেদ না হয় পরিণয়;

সময়ের কথা কে বলতে পারে?
কিংবা সম্পর্কের
ভালোলাগার অনুভব বদলে যেতে কতটা সময় লাগে?

আচ্ছা!
সময়ের ঘূর্ণাবর্তে ভালোবাসার অনুভব বদলায় কি?

তাহলে কবিতা হবে কি করে?







অবগাহন



অবগাহন
- যাযাবর জীবন


কেও ইচ্ছে করে পাখি হতে চায়
কারো পাখির জীবন
বানভাসি বাধ্য হয়ে এ ঘাটে ও ঘাটে ভাসে
মাছ ভেসে বেড়ায় উল্লাসে
কাক ময়লা ঠোকরায়
কাঠঠোকরার ঠোকর কাঠে
পানকৌড়ির মাছে
মানুষ ঠোকরায় ঘাটে ঘাটে;

যাযাবরে মন কখনো পাখি হয়
কখনো মাছ
কাকে জানি খুঁজে বেড়ায় এ ঘাট ও ঘাট!

শরতের আকাশে নানা রঙের মেঘ ভাসে
বৈশাখের আকাশে ঝড়
শীতের আকাশ কুয়াশায় আচ্ছন্ন
গ্রীষ্মের আকাশ তেতে থাকে সূর্যের রাগে;

যাযাবর সব আকাশেই নীল খোঁজে
তার মন আকাশে কখনো মেঘের ভেলা
কখনো চাঁদের খেলা,
যাযাবর মন ভেজে বৃষ্টি বিলাসে
কখনো জ্যোৎস্নাস্নানে
আর কোনো এক 'তুই' এর অবগাহনে।




ভালোবাসার অসুখ



ভালোবাসার অসুখ
- যাযাবর জীবন


বিষণ্ণ দুপুর
বড্ড একা
একলা রৌদ্দুর
আকাশে কোথাও মেঘ নেই
নীল আকাশটাও আজ বড্ড একা
এত একার একাকীত্বের সাথে মিলেমিশে আমিও বড্ড একা;

খুব ইচ্ছে করছে কারো হাত ধরতে,
কার হাত ধরব?
রৌদ্দুরের?
আকাশের?
ধরাছোঁয়ার বাইরে অনেক দূরে তারা,
তাই দুপুরের গায়ে হেলান দিয়ে বসে আছি নীলের মাঠে একা;

বড্ড ইচ্ছে করছে কেও আসুক!
হাতে হাত রাখুক
কাঁধে হেলান দিয়ে পাশে বসুক
তারপর না হয় আবারও হারিয়ে যাক তোর মত
ভালোবাসার অনেকগুলো অসুখ দিয়ে;

আমি বারবারই না হয় একা হব
ভালোবাসার অসুখে অসুখে।





আমার আকাশটা তোর



আমার আকাশটা তোর
- যাযাবর জীবন


আমার একটা আকাশ আছে
নীল আকাশ;
আচ্ছা! তোর কি ডানা আছে?
তবে ভেসে থাক আমার আকাশে,
মুঠো মুঠো নীল দেব তোর ডানায় মেখে
হালকা নীল
গাঢ় নীল,
কখনো মেঘ দেব
কখনো বৃষ্টি
কখনো রোদ
কখনো কুয়াশা,
ভালোবাসার আকাশে কোন কিছুর কমতি থাকে না;

ভালোবাসা নিবি?
আরে বোকা পুরোটা আকাশটাই তো তোকে দিয়ে দিয়েছি।




তুইটা যদি আমার হয়



তুইটা যদি আমার হয়
- যাযাবর জীবন


একটা চোখেই ডুবে থাকা যায়
চোখটা যদি তোর হয়

একটা ঠোঁটেই ডুবে থাকা যায়
ঠোটটা যদি তোর হয়

একটা তোতেই ডুবে থাকা যায়
তুইটা যদি আমার হয়





চাওয়া পাওয়া



চাওয়া পাওয়া
- যাযাবর জীবন


কেও রাত হতে চায়
কেও চাঁদ
কেও চাঁদ না হয়েও হয়ে যায় চাঁদনি
আমার আকাশ অন্ধকার

কেও আলো হতে চায়
কেও ঝিলিমিলি তারার রাত
কেও তারা না হয়েও সেজে থাকে জোনাক
আমার চোখে শুধুই অন্ধকার

কেও পাখি হতে চায়
কেও মেঘ
কারো ডানা নেই তবুও উড়তে চায়
আমার মাথার ওপর কোন আকাশ নেই

কেও ভালোবাসা খুঁজে
কেও শরীর
চাহিদা ও প্রাপ্তির পার্থক্য অনেক
আমার শরীরে মমতা নেই আছে অভিলাষ

বুকের বাঁ পাশে নাকি হৃদপিণ্ড থাকে
পাথরের বুকে ভালোবাসা পেয়েছে কে?
ভালোবাসা চেয়ে রক্তাক্ত তুই নিজেতে নিজে
এবার তো মানুষ খুঁজে নে!



মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৯

কয়েকটি অন্ধকার ঘরের গল্প



কয়েকটি অন্ধকার ঘরের গল্প
- যাযাবর জীবন


রাত হতেই আকাশ অন্ধকার হয়ে যায়
আর মন অমাবস্যা,
আমার অন্ধকারে ঘুরে বেড়াতে বেশ ভালো লাগে
ঘন কালো অন্ধকারে,
এখানে আমায় দেখে না কেও
অথচ আমি দেখি সবাইকে;

আমার একটা বাড়ি আছে
যার অনেকগুলো প্রকোষ্ঠ
এক এক প্রকোষ্ঠের এক এক স্মৃতি
এক এক জানালা খুললেই এক এক গল্প;

মন অন্ধকার হতেই আমি
এক একদিন এক এক ঘরে ঢুকে যাই;

কিছু কিছু ঘরের কোন জানালা নেই
বাইরে থেকে এ ঘরগুলো একদম কবরের মত নিশ্চুপ
অথচ ভিতরে জাহান্নামের কোলাহল,
সেসব ঘরে ঢুকলে বড্ড অস্বস্তি লাগে
কেমন যেন দম বন্ধ করা অনুভব
যেন আমি মৃত,
আমার এক সময়ের সকল কুকর্ম বন্দী করেছি সেসব ঘরে
ইচ্ছা আর অনিচ্ছাকৃত এক সময়ের সকল ভুল
সকল কুকীর্তি,
জনালা বিহীন সে ঘরগুলো আমায় ডাকে
আঁচড়ায়, কামড়ায়, ক্ষতবিক্ষত করে,
আমি ও ঘরে ঢুকতে চাই না
তবুও মাঝে মাঝে অন্ধকার ঘর আমায় টেনে ঢোকায় তার মাঝে
আর কালো অতীত দেখায় আমাকে
আমার ঘেন্না লাগে নিজের ওপর
আমি ছুটে পালিয়ে আসি সে ঘর থেকে;

কিছু কিছু ঘরে অনেকগুলো জানালা,
অনেকগুলো স্মৃতির জ্যোৎস্না ঢুকে বিভিন্ন জানালা দিয়ে
আমি অন্ধকারে বসে শৈশবের চাঁদ দেখি
অন্ধকার মাথায় করে কৈশোরের ঝুম বৃষ্টিতে ভিজি
আবার মাঝে মাঝে খুব মন খারাপ হয় যখন হারিয়ে যাওয়া অনেকগুলো মুখের উঁকি
যাদের বহু বহুকাল আগেই হারিয়ে ফেলেছি
তারা যখন হঠাত হঠাত এক এক রাতে বিভিন্ন জানালায় হানা দেয়
আমার দাদা দাদি, নানা নানী
ছোট বেলার খেলার সাথীটা
যে স্কুল থেকে ফেরার পথে ট্রাক-দানবের চাপায় পিষ্ট হয়ে পড়েছিল নিথর হয়ে,
ঐ যে আমার ছোট ফুপিটা যে কৈশোর পেরোতে না পেরোতে
হঠাত ছটফট করে চলে গেলো না ফেরার দেশে,
তারা সবাই এক একটি জানালায় উঁকি মারে
ঐ তো আমার বাবা, ঐ জানালাটায় দাঁড়িয়ে আছে চাঁদ হয়ে
পুরো আকাশটাকে দিন করে;
আচ্ছা! ওরা আমায় দেখতে পাচ্ছে কি? কে জানে!
আমি কিন্তু ঠিকই দেখতে পাচ্ছি
অন্ধকারে বসে;

অনেকগুলো জানালাওয়ালা একটা ঘর আছে
যেখানে শুধুই তোর স্মৃতি,
আমাদের কৈশোর
যৌবন
প্রেম
অভিমান
অহংকার
আর সকল ভুলের স্মৃতি,
এ ঘরটাও আমি বন্ধ করে রেখেছি,
খিল তুলে দিয়েছি ঘরের সকল দরজা জানালায়,
তবুও এ ঘরটা যখন তখন আমায় ডাকে
টেনে নিয়ে যায় এক একটা জানালার পাশে
আমি অনিচ্ছায় এগিয়ে যাই
অনিচ্ছায় জানালা খুলি
অনিচ্ছায় দরজা খুলি
তারপর কান্নায় ভিজে মিশে যাই অন্ধকারে,

ভাগ্যিস সময়টা রাত ছিল!
ভাগ্যিস ঘন অন্ধকার ছিল!

তাই কেও দেখে নি আমাকে;

কান্না দেখাতে হয় না কাওকে।

আমি অন্ধকারে বসে স্মৃতির ঘরগুলোকে খুলে খুলে দেখি
তারপর আরও অন্ধকার হই, ঘন অন্ধকারে।












আমি আছি, আছিস তুই




আমি আছি, আছিস তুই
- যাযাবর জীবন



আমি তো আছি,
রোদ বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে
চাঁদ সূর্যে মন শুকিয়ে
দিন আর রাতে সাগর চোখে
সাদায় কালোয় নীল হয়ে
জ্যোৎস্না অমাবস্যায় একা হয়ে
ভালো আর মন্দে মিলিয়ে মিশিয়ে
আমার আমি,
শুধুই আমার আমি;

শুধু মাঝে মধ্যে তুই,
রোদ বৃষ্টিতে আমার মনে
চাঁদ সূর্যে আমার মনে
দিন আর রাতে আমার মনে
জ্যোৎস্না অমাবস্যায় আমার মনে
স্বপ্নে স্বপ্নে আমার চোখে
চোখের ভেতর মনের ভাঁজে তুই,
মাঝে মধ্যে কিংবা সব সময়ে
মেঘ হয়ে
বৃষ্টি হয়ে
মনের চালে ঝরে পরিস তুই,
পাখি ডানায় উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে
মন আকাশের পুরোটা নীল
জুড়ে থাকিস তুই,
আমার তুই,
শুধুই আমার তুই।





স্পর্শ, অজানা এক অনুভূতি



স্পর্শ, অজানা এক অনুভূতি
- যাযাবর জীবন


স্পর্শ তো শুধুই অনুভূতি,
তাই না রে?

আচ্ছা!
স্পর্শে কি ভালোবাসা থাকে?
প্রেম?
আদর?

তবে স্পর্শের জন্য মন কেন এমন করে?
কেন ব্যকুল হই অন্ধকারে?

যখনই তুই না থাকিস,
যখনই মন একা একা লাগে
তোর স্পর্শের জন্য মন কাঁদে রে,
বড্ড কাঁদে;

আচ্ছা!
তোরও কি এমনই লাগে?

কিছু কথা কখনো জানা হবে না
না আমার
না তোর,
আচ্ছা!
তুই কি জানিস কতখানি ভালোবাসি তোকে?

আকাশ মাপতে পারিস?
সাগর?
থাক!
জানতে হবে না তোকে;

স্পর্শে কি জানি এক অজানা অনুভূতি আছে,
ভালোবাসার মানুষের স্পর্শে
তোর স্পর্শে,

কিছু অনুভূতি থাকুক না অজানা!














আদরে ভালোবাসায়



আদরে ভালোবাসায়
- যাযাবর জীবন


আদর মানেই কাম নয়
গালে হাত বুলালে
মাথায় হাত রাখলে
বুকে জড়িয়ে রাখলে
কিংবা শুধু ছুঁয়ে থাকলেই আদর হয়
অনুভবে মন ছুঁয়ে থাকাই আদর,
কেও পারে, কারো শরীর লাগে;
আচ্ছা!
আমরা কতদিন শরীরে শরীরে আদর করেছি রে?
তুই'ই বল না!
তোকে কি কম আদর করি?

ভালোবাসা মানেই শরীর নয়
দূরে থেকেও কাছে থাকা যায়
দূরে থেকেও ভালোবাসা যায়
অনুভবে কাছে থাকলেও ভালোবাসা হয়
অনুভবে কাছে আছি বোঝাতে পারলেই ভালোবাসা হয়;
কেও পারে, কারো শরীর লাগে;
আচ্ছা!
আমরা কতদিন শরীর দিয়ে ভালোবেসেছি রে?
তুই বল তো!
তোকে কি কম ভালোবাসি?

তুই আমাকে ভরিয়ে রাখিস আদরে আদরে
অনুভবে আর অনুভবে
আমি তোকে জড়িয়ে রাখি ভালোবাসায় সোহাগে
অনুভবে আর অনুভবে;

কাম?
সে তো শরীর জুড়োলেই শেষ হয়ে যায়;

ভালোবাসা!
কখনো ফুরোয়?





সূর্যের ঠোঁটে ঠোঁটে




সূর্যের ঠোঁটে ঠোঁটে
- যাযাবর জীবন


চা চুমু অনেক খেয়েছি
তোর সাথে,
ঠোঁটে ঠোঁটে
কাপে ঠোঁটে,

বৃষ্টি চুমেছি অনেক
আকাশ থেকে
কতবারই না আমরা ভিজেছি দুজন
ঝুম বৃষ্টিতে জড়াজড়ি হয়ে
ঠোঁটে ঠোঁটে;

জ্যোৎস্না তো সবাই খায়
ভালোবাসায় চেটেপুটে
চুমুতে চুমুতে
কবিতার আবেশে
ঠোঁটে ঠোঁটে,

সূর্য চুমেছে কে কবে?

আজ দুপুরটা দেখেছিস?
সূর্যটা কেমন উঠেছে তেতে!
চল আজ ঠোঁট শুকাই
রোদে ভিজে
রোদঠোঁটে,
তারপর ছায়া হয়ে যাই
সূর্য চুমে
ঠোঁটে ঠোঁটে।





আঁধার হয়েছে দিন, মেঘের মন খারাপ



আঁধার হয়েছে দিন, মেঘের মন খারাপ
- যাযাবর জীবন


আঁধার হয়ে এসেছে দিন
মেঘের মন খারাপ
বৃষ্টি হয়ে কাঁদছে
দিন হয়েছে রাত

দুপুরে সূর্য নেই
পাখি নেই আকাশে
মেঘের মন খারাপ
নীল বলব কাকে?

ডালের ফাঁকে ফাঁকে
পাখির দল গুটিসুটি
কাক ভেজা কাকগুলোকে
আকাশ দিয়েছে ছুটি

কোথায় সূর্য আজ?
কোথায় রৌদ্র আলো?
দুপুরের আজ মন খারাপ
বেলা সেজেছে কালো

ঝুমঝুম ঝুম বৃষ্টি
গান শোনায় কাকে?
মেঘগুলো আমায় ভিজতে
হাতছানি ডাক ডাকে

মেঘগুলো ভেসে বেড়ায় নীলে
আমি তাদের পাখি বলে ডাকি
আমার আকাশে ওড়াউড়ি করে
ধরতে গেলেই ফাঁকি

দিন আঁধার হয়েছে আজ
মেঘের মন খারাপ
আকাশে কাঁদছে মেঘ
আমার মন হয়েছে রাত।




ভালোবাসার অনুভূতি



ভালোবাসার অনুভূতি
- যাযাবর জীবন


তোকে একটু দেখতে পারার নাম দৃষ্টি
একটু ছুঁতে পারার নাম অনুভব
তোর অভিমান পোড়ায় আমায় দুপুর সূর্যে
তোর হাসিতে জ্যোৎস্না খেলে
তোর কান্নায় ঝুম বৃষ্টি নামে,
তোকে ভালোবাসার নামই হৃদয়ের ধুকপুক
তোকে ভালোবাসাটাই আমার অনুভূতি
তোকে ভালোবাসতে পারি বলেই বেঁচে আছি;

সবাই কি আর আলোতে বাঁচে?
সবার ঘরেই কি জ্যোৎস্না আসে?
বাতাস খেলে না আমার জানালায়
হাসে না নীল আমার আকাশে
তবুও খোলা রেখে দিয়েছি আমাকে আমি
একটু রৌদ্র আসুক
একটু মেঘ ঢুকুক
একটু বৃষ্টি নামুক
কিছু বাতাস আসুক
কিছু জ্যোৎস্না ঢলুক
কিছুই কি আসবে না?
কিছু না আসলেও অন্ধকার তো আসবে!
রাত্রি তো কবেই সঙ্গী করেছে আমাকে!

আচ্ছা অন্ধকার অনুভূতির নাম কি ভালোবাসা?
তবে আমার থেকে বেশী ভালো কেও বাসে নি তোরে;

আলো কিংবা আঁধার মানুষের জন্য
আমার জন্য শুধুই তুই
তোকে ভালোবাসাটাই আমার অনুভূতি,
তোকে ভালোবাসতে পারি বলেই আজো বেঁচে আছি।