রবিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২১

শিক্ষিত মূর্খ

তোমরা লেখাপড়া করেছে

বড় বড় ডিগ্রী নিয়েছ, 

শিক্ষিত হয়েছ কি?

আমাকে তো তোমাদের স্কুলে ভর্তিই করো নি; 


কেনই বা করবে বলো?

সেই শৈশব থেকেই তো আমাকে আলাদা করে দিয়েছ,

আলাদা আচার, আলাদা ব্যবহার 

আর আমার প্রতি তোমাদের উপহাস,

কখনো ঠারেঠোরে কখনো নির্লজ্জের মত সামনাসামনি

আরে আমি তোমাদেরই ভাই, তোমাদেরই সন্তান

অবুঝ জ্ঞানে এইটুকু জানি; 


আমি জানলে কি হবে বলো?

একবার ভেবেছ কি? আমার প্রতি তোমাদের ব্যবহারটা কি হলো? 

না হয় তোমাদের থেকে বুদ্ধিমত্তায় আমার একটু কমই হলো!

না হয় তোমাদের মত আমার অঙ্গে অঙ্গে রক্ত সঞ্চালন একটু কমই হলো!

না হয় আমার কথা বলায় একটু জড়তাই হলো!

না হয় আমার হাঁটায়, চলায় একটু আড়ষ্টতাই পেলো! 

না হয় আমার বোধ বুদ্ধি তোমাদের থেকে অনেকটাই কম হলো!

তবুও আমি তো তোমাদেরই কারো সন্তান, কারো ভাই

তবে আমাকে কেন বিশেষ সন্তান উপাধি দেয়া হলো?

কেন আমাকে তোমাদের স্কুল থেকে ছাড়িয়া আলাদা স্কুলে দেয়া হলো? 

আমাকে তোমাদের থেকে আলাদা করে দিয়ে রক্ত সম্পর্কের সাথে কেন উপহাসটা করা হলো?

তোমরাই বলো;    

আরে এত এত পড়ালেখা করে ডিগ্রী হাসিল করে তোমাদের কি এমন বিশেষ উন্নতি হলো? 


কি ভেবেছ তোমরা? 

বোধ বুদ্ধিহীন জড় পদার্থ? 

আরে আমিও বুঝি তোমাদের জীবনের অর্থ, 

অথচ তোমরা অর্থ বলতে বোঝ শুধুই টাকা কড়ি 

তোমরা অর্থ বলতেই বোঝ স্বার্থ, 

ও হে শিক্ষিত ভাই বোন! সবই বুঝি

শুধু তোমাদের মত ভাব প্রকাশ করতে পারি না,

আমি বোবাচোখে দেখি, সুধু চেয়ে চেয়ে দেখি 

তোমরা শিক্ষিত হয়েছ, মানুষ হয়েছ কি? 

তোমারা নিজেদের ডিগ্রিধারী বলো 

আমি বলি শিক্ষিত মূর্খ; 


আমার কাছে তোমাদের মত ডিগ্রী নেই নি তবুও নাম পেয়েছি বিশেষ সন্তান

আমি প্রত্যেকটা উপহাস বুঝি যেগুলো তোমরা আমায় পদে পদে করেছ দান,

এবার একটু থামো, একবার ভাবো, একবার আয়নার দিকে ফেরো 

আর আমার জায়গায় একটাবার তুমি নিজেকে চিন্তা করো।  



৩০ অক্টোবর, ২০২১


#কবিতা 


শিক্ষিত মূর্খ 

 - যাযাবর জীবন 


ছবিঃ নেট থেকে সংগৃহীত। 






   

রঙের সংসার

শুধু কি রং মেখেই সং সাজতে হয়?

রং না মেখে সং সাজা যায় না? 


কেউ রং মেখে সং সাজে, কেউ না মেখে;  

রং না মেখে সং সাজা কেমন?

মানুষগুলোকে দেখ, 

এদের কান্না চেপে হাসতে হয়

কখনো হাসতে হাসতে কাঁদতে হয়

ঐ যে ওদিকে ওরা! 

ওদের হাসিখুশি মুখ দেখে কে বলবে মনে একরাশ বেদনা সয়? 

মানুষ হওয়ার বড় যন্ত্রণা হলো মুখোশ-হীন এক মুখোশ মুখে চলতে হয়; 


মানুষকে রং না মেখেও কেন সং সাজতে হয়?

সংসার কথা কয়; 


সংসার এক বড্ড আজব জায়গা,

এখানে অনেকগুলো মানুষ রয়

আর মানুষ মাত্রই আঘাত দেয় 

আঘাত পেলেই জানা হয়; 

এখানে বাবা-মা রয়, রয় স্বামী-স্ত্রী

ভাই-বোন, সন্তান সন্ততি 

এরা কি আপন নয়? তবুও মনে কি যেন এক ভয় 

সংসারে মানুষগুলো এদের থেকেই বড় বড় আঘাতগুলো সয়;


তবুও মানুষ রং না মেখেও সং সাজে

সংসারে সং সেজে ঢং করে, হাসিখুশি থাকার, ভালো থাকার 

ভেতরে অভাব কথা কয়, স্বার্থ কথা কয়, কান্না কথা কয় 

বাইরের মানুষ কি করে জানবে একটা সংসারে কি হয়? 


৩০ অক্টোবর, ২০২১


#কবিতা 


রঙের সংসার 

 - যাযাবর জীবন  


     

 

শুক্রবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২১

ঈর্ষান্বিত প্রেম

চুড়ি তোর হাতে, ঈর্ষান্বিত আমি 

তোকে নূপুর পায়ে দেখি, আমি ঈর্ষায় জ্বলি  

তোর কপালে টিপ, ঈর্ষান্বিত মন 

ওরা কেন তোকে ছুঁয়ে দেয়? যখন তখন! 


সেদিন তুই নীল জামাটা পড়েছিলি

ঈর্ষায় নীল হয়েছিলাম আমি,  

ঐ যে ওদিন! লাল শাড়ির আঁচল টেনে দিলি

আমার ঈর্ষায় লাল হয়ে যাওয়া মুখটা খেয়াল করেছিলি?

 

যখনই তুই সেঁজেগুজে আয়নার সামনে দাঁড়াস

আয়নাকে আমার বড্ড হিংসে হয় 

হিংসে হয় আমার বৃষ্টি'কে যখন তোকে ভিজায়

হিংসে হয় বাতাস'কে যখন তোর চুল ওড়ায়; 


অথচ ওগুলোর একটাও আমি হতে পারব না, 

তাহলে পারব কি? আরে আমি তো হয়েই আছি!

প্রেমিক হলে সেগুলোর একটাও হতে হয় না

শুধু ঈর্ষা করতে হয়, যেগুলো তোকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায়। 


১৯ অক্টোবর, ২০২১


#কবিতা


ঈর্ষান্বিত প্রেম 

 - যাযাবর জীবন 


ঝড় সয়ে সয়ে

মানুষ হওয়ার সবচেয়ে বড় যন্ত্রণা কি জানো? 

যাদের কাছ থেকে সবচেয়ে বড় বড় আঘাত পেয়েছ তাদের সাথেই কথা বলতে হয় হাসি মুখে

তাদের সাথেই বসবাস করতে হয়, সকলের সামনে ভাব ধরে সুখে;  

খুব বিপরীত ধর্মী একটা অবস্থা, তাই না? 

কি করবে? মানুষ হওয়ার যন্ত্রণা; 


মানুষ সবচেয়ে বেশি আঘাত পায় কার কাছে থেকে জানো?

একদম একান্ত আপন জনদের কাছ থেকে,

বাবা-মা পায় সন্তানের কাছে থেকে আর সন্তান পায় বাবা-মায়ের কাছ থেকে  

আর না হয় স্বামী পায় স্ত্রী থেকে অথবা স্ত্রী পায় স্বামী থেকে 

আর ভাই বোন? এদের তো জন্মই হয়েছে আঘাত দিতে;


মানুষ সবচেয়ে বেশি আঘাত পায় কিসে জানো?

যখন এই খুব আপন জনে'রা, রক্তের সম্পর্কগুলো আঘাত হানে মনে 

তুচ্ছ অর্থ আর স্বার্থের জন্য 

সম্পত্তি? সে তো রক্তের সম্পর্কে রক্তারক্তি কাণ্ড;


বাবা-মা'য়ের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যক আছে কষ্ট দেন সন্তানদের, তবে আছে 

কিন্তু আজকাল বাবা-মা'কে কষ্ট দেওয়া সন্তান যেন ঘরে ঘরে,  

এই তো কিছুদিন আগেও বৃদ্ধাশ্রম ছিলো আলোচনার বিষয়  

আর আজকাল! পরিণত হয়েছে ব্যবসায় 

হবেই বা না কেন? 

বৃদ্ধ বাবা-মা'কে ঘরে না রেখে ওখানে রাখলে ঘরের শান্তি বজায় থাকে যে; 

     

ঘরের শান্তির কথা আসতেই চলে আসে স্বামী-স্ত্রীর কথা 

এই তো মাত্র কিছুদিন আগেও, আমাদের বাবা-মায়েদের আমলে   

স্বামী-স্ত্রী বলতেই দুজনার মতের মিল, স্বামী-স্ত্রী বলতেই পরিবার 

স্বামী-স্ত্রী বলতেই বন্ধন, স্বামী-স্ত্রী মানেই সুখের ঘর, শান্তির আশ্রয়;  


আর আজকাল! 

যদিও চিরকালই স্বামী-স্ত্রী মিলেই পরিবার,

তবুও ইদানীং যেন স্বামী-স্ত্রী'তে মতের অমিল ঘরে ঘরে 

মতের অমিল থেকেই হয়তো ঘর বিমুখতা 

হয়তো সেখান থেকেই পরকীয়ার সূত্রপাত, তারপর নিত্য অশান্তি  

বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সন্তানদের দিকে তাকিয়ে কোন একজনকে মেনে নিতে হয়

মানিয়ে চলতে হয়, মানিয়ে চলায় দাম্পত্যের মাধুর্যতা কোথায়?   

আর তা না হয় বিবাহ বিচ্ছেদ তো হরেদরে,

যেটা দিয়ে শুরু করেছিলাম!

এই সব আপনজনের কাছ থেকে আঘাতে পেয়েও আমাদের মানিয়ে চলতে হচ্ছে ঘরে ঘরে

অশান্তির চরমে বাস করেও সবার সামনে ভাব ধরে থাকতে হয় মুখে মেকি হাসি ধরে;


এটা মানুষ হওয়ার যন্ত্রণা,  

মনে এক আর মুখে এক, সংসারে বাধ্য হয়ে  

আমরা বৈপরীত্যের এক জীবন কাটিয়ে দিচ্ছি মনে অশান্তির ঝড় সয়ে সয়ে। 


১৮ অক্টোবর, ২০২১


#কবিতা 


ঝড় সয়ে সয়ে

 - যাযাবর জীবন 


   


দর্শনধারী

মানুষ মূলত দর্শনধারী,

নাকি ওটা শুধু আমিই? 

প্রথম দর্শনে কাওকে ভালো না লাগলে তার প্রতি কেন জানি একটা ঋণাত্মক ধারণা মনে গেঁথে বসে, 

সে যত ভালো মানুষই হোক না কেন! 

কেন জানি তার প্রতি কোথাও একটা মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়েই যায়;


আমার তো হয়,

হয়তো মানুষ হিসাবে আমি একটু নিচু মনের, 

তোমাদের কারো হয় কি? 

হয় না?

তবে তো তোমরা সত্যিই অনেক ভালো মানুষ; 


ধ্যাত! শুধু শুধুই আমি উল্টো কথা বলছি,

আগ বাড়িয়ে আমি কারো সাথে মিশতেই পারি না! তার আবার ভালো লাগা আর মন্দ লাগা কি? 

আরে নাই যদি মিশতে পারলাম তার প্রতি ধনাত্মক আর ঋণাত্মক ধারণা হবে কিভাবে? 

তবে আমার ক্ষেত্রে অনেকবারই হয়েছে যে কারো সাথে প্রথম দেখায় 

কেন জানি অনেকেরই আমাকে পছন্দ হয় নি,

অপছন্দের একটা আলাদা দৃষ্টি আছে 

 - আমার দৃষ্টিশক্তিটা হয়তো শকুনের থেকেও তীব্র,    

অপছন্দের আছে অন্যরকম একটা ঘ্রাণ

 - আমার ঘ্রাণেন্দ্রিয় হয়তো কুকুরের থেকেও প্রবল, 

সেসব ক্ষেত্রে আমি সাধারণত চুপ হয়ে যাই, কিংবা একটু তফাতে সরে যাই;


অনেকেই পছন্দ আর অপছন্দ বুঝতে পারে না

তারা কলকল করে যেতেই থাকে, 

কারও বিরক্তির উদ্রেক হলো কি হলো না তাতে যেন তাদের কিছুই যায় আসে না

আমি মাঝে মধ্যে ভাবি, আমার অনুভূতিগুলো তাদের মত হলে হয়তো খারাপ হতো না,

অন্তত সাবলীল ভাবে মানুষের সাথে তো মিশতে পারতাম!

তীক্ষ্ণ অনুভূতি সম্পন্ন মানুষগুলো সহজে মিশতে পারে না।  


 

১৮ অক্টোবর, ২০২১


#কবিতা 


দর্শনধারী 

 - যাযাবর জীবন 


মানসিকতার বদল

আমরা সহজে মানুষের দেয়া ব্যথা বেদনা ভুলতে পারি না,

মানুষ হওয়ার এই এক যন্ত্রণা;


অথচ খুব সহজেই ভুলে যাই মানুষের ভালো কাজগুলোকে

মানুষের দেয়া আনন্দগুলোকে

মানুষের দেয়া খুশিগুলোকে,

অথচ সেই একই মানুষের হাজার ভালো কাজের ভিড়ে যদি একটা কটু কথা বলে!

যদি তার একটা আচরণ আমার মনোপুত না হয়!

যদি তার কোন একটা কথায় আমার মনে রাগের উদয় হয়! দুঃখ পাই, 

জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই কথাটাকে আর ভুলতে পারি না,

আমাদের জীবন কাটে এর, ওর, তার প্রতি একটা বিবমিষা ভাব নিয়ে

কখনো বিবমিষা পরিণত হয় ঘৃণায়

শুধু কারো কোন একটি কথায়, কিংবা আচরণে

যা আমাকে ব্যথিত করেছিলো জীবনের কোন এক সময়ে;


সেই একটি কথা কিংবা আচরণ তার সমস্ত ভালো কথাগুলো

ভালো আচরণগুলো, তার সমস্ত ভালোমানুষিগুলোকে ছাপিয়ে যায়

সময়ের স্রোতে সময় গড়ায়; 


আমরা ক্ষমা করতে পারি না, 

ক্ষমা করতে পারি না মানুষের দু চারটি কথাকে

মানুষের দু চারটি কাজকে, মানুষের দু চারটি আচরণ'কে,  

অথচ প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ক্ষমা চেয়ে যাচ্ছি মহান আল্লাহ্‌ তায়ালার কাছে

আমার প্রতিদিনের হাজার ভুলের জন্য, নানা অপরাধের জন্য, জানা ও অজানা পাপের জন্য, 

তাই না? 

এভাবে কখনো ভেবেছি কি?


একবার আমরা মানসিকতা'টা একটু বদলেই দেখি না! 

একটু মানসিকতার বদলে হয়তো বদলে যেতে পারে পৃথিবী; 


আমি বলছি না একজন সন্ত্রাসী'কে ক্ষমা করে দিতে

আমি বলছি না একজন ধর্ষক'কে ক্ষমা করে দিতে 

আমি বলছি না একজন খুনিকে ক্ষমা করে দিতে,  

আমি বলছি দৈনন্দিন জীবনে যারা আমার কাছের মানুষ  

বন্ধু বান্ধব,  আত্মীয় স্বজন 

যাদের কোন কথায়, আচরণে, কাজে 

মনে আঘাত লেগেছিল 

ফলশ্রুতিতে যাদের থেকে আমরা দূরে সরে আছি,  

তাদের ভুলগুলিকে ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে, একটাবার তাদের ক্ষমা করেই দেখি না!

সম্পর্কগুলোকে সুযোগ দিলে হয়তো ভাঙা সম্পর্কগুলো আবার নতুন ভাবে জোড়া লেগে উঠবে

হয়তো নতুন সম্পর্কগুলো সেই প্রথমকার সম্পর্কগুলো থেকেও সুন্দর হয়ে উঠবে,

শুধু দরকার একটু পরিবর্তিত মন মানসিকতার

শুধু দরকার একটু ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গির, 

তাই না? 


মন থেকে অভিমান মুছে ফেলে একবার আয়না'কে জিজ্ঞাস করেই দেখ না!

আয়না মিথ্যা বলে না। 


১৭ অক্টোবর, ২০২১


#কবিতা 


মানসিকতার বদল

 - যাযাবর জীবন 


কাব্য না ছবি?

এক একবার ফেসবুকের ওয়ালে চোখ যায়, 

এক একবার আয়নায়;


ফেসবুক দেয়ালে হরেক রকম লেখা

কত সুন্দর সুন্দর গল্প!

কি ভালো ভালো এক একটা কবিতা! 

আমি প্রায়শই মুগ্ধ হয়ে পড়ি,

তারপর লেখার নীচে লেখকের ছবি দেখি

ছবিটা দেখলেই খুব মনে মনে ভাবি

এ লেখার সাথে ছবিটার সম্পর্ক কি?

কোথাও কোন সম্পর্ক না পেয়ে লেখকের প্রোফাইলে যাই

গিয়েই থমকে যাই, 

প্রতিটা লেখায় নানা অঙ্গভঙ্গিমায় সেঁটে দেয়া আছে 

লেখকের এক একটা দারুণ দারুণ সব ছবি, 

মাঝে মধ্যে ভাবি, আমি কি লেখকের লেখা পড়ছি? নাকি তাকে দেখছি?

দূর দূর দিয়ে লেখার সাথে ছবির কোথাও সংগতি না পেয়ে ভাবি

 - আসলে অসংগতি আমার মনে,

 - কিংবা এটাই আজকালকার রীতি;


মাঝে মধ্যে আয়নায় আমার চোখ চলে যায়

ওখানে যে অবয়ব দেখা যায় সেটার সাথে 

দূর দূর দিয়ে কোন সংগতি খুঁজে পাই না আমার কোন লেখায়,

আর ঐ চেহারাটা কোন লেখার সাথে সেঁটে দিলে?

 - রক্ষে আছে? আরে একটা দুটো যে পাঠক যাও আছে! 

 - ওরাও দৌড়ে ভাগবে ছবি দেখার সাথে সাথে, 

চারিদিকে সুন্দর চেহারার জয় জয়কার 

ওখানে কাকের কি দরকার? 


আমি মাঝে মধ্যে ভাবি,

এই যে আজকাল ভালো ভালো সব লেখাগুলো ফেসবুকে আসে!

এর সাথে নানা ভঙ্গিমায় লেখকের ছবি কেন ভাসে?

কোথাও জবাব খুঁজে পাই না

সম্ভবত প্রশ্নটা করাই আজকালকার অসংগতি,

আসলেই তাই কি?


আমি মাঝে মাঝে খুব ভাবি,

তারপর রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, সুকান্ত, সুকুমার রায়, জীবনানন্দ দাশ

শীর্ষেন্দু, সুনীল, সংকর, হুমায়ূন আহমেদ, আহমেদ সফা 

ইত্যাদি লেখকদের বইগুলোর পাতায় পাতায় খুঁজতে থাকি লেখকদের ছবি;

কোথায় ছবি? ওদের পুরো বই জুড়ে তো ঠাসা ঠাসা কলমের বুননে 

শুধুই গল্প, উপন্যাস, কবিতা আর নানা কাব্য-গাঁথা 

লেখকের ছবি যেন ওখানে বাতুলতা;


তাহলে আজকাল ফেসবুক লেখকদের কি হলো?

লেখার সাথে সাথে কেন ছবি দিতে হলো?

কি জানি বাপু? আমি বোধহয় সেই পুরনো দিনের লেখকদের মতই পুরনো

পুরনো আমার চিন্তা-চেতনা, পুরনো সব ধ্যান ধারণা

আজকালকার লেখাতে বোধহয় ছবি সাঁটাই রেওয়াজ;


মাঝে মাঝে অদ্ভুত সব চিন্তা মাথায় খেলা করে -

আচ্ছা! সুকান্তের প্রতিটা কবিতার সাথে সাথে তার একটা ছবি হলে কেমন হতো?

 - খুব খারাপ হতো না মনে হয়।

জীবনানন্দ দাশের কবিতার সাথে? 

 - ওটা আরও ভালো হতো, কাশবনে একছবি, সবুজ ধানের ক্ষেতে আরেকটা, ইত্যাদি ইত্যাদি; 

নজরুলের প্রতিটা কবিতার সাথে সাথে তো তার একটা করে বাবরি দোলানো ছবি! 

 - উফফ! কেন যে উনি সে কালে জন্মেছিলেন? বড্ড আফসোস হয়; 

আচ্ছা! গীতবিতানের প্রতিটি গানের সাথে সাথে যদি রবিবাবু একটি করে ছবি সেঁটে দিতেন!

 - তাহলে কি আর হতো? 

 - গীতবিতানের পৃষ্ঠার সংখ্যা না হয় দ্বিগুণ হতো!

 - বই এর ওজন না হয় মাথায় করে বইতাম! 

 - হাতে না রেখে মাটিতে রেখে পড়তাম!

 - তবুও তো পাতায় পাতায় রবিবাবুকে দেখতাম!


খুব একটা খারাপ হতো না,

কি বলো? 



১৪ অক্টোবর, ২০২১


#কবিতা 


কাব্য না ছবি? 

 - যাযাবর জীবন 


ভুলের খেসারত

একজন মানুষের ছোট খাট একটা ভুল

একটা পরিবার'কে তছনছ করে দিতে পারে,

তোমরা কেউ কেউ হয়তো দেখেছে, কেউ কেউ অনুভব করেছ

আচ্ছা! তোমরা কি কেউ এর মধ্যে দিয়ে গিয়েছ? 


ঐ যে ঐ পরিবারটার দিকে তাকাও-

 - ছেলেটা প্রেম করছিলো, তারপর একদিন কি যে হলো! কিছুদিন খুব মনমরা হয়ে থাকতো। তারপর কেউ কিছু বুঝার আগে হুট করে ফ্যানে ঝুলে পড়লো। একবার চিন্তাও করলো না বাবা-মায়ের ওপর দিয়ে কি যাবে। চিন্তা করে নি ভাই-বোনগুলোর কথা। তারপর থেকে পরিবারটার মুখে হাসি দেখি নি। 


ঐ পরিবারটাকে দেখ-  

 - ছেলেটা বেশ পড়াশুনা করছিলো। ইন্টারমিডিয়েট পড়তে পড়তে বন্ধুবান্ধবের পাল্লায় পড়ে মজা করে একদিন কি একটা ড্রাগস টেস্ট করলো। তারপর থেকে টেস্ট করতেই থাকলো। টেস্ট করতে করতে একসময় এডিক্টেড হয়ে গেলো। তার আর ইন্টারমিডিয়েট পাশ করা হয় নি। বছরে কিছুদিন রিহ্যাব সেন্টারে থাকে, তারপর বাবা-মা ভালো হয়ে গেছে মনে করে বাসায় নিয়ে আসে। একসময় আবার ঢুকে যায় সেই অন্ধকার জগতে, আবার কিছুদিন রিহ্যাব সেন্টার আবার বাসা। এই করে প্রায় বছর পাঁচেক পার হয়ে গেলো। অথচ ড্রাগের নেশাটা খুব ক্যাজুয়ালি টেস্ট করতে করতে করে ফেলেছিলো। আজকাল মধ্যবিত্ত বাবা'র আর সাধ্যে কুলোয় না ওকে রিহ্যাব সেন্টারে দিয়ে আসতে। এই পরিবারটার মুখ থেকেও হাসি চলে গিয়েছে অনেক দিন হলো।   


আর ঐ পরিবারটাকে দেখ - 

 - মেয়েটা বেশ ভালোই পড়ালেখা করছিলো। মেট্রিক দিতে দিতে প্রেমে পড়ে গেলো। তারপর বাসা থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে বেশ প্রেম চলতে লাগলো। কোন এক সময় শরীর কথা বলে উঠলো, উঠতি যৌবনে কয়জনই বা কাম সম্বরণ করতে পারে? প্রেমিকের বন্ধুর বাসা, হোটেল, গেস্ট হাউস করতে লাগলো। একসময় পেট জানান দিলো। বাবা-মা জানলো, জানলো ভাই বোন, আত্মীয় স্বজন, জানলো পাড়া পড়শিরা। প্রেমিক তখন আর তাকে চেনে না। আর এত জানাজানি মেয়েটা সহ্য করতে না পেরে একদিন একগাদা ঘুমের ঔষধ খেয়ে নিথর হয়ে গেলো। আর বাবা-মা! ওরা যেন বুঝতেই পারলো না ওদের কি লজ্জা পাওয়া উচিৎ না দুঃখ পাওয়া উচিৎ। ঐ পরিবারটাকেও আমি আর কখনো হাসতে দেখি নি। 


ঐ যে বিশাল দোতলা বাড়িটি দেখছ! 

 - ও বাড়ির ছেলেটার বায়না ছিলো একটা হোন্ডা কিনে দেওয়ার। বাবা অনেক করে মানা করা সত্ত্বেও মা আর দাদীকে হাত করে বাবা'কে রাজী করিয়েছিল। বাবা হোন্ডাটা কিনে দেওয়ার সময় পই পই করে মানা করেছিলো - বাবা'রে জোরে চালাস না। হিরোইজম দেখাতে যাস না। যৌবন না শোনে মুরুব্বীদের কথা। বন্ধুদের সাথে রেসের পাল্লা দিতে গিয়েছিলো। বাসায় ফিরলো লাশ হয়ে। নিমিষে পরিবারটির খুশির বাতি নিভে গিয়েছিলো। এই পরিবারটির মুখেও আমি হাসি দেখি নি।  


ঐ যে মহল্লার সবচেয়ে বয়োবৃদ্ধ মুরুব্বী! 

 - ওনাকে সবাই শ্রদ্ধা ভক্তি করে। অথচ একদিন ইউনিভার্সিটিতে পড়া ছেলেটা'কে খুঁজতে বাসায় পুলিশ এলো। ওদের কাছেই জানতে পারলো ছেলেটা নাকি পুলিশের মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টে আছে। ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ব্ল্যাক-মেইল, বোমাবাজি, ধর্ষণ, খুন এমন কোন অপরাধ নেই যেটাতে সে জড়িত নয়। অথচ মহল্লায় ভালো ছেলে বলতে তার উদাহরণ দেওয়া হতো। কবে কখন থেকে কিভাবে সন্ত্রাসী হয়ে গেলো বাবা মা কখনো বুঝতেই পারে নি। আজ মুরুব্বী মহল্লায় মাথা নিচু করে হাঁটেন। ওনার মুখ থেকে হাসি মুছে গিয়েছে চিরতরে। 


আচ্ছা! এই যে আমাদের আমাদের সন্তানদের ছোটখাটো ভুলো গুলো 

কিংবা আমাদেরই ভাই-বোনদের

অথবা হয়তো বা আমাদেরই! 

মুহূর্তে করে ফেলা ভুল; 

একটি ছোট্ট ভুল পুরো পরিবারটিকে কি অসহায় বানিয়ে ফেলে, বোধগম্য হয়? 


এমন পরিবার দেখলে তোমরা তাদের লজ্জা দিও না,

লবণ ছিটাতে যেও না তাদের দুঃখে;


কে জানে! 

এই, ঐ আর সেই, সেই পরিবারগুলোর মধ্যে তো কাল তোমার আমার পরিবারও সামিল হতে পারে। 

 


১৫ অক্টোবর, ২০২১২


#গদ্য_কবিতা


ভুলের খেসারত 

 - যাযাবর জীবন 




 



 



  

মানুষের তৈরি

এই যে সূর্যটা দেখছ!

সকালে ওঠে রাঙা হয়ে, দুপুরে তেতে থাকে সাদা হয়ে 

সন্ধ্যায় আবার লাল হয় ঘুমোতে গিয়ে, 

 - এটা মানুষ তৈরি করে নি;


এই যে চাঁদটা দেখছ!

কখনো ধনুকের মত বাঁকানো, কখনো রুটির মত গোল

পূর্ণিমায় স্নিগ্ধ আলো দেয়, অমাবস্যায় অন্ধকার হয়ে যায়,  

 - ওটা মানুষ তৈরি করে নি;


এই যে নদ নদী সাগর মহাসাগর!

এই যে ভূপৃষ্ঠের অসীম জলরাশি!

এই যে হিমবাহ, এই যে জলপ্রবাহ!

 - এগুলো মানুষ তৈরি করে নি;


এই যে উঁচু নিচু ভূমি!

এই যে ছোট বড় টিলা আর সুউচ্চ বিশাল বিশাল পাহাড়! 

এই যে নান রঙের কঠিন কোমল মাটি!

 - এগুলোও মানুষ তৈরি করে নি;


এই যে লাখো উড়ন্ত পাখি!

এই যে কোটি রকম প্রাণী!

কোমল ও হিংস্র ধরণে, রঙ আর বৈচিত্র্য গড়নে; 

 - ওগুলো মানুষ তৈরি করে নি; 


এই যে অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা এক কোষী প্রাণী

ঐ যে দূরবীন যন্ত্রে দেখা কোটি তারা রাশি 

আর দৃষ্টিসীমার বাইরের সৃষ্টি সকল! 

 - ওগুলোও মানুষ তৈরি করে নি;

 


এই যে রাশি রাশি পানির সাগর আর মহাসাগর  

আর তার মাঝে বসবাসরত মৎস্য ও প্রাণীকুল! 

এই যে গ্রহ, নক্ষত্র, সৌরজগৎ আর মহাকাশ 

আর তার মাঝে বাস করা পক্ষী ও পশুকুল! 

ঐ যে উড়ন্ত ডানায় উড়ে চলা পাখি

ঐ যে বনে বাদারে ডাঙায় হিংস্র শ্বাপদকুল

এই যে ক্ষুধা! আর ক্ষুধা নিবারণের জন্য শস্যদানা

এই যে তৃষ্ণা! আর তৃষ্ণা মেটানোর জন্য পানি,   

এই যে জন্ম আর ঐ যে মৃত্যু! 

আর ঐ মানুষ নামক বুদ্ধিমান প্রাণী!

 - এর কিছুই তো মানুষ তৈরি করে নি!  

     

তবে এগুলো আসলো কোত্থেকে? 

ভাবনায় কখনো এসেছে কি?

 - নাকি মানুষ এগুলো নিয়ে কখনো ভাবেই নি! 


আচ্ছা! মানুষ কি কি তৈরি করেছে?

ওরা শস্যদানা দিয়ে রুচিকর খাবার তো বানিয়েছে!

 - শস্যদানা কি বানাতে পেরেছে?

ওরা পানিতে নানা রঙ ও উপকরণ মিশিয়ে পানিয় তো বানিয়েছে!

 - পানি কি বানাতে পেরেছে? 

ওরা রাস্তা, ঘাট বানিয়েছে, বাঁধ দিয়েছে নদীতে

 - মাটি কি বানাতে পেরেছে?  

ওরা গ্রহ, উপগ্রহ, সৌরজগৎ তো দেখেছে! 

 - সামান্য চোখটাও কি বানাতে পেরেছে?  

এত এত বুদ্ধির চর্চা করা মগজটাও তো বানাতে পারে নি

 - তবে আর কি বানিয়েছে? 


বানিয়েছে,

আরে, বানিয়েছে;


মানুষ লোভ বানিয়েছে, হিংসা বানিয়েছে, বানিয়েছে হিংস্রতা 

বানিয়েছে হানাহানি, মারামারি, কাড়াকাড়ি 

বানিয়েছে ধনী, গরীব আর সামাজিক বৈষম্য

বানিয়েছে সাদা, কালো আর বাদামী চামড়ার দল, আর বর্ণ বৈষম্য 

বানিয়েছে অর্থ, স্বার্থ আর মানুষে মানুষে বিভেদ;


মানুষ জন্ম নিয়েছে, জন্ম দেখেছে 

 - অনুভব করতে পারে নি, 

মানুষ মৃত্যু দেখেছে, মারা যাওয়ার সময় মৃত্যু যন্ত্রণায় ভুগেছে 

 - অনুভূতিটা বলে যেতে পারে নি, 

যদি পারতো! তবে পৃথিবীটা অনেক অন্যরকম হতো;


জন্ম আর মৃত্যু 

আর এর মাঝের কিছু সময় 

এটুকুই মানব জীবন 

আর কিছু নয়; 


সমস্ত সৃষ্টিকুল আর তার স্রস্টা 

 - মহান আল্লাহ্‌ তায়ালা, 

কারো কাছে ইহকালই সব, বিশ্বাসীদের পরকাল 

যাদের আছে আল্লাহ্‌র ভয়।  



১২ অক্টোবর, ২০২১


#কবিতা 


মানুষের তৈরি 

 - যাযাবর জীবন 





বন ডাকে মন

একটু ছুটি মানেই কোথাও একটু অবসর

একটুকু দম নিতে তাই ঘরের বাইরে ঘর  

সবুজ বন ডাকে, ডাকে সতেজ বাতাস

কাশবন নাচে আর দিগন্ত নীল আকাশ,  


বনে বানর ছিলো আর ছিলো কিছু হরিণ

ছিলো রাঙা প্রজাপতি আর কিছু ফড়িং

সাপ আর গুইসাপের ছিলো কিছু ভয়

একলা বনে হাঁটতে গেলেই মনে সংশয়, 


বনে বাঘের ভয়, তবুও চোখ খোঁজে তাকে

কোথায় লুকিয়ে আছে, কোন গাছের ফাঁকে? 

পানির কুমির, কাদায় শুয়ে থাকে ডাঙায়

একটু ছুটি পেলেই, বন ডাকে আমায়,  

 

বন ডাকলেই কেমন জানি ছুটি ছুটি করে মন 

সময়টা বের করেই বনে ছুট দেই তখন  

কদিন বনে কাটিয়ে ছুটি শেষে ঘরে ফেরা

ওখানে বেশ ছিলাম, ছিলো না কাজের তাড়া,  

 

পশুপাখির সাথে মিশে বেশ কাটিয়ে দিলাম 

জঙ্গলে গিয়ে কিছুটা কি জংলী হয়েছিলাম?   

এবার ঘরে ফেরার পালা, চল মন ঘরে চল

আর দিনরাত ইট-কাঠের সাথে কথা বল।   


  

১১ অক্টোবর, ২০২১


#কবিতা 


বন ডাকে মন 

 - যাযাবর জীবন


 

 


নিস্তব্ধতার কলম

সবসময় তো আমি কথা বলেই যাচ্ছি

আর কথা বলছে প্রকৃতি;


তোমরা প্রকৃতির কথা শুনেছ কি?  


এই যেমন ভোরে কথা বলে ওঠে সূর্য 

দুপুরে চিড়বিড় করে কথা বলে গরম

বিকেলটাইয় বিষণ্ণ শব্দের মন খারাপ

সন্ধ্যে হলেই ঝিঁঝিঁর ডাক

রাতে কথা বলে ওঠে অন্ধকার 

অনেক দূরে মদন টাকের ডাকে চমকে ওঠে শিশুরা 

শেষ রাতের দিকে চিৎকার করে ডাকে নৈঃশব্দ্যতা 

আর কারো কানে কানে ফিসফিস কথা বলে অশরীরী কিছু ভয়  

কোন কোন রাতে মধ্যে আকাশে হাসতে হাসতে কথা বলে ওঠে চাঁদ

জ্যোৎস্না কথা বললেই মন ভয়কে করে ফেলে জয়; 


আর আমার কথা? 

কত আর বলবো? 


আমি মাঝে মধ্যে আনন্দের কথা বলি 

মাঝে মধ্যে বলি দুঃখের কথা 

প্রায়শই নানাভাবে বলে থাকি বিভিন্ন সম্পর্কগুলোর কথা,  

এই যেমন বাবা-মা, ভাই-বোন, পরিবার, সন্তান 

আর তাদের কথা দিয়ে বলা বিভিন্ন শব্দের ব্যথা,  

মাঝে মধ্যে বলি সম্পর্কগুলোতে বসবাসরত নানা স্বার্থের কথা 

আর স্বার্থ বিকট শব্দে সম্পর্ক ভেঙে দিলে 

মাঝে মধ্যে অসহ্য হয়ে উঠে বলি স্বার্থে সম্পর্কহীনতার কথা; 

কান্নার কথা কত আর বলব বলো?   

তার থেকে অনেক ভালো মুখ বন্ধ করে চুপকথা, 

নৈঃশব্দ্যতার বেদনা না হয় একলাই মগজ খুঁড়ুক আমার

তোমাদের সাথে শুধু হো হো হাসির শব্দে বিলিয়ে যাই আনন্দগাঁথা; 


আচ্ছা ওসব কথা বাদ দাও,


জীবন জীবনের যায়গায় থাক 

দুপুর রোদে চামড়া পুড়ে যাক 

আমি ঘাম-ক্লান্ত দেহে নিঃশব্দে চেয়ে দেখি 

শব্দ করে রোদে জ্বলছে কিছু কবিতা, 

বেদনাগুলো দুঃখের ভেতর থাক 

মধ্য রাতে স্মৃতিগুলো পুড়ে যাক 

আমি নিঃশব্দ স্মৃতি-ক্লান্ত চোখে তাকিয়ে দেখি 

শব্দ করে অন্ধকারে পুড়ছে কিছু কবিতা, 

কবিতারা জ্বলতে থাক

আমি মুখ খুলব না

কবিতারা পুড়তে থাক 

আমি কথা বলব না, 

আমি চুপ হয়ে থেকে নিস্তব্ধতার কলমে লিখে যাব 

নৈঃশব্দ্যতার কবিতা। 


০৩ অক্টোবর, ২০২১


#কবিতা 


নিস্তব্ধতার কলম

 - যাযাবর জীবন 




বন্ধু

বন্ধুরা একসাথে 

বহুদিন পর

দেখা হতেই আলিঙ্গন 

বুকের ভেতর 


বন্ধুরা একসাথে 

বহুদিন পর

আড্ডা গল্পে মাতে 

সময় বেখবর 


বন্ধুত্বের বাঁধনে 

বন্ধু সবাই

একসাথে মিলেমিশে 

সময় কাটাই 


বন্ধুত্বের অধিকার

বন্ধুদের টেনে আনে 

অলস আড্ডা সময়

কবিতা গানে গানে


চায়ের কাপে কাপে   

পুরনো স্মৃতিচারণ  

স্মৃতির খুনসুটি  

কালের বিবর্তন 


বন্ধুদের হুটোপুটি 

চায়ের আড্ডায় 

কেউ কবিতা বলে 

কেউ গান গায় 


সিগারেটের ধোঁয়ায় 

সময় উড়ে যাক 

কালের বিবর্তনে 

হৃদয়ে বন্ধু থাক।


#কবিতা 


৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১


বন্ধু

 - যাযাবর জীবন