তোমরা লেখাপড়া করেছে
বড় বড় ডিগ্রী নিয়েছ,
শিক্ষিত হয়েছ কি?
আমাকে তো তোমাদের স্কুলে ভর্তিই করো নি;
কেনই বা করবে বলো?
সেই শৈশব থেকেই তো আমাকে আলাদা করে দিয়েছ,
আলাদা আচার, আলাদা ব্যবহার
আর আমার প্রতি তোমাদের উপহাস,
কখনো ঠারেঠোরে কখনো নির্লজ্জের মত সামনাসামনি
আরে আমি তোমাদেরই ভাই, তোমাদেরই সন্তান
অবুঝ জ্ঞানে এইটুকু জানি;
আমি জানলে কি হবে বলো?
একবার ভেবেছ কি? আমার প্রতি তোমাদের ব্যবহারটা কি হলো?
না হয় তোমাদের থেকে বুদ্ধিমত্তায় আমার একটু কমই হলো!
না হয় তোমাদের মত আমার অঙ্গে অঙ্গে রক্ত সঞ্চালন একটু কমই হলো!
না হয় আমার কথা বলায় একটু জড়তাই হলো!
না হয় আমার হাঁটায়, চলায় একটু আড়ষ্টতাই পেলো!
না হয় আমার বোধ বুদ্ধি তোমাদের থেকে অনেকটাই কম হলো!
তবুও আমি তো তোমাদেরই কারো সন্তান, কারো ভাই
তবে আমাকে কেন বিশেষ সন্তান উপাধি দেয়া হলো?
কেন আমাকে তোমাদের স্কুল থেকে ছাড়িয়া আলাদা স্কুলে দেয়া হলো?
আমাকে তোমাদের থেকে আলাদা করে দিয়ে রক্ত সম্পর্কের সাথে কেন উপহাসটা করা হলো?
তোমরাই বলো;
আরে এত এত পড়ালেখা করে ডিগ্রী হাসিল করে তোমাদের কি এমন বিশেষ উন্নতি হলো?
কি ভেবেছ তোমরা?
বোধ বুদ্ধিহীন জড় পদার্থ?
আরে আমিও বুঝি তোমাদের জীবনের অর্থ,
অথচ তোমরা অর্থ বলতে বোঝ শুধুই টাকা কড়ি
তোমরা অর্থ বলতেই বোঝ স্বার্থ,
ও হে শিক্ষিত ভাই বোন! সবই বুঝি
শুধু তোমাদের মত ভাব প্রকাশ করতে পারি না,
আমি বোবাচোখে দেখি, সুধু চেয়ে চেয়ে দেখি
তোমরা শিক্ষিত হয়েছ, মানুষ হয়েছ কি?
তোমারা নিজেদের ডিগ্রিধারী বলো
আমি বলি শিক্ষিত মূর্খ;
আমার কাছে তোমাদের মত ডিগ্রী নেই নি তবুও নাম পেয়েছি বিশেষ সন্তান
আমি প্রত্যেকটা উপহাস বুঝি যেগুলো তোমরা আমায় পদে পদে করেছ দান,
এবার একটু থামো, একবার ভাবো, একবার আয়নার দিকে ফেরো
আর আমার জায়গায় একটাবার তুমি নিজেকে চিন্তা করো।
৩০ অক্টোবর, ২০২১
#কবিতা
শিক্ষিত মূর্খ
- যাযাবর জীবন
ছবিঃ নেট থেকে সংগৃহীত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন