'+' চিহ্নটার শাব্দিক অর্থ জুড়ে দেয়া,
তাই না?
সে হোক অংকে, কথায় কিংবা সম্পর্কে;
অথচ ২০২০
'+' হয়ে গেলো পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর চিহ্ন
জীবনটাকে করে দিলো বিষ;
এখন '+' অর্থ জুড়ে দেয়া নয় বরং ছিঁড়ে ফেলা
কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনুভূতিগুলোকে
কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্পর্কগুলোকে
কিছু কিছু ক্ষেত্রে তো পুরো জীবনটাকেই;
এই যে + আর + এর মিলনে সম্পর্কগুলো!
সে পারিবারিকই হোক, আত্মীয় সম্পর্কই হোক কিংবা রক্তেরই হোক
কাগজে একটা + চিহ্ন! যেন সকল সম্পর্ক ছিন্ন,
হ্যাঁ! আদতে প্রথম প্রথম চারিদিকে সম্পর্ক ছিন্নই দেখেছি
সম্পর্ক ছিন্ন বাবা-মা আর সন্তানের মাঝে
সম্পর্ক ছিন্ন স্বামী-স্ত্রীর মাঝে
ভাই বোন তো অনেক দূরে;
'+' বহনকারী যেন অচ্ছুৎ, সমাজের বোঝা
হয় একঘরে এককোণে, সম্পর্কহীন বিভীষিকাময় জীবনে
কিংবা হসপিটালের কোন এক কোনে, কোনমতে ফেলে আসা জিন্দা লাশ
মরে গেলো তো যেন বেঁচেই গেলো,
জানাজা? দাফন? প্রথম দিকে সেও কপালে জুটেছে ক'খানা?
রক্ত সম্পর্কগুলো তো সামনেই আসে নি
কোথাকার কোন কোন মানব-সেবক কিছু কর্মী হাত লাগিয়েছিলো লাশে
হয়তো গোসল দিয়েছিলো যত্ন করেই, হয়তো যত্নেই কবরে রেখেছিলো লাশ
গণকবরেরও নাম কিন্তু শোনা গিয়েছিলো, আর ভয়ংকর বিভীষিকাময় কিছু রাত;
সময়ের সাথে সাথে + চিহ্নটায় হয়তো কিছু সহনীয়তা এসেছে
এখন আর ফেলে আসে না গণ হসপিটালে,
মানবিকতা কি হঠাৎ বেড়ে গেলো?
উঁহু! ভয়টা হয়তো কমে গেছে অনেকটাই
হয়তো সময়ের সাথে কিছু ফিরে এসেছে সম্পর্কের মানবিকতাটুকুও
তবুও কিন্তু পনর কিংবা বিশ দিন ঘরবন্দী, একা একা
একা ঘরে বিশ দিন! থেকেই দেখ তো!
বিস্ময় লাগে? না বিষ?
মাঝে মধ্যে বাবা-মায়ের সাথে মোবাইল কথন
মাঝে মধ্যে স্বামী -স্ত্রী কিংবা সন্তানদের সাথে ভিডিও চ্যাটে দর্শন
এটুকু সর্বোচ্চ,
আরে বাবা! একই বাড়িতেই তো আছ! দরজার সামনে খাবার দিয়ে যাচ্ছে সময় মত
সেটুকুই কম কিসে!
আর আজকাল লাশের গোসল হয়, কাফন হয়, জানাজা হয়, দাফন হয়
আত্মীয়-স্বজনরাও আসে ভয়ে ভয়ে, দেখে দূর থেকে;
খুব খারাপ লাগলো কি?
আমি কিন্তু চারিদিকের চিত্রটাই তুলে ধরেছি;
কেও কি কখনো চিন্তা করেছ!
এই একটা + এ কতকিছু - হলো!
ওহে! ওটা '+' নয়
ওটা মৃত্যুভয়
নিজেকে নিজের থেকে বেশী ভালোবাসা! মানুষের আর কোনকিছুতেই নয়।
১৩ অক্টোবর, ২০২০
#কবিতা
'+' চিহ্ন
- যাযাবর জীবন
ছবিঃ নেট থেকে সংগৃহীত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন