আমরা কেউ কেউ বোধহয় ভার্চুয়ালে বাঁচি
ভার্চুয়ালে খাই দাই ঘুমাই
ভার্চুয়ালে কান্না হাসি
ভার্চুয়ালে মনকলা খাই
আর ভার্চুয়ালে জীবন কাটাই;
ঐ যে আয়নায় দেখা যায় চেহারাটা!
মাঝে মাঝে দ্বিধাহ্নিত হয়ে তাকাই
ওটা কি আসল না ভার্চুয়াল চিন্তায় পড়ে যাই
কবেই যে ভুলে গেছি! আমার আসল জীবনটাই!
এখন জীবনের মানে বলতেই কিছু লাইক, কিছু কমেন্ট
ক্ষণে ক্ষণে অস্থির কিছু প্রোফাইল ছবি
ক্ষণে ক্ষণে অস্থির কিছু গ্রুপ তৈরি
এর ওর সাথে সারাক্ষণ খোঁচাখুঁচি,
আর মনের মাঝে সত্যিকারের ঈর্ষা নিয়ে ভার্চুয়ালে বাঁচি;
ও আমার বন্ধুর ওয়ালে ভালোবাসার ইমো দিয়েছে!
আমারটায় দিলো না?
আমি কি এতটাই ফেলনা!
আর মনের দুঃখে আহা উঁহু কান্না;
ঐ যে ওকে দেখছ!
ওকে কিন্তু আমিই পরিচয় করিয়ে দিয়েছি তার সাথে
এখানেই এই ভার্চুয়ালে
অথচ দেখ! দেখ!
আজ সে আমার থেকে ওর বেশী আপন হয়ে গেছে!
ছিঃ! ছিঃ! মানুষ এত খারাপও হতে পারে!
হায়! আমার মানসিকতা!
ওহো আমার না রে এটা ভার্চুয়াল মানসিকতা,
তোমার বুদ্ধি কম, তুমি বুঝবে না;
ও এখন তার সাথে মেশে, আমার সাথে মেশে না
আহা! জীবনটা এমন কেন?
আমি কি এতটাই ফেলনা!
আর মনের দুঃখে আহা উঁহু কান্না;
ঐ যে ওকে তার সাথে দেখছ না!
জানো এক সময় না আমার সাথে খুব ভাব ছিলো
কথা হতো প্রতিদিন ভার্চুয়াল চ্যাটে,
অথচ আজকাল কেমন যেন বড্ড বেশী বদলে গেছে
এখন তো কল দিলে ধরে না ই, একটা কল ব্যাকও করে না
অথচ ম্যাসেঞ্জারের সবুজ বাতিটা চব্বিশ ঘণ্টা
নতুন প্রেমিক জুটেছে হয়তো
ব্যস্ত থাকে তাদের সাথে
অথচ পরিচয় কিন্তু আমার মাধ্যমে, তাই না?
আমি কি এতটাই ফেলনা!
মনের দুঃখে আহা উঁহু কান্না;
এক এক সময় আমার ভার্চুয়াল জীবনের দিকে তাকাই
এক এক সময় সামনে আয়না পড়লে দেখি
মাঝে মধ্যে চমকে উঠি
তারপর বোধোদয়ের লজ্জায় নিজেই মাটিতে মিশে যাই;
কোথায় যাচ্ছি আমি?
কি এক জীবন কাটাচ্ছি!
রক্ত মাংসের মানুষগুলোকে উপেক্ষা করে আজ ভার্চুয়াল হয়ে গেছি;
আচ্ছা! আজ অসুস্থ হলে ভার্চুয়াল চিকিৎসা করাবে?
নাকি লাইক আর কমেন্টে অসুখ ভালো হয়ে যাবে?
ওহে কাঁচের আয়না!
ওহে প্রতিচ্ছবি!
তুমি রক্ত মাংসের মানুষ,
ভার্চুয়ালটা জীবন না।
২১ অক্টোবর, ২০২০
#কবিতা
ভার্চুয়ালটা জীবন না
- যাযাবর জীবন
ছবিঃ নেট থেকে সংগৃহীত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন