বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৪

বন্ধুত্ব টিকে থাক


বন্ধুত্ব টিকে থাক
- যাযাবর জীবন

অনুভবে তোকে ধরতে যাই
বন্ধুত্বের তিতলি উড়ে যায়
প্রেম কানে কানে কয়
তারে ধরতে নয়;
যতই মন পোড়াই
ততই তোতে জড়াই
যেন এই আছি এই নাই
প্রেমের অন্ধ গলিতে বন্ধু, তোরে হারাই;
তার থেকে তোর জন্য যত ভালোবাসা
উড়িয়ে দিলাম
তুই ছুঁয়ে দিলি
আমি তোর হলাম
ভালোবাসা একান্তই আমার হলো
অনুভবে অনুভূত
হৃদয়ে একান্তে,
শুধু হাত বাড়ালে নাই
তুই
ভালোবাসা
অনুভব
ক্ষরণ আমার, লাল থাকুক তোর মনে
হৃদয় আমার পোড়ে, দাবানল বনে বনে।

বন্ধুত্বকে ভালোবাসার মাত্রায় নিয়ে গেলে
সম্পর্ক পরিধি হারায়
বৃত্তের কেন্দ্রে হয়তো ভালোবাসা কেন্দ্রীভূত হয়
বন্ধুত্ব অবশ্যই অতলে ডুবে যায়;
তার থেকে বন্ধুত্ব হোক অমলিন
তোর আর আমার
বন্ধুত্বের সম্পর্ক টিকে থাক চিরদিন।





রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০১৪

টুকিটাকি


টুকিটাকি
- যাযাবর জীবন

...
দর্পণে হাত রাখি
ধরি তোর হাত
স্পর্শের অনুভব তো মনের ভেতরেই
মুঠোতে না হয় নাই বা পেলাম।

...
কিছু অনুভূতি ভেঙ্গে যায়
ইচ্ছা বা অনিচ্ছায়
মুখ নিঃসৃত কিছু কথায়
কিছু স্পর্শহীনতার টোকায়
আর কিছু ভালোবাসা-হীন পরে থেকে থেকে
অনুভূতিটাই ঝরে যায়.........

...
এক গ্লাস ভালোবাসা
এক চিমটি চুমু
প্রেমের চামচে ঘুঁটা;

এই নে তোর ঘুমের ওষুধ.....


...
একে একলা
দুইয়ে ঝগড়া
তিনে তা ধিন ধিন তা

...
কেও বাকি নেই,
সবাই খেলছে মাঠে
যে যার সামর্থ্যে;
ব্যাট তোর হাতে তো ছক্কা
বল তোর হাতে তো আউট;
আমি গ্যালারীতেই বেশ আছি, একা।

হাত তালি দেওয়ার কেও না থাকলে চলে?


...
অনুভূতিহীন হলেই কেবল
তীক্ষ্ণ অনুভূতিগুলোকে ধারণ করা যায়
সূক্ষ্ম আর তীক্ষ্ণ অনুভূতির মুখোমুখির পরিণাম
সম্পর্কের ক্ষয়


...
না মেঘ না বৃষ্টি
না রাত না চাঁদনি

কথা বললেই কি ভিজে যেতে হয়?



...
আকাশে জ্যোৎস্নার ঢল

মন পালানোর রোগটা বড্ড বেয়াড়া
বাড়ী থেকে বের হতেই রাস্তা হারানো
ফিরে আসার পথটা খুব সংকীর্ণ
জানা আছে
তবুও কি অমাবস্যা চাঁদকে ধরে রাখে?

চাঁদের টর্চ জ্বেলে চাঁদনি খুঁজছি;
তোকে খুঁজে এনে
এবার আমি হারাবো।


...
একটা সুতা ছেড়া ঘুড়ি
একটা ভাঙা লাটাই
কাঁচের মাঞ্জায়
সুতোর দু প্রান্তে জড়িয়ে;
কাটাকাটি খেলায় দুজন বিচ্ছিন্ন হলো
পেছনে মায়া রেখে গেলো।

অর্ধেক আমি
না হয় তুই অর্ধ মানবী
অধুরা যদি থাকে ভালোবাসা
তবুও তা বড্ড যে দামী।

বৃষ্টিতে অঙ্কুরোদগম
বৃষ্টিতে বন্যা
আমরা না হয় গাছের ছায়া খুঁজি।


...
"সহজ সুন্দর বন্ধুত্বের সম্পর্কের ইতি টানার জন্য প্রেমের একটি ঝাপটাই যথেষ্ট"

তবুও বন্ধুত্বের দেয়াল ভেঙ্গে কেও প্রেমে পড়ে
হয়তো কিছুদিন প্রেম করে
তারপর প্রেমে মরে
তারও পরে প্রেম মরে
অবশেষে আবার হাত বাড়ায় বন্ধুর খোঁজে;

বন্ধুত্ব মরে গেছে কবেই তো সেদিন
প্রেমের প্রথম ঝাপটা এসেছিল যেদিন।


...
ফেসবুকে সারারাত প্রেমের ফেরিওয়ালা
মধ্যাহ্ন ঘুমে দিনের অর্ধাংশ পাড়,
পিঠে মাটি ঘষে মালকোঁচায় নেমে পড়ে ডুবপুকুরে
চাঁদ ওঠার আগে
নুনজলে হাতরে ফেরে রাতের ছিপের আধার;
খুব বেশি পানসে হয়ে গেলো কি চাঁদের রুটিটা?


...
চিনেছিস কতটুকু?
মনের দর্পণে দেখেছি যতটুকু;
পারদ সরে গেলে?
ভাবব নতুন করে;
সেদিন চিনতে পারবি আমায়?
রাতের অন্ধকারে দিবাস্বপ্ন দেখতে হয় না।

...
তোকে ফিরিয়ে দেবার সময় মনে মনে বলেছিলাম
ভালোবাসি অনেক;
জবাবে তাকিয়ে ছিল আমার পানে তোর চোখের জল
নীরবে বয়ে গিয়েছিল সেদিন অশ্রু হয়ে,
আজো প্লাবন হয়ে ভাসায় আমায়
প্রতি পূর্ণিমা রাতে;
খিলখিল হাসিতে চাঁদ ওঠে
রিনঝিন হাসে বক্র চোখে
দেখতে দেখতে পূর্ণিমা হারিয়ে যায়
অমাবস্যার বাঁকে
চাঁদনি ধরা হলো না আজো আমার
চাঁদের রাতে।

...
টিকটিক দৌড়ে চলেছে জীবন ঘড়ির কাঁটা
কেও ভুল করে ভুলে থাকতে চাই
কেও ভুলে ভরা জীবন কাটাই
হঠাৎ ঘড়ির কাঁটা থেমে গেলে তবে
বোধের ঘুম ভেঙ্গে সেদিন লাভ কি হবে?


...
চোখের ভাষা ভিজে যাওয়ার পর
টুপ করে গড়িয়ে পড়লো কিছু মুক্তোদানা
মন পেতে কিছু নিলাম
বাকিটুকু হারালাম;

যা ঝরার তা তো ঝরে যাবেই
তবুও কোথায় জানি আটকে থাকে
দলা পাকানো কিছু ব্যথা
অব্যক্ত রয়ে যায় কিছু কথা;

ক্ষরণ না হলে ভালোবাসার সার্থকতা কোথায়?

...
খুব হঠাৎ করেই হয়ে যায় শেষ
হঠাৎ করে ঠেলে আসা মনের যত আবেগ
ভালোলাগা আর ভালোবাসার রেশ;

দ্রুত লয়ের তালে সুর মেলাতে পারে ক-জন?

...
তুই হিব্রু ভাষায় কথা বলিস
আমি ল্যাটিন ভাষায় প্রেম করি
মাঝে মাঝে ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁয়ে যায়
চুমু নাকি একে বলে বাংলায়
ভালোবাসার আলাদা ভাষা আছে নাকি?

...
উত্তরে বলি
দক্ষিণে শোনে
পূবে হাসে
পশ্চিমে কাঁদে
ঝড়ের ভাষা কেও বোঝে না
বাতাস ছোটে আকাশ পানে

...
কারণ যে থাকতেই হবে
এমন তো কোন কারণ নেই
যা ঘটার তা ঘটে যায়
ভুল করে অথবা ঠিক ভাবে
চাইতে আর না চাইতে
জানতে আর অজান্তে
অবহেলায় কিংবা ভালোবেসে
কারণে আর অকারণে।

...
একদিন ঠিক আমি পাখি হব
একদিন ঠিক আকাশে উড়ে যাব
না হয় হাঁসের ডানাই পিঠে বেঁধে নেব
তবুও সাধ উড়ে যাবার একবার
ঐ দূর আকাশের গায়
না হয় ডানা ভেঙ্গে পড়েই যাব
মরণ তো হবেই একবার
তবুও বড্ড সাধ ইকারাস হবার
মাত্র একবার
মরণের আগে শুধু একবার.



শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৪

সর্বনাশ


সর্বনাশ
- যাযাবর জীবন

চিন্তার ঘূর্ণনে তুই
এক বার দুই বার, সারাদিনে বার বার
পেন্সিলের ঘূর্ণনে নিব ভাঙ্গে কত বার
কবিতা হয় না;
আমি মায়া আঁকতে যাই যতবার,
বিন্দু থেকে বৃত্তের ছায়াপথ ঘুরে
তোর আঙ্গিনাতেই এসে হোঁচট খায়
বার বার;
আমি ছায়া এঁকে যাই তোর মায়ায়।

রাতের প্রহরান্তে সর্বনাশ উড়ে বেড়ায়
আমি ডানা মেলে দেই তোর ভালোবাসায়।

পুকুর


পুকুর
- যাযাবর জীবন

অঢেল পানি কাকচক্ষু পুকুর জলে
কত মানুষ বেড়াতে আসে
কতজন পাড়ে বসে
কতজন গল্প করে
কতজন ঢিল ছুঁড়ে
কেও খেলার ছলে
কেও ভালোবেসে
কেও ব্যথা দিতে
কেও বা পাশ দিয়ে আসতে যেতে
পুকুর দেখলেই ঢিল ছুড়তে ইচ্ছে করে।

ঢিলের আকার অনুযায়ী ঢেউ ওঠে পুকুর জলে
অল্প বা বেশি
ছোট ছোট মাটির ঢিল গলে যায় পুকুর জলে
কিছু বড় মাটির ঢিল হয়তো অন্দোলন তোলে
তারপর একসময় পুকুরের বুকে মিশে যায় গলে;
খুব মাঝে মাঝে কিছু পাথরের ঢিল এসে পড়ে
পুকুরের বুকে বড় অন্দোলন জাগায়
পুকুর গায়ে কিছু ব্যথাও হয়তো পায়
সময়ের সাথে গড়িয়ে নামে পুকুর তলে
আঁচড়ায়, কামড়ায়, ক্ষরণ তোলে
তারপর এক সময় শান্ত হয় পুকুর জল,
পাথরের ঢিল কি গলে?
সে ঢিল রয়ে যায় পুকুরের বুকে
পুকুর জলে
পুকুরের গভীর তলে।

পুকুরের কান্না দেখেছে কে?
ক্ষরণ পুকুর তলে
নোনাজল মিশে চলে পুকুর জলে।





শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০১৪

অন্ধকার ঘরে একা


অন্ধকার ঘরে একা
- যাযাবর জীবন

তোদের জন্য কত বড় বাড়ি করে দিয়েছি
আমায় এত ছোট ঘরে কেন রে নিয়ে এলি?
তোদের কি খুব অভাব চলছে এখন?
পাশ ফেরার জায়গা মেলে না।
তোদেরকে বুকে করে রেখেছি সারাটি জীবন
তবে আজ মাটিতে কেন শুইয়েছিস আমায় এখন?
একটা খাট কিনে দেবার সামর্থ্যও কি নেই তোদের আজ?
বালিশটাও দিলি না।
অন্ধকারে বড্ড ভয় পেতি তোরা ভাই বোন
বাবার গায়ের গন্ধে পেঁচিয়ে শুতি তোরা তখন
আমায় এখন অন্ধকারে কেন রাখলি?
কারেন্টের কি এতই আকাল পড়েছে
নাকি তোদের হাতটান যাচ্ছে
আচ্ছা তা হলে একটু মোমবাতিই দিয়ে যা জ্বালিয়ে
অন্ধকার বড্ড দমবন্ধ লাগে আমার।

ও কি?
ও কি?
আমায় একা ফেলে সবাই কোথায় চললি তোরা?

ও আমার ভাই বোন
ও হে পরিবার পরিজন
আমার সোনা মানিক সন্তান
ওরে ও আমার আত্মীয় স্বজন
আমায় একা রেখে কোথায় যাচ্ছ তোমরা?

এই এই
একটু দাঁড়াও না,
আমাকে একা ফেলে যেও না।

ছোট্ট এ সাড়ে তিন হাত ঘরে
বড্ড অন্ধকার এখানে চারিদিক চোখের পরে
আমার বড় দমবন্ধ লাগে
আমার বড্ড ভয় করে।

কেও কথা শোনে না কেন?

ওরে ও বাছাধন
আমায় একা ফেলে যাস না রে বাবা
ও আমার পুত্রধন
কি করি নি তোর জন্য সারাটা জীবন
এখন এ অন্ধকার মাটির ঘরে আমায় একা ফেলে
চলে যাচ্ছিস কেন তোরা সবাই মিলে
এই কি দিলি আমার ভালোবাসার প্রতিদান?
তুই না ছিলি আমার কত আদরের সন্তান?

আমার বড্ড ভয় করে
এত অন্ধকার কেন এখানে চোখের পরে
ছোট্ট এ সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে।

সোমবার, ২১ জুলাই, ২০১৪

অনুভব


অনুভব
- যাযাবর জীবন

একটা সুতা ছেড়া ঘুড়ি
একটা ভাঙা লাটাই
কাঁচের মাঞ্জায়
সুতোর দু প্রান্তে জড়িয়ে;
কাটাকাটি খেলায় দুজন বিচ্ছিন্ন হলো
পেছনে মায়া রেখে গেলো।

অর্ধেক আমি
না হয় তুই অর্ধ মানবী
অধুরা যদি থাকে ভালোবাসা
তবুও তা বড্ড যে দামী।

বৃষ্টিতে অঙ্কুরোদগম
বৃষ্টিতে বন্যা
আমরা না হয় গাছের ছায়া খুঁজি।



বন্ধুত্ব ও প্রেম


বন্ধুত্ব ও প্রেম

- যাযাবর জীবন

"সহজ সুন্দর বন্ধুত্বের সম্পর্কের ইতি টানার জন্য প্রেমের একটি ঝাপটাই যথেষ্ট"

তবুও বন্ধুত্বের দেয়াল ভেঙ্গে কেও প্রেমে পড়ে
হয়তো কিছুদিন প্রেম করে
তারপর প্রেমে মরে
তারও পরে প্রেম মরে
অবশেষে আবার হাত বাড়ায় বন্ধুর খোঁজে;

বন্ধুত্ব মরে গেছে কবেই তো সেদিন
প্রেমের প্রথম ঝাপটা এসেছিল যেদিন।




রবিবার, ২০ জুলাই, ২০১৪

হিসেব


হিসেব
- যাযাবর জীবন

'মাশুল গুনতেই হয় মানুষকে'
অন্যায় কৃতকর্মের
কিংবা ভুল পথে জীবন যাপনের
আজ, কাল বা পরশু
এ জীবনে কিংবা অন্যভূবনে;
যদি সুদাসলে মাশুল চড়ে এ জীবনে
ভেবে নিও খুব বাঁচা বেঁচে গেলা অল্প-দামে,
তোমার থেকে হতভাগা আর কে আছে?
যদি মূল্য দিতে হয় সে জীবনে;

হিসেবে বড্ড পাকা সে
ওপরে বসে কলকাঠি নাড়ে যে।

শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০১৪

আমিও মানুষ


আমিও মানুষ
- যাযাবর জীবন

ষড়রিপুর কবল থেকে বের হয়েছে কবে, কে?
মানুষ না বলে তাকে দেবতা বলে;
বাইরে দেখি চোখ ঝলসে যাওয়া আলো
মনের ঘরেই তো আছে অন্ধকার কালো
সেখানে ঘুমিয়ে থাকে
কাম ক্রোধ লোভ মোহ মদ ও মাৎসর্য
যখনি রিপুর জোয়ার আসে রাতের অন্ধকারে
যা কিছু সামনে পায় মুখে পুরে
সাপের ছোবলে টুক করে
তারপর আবার নিপাট ভালোমানুষ
কদিন রিপুর খাদ্যে জাবর কাটে
আবার থাবা মেলে খিদে পেলে
ক্রমাগত
মানুষ বলে কথা!

খুব মাঝে মাঝে নিজের ভেতর তাকাই
নিজেই চমকে যাই
রিপু এসে মাথা কুটে আমার চৌকাঠে
দরজা খুলে স্বাগত জানাই
রিপুর কবলে সঁপে দেই নিজেকে
মহানন্দে ভূরিভোজন রিপুর খাদ্যে
তারপর নিপাট ভালোমানুষটি সেজে
আবার কেওর দেই মনের ঘরে;
আরে আরে
দ্বিচারিণী শ্বাপদ দেখি আমারই ভেতরে।






বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০১৪

সিঁড়ি



সিঁড়ি
- যাযাবর জীবন

সিঁড়িটা ওপর থেকে নীচে নেমে গেছে
কিংবা নীচ থেকে ওপরে উঠে গেছে
কেও ওপর থেকে দেখে
কেও নীচে দাঁড়িয়ে
দুজনাই যার যার জায়গায় ঠিক
সিঁড়ি সিঁড়ির জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে স্থবির।


উল্টোরথ


উল্টোরথ
- যাযাবর জীবন

আমি উত্তরে বলি, দখিনা বাতাস বয় তোর কানে
আমি পূবে চলি তোর কদম বাড়ানো পশ্চিমে
আমি যা বলি তুই তা বুঝিস না
তুই যা শুনতে চাস আমি তা জানি না
শুরু থেকেই শুরু হয়েছিল ভুল বুঝাবুঝির খেলা
ভালোবাসা গাছের সাথে হয় না
অশ্রুধারা পাথরে দাগ কাটে না;
চল উল্টোরথে চেপে বসি
তুই
আমি
দুজনেই
আলাদা হয়ে
পূর্ব ,পশ্চিম ,উত্তর ,দক্ষিণ,ঈশান ,বায়ু,অগ্নি, নৈঋৎ, ঊর্ধ্ব, অধঃ
একবার যাত্রা শুরু করলে কোথাও তো যাব!

ক্রমাগত ভুল বুঝার চেয়ে
কিছু না বুঝে দূরে সরে যাওয়া, ঢের ভালো;
প্রথম প্রথম ক্ষরণ হবে হয়তো
সময়ে সয়ে যাবে
তোর
আমার
দুজনারই,
হাঁড়িকুঁড়ি তো বেঁচে যাবে
কিংবা কানের পর্দা
সেই ভালো, সেই ভালো।




বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০১৪

দুরকম ভালোবাসা


দুরকম ভালোবাসা
- যাযাবর জীবন

দুজনের বাস দু-ভুবনে
দুজন জীবনের দুরকম ছবি আঁকে
দুজন দুরকম স্বপ্ন দেখে
দুজন দুভাবে ভালোবাসে
কেও কাওকে পায় না ছুঁতে
তবুও দুজন একরাশ ভালোবাসা বুকে বাঁচে
পরস্পরের তরে
হৃদয়ের অনেক গভীরে;

আকাশ আর মাটি একে অপরকে টেনে রাখে
তবুও কেও কারো পারে না হতে
অনেক দূরে তারা এক সাথে মিশে
ঠিক রেললাইনের পাতের মত;
কোথাও না কোথাও ব্যবধান রয়েই যায়
আকাশ আর মাটিতে
রেলের দুটি পাতে
জীবনের পথে
দুজনের স্বপ্নে
কিংবা ভালোবাসায়।

কালের স্রোত


কালের স্রোত
- যাযাবর জীবন

সময়ের নৌকা
কি দ্রুতবেগেই না পারি দেয় জীবন সমুদ্র
চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই;
এইতো সেদিন মায়ের কোলে
তারপর হামাগুড়ি
বায়নার শিশুকালটা চোখের নিমিষে
কোথা দিয়ে দিলেম পাড়ি
লাটিম ঘুরতে না ঘুরতেই
কৈশোরের দাড়িগোঁফের ভিড়ে হারিয়ে গেল ছেলেবেলা;
জানা ছিল না প্রেম কাকে বলে
তবুও কি এক ভালোলাগার অনুভূতি তাকে দেখতেই
কৈশোরকে ল্যং মেরে তারুণ্য এগিয়ে গেলো
নারী যেন আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হলো;
বারে বারে প্রেমের দুধবমিতে অস্থির যৌবনের পদার্পণ
থিতানো ভালোবাসায় থিতু হলো যৌবন।

ষাঁড়ের শিঙে রঙ মেখে সং সেজে শুরু হলো সংসার
চাকুরীর জোয়ালের ওপরে, উপরি বৌ এর জোয়াল
নুন আনতে পান্তা ফুঁড়োয় সকাল বিকেল
কাচ্চাবাচ্চা ট্যাঁ টো
কোথা দিয়ে সময় উড়ে গেলো
দেখতে না দেখতে প্রৌঢ়ত্ব
আল্লাহ্‌ বিল্লাহ তসবি হাতে
সংসার তখন অনেক বড়
ছেলে মেয়ের বিবাহ
কত ব্যস্ততা, কত খুশি, কত আয়োজন
প্রথম নাতি হওয়ার দিনটির কথা ভুলতে পারে কজন?
চোখের পলক ফেলার আগেই
প্রৌঢ়ত্বের দোরগোরে বার্ধক্যের কড়া নাড়া
সময়কে কি বেঁধে রাখা যায়?
দিতে হয়েছিল সাড়া।

তারপর যেন সব এলোমেলো
আষ্টেপৃষ্ঠে জীবনকে জড়িয়ে বুড়িটা বেশ তো ছিল
জীবন থেকে কেমন জানি হঠাত করেই বিদায় নিলো
কাওকে কিছু না বলেই না ফেরার দেশে চলে গেলো;
অনেক অনেক দিনের পুরনো অভ্যেস বসে
রাতে ঘুমের ঘোরে হাত ছড়িয়ে দেই পাশে
খুব ফাঁকা লাগে
যেন বুকের কোথায় কি একটা নেই হয়ে গেছে
বড্ড একলা লাগে।

সময় পিছলে নামে সময়ের ফাঁকে
ছেলেমেয়ে কেমন দূরে সরে থাকে
বুড়োটাকে আর কাহাতক সহ্য হয়?
বৌমার ইদানীং বড্ড কষ্ট হয়
নাতি নাতনীদের ঘরের বড় টান
তিনটে মাত্র ঘরে এতগুলো মানুষের অবস্থান
বুঝি, হয়না আর জায়গার সংকুলান।

তার পরের কিছু কথা না হয় থাক অজানা
আমার এখন অনেক বন্ধু, সবার চেনা ঠিকানা
বড় সংসারে অনেক বড় বাড়ি, পারি নি আমি দিতে
বড্ড ইচ্ছে করে আমার বুড়ির কাছে যেতে
এখন যেন সময় কাটে না আর অপেক্ষার দিনগুনে
বড্ড আরামে ছেলে আমায় রেখেছে বৃদ্ধাশ্রমে।



https://www.youtube.com/watch?v=Ya8MkAV71eg


ভাঙন



ভাঙন
- যাযাবর জীবন

আয়না ভাঙে
ঝরে পরে টুকরো হয়ে
আয়নাতে মায়া
সাজায় টুকরো কুড়িয়ে;
টুকরোতে মুখ দেখে
টুকরোরে স্বপ্ন
আবার ভাঙে টুকরো হয়ে
ঝরে পড়ে অবিরত
ক্রমান্বয়
আবার টুকরো হয়
আবার সাজায় কুড়িয়ে;
একসময় টুকরো গুড়ো গুড়ো হয়
প্রেম গুড়ো গুড়ো সেদিন হয়, নিশ্চয়
গুড়ো দর্পণে হৃদয় কাটে হয়তো
রক্ত ঝরে কি?

ভাঙা আয়না হাতে বসে আছি।

ভালোবাসার ধরণ



ভালোবাসার ধরণ
- যাযাবর জীবন

প্রেমের উৎস কোথায়?
মনে?
মন কোথায়?
মস্তিষ্কে, না হৃদয়ে?
মস্তিষ্কে তো হলুদ পদার্থ, লজিক বোঝে
মন বুঝবে কি করে?
তবে, হৃদয়ে?
সেখানে তো অন্ধ অলিগলি
ধুকপুক রক্ত সঞ্চালন
লাল লাল ক্ষরণ;
আরে, প্রেম মানেই তো ক্ষরণ।
লজিক বলে হলো না,
দেহের ভেতর অনুভূতি নামক
অণু পরমাণুর সঞ্চালন
ছোঁয়াছুঁয়িতে ইলেক্ট্রিসিটি প্রবাহ
শরীর গরম
কামে উল্লাস, ভালোবাসার প্রকাশ;
আরে, আরে তাই তো?
কে বলে প্রেম মনের ভেতর!
মনেতে প্রেম দেহতে প্রকাশ
ভালোবাসার অনুভূতি
আদতে সবটাই শরীর নির্ভর।

চোখের দেখা, ভালোলাগা
স্পর্শে ছোঁয়া, কাছে আসা
উত্তপ্ত দেহ উত্তেজনা চরম
কামে ঠাণ্ডা অথবা মেজাজ গরম
ভালোবাসার আঠা ধরে রাখে
অথবা প্রেম গলে দুজন দুদিকে।


মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই, ২০১৪

ভালোবাসার গল্প


ভালোবাসার গল্প
- যাযাবর জীবন

সারা দিনমান পলক না ফেলে
চোখে চোখ তাকিয়ে থাকার খেলা
মাঝে মাঝে চুমুর বিরতি
তোর আর আমার দুপুরটা
নিস্তব্ধ সুনসান

পেটে টান, রেস্তোরাঁর আধো অন্ধকার
লাউয়ের শাকে কুচো চিংড়ি
অনভ্যস্ত দুজোড়া হাত এখানে ওখানে
অস্থির ছোঁয়াছুঁয়ি
অযথাই গ্লাসে চামচ বাড়ি, মিঠে টুং টাং

বৃষ্টি বিকেল তো কে পায় আর
ছপ ছপ পানি এধার ওধার
রিক্সার হুড বড্ড আপন
আহ! পর্দাটা এত ছোট কেন?
অধরে ওষ্ঠ পাগল যেন

তুই
আমি
ভালোবাসা,
দুপুর
রাত্রি
প্রেমেতে ঠাসা,
খেয়াল করিনি দুজনের কেও
ভুলের কলিং-বেলগুলো বাজছিল কোথা;
কি পাগলামিটাই না সেদিন ছিল!
খুব হঠাতই যেন সব হারিয়ে গেল।




অধরা


অধরা
- যাযাবর জীবন

তোকে ফিরিয়ে দেবার সময় মনে মনে বলেছিলাম
ভালোবাসি অনেক;
জবাবে তাকিয়ে ছিল আমার পানে তোর চোখের জল
নীরবে বয়ে গিয়েছিল সেদিন অশ্রু হয়ে,
আজো প্লাবন হয়ে ভাসায় আমায়
প্রতি পূর্ণিমা রাতে;
খিলখিল হাসিতে চাঁদ ওঠে
রিনঝিন হাসে বক্র চোখে
দেখতে দেখতে পূর্ণিমা হারিয়ে যায়
অমাবস্যার বাঁকে
চাঁদনি ধরা হলো না আজো আমার
চাঁদের রাতে।


সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০১৪

দীর্ঘশ্বাস



দীর্ঘশ্বাস
- যাযাবর জীবন

বড্ড গরম চারিধার
থমকে থাকে বাতাস
লু হাওয়ার গোঙ্গানি
ঊর্ধ্বমুখী তপ্ত হাওয়া
মেঘেরা ছুটে আসে শীতল করবে বলে;
প্রেম জমে আকাশে মেঘ হয়ে
তপ্ত বাতাস, ঠান্ডা মেঘ
জড়িয়ে ধরে দুজন দুজনকে
আপন করে
মাতামাতি প্রেমের শীৎকার
আকাশে বজ্রপাত
বারি হয়ে নেমে আসে গতর ঠান্ডা হলে;

মেঘের ওপরে চাঁদ খিলখিল হাসে
তার ওপরে তারারা মিটিমিটি দেখে
তারও অনেক অনেক ওপরে ঘন অন্ধকারে আমি থাকি বসে
মাটির ঘ্রাণে কবিতা কথা বলে;

সকলে সকলের তরে
তবুও কেও কাওকে পায় না ছুঁতে
না মেঘ
না চাঁদ
না তারা
না আমি তোকে
কবিতার দীর্ঘশ্বাস একা একা কাগজে কলম ঘষে।



ঠিকানা



ঠিকানা
- যাযাবর জীবন

সময় পেরিয়ে গেলেই ছুটির ঘণ্টা
সময় ফুরোতে চায় না,
পথ পেরিয়ে এলেই তোর দেখা
পথ শেষ হয় না,
জীবন পেরিয়ে এলেই মাটির ঠিকানা
দমে দমে জীবন-ঘড়ি দম দেওয়া;

জানা আছে -
শেষ ঘড়িটির কথা
শেষ পথের দিশা
শেষ বাড়িটি কোথা
কেও ভাবতে চাই না।

সেখানে আমি একাই যাব
কাওকে নেব না।




রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৪

প্রেমের হাট


প্রেমের হাট
- যাযাবর জীবন

প্রেমের হাট বসে নিত্য এখানে
ডিজিটাল যুগে ভার্চুয়াল দোকানে
কেজি দরে ভালোবাসা বিকোয়
দিন রাত্রিতে এখানে;
কেও কেনে খুব অল্প দামে
কেও ন্যায্য মূল্যের অধিক দামে,
মূল্য নির্ধারণ করে কে?
ভার্চুয়ালে ভালোবাসা বেঁচে যে;
কেও বেঁচে মুখের কথায়
কেও চোখের ভাষায়
কেও বেঁচে ছলায়
কেও পারদর্শী কলায়
কেও বেঁচে ঠকে
কেও কিনে ঠেকে
সবটাই লোকসান এই কেনাবেচার হাটে
ক্রেতা বিক্রেতা দুজনাই জানে
খুব ভালো করে
তবু হাটে এসে প্রেম কেনে
অল্প বা বেশি দামে
কেজি দরে
ভালোবাসার ভুত মাথাচাড়া দিলে;
কেনাবেচার ভার্চুয়াল সম্পর্ক - প্রেমে? না কামে?
উত্তরটা সবাই জানে,
তবুও মনকে চোখ ঠারে মনের আড়ালে।



শনিবার, ১২ জুলাই, ২০১৪

উঠোন



উঠোন
- যাযাবর জীবন

একটা উঠোন
খোলা,
শালিকেরা ধান খোঁটে
এখান ওখান থেকে উড়ে এসে;
কিছু জুতো পা,
হিল ছাড়া
হিল পড়া
মাড়িয়ে যায়
যত্রতত্র উঠোনের বুকে;
কিছু নূপুর পা,
আলতো পরশ
হেঁটে পারি দেয়
অথবা নৃত্যের ঝমঝম
দৌড়ে চলে যায়;
কিছু পদচিহ্ন উঠোনের বুকে
যায় রয়ে
উঠোন চুপ পড়ে রয়
একা ভয়ে
যদি পাছে লোকে কিছু বলে
রক্তাক্ত হলে;
দু চারটি নূপুর পড়ে থাকে
ছড়িয়ে ছিটিয়ে
এখানে ওখানে
এলোমেলো,
উঠোনের বুক খুব মাঝে মাঝে
কখনো উদাস
কখনো এলোমেলো;
তারপর নির্লিপ্ত।




চাঁদনির অপেক্ষা



চাঁদনির অপেক্ষা
- যাযাবর জীবন

অন্ধকারের ডানা ভেঙে ধেয়ে আসে আলোর মিছিল
নৃত্যের তালে তালে,
তাঁরা জ্বলে
জোনাক জ্বলে
জ্বলে ফসফরাস জোয়ার জলে
রাত্রি জ্বলে যায় পূর্ণিমার অথৈ ঢলে।

চকচকে সোনা রোদ রাতের আকাশটা জুড়ে
ঝকঝকে কাসার থালা আকাশে সেজে আছে আলোক জ্বেলে
বাইরে আগুন বৃষ্টি হচ্ছে আজ রাতে
জ্যোৎস্নাগুলো কুঁড়িয়ে এনে বেঁধে দেব তোর আঁচলেতে;
আজ পূর্ণিমা
চাঁদনির অপেক্ষায় বসে আছি,
ভালোবাসার বন্যায় আমায় ভাসিয়ে নিতে
এখুনি এলো বলে।

স্বপ্নগুলো স্বপ্নই রয়ে যায়
ভালোবাসা জ্বলে যায় প্রতি পূর্ণিমায়
তোর অপেক্ষায়।






শুক্রবার, ১১ জুলাই, ২০১৪

অধরা ভালোবাসা



অধরা ভালোবাসা

- যাযাবর জীবন

চোখের ভাষা ভিজে যাওয়ার পর
টুপ করে গড়িয়ে পড়লো কিছু মুক্তোদানা
মন পেতে কিছু নিলাম
বাকিটুকু হারালাম;

যা ঝরার তা তো ঝরে যাবেই
তবুও কোথায় জানি আটকে থাকে
দলা পাকানো কিছু ব্যথা
অব্যক্ত রয়ে যায় কিছু কথা;

ক্ষরণ না হলে ভালোবাসার সার্থকতা কোথায়?

বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০১৪

জীবন বই



জীবন বই
- যাযাবর জীবন

এক একটি সম্পর্ক
জীবন বইয়ের এক একটি পাতা
এক একটি পাতা উল্টাই
এক একটি জীবন পড়ে যাই;
আমি হাজার পাতার উপন্যাসের কথা বলছি না
যাতে একটি মাত্র জীবন কাহিনী লেখা
আমি হাজার জীবন উল্টে যাচ্ছি
বইয়ের একটি একটি পাতাতে গাঁথা;
কেও হাসে, কেও হাসায়
কেও কাঁদে, কেও কাঁদায়
কেও ভালোবাসে, কেও কাছে আসে
কেও ঘৃণাভরে দূরে ঠেলে
কেও অভিমানী
কেও অতি-জ্ঞানী
কেও স্মৃতিতে রয়ে যায়
কেও পাতা উল্টানোর আগেই হারায়
প্রতিদিন জীবন বইয়ে একটি নতুন পাতা যোগ হয়
নতুন নতুন সম্পর্ক জীবনের সঞ্চয়;
সম্পর্ক গড়ে
সম্পর্ক ভাঙ্গে
ভাঙ্গা গড়ার নিত্য খেলায় জীবন এগিয়ে চলে
সমাপ্তি অন্ধকার ঘরে মাটির তলে।



গাছ


গাছ
- যাযাবর জীবন

উড়ে আসা পাখি বসে গাছের ডালে
কিছু পাখি কথা বলে
কিছু গান গায় আপন মনে
কাঠঠোকরা ঠুকরে তুলে নেয় ছালবাকল স্বভাব গুণে
গাছ শুনে যায়
ক্ষতবিক্ষত হয়
সয়ে যায়
তবু চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে ঠায়
ক্রমাগত ঠোকরে ক্ষতবিক্ষত হয়
একসময় মরে যায়
পাখি উড়ে আসে
পাখি উড়ে যায়
কি আসে যায় তার গাছের বেদনায়!

নদীতে জোয়ার ভাঁটা
পানি আসে
পানি যায়
স্রোতে পানি বাড়ি খায়
গাছের গায়
শেকড় বেরিয়ে পড়ে ঢেউয়ের আঘাতে
গাছ চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে
সয়ে যায়
ক্রমাগত ঢেউয়ের আঘাতে শেকড় আলগা হয়ে আসে
একসময় পড়ে যায়
ঢেউ আসে
ঢেউ যায়
কি আসে যায় তার গাছের থাকা আর না থাকায়!








মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০১৪

ফর্মালিন সম্পর্ক



ফর্মালিন সম্পর্ক
- যাযাবর জীবন

খাবারে এখন বড্ড ভেজাল
ভেজাল চারিদিকে
ভেজালে ভেজালে মিশে
ভেজাল চলে এসেছে মানবিক সম্পর্কে;
বাবা মার সাথে দূরত্ব টাকায়
শ্বশুর শাশুড়ির বড় গুন গায়
ভাই বোনের ভেজাল যখন সম্পত্তি
ঘরে ঘরে এখন এটাই মনে হয় রীতি
আজকালকার সন্তান
বাবা মা জায়নামাজে তারা ধরে গান
স্বামী বিছানায় পড়ে ঘুমায়
স্ত্রী মোবাইলে ফেসবুক যন্ত্রণায়;
ডিজিটাল যুগে নিত্যই সম্পর্ক ভাঙ্গে
তাতে কে কি মনে করে?
আবার ভার্চুয়ালে প্রেমের আঠায়
খুব তাড়াতাড়ি সম্পর্ক গড়ে
সবাই এখন ডিজিটাল হয়ে চলে
ডিজিটালি প্রেম হয়
জড়ায় ডিজিটাল বাঁধনে
ফর্মালিন মিশ্রিত ডিজিটাল সম্পর্কের জালে।

ফর্মালিন ছাড়া এখন কোথায় আছে আর আম
আকাশ ছোঁয়া তো হতেই হবে আমসত্ত্বের দাম
কে পাবে টুকরো টুকরো ভাগে
কে খাবে স্বার্থের রুটি কার আগে?
কাঁঠালের আমসত্ত্ব চিবোয় সবাই
মনে মনে
নিত্য নয়া প্রেমে
অষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ডিজিটাল সম্পর্কের জালে
মানবিক সম্পর্কে কোথায় আছে এখন আর কাঁঠালের আঠা
ফেবিকল দিয়েই কাজ চলে।


সোমবার, ৭ জুলাই, ২০১৪

চাঁদনির অপেক্ষায়


চাঁদনির অপেক্ষায়
- যাযাবর জীবন

আমি বলি নি তোকে
দাঁড়াব সামনে এসে কখনো তোর
আমি বলেছিলেম তোকে
অনুভবে রইবি তুই শুধুই মোর;
আমি করিনি তোর কাছে কোন ওয়াদা
ভালোবাসব কি বাসব না
তবু পুড়ছি যুগ যুগ ধরে
নিজেতে নিজে
তোর অনলে;
চাঁদ ওঠে
চাঁদ ডুবে যায়
আমি চাঁদনির অপেক্ষায়;

প্রতীক্ষার সাথে হলো তো অনেক দীর্ঘ সহবাস
তুই কোথায়?

রবিবার, ৬ জুলাই, ২০১৪

চাঁদনির খোঁজ



চাঁদনির খোঁজ
- যাযাবর জীবন

আমার আকাশে সূর্য অস্ত
তোর আকাশে সূর্যোদয়
অন্ধকার আমার জীবনে
তোর জীবন আলো হয়।

আমার এখানে রাত্রি ঘনায়
আমার আকাশে চন্দ্রোদয়
তোর জীবনে মধ্যাহ্ন
আলোকিত আলোময়।

চাঁদের উদয়ে চাঁদনি খুঁজি
আমার আকাশে জ্যোৎস্না কই
তোর আকাশে মধ্যাহ্ন যে
চাঁদনি খুঁজে পাব কই?


শনিবার, ৫ জুলাই, ২০১৪

আয়নাকন্যা


আয়নাকন্যা
- যাযাবর জীবন

প্রতিবিম্ব আয়নাতে
মনের প্রতিবিম্ব অন্য এক মনেতে
ছায়া-মানবের কথা শুনেছি
আয়নামানব প্রতিবিম্বে দেখেছি
আয়নাকন্যা তাকে হতেই হবে এমন দিব্যি কে দিয়েছিল?
এখন তো ভয় লাগে উঁকি দিতে মনের ঘরে
যদি অন্ধকারগুলো তার চোখে পড়ে!


শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০১৪

প্রেম ও বন্ধুত্ব



প্রেম ও বন্ধুত্ব
- যাযাবর জীবন

প্রেম ও বন্ধুত্বের মাঝে ফারাক বিস্তর
ফারাক বন্ধু ও প্রেমিকের মাঝে
তাদের অনুভূতি আর অনুভবে
কজন বোঝে?
বন্ধু, বন্ধুকে চেনে
মুখে কিছু বলার প্রয়োজন হয় না তাকে
বন্ধুর বিপদ আপদ
সুখ দুঃখ
হাসি কান্না
বন্ধু বুঝে নেয় অনুভবে;
অন্যজন কথায় কথায় মুখ ঘোরায় অভিমানে
বন্ধুত্ব ও প্রেমের মাঝে ফারাক বোঝে কজনে!!!

মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০১৪

বৃক্ষ


বৃক্ষ
- যাযাবর জীবন

একটা দুটো পাখি
আকাশে ওড়ে
ডানা ঝাপটায়
ক্লান্ত পাখি উড়ে এসে বসে গাছের গায়
একা
কিংবা জোড়ায়;
কিছু সময় পার করে
ছায়ার তলে
বিশ্রামের তরে
একা
কিংবা জোড়ায়;
কিছু পাখি ঠোকর মারে
গাছের বাকলে
কিছু গান ধরে
কিছু গল্প করে
কিছু প্রেম করে
তারপর উড়ে যায়
যে যার ঘরে
একা
কিংবা জোড়ায়।

পাখিগুলো খুব অল্প কিছু সময় কাটায়
বসে গাছের গায়
খুব একান্তে নিজের মনে
তারপর আবার উড়ে চলে
যে যার ঘরে
তখন হয়তো গাছের মন উদাস হয়
হয়তো অল্প
কিংবা কিছু বেশি সময় ধরে উদাস রয়
আর নয়তো দাগ পড়ে যায়
গভীর হয়ে গাছের মনে
কিংবা ঠোকরে বাকলের গায়
পাখির তাতে কি আসে যায়?
পাখি উড়ে যায়
নিজ ডেরায়
গাছ, গাছের জায়গায়
একঠায় দাঁড়িয়ে
পাখির ফিরে আসার অপেক্ষায়।



উদাস ভাবনা


উদাস ভাবনা
- যাযাবর জীবন

মন কি তোর উদাস নাকি রে আজ?
বাইরে কি অন্ধকার রাত
নাকি মন খারাপের লিলুয়া বাতাস?
বইছে
নাকি থমকে আছে,
তবে কি ঝড়ের পূর্বাভাষ?
মেঘ হয়ে ঝরবে
নাকি অশ্রু হয়ে নামবে
বিচিত্র নারী মনের ভাবনার
পায় কে আভাষ?

আমি বসে আছি
টুপ করে ঝরে পড়া মুক্তো-বিন্দুগুলো
নেব আঁজলা পেতে
মালা গেঁথে পড়াতে তোরই গলেতে
আনন্দ নহর দেখার বড্ড সাধ
তোর উদাস চোখেতে
আজকের রাতে।