পার্থক্য কোথায়?
- আহসানুল হক
খাদ্য জীবের প্রথম চাহিদা,
এক এক জীবের খাদ্যাভ্যাস একেক রকম
কেউ তৃণভোজী কেউ মাংসাশী
একমাত্র মানুষেরই সবকিছু চলে
- কাঁচা বা রান্না, হারাম ও হালাল, পেটে হজম হলে;
খাদ্যের প্রকারভেদ মানুষের মাঝেই সবচেয়ে বেশি
আদতে প্রকারভেদ মানুষেরই মাঝে,
প্রকারভেদ স্থানানুযায়ী
- পাহাড় অঞ্চলের মানুষ আর নদীর পাশের মানুষ
- মরুভূমির মানুষ আর বরফের দেশের মানুষ;
প্রকারভেদ খাদ্যের যোগানের সাথে
খাদ্যের যোগান আর্থিক সংগতির সাথে
বদলে যায় খাদ্য, খাদ্যাভ্যাসে
- যদিও ধনী গরীব সবার পেটেই ক্ষুধা নাচে;
ধর্মের প্রকারভেদ অনুযায়ীও খাদ্যের কিছু বিধিনিষেধ থাকে
বিধিনিষেধ থাকে বয়সের ব্যবধানে
বিধিনিষেধ অসুখ বিসুখ আর ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনে
বেশীরভাগ মানুষই বিধিনিষেধ মেনে খাদ্য গ্রহণের চেষ্টায় থাকে
অল্প কিছু ব্যতিক্রম তো সব জায়গাতেই আছে;
কাঁচা বা রান্না
আমিষ বা নিরামিষ
মাছ বা মাংস
শক্ত বা নরম
হারাম বা হালাল
খাদ্যের যতই প্রকারভেদ থাকুক যতই
থাকুক যত অসামঞ্জস্য প্রাপ্তি আর চাহিদার মাঝে
- মানুষ মাত্রই খাদ্য গ্রহণ করে;
খাদ্য গ্রহণ মানেই বর্জ্য ত্যাগ
- এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম,
আচ্ছা! কোন ভাবে কি বোঝা যায়, কোনটা কোন শ্রেণীর মানুষের বর্জ্য?
- ধনীর না গরীবের? সাদার না কালোর?
- হিন্দুর না মুসলমানের, খৃষ্টান না বৌদ্ধের?
- পাহাড়ি না নদী পাড়ের? মরুভূমির না মেরু অঞ্চলের?
এই যে আমরা মানুষের মাঝে শ্রেণিভেদ করি!
আদতে পার্থক্য কোথায়?
- মানুষে মানুষে!
মৃত্যু অমোঘ বিধান,
প্রতিটা জীবিতেরই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হয়
ধুঁকে ধুঁকে কিংবা হঠাৎ করে
নির্দিষ্ট একটা বয়সের পরে কিংবা যে কোন সময় - হঠাৎ করে
জন্মেই কেউ মারা যায়, কেউ শতায়ু পায়;
অথচ মানুষই মানুষে মানুষে সবচেয়ে বেশি প্রকারভেদ করে,
শ্রেণিতে শ্রেণিতে আর গোত্রে গোত্রে ভাগাভাগি করতে করতে মুখে বুলি ঝাড়ে
- মানুষ মানুষের তরে;
মানুষে মানুষে প্রকারভেদ গায়ের রঙ অনুযায়ী
- সাদা, কালো, হলদেটে কিংবা বাদামী বলে
প্রকারভেদ আর্থিক অবস্থান অনুযায়ী
- ধনী, গরীব কিংবা মধ্যবিত্ত হলে
প্রকারভেদ স্থান অনুযায়ী
- পাহাড়ি মানুষ, মরুভূমির মানুষ কিংবা বনাঞ্চলের
প্রকারভেদ ধর্মানুযায়ী
- হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃস্টান বিভাজনে;
এক এক জায়গার মানুষ এক এক রকম
এক এক মানুষের আকার আকৃতি এক এক রকম
মানুষের ধর্ম গোত্র বর্ণ এক এক রকম
মানুষে মানুষে বিভাজন! মানুষেই করে
- যদিও মরতে হয় সবাইকেই, কেউ থাকে না চিরতরে;
মানুষ মরে যত্রতত্র, হরেদরে
সুস্থ অবস্থায় ফট করে কিংবা রোগে শোকে ভুগে ভুগে
স্বাভাবিক নিয়মে কিংবা এক্সিডেন্টে,
যতক্ষণ শ্বাস চলে ততক্ষণই তাকে মানুষ বলে
তারপর মানুষ নামক জীবটি, মানুষ নাম হারিয়ে খাটিয়ায় পড়া থাকে
- শব হয়ে;
ধর্মানুযায়ী এক এক শবের সৎকার এক এক ভাবে
কোন শব পুড়ে যায় আগুনে
কোন শবের স্থান হয় মাটির তলে,
মাটির তৈরি মানুষ ছাই হয় কিংবা মাটি হয়, মরে গেলে;
এই যে পুড়ে ছাই হলো কিংবা মাটি হলো!
সেখান থেকে বুঝতে পারবে শবটা কোন শ্রেণীর মানুষ ছিলো?
- ধনী না গরীব? সাদা না কালো?
- পাহাড়ি না নদী পাড়ের? মরুভূমির না মেরু অঞ্চলের?
- হিন্দু না মুসলমান? বৌদ্ধ না খৃস্টান?
এই যে আমরা মানুষের মাঝে শ্রেণিভেদ করি!
আদতে পার্থক্য কোথায়?
- মানুষে মানুষে!
২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২
#কবিতা
পার্থক্য কোথায়?
- আহসানুল হক
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন