কবিতা লেখার যন্ত্রণা
বড্ড যন্ত্রণার মধ্যে বসবাস
লেখা নিয়ে, কবিতা নিয়ে
আমার ভাবনাগুলোকে নিয়ে
সহজ ভাবে মানুষ এখন আর কিছু নিতে পারে না
কিংবা নিতে চায় না
বাঁকা চোখে তাকিয়ে থাকে যেন সব সময়
আর তীরের ফলার মত সূচালো কথার আঘাতে করে ক্ষতবিক্ষত
যেন হরণ করে নিতে চায় আমার কবিতার ভাবনা গুলোকে
আমার লেখার চিন্তা চেতনাকে
তাঁদের নিজের মতন করে
অথচ মানুষ বুঝতে চায় না কেন আমি লিখে যাই শুধু আমার মনের খেয়ালে
যত সব অজড় যাতনা থেকে উগরে নিয়ে আসি লেখার মাঝে
আমি কাওকেই খুশি করতে পারি না
সুখী করার ক্ষমতা হারিয়েছি সেই কবে থেকে
যেদিন নীল কালির কলম ধরেছিলেম হাতে
এঁকে দিতে মনের আলপনা কিছু সাদা খাতার পাতায়
কে বুঝতে চায়?
মনের মাঝে হাবিজাবি কিছু কথা কিলবিল করে
এখানে লিখি ওখানে লিখি, লিখে যাই কিছু ব্লগে
সুহৃদ কিছু অবুঝ আছে যারা পড়ে যায় অনুরাগে
মনে হয় যেন তারা কবিতা বোঝে না যে
তাই করে যায় প্রশংসা কিছু, হালকা সমালোচনার সাথে।
আরে বেশির ভাগ বোদ্ধা পাঠক আছে যারা গালি দিয়ে যায়
এখানে ওখানে কিংবা ব্লগে
আমি বলে “হলুদ কলম দিয়া কাগজে লেদাইতাছি”
কেও কেও গালাগালি করে
কেও উষ্টা মারতে চায়
আর কেও কয় কোন হালায় কইছিল তরে লেদাইতে
আইয়া ফেসবুকের ওয়ালে আর ব্লগে, গু এর গন্ধ বাইর হয় বলে
আমার লেখা থাইক্কা।
আমি মুখ বুজে সয়ে যাই সবই
ক্ষরণ হয় হৃদয়ে, দেখার কেও নেই;
বোঝার কেও নেই
বুঝে নিতে হয় আমারটা আমাকেই
মাথা পেতে নিয়ে।
আমার কবিতার ভাষায় প্রেম চলে আসে বেশিরভাগ সময়ে
কি করব বুঝতে পারি না, প্রেম যে আছে মোর মনে
মনে যা থাকে তাইতো ভেসে ওঠে কাগজে কলমে।
ইচ্ছে মত গালি খাই বোদ্ধা সব নতুন পাঠকের কাছে
পিনপিনানি প্রেমের বন্দনা গাঁথা কবিতার ভাষায় লিখে
বড্ড দুঃখ জাগে মনে, হৃদয়ের ওপর রাগ হয়ে যায় অভিমানে
কেন যে জীবনে এসেছিল প্রেম
মাশুল আজ গুনে যাই ব্লগে গালি খেয়ে
কিংবা এখানে ওখানে যা লিখে যাই কাগজে কলমে।
রাগ করে মাঝে মাঝে কলম থেমে যায়
ইচ্ছে করে নতুন কিছু লেখার
আমি মাথা চুলকাই আর ভাবি
কি লেখা যায়, প্রেমের প্যানপ্যানানি বাদ দিয়ে?
ভেবে ভেবে পড়ে যাই অকুল আঁধারে
মাথার মধ্যে শব্দজট পাকিয়ে ওঠে কিছু না লিখতে হলে
বুক জ্বালা করে, এসিডিটি ওঠে চরমে
বমি বমি ভাব হয়
আবার টেবিলে এসে বসি একসময়
সাদা কাগজে এবার কালো কালিতে বমি করব বলে
নতুন করে কিছু ভাবনা এসেছে মাথায়
সমাজ সংস্কার নিয়ে।
লিখি সমাজের কিছু কথা, কিছু অসংগতি
যেগুলো আমার চোখে পড়ে।
আবার বোকার মত ছেড়ে দেই বিভিন্ন ফোরামে আর ব্লগে
এবার যেন গালির পরিমাণ বেড়ে যায়
পারলে যেন ইথারের মাঝে আমার পিণ্ডি চটকায়
আমার সকল বোদ্ধা পাঠকদল মিলে
সমাজ সংস্কার হতে চেয়েছি বলে ।
ধীরে ধীরে পরিচয় হয় নতুন ফোরামের সাথে
নতুন পাঠক কিছু আমার লেখা পড়ে
কিছু উপদেশ বাণী শুনি কান পেতে
কিছু আঁতেল সুহৃদ আছে ভুল করে চলে আসে আমার ব্লগে
পড়ে আমার কিছু লেখা
উপদেশ দেয় এযুগের নব্য কবিতার ভাষা শেখার তরে
আমন্ত্রণ করে নতুন জন্মের কবিদের মাঝে
উপদেশ কিছু নতুন স্টাইলে, নতুন ভাষা প্রয়োগে।
আমি সুবোধ বালকের মত বিভিন্ন ব্লগ ঘুরে বেড়াই
পড়ে যাই নতুন ধারার লেখকদের কবিতা
শিক্ষিত হবার বাসনা নিয়ে
নতুন কিছু শিখিবার তরে,
নতুনত্ব কিছু যদি নিয়ে আসতে পারি
আমার কবিতার পরে।
এখনকার কবিতা পড়ি আর কেমন জানি লাগে মনে
সেক্সের বাড়াবাড়ি কবিতার প্রতিটা লাইনে লাইনে
নতুন স্টাইল ধরে রতি-লীলার কথা পড়ি
কামের নতুন নতুন রূপ দেখি নব্য কবিতার বেশে
নিজেকে বড্ড ছোট মনে হয়, মূর্খ হয়ে আমি
যেন বাস করছিলাম এতদিন প্রাচীন সভ্যতার কোন দেশে।
হায় এই যদি নব্যধারার কবিতা হয় তবে এতদিন আমি কি লিখে গিয়েছি, হাবিজাবি সব প্রেমের কাঁদুনি; গাধা মানব হয়ে বলতে চেয়েছি সমাজের সংস্কারের কথা কবিতার ভাষায়। হায় লজ্জায় মাথা কাটা যায়, নতুন নতুন শেখা নতুন ধারার বুলি আমার মাথার ভেতর কিলবিলায়, নতুন সব শব্দজটের বেদনায় কাতর নতুন ধারার লেখার প্রসব বেদনায় মন অস্থির হয়ে যায়, এসিডিটির ধাক্কায় এন্টাসিডের পুরো বোতল গলায় ঢেলে কাগজ কলম হাতে করে লুঙ্গি কাছা মেরে বসি। লিখব নতুন কবিতা, নতুন ধারার বেশে কামের চেয়ে বড় বিষয় দুনিয়াতে আর কি আছে?
সাবজেক্ট পেয়ে গেছি মাথার ভেতরে, আমি মনে মনে শব্দ-জাল বুনতে থাকি নতুন করে কবিতা লিখব বলে; যেথায় থাকবে কামের রগরগে বর্ণনা কবিতার প্রতিটি পংত্তিতে পংত্তিতে। নারী পুরুষের বাসনার কথা তাঁদের গোপন সব অঙ্গের বর্ণনা দিতে হবে কবিতার ছলে। একটু এদিক ওদিক চেয়ে দেখি আজকের যুগে বেশিরভাগ নারীপুরুষ জড়িয়ে আছে একে অপরের সাথে পরকীয়ার দলে। ধুর ছাই, এগুলোর কথা কি লেখা যায় কবিতার ভাষায়? কি বলবে সব লোকে?
নারী ও পুরুষ কাকে নিয়ে লিখব? - আচ্ছা শুরু করি না হয় প্রথম কবিতা নারীকে নিয়ে। মাথার মধ্যে কিছু শব্দজট পাকায় আমার কলম কাগজে ল্যাদায়। নারী দেহের বর্ণনা দিয়ে লিখে গেলাম কিছু সত্য কথা কবিতার ভাষায়। এ যে আরেক ভয়ানক বিপদ ডেকে আনলাম নিজেকে নিজে। ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার ওপর নারীবাদীদের দল একজোট পাকিয়ে। নারীরা হলো সোচ্চার তাঁদের গোপন কথা লিখেছি বলে, মারতে এলো কিছু যেন পায়ের স্যান্ডেল খুলে। মা বলে ডেকে ক্ষমা চেয়ে আমি পালালাম গর্তের ভেতরে ভয়ে ভয়ে। শুধু একজনকে বলেছিলেম আপা স্যান্ডেল খুলে আমার পিছে (পাছা কই নাই ডরে) মারলে খামখাই স্যান্ডেলটা যাবে ছিঁড়ে, আপনার কোমল পা কষ্ট পাবে পিচ-ঢালা পথের গরমে। যাক বাবা এযাত্রা গেলাম বেঁচে, অনেক গালি খেয়ে।
আমার আগের যায়গায় ফিরে গিয়ে প্রেমের প্যানপ্যানানি শুরু করলাম আবার, দিল উষ্টা আমার আঁতেল কবি বন্ধুর দল আইসা। ভালোই তো লিখেছিলি আগের কবিতাগুলো কামের টাচ দিয়া নারী অঙ্গের গোপন কথা তুইলা ধইরা; আবার কেন শুরু করলি কাঁদুনি গাঁথা? কই যাই আমি, নষ্ট হল যেন আবার আমার মাথা।
এবার লিখলাম পুরুষেরে নিয়ে, যৌবনের খুব স্বাভাবিক দিকগুলোর কথা তুলে ধরলাম কবিতার ছলে। ঝাঁপিয়ে পড়ল এবার কিছু পুরুষের দল ইথারের ভেতর দিয়ে, গালাগালির চরম সীমায় স্থির না থেকে গালি শুরু করলো অশোভন ভাষা ব্যবহারে। একজনের ভাষা ছিল এমন “উষ্টা দিয়া তর দাঁতগুলা ভাইঙ্গা ফালামু বেটা বদ কোনহানকার” । লইজ্জার মাথা খাইয়া কইলাম ভাইজান আপনে উষ্টা দিলে আমি খামু কিন্তুক আমার দাঁতে উষ্টা দিতে হইলে যত উপরে আপনার ঠেং তুলন লাগব তাতে আপনার পেন্টের তলা ফাইট্টা যাওয়ার আশংকা আছে। কথাটা শুইন্না দিল আমারে পুরাপুরি ফেসবুক থাইক্কা ব্লক মাইরা চিরদিনের তরে। আহা বেচারা বড় ভালোমানুষ ছিল পড়তো আমার সব প্রেমের প্যানপ্যানানির কবিতাগুলা আর সুন্দর সুন্দর কমেন্ট মারত। হারাইলাম আমার একখান ফেসবুকের বন্ধুরে চিরতরে, শুধুমাত্র নতুন ধারার কবিতা লেখতে গিয়ে।
অহন আমি বুইজ্ঝা গেছি
আমারে দিয়া কিচ্ছু হইব না
না লেখলাম কবিতা না লেখলাম গল্প-কথা
ময়ূরের পেখম লাগাইতে গেছিলাম আমি কালা কাউয়া
ইথারে উষ্টা খাইয়া হইলাম বেহুশ
স্যান্ডেলের বাড়ি খাইয়া ফিরা আইল হুশ।
অহন সিরিয়াসলি ভাবতাছি আসলে কবিতা কারে কয়?
কবিতা কেমনে লেখে মাইনসে এত সৌন্দর্য কইরা?
পড়তে পড়তে আমার মন যে যায় ভইরা
সেই কবে থাইক্কা স্বপ্ন দেইখা আসতাছি
একটা কবিতা লেখমু মনের মতন কইরা।
ইশশ, একটা যদি ইশকুল পাইতাম
অক্ষনে গিয়া ভর্তি হইতাম
কবিতা লেখা শিকতাম
ঢিলা দিয়া ফালাইয়া দিতাম বেদনার নীল কলমডারে
সাদা কমোডের ভিতরে
সাদা কাগজে হলুদ কলমে ল্যাদানি থুইয়া
কালা কলমে কবিতার ছবি আঁকতাম আপনমনে
যেইটা আসলে কবিতা হইত
গানের ভাষায় গুনগুনাইত
আর, শব্দজটের কবল থাইক্কা মুক্তি পাইয়া
আমি মনের আনন্দে ধেই ধেই কইরা নাইচ্চা বেড়াইতাম
ইশশ খালি যদি আমি একখান সুন্দর কবিতা লেখতে পারতাম!
অজড় যাতনারা জ্যোৎস্না হয়ে নেমে আসে অশ্রুধারার মত
মাশুল গোনে স্বপ্ন দেখার
নৃপ নীহারিকার পেখম-তোলা নৃত্তে উড়ে বেড়ায় মন ময়ূরীরা
মেঘের সাথে ভালোবাসার তৃষ্ণার
কাব্য-চোষা সৃষ্টিশীল ভালোবাসার অচিন কোন সমীরণে গা ভাসাই
কলমের কালিতে অরণি ঘষে জ্বেলে যাচ্ছি অর্ঘ্য অনল তাই।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন