বাষ্পীভূত অভিমান
দাঁড়িয়ে আছি আমি দরজার এপাশে মনে শত দ্বিধা নিয়ে
তোমার দরজায় কড়া নাড়ব বলে
একবার হাত ওঠে আবার অভিমানে নেমে যায়
না থাক আজকে নয়, অন্য কোন দিন।
কি জানি তুমি কি দরজার ওপাশে দাঁড়িয়ে আছ
প্রতীক্ষার প্রহর গুনে দরজার কড়া নাড়ার শব্দ শুনবে বলে
তোমার মনেও যে হাজার অভিমানের দেয়াল আজ
মনে মনে কড়া নাড়ার শব্দ কি পাও
নাকি মনের ভেতর এখনো অন্ধ রাগের কানাড়া রাগিণী
বেজে যাচ্ছে তোমার মনে আজো?
দ্বিধা হাজারো মনে আয়নার এপাশে দাঁড়িয়ে আমার
হয়তো আয়নার ওপাশে তুমিও দাঁড়িয়ে প্রতীক্ষায়
মাঝে পুরু পারদের প্রলেপ বাঁধা হয়ে আছে
যৌগিক কণিকার কিংবা মনের বাষ্পের প্রলেপ
কি জানি মনে বড় দ্বিধা, দুজনারই
পারদটুকু ঘসে তুলে ফেলা যাবে কি যাবে না
কিংবা বাষ্পের পারদ উঠে গেলে আয়নার ওপাশে
দেখতে পাব কি? দুজন দুজনাকে?
মুঠোফোনটা ইদানীং অনেক যন্ত্রণায় থাকে মনে মনে
অপেক্ষার প্রহর কাটে কখন নাম্বার টেপা হবে তার বাটনে
দ্বিধারা অভিমানে মুঠোফোনটি অলস পড়ে থাকে আমার হাতে
হয়তো ওদিকে তোমার হাতেও
তোমার মুঠোফোনটিরও একই অবস্থা তোমার আমার
দ্বিধারা অভিমানে
দুজনেই হয়তো সময় কাটাই মুঠোফোনের স্ক্রিনের দিকে চেয়ে
এই বুঝি তার নাম্বারটা ভেসে ওঠে
হায় মুঠোফোন চুপ করে থাকে
প্রতীক্ষা শেষের মধুর ঘণ্টাধ্বনি বাজে না কারো ফোনে।
অভিমানের বাষ্প ধোঁয়া হয়ে উড়ে যাবে আকাশের ঠিকানায়
একদিন হয়তো আবার দেখা হবে দুজনে দুজনায়
হয়তো আজ, হয়তো কাল, হয়তো সেদিন
আরো অনেক দূরে পড়ে আছে, বাষ্পীভূত হওয়ার অপেক্ষায়;
একদিন দেখিয়েছিলেম তোমায় চোখে চোখ রেখে
অনেক দূরে কোন এক সুদূরে আকাশ মাটিতে বাহু-লগ্না হয়
দিনের শেষে সন্ধ্যে নামে
আলোর সাথে আঁধার মিশে একে অপরের হয়ে।
তেমনি ভাবে তোমার আমার তপ্ত অভিমানের সমাপ্তি হবে
আজ না হলেও কোন এক সুদূরের ভবিষ্যৎ সময়ে
বাহু-লগ্না হয়ে পড়ে থাকবে তুমি আমার বুকের সাথে মিশে
ঠিক আগের মতন করে, ভালোবেসে আর ভালোবেসে;
অভিমানের আকাশের প্রগাঢ় মেঘরাশি
ভালোবাসার রুদ্র তেজদীপ্ততায় পরাভূত হবে একদিন
মিটে যাবে রাগ অনুরাগের সব লেনদেন সেদিন
বেজে উঠবে ধ্রুপদী সাইরেন চারিদিক থেকে
আনন্দ লাহরী সুর তুলবে আকাশে বাতাসে
তোমার আমার মিলনের কালে
কালান্তরের শুভ প্রত্যাশা আমার
খুব কাছের অনাগত ভবিষ্যৎ কালে।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন