বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২২

রুটিন

জীবনের শুরুতে মায়ের বুকে, বাবার কোলে  

ঐ সময় বাঁধাধরা কোন রুটিন থাকে না  

রুটিন থাকে না খাওয়ার, ঘুমানোর, কান্না-হাসির 

অন্যান্য কোনকিছু বোঝার মত বুদ্ধিই থাকে না;


মানব শিশু বড় হতে হতে রুটিনে বাঁধা পড়ে

রুটিন করে খাওয়া, ঘুম, পড়ালেখা, খেলাধুলা

রুটিন না মানলে বাবা-মায়ের শাসন

রুটিনের ছকে অভ্যস্ত হয়ে যায় জীবন; 


তারপর যৌবনে কিছু রুটিনের হেরফের

কিছু প্রেম, কিছু দুষ্টুমি, কিছু অবাধ্যতা

নব্বই এর দশক পর্যন্তও এমনই দেখেছি  

আজকালকার ছেলেমেয়েদের আর রুটিন কোথায়?


প্রৌঢ়ত্বে এসে রুটিনে কিছু হেরফের হতে থাকে

খাওয়ায় অনীহা, সন্তানদের নিয়ে টেনশন 

অসুখ-বিসুখ, শারীরিক সমস্যাগুলো শরীরে বাসা বাঁধে

শুরু হয় ঘুমের সমস্যা, বদলে যেতে থাকে ঘুমের রুটিন; 


বার্ধক্যে শরীরটাই বড় সমস্যা, বদলে যায় সকল রুটিন 

বদলে যায় অসুখের ধরণ, স্মৃতিশক্তি লোপ পায়  

রুটিনের সাইকেল কারো ঘুরে যায় তিনশত ষাট ডিগ্রী

সাইকেল বদলে যায় ঘুমের, তখন ঘুমঘুম জাগরণ; 


আজকাল অনেক কিছুই মনে করতে পারি না 

মনে করতে পারি না পুরনো কথা, পুরনো স্মৃতি 

মনে রাখতে পারি না নামাজের রাকাত, খাওয়া, ঘুম

বার্ধক্য কি সময়ের আগেই ঘিরে ধরেছে আমায়? কে জানে? 


একসময় আট ঘণ্টা ঘুমাতাম, আজকাল ঘুমের ঠিক নেই 

ঘুমের সাইকেল বাড়ছেই, কখনো বারো কখনো বা ষোলো 

যেদিন চব্বিশ পুরো হবে সেদিন হয়তো আর চোখ মেলব না  

মৃত্যু আসবেই, ঘুমাতে ঘুমাতে একবারেই ঘুমিয়ে গেলে মন্দ হয় না। 


১৯ এপ্রিল, ২০২২


#কবিতা 

 

রুটিন 

 - আহসানুল হক 


  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন