রবিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৪

অগস্ত্য যাত্রা



অগস্ত্য যাত্রা
- যাযাবর জীবন

পথ সুনির্দিষ্ট
আসা এবং যাওয়ার
ধরিত্রীর বুকে এলোমেলো পায়ে আঁকাবাঁকা পথে হাঁটা
কিছু সময়ের জন্য
তারপর অগস্ত্য যাত্রা অন্যভূবনের পথে
অজানার দেশে;
সবাই জানে
কেও মানে
কেও মনকে অন্ধকারে রাখে,
হঠাৎ চলে যাওয়ার সময় এলে
হতভম্ব চেয়ে থাকে;
যাবার কালে কারো মুখে আল্লাহ্‌ রসুলের নাম আসে
কেও সেই সৌভাগ্য থেকেও বঞ্চিত
দুনিয়াদারি বেছে নিয়েছিল যারা নিজ হাতে;
সুনির্দিষ্ট পথে চলে যায় সবাই
অচেনার দেশে
ডাক এলে
মুহূর্তের ব্যবধানে;

এত বড়াই কিসের রে, হে মূর্খ মানব?

কোন একদিন



কোন একদিন

- যাযাবর জীবন

একদিন
কোন একদিন
ঠিক তোকে দেখার দিন
আমার আমিত্বের মৃত্যু সেদিন
তারপর থেকে তোর মাঝে নতুন আমি;
ভাগ্যিস সেদিন
দেখা হয়েছিল তোর সাথে
তাইতো আজো প্রেম আছে
তুই আছিস আমি আছি
ভালোবাসা আছে;
আবার কোন একদিন
এমনি ভাবে
দেখা হবেই হবে
তোর সাথে;
আমি জানি
ঠিক জানি,
একদিন
আবার কোন একদিন।


বন্ধুত্বের বলিদান



বন্ধুত্বের বলিদান

- যাযাবর জীবন

মনে আছে সেদিনের সেই সোনালী সন্ধ্যা?
এমন তো কথা ছিল না
কথা ছিল সেদিন আড্ডা আর গল্পে
রাতকে ভোরে টেনে নেয়া
কথা ছিল তোর আর আমার দুজনের গল্প
গান গাওয়ার কথা ছিল দুজনে মিলে অল্প
ঝালমুড়ি আর চিপসের ঠোঙ্গায় সময় ওড়ানো
কোকের বোতলে বাঁশির সুর
আরো কত কিছু ছিল সে রাতের স্বপ্ন;
আসলে হয় না
আসলে ছেলে আর মেয়ের বন্ধুত্ব হয় না
শরীরের ছোঁয়া পেলেই শরীর কথা বলে
ঠোঁটের ছোঁয়ায় ঠোঁট
কামনার ধোঁয়ায় অসংলগ্ন বিবেক
তারপর মনে থাকে না কে কার ভেতরে
বন্ধুত্বের ঠাই হয় বিছানার চাদরে;
রমণ ক্লান্তি শেষে হয়তো অনুতাপ কিছু
তারপর দুজনার চলার পথ দুদিকে
মনের মাঝে কিছু দুঃসহ স্মৃতি
হয়তো অনেকদিন ধরে করে পিছু।



হে নারী


হে নারী
- যাযাবর জীবন

নারী তুমি কন্যা
তুমি জায়া
তুমিই জননী;
তোমার স্পর্শে
কান্না গলে হাসি হয়
অন্ধকার আলো দেখে
দুঃখগুলো উড়ে যায় খুশির ডানায়;
নারী তুমি
কন্যা হয়ে মমতাময়ী
জায়া হয়ে জীবন সঙ্গিনী
জননী হয়ে সর্বংসহা
সন্তানের অমঙ্গলে প্রয়োজনে রনাঙ্গীনি;

নারী তুমি প্রেমিকা,
তুমি ছুঁয়ে দিতেই
মেঘ গলে বৃষ্টি ঝরে
কুয়াশায় ভিজে শীত নামে
মন গলে প্রেম নামে
চাঁদের মাঝে জ্যোৎস্না দেখে
কবিতা কথা বলে
জীবন হয়ে ওঠে রঙিন।

নারী তুমি ছলনাময়ী
তোমার জন্যই রাত্রি
তোমার জন্য অন্ধকার
লোনা হয় চোখের জল
মনে বেদনার কোলাহল
সংসারে ভাঙন
অশান্তির জীবন।

হে জননী, মানুষ হয়ে তোমারই কোলে জন্মেছিলাম
হে প্রেমিকা, তুমি ছুঁয়ে দিতেই প্রেমে ভেসেছিলাম
হে জায়া, তুমি জড়িয়ে ধরতেই আমি পুরুষ হলাম
হে কন্যা, তোমার জন্যই সকল মমতা নিয়ে পিতা হলাম;

এত রূপে রূপবতী
এত নাম, সবই তো তোমারই
তবুও কেন মাঝে মাঝে বেশ্যার রূপ ধর, হে নারী?

তুমি হাস
তুমিই কাঁদ
তুমি গড়
তুমিই ভাঙ
ইচ্ছেমত রূপ বদলাও
পুরুষের সংসারে;
হে নারী, তোমারে কে পড়তে পারে?


বুধবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৪

ভালোবাসার রঙ



ভালোবাসার রঙ
- যাযাবর জীবন


সবাই কড়া নাড়ে ভালোবাসার দরজায়
কেও ভালোবাসা নিয়ে
দরজার ওপাশে অপেক্ষায়
কেওবা বেদনা বিলায়;
সবাই হাত বাড়ায় ভালোবাসায়
চাইলেই কি হাত ধরা যায়?
বেদনার কত রঙ মিশে আছে সেথায়।


ভালোবাসার অনুভব



ভালোবাসার অনুভব
- যাযাবর জীবন

সেই কত দিন কত মাস
কত বছর
কত যুগ
তোর সাথে গাঁটছড়া;
কালের গায়েও বটের ঝুরি নেমেছে
তবুও তুই কিন্তু তেমনি, আজো আমার চোখে
ঠিক যেমনটি দেখেছিলাম তোকে প্রথম ষোলোতে;
সময় বয়ে যায়
অনুভবগুলো রয়ে যায়
নির্ভরতা ও ভালোবাসার।

তুই না থাকলে সেই কবেই হারিয়ে যেতাম আমি
সময়ের স্রোতে।

রবিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৪

সুখ আর অসুখ


সুখ আর অসুখ
- যাযাবর জীবন

সুখের কিছু না কিছু অসুখ লেগেই থাকে
কিছু কিছু মানুষের মনে,
তার মধ্যে তুই একজন
বানানো অসুখে পড়ে থাকিস দিবারাত্রি
মনের ঘরের কোণে;
ভালোবাসায় কিছু না কিছু খাঁদ থেকেই যায়
কিছু কিছু মানুষের মনে,
তার মধ্যে আমি একজন
ভালোবাসা, মোহ আর মমতার মাঝে
এক চাঁদ ফারাক আমার প্রেমে।

তুই আমায় ভালোবাসিস
সেটা তোর অসুখ
আমি তোকে স্নেহ করি
সেটা আমার সুখ।

জীবনের দৃষ্টিভঙ্গি এক একজনের এক একরকম
জীবনে অর্জন কারো বেশী কারো বা কম।


শনিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৪

রঙ বদল



রঙ বদল
- যাযাবর জীবন

রাত বদলায় প্রহরের সাথে সাথে
আঁধার বদলায় চাঁদের সাথে সাথে
আমিও বদলে নিয়েছি নিজেকে
তোর সাথে সাথে;
তোর ভালোবাসায় ছিলাম সবুজ
ঘৃণায় হয়েছি বেগুনী
অভিমানে লাল
দুঃখে ধুসর
বেদনায় নীল;
তারপর সময়ের নদীতে অনেক জোয়ার ভাটা
সময় বদলের পালা দেখা হলো অনেক,
রঙ বদলের খেলায় ক্লান্ত হতে হতে
গিরগিটির খোলসটাই ঝেড়ে ফেলে দিয়েছি;
এখন আমি অমাবস্যার মত কালো।



বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর, ২০১৪

মাটির কাণ্ড


মাটির কাণ্ড

- যাযাবর জীবন

পূবাকাশে প্রেমের সূর্য উঠতে না উঠতেই
অভিমানের পারদ মাথার ওপর
পশ্চিমাকাশে বুনো রাগের টর্নেডো জমা হয় খুব সহসাই
দক্ষিণ দিক থেকে ধেয়ে আসা ঘৃণার ঝাপটায়
পশ্চিম মুখ করে
উত্তরদিকে মাথা দিনে অন্ধকার ঘরে ঠাঁই;
এখানে বড্ড আরাম
প্রেম নেই
অভিমান নেই
রাগ নেই
দুঃখ নেই
অনুভূতিগুলোকে অন্যরকম পাই;
শরীরের ওপর বাঁশের ঠেক দেওয়া
ঝুরঝুরে মাটিগুলো ঝরে পরতেই
শরীরটা হয়ে গেলো মাটি
আমি হয়ে গেলাম নাই;

মাটির সৃষ্টি মাটির দেহ
মাটির ওপর সুখ দুঃখ প্রেম বিরহ,
মাটির দেহ অনুভূতিহীন মাটির নীচে
মাটিতে মিশে মাটিতে অবশেষে;

মাটির কারিগর মাটির খেলা দেখে
আকাশের ওপর বসে
মাটির দেহের কর্মকাণ্ড দেখে
মুচকি মুচকি হাসে।


অনুভব


অনুভব
- যাযাবর জীবন

এই তো সেদিন;
যখন আমরা খুব কাছাকাছি ছিলাম
এই ধর আমি তোর বুকের ভেতর, অন্ধকার হয়ে;
তুই আমার মনের ঘরে, আলো জ্বালিয়ে;
ঠিক তখনই হঠাৎ করেই বৃষ্টি নামল অঝোর ধারায়
সেদিনের মাঘের শীতে কুকুর বেড়াল বৃষ্টিতে ভিজে
তুই কাঁপছিলি থরথর শীতে,
আমি তোকে জড়িয়ে ধরতেই তুই মেঘ হয়ে গেলি
মুঠোর ভেতর পড়ে রইলো কিছু ভেজা পেঁজা তুলো
হাত দুটি আমার মুখে বুলিয়ে নিতেই চোখের নদীতে বন্যা;
ঝাপসা চোখ মেলে তাকাতেই চারিদিক অন্ধকার
তুই মিলিয়ে গেলি ভোরের স্বপ্ন হয়ে
রেখে গেলি কিছু ভালোবাসার অনুভব;
অন্ধকারে মানুষ হয়েও তাইতো এখনো জ্যোৎস্না দেখি।



লিলুয়া বাতাস


লিলুয়া বাতাস
- যাযাবর জীবন

প্রেমের বাতাস বয়ে যায়
দিনে আর রাতে
আকাশ আর মাটিতে,
কেও দেখে
কেও অনুভব করে
কারো বাস অন্ধকারে;
কেও গরম বোধ করে
কারো ঠাণ্ডা লাগে
প্রেমের বাতাস বয়ে চলে বসন্ত সমীরণে;
কেও গা জুড়ায় বসন্ত বাতাস মনে করে
কেও শরতের মেঘে ভেসে চলে
কেও গা উদলা রাখে গরম বোধে
শীতের হাওয়ার কাঁপুনিতে
কেও বন্দী রাখে নিজেকে ঘরের কোণে;
প্রেমের বাতাসের তাতে কি এসে যায়?
বইতে বইতে নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে মানবের দিকে তাকায়
তারপর নিজের মত বয়ে যায় নিজের রাস্তায়।

সুখ সুখ কষ্টগুলো লিলুয়া বাতাস
দুঃখ দুঃখ সুখগুলো বাতাসে ভেসে বেড়ায়
সুখ বিলাসী দুঃখ ওড়ায়
দুঃখ বিলাসী দুঃখ কুড়ায়
বাতাস লিলুয়া হোক আর প্রেমের হোক
দুঃখ কাঁদে তার রাস্তায়
সুখ হাসে দাঁড়িয়ে তার যায়গায়;
সুখ আর দুঃখ মিলে করুণার দৃষ্টিতে
মানবের দিকে চায়
সুখী হতে গিয়ে বোকা মানুষগুলো
দুঃখ বিলাসে ভেসে যায়।

বুধবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৪

কুকুর মানব


কুকুর মানব
- যাযাবর জীবন

কুকুরের জিহ্বায় ওৎ পেতে বসে থাকি,
রিপুর লালা ঝরতে থাকে ক্রমাগত;
লোভ অর্থের
লোভ স্বার্থের
লোভ কামের
উন্মত্ত ক্রোধে ছিন্নভিন্ন করে দেয়ার জিঘাংসা মনের,
শুধু কুকুরের প্রভুভক্তিটুকু অনুপস্থিত আমার মাঝে
যে থালাতেই খাই
সে থালাই ফুটো করে যাই,
ওহে, ওহে
আমি দানব নই; মানব।

মাঝে মাঝে ভাবি
মানুষগুলোর জিহ্বা কুকুরের মত
মুখ থেকে বের হয়ে থাকলে
বড্ড ভালো হতো;
এক এক মানবের এক এক রঙের জিহ্বা,
জিহ্বায় এক এক রিপুর এক এক রঙ;

মানুষগুলো হয়তো বেঁচে যেত অমানুষের ধোঁকা থেকে।


মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৪

নির্বোধ অভিমান



নির্বোধ অভিমান
- যাযাবর জীবন

চোখ ধাঁধানো সূর্যের আলোতেও কেও কেও অন্ধকার দেখে;
প্রেমিকার বুকের বাসি বকুল ঘ্রাণ
মধ্য দুপুরেও রাতের নেশা জাগায় প্রেমিকের মনে
স্বপ্নের ঘোরে ঠোঁট চুমে রক্তাক্ত প্রেমিক নিজে নিজে
অভিমানী প্রেম শামুকের খোলে;
অস্তগামী লাল সূর্যের পানে ডানা ঝাপটে উড়ে যায় সাদা বালিহাঁস
অভিমানের পালক ভেসে যায় ভাটির টানে
সাগর-নদীর সঙ্গমস্থলে
ঘোলা চোখে নদীর দু-পাড়ে বসে অস্পষ্ট সূর্যাস্ত দেখে প্রেমিক প্রেমিকা
ভালোবাসা কাঁদে অভিমানের সিন্দুকে
সাগরে ফোঁটায় ফোঁটায় নোনাজল বাড়ে;
শিকারি গাংচিল ছোঁ মেরে মাছ তুলে নেয় ঠোঁটের ডগায়
পালক থেকে লবণ জল ঝেড়ে ফেলে ডানা মেলে আকাশে,
প্রেম কিংবা নির্বোধ অভিমানে তার কি আসে যায়?
গৃহস্থের উঠানের ছড়ানো ধান, ধানশালিকে খুঁটে খায়।






সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৪

ভালোবাসার ভাষা


ভালোবাসার ভাষা
- যাযাবর জীবন

যে ভাষাতেই ভালোবাসার কথা বলা হোক
স্পর্শের আকুলতা বড্ড প্রবল;
প্রথমে একটু চোখে দেখাদেখি
তারপর হাত ছোঁয়াছুঁয়ি
একটু পাশে বসা
তারপর চুমু
চুমুতে আদর
আদরে কাম
কামে রমণ
ভালোবাসা তুঙ্গে।

ভালোবাসার ভাষা কি?
বিছানা?

ভালোবাসাহীন রমণ পশুতেও করে
ভালোবাসতে মানুষের বিছানা লাগে।


রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৪

অস্থির সময়



অস্থির সময়
- যাযাবর জীবন

সকালের কুয়াশার ডানায় ভর দিয়ে সূর্য উঁকি দিতে না দিতেই
দুপুর চড়ে বসে সময়ের ঘোড়ায়
তপ্ত রোদের ভাপ পিঠে পড়তে না পড়তেই
বিষণ্ণ জানালার পাশে বিকেলের নরম রোদ গড়ায়;
সময়ের পিঠে চড়ে দৌড়ে চলে অস্থির সময়
এক একটা দিন শেষ হয় চোখের পলকে
আমি হাঁটি হাঁটি পা পা এগোই
অন্তহীন যাত্রার দেশে;
ভাবনার পিঠে চড়ে বসে অলীক কল্পনা
ছলনার পিঠে ছলনাময়ী চাঁদ
স্বপ্নে ছলনাময়ী নারী,
প্রায়শই চিমটি কেটে অনুভব করতে হয়
এখনো জীবিত আছি।


শনিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৪

ভালোবাসার খোঁজ


ভালোবাসার খোঁজ
- যাযাবর জীবন

কেও ভালোবাসা খোঁজে
কেও ভালোবাসার মানুষ খোঁজে
সম্ভব আর অসম্ভব সব স্বপ্নের ভাঁজে;
খড়ের গাঁদায় খুঁজলেই কি মেলে সুঁই?
সিগারেটের ধোঁয়ায় ওড়ে চিন্তা শুধুই
আর দহনের কলমের ডগায় কবিতার কঙ্কাল;
ভালোবাসা শুধুই কাব্যে মেলে
অথবা আষাঢ়ে গল্পে
কিংবা সস্তাদরের কবিতায়।

আমরা ভালোবেসে আর অথবা না বেসে বেঁচে থাকি
আমরা ভালোবাসা আর ভালো না বাসার মাঝে বাস করি
আর প্রতিনিয়ত ভালোবাসার নামে দহন খুঁড়ি
আদতে আমরা কেও কারো জন্য নই
ভালোবাসা নামক অলীক কল্পনা শুধুই কাব্যে গড়ি।


আড়াল


আড়াল
- যাযাবর জীবন

আয়নার সামনের আমি আর পেছনের আমিতে
যোজন যোজন ফারাক,
ফারাক চিন্তা চেতনার
ফারাক ভালোবাসার
ফারাক তোর আর আমার;

অন্ধকারের আমি'কে কেন সামনে টেনে আনতে চাস?
কিছু কিছু চেহারা মুখোশে ঢেকে থাকাই ভালো;
আড়ালের আমি'কে সামনের আমির বড্ড ভয়
পেছনের আমি অন্ধকারের চেয়েও কালো।

মুখোশ খুলে গেলে সইতে পারবি না
রাতের চুমুর তৃষ্ণা চা'য়ে মেটে না।



শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৪

শূন্যতা


শূন্যতা
- যাযাবর জীবন

হিসেবে আমি বরাবরই বড্ড কাঁচা;
জীবনের শূন্যগুলো গুনতে গিয়ে
হাতের কড়ায় শূন্য খুঁজে পাই না,
অথচ পুরো জীবনটাই ছেয়ে আছে শূন্যতায়;
আমি শূন্য হয়ে বসে
শূন্য হাতে শূন্য গুনছি;
শূন্যতা থেকে শূন্য ছেঁকে
আলাদা করব কি ভাবে?

তুই তোর হিসেব বুঝে নিয়েছিস কড়ায় গণ্ডায়
শূন্যগুলো সব আমার ভাগে।



বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৪

স্বপ্ন



স্বপ্ন
- যাযাবর জীবন

প্রজাপতির ডানার ভরে পুরনো মনের রাস্তায়
নতুন প্রেমের বাঁক যদিওবা আসে
নির্মম বাস্তবতা, পাতাঝরা শীতের চাবুক ভরে
আঘাত করবেই বিবর্ণ করে দিতে;
টর্নেডো থেমে যাবার পর লণ্ডভণ্ড জীবন
বানভাসি সম্পর্কগুলো ধুঁকে ধুঁকে চড়ে গিয়ে ঠেকে
চাতকের তৃষ্ণায় তৃষিত কাক
ঠোঁট ডুবায় লবন জলে;
সময়ের সাথে কোথায় উড়ে যায় প্রজাপতি
কোথায় ডুবে যায় মন
কোথায় ভেসে যায় প্রেম
কোথায় বা ভালোবাসার স্বপ্ন?
ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখতে কার না ভালো লাগে?
চোখ মেললেই
জীবন সংগ্রামে
তুই
আমি
চারিপাশের সমাজ
আমাদের সংসার
আর নির্মম পরিহাসের প্রাত্যহিক জীবন।

কে বলে প্রেম মহান?
আমি দেখেছি প্রেমে শূন্যতা
শূন্যতায় দহন
দহনে আঁচর
কাগজে কলম;
নাই বা হলো কবিতা
তবুও তো ক্ষরণের কালিতে লেখা
লাল রঙে কিছু ভালোবাসার কথা।

বুধবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৪

নির্ঘুম


নির্ঘুম
- যাযাবর জীবন

নির্ঘুম রাত্রি, অন্ধকার চারিদিক
কোথায় জ্যোৎস্নার বাস?
কোথায় জোনাক?
কোথায় বা চাঁদ?

বোধ বুদ্ধিহীন ভালোবাসার অনুভব
প্রেমেতে বুদ্ধিনাশ
দহনে জীবন্মৃত
পড়ে থাকে যেন লাশ।

ঘুমের ওপারে স্বপ্ন
ভূবনের ওপারে তোর বাস
হাত বাড়ালেই শূন্য
তবুও হৃদয়ে মিলনের আশ।

ছোঁয়ার আগেই ফুরিয়ে যায় স্বপ্ন
ধরার আগে তুই
শূন্যের মাঝে শূন্য হয়ে আমি
সারারাত জেগে রই।





মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৪

তৃষ্ণা


তৃষ্ণা
- যাযাবর জীবন

তোকে দেখি না
অনেক দিন হয়ে গেছে;
চৈত্রের খরা লেগেছে দুটি চোখে
আকণ্ঠ তৃষা দেহমাটিতে
চাতক চোখ কোথায় না খুঁজে বেড়ায় তোকে?
তুই একবার দেখা দিয়ে গেলে
চৌচির মাটিতে
হয়তো আবার দূর্বা জন্মাবে,
হৃদয়ের ঘর্ষণে আকাশে বজ্রপাত না হলেও
নিশ্চিত বৃষ্টি নামবেই চোখের কোল বেয়ে;
কত দিন হয়ে গেছে
দেখা হয় নি তোর সাথে;
তোকে একবার বড্ড দেখতে ইচ্ছে করছে
চোখের আলো নিভে যাবার আগে।


রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০১৪

আমরা এখন


আমরা এখন
- যাযাবর জীবন

তুই ভালোবাসার কথা বলতেই
সূর্যটা ডুবে গেল
আমি ভালোবাসার ডাক শুনতেই
অমাবস্যা ধেয়ে এলো;
প্রেমের কথা
তোর কিংবা
আমার
দুজনের কারোরই সয় না;
ভালোবাসার চুমুতে কতবার রক্তাক্ত হয়েছি
তুই আর
আমি
দুজনেই।

এখন আমরা
দুজন দু-ভুবনে,
তাই হয়তো আকাশে সূর্য হাসে
দিনে সোনালী রৌদ্র,
সূর্য মুখ লুকোলেই আকাশেতে চাঁদ ওঠে
রাতে জ্যোৎস্নার বান,
পাখি গান গায়
নিশ্চিন্ত আপন মনে;
কি দরকার আছে বল
নষ্ট ভালোবাসার বাসর সাজিয়ে
প্রকৃতিকে কষ্ট দিয়ে?
তার থেকে
এই তো বেশ ভালো আছি
তুই
আমি
দুজনে
দু-ভুবনে।

যখনই তোর কথা মনে পড়বে
না হয় কিছু সময়ের জন্য
ডেকে নেব তোকে
আমার কল্পলোকে,
আর মাঝে মাঝে ছন্দহীন কিছু শব্দ সাজিয়ে
তোকে নিয়ে আঁকিবুঁকি খেলবো
কাগজে কলমে
কবিতার আদলে।