মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ, ২০১৫

আবরণ



আবরণ
- যাযাবর জীবন

শরীরের তো একটা আলাদা সৌন্দর্য আছেই
বিশেষ করে নারী দেহের, পুরুষের চোখে;
নগ্নতা ঢেকে রাখতে হয়
খোলামেলা সৌন্দর্য সবার জন্য নয়;
আরে নগ্নতাই যদি দেখতে হয়
তবে সানি লিওনরা তো আছেই
নগ্নতা কেনা বেচার হাটে
দেহপসরা মেলে দিয়ে;

সব সৌন্দর্য কি আর সবার দেখতে হয়?
নারীর সৌন্দর্য কাপড়ের আবরণে।


রবিবার, ২৯ মার্চ, ২০১৫

চক্র



চক্র
- যাযাবর জীবন

জীবনচক্রের নির্দিষ্ট একটা সময় থাকে
খেলার কিংবা কর্মের
প্রেমের অথবা বিয়ের
দায়িত্ব গ্রহণের কিংবা অর্পণের
তারুণ্যের কিংবা যৌবনের
প্রৌঢ়ত্বের এবং বার্ধক্যের;

সময়ের দায়িত্ব অসময়ে মাথায় চড়ে বসলেই
চক্রভঙ্গে বয়সটা বেড়ে যায় এক লাফে সহসাই,
শরীরের না হলেও মনের
আর নয়তো অভিজ্ঞতার;

ছেলেবেলার খেলার দিন একসময় কর্মে গড়ায়
সময়ের চাহিদায়
হাসিখুশির তারুণ্যে দায়িত্ব মাথায় চড়ে বসলে
বাস্তবতা রঙ্গিন জীবনে সাদা কালোর আঁচর দিয়ে যায়,
অর্থের চাহিদা সাদাসিধে জীবনে তুলে দেয় অনর্থের দেয়াল
দেয়াল বাইতে বাইতে ধুম করে আয়নায় একদিন প্রৌঢ়ত্ব
দায়িত্ব বণ্টনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে না করতেই দোরগোরে বার্ধক্য
তারপর প্রতীক্ষা অন্যভূবনের;

জীবন হার মানে সময়ের কাছে
স্বপ্নের পরাজয় বাস্তবতার হাতে
যৌবন মাথা নোয়ায় বার্ধক্যের কাছে;
সময়, জীবনের চক্র পূর্ণ করে।




শনিবার, ২৮ মার্চ, ২০১৫

রোমান্স


রোমান্স
- যাযাবর জীবন

পানি জমলে বরফ
মন জমলে প্রেম
ঘুম জমলে স্বপ্ন
তো'তে হারালেম;

চোখবাড়ির স্বপ্ন জানালাটা দিয়ে
মনবাড়িতে হয়েছে অনেক ওড়া-উড়ি
হৃদয়বাড়ি জুড়ে শুধুই তুই;

অভিমানে জমা ঠোঁট, ঠোঁটের অপেক্ষায়
তুই ছাড়া প্রেমে রোমান্স কোথায়?

ঠোঁটের তো চুমু খেতে ইচ্ছে হতেই পারে।

ধুলো



ধুলো
- যাযাবর জীবন

ধুলোর গায়ে ধুলো জমে
ধূলি ধূসরিত পথে
মাটিতে মিশে ধুলো হতে মানব
ঘুমায় মাটির রথে;

একটা উদাস হরিয়াল ডাকছে
নিম গাছটার ডালে
যেটা বুনেছিলি আমার কবরে;

হরিয়ালটাও একদিন ধুলো হবে।


শুক্রবার, ২৭ মার্চ, ২০১৫

প্রতিবন্ধী


প্রতিবন্ধী
- যাযাবর জীবন

সকালের ঘুমস্বপ্নে পরীদের আনাগোনা
চারিদিকে লাল নীল সবুজ হলুদ জামা
আমি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী
তোর দেহ রঙে

ভোর জুড়ে পাখিদের কলকাকলি
নদী পাড়ে পানির কুলকুল ধ্বনি
আমি শব্দ প্রতিবন্ধী
তোর কণ্ঠস্বরে

চারিদিক জুড়ে নানা রঙের নারী
নানা ঢঙের প্রেমের হাতছানি ভারী
আমি প্রেম প্রতিবন্ধী
তো'তে।




সীমাবদ্ধতা


সীমাবদ্ধতা

- যাযাবর জীবন

সূর্য পূব থেকে পশ্চিমে হাঁটে
তাল মিলিয়ে ছায়া হাঁটে সূর্যের সাথে সাথে
কখনো ছোট হতে হতে আমার সাথে মিশে
কখনো আমা হতে অভিমানে দূরে গিয়ে বসে
আমি ঠায় দাঁড়িয়ে তোর আশে;
সূর্য হাঁটুক বা না হাঁটুক
ছায়া থাকুক কিংবা নাই থাকুক
আমার তাতে কি যায় আসে?

আমার চলার পথ তো তোর পথে মিশে আছে।
আমার সীমাবদ্ধ প্রেম তোতে শুরু হয়ে, তোতে'ই থেমে আছে।

বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ, ২০১৫

স্বাধীন


স্বাধীন
- যাযাবর জীবন

স্বাধীনতা তোমাকে নিয়ে লেখা হয়ে গেছে অজস্র কবিতা
এই চুয়াল্লিশ সৌর-বছর ধরে
আমার বাংলার মাটিতে
বাংলা বর্ণমালা ঘিরে;
লেখা হয়ে গেছে তোমাকে নিয়ে অজস্র গল্প, গান আর কাব্য-গাঁথা
নাটক আর সিনেমাতে বলা হয়ে গেছে তোমার হাজারো কথা;

এবার তো স্বাধীন হও, হে স্বাধীনতা!


বুধবার, ২৫ মার্চ, ২০১৫

ইটিসপিটিস পেম



ইটিসপিটিস পেম (রম্য)
- যাযাবর জীবন

বট তলায় মামুর চা এর দোকানে বইয়া আড্ডাবাজী করতেসিলাম।
হঠাত মিঠুরে দেহি বটগাছের মাতার দিকে চাইয়া চাইয়া আউলা চুলে উকুন আনতে আনতে উদাস হাইট্টা যাইতাছে।
ডাক দিলাম ঐ মিঠু, মিঠুউউউ।
কোন ভাবান্তর নাই শালার, যেন গাছেরে ডাকলাম।
এইবার উইঠঠা সামনে গিয়া হাউ কইরা চিল্লান দিলাম;
উদাস কবির ২৮ পাটি দাঁত বাইর হইয়া গেল, জড়াইয়া ধইরা জিগাইলো, কিরে কেমুন আছস দোস্ত?

ঐ গাধা, ছাড় ছাড়, মাতার উকুন আমার গামছায় দিস না।
হে হে, কি যে কস না দোস্ত;
দোস্ত মারাইস না, কত দিন আহস না এইদিকে, দোস্তের কি দোষ করছে?
আবার হে, হে।
শালা বলদের মত হে হে করিস না, আয় চা গিল।
আইচ্ছা গিলা।

জিগাইলাম, কি রে তরে এমুন ভ্যান্দার মত লাগতাছে কেন?
হে হে, কই?
এই যে কেমুন জানি কবি কবি ভাব, ঘটনা কি? ঝাইড়া কাশ তো দোস্ত।
আরে কিছু না।
ক না দোস্ত;
আইচ্ছা খাড়া আগে চা গিলা লই পড়ে কইতে আছি।
মামুরে কইলাম আমাগো ভ্যান্দা কবির লাইজ্ঞা স্পেশাল তুলসি চা।
চা এর লগে একটা কলা ছিল্লা দিয়া কইলাম এলা চায়ে ডুবাইয়া খাইতে খাইতে ঝাইরা কাশ তো দেহি।

হে হে করতে করতে কইলো, দোস্ত প্রেম করতে আছি।
আমিও হে হে করতে করতে কইলাম, হে তো মুই তরে দেইহাই বুইজ্জা গেছি।

বেচারা চায়ে কলা চুবাইয়া এক কামড় মারে আর ভাবে বুঁদ হইয়া একবার কইরা মাতায় হাত বুলায়।
আমি জিগাইলাম কিরে মাতায় বুঝি অনেক উকুন?
আবার হে হে করতে করতে কইল, আমার বেবির মাতায় উকুন মনে লয় বেবাক আমার মাতায় আইয়া পড়ছে।
কেন? বেশি ঘষাঘষি করছ বুঝি?
হে হে করতে করতে লাজুক হাসি দিল।
(আহহারে, মাইয়ামানুষ এই হাসি দেকলে নগদে আমার দোস্তের পেমে পইড়া যাইত)

জিগাইলাম, তা, হেতেনের নাম বেবি বুঝি?
আরে না দোস, কি যে কস! আমি আদর কইরা হেরে বেবি ডাহি। আর হেয় আমারে ডাহে জান।

খুব বালা, খুব বালা; হ তা তো ডাকবই, আজরাইল আর প্রেমিকা এই দুইজনই তো পুলাগো জানের ঠিকাদার।
ধ্যুর কি যে কস না তুই? কইয়া মাইয়া মাইনের মত চুল থাইক্কা ইলিবিলি কইরা ইয়ালাস একখান উকুন দুই আঙ্গুল দা আইন্না মনযোগ দা দেকতে লাগলো।

কিরে উকুন হাতে লইয়া বইয়া রইছাস কেন?
ভাবে চোখমুখ উল্টাইয়া কইলো, এইডা আমার বেবির মাতার উকুন, আমি কি ওরে মারতে পারি? কইয়া আস্তে কইরা মাডিত নামাইয়া দিয়া দুই হাতে ঘষঘষ কইরা মাতা খাউজ্জাইতে লাগলো।

আমি টাস্কি খাইয়া কইলাম ওরে শালা! এত্ত পিরিত? তা তর বেবিরে কোলে লস?
লজ্জা লজ্জা মুহে এইবার ৩২ পাটি দাঁত দেহা গেল।
হ দোস, যহন আদর করে এককালে কোলে চইড়া বহে।
আমি জিগাইলাম, প্যাম্পার পড়ায় লস না?
জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চাইয়া রইল, বুঝলো না কিছু, মাতা খাউজ্জাইতে খাউজ্জাইতে কইল, কি কস?

আরে! তর বেবিরে যে কোলে লইয়া বইয়া থাহস যে কুনু টাইমে তো হিসু কইরা তর রংচডা জিন্সের প্যান্টটার তেইশ মাইরা দিব।

এইবার আমার দিকে ভয়াবহ একটা চাহনি দিয়া, দুই হাতে ঘষঘষ কইরা আউলা মাতা খাইজ্জাইয়া আউলা চুল আরো আউলা কইরা ফালাইয়া তোতলাইতে লাগল, দে দে দে দেক, ফাইজলামি করিস না কইল। মাইন্সের লগে ফাইজলামি করতে করতে তো টাক্কু হইয়া গেসস, ব্লা ব্লা ব্লা ব্লা ...............। তারপর রাগে আরো কি সব গজগজ করতে করতে অকথ্য (এইহানে লেহার অযোগ্য) ভাষায় আমারে গাইল্লাইতে গাইল্লাইতে বেঞ্চির থন লাফাইয়া উঠলো।

আমি কইলাম আরে দোস্ত থাম এলা, শান্ত হইয়া ব। ঐ মামু, হেরে কড়া কইরা আরেকটা চা দে, কইয়া রুচি মুড়ির প্যাকেট খুইল্লা হের হাতে ধরাইয়া দা কইলাম, তুই মুড়ি খা।

মিঠুরে কইলাম, শুন গাধা, মাত্রতো ইটিসপিটিস শুরু করছস;
প্রেমের গাছে সবেমাত্র গুটি আইছে, অহন তর উকুন মারার সময়; দুইন্যা রঙ্গিন।
কয়দিন পর প্রেম ডাসা হইব, তহন দেকবি মাতার গরমে উকুন সব পলাইছে; চোক্ষে আন্ধার।
তারও পর প্রেমে পাক ধরব, চুল সাদা হওয়ার আগেই দেকবি আপনার থাইক্কাই বেবাক পইড়া গেছে, আর নাইলে তর পরানের পরান 'বেবি' টাইন্না চান্দি ছিলা বানাইয়া দিসে; কইয়া আমি আমার খালি হইয়া যাওয়া চান্দিত হাত বুলাইতে বুলাইতে আমার পাইক্কা যাওয়া পেমের ভাবনায় চায়ের কাপে ডুইব্বা গেলাম।
আতকা স্টিলের বেঞ্চি থাইক্কা গরম খাইয়া লাফাইয়া উঠলাম।

কি রে কি হইলো তর?
কিছু না, বইলা চুপ মাইরা যাই।
(মাইনষেরে কেমনে কই শরমের কতা! আমারে বেবির কতা মনে আইলেই ১০০ মাইল দূর থাইক্কাও হের গরমে আমার বহনের চেয়ার বেঞ্চি বেবাকতানে আগুন ধইরা যায় আর আমি পিছে ছেকা খাইয়া রাস্তার মইধ্যে আতকা লাফাইতে থাকি, মাইনসে কয় পাগল নাকি?)




মাখন চিঠি


মাখন চিঠি

- যাযাবর জীবন

সবুজ খামে তোর ডাকটিকিট বিহীন চিঠিটা হাতে পৌঁছেছিল
শরতের সেই ধুসর কালসন্ধ্যায়
হ্যাঁ আমি তাকে কালসন্ধ্যাই বলি;
খামটা খুলতেই সর্দিনাক ভেদ করে বেলিগন্ধা কাগজের সুবাস
আনচান মন নিয়ে মাখন রঙা চিঠিটা চোখে গিলতে যেতেই
বিদ্যুতের বিমাতা আচরণ
অন্ধকার ঘরে চিঠিতে মাখানো ফুলের সুবাস ভেসে বেড়াচ্ছিল
আনচান মনে নীল কলমের আঁকিবুঁকিগুলোর
চোখের ভেতর দিয়ে মস্তিষ্কে প্রবেশের অস্থিরতা,
কাঁপা হাতে মোমবাতি জ্বালাতেই লালচে রং ধরলো মাখন কাগজ
নীল কালিতে দেখলাম বেগুনীর ছায়া
কলমের আঁকিবুঁকিগুলোকে মনে হলো পিঁপড়ের দৌড়
ঝাপসা চোখে চশমা লাগাতেই সব দুপুরের রোদের মত পরিষ্কার
হলুদ প্রেমপত্রে সাবলীল ভাষায় দু লাইনের বিবাহের নিমন্ত্রণ-
"বিবাহের সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছি
তুমি আসলে খুশি হব"
ব্যাস, ঐটুকুতেই ফুরিয়ে গেল মাখন চিঠি
ফুরিয়ে গেল প্রেম
মুছে গেলাম আমি;
সেদিন কালসন্ধ্যায় আমার চোখে শর্ষেফুল
তোর চোখে স্বপ্নবাসর;
নাহ, চোখ ভেজেনি সেদিন
খরচোখ রাতজাগে আজও,
শুধু মনের মাঝে একটাই প্রশ্ন -
এতটা নিষ্ঠুর না হলেই কি হত না?
কখনও জবাব মেলেনি;

তুই লোনাজলে 'প্রেমকেলি' করতে থাক
আমি কলমের আঁচরে 'তুইকেলি' করি।




মনবসন্ত



মনবসন্ত
- যাযাবর জীবন

তোর হেঁটে যাওয়া পথ আমায় চিনতে পারে না এখন
তোর মুখদেখা আরশিতে আমার প্রতিবিম্ব আজ ঘোলা
মনের আয়নায় আমার ছবি কি দেখা যায়?
নাকি ঝুম বর্ষায় ধুয়ে গেছে আমাদের প্রেম?

আবার কবে বসন্ত আসবে তোর মনে?
অপেক্ষায় রইলাম.....................



মঙ্গলবার, ২৪ মার্চ, ২০১৫

অন্ধকারের স্বপ্ন


অন্ধকারের স্বপ্ন

- যাযাবর জীবন

সন্ধ্যে হতে না হতেই আকাশের মুখ অন্ধকার
তোর মন মেঘ গুড় গুড় হতেই আমার চোখে বৃষ্টি;
আজ কেন জানি মেঘ দেখতে ইচ্ছে করছে
অনেক দিন খোলা আকাশের নীচে শোয়া হয় নি
তোর আঁচল পেতে
আজ ঝুম বৃষ্টিতে কাক ভেজা হতে বড্ড ইচ্ছে করছে
তোর কোলে শুয়ে
মাঝে মাঝে চাঁদটা উঁকি দেবে মেঘ ফুঁড়ে
হিংসায় লাল হয়ে
ঠিক যেমন তুই উঁকি দিস আমার মনঘরে
অভিমানে দূরে সরে
জ্যোৎস্নায় স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলে চাঁদ চাইনা আমার
অমাবস্যায় তবুও তুই থাক;

অন্ধকার আসে স্বপ্ন দেখার জন্য, স্বপ্নে তুই;
আঁচল পেতে স্বপ্ন দেখি।


সোমবার, ২৩ মার্চ, ২০১৫

এলোমেলো


এলোমেলো
- যাযাবর জীবন

বৃষ্টি আমার চালে
তোর চোখে নুন
স্বপ্ন তুই দেখিস
আমার চোখে ঘুম;
চাঁদ ওঠে আমার আকাশে
জ্যোৎস্নায় ভিজে যাস তুই
আমি কাগজে আঁকিবুঁকি কাটি
কবিতার চরিত্রে তুই।


পার্থক্য



পার্থক্য
- যাযাবর জীবন

ভালোবাসার ধুতুরা গন্ধ
কিংবা দিল্লীর তিতামিঠা লাড্ডু
কিংবা প্রেমের অসহায় চাপতাপ
ক্রমাগত: সয়ে যাওয়া, খুব কি সাহসের কাজ?
আরে তার চেয়ে ছাদনাতলায় বসে যা।

যুগ যুগ তোকে জড়িয়ে ঘুমোচ্ছি
বৌ আর পাশবালিশের পার্থক্য ভুলে গেছি।


সমীকরণ



সমীকরণ
- যাযাবর জীবন

জীবনের সমীকরণ ছকে বাধা যায় না
কোথাও না কোথাও সুতো ছিঁড়েই যায়;
কখনো সমীকরণের
কখনো বা জীবনের;
ইচ্ছে কিংবা অনিচ্ছাতে
জানতে কিংবা অজান্তে
ভালোবাসা কিংবা ঘৃণাতে;
তবুও আমরা সমীকরণ এঁকে যাই
জীবন অঙ্কের
কিংবা জীবনের।

নিঃশব্দ অনুভূতি



নিঃশব্দ অনুভূতি
- যাযাবর জীবন

আজ বর্ণের জ্বর
আজ শব্দের মৌনব্রত
আজ কবিতার নৈঃশব্দ্যতা
আজ তোর ঠোঁটে আমার চুপ;
চল আজ ঘুমাই দুজনে
ঠোঁটে ঠোঁট চেপে
নিঃশব্দ অনুভবে।


মিল-অমিল


মিল-অমিল

- যাযাবর জীবন

কৌটায় কিনে আনা ভালোবাসায় পায়ে আলতা লাগানো যায়
হাতে মেহেদী পড়তে হয় হৃদয়ের সিঞ্চিত ভালোবাসায়
মানব মন অনেক দামী ঐ বাজারের স্বর্ণ কৌটার দিকে তাকায়
হৃদয়! সে তো আছেই হেথায় গলিয়ে নেব না হয় ভাব ভালোবাসায়;

চিন্তা ও চেতনায় মিল হলেই সেতার সুর তোলে
অমিল শুধুই ভাঙ্গনের কথা বলে।


তৃপ্তি



তৃপ্তি
- যাযাবর জীবন

টেবিল ভরা খাবার
তবুও যেন আরও চাই
অতৃপ্তির সীমা নাই;
আলমারি ভরা কাপড়
পছন্দ হয় না কোনটাই
তৃপ্তি বলে কিছু নাই;
অনেক গুলো বাড়ি
অনেক খানি জমি
তৃপ্তি হয় না কেন জানি;

সাড়ে তিন হাত মাটিতে ঘুম হবে তো?


ভালোবাসা আঠা


ভালোবাসা আঠা
- যাযাবর জীবন

রোদ মাথার ওপরে চলে আসতেই ছায়া আলিঙ্গনে
তোকে ধরতে গেলেই হাঁটি হাঁটি রোদ এগোয়
রোদ চলতে শুরু করার সাথে সাথে
ছায়াটুকু মরীচিকা হয়ে অনেক দূরে সরে যায়
প্রেমের ওৎ পাতা মনের ফাঁদে ধরা দেয় বিষণ্ণতা
বলতে পারিস, ভালোবাসা ধরা যায় কোন আঠায়?


নিমন্ত্রণ



নিমন্ত্রণ

- যাযাবর জীবন

আমি কোথাও যাই না
নিমন্ত্রণ আমার জন্য না
আমি কোথাও আসি না
কেও আমায় আমন্ত্রণ করে না;
প্রেমের পুকুরে আমন্ত্রণের ঢিল পড়তেই
নানা রঙের প্রেমিকরা মাছচোখে ভেসে ওঠে
ভাবের তরঙ্গে,
প্রেমিকেরা দল বেঁধে ছোটে প্রেমিকার নিমন্ত্রণে
কারো প্রেম জুটি বাঁধে, ভাসে আনন্দে
কারো প্রেম ভো কাট্টা সুতো কাটে;
কেও নিমন্ত্রণ করে ধন্য
কেও নিমন্ত্রণ পেয়ে ধন্য
সামাজিকতা মানুষের জন্য;
মানুষের সমাজে যাযাবরের স্থান কোথায়?



রবিবার, ২২ মার্চ, ২০১৫

অতৃপ্তি



অতৃপ্তি
- যাযাবর জীবন

তৃপ্তি মেটে না কিছুতেই;
খাদ্যে টেবিলটা ভরে থাকে
রসালো নানা পদে
উপচানো বাটি ভরে
গুনে শেষ করা যায় না, তবু যেন তৃপ্তি মেটে না
কখনো ভাবনায় আসে না, পেটে কতটুকু যাবে?
বাকিটা কে খাবে?
আশেপাশের বাসাগুলোতে অভুক্ত কে ঘুমায়
গেটের পাশে পথশিশু বসে থাকে, থাকুক না আমার কি দায়?
ঐ তো ওখানে ক্ষুধা জঠরে বুড়োটা কাঁদে?
কাঁদুক না আমার কি আসে যায়?
বাহারি খাবার টেবিলে কখনো পদের কম হলে তখন না হয় ভেবে দেখব।

তৃপ্তি মেটে না কিছুতেই;
কাপড়ে আলমারিটা ভরে আছে
বিশটা না তিরিশ না গোটা চল্লিশ প্যান্ট, কি আসে যায়?
শার্ট! ঐ ইস্ত্রি করা কাপড়ের স্তূপে কে গোনে?
আট-দশ খান স্যুট না হয় গোনা যায় রেক এ সাজানো,
জুতোগুলো এখন আর জুতোর রেক এ রাখার জায়গা নেই
এক জোড়ার ওপর আরেক জোড়া
প্যান্ট আর শার্টের সাথে মেলানো জোড়া জোড়া
উপচানো রেক ভরা,
আছে, হরেক রকম কাপড় চোপড় আর জুতো বাহারি
সবই আছে অগুনতি ভুরিভুরি
তবুও নিত্য নতুন কিনতেই হয়, যখন তখন কেন আমারই?
খুব নিকট আত্মীয় স্বজনকে দেখি এক কাপড়ে দিনের পর দিন;
কেন? কখনো চিন্তাও করি না।
কখনো ভেবেছি কি, কটা কাপড়ে কাফন হবে?

তৃপ্তি মেটে না কিছুতেই;
জমি জমি জমি
বিঘার পর বিঘা জমি
পড়ে আছে এখানে সেখানে
কোনো দরকার নাই
তবুও চাই, চাই আরো চাই
প্রয়োজনে দখলদারি, মারামারি হানাহানি;
সাড়ে তিন হাত মাটি আবার কম পড়ে যাবে না তো সেদিন?
কখনো ভাবনায় এসেছে কি?

বৃহস্পতিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৫

দিবাস্বপ্ন



দিবাস্বপ্ন
- যাযাবর জীবন

সকালটার ঘুম ভাঙ্গতেই ঘুমিয়ে গেল স্বপ্নটা
রোদের তাপে মোমবাতি গলা শুরু করতেই
মনচাপা দিয়ে আমি অন্ন অন্বেষণে,
তোর ভাবনা আবার কানামাছি খেলবে
বাড়ি ফেরার কালে মনখারাপের বিকেলে
তুই মাথার ওপর চড়ে বসবি রাত্রির প্রথম প্রহরে
তারপর চোখ বেয়ে স্বপ্নে ঢুকে যাবি জড়িয়ে নিয়ে
আমায় রাতের অন্ধকারে,
ভোরের আলো পাখির চোখ ছুঁয়ে দিতেই
স্বপ্ন ঘুমিয়ে যাবে দিনের মোমবাতিতে;
এভাবে বৃত্তের মাঝেই ঘুরে
বৃত্তবন্দী ভালোবাসা
স্বপ্নবন্দী তুই।

খরা বুকে লাঙ্গল চাষ করলেই কি আর
ভালোবাসার অঙ্কুরোদগম হয়?
শুধু তো স্বপ্নেই আসিস তুই।




বিজয়



বিজয়
- যাযাবর জীবন

সূর্য ডুবলেই রাত
তার পরেই তো নতুন দিনের সূচনা
আমরা অপেক্ষায় থাকি রাত্রি অবসানের;

এবার না হয় হলো না
নাহ, এবার কাওকে দোষ দেব না
ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরাজয় মেনে নেয় বীর,
এবার না হয় বঙ্গোপসাগরের কিছু পানি বেড়ে যাক
১৭ কোটি মানুষের চোখের জলে
আজ রাতের অন্ধকারে;

আবার কাল থেকে নতুন সূর্যে নতুন সূচনা
আবার স্বপ্ন দেখব
আবার খেলব
আবার লড়াই করব
আবার জয়ী হব খেলার মাঠে;

বিজয় আসবেই
বিজয় আসতেই হবে
যেভাবে এসেছিল '৭১' এ।





বুধবার, ১৮ মার্চ, ২০১৫

ঘুমঘোরে কথোপকথন


ঘুমঘোরে কথোপকথন
- যাযাবর জীবন

বেশতো ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, হঠাৎই ঘুমঘোরে তুই এসে সব লণ্ডভণ্ড করে দিলি।

- কিরে ঘুমোস নি?

- ঘুমপরী প্রণয়ে মেতে আছে।

- তাইলে চল ইনসমনিয়া খেলি,

- নাহ, পেন্সিলের নিব ভাংছি।

- চিঠি লিখছিস বুঝি?

- নাহ, ঘুম চোখে স্বপ্ন আঁকছি।

- স্বপ্নে আমি এসেছি?

- তুই বড্ড যন্ত্রণা করিস।


- আমাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখে দে না!


"সমুদ্রে হাত ডোবাতেই যখন লবণে হাত পুড়ে গেল
রৌদ্র তখন অমাবস্যার মধ্য আকাশে
ভয় পেয়ে তুই আমাকে জড়িয়ে ধরতেই
প্রেম জ্বরে মন পোড়ালি;
থার্মোমিটারে জ্বর মাপতে গিয়ে পারদ গলে গেল
গলে গেলাম আমি
গলে গেলি তুই
থার্মোমিটারে পারদ, তোতে আমি বিলীন
এই তো সেই সেদিন;
তোকে চুমু খেতে গিয়ে কলঙ্ক এঁকে দিলাম চাঁদের গায়ে
অভিমানে তুই
অনুরাগে আমি
মেঘেতে চাঁদ, তোতে আমি বিলীন
এই তো সেদিন।

তারপর থেকে ভুল বোঝাবুঝি,
চাঁদ আর চাঁদনির
অন্ধকার আর অমাবস্যার
ভোর আর পাখিদের
দুপুর আর সূর্যের
বিকেল আর মন খারাপের
সন্ধ্যে আর বাড়ি ফেরার
রাত আর ঘুমের
তোর আর আমার।"

- ধ্যাত, আজ আর কবিতা হবে না
সব হাবিজাবি হাবিজাবি;
স্বপ্ন দেখতে বড্ড ভয় লাগে
তারচেয়ে চল ঘুমুতে যাই, সকাল হয়ে এলো।


জীবনে একবার



জীবনে একবার
- যাযাবর জীবন

ভালোবাসার ধুতুরা গন্ধ
কিংবা দিল্লীর তিতামিঠা লাড্ডু
কিংবা প্রেমের অসহায় চাপতাপ
ক্রমাগত: সয়ে যাওয়া, খুব কি সাহসের কাজ?
আরে তার চেয়ে ছাদনাতলায় বসে যা।

যুগ যুগ তোকে জড়িয়ে ঘুমোচ্ছি
বৌ আর পাশবালিশের পার্থক্য ভুলে গেছি।



সোমবার, ১৬ মার্চ, ২০১৫

অবৈধ



অবৈধ
- যাযাবর জীবন

বৃত্তবন্দী ভালোবাসার ঘেরাটোপে স্বামী-স্ত্রী
বৃত্তের ঠিক ওপারেই পার্থিব সুখের হাতছানি;
এপারে পর্দার আড়ালে সুখ খোঁজে পুরুষ
ওপারে চোখের পর্দা ভুলে সুখের খোঁজে রমণী
অবৈধ প্রেম খুবলে খায় পচা শরীরটাকে
এ ওর সাথে
সে তার সাথে
আজকাল সাধ মেটে না কারো যেন এক নরনারীতে,
সন্দেহের কালো থাবা কারো মনে উঁকি দিলেই
দুজনার মাঝে ভুল বোঝাবুঝির অথৈ পানি;
তারপর কাঁদা ছোড়াছুড়িতে দুজনার কীর্তি দুজনা পড়ে যায়
জোঁকের মুখে নুন খেয়ে সংসার করে যায়
নয়তো ভাঙ্গা হাঁড়িকুঁড়ি বৃত্তবন্দী হয়ে যায়;
স্বামী-স্ত্রী আর ভালোবাসা
কে কোথায়, কে কোথায়?
সময় গড়ায়
সময় গড়ায়;

নারীর কোলজুড়ে সন্তান কার উত্তরাধিকার?
ডি এন এ টেস্ট বড্ড সস্তা আজকাল।



যতিচিহ্ন



যতিচিহ্ন
- যাযাবর জীবন

ভালোবাসায় যতিচিহ্ন বেমানান;
তবুও কখনো একটু রাগ, একটু অভিমান;
সাময়িক বিচ্ছেদের হালকা,
কিংবা ভারী যতিচিহ্ন;
আর কখনো বা ঘন মনমেঘের বিদ্যুৎ ঝলকে
মনের অজান্তেই দুটো মন পুড়ে ছারখার,
ভালোবাসার পথচলায়
না চাইতেও বড় একটা সমাপ্তির রেখা টানা হয়ে যায়।

যতিচিহ্ন টেনে দেয়া প্রেমের ওপারে
কেও দেখে নব প্রণয়ের হাতছানি
যেমন সে,
কেও পাড়ি দেয় লবণ সাগর
যেমন তুই,
খুব বোকারা দেখে জীবনের সমাপ্তি
যেমন আমি।

কে দিব্যি দিয়েছে? ভালোবাসতেই হবে
কিংবা ভালোবাসায় মরতেই হবে।

প্রেম আসার আগেই মনে যতিচিহ্ন বসানো গেলে
জীবনটা কতই না সহজ হত।


রবিবার, ১৫ মার্চ, ২০১৫

গোলক ধাঁধা


গোলক ধাঁধা
- যাযাবর জীবন

বৃত্তের কেন্দ্র তুই
পরিধি আমি
ব্যস জুড়ে আমাদের ভালোবাসা
কেন্দ্র পরিধিকে ছুঁতে পায় না;

গোলকের ভেতরে বিভাজিত ভালোবাসা
অবিরত ঘুরছে গোলক ধাঁধায়;
অসীম দূরত্বে
তুই
আর আমি,
মিলনের পাই এর মান জানা নেই কারো।



শব্দ দূষণ


শব্দ দূষণ
- যাযাবর জীবন

সব শব্দ কি আর উপভোগ করা যায়?
কিছু শব্দ কারো জন্য আনন্দের বহিঃপ্রকাশ
আর কারো কানে পীড়াদায়ক নখের আঁচর;

শারীরিক প্রেম কামনার ঝড় তোলে
রাতের অন্ধকারে
বিছানায় ছন্দোবদ্ধ শীৎকারের শব্দ,
পাশের ঘরে সন্তানের কানে বালিশ চাপা;

বাবা মায়েরও প্রেম করতে ইচ্ছে করে।


বৃহস্পতিবার, ১২ মার্চ, ২০১৫

বসন্ত হাওয়া



বসন্ত হাওয়া
- যাযাবর জীবন

ঘুম ঘুম চোখে
নাকে বাসি গন্ধা বকুল
ভোরের সকালে;

প্রেমিকার হাত নয়
আমি বন্ধুর হাত খুঁজি
বসন্ত বিকেলে;

তোর কথা মনে হতেই
মন খারাপের হাওয়া বেলা অবেলায়
ঐ যে শোন, পাগলা কোকিলটা ডাকছে ক্রমাগত
কেন জানি ভর দুপুর বেলায়
কোথাও মেঘ নেই আকাশে, তবু যেন
নুনচোখে বিষণ্ণতা ভিজে যায়;

ক্ষতি তোর কিছু হয়েছে কি না, জানা নেই।
আমি বন্ধু হারালাম তোর প্রেম জ্বরে;
এমন কেন হয়?
এমনই কেন হতে হয়, আমার সাথেই?



মঙ্গলবার, ১০ মার্চ, ২০১৫

অন্যরকম সেদিন



অন্যরকম সেদিন
- যাযাবর জীবন

সেদিনটাও একটা দিন ছিল
খুব অন্যরকম;
সেদিন তুই ছিলি
সেদিন আমি ছিলাম;

সেদিন দুপুর গড়িয়েছিল তোর ঠোঁট বেয়ে
সেদিন বিকেল নেমেছিল তোর চোখের পাপড়ি গড়িয়ে
সেদিন সন্ধ্যে নেমেছিল তোর কালো চুলের মেঘ বেয়ে
সেদিন রাত নেমেছিল আঁধারে ছেয়ে ছেয়ে;

সেদিন চোখে চোখ ছিল
ঠোঁটে ঠোঁট ছিল
স্পর্শ ছিল
অনুভব ছিল
সেদিনটা খুব অন্যরকম ছিল,
সেদিন তুই ছিলি
সেদিন আমি ছিলাম
সেদিন ভালোবাসা ছিল;

আজ বড্ড ফাঁকা
তুই,
আমি;
দুজনেই।


সোমবার, ৯ মার্চ, ২০১৫

নষ্টামি


নষ্টামি
- যাযাবর জীবন

প্রেম কর
প্রেম কর
প্রেম কর
ভার্চুয়ালে ছলনা আর অভিনয়;
পটাতে তো হবে নিত্য নতুন কাওকে না কাওকে
বড়শির ছিপ ফেলে
তারপর
বিছানা
বিছানা
বিছানা
তারপর ছুড়ে ফেলা
আবার নতুন অভিনয়
নতুন ছলনা
প্রেম কর, প্রেম কর, প্রেম কর;
আরে অভ্যাসটা তো চালু রাখ
অনভ্যাসে যদি নষ্টামি ভুলে যাস
কিংবা ক্লীব ভালোবাসা।




অক্ষমতা
- যাযাবর জীবন

তোর কপালে একটি চুমু আঁকতেই
চুলের ঢেউ বেয়ে বিষাদের গাঢ় মেঘ
নদী উপচানো দুটি চোখ ছলছল
হৃদয়ের কানাড়ায় কান্নার কোলাহল;
ভালোবাসা দিতে গিয়ে বেদনা ছড়িয়ে দিচ্ছি প্রতিবার
প্রেম আঁকতে গিয়ে দহন এঁকে ফেলছি বার বার;
ক্ষমা করে দিস,
আর চুমু খাব না।


রবিবার, ৮ মার্চ, ২০১৫

আমি কোথায়?



আমি কোথায়?
- যাযাবর জীবন

আজ পুরনো কান্নাগুলোকে জমা করতেই
আজলা ভরা তুই;
আজ পুরনো ভালোবাসাগুলোকে খুলে দেখতেই
তোর গায়ের গন্ধ;
আজ পুরনো স্মৃতিগুলোকে রাবার ঘসতেই
তোর চেহারা;
আজ পুরনো কবিতার খাতাগুলোতে চোখ বুলোতেই
পুরোটা জুড়ে তুই;

আমার মাঝে কোথাও আমাকে খুঁজে পেলাম না।




সম্পর্ক



সম্পর্ক
- যাযাবর জীবন

স্পর্শে প্রেম
স্পর্শে মায়া
স্পর্শে ভালোলাগা অনুভূতি
স্পর্শে মমতা,
যদি থাকে বন্ধুর মন, গাং পাড় হইতে কতক্ষণ।

স্পর্শে অস্বস্তি
স্পর্শে বিরক্তি
স্পর্শে রি রি অনুভূতি
স্পর্শে ঘৃণা
এই দোষ না হেই দোষ, মাগী তুই ঘুইরা শোছ।

ঘুমের আবেশে রাগ ভৈরবী, স্বর্গের সুর কানে বাজে
প্রেমাবেশে রতিক্লান্ত দেহে;
আর নয়তো দা কুমড়ো সম্পর্কে অমৃতেও অরুচি।

চায়ে চিনির পরিমাণ নির্ভর করে আঙ্গুল নাড়ায়,
যদি হৃদয়ে ভালোবাসা থাকে;
আর নয়তো শুকনো উঠোনেই সম্পর্কের ধপাস।


শনিবার, ৭ মার্চ, ২০১৫

গন্তব্য



গন্তব্য
- যাযাবর জীবন

গতকাল ছিল কর্ম ব্যস্ত সময়
আজকে সারাটা দিন কাটালাম খুশি আনন্দে
আগামীটা দেখেছে কে?

কালকে কি সূর্য উঠবে আমার চোখে?
কালকে কি অক্সিজেন ঢুকবে আমার নাকে?
কাল কি রক্ত দৌড়বে আমার ধমনীতে?
কাল কি হাড়ি চড়বে আমার উনুনে?
নাকি কাল শোকের ছায়া, আমার উঠোনে।

জীবনের মাঝপথে ট্রেন থেকে নেমে পড়লে দুঃখ পেও না কেও
ভেবে নিও ওটাই আমার শেষ ষ্টেশন ছিল;

ঐ যে ওখানে, আমার বাবার সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরের পাশে
আরও সাড়ে তিন হাত ছোট্ট একটা টুকরো রাখা আছে;
জীবনের যাত্রাপথের দূরত্ব জানা না থাকলেও
ওটাই আমার শেষ গন্তব্য।



বুধবার, ৪ মার্চ, ২০১৫

প্রেমহীন সংসার



প্রেমহীন সংসার
- যাযাবর জীবন

সূর্যবৃষ্টিতে ভিজে ঘুম ভেঙ্গে যায় সকালটার
আমি গভীর ঘুমে
আকাশের রোদডানায় দুপুর ঝিমায়
আমি তোর আবেশে;
বসন্ত বিকেলে মনখারাপ ঝরে পরে
আমি স্বপ্নের দেশে
সূর্যটা টুপ করে ডুবে যেতেই অন্ধকার
আমি তোর বুকে;
আকাশে চাঁদ উঠতেই
তোর আর আমার প্রেম ঠোঁটে ঠোঁটে
তারপর সারারাত দুজন দুজনে
চাঁদ ডুবে যেতেই ক্লান্তির ঘুম।

সূর্যবৃষ্টিতে ভিজে ঘুম ভেঙ্গে যায় সকালটার
আমি গভীর ঘুমে......
যদি প্রেম থাকে, ক্রমাগত.....................

আর নয় তো সাপেও ডিম পারে।




সোমবার, ২ মার্চ, ২০১৫

বেনিয়া



বেনিয়া
- যাযাবর জীবন

জীবনের কানাগলির শেষ মাথায় কবরের হাতছানি
মাটিতে মিশতেই হবে একদিন,
সবাই জানি;
তারপর আবার পুনরুত্থানের দিনে
হিসেবের খোলা-খাতায় ভালোমন্দের নিক্তি-মাপা,
তাও জানি
তবুও প্রতিদিন মারামারি হানাহানি;
কত রক্তের বন্যা বইয়েছি অর্থলিপ্সায়
কিংবা ক্ষমতার নেশায়;
দিন তো শেষ হয়ে এলো রে, হায় হায়!
কিভাবে, কোথায় নিয়ে যাব
সঞ্চিত টাকার পাহাড় কাঁড়ি কাঁড়ি?

ও বাবারা,
কবরে যদি নাই আটে আমার মার্সিডিজ গাড়ি
ওটা তবে রইলো মেয়ে জামাইয়ের জন্য
তবে স্বর্ণের বারগুলো কিন্তু দিতে ভুলিস না ভরে হাড়ি;
যদি বিচারদিন বলে কিছু থেকে থাকে
ওপরওয়ালার সাথে বিনিময়ের কিছু তো থাকলো সাথে!

আর উত্তরসূরি হিসাবে ক্ষমতার সিংহাসনটা
ভাগ করে নিস তোরা এ জগতে।



নির্ভরতা



নির্ভরতা
- যাযাবর জীবন

কবেই তো বাঁধ দেয়া হয়ে গেছে অনুভূতিগুলোতে
সমাপনি রেখা টানা হয়ে গেছে ভালোবাসাতে,
তোর আগমনে;
নতুন আহ্বান এখন আর দোলায় না হৃদয়
যা কিছু পুরনো স্মৃতি সব মনের ডাস্টবিনে,
তোর আগমনে;

ঘুমের ঘোরে হাত বাড়িয়ে পাশে তোর ছোঁয়া,
তারপর পরম নির্ভরতায় আবার গভীর ঘুমে;
কেও তো আছে পাশে!

স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক কি এমনই হয়?


রবিবার, ১ মার্চ, ২০১৫

এখনো তুই



এখনো তুই
- যাযাবর জীবন

খুব হরহামেশা তোর কথা এখন আর মনে হয় না;
তবুও যখনই একা একা
কেও যেন উঁকি দিয়ে যায় মনের জানালায়,
খুব চেনা,
খুব, খুব মুখ চেনা কেও;
গোল গোল চেহারা
বড় বড় চোখ
এই যেন টুপ করে গড়িয়ে পড়লো দু ফোঁটা মুক্তো
আমি হাত পাতি মুক্তো ধরতে
শূন্য হাতে হাহাকারের ছোঁয়া লাগে
তারপর সব কেমন জানি শূন্য লাগে;
মাঝে মাঝে খুব অদ্ভুত এক অনুভব
কে যেন ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে আছে আমার দিকে
যেন উঁকি দিয়ে দেখছে আমায়
যতই আমি চোখের আড়াল করতে যাই তাকে
সে যেন আমার ভেতরটাকে দেখে;
"সে কি তুই?"

অনুভবের জানালায় এখনো কেন আগুনের ঘ্রাণ?
মনের ভাপে আমারই কেন হৃদয় গলে?
ঘুম ভাঙ্গা চোখের পাতায় শুকনো লবণের দাগ
জলের তলে কোথায় যেন আগুন জ্বলে।