বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

মন-ঘরে বন্দি



মন-ঘরে বন্দি
- যাযাবর জীবন


এক এক জনের চোখের দৃষ্টি এক এক রকম
কারো সূঁচ এর মত তীক্ষ্ণ
কারো বা ছুড়ির মত ধারালো
কারো কারো সামনে দাঁড়ালে শান্তি শান্তি লাগে
কিছু মানুষ আছে, যাদের সামনে দাঁড়ালে গা ঘিনঘিন করে
চোখের সামনে,
আমি দৃষ্টির কথা বলছি
মনের দৃষ্টিভঙ্গি চোখে ফুটেই ওঠে;
মন-আয়নায় যেদিন আমার কালো দৃষ্টিভঙ্গি দেখেছি
সেদিনই সরে এসেছি মানুষ থেকে দূরে
বহুদূরে;
আমার সামনে দাঁড়ালে কারো যেন গা ঘিনঘিন না করে।

মনের ভেতর, গোপন একটা ঘর
সবারই থাকে,
কারোটা সূর্যের মত
কারো জ্যোৎস্নার মত
আমারটা মিসমিশে কালো;
যেদিন মন জেনেছে আমি রাত
সেদিনই সরে এসেছি মানুষ থেকে দূরে
বহুদূরে;
আমার সামনে দাঁড়িয়ে কেও যেন অন্ধকার না হয়ে ওঠে।

রাতের বাস রাতের ভেতর
অন্ধকার অন্ধকারে,
আমার খোলা চোখে আলো সয় না
ঘুমচোখে কোন স্বপ্ন খেলে না
আমি মানুষ থেকে দূরে
বহুদূরে,
বন্দি করে ফেলেছি নিজেকে নিজে
মন-ঘরে;

যদি কোনদিন শুধরে নিতে পারি নিজেকে
সেদিন না হয় আবার তাকাব, মানুষের চোখে।








হ য ব র ল




হ য ব র ল
- যাযাবর জীবন


কাগজ আর কলমের যুদ্ধ
মনের যত আঁকিবুঁকি
কারো গল্প লিখার বৃথা চেষ্টা
কারো বা কবিতা আঁকার

ঐ যে ঠোঁটের বাঁকে এক চিলতে হাসি
আনন্দের একটা ছোট গল্প

চোখের কোনে এক ফোঁটা লবণ জল
প্রেমের একটা অধ্যায়

বুকের গভীর থেকে উঠে আসা দীর্ঘশ্বাস
একটা বিচ্ছেদের কবিতা

আর নিথর পড়ে থাকা ঐ যে শব্দহীন শব
একটা জীবন উপন্যাস

কলমের কি সাধ্য আছে জীবন লিখার!
আমি শুধুই হ য ব র ল আঁকি।




মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

নীল ডায়রির আলাপন



নীল ডায়রির আলাপন
- যাযাবর জীবন


যখন কাওকে মনের কথাগুলো বলা যায় না,
যখন অনেক কান্না জমে যায় মনের ঘরে,
তখন
ঠিক তখনই কিছু লিখতে ইচ্ছে করে তোকে
খুব করে,
আমি মনডায়রিটা নিয়ে বসে যাই;
নীল ডায়রি
তোর দেয়া
কষ্ট রঙের নীল ডায়রি;

আর আমি আমাতে একা হয়ে যাই
সবার থেকে দূরে
মনের ঘরে,
তারপর তো শুধুই তুই আর আমি
আর গোটা গোটা হরফে ডায়রি ভরে ওঠা নীল কষ্টগুলো
আমি মন খুলে ডায়রি লিখি তোকে;

কি লিখি?
সে অনেক অনেক কথা
আমাদের দুজনার কথা
শুধুই যেগুলো আমাদের খুব গোপন ছিল
তোর আর আমার মাঝে,
মনে আছে তোর?
আচ্ছা থাক
গোপন কথা গোপনই থাক
শুধুই আমার অনুভবে
ডায়রিতে না হয় নাই লিখলাম সেগুলো কালো কালিতে,
তবুও যখন খুব বেশী কষ্ট হয় তখন ঠিকই লিখে ফেলি
একটি দুটি কথা
উঁহু! কালিতে নয়, চোখের জলে;
চিন্তা করিস না,
সে ডায়রি কখনোই পৌঁছবে না তোর ঘরে;
আর পৌঁছলেই বা কি!
চোখের জলের লিখা কে আর পড়তে পারে বল?

আচ্ছা! ধর
কোন এক দিন
হুমম, কোন একদিন,
তুই ঘুমিয়ে আছিস আলুথালু
আর আকাশবাড়ি থেকে কোন এক ডাকপিয়ন পৌঁছে গেল তোর দোরে
কড়ানড়ার শব্দ শুনতে পাবি সেদিন?
না থাক!
কোন পিওন পাঠাব না তোর ঘরে,
আমি নিজেই চলে যাব কোন একদিন
হুট করে তোর দোরে
লুকিয়ে রাখা নীল ডায়রিটা হাতে করে;

ততদিন না হয় থাকুক সেটা আমার কাছে!
আমি রেখে দিয়েছি সেটা অনেক যত্ন করে
মনের আলমারিতে,
পড়ে ফেললে তো ফুরিয়েই গেল
তাই না?

নাহ!
নীল ডায়রিটা তোকে দেব না,
থাকুক না কিছু কথা তোর অজানা!!!







ভাবনার এখন তখন


ভাবনার এখন তখন
- যাযাবর জীবন


একটা সময় ভাবনাগুলো সুনির্দিষ্ট ছিল
মন একীভূত ছিল তোতে;

আজকাল মন আর কোথায় মনে'তে থাকে?
মনের কত ডালপালা হয়েছে!

এখন ভাবনাগুলোর বদল
প্রহরে প্রহরে
দিনে দিনে
ক্ষণে ক্ষণে
ঋতুতে ঋতুতে;

তুই এখনো শীতের কুঁকড়ে থাকা ভাবনার সাথে
ভরা বর্ষার ভাবনা মেলাতে যাস
অথচ আমি তখন কুলকুল ঘামছি প্রখর গ্রীষ্মে;

সকালের ডানা মেলা পাখি সন্ধ্যেয় ঘরে ফিরবেই,
কে বলেছে?

কেও নদীতে সাঁতরায় ঘেমে
কারো জ্যোৎস্নার নদীতে অবগাহন প্রেমে

সময় নদীতে কখনো পলি কখনো বান
আর ভাবনাগুলো পাখির ডানায়

পৃথিবীর সময়ে এখন দুপুরের দ্বিপ্রহর
কাজে ব্যস্ত সবাই, কাজের সময়;
আর আমার?
চল মন এখন ঘুমের বাড়ি
স্বপ্নে স্বপ্নে একটু আদিখ্যেতা করি,
প্রেমের আবার নির্দিষ্ট সময় আছে নাকি?

তোর সুনির্দিষ্ট ভাবনায় হয়তো আমি
আমার অনির্দিষ্ট ভাবনায় শুধুই মন
বড্ড স্বার্থপর আমি, এখন তখন।






আক্রমণ




আক্রমণ
- যাযাবর জীবন


বড্ড বেয়াড়া আমাদের হৃদয়
বেয়াড়া মস্তিষ্ক,

বেয়াড়া ও আক্রমণাত্মক;

মাঝে মাঝে এমন বেয়াড়া আক্রমণ করে!
যে মন ঘুমিয়ে পরে মাটির ঘরে;

আচ্ছা মাটির ঘর কি খুব অন্ধকার?
ওখানে হাসি আছে?
আনন্দ?
দুঃখ?
বেদনা?
একদিন আমিও জানব
দেখিস! ঠিক জানব;

কেন এত হৃদয়ের আক্রমণ চারিদিকে?
কেনই বা মস্তিষ্কের ক্ষরণ, অন্ধকারে?

এক একটি আক্রমণ
অনেকগুলো কান্না;
আক্রমণ কি বোঝে?
উঁহু! বোঝে না;

আনন্দ তো সবাই আঁকে
আমি না হয় একটু দুঃখই আঁকলাম,
হৃদয় কিংবা মস্তিষ্কের আক্রমণে।




বুকের খাঁচায় আকাশ




বুকের খাঁচায় আকাশ
- যাযাবর জীবন


আকাশ কোথায়?
ঐ তো হেথায়?

মন কোথায়?
বুকের খাঁচায়;

কেও আকাশ ছুঁতে চায়
কেও মন,
কে আর কবে আকাশ ধরেছিল?
আমি তোর ধরাছোঁয়ার অনেক বাইরে;

অনেক দিন চিঠি লিখা হয় না তোকে;
আকাশ কেমন আছে?
কেমন আছে পাখি?

আমি ভালো নেই
আকাশ ছাড়া
পাখি ছাড়া
নীল ছাড়া;

আমি কোথাও যাই না,
আমার গন্তব্য নেই;
এই যে তোদের ঘরে ভর দুপুর
আর রোদ ঝরছে টাপুর টুপুর
এই যে মেঘলা আকাশ, হিমেল বাতাস
আর রিমঝিম ঝিম বৃষ্টি নূপুর
আমি এগুলোর কিছুই দেখি না
এগুলো এখন অবচেতন মনের অলীক কল্পনা,
আমি এখন চার দেয়ালে বন্দী;
ঘরের ছাঁদে আকাশ খুঁজি
মনের ছাঁদে কখনো মন, কখনো তোকে
অনেক দিন মন খুলে চিঠি লিখা হয় নি তোকে;

জানিস! একঠায় শুয়ে থাকাটা না বড্ড অদ্ভুত,
কেমন একটা আলসে ঝিমানি
চোখ ঘুমঘুম তো মন সজাগ
মন ঘুমঘুম তো চোখের দিন
এখানে রাত কোথায়?
কোথায় বা দিন!
এখানে কোনও আলো নেই
নেই অন্ধকার
এখানে নৈঃশব্দ্যের কান ফাটানো গান
আর একাকীত্বের হাহাকার,
মাঝে মাঝে আমার গলা ফাটিয়ে তোকে ডাকতে ইচ্ছে করে
কে কার ডাক শোনে আর মাটির ঘরে?

আলো কোথায়?
ঐ তো হেথায়?

দেহ কোথায়?
মাটিতে;

মাটি কোথায়?
আরে! এখন আর মন বাস করে না
বুকের খাঁচায়,
মাটি আর কোথায় থাকবে বল!

তুই কিন্তু এখানে আসিস না
খুব সহসা,
একাকীত্ব সইতে পারবি না।




আমি ক্ষুধার কথা বলছি




আমি ক্ষুধার কথা বলছি
- যাযাবর জীবন


একজন শরীর জড়িয়ে থাকে
আরেকজন মন;
আমি ক্ষুধার কথা বলছি,
ক্ষুধা, টাকা টাকা কয়;

ক্ষুধার কথা পেটের সাথে
শরীরে জড়িয়ে রয়
ক্ষুধা, কবিতা নয়;

মন ক্ষুধার সাথে সাথে রয়
শরীর মনের সাথে
ক্ষুধা, ঝলসানো রুটি নয়;

পেট শান্ত হয় খাদ্য পেলে
খাদ্য পেতে টাকা
আমার পেট শান্ত হলেই চলে;

দুই আর দুইয়ে চার হলে কি আর খাদ্য মেলে?
দুই আর দুইয়ে পাঁচ হয় ক্ষুধায় অন্ধ হলে
ক্ষুধা অংক নয়;

আমি শরীরের কথা বলছি
আমি মনের কথা বলছি
আমি ক্ষুধার কথা বলছি,
ক্ষুধা টাকার কথা কয়।





কোথায় রে তুই?




কোথায় রে তুই?
- যাযাবর জীবন


ছেলেবেলা,
ও ছেলেবেলা!
কেমন আছিস?
কোথায় রে তুই?

ছেলেবেলা
দুরন্তপনা
জলবিছুটি
শাপলা পুকুর
লাফালাফি
ঝাপাঝাপি
দিগন্ত মাঠ
ছেলেবেলা
কেমন আছিস?
কোথায় রে তুই?

কোথায় রে তুই
হারিয়ে গেছিস
মনের ঘরে
ঝুল বারান্দা
অনেক স্মৃতি
অনেক কথা
কেমন আছিস ছেলেবেলা?
কেমন আছিস?
কোথায় রে তুই?

দাতই গোটা
ঠোলুই ঠাস ঠাস
গুলতি চড়ুই
ডাহুক ডাক
বন জঙ্গল গ্রামটা জুড়ে
এখন সেসব মনের ঘরে
বাবুই বাসা
তাল গাছ
বাঁশের মই
তালের শাঁস
টই টই হৈ চৈ
মায়ের বকা
দাদীর আঁচল
কোথায় রে তুই ছেলেবেলা?
কেমন আছিস?
কোথায় রে তুই?

মেঠো পথ
কাঁচা রাস্তা
সারা দিনমান
ধূলি ধুলো
মহিষ গাড়ি
হাট হুরর হুরর
বটের পাতা
ধূলি ধুসর
সারাটা দিন
ধূলি মাখা
খালের উপর
বাঁশের সাঁকো
ঝাপাঝাপি
হৈ হৈ হৈ
ঝাঁকি জাল
মাছের খোলুই
পাতিল ভরা
শিং মাগুর কৈ
কোথায় রে তুই ছেলেবেলা?
কেমন আছিস?
কোথায় রে তুই?

ধানের ক্ষেত
সবুজ মাঠ
ঘরের উঠোন
ধানের গোলা
সকাল বিকেল
মুনি মিন্তি
পান্তা ভাত
মরিচ ডলা
ধানের রোঁয়া
সবুজ সবুজ
সোনা সোনা ধান
জাঁকালো শীত
পিঠা উৎসব
ধান ভাঙার গান
কোথায় সে সব দিনগুলো
কোথায় রে তুই?
কোথায় রে তুই?
কোথায় রে তুই ছেলেবেলা?
কেমন আছিস?
কোথায় রে তুই?





তুই আমি আর রাত




তুই আমি আর রাত
- যাযাবর জীবন


একদিন সবাই চলেই যায়
জানি, একদিন তুইও যাবি;
তবে একটা মিনতি
এভাবে ঢ্যাঁড়া পিটিয়ে
ঢাকঢোল বাজিয়ে
সবাইকে জানিয়ে যাস না,
আমি সয়ে নিলেও রাতের সইবে না;

একবার ভেবে দেখেছিস!
কত কত স্মৃতি
তোর, আমার আর রাতের;

আমাদের সারারাত জেগে থাকার স্মৃতি
সারারাত গল্প করার স্মৃতি
সারারাত ভালোবাসাবাসির স্মৃতি
সারারাত অভিমানে গাল ফুলিয়ে থাকার স্মৃতি
সারারাত বুকের পরে পরে থাকার স্মৃতি
প্রেম আর অভিমানে জড়াজড়ি হয়ে,
তুই, আমি আর রাত একসাথে;
অন্তত রাতের প্রতি তো একটু করুণা কর!
তুই এভাবে ডামাডোল বাজিয়ে চলে গেলে
দেখিস, রাত ঠিক মরে যাবে;

আমার যে রাত ছাড়া আর কিছু নেই।





প্রতিদান




প্রতিদান
- যাযাবর জীবন


প্রতিদান সবাই চায়
Cash এ অথবা Kind এ,
কেও সরাসরি
কেও ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে
কেও বা ঠারেঠোরে ইশারাতে;

আমি কতবার কতভাবে বলেছি!
ইশারা বোঝার ক্ষমতা ওপরওয়ালা দেয় নি আমাকে;
ঠারেঠোরে আমায় কিছু বলা আর অরণ্যে রোদন একই কথা;
কেন যে মানুষ এই সহজ সত্যটা বোঝে না!

পৃথিবীর গান শোনে নীল ধ্রুব তারা;
শোনে কি?
গায়কের মনোকষ্ট, স্রোতার কান নষ্ট।




বর্ণহীন মায়া



বর্ণহীন মায়া
- যাযাবর জীবন


কত রঙেরই অনুভূতিই না আছে!
কত কত রঙ আছে পৃথিবীতে;
রংবেরঙের অনুভূতিতে বড্ড এলার্জি আমার।

প্রেমে আমার বড্ড ভয়
প্রেম! নামেতেই মনে সংশয়
লাল নীল হলুদ বেগুনী
সাদা কালো কমলা সবুজ
হরেক রঙের প্রেম দেখা হয়ে গেছে জীবনে
আর না দেখলেও বাকি কটা দিন হেসে খেলে চলে যাবে;

স্নেহ মমতা ভালোবাসা?
তাও তো কম দেখলাম না
নানা রঙে স্নেহ
নানা রঙের মমতা
নানা রঙের ভালোবাসা
স্বার্থের রঙ আমার বড্ড হয়ে গেছে চেনা
এত এত স্নেহ মমতা ভালোবাসা দেখতে দেখতে আমি রংকানা;
এখন আগ বাড়ানো স্নেহ মমতা দেখলে ভয় করে
ভালোবাসা? নামটাই মন থেকে মুছে গেছে, মন ভয়ে;
এখন আর কোন রংবেরং এর অনুভূতি মনে দাগ কাটে না।

একজন দুজন খুব হাতে গোনা,
কোথায় যেন রয়ে গেছে মনের কোনে;
খুব কাছের কেও নয় তারা
তবুও প্রায়শই উঁকি মারে মনে
খোঁজ নেয়, খবর নেয়
আমায় না পেলে উতলা হয়,
কোন প্রেম নয়, ভালোবাসা নয়, স্বার্থ নয়,
মাঝে মাঝে মায়া দেখায়
শুধুই মায়া;
এদের মায়ায় কেন জানি চোখ ভিজে যায়;
মায়া কি তবে চোখের জল?
মায়ার রং কি বর্ণহীন?
কি জানি?
হবে হয়তো!
আচ্ছা! এখনো আমার চোখে জল আসে?
এখনো কেন মায়া উপেক্ষা করতে পারি না!
সম্ভবত চোখের জল বর্ণহীন বলে, কিংবা মায়া।






ঘুম ঘুম অন্ধকার




ঘুম ঘুম অন্ধকার
- যাযাবর জীবন


অসুস্থ শরীরে বড্ড অসুখ অসুখ গন্ধ
অসুস্থ শরীর জুড়ে হসপিটালের গন্ধ
অসুস্থ শরীরে মৃত্যুর গন্ধ;

অসুস্থ শরীরে মন মরে যায়,
ওখানে প্রেম নেই
কাম নেই
নেই হিংসা দ্বেষ অহংকার,
ওখানে শুধুই ক্ষমা আর ঘুম ঘুম অন্ধকার।




এই আছে এই নেই



এই আছে এই নেই
- যাযাবর জীবন


একদিন খররোদে দুজন
একদিন বৃষ্টিতে দুজন
একদিন জ্যোৎস্নায় দুজন
অনেক ভেজার পর
একদিন কান্নায় দুজন,
অনুভবগুলো বড্ড অচিন;

সময় বড় অদ্ভুত
এই আছে এই গত
টিক টিক টিক টিক
কাঁটা ঘুরছে ক্রমাগত,
সময় ঘড়ির চাকায়;

বড় অদ্ভুত সম্পর্ক
এই আছে এই নেই
টিকে থাকে স্বার্থ
আর নতুন সম্পর্ক
ক্রমাগত ক্রমাগত,
সম্পর্কগুলো বড্ড জটিল;

অদ্ভুত এই জীবন
এই আছে এই নেই
টিক টিক টিক টিক
চলছে সবই
কোন কিছু থেমে নেই
জীবন এমনই;

কখন যে নেই হয়ে যায়!
সময়
সম্পর্ক
আর জীবন,
চোখের নিমিষে;
কে বলতে পারে?



রঙ বদল



রঙ বদল
- যাযাবর জীবন


আকাশ রঙ বদলায় দিনে
এক এক রঙ দিনের এক এক প্রহরে
কালো রঙ ধরে রাতে,
মনের রঙ বদলায় প্রেমে
লাল হয় বিচ্ছেদে,

পাথর কি বদলায়?
পাহাড়?
সাগর?
আকাশের শুধু রঙেরই বদল, দিনে ও রাতে;
আকাশ আর বদলায় কই?
তবে মন বদলায়
সময়ের সাথে সাথে
মন তো আর আকাশ নয়!

আমিও বদলে গিয়েছি বয়সে
বদলাতে বদলাতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছি
খুব শিগগীরই একসময় রাত হয়ে যাব
তারপর একবারে ঘুম হব মাটিতে;
মাটি রঙ বদলায় না কখনোই।

তুই অনেক বদলেছিলি প্রেমে
অনেক বদলেছিস বিচ্ছেদে
এবার থিতু হ সংসারে।



অনিশ্চিত



অনিশ্চিত
- যাযাবর জীবন


আজকাল প্রায়শই সকাল হয় দ্বিপ্রহরে
আজকাল সারাদিন কাটে আলসে ঘুমঘোরে
আজকাল বিকেলকে বিষণ্ণ লাগে না আর
আজকাল আমিই বিকেল, সূর্য ডোবার কাল
আজকাল সন্ধ্যার আগেই চোখ অন্ধকার হয়ে আসে
আজকাল একদমই চাঁদ দেখি না রাতে
আজকাল আর বৃষ্টিতে ভেজা হয় না আগের মত
আজকাল ধুয়ে ফেলেছি মনে প্রেম ছিল যত;

আজকাল বড্ড থিতু, কোথাও যাওয়া হয় না
আজকাল অনিশ্চিত ঐ রাস্তাগুলো বড্ড অচেনা
আজকাল একদম স্থির হয়ে গেছে মন
তোর কাছে আর ছুটে যায় না যখন তখন
অনেক পথচলা হয়েছে, শেষটা জানা হয় নি রাস্তার
কে জানে জীবনের সমাপ্তি কোথায়, কখন, কার!




মায়া



মায়া
- যাযাবর জীবন


বড্ড মায়া তোর চোখে
যখন চোখ চেয়ে থাকিস,
বড্ড মায়া তোর হাতে
যখন হাতে হাত রাখিস
বড্ড মায়া তোর বুকে
যখন আমায় অনুভব করিস
বড্ড মায়া তোর মনে
যখন আদর করিস;

মায়া প্রেম নয়
মায়া নয় ভালোবাসা
মায়া শুধু মায়াই
হৃদয় অনুভবে
কেও বুঝুক আর না বুঝুক, মন বোঝে;

মায়ার প্রতিদান দেয়ার সাধ্য নেই আমার
শুধু অনুভবে তুই।



বিষণ্ণ তুই একা



বিষণ্ণ তুই একা
- যাযাবর জীবন


উদাসী তুলিতে বৃষ্টির রঙ
আঁকতে গেলেই জলে ডুবি
ক্যানভাসে রঙ বসে না
জলে ধুয়ে যায় সব ছবি

এখানে আজ ঝুম বৃষ্টি
ভিজছি তোতে একা
ওখানে সন্ধ্যা, ডুবছে সূর্য
বিষণ্ণ তুই একা।





সময়ের এখন আর তখন




সময়ের এখন আর তখন
- যাযাবর জীবন


পাখির ডানায় সময় উড়ে
মনের ডানায় তুই
মায়া হরিণী থাকুক দূরে
মনের ঘরে তুই;

সময় আসলেই উড়ে যায় সময় ডানায়
পিছু পড়ে থাকে কিছু অনুভব
কিছু অনুভূতি
কিছু ভালোবাসা
কিছু স্মৃতি;

অনেক দিন হয়ে গেছে দেখা হয় নি তোর সাথে
এখন খুব মাঝে মধ্যে চিঠি লিখিস তুই বড্ড অগোছালো হয়ে
দায়সারা ভাব তোর চিঠিতে ফুটে ওঠে;

আগে চিঠি লিখতি তুই মনের মাধুরী ঢেলে
নিয়মিত চিঠি লিখতি কাগজে কলমে;

এখন তো দিন বদলেছে
বদলেছে যুগ,
ডিজিটাল যুগ;
যুগের সাথে তুইও ডিজিটাল হয়ে গিয়েছিস
মনের ভাব পৌঁছে দিস আমার ঘরে
নেট এর বদৌলতে;

একটা কথা কি জানিস!
হলুদ খামে নীল কাগজে যে চিঠি পেতাম
তাতে তোর হাতের স্পর্শ থাকতো
থাকতো তোর শরীরের গন্ধ
মিলনের তীব্র আকাঙ্ক্ষা
ভালোবাসার তীব্র অনুভূতি
আর অব্যক্ত এক মায়ার ছোঁয়া,
আর আমার অপেক্ষা ছিল ডাকপিয়নের
আর দরজায় কড়ানড়া তো ছুটে যাওয়া;

ডিজিটালে সে সব আর কোথায় বল?
তুই চিঠি লিখিস ল্যাপটপ বুকে নিয়ে
নেটের বদৌলতে মুহূর্তে টিং করে আমার ইন-বক্সে
না আছে অপেক্ষার আনন্দ না আছে তোর গায়ের গন্ধ,
ইদানীং তোর চিঠি লিখার ফুরসতও যেন কমে গেছে
হয়তো আমারও অপেক্ষার
ইন-বক্সও টিং করে উঠে না এখন আগের মত আর;

সময়ের কারাগারে আমরা সবাই বন্দী
তুই, আমি সকলেই
বন্দী জীবিকার কারাগারে
বন্দী জীবনের কারাগারে;
আর অনুভূতিগুলো?
ঐ যে পাখির ডানায়......

মাঝে মাঝে মায়াহরিণীর চোখ দেখলে মায়া হয়
কি এক অব্যক্ত অনুভবে চেয়ে থাকে
সময়ের দিকে!
আচ্ছা! তারও কি চিঠি লিখার কেও আছে?
তার জন্যেও কি কেও অপেক্ষায় থাকে?
কিংবা তার চিঠির;

কত কিছুই না অজানা রয়ে যায়!
শুধু সময় উড়ে চলে সময় ডানায়
আর মনের ডানায় তুই;

এখনো অবচেতন মন অপেক্ষায় থাকে;
যদি কখনো তোর সময় মেলে!
যদি কখনো তোর ইচ্ছে হয়ে!
যদি কখনো অতীত নাড়া দেয় তোকে!
যদি আবার হাঠাৎ একটি চিঠি পাই
হলুদ খামে, ভাতের আঠায় মুখ বন্ধ
নীল কাগজে কালো ফাউন্টেন পেনে
গোটা গোটা হরফে তোর হাতের লিখা চিঠি
যেখানে মিশে থাকবে তোর গায়ের গন্ধ।







চাঁদ ডুবিয়ে





চাঁদ ডুবিয়ে
- যাযাবর জীবন


দেখ! কি সুন্দর জ্যোৎস্না উঠেছে
চল কোথাও ঘুরে আসি,

চলো;

কিছু খাবি? চল কোথাও বসি,

হুম;

কি খাবি?

চুমু;

ফাজলামি করিস না, বল কি খাবি?

চুমু;

ধ্যাত! ওটা খেলে কি পেট ভরে?

আমার মন ভরে;

.
.
.
.

তবে চল, চুমু খাই চাঁদ ডুবিয়ে।









চেনা চেনা, অচেনা অনুভূতি




চেনা চেনা, অচেনা অনুভূতি
- যাযাবর জীবন


তুই প্রায়ই জিজ্ঞেস করিস,
ভালোবাসো আমায়?

আমি চুপ করে থাকি
উত্তর জানা নেই আমার;

আমি জানি না ভালোবাসা কি?
যে ভালোবাসা বোঝেই না সে উত্তর দেবে কি?

ভালোবাসা কি?
তুইই বলে দে না রে;

এই যে কুয়াশা ভোর
আর মন কেমন করা লালচে রোদ,

এই যে বিষণ্ণ দুপুর
আর হরিৎ বিকেল,

এই যে মন খারাপ উদাস সন্ধ্যা
আর নির্ঘুম রাত,

এই যে হলুদ জ্যোৎস্না
আর চাঁদের মন খারাপ,

এই যে প্রহরে প্রহরে তোর কথা মনে হওয়া
আর অষ্টপ্রহর নষ্ট কষ্ট;

তোর জন্য হঠাৎ হঠাৎ মন খারাপ
আর বৃষ্টি বৃষ্টি মন;

তোর জন্য মন বৃষ্টি
আর চোখ লবণ;

আমার জানা নেই হঠাৎ হঠাৎ কেনই বা তোর কথা মনে পড়ে
আর দুপুরের কড়া রোদেও মন শ্রাবণ

যখন তোর কথা মনে হয়, মন বৃষ্টি
আর চোখ লবণ

আমার জানা নেই সন্ধ্যায় পাখিদের ঘর ফেরা দেখলেই
কেন তোর কাছে উড়ে যায় মন
আর আকাশে চাঁদ দেখলেই রাত নির্ঘুম

আমার সত্যিই কোন কিছু জানা নেই;

আচ্ছা এত এত যে জানা জানা, অজানা অনুভব
আর চেনা চেনা, অচেনা অনুভূতি
এগুলোকে কি ভালোবাসা বলে?

উত্তর জানা নেই;

আচ্ছা!
ভালোবাসা কি রে?
তুইই বলে দে না রে।







কিসের অহংকার



কিসের অহংকার
- যাযাবর জীবন


এই যে শরীর
বীর্য থেকে সৃষ্টি মাটির তৈরি,
এক একজনের এক এক গঠন;

ছেলেদের এক রকম
মেয়েদের একটু অন্য রকম
সবাই কিন্তু মাটিরই তৈরি;
এত অহংকার কিসের?

সব ছেলেই একই গঠনের
শরীর ও মনে;
কেও একটু স্থুলো
কেও লিকলিকে
কেও সুঠাম গড়নের
কেও একটু লম্বা
কেও বা খাটো;
শারীরিক গঠনে হয়তো একটু মন খারাপ
বেশীরভাগই তোয়াক্কা করে না
কারো কারো মনখারাপ
কারোর বা অহংকার?
সবাই তো মাটিরই তৈরি
মাটিতেই যাবি;
দেমাগ কেন?
কিসের অহংকার?

সব মেয়েদের শারীরিক একই গঠন
মন? লক্ষ রকম;
কেও একটু স্থুলো তো মন খারাপ
কেও বা লিকলিকে, মন খারাপ
কারো গায়ের রঙ ময়লা, মন খারাপ
কেও ধবধবে ফর্সা, মন খারাপ
কেও লম্বা তো কেও খাটো, মন খারাপ
গঠনে একটু এদিক ওদিক
মন খারাপ, সৃষ্টিকর্তার দোষ
তুষ্টি কোথায়? শরীর ও মনে;
কেও একটু সুন্দরী, অহংকার
কেও বেশী সুন্দরী, বড্ড দেমাগ;
আরে! সবাই তো মাটিরই তৈরি
মাটিতেই যাবি;
দেমাগ কেন?
কিসের অহংকার?





হাতছানি ডাক




হাতছানি ডাক
- যাযাবর জীবন


কত কত হাতের ডাক
কত রকম হাতছানি
মনের ডাক কোথায় আজকাল?
স্বার্থের ডাক বুঝি সবখানি

কত রকম চেহারার মানুষ
কত কত রঙ
রঙ বেরঙ এর হাতছানি কত
কত কত তাদের ঢং

আমি কি খুব বেশী চেয়েছি?
দিনে চেয়েছি প্রখর সূর্য আলো
রাতে একটু ঘুম চেয়েছি
আর অন্ধকার, ঘুমকালো

আলো কোথায়? বিষণ্ণ দুপুর
হলদেটে ম্যাড়ম্যাড়ে আলো
আঁধার কোথায়? ধুসর ধুসর
চাঁদনিও ধোঁয়াটে কালো

স্বার্থের ডাক চেখে চেখে আজ
মনেতে পড়ে গেছে দাগ
হাতছানিতে তাই বড্ড ভয়
ভালোবাসাবাসি আমার জন্য নয়

কত রকম হাত কত রকম ডাক
ইশারা আমি বুঝি না রে নারী
ভালোবাসে হাত বাড়াস না আর
ভালোবাসায় আমি আনাড়ি।






মন ছুঁয়ে চোখ



মন ছুঁয়ে চোখ
- যাযাবর জীবন


মন ছুঁয়ে ছুঁয়ে মেঘ
চোখ ছুঁয়ে ছুঁয়ে জল
শরীর ছোঁয়াছুঁয়ি খেলায় হেরে যায় মন
আর মন খেলায় আমি,
দেখ! কত সমুদ্র লবণ জমা হয় চোখ চুয়ে চুয়ে;

তোর সাথে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলাটাই ছিল আমার ভুল,
ঠোট ঠোঁটে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা
সেদিন এমনই এক রাত্রি বেলা;

চাঁদনি কবে ছুঁয়েছিল মধ্য দুপুর?
চাঁদ খেলায় চাঁদনির হার অমাবস্যায়
আর মন খেলায় আমার;

আমার জানালার পাশে অনেকগুলো কদম ফুটেছে
তুই নিবি? আমার হাত থেকে,
তবে আয় মধ্যরাতে সূর্য ঘুমানোর পরে;
আমি স্বপ্ন ছুঁয়ে ছুঁয়ে কদম মাখাবো তোর চাঁদ গায়ে
তুই আমায় ছুঁয়ে ছুঁয়ে জ্যোৎস্না মাখাবি এই চাঁদনি রাতে
তারপর না হয় কান্না ছুঁয়ে ছুঁয়ে আবার আলাদা হব দুজন দুদিকে;

পাহাড়ের সাথে কেবল ঝর্নাই মেশে রে,
সাগর অনেক দূরে।




অলীক



অলীক
- যাযাবর জীবন



যা আমি পাই না
তা কখনোই আমার নয়
শত, হাজার, লক্ষ, কোটি চেষ্টা করে যাই
অলীক ধরতে চাই,
হাতে শুধুই শূন্য
আর মন হাহাকার;

তবুও অলীক ধরার চেষ্টায় অবিরত কষ্ট
আর যন্ত্রণার হাহাকার,
স্বপ্নগুলো বড্ড কাঁদায়।





মায়ার পালক



মায়ার পালক
- যাযাবর জীবন


কাল দিনটা ছিল হলদেটে খয়েরি
আর মন ছিল ধুসর কালো
সারাদিন ধরে ধরে খুব অদ্ভুত ভাবে
আকাশে একটা কাক উড়ছিল বড্ড দিশা-হীন হয়ে হয়ে,
কালো বিশাল একটা দাঁড়কাক;
ইদানীং তো দাঁড়কাকের দেখা মেলাই ভার
সত্যিকারের ভালোবাসার মত;

খুব অদ্ভুতভাবে তোর জন্য মনে কেমন যেন একটা মায়ার ছায়া
অনেকটা ভালোবাসার মত;
ধ্যাত! আমি ভালোবাসা আর কোথায় পাব বল?
ও শুধু মায়াই রে,
মায়ায় কি আর ভালোবাসা হয়?
ওতে শুধু মন কাঁদা হয়
আর কিছু নয়;

আচ্ছা তোর মনেও কি আমার জন্য অবোধ্য কোন মায়ার অনুভূতি হয়?
আরে, আরে! ভালোবাসাবাসি আবার কি রে?
ওতে বড্ড বেশী মন কাঁদে
তারচেয়ে মাঝে মাঝে মন কেমন করা অবোধ্য মায়াই অনেক ভালো
ঠিক আকাশে ওড়া ঐ দাঁড়কাকটার মত,
ঝড়ো বাতাস এলে হারিয়ে যাবে অনেক দূরে
মায়ায় উড়ে উড়ে;

একদিন ঠিক দেখিস আমিও উড়ে যাব অজানা এক দূরে
তোর ঘরে মায়ার পালক ফেলে
অনেক কাঁদবি বুঝি?

তারচেয়ে এখনই মায়ার পালক ফেলে দে গা ঝাড়া দিয়ে।




অবশ অবশ



অবশ অবশ
- যাযাবর জীবন


শরীরের বাঁ পাশটা অবশ অবশ
বাঁ হাত
বাঁ পা
মস্তিষ্কের অর্ধভাগ, কেবল বাঁ পাশ,
বাঁ দিকের কিডনি
বাঁ ফুসফুস
সবকিছুই কেমন অবশ অবশ
শুধুই বাঁ পাশ;

আচ্ছা হৃদপিণ্ড তো একটিই
সেটাও বাঁ পাশ,
এখনো ধুকপুক করছে, ধুঁকে ধুঁকে
থেমে গেলে তোকে ভালোবাসব কি করে?

কখনো উত্তর জানা হবে না
ধুকপুক থেমে গেলে।



হাসি ও কান্নায় বহুরূপী



হাসি ও কান্নায় বহুরূপী
- যাযাবর জীবন



হাসি ছড়িয়ে দিতে হয়, দাঁত বের করে
খুশি বৃদ্ধি দাঁতের ঝলকানিতে;
সুখের কথা জানান দিতে হয়
সুখ বেড়ে যায়, বিলানোতে;
কষ্ট চেপে রাখতে হয়
কি দরকার মানুষকে কষ্টের ভাগীদার করে?
দুঃখগুলো শুধুই আমার
বহুরূপী হাসিয়ে কি হবে?

আপনজনেরা সুখে হাসে, দুঃখে কাঁদে,
বহুরূপীগুলো সুখে জ্বলে, দুঃখে হাসে
চোরের মত মুখ লুকিয়ে।




ফেরা হয় না




ফেরা হয় না
- যাযাবর জীবন



নদীতে জোয়ার ভাটা;

মানুষের জীবন?
সে তো নদীই
কখনো জোয়ার কখনো ভাটা;

সমাপ্তিটা কেও দেখে
কেও উপেক্ষা করে
ওখানে শুধুই ভাটা
আমি প্রচণ্ড টান অনুভব করি সমাপ্তিতে
স্রোতের বিপরীতে কে আর টিকে থাকে?

ভাটিতে প্রচণ্ড টান
নেমে যাওয়ার,
টান মাটিতে, মাটি হওয়ার;

ফেরাটা ইচ্ছের অধীন না
ইচ্ছে থাকলেও ফেরা হয় না।