সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

ভার্চুয়াল টিং



ভার্চুয়াল টিং
- যাযাবর জীবন


বেশ কিছুদিন তোর কাছ থেকে কিছু শুনি নি
বেশ কিছুদিন নীরব হয়ে আছে মুঠোফোন,
তুই ভালো আছিস তো!
ভালো আছে তোর মন?

জানিস! আজ না পুরনো দিনগুলোর কথা বড্ড মনে পড়ছে
সেই পুরনো কাগজ কলমের চিঠি লিখার দিনগুলোর কথা,
আচ্ছা! তোর কি লাল ডাকবাক্সের কথা মনে আছে?
এক সময় লাল ডাকবাক্স উঠে গেলেও তুই কিন্তু চিঠি লিখতি নিয়মিত
মিষ্টি গন্ধ-ওয়ালা নানা রঙের কাগজে গাঢ় কালো ফাউন্টেন কলমে
পোস্টঅফিসের বদৌলতে,
মাঝে মধ্যে বাহারি সুন্দর খামগুলোর মাঝে তোকে খুঁজতাম কল্প রঙে,
বাসার ঠিকানাটা তোর মুখস্থই ছিলো
সপ্তাহে একটা না হলেও মাসে তিনটা চিঠি তো নিশ্চিত ছিলো,
তারপর সময়ের গতি দ্রুত হয়ে গেলেও চিঠির গতি হয়েছিলো ধীর
প্রথমে পাক্ষিক, পরে মাসিক, তারপর তো কালেভদ্রে
জানিস! আজো সেই সুগন্ধি কাগজে লেখা তোর চিঠির স্তূপ সাজানো আছে
বইয়ের আলমিরার গোপন ঘরে
কাঠের তাকে সারে সারে;
বড্ড মিস করি আজো মাখন কাগজে ফাউন্টেন কালির দাগ
সবুজ, হলুদ, নীল আরো কত কত বাহারি রঙের খাম!
কি অদ্ভুত আবেগেই না চিঠি লিখতি ভালোবাসার রঙ মাখিয়ে
সেই কাগজে চিঠি লিখার দিনও শেষ হয়ে গিয়েছে যুগের পরিবর্তনে;

তারপর আসলো নেটের যুগ
কালেভদ্রে টুং করে উঠতো ইমেইল আলাপন
তোর নাম ভেসে আসতেই মনের ভেতর কি এক আনন্দ নহর!
তুই বুঝবি না,
এক সময় কালেভদ্রে থেকে মোটামুটি নিয়মিত ইমেইল চিঠি
তারপর তো ভার্চুয়ালের কত উন্নতি!
ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ভাইবার, হোয়াটসআপ আরো কত কি?

এখন তো যখন তখন
তোর মনে হলেই আমার মোবাইলে টিং
আমার মনে হলো তো তোর মোবাইলে ঢিং
কিন্তু বেশ কিছুদিন হয়ে গেছে তোর কোন খবর নেই
ভার্চুয়ালে তোর অনুপস্থিতি
আর আমার বড্ড কেমন কেমন
জানিসই তো!
তোর খবর না পেলে আমি হয়ে যাই অন্যরকম;

তুই ভালো আছিস তো!
আমি ভালো নেই
ভালো নেই তুইহীন;
চিঠি চোখে পড়লে মোবাইলে টিং ছুঁড়িস,
কিছু লিখতে হবে না
শুধু একটা ডট এঁকে দিয়ে একটিবার টিং।








কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন