শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

চাঁদের দোষ


চাঁদের দোষ
- যাযাবর জীবন

রাতের ফিকে চাঁদ, আকাশ থেকে নেমে আসে অস্পষ্ট ধুসর
আলো হয়ে যায় অন্ধকারের চাদর, ভাবাবেগে প্রেমিক
আপ্লুত প্রেমিকা, নানা রঙের রঙিন স্বপ্ন আঁকা
কিংবা সাদাকালো দুঃখের গাঁথা
ভরে ওঠে কবিতার খাতা।

কেন যে চাঁদ ওঠে আকাশে'তে?
পাগল করতে!!



মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

হিপোক্রেসি

হিপোক্রেসি
- যাযাবর জীবন

একে অন্যের গায়ে লেপ্টে থাকে
সামাজিক বন্ধনের সুতোজালে
অথচ দুজন দু ভুবনে মনে মনে
অন্ধকারে দুজনে দুপাশ ফেরে
দুজনার চোখ ভেজে লোনাজলে
অন্য দুজনার বাস দুজনার মনে
ভালোবাসা গুমরে কাঁদে
সামাজিক বন্ধন হো হো হাসে।


রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

বোধের বোধ


বোধের বোধ
- যাযাবর জীবন

ছবি তোলে অনেকেই
ক্যামেরা বড্ড সস্তা হয়ে গেছে ইদানীং,
ফ্রেম বোঝে কজন?

ছবি আঁকে হাতে গোনা
অল্প কয়েকজন, দামী ক্যানভাসে;
কথা বলাতে পারে কজন ?

ভালোবাসে সকলেই
প্রেমে পড়ে সবাই, হরহামেশাই;
কাঁদাতে পারে কজন?




শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

রঙ

রঙ
- যাযাবর জীবন

স্বপ্নের সাদাকালো লেন্সে
রঙিন ছবি তোলা হয় না,
কাঠ-পেন্সিলের ভাঙ্গা শিষে কি
রঙিন ছবি আঁকা যায়?

তুই নেই,
জীবনটা বড্ড বেশি সাদাকালো;
স্বপ্নে রঙ ধরে না।

বেদনার রঙ নীল হয় কিভাবে?
কিংবা ক্ষরণের লাল।


বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ভাষা শহীদ স্মরণে


ভাষা শহীদ স্মরণে
- যাযাবর জীবন

বর্ণ ছাপা মায়ের ভাষার বাংলা বর্ণমালায়
অক্ষরগুলো বইয়ের ছাপায় শহীদের রক্তলেখায়
কত শব্দে কবিতা বানিয়ে শুধিব শহীদের ঋণ
ভাষা শহীদেরে স্মরণ করি অমর একুশে দিন
যায়নি বৃথা রক্ত তাদের দিয়েছিল যারা প্রাণ
হৃদয়ে তারা বাংলার প্রতি ঘরে স্মৃতিতে চির অম্লান।

লাগামছাড়া

লাগামছাড়া
- যাযাবর জীবন

ভাঙবে তাসের ঘর
খুব জানা কথা
তবু ঘর স্বপ্নে গড়ে;
কাঁচের ঘর
টোকায় ভাঙ্গে
তবুও মন আয়না ঘরে।

কেন যে স্বপ্ন লাগামছাড়া
মনটা বড্ড বেয়ারা।

বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

বোধ

বোধ
- যাযাবর জীবন

কেও চায় মানুষ পাশে
কেও চায় কুকুর মানব
যার যেটা প্রয়োজন।

কেও বসে থাকে
প্রভুভক্তির আশায়
কেও পা চাঁটে
প্রভুভক্তি দেখায়।

কেও টুকরো ছিটায়
কুকুরের তরে
কেও কুঁড়িয়ে বেড়ায়
কুকুর হয়ে।

কেও প্রভুভক্তিতে
গলা বাড়ায়
যতক্ষণ হাড়ের টুকরো পায়
কেও ঘেউ করে
গলা চড়ায়
টুকরো হারানো শঙ্কায়।

দুজনই মানুষ কিংবা প্রাণী
তবু দুজনের বোধ
দু রকম
কেও ছিটিয়ে ভালোবাসে
কেও কুঁড়িয়ে
দুজন বোঝে দুজনারে
দেয়া নেয়ার সং সারে
পরস্পরের প্রয়োজন।

কেও মানুষ ভালোবাসে
কেও কুকুর।

বড় বিচিত্র এই
মানুষের খোলসে কুকুর জীবন
ভালোবাসার ধরণ কিংবা প্রয়োজন।

মানুষ থেকে বিচিত্র প্রাণী আর কে আছে?


মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ভঙ্গুর

ভঙ্গুর
- যাযাবর জীবন

এখনো সেই আগের মতই আছিস তুই
চঞ্চলা হরিণী
লাস্যময়ী তরুণী
বুনো ডাকিনী
যখন তখন উঁকি
এ ঘর সে ঘর
মনের ঘরে উঁকি দিতেই যত আলসেমি;
আগের মতই বড্ড ভয় তোর মনে
যদি ভালোবাসা দাগ কেটে বসে যায় হৃদয়ে
ছলনার খেলা খেলবি কারে নিয়ে?

কাঁচের হৃদয় অপেক্ষায়
ভাঙছে ছলনার টোকায়।

সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

অন্তরদ্বন্দ্ব


অন্তরদ্বন্দ্ব
- যাযাবর জীবন

এপারে বন্ধন
ওপারে খোলা আকাশের হাতছানি
মাঝখানে সম্পর্কের বেড়াজাল
দ্বন্দ্বের ছুরি দ্বিধাহ্নিত মনে
সিদ্ধান্তহীনতা রন্ধ্রে রন্ধ্রে
মাটির মানুষ জ্বলে অন্তরদ্বন্দ্বে।

শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ধারণ


ধারণ
- যাযাবর জীবন


আমি পাহাড়ে,
তোর পদচিহ্ন রেখে এসেছিস সেথা

আমি সাগরে,
তোর আসার কথা ছিল হেথা

তোরা আসা হয় নি
বড্ড খেয়ালী;

হেয়ালী বাতাস
খররোদ মধ্যাহ্ন
গাংচিলের ডুবো ঠোঁট
ঢেউয়ের আছড়ে পড়া কান্না
সাগরের বুকে;

খেয়ালী মন?
লবন জলে লোনাজল মেশে।

ধারণ ক্ষমতা পরিমাপ করে কে?
চোখের
হৃদয়ের
সাগরের।

চোখ খর খর লাগছে কেন?

ভালোবাসা দিবস

ভালোবাসা দিবস
- যাযাবর জীবন

ভালোবাসা দিবস
হয় নাকি?
তুই বিহীন

তুই পাশে থাকলে
ভালোবাসা
আমার, প্রতিদিন

একটি দিন
ভ্যালেন্টাইন ডে
বোধগম্য নয়
নামকরণের প্রয়োজন।

নামকরণে তুই আমার হবি?
দিবস ছাড়া ছেড়ে যাবি?
এরই নাম প্রেম?
ভালোবাসার অবমূল্যায়ন।

দিনের জায়গায় দিন রবে
ভালোবাসা, অনুভবে।

রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ইন্সট্যান্ট সম্পর্ক



ইন্সট্যান্ট সম্পর্ক
- যাযাবর জীবন

সম্পর্কগুলো বড্ড ইন্সট্যান্ট হয়ে গেছে
যুগের হাওয়া বদলের সাথে সাথে

ঠিক যেন ইন্সট্যান্ট নুডুলস
গরম পানি ঢালো
খেয়ে ফেলো
বেশি গরম হয়ে গেছে?
নুডুলস একটু গলে গেছে
ডাস্টবিনে ফেল।

কিংবা ধর প্যাকেট করা ইন্সট্যান্ট পুরি বা চিকেন নাগেট
গরম তেলে দাও
মচমচে ভেজে খেয়ে ফেলো
একটু পুড়ে গেছে?
কড়াই উপুড় ডাস্টবিনে
তিতকুটে ভাব যে চলে এসেছে।

কি সহজ!
ইন্সট্যান্ট সম্পর্ক
গড়া
আর ভাঙ্গা
ইন্সট্যান্ট,
চোখের নিমিষে।

আমার আর ইন্সট্যান্ট সম্পর্ক হলো না
না গড়া
না ভাঙ্গা
আদি যুগের মানুষ যে!

ইন্সট্যান্ট সম্পর্ক গড়ার মাঝে কি সুখ আছে?
ভাঙ্গার বেদনা কি ক্ষরণ তোলে?
হৃদয় মাঝে;
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।






আশা


আশা
- যাযাবর জীবন

আশা করলেই কি আসা হয়?
পাড়ি দিতে হয় নানা রঙের কত দুঃসময়;

রোদে পোড়া মন জন্ডিসে ভোগে
বেদনার নীল আকাশে
নিরাশায় মন ধু ধু মরুভূমি
ধুসর ছায়া চিলের ডানায়;
ডাকিস কেন রে?
আসা হয় না ডাক দিলে
মন খারাপের জ্যোৎস্না রঙ
কালো হয়ে যায় ঘুম রঙে।

আশা করলেই তো আর আসা হয় না
রঙের সমুদ্র পাড়ি দিতে হয়।

শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

পারা আর না পারা



পারা আর না পারা
- যাযাবর জীবন

সারাটা জীবন
কাটিয়ে দিলেম
নদী নালা ক্ষেতে

শেখা হলো না ধান বোনা এখনো।


জীবনের একটা বড় সময়
পার করে দিলেম
পাশাপাশি দুজনে

প্রেম হবে কি ভাবে?


ঠোঁট আড়াল করে রাখিস
গাঢ় লাল লিপস্টিকে,
ঠোঁটেরও তো কামনা বাসনা আছে

চুমু খাইনা কত দিন হয়ে গেছে!!!......


শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

খোলস বদল


খোলস বদল
- যাযাবর জীবন

পলকহীন মাছের চোখ
না হয় দেখাক আপাত: মৃত
জলের সাথে মিশে থাকে
পদ্মপাতায় জলকুমারীর স্বপ্ন দেখে হাসে,
কাঁদে স্বপ্নভঙ্গে;
জলের সাথে লোনাজল
এক ধারায় অবিরত,
কে বোঝে?
আমি মাছ চোখে চেয়ে থাকি
স্বপ্নভঙ্গ দেখি
শব্দের
কবিতার
প্রেমীদের
কবিদের
মানুষের।

প্রেমী হতে হতে কবে যে কবি হয়ে গিয়েছি
কবি হতে হতে কতবার মানুষ হতে চেয়েছি
মানুষ হতে হতে কবে যে মাছ হয়ে গিয়েছি
জানি না,
এখন আর কিছুতেই কিছু যায় আসে না;

তোমাদের ব্যবহারে ধন্য হয়ে গিয়েছি
ক্রমাগত ধন্য হতে হতে চোখের পর্দা খুলে রেখেছি
এখন আমি খোলস বদলে ফেলা শিখে নিয়েছি
ভেতর ও বাইরের, আপাদমস্তক।

এবার কাঁদাও তো আমায় দেখি!!


বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

প্রেম আসে প্রেম যায়



প্রেম আসে প্রেম যায়
- যাযাবর জীবন

রাতের কুয়াশায় ভিজে নিছক প্রেমিকের মত জ্যোৎস্না বিলাস, ছাঁদের ওপর
শীতে ঠকঠক করে কাঁপতে কাঁপতে সর্দি গর্মি, আমি মহা প্রেমিক;
যেন প্রেমিকার বাসস্থান আকাশ পানে, দেখছে আমায় চক্ষু মেলে; আদতে শুয়ে স্বামীর বুকে; ওম ওম লেপের নীচে, আরো কত কি!!! আমি ঠান্ডায় জমে মরি। মূর্খতার একটা সীমা থাকা দরকার।

প্রেমের ভাবাবেগে ডুবছি, ডুবছি সাগর জলে মনে মনে,
আদতে গোসল করা হয় না সপ্তাহে দুদিন, শীতের দিনে ঠান্ডা পানিতে বড্ড পেট মোচড়ানো অনুভূতি; পানিকে এড়িয়ে চলি। হিপোক্রেসি ভাইরাস প্রেমকে নিয়ে গেছে শিল্পের পর্যায়ে; যত্তসব। ছেকা খাওয়া প্রেমিক প্রবর।

কিছুদিন প্রেম করি তারপর মনে মনে প্রেমের কবর খুঁড়ি, দিন আর রাতে
ঠিক ছেকা খাওয়ার পর পরই, খুরপি হাতে ভাবলেশহীন বাগানের মাটি খুঁড়ি;
বেড়ার ওপাশে নতুন সুন্দরী দেখা যায়, ছাগলে বেড়া খায়, গোলাপ তুলে সুন্দরীর খোপায়; নতুন করে ঝাঁপ, প্রেমে ডানা পোড়াতে বড্ড আনন্দ;
আগুন দেখলে পতঙ্গের হুশ জ্ঞান আর কাজ করে না।

প্রেম আসে প্রেম যায়, নদীর জোয়ার ভাটায়
মনের পুকুরে জোয়ার ভাটা দোলা দেয় না, একটা নারী ছাড়া;
মাঝে মাঝে মনের পুকুরে প্রেমের ঢিল পড়ে, একটু ঢেউয়ের দোলা;
আবার নিয়মমতো প্রেমের যতি, প্রেমিকা হাওয়া; প্রেমিক ক্ষণিক বিরতিতে কুর্চা মুরগীর মত ঝিমায়, গান গায়। প্রেমে মরা বলে জলে ডোবে না; আরে একই পুকুর বার বার কাটলে পানিটা আসবে কোথা থেকে?

কবি বলে প্রেম তোরে করিয়াছে মহান, আরে কবির মাথা আউলা
প্রেম আবার মহান করে নাকি? প্রেমিকের পকেট তো ফাঁকা, ইদানীং আর চিনাবাদামের ঝাঁঝে প্রেম হয় না। নিদেনপক্ষে একটু আধটু চাইনিজ; হালকা অন্ধকার না হলে চুমু খেতেও তো লজ্জা। এতটা অসভ্য এখনো হইনি বাবা।

আলোছায়ার আড়াল আবডালে, গাছের চিপায় অন্ধকার কোণে
সভ্য আর অসভ্যতায় মিলে, উম্মা উম্মা প্রেম কথা বলে;
ঠোঁটের গরম শরীরে, মাথার ফিউজ যায় পুরে, ব্ল্যাক আউট;
আপাত: বিরতি লাভ ইউ, লাভ ইউ মার্কা চায়নিজ প্রেমের;
ছেঁকা খেয়ে গান বের হয় প্রেমিকের গলা চিরে, বেসুরা সুরে।
সমাধি নাকি ফুলে ফুলে ঢাকা, মহান কিংবা মহতী প্রেমের;
প্রেমের আবার লিঙ্গ আছে নাকি?





সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

ব্যর্থতা



ব্যর্থতা
- যাযাবর জীবন

আমার হৃদয় ছুঁতে পারিস নি কখনো;
কেন জানিস?
হৃদপিণ্ডটা আমার বামদিকে
তুই আয়নায় ধরতে গিয়েছিস;

প্রতিসরণের নিয়ম না জেনেই......


ক্ষরণ




ক্ষরণ
- যাযাবর জীবন

আর কত খুঁড়বি চোরাবালি?
জ্বালামুখ ভরে গেছে নোনাজলে
লাভায় বাষ্পীভূত সাগর

নূপুর পায়ে বুকের চাতালে
তা তা থৈ থৈ

সবুজ গালিচা বিছিয়ে দেব
রক্তাক্ত হওয়ার আগে.........




নিদ্রাভাবনা


নিদ্রাভাবনা
- যাযাবর জীবন

আমার সাথে রাতের ঘুমের
জন্ম জন্মের শত্রুতা

একজন ঘুমায় অবলীলায়
আরেকজন অপলক চেয়ে থাকে
ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হতে

কাঁচে পা কাটিস না আবার যেন.........



বাসি স্মৃতি




বাসি স্মৃতি
- যাযাবর জীবন


রাতের কোলে শুয়ে বাসি অন্ধকার
ঘুমোতে চায়,
চাঁদে হেলান দিয়ে বাসি জ্যোৎস্না
জেগে কাটায়,
কনকনে শীতের টাটকা রাত
পরে আছে কুয়াশার চাদর গায়,
আর তোর গায়ের বাসি গন্ধ
আজো লেপ্টে আছে আমার সারা গায়ে;

আমি জেগে থাকি রাতের পর রাত
তোর বাসি স্মৃতি মনে করে
ঢুলঢুলে চোখে কিছু বাসি ঘুম নিয়ে।


প্রতিবিম্ব



প্রতিবিম্ব

- যাযাবর জীবন

আয়নায় কেবল মাত্র প্রতিবিম্ব দেখি নিজের,
প্রতিবিম্বের আশেপাশের ছায়াগুলোকে
এড়িয়ে চলি সযতনে
দ্বিধা, ভয় কিংবা সংকোচে;
আমারই দেহ বিচ্ছুরিত কামনা বাসনা, লোভ, লালসা
আর যত খারাপ রিপুগুলো ছায়া হয়ে ঘোরে
আমারই আশেপাশে, নখ দন্ত মেলে;
ছিমছাম সুন্দর প্রতিবিম্বের পেছনের ছায়াগুলোর কথা
মানুষ জেনে গেলে কি হবে?



ভুল



ভুল
- যাযাবর জীবন


কখনো সুযোগ হলে
ভুলগুলোকে দাঁড়িপাল্লায় মেপে দেখিস
তোর, আমার; দুজনারই।

সামনে এসে দাঁড়াবে
তোর আর আমার মাঝের দূরত্ব
কিংবা সাগর আর চোখের জলের মাঝে পার্থক্য।

দাবানলে বন জ্বলে
দহনে একা আমি
মানবিক ভালোবাসার অমানবিক খেসারত
আমাকেই কেন একা টেনে যেতে হবে?


ভালো বাসা




ভালো বাসা
- যাযাবর জীবন


ভালো বাসা চেয়েছিলি তুই
ভালোবাসা নয়
ভালোবাসা ছিল অনেক ভাঁড়ারে দেবার
ভালো বাসা নয়।

বলা আর বোঝার মাঝে
ফারাক কেন যে এত
কোথাও কি জোড়ার নেই?
একটি স্বার্থ হীন সম্পর্ক।



নিদ্রাহীনতা




নিদ্রাহীনতা
- যাযাবর জীবন


ক্লান্তিকর দীর্ঘ দিনের শেষে
সূর্য চলে যায় নিদের দেশে
আবার সকালে ফিরে আসবে বলে;
জেগে থাকতে থাকতে কোন এক সময়
রাতেরও ঘুম পেয়ে যায়
চলে যায় সূর্যের ওপাশে
তার খুব একান্ত নিদের দেশে;
গভীর ঘুমে তলিয়ে স্বপ্ন দেখে
দিন, রাত্রি, চাঁদ, সূর্য আর প্রকৃতি
যার যার নিজের মতন করে;
ঘুম নেই শুধু আমার চোখেই
দিন আর রাত্রির পালাবদলে
নেই কোন স্বপ্ন
নেই কোথাও যাওয়া
নেই ফিরে আসা,
এখন রাতভর জেগে থাকি
আর শুধু তোর কথা মনে পড়ে।


গ্রহণ



গ্রহণ
- যাযাবর জীবন


ধুসর গোধূলি বেলায়
যখন একা হেঁটে যাই বালুপথ ধরে
তখনই খুব মনে পড়ে
তুই আর পাশে নেই আমার;

কি জানি কোন গ্রহণ লাগার মুহূর্তে
আকাশের নীল রঙ এসে
মিশেছিল আমাদের ভালোবাসায়।




শিকারি




শিকারি
- যাযাবর জীবন

বয়স হয়েছে চাঁদের
হৃদপিণ্ডের ধুকপুক শোনা যায় ক্ষীণ
কুয়াশায় চাঁদর পড়েছে গায়
আলো বিলায় তাই বড্ড দীনহীন।
চন্দ্রগ্রস্ত মন তবু বঁড়শি বেয়ে যায়
জ্যোৎস্নালো মেখে নিতে রাতে সারা গায়
চাঁদের আলো কুয়াশাতে ক্রমশই ক্ষীণ
ছিপ হাতে বসে থাকি কার লাগি কেন?


শীতার্ত



শীতার্ত

- যাযাবর জীবন


সূর্যোদয়ের সাথে সাথে অন্তরিত শীতার্ত রাত
ওম ওম ভাব ছড়ায় শীতের সকাল
দিনের আগমনে ব্যস্ত কোলাহল প্রকৃতির মাঝে;
সময় গড়ায়
মধ্যাহ্ন হেলান দেয় সন্ধ্যের বিকেলের সোনা রৌদ্দুরে
ছায়া বড় হয়
সন্ধ্যে ঘনায়
আবার রাত নেমে আসে
প্রকৃতির বুকে;
শীতের হিম বুলেট চিরে বসে চামড়ার ভেতর
মিশে যায় রক্তে
আঘাত করে অস্তিত্বে
প্রকৃতির খেলার কাছে পরাভূত
মানুষ নামক এক অসহায় প্রাণী।

একা



একা
- যাযাবর জীবন


হাজারো কোলাহলের ভিড়ে
নির্জনতা ঘিরে রয় আমারই চারিদিক জুড়ে
বড্ড ভালোবাসি চারপাশের মানুষগুলোকে
অথচ কি নিদারুণ অবহেলায় তারাই ফেলে ছুড়ে;
অন্ধকারে বড্ড আমার ভয়
দেখি না কোথাও আলোর দিশা
জ্যোৎস্নাকে খুব আপন মনে হয়
করি চাঁদকে ধরার মিছে আশা;
যদিও আলোকে বড্ড ভালোবাসি
হায় নিয়তি! আমি অন্ধকারে পড়ে থাকি
অনেক মানুষের ভিড়ে আমার বসবাস
অথচ আমি বেঁচে আছি একা - বড্ড একাকী।


ভাঙাগড়া



ভাঙাগড়া
- যাযাবর জীবন


দেখেছি অনেক ভাঙ্গা আর গড়া
নদীর কুল
নারীর মন
টুকরো টুকরো সম্পর্কের খণ্ড বিখন্ডিত শব
বাবা, মা, ভাই, বোন
স্ত্রী, পুত্র, কন্যা আর পরিজন;
জীবনের বেলা, অবেলা, কালবেলায়
ভাঙ্গা আর গড়ার প্রতিটি আয়োজন
ধুঁকে ধুঁকে বেঁচে থাকার যাপিত জীবন;
দায়ভাগ নিতে হয়েছে আমাকেই
প্রতিবার
প্রতিক্ষণ;
এ তোমার কেমন রঙ্গ-লীলা?
হে জীবন!


স্বপ্ন



স্বপ্ন

- যাযাবর জীবন


পাখির দুটি ডানা আছে
তবু ওড়ার সীমা আছে
বাতাসে ভর তুলে
ডানা দুটি মেলে দিয়ে;
ইচ্ছে-বিলাস যখন তখন
স্বপ্ন ডানায় ভেসে চলে
চোখ খুললেই ইচ্ছে-ডানা
ভেঙ্গে গড়ায় পাতাল পানে;
.........
বুকের ভেতর উথাল পাথাল
স্বপ্ন বড় কষ্ট আঁকে
আঁচড়ে ধরে বুকের খাঁচায়;
.........
মানুষ কেন স্বপ্ন দেখে?

চাঁদ



চাঁদ
-যাযাবর জীবন

ঘরের দরজা খুলে রেখ
সূর্য না ঢুকলেও আলো ঢুকবে
খুলে রেখ কাঁচের জানালা
চাঁদ না আসুক চাঁদনি আসবে
মনের জানালা খোলা রেখ
আমি না এলেও অনুভবে পাবে;

সবারই ফেরা হয়
ঘর আছে বলে
আমারই বন জ্যোৎস্না
চাঁদ খেলা করে।


পার্থক্য


পার্থক্য
- যাযাবর জীবন

তালা লাগা শব্দে স্তব্ধ কান
চারিদিক জুড়ে চাই চাই চাই
কাছের মানুষ কেন বোঝে না যে
আমার আর অর্থের যোগান নাই;
নাই নাই নাই চারিদিকে রব
তাদের মনের তৃপ্তি নাই
অর্থের কুমীর তারা পকেট ভারী নিজের
তবু আমারটাই যে চাই।

গাড়ির ইঞ্জিন মসৃণ চলে
তেলের যোগান যতক্ষণ আছে রে ভাই
সম্পর্কের ইঞ্জিন ভাঙ্গা পিস্টন
যখনই অর্থের যোগান নাই;
অর্থই অনর্থের মূল তা জানি ভালো
তবু সম্পর্ক টিকাতে চাই
এখনো আমি মানুষ আর পশুতে
পার্থক্য খুঁজে বেড়াই।



লোভ


লোভ
-যাযাবর জীবন


থেমে আছে কাকেদের ওড়াওড়ি
আজ আমার মাথার ওপরে
কাকেদের বড্ড দুর্দিন এখন
ভাতের অভাব যে এখন আমারই ঘরে;
দূর থেকে শকুনের পাখা ঝাপটানো দেখি
ভীত চোখে চেয়ে
লোলুপ দৃষ্টি বিঁধে ভেতরে অনুভবে
আছে, এখনো ওরা; আমারই শবের পথ চেয়ে......

মনপাত্র


মনপাত্র
- যাযাবর জীবন

ভিজে যাক শহর শীতের শিশির ভোরে
পুড়ে যায় দুপুর সোনালু রোদে ভিজে ভিজে
ধুসর কুয়াশার চাদর গায়ে লালাভ জ্যোৎস্না
ভেজা মনপাত্রে একইসাথে শুভ্র আনন্দ আর নীলাভ বেদনা.....


সতেজতা


সতেজতা
- যাযাবর জীবন


কালো যত নিষক কালোই হোক না কেন
তারই মাঝে কোথাও না কোথাও একটু আলোকচ্ছটা দেখাই যায়
জীবন যতই ধুসর হোক না কেন
কোথাও না কোথাও একটু সবুজের সমারোহ রয়েই যায়

পরিচয়


পরিচয়
- যাযাবর জীবন

দন্ত জিহ্বায় পিরিত ঝরে
কাজের বেলায় সরে পড়ে
খুব গোপনে কায়দা করে
যদি দেখতে হয় পাতা হাত
হি হি; ও কি! ও কি!
পালাচ্ছ কেন বাপু?
লজ্জা লাগে কি?

আমি কার, কে আমার?
বড্ড আজব এই সংসার......

রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

অন্ধকারের রূপ



অন্ধকারের রূপ
- যাযাবর জীবন

রাত পাহারায় রাতভর
আমি, তুমি, সে
চাঁদ, তাঁরা, প্রকৃতি
চলো না দেখে আসি
আমাদের সাথে সাথে
কজন জেগে আছে?

অন্ধকার নেমে আসে
চাঁদ হাসে
জ্যোৎস্না খেলে চাঁদনি রাতে

কখনো ঘোর অমাবস্যা
মুচকি হাসি তাঁরার ঠোটে
মিটমিট করে কথা বলে

রাত নামে
চারিদিক থমথম
ধনীর ভয় তস্করে
মায়ের ভয় ঘরে কুমারী মেয়ে
বাবার দুশ্চিন্তা
ছেলেটা এখনো এলো না ঘরে
দাদীর কোলে মাথা রেখে চোখ ঘুম ঘুম
রূপকথার জুজুবুড়ি এলো বলে

রাত নামে
অন্ধকার নামে
কালো রিপুগুলো থাবা মেলে
মুচকি হাসি নিশিকন্যার ঠোঁটে
টাকার টংকারে খিলখিল খেলে

রাত নামে
অন্ধকার চারিধার
সুখী দম্পতির মুখে হাসি
পরস্পর বাহুডোরে
কিছু দম্পতি খাটের দুপাশে
নির্ঘুম চোখ প্রহর গোনে
কালরাত ভোরে;
ঐ যে একটা বুড়ো ভাম
যুবা প্রেয়সীর বুকের ওম খোঁজে
শুয়ে থেকে স্ত্রীর বুকে মুখ গুজে;
ঐ যে দেখ, কুলবধু নারী
পরম নির্ভরতায় শোয়া স্বামীর বুকে
চোখে ভাসে নতুন পুরুষ
মনে নতুন স্বপ্ন আঁকে;
দিনের বেলায় এরাই কি অবলীলায়
সংসারের সং সাজে।

রাত হাঁটে অন্ধকারে
একজন ঘুমের ঘোরে হেঁটে চলে
একজন নিজে নিজে কথা বলে
কেও ছেঁড়া চটে হুহু কাঁপে
কেও নাক ডাকে লেপের তলে
রাতজাগা কানে বড্ড বাজে।

রাত গভীর হয়
ঠকঠক হেঁটে যায় শীতবুড়ি
লাঠিটা এবার বদলাতেই হবে।


শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

বৌ শাশুড়ি খেলা



বৌ শাশুড়ি খেলা
- যাযাবর জীবন

হাঁড়িকুঁড়ি ঝনঝন
হরদম ছিটিয়ে থাকে সব
তবলচীর ঠোকাঠুকি
তবলার ত্রাহি রব;
তোমার আমার কি?
শাশুড়ি বৌ এর দাঁ কুমড়ো খেলা
নিত্যই দেখছি।

গুমোট নিম্নচাপ সংসার আকাশে
ঝড়ো বাতাস বয়ে যায় হেঁসেলটা জুড়ে
তুমুল বর্ষা খুব মাঝে মাঝে
উঠোন থেকে শুরু করে শোবার ঘরে।

কুটকাচালি আর জোর গলাবাজি
নারী কন্ঠের শোর আসে ভেসে
কানে হাত দেয় টিকতে না পেরে
অসহায় পুরুষ অবশেষে;
কখন যে গ্রীষ্ম
কখন বর্ষা
আজ পিঠেপুলি
নাকি পাটিসাপটা
ঋতুর আগমন? শাশুড়ির মেজাজ
খাবার আয়োজন? বৌ এর মর্জির দাস
পুরুষ অসহায়
সংসার মেলায়;
অশান্তির স্ফুলিঙ্গ হরদম জ্বলে
বুকের চাতালে নাচে আগুনের ব্যালে
তবু সংসার বন্ধনের বেড়াজালে
সুখে দুঃখে মিলে মিশে যুগ যুগ চলে;
কিভাবে?
পুরুষ, তা জানে না
শুধুমাত্র শাশুড়ি আর বৌ'রাই জানে।





নোনাজল



নোনাজল
- যাযাবর জীবন

তুই আমার টুকরো ভুল
ভাবনায় চলে আসিস নিত্যই নির্ভাবনায়
মনের ঘরে দস্যু হানায়;
টুকরো মনের গভীর খাঁজে
টুকরো টুকরো স্মৃতি
হাত বাড়িয়ে মন ছড়িয়ে;

তারপর,

ভেঙ্গে পড়ে কাঁচের আয়না
চিনিগুড়ো ঝরে পড়ে দানাদানা
মিলিয়ে যায় মেঘের তুলো
একফোঁটা নোনাজল ঝরিয়ে।

ফুলের টোকা কখন দিয়েছিলেম
মনে পড়ে না।