শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৬

মাটির ভাপ



মাটির ভাপ
- যাযাবর জীবন

সূর্য পুড়ছে তাপে
মাটি পুড়ছে ভাপে
কারো শরীর পুড়ছে সূর্যের তাপে
কারো মন পুড়ছে ঈর্ষার ভাপে
আমি চোখ বন্ধ করে চাঁদনি দেখি মধ্য দুপুরে
আমার কি যায় আসে তাপে কিংবা ভাপে?
অভিমান চাপ ফেলে না ভোতা অনুভূতিতে
বৃদ্ধ শরীর অপেক্ষায় মাটি হতে
পুড়বে শরীর মাটির ভাপে
অনুভূতি কোথায় থাকে?

কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে আগুন সেজেছে লালে লালে
কার বেদনায় জারুলগুলো সেজেছে নীলে?
আমার চোখ বন্ধ মনের থেকে
মন বন্ধ প্রেমের থেকে
পুড়ুক না কৃষ্ণচূড়া দাবানলে জ্বলে জ্বলে
তোর মন পুড়ে জারুল হতে হতে আকাশ হয়ে যাক,
আমার কি যায় আসে?
বৃদ্ধ মন চাতক চোখে মাটির পানে তাকিয়ে থাকে
পোড়াতে শরীর মাটির ভাপে
অনুভূতি কোথায় থাকে?

আকাশে লটকে থাকা সূর্য গরম পোড়ায়
গরমে থমকে যাওয়া বাতাস আগুন ওড়ায়
ঝিম ধরা দুপুরে কাক ঘুমায়
অথচ মাটির ঘুলঘুলিতে রমণে মত্ত সুঁইচোরায়
গরমে তার কি যায় আসে?
এক এক জনের অনুভূতি এক এক রকম
শীত গরম দুপুর কিংবা রাতে
কারো মনে প্রেম কারো ঈর্ষা কারো বা ঘৃণা
অস্থির প্রকৃতির মত, কার কি যায় আসে তাতে?
বোধ বুদ্ধি অনুভূতিহীন এক বৃদ্ধ ঘুমিয়ে থাকে দুপুর রোদে
পোড়াতে শরীর সূর্য তাপে
পোড়াতে শরীর মাটির ভাপে
অনুভূতি কোথায় থাকে?

বৃদ্ধ মন কখনো কখনো চোখ মেলে
দেখে নিতে কতটুকু বেলা বাকি আছে,
পোড়াতে শরীর মাটির তাপে
মাটি হয়ে মাটির ভাপে।



বুধবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৬

গরম



গরম
- যাযাবর জীবন

সূর্যের আজকাল বড্ড মেজাজ গরম
তেঁতে থাকে সারাক্ষণই চরম
মেঘের তাই বড্ড অভিমান
নিরুদ্দেশে লুকিয়ে আছে এখন;

গাছগুলোও আজকাল হয়েছে তেমন
পাতা নাড়াতে বড্ড কষ্ট
শুধু কৃষ্ণচূড়া লাল হয়ে আগুন ঝরাচ্ছে
যেন গরমে মাথা নষ্ট;

মাটি তেঁতে ভাপ ছড়াচ্ছে
একটু খেতে জল
রাগ করেছে আকাশ
আর বৃষ্টি করছে ছল;

তৃষ্ণায় চাতক আকাশ পানে চায়
গাছের ডালে ডালে পাখিরা ঝিমায়
শকুনির ঠোঁটে শুকনো রক্ত উবে
ক্লান্ত পানকৌড়ি গলা পানি ডুবে;

আর মানুষগুলো? আজকাল আর মানুষ কই?
হয় দুপুর গরমে খরঠোঁটে লবণ চাটে বেড়াল জিহ্বায়
আর নয়তো ছটফটে রাতে আলুপোড়া হয় ধরিত্রীর ভাপে
হবে না? প্রকৃতি যে মুখ ফিরিয়েছে আজ মনুষ্যের পাপে;

তোর দেশে কি গাছ নেই রে সূর্য?
এখান থেকে না হয় পাঠিয়ে দেব কিছু বট কিংবা অশ্বত্থ,
বটের নিচে পাটি পেতে এক বার তুই ঘুমা
এত তেঁতে থাকিস না রে, একটুকু রাগ কমা;

তোর মনে কি মায়া দয়া হয় না রে কালো মেঘ?
একবার তোর ডানায় আড়াল কর গনগনে সূর্য'কে;
আর অভিমানে লুকিয়ে থাকিস না রে মেঘ মামা?
তৃষ্ণায় ছাতি ফাটে ধরিত্রীর, এবার তো বৃষ্টি নামা।







রবিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৬

অপেক্ষায় একা



অপেক্ষায় একা
- যাযাবর জীবন

ছাউনির বড্ড প্রয়োজন,
কারো কুকুর বিড়াল বৃষ্টি থেকে মাথা বাঁচাতে
কারো কাঠফাটা রৌদ্দুর থেকে আড়াল হতে

আড়ালের বড্ড প্রয়োজন,
কারো বাঁচার জন্য নগ্নতা থেকে
কারো যৌনতায় নিমগ্ন হতে

কেও ভেজে কান্নায়, কেও কামনায়
আমি ভিজি তোতে
অন্ধকার বড্ড প্রয়োজন অশ্রু লুকোতে

ঠোঁটের ভেতর হারিয়ে যেতে যেতে
শরীরের ভেতর শরীর খোঁজা তোর কাছে প্রেম
আমি তো'তে জড়িয়ে থাকি মনে মনে দিনে রাতে
আমি প্রেম শিখি নি,
চাঁদনি খুঁজতে গিয়ে তোকে খুঁজি
আকাশে চাঁদ উঠলেই
আমি প্রেম শিখি নি;

আমি মনে ছাউনি দিয়েছি তোর থেকে আড়াল হতে
নিজে অন্ধকার হয়েছি তোর চোখ ঢেকে দিতে
রাত্রি হয়েছি নিজের অশ্রু লুকোতে
আমি প্রেম শিখি নি;

জানালায় চাঁদনির ছায়া পড়লেই আমি চাঁদের দিকে তাকাই
তোকে দেখব বলে
একা একা,
মনে তুই উঁকি দিলেই আমি চোখ বন্ধ করে ফেলি
তুই স্বপ্নে আসবি বলে
একা একা,
তুই শরীরের অপেক্ষা করিস
আমি মনের
তুই ভালোবাসার অপেক্ষায় থাকিস
আমি তোর
তুই জীবনের হাত ধরে রঙধনু দিন
আমি তোর অপেক্ষায় রাত্রি
তুই সবাইকে নিয়ে মেতে থাকিস
আমি তোর অপেক্ষায় একা;

তবুও আমি প্রেম শিখি নি।

অপেক্ষা তো একাই করতে হয়,
তাই না?



শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৬

প্রতীক্ষায় অন্ধকার


প্রতীক্ষায় অন্ধকার
- যাযাবর জীবন

অন্ধকারে বসে থেকে
মনটা তোর উচাটন
আনমনে কার খোঁজে?
দৃষ্টি ক্ষণে ক্ষণ,

কারো জন্য পথ চাওয়া, তীব্র প্রতীক্ষায়
আসবে কি আসবে না, মন তোর জানে না,
কারো বাহুডোরে ঢুকে যাওয়া, সমর্পণের আকাঙ্ক্ষায়
কেন সে আসে না, মন তোর মানে না;
রাতের অন্ধকারে ভ্রুকুটি হেনে বসে আছিস দৃঢ়তায়
অপেক্ষার প্রহর কেটে যায় প্রতীক্ষায়, আর প্রতীক্ষায়;

রাত দুপুরে গভীর চিত্তে
এদিক ওদিক কাকে খুঁজিস?

আমি কোথাও নেই;
হু হু বাতাস বয়ে যায় অন্ধকারে।




বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৬

মনে মনে ভালোবেসে



মনে মনে ভালোবেসে
- যাযাবর জীবন

চট করে ভালোবাসা হয় না
অথচ অভিমানে চট করেই ঘৃণা,
সময় লাগে না ভুল ভাঙতে
অনেক সময় লেগে যায় ভুলে যেতে,
মেঘ জমলেই বৃষ্টি নামে না
ক্ষরণের কান্না ভেতরে থামে না;

আমায় তুই বদলে দিয়েছিস ভালোবেসে
আর ঘৃণায়;

আমি আর সেই আগের আমি নেই,
আগের মত ভালো লাগা
মন দিয়ে ভালোবাসা
হাসি ঠাট্টা আনন্দ আর খেলার;
আমি আর আগের মত নেই,
মন রেখে কথা বলার
কথায় কথায় কাব্য রচার
মনের সুখে কবিতা লেখার;

তুইও বড্ড বদলে গেছিস, আমায় ভালোবেসে
আর সরিয়ে দিতে যেয়ে ঘৃণায়;

বছর লেগে যায় সম্পর্ক জুড়তে
তুই ভাঙতে গিয়েছিলি মুহূর্তে, রাগে;
বছর লেগে যায় ফুল ফুটতে
তুই পায়ে মাড়িয়েছিলি মুহূর্তে, অভিমানে;
আমায় ভাঙতে গিয়ে মনের সাথে জুড়ে নিয়েছিস ঘৃণা
নিজের সাথে অভিনয় আর ছল,
এখন কেন রে কাটাস দিন অপেক্ষায়?
আর রাত্রি নোনাজল;

আমায় যতই রাবার ঘষে মুছে যাস
তবুও আমি তোর মনে আসবই প্রতিদিন
ভালোবাসা কিংবা ঘৃণায়।




শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৬

ঝুল



ঝুল
- যাযাবর জীবন

বড্ড ঝুল জমে গেছে স্মৃতির ধুলোতে
ঘরের আসবাব পত্রগুলোর যত্ন নেয়ার কেও নেই
তুই চলে যাবার পরে,
কেও এখন আর শার্টের বোতাম লাগিয়ে দেয় না
গোসলের পরে কেও বলে না, আয় তোর মাথাটা মুছে দেই
বরফ কুঁচির লেবুর সরবতের স্বাদ ভুলে গেছি সেই কবেই,
তুই চলে যাবার পরে;
একটি দুটি চুল যা ছিল সব ঢেকে গেছে মাকড়সার জালে
এখন মস্তিষ্কের কোষে কোষে তেলাপোকা হাঁটে
আজ আর অনুভূতি বলে কিছু নেই
তুই চলে যাবার পরে;

এখন লোভী দৃষ্টিতে বালি ঝরা দেখি বালিঘড়ি থেকে,
আর মাটির ডাকের অপেক্ষায় দিন গুনি
মাটি হতে।



শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৬



বিসর্জন
- যাযাবর জীবন


পথ পাড়ি দিয়েছিলি তুই
একা,
হাত ছেড়ে দেয়ার পর;
আমিও বা কোথায় নৌকো ভাসিয়েছিলাম জলে?
নদী মরে যাওয়ার পর তো শুধুই শুকনো বালিয়াড়ি,
মরুভূমিতে বেঁচে থাকা দায়;

এই ঢের ভালো,
না হয় কিছু অভিমান বুকে ধরে পথ হাঁটছিস
নতুন পথ খুঁজে নিয়ে;

আমি না হয় রাত্রিই হলাম, মধ্য-দুপুরে;
তোর কাছে।



কবিতার আঁতুড় ঘর



কবিতার আঁতুড় ঘর
- যাযাবর জীবন

মাছ খেলা করে জলে
হাঁসের ডুব সাঁতার
প্রেমিক হাবুডুবু খায়;

নারী নাচায়
নর নাচে
প্রেম কাঁদায়;

লাল কৃষ্ণচূড়া ডালে ডালে
আগুন লাল হয়ে দাউদাউ জ্বলে
ক্ষরণও নাকি লাল;

সূর্য জন্ম দেয় আলোর
চাঁদ চাঁদনির
প্রেম অন্ধকারের;

ভালোবাসা জন্ম দেয় কষ্টের
কষ্ট ক্ষরণের
ক্ষরণ প্রেমিকের;

জন্ম হয় কবিতার।




স্মৃতি



স্মৃতি
- যাযাবর জীবন

খুব অল্প কিছু দিন,
কখনো সপ্তাহে এক আধটা দিন
কিংবা কখনো বা মাসে এক আধ বার
তোর সাথে কাটানো মধুর সময়গুলো;
তাও তো হয়ে গেছে অনেক দিন
কিংবা অনেক মাস
বছর
নাহ আসলে পার হয়ে গেছে যুগ,
কিন্তু এখনো মনে হয় এই তো মাত্র কটা দিন
দেখা হয় নি তোর সাথে;

অল্প কিছু স্মৃতি
খুব অল্প কিছু দিনের
দগদগে তাজা এখনো মনে
কাটানো অল্প কটা দিন তোর সনে;
তোর সঙ্গ তখন হাসাতো, মন ভালো রাখতো
আজ কাঁদায়, স্মৃতি হয়ে;

এখন মাঝে মাঝে ভাবি
যদি আরো বেশী সময় কাটানোর সুযোগ হতো তোর সাথে
তবে হয়তো আরো কিছু বেশী স্মৃতি আঁচর কাটতো মনের মাঝে,
এখন প্রতিদিন মনে রবার ঘষে ঘষে
তোর স্মৃতিগুলো মুছতে মুছতে ক্লান্ত হয়ে যাই মাঝে মাঝে;

প্রেমের স্মৃতিগুলো শুধুই কাঁদায়
দহনে মিশে,
প্রেমিকের স্মৃতি থাকতে নেই
ভালোবেসে, ভালোবেসে।




বুধবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৬

পালা বদল



পালা বদল
- যাযাবর জীবন

গা পুড়িয়ে দুপুর রোদে'তে মন পুড়িয়েছিলি প্রেমে
একটিবার চোখে চোখ রাখতে কত মাইল হেঁটেছিলি ঘেমে
সেদিনের তোর প্রেমের আকুতি নেই নি মনেতে মেনে
মন আমার মনে বাঁধা ছিল অন্য কারো প্রেমে;

বছর ঘুরে ঘুরে, যুগ ঘুরে এলো স্মৃতিগুলো অমলিন
তোর কথা মনে এলেই মনে হয়, এইতো মাত্র সে দিন
সেদিনের তোর মলিন মুখখানি আজো মনেতে বাজে
স্মৃতি-বন্দী এ্যালবামগুলো আজ পুড়ছে চৈত্রের ঝাঁজে;

অনেক দিন জানা হয় নি রে কেমন আছিস তুই
জীবন থেকে হারিয়ে গেছিস সুদূর বিদেশ বিভূঁই
কতগুলো কষ্ট মনেতে আসে কলমে যায় না লেখা
কষ্টগুলোর অঙ্ক কেবল, দিবাস্বপ্নে যায় আঁকা;

জীবন একই আছে জীবনের কাছে সময় বদলে গেছে
আয়না একই আছে পুরনো ঘরেতে চেহারা বদলে গেছে
আমি একই আছি আগের মতই, বদলে গেছিস তুই
আমায় একা করে তুই চলে গেছিস অচেনা বিদেশ বিভূঁই।







মঙ্গলবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৬

অস্থির মন



অস্থির মন
- যাযাবর জীবন

সেদিন ছিল বৈশাখের দিন,
একসাথে ঝড় দেখেছিলাম তখন
হয়তো বৃষ্টি নামবে আজ, কি জানি কখন!

ঝড়ের শব্দে তোর আগমন ঘরে
বাতাসে ওলটপালট মন
বৃষ্টি আসলেই নিশ্চিত ভিজে যাব, তো'তে এখন;

মধ্যাকাশে এখন মধ্যদূপুর
মেঘের আনাগোনা বেশ
তুই হীনা মনাকাশে, মন খারাপের আবেশ;

কাল রাতে গভীর স্বপ্নে
চুপিচুপি কে এসেছিল ঘরে?
ঘুম ভাঙতেই চোখে সূর্য, মন কেমন করে;

আকাশটা মেঘলা, বড্ড গুমোট গরম
অস্থির আবহাওয়া, হয়তো কারণ
নাহ! আসলে তোকে দেখার জন্য অস্থির হয়ে আছে মন।




সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৬

দায়ভার



দায়ভার
- যাযাবর জীবন

সকালের দায় মাথা পেতে নেয় দুপুর
দুপুরের দায় বিকেল
বিকেলের দায় সন্ধ্যে
দিনের দায় রাত্রি নিতেই অন্ধকার
সূর্য এসে রাতের দায়ভার মাথা পেতে নিতেই নতুন ভোর
এভাবে প্রতিদিন ঘুরে অষ্টপ্রহর;

প্রেমের দায়ভার মাথায় পড়লেই যাতনা
বুকে চেপে বসলে বেদনা
তুই আমার দায়ভার মাথায় নিয়ে সকাল হতে চেয়েছিস
আমি তোর দায়ভার বুকে চেপে রাত্রি হলাম;

প্রেমের দায় কান্নার রঙ
ক্ষরণের দায় লাল
আমি না হয় ভালোবাসার দায়ভার উড়িয়ে দিয়ে বিবর্ণ হলাম।




রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৬

দোষ



দোষ
- যাযাবর জীবন

শরীরে ছোঁয়া লাগলে বলিস কাম
মনে মন রাখলে বলিস প্রেম
আমার সবটাতেই দোষ হয়ে যায়;

তুই আমাকে জড়িয়ে রেখেছিস
স্বপ্নে ও জাগরণে
শরীরে ও মনে;

নারীর দোষ হয় না কোন কিছুতেই।



শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৬

ছুঁয়ে থাকার ইচ্ছে



ছুঁয়ে থাকার ইচ্ছে

- যাযাবর জীবন

তোকে ছুঁয়ে থাকা দিন ও রাতে
তোকে ছুঁয়ে থাকা ঘুম ও জাগরণে
তোকে ছুঁয়ে থাকা ভালোলাগার অনুরাগে
তোকে ছুঁয়ে থাকা ভালোবাসার অনুভবে
তোকে ছুঁয়ে থাকা নির্ভরতায়
তোকে ছুঁয়ে থাকা বিশ্বাসে।

ছুঁয়ে থাকতে ইচ্ছে করে
মন ও শরীরে,
তোকে।





শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৬

স্পর্শে মন



স্পর্শে মন
- যাযাবর জীবন

মাথায় হাত রাখতেই বুকে ঝাঁপ
কপালে চুমু খেতেই চোখে জল
ঠোঁট চুমতেই ভালোবাসা
হৃদয় ছুঁতেই তুই আমার;

স্পর্শ যখন দেহে তখন কাম
স্পর্শ যখন হৃদয়ে তখন ভালোবাসা,
তুই শরীর ধরতে চেয়েছিলি
আমি মন ছুঁয়ে দিয়েছি।



বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৬

পাথর রঙ



পাথর রঙ

- যাযাবর জীবন

আমি গাছ আমি পাথর
আমি নষ্ট আমি কষ্ট
আমি ফেলে দেয়ার দলে,
তুই ফুল তুই পাখি
তুই বৃষ্টি তুই কান্না
তুই ভিজে যাওয়ার দলে;

জলে দাগ দিতে চাস তুই নোনা জলে
আমি কান্না আঁকি জলরঙে
আমার কাব্য হতে চাস তুই মনে মনে
আমি কবিতা পোড়াই আনমনে;

তুই প্রেমে পড়ে কান্না
আমি কান্না শুকিয়ে পাথর
তোর নতুন দিন
আমি অন্ধকার কবর।




মঙ্গলবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৬

আমি তোর


আমি তোর
- যাযাবর জীবন

নদী হলে তুই পড়বি কোথায়?
আমি সমুদ্র হলাম;
মেঘ হলে তুই ঝরবি কোথায়?
আমি মাটি হলাম;
পাখি হলে তুই উড়বি কোথায়?
আমি আকাশ হলাম;
দুঃখ পেলে তুই রাখবি কোথায়?
তাই তো তোর কান্না হলাম;

আমি তোরই আছি, তোরই ছিলাম।





ভালোবাসার সুখ



ভালোবাসার সুখ
- যাযাবর জীবন

কেও ভালোবাসায় ভিজে কামে
ভালোবাসা-বিহীন রমণে কেও ভিজে যায় ঘামে,
মনের সরোবরে ডুব দিলেই আমি ভিজে যাই তোতে;
স্বপ্নে এসে ও না এসে ভেজাতে জুড়ি নেই তোর,
কান্না ও কামে;

চুমুতে না হয় ঠোঁট ভিজিয়েছিস
মন ভিজে কিসে?
ভালোবাসা থাকলে কাম নয়তো শুধুই ঘাম।




স্বপ্নে তুই



স্বপ্নে তুই

- যাযাবর জীবন

ডানা মেললেই আকাশ
উড়তে ভালো লাগে না কার?
আকাশ জোড়া মেঘ
জল গড়ালে বৃষ্টি;
মন খুললেই তুই
একি অনাসৃষ্টি!

আমার আকাশে মেঘ হ তুই
চল স্বপ্নে উড়ি।


সাগর মন



সাগর মন
- যাযাবর জীবন


চাকা ঘুরতেই মন
মন ঘুরলেই প্রেম
প্রেম টানতেই তুই
তোতে হারালেম।

মন টানলেই সাগর
সাগর ডাকলেই আমি
মনে মিশে মন
তুই আমি দুজন।

মেঘ চাইলেই জল
আমি চাইলে কান্না
সাগর কাঁদলে লোনা
তোকে হলো না চেনা।

সূর্য গড়ালে বেলা
সাগর গড়ালে জল
চোখ গড়ালে কান্না
বুঝি না নারীর ছল।

সাগরে আসলে মন বিশাল
পাহাড়ে গেলে মন আকাশ
আকাশে উড়লে মন পাখি
মনেতে তুই, তোতেই বুঁদ থাকি।







ভালোবাসতে নেই




ভালোবাসতে নেই
- যাযাবর জীবন

আমি যত না রাত
তার থেকে বেশি অন্ধকার;

কালোর সাথে আমার আঁতাত
তুই আলোকিত চাঁদনি রাত;
অমাবস্যাকে কেন'রে ভালোবাসলি?
সূর্য থেকে রাত্রি হলি
শামুকে পা কাটলি।
চাঁদকে ভালোবাসা যায়
রাত'কে নয়
কালো অন্ধকারের রঙ
মন হারাবার নয়;

এখন রাত্রি হলেই ভেড়ার পাল
চিৎ সাঁতারে তারা গোনা
ও মেয়ে, প্রেমে পড়িস না; বলেছিলাম না!
আমি অন্ধকার, আমায় ভালোবাসলেই কান্না।




কাঁচের সম্পর্ক



কাঁচের সম্পর্ক
- যাযাবর জীবন

সম্পর্কগুলো কাঁচের মত ভঙ্গুর
স্বার্থগুলো পাহাড়ের মত অটল;
স্বার্থে আঘাত লাগলেই
সম্পর্কগুলো কাঁচের আয়নার মত ভেঙে খানখান,
হোক না সে ভাই বোন
স্বামী স্ত্রী
কিংবা বাবা-মা আর সন্তান;

ভাঙা সম্পর্কের কাঁচগুলো পড়ে থাকে জীবনের ডাস্টবিনে
স্বার্থের পাহাড়গুলো দাঁড়িয়ে রয় মাথা উঁচু করে।



পেন্সিলে আঁকা



পেন্সিলে আঁকা
- যাযাবর জীবন

তোর কথা মনে হতেই দাঁতে কাঠ-পেন্সিল
মনের ক্যানভাসে সাদাকালো টান দিতেই
তোর চোখের স্কেচ বেয়ে দু-ফোঁটা অশ্রু
আমার কথা বড্ড মনে পড়ছে বুঝি?
অন্ধকারে কয়লা ঘষে শুধুই দাগ টানা
তোকে ছাড়া কবিতা হয় না;

সেই কবে এসেছিলি শেষবার তুই কালো চুলে
সাদা চুলে রঙ লাগতে একবার না হয় ডাকিস মন ভুলে
কাঠ-পেন্সিলের শিষ ভাঙে দাঁতের ফাঁকে
কাগজে কবিতা আঁকে না।




গল্প ঢেঁকুর - ২৬-৫০ঃ



গল্প ঢেঁকুর - ২৬ঃ

ভুল আমদের দুজনেরই হয়েছিল,

তোর ভাঙতে গিয়ে
আমার গড়তে গিয়ে........।


গল্প ঢেঁকুর - ২৭ঃ

তোর বুকে মুখ গুজতেই
.........
.........
.........
শিশু।



গল্প ঢেঁকুর - ২৮ঃ

তৃপ্ত সঙ্গমে প্রেম ঘন
অতৃপ্তিতে দ্রবীভূত
ঘৃণায় দূরীভূত।



গল্প ঢেঁকুর - ২৯ঃ

ছিড়ে ফেলেছি জমানো সব চিঠিগুলো
পুড়িয়ে ফেলেছি অতীত;

বর্তমান আঁকড়ে বেঁচে থাকাই জীবন;
তুই আমায় জীবন চিনিয়েছিস-
"দূরে গিয়ে"।



গল্প ঢেঁকুর - ৩০ঃ

তুই থাকলে রাত্রি ভেজে
না থাকলে কান্না।

ভেজাতে জুড়ি নেই তোর,
"লবণে"।

গল্প ঢেঁকুর - ৩১ঃ

পাঁচ দিনের চেষ্টায় মনে টোকা
পাঁচ মাস লেগে থেকে মন পাওয়া
পাঁচ বছরের চুমোচুমি প্রেম;
পরিণতি,
পাঁচ সেকেন্ডের স্খলনানন্দ।



গল্প ঢেঁকুর - ৩২ঃ

পেছন থেকে সবাই নারী;

সামনে থেকে কেও খালা কেও ভাবী
কেও চাচী কেও নানী
কেও প্যাঁচা কেও হরিণী,
কেও কেও সত্যিই সুন্দরী
মনকাড়া মনোহারিণী;

পেছনে দেখলেই ধোঁকাদারি
সামনে থেকে চেনো নারী।



গল্প ঢেঁকুর - ৩৩ঃ

কোকিল ডাকছে;
ঠোঁটে বাসন্তী রাঙিয়ে কি হবে?

কাক চুমু খেলে।




গল্প ঢেঁকুর - ৩৪ঃ


তুই আমাকে কঠিন কঠিন ভালোবাসার কথা বলিস,
আমি সরল প্রত্যাখ্যানে বার বার তোকে বুঝিয়ে যাই;

তোর জটিল চিন্তাভাবনার গরল প্রেম একদিন তরল হবেই;
বাস্তব কঠিন বিষ।



গল্প ঢেঁকুর - ৩৫ঃ


ভালোবাসার গল্পগুলো তো হয় কাছে আসার।

তবে তোর আর আমার মাঝে এত দূরত্ব কেন?



গল্প ঢেঁকুর -৩৬ঃ

আজ আমাদের মনে অনেক কথা জমা হয়ে আছে
বলার মত বন্ধু নেই পাশে।

আমরা অনেক বছরের বন্ধুত্ব নষ্ট করে ফেলেছিলাম - একটি চুমুতেই।







গল্প ঢেঁকুর -৩৭ঃ


তোর আর আমার মধ্যে ছিল ঐ বিছানাটা
আর কয়েকটা রাত;

শরীর নির্ভর ভালোবাসা বিছানার জন্য, জীবনের জন্য নয়।




গল্প ঢেঁকুর - ৩৮ঃ

ঠোঁট পেকে আছে শরীর গাছে
এইইই...... ঝরে পড়লো বলে;
.
অপেক্ষা চুমুর;

বিছানার দেড় হাত পর্যন্তই তো তোর সীমা,
প্রেম গাছ বায় সাহসীরা।





গল্প ঢেঁকুর - ৩৯ঃ


মেয়েটি অসম্ভব ব্যস্ততায় সংসার সামলায়,
এলোমেলো ছেলেটি সময় অসময় কাটাকুটি করে কবিতার খাতায়;

অনেক বছর আগে প্রেমে পড়েছিল ছেলেটি।





গল্প ঢেঁকুর - ৪০ঃ


ময়লার বিনে খুঁজে পাইনা আজকাল কোন টুকরো টাকরা, হাবিজাবি;
বই ছাপলেই নাকি কবি!!

চল পাঠক হই মনের পাঠশালায়।



গল্প ঢেঁকুর - ৪১ঃ

তেঁতে উঠেছে বইমেলা......
আমি কবিতা বুঝি না।



গল্প ঢেঁকুর - ৪২ঃ


আমার সুদকষার হিসাবের প্রয়োজন হয় নি কখনোই,
ঐকিক নিয়মেই খুব চলে যাচ্ছে জীবন;

তুই সরল অঙ্কের মত জটিল।


গল্প ঢেঁকুর-৪৩:


কি খাবে? চা, না কফি?
চুমু খাব।

নারী দিবসে প্রেমিকার কাছে একটি চুমু তো পেতেই পারি;
বন্ধুকে কি আর চুমু খাওয়ার কথা বলা যায়? ছিঃ




গল্প ঢেঁকুর-৪৪:

বলতে গিয়ে বুক ফাটে
ফুটেছিলো কথা দ্বিধা দ্বন্দ্ব অবশেশে,
এখন ভুলতে গিয়ে ভুলভুলাইয়া;

ভালোবাসা বড্ড জটিল
প্রকাশে কিংবা নিকাশে।



গল্প ঢেঁকুর-৪৫:


তোর থেকে সুন্দরী
ঘোরে রাস্তায় ভুরিভুরি
আমার মন লেগেছিল তোতে
আমি মনের পূজারী............




গল্প ঢেঁকুর-৪৬:


জীবনের কাছে ভালোবাসা বিক্রি করে
আজ আমি পৃথিবীর শীর্ষ ধনী;
এখন আমি বিশাল দানবীর
তুই কিছু দুঃখ নিবি?




গল্প ঢেঁকুর-৪৭:


তোর আর আমার বয়স বাড়ে প্রতি দিন
আমাদের কাছে প্রেম চির নবীন
তোর কাছে প্রতি রাতই প্রেমের জন্য নতুন রাত
মাটির সাথে আমার দূরত্ব কমে প্রতিরাতে একরাত।



গল্প ঢেঁকুর-৪৮:

উড়তে কার না ভালো লাগে?
সংগি যদি সংগে থাকে,
নিজের ডানায় পাখা মেলে মেঘের দেশে;
পাখির ডানায় একলা ওড়ায় সেই আনন্দ কোথায়?
একলা ভেসে।




গল্প ঢেঁকুর-৪৯:

ওরে চৈত্র মেয়ে, তোর গরমে বাতাস গরম
বইছে আগুন ঘাম ঝড়াতে;
ওলো স্বপ্ন মেয়ে, তোর গরমে বিছানা গরম
স্বপ্নে আসিস ভিজিয়ে দিতে।



গল্প ঢেঁকুর-৫০:


বুকের কার্নিশে কেন বসে থাকিস পা ঝুলিয়ে?
নিচে ভালোবাসার অথৈ খাদ;
পা পিছলালেই ডুবে যাবি প্রেমের কান্নাজলে।



মোবাইলের যন্ত্রণা



মোবাইলের যন্ত্রণা
- যাযাবর জীবন

মোবাইলটা ঘুমিয়ে থাকে
আমার পুরোটা অবসর জুড়ে;

গোসলে গেলাম
বাথরুমে ঢুকলাম
নামাজে দাঁড়ালাম
কি খেতে বসলাম
অথবা ঘুমোতে গেলাম
তো
ওনার জ্বলন শুরু হলো
চেঁচামেচিতে পাড়া মাতালো;

দৌড়ে এলাম চুপ করাতে
ভেজা বেড়াল ঘুমিয়ে গেলো;
এ তো দেখি নারীকেও হার মানায়
ছলা কলায়
আমার মোবাইল বিল আকাশ ছোঁয়
কলব্যাক এর যন্ত্রণায়।




শীতের পাখি



শীতের পাখি
- যাযাবর জীবন

পাখি আমার পাখি
শীতের উড়াল পাখি
চাঁননি রাতে ডাকি
শুনতো যদি পাখি;

পাখির বদন লাল
রঙে রঙিন মন
পায়ে নূপুর তাল
নাচে আমার মন;

শীতের দেশের পাখিরে তুই
উইড়া চইলা যাস
ডানা ঝাইড়া মায়ার পালক
আমায় দিয়া যাস।




ফস্কাগিরু



ফস্কাগিরু
- যাযাবর জীবন

পায়ে পা মিলতেই হেঁটে চলা
মন চাইলেই কথা বলা
খুব সহজ ইদানীং;
ইচ্ছে হলেই ভালোবাসা
মন চাইলেই ঠোঁটে ঠোঁট
প্রেম নিবেদন
শরীরে শরীরে কথন
খুব যেন ডালভাত আজকাল;
বিয়ে হরদম
নিত্য বিচ্ছেদ
খুব হচ্ছে প্রতিদিন;

হৃদয়ে হৃদয় মিলিয়ে শেষনিঃশ্বাস পর্যন্ত পাশে থাকা
হাতে হাত রেখে ভালোবাসার অনুভবে আগলে রাখা
কোথায় আজকাল?
যুগের ডিজিটাল বজ্রআঁটুনি
সম্পর্কের ফস্কাগিরু;

ভালোবাসা কালও ছিল
আজও আছে
চিরদিনই থাকবে,
শুধু রং বদলায় সম্পর্ক
সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে।




ইচ্ছে-খাতা



ইচ্ছে-খাতা
- যাযাবর জীবন

চাঁদের রাত বেয়ে চাঁদনি উঠে আসে
বসে আমার বুকে হেঁটে এসে
দমবন্ধ ভালোবাসায় পাগল করে
হারিয়ে যায় সূর্যের দেশে;
রাতের ভালোবাসায় চাঁদনি
দিনভর অনুভব অপেক্ষার,
কর্মব্যস্ত দিন কঠোর বাস্তবতার
পূর্ণিমারাত চাঁদনির কবিতার;

তোকে নিয়ে একটি কবিতা বুনতে ইচ্ছে করে
ভরা পূর্ণিমা রাতে;
হায়! আমি যদি কবিতা লিখতে পারতাম!
হারিয়ে যেতাম তোতে।




লাল পাহাড়ের মেয়ে




লাল পাহাড়ের মেয়ে
- যাযাবর জীবন

কন্যা তুই কলসি কাঁখে
নাইছি আমি গামছা কাঁধে
চোখে হতেই ঠোকাঠুকি
প্রেম পুকুরে ডুবে গিয়েছি;

ওরে লাল পাহাড়ের মেয়ে
কলসি রেখে আমায় তুই ধর
ওরে ও কচুরিপানা মন
ভাসতে ভাসতে এবার ডুবে মর।




নীল পাহাড়ে চাঁদ



নীল পাহাড়ে চাঁদ
- যাযাবর জীবন

চাঁদটা চাঁদনি হয়ে পাহাড়ে নেমে আসতেই জ্যোৎস্নায় চোখ ঝলসে গেল
তুই আমার গায়ে পড়তেই আমি তোতে হারালাম;
তুই চাঁদনি আমি অন্ধকার
চাঁদটা ছিল দুজনের ভালোবাসার;

আজ চাঁদ আছে
তুই আছিস
আমি আছি
তবুও বুকে শুন্যতার হাহাকার;

একা পাহাড়ে আসতে নেই
একা চাঁদ দেখতে নেই
জ্যোৎস্নায় পাহাড়ের ডাক শুনতে নেই,
পাহাড় ডাকলেই মন খারাপে একাকার;

পাহাড় তোকে দিলাম কান্না নিলাম
আলো তোকে দিলাম অন্ধকার নিলাম
চাঁদও তোকে দিলাম
চাঁদনি শুধুই আমার;

মন খারাপের ভালোবাসা তুই নীল পাহাড়ে যা
মন খারাপের ভালোবাসা তুই পাহাড় বেয়ে নেমে যা।