সোমবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৭

কালো রাত


কালো রাত
- যাযাবর জীবন


রাতগুলো আসে কালো হয়ে
কালো চোখ কালো করে
কখনো কালো আকাশে কালো মেঘের ডানায় চড়ে
কখনো আমার ঘরে কালো বিড়ালের পায়ে পায়ে
আমায় কালো করে নিতে ঘন কালো অন্ধকারে;

বেশ থাকি দিনের বেলায়
সাদা সূর্যে সাদা হয়ে
নীলাকাশে সাদা মেঘ হাওয়ায় হাওয়ায় ভেসে চলে
সবুজ মাঠে সাদা ফুল হাওয়ায় হাওয়ায় নাচে খেলে
আমিও সারাদিন তোকে ভাবি সাদা চোখে;

সন্ধ্যে নামে ধূসর হয়ে
মন খারাপের ধূসর মনে
ঘরে ফেরা গরুর গাড়ি মেঠো পথ ধূসর করে
লালাকাশে অস্ত রবি ঘুমিয়ে পড়ে ধূসর হয়ে
ধরাচরে ধীরে ধীরে অন্ধকার ছেয়ে ধরে;

তারপর রাত্রি আসে আমার চোখে
কালো হয়ে কালো করে।


স্যাঁতস্যাঁতে দিন



স্যাঁতস্যাঁতে দিন
- যাযাবর জীবন


সূর্য ছিল আলোও ছিল
তবুও ঠিক যেন ত্যাজ ছিল না রোদে
বড্ড ম্যাড়ম্যাড়ে আলো আর স্যাঁতস্যাঁতে দিন
অথচ সকালে ঘুম ভাঙতেই মনটা ছিল রঙিন;

প্রিয় সন্ধ্যে
তুমি কেমন আছ?

ভালোবাসার চাঁদনি
তুমি রাতে আসবে তো?

নির্ঘুম রাত
প্রেমে পড়বে আমার?

না কি আজো তুইহীনা কাটবে
এক অসহনীয় রাত।



ঠোঁটে ঠোঁটে ঘুমরাত


ঠোঁটে ঠোঁটে ঘুমরাত
- যাযাবর জীবন


কাল সারারাত ছিল
ঠোঁটে ঠোঁটে ঘুম
সকাল হতেই আলোটা এসে
চোখ ভেঙে দিল চুম।




রবিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০১৭

অলস মস্তিষ্কের আলসে ভাবনা



অলস মস্তিষ্কের আলসে ভাবনা
- যাযাবর জীবন


অলস রাত
অলস বিছানায় আলসে আলসে ঘুম
অলস কিছু স্বপ্ন আলসে চোখে
আলতো এসে দেয় চুম;

অলস চাঁদ
আলসে আয়েশে হেলান অন্ধকার আকাশে
অলস জ্যোৎস্না অন্ধকার ভেঙে দিয়ে
আলো এনে দেয় রাতে;

অলস জোনাক দল আলস অন্ধকারে
ইতিউতি আলসে হাঁটে
অলস তারার দল আলসে বসে থাকে
আকাশ বিছানো খাটে;

অলস দেহ আলসে আড়মোড়ে
অলস মুড়ে থাকে চাদরে
অলস আমি সারারাত ধরে
ঠোঁটে ডুবে থাকি তোর আদরে।



নিশ্চিন্ত ঘুম



নিশ্চিন্ত ঘুম
- যাযাবর জীবন


তোর বুকে মাথা রাখতেই চোখ ঘুম
আঙুল ওড়াউড়ি তোর এলোমেলো আমার মাথার চুল
নির্ঘুম রাত তোর
আমায় ভালোবেসে বড্ড করেছিস ভুল,
চিন্তা তোর মুখে স্বপ্ন তোর চোখে
অস্থির মন অশান্ত জীবন
সারারাত বুকে নিয়ে আমায় রাত তোর নির্ঘুম
তোর বুকে মাথা রেখে আমি নিশ্চিন্ত রাতঘুম।

ঠোঁট ডুবানো ভোর



ঠোঁট ডুবানো ভোর
- যাযাবর জীবন


ঘুম ভাংতেই মন পাখি
উড়াল ডানায় তোর ঘরে,
অপেক্ষা তোর চোখ খোলার
ডুবাতে ঠোঁট............



আমারই তুই



আমারই তুই
- যাযাবর জীবন


মনে যদি মন রাখিস
তবেই মিঠে পানি আর জোয়ার ভাটায় নদী
আর নয়তো নোনা সাগর
অশ্রুর কিংবা লবণের,
কি এসে যায়?

স্বপ্নে কিংবা জাগরণে
মনের মাঝে তুই
তুই আর তুইই আমার পৃথিবী;
কে কি বললো,
কি এসে যায়?

আমার আকাশ নীল বা কালো
আমারই,
আমার পৃথিবী রঙিন বা সাদাকালো
আমারই,
আমার সময় দিন কিংবা রাত
আমারই,
আমার তুই, অবহেলা কিংবা ভালোবাসার
আমারই,
কে কি বললো
কি এসে যায়?

আমার তুই,
আমারই তুই;
মাখামাখি ভালোবাসায়।


মন পোড়া ইগো



মন পোড়া ইগো
- যাযাবর জীবন


পেট পুড়তে পুড়তে আলসার
কলিজা পুড়তে পুড়তে সিরোসিস
মন পুড়তে পুড়তে ক্যান্সার
সম্পর্ক পুড়তে থাকে চিতায়,
অনুতাপ! দুজনের মনেই;
তবুও পোড়ে না ইগো।


একা একা



একা একা
- যাযাবর জীবন


উড়তে উড়তে পাখি
ভাসতে ভাসতে মাছ
ডুবতে ডুবতে গভীর
মনে তোর বাস;

দৌড়ে দৌড়ে ক্নান্ত
ঘষ্টে ঘষ্টে চলা
মনের মাঝে তুই
আর একা একা কথা বলা।



স্থবির


স্থবির
- যাযাবর জীবন


আকাশ আছে
আছে নীল
সাগর আছে
দেখতে নীল;
কান্না কেন সাদা?

পাখিরা ডানা মেলে উড়ে যায়
মাছেরা ডুবে ভেসে সাঁতরায়
মানুষ দৌড়ায় জীবন যুদ্ধে,
স্থবিরতা সব আমার;

আমি বোধহয় মানুষ নই।


আমার সাথে রাত



আমার সাথে রাত
- যাযাবর জীবন


যেদিন আমি হাওয়া
বাতাস পেয়েছিলি কানে
যেদিন আমি রোদ
ভিজে গিয়েছিলি ঘামে
যদি আমি মেঘ
তোর বর্ষা-স্নান
যেদিন ঝরি টাপুর টুপুর
তুই পায়ে গলাস নূপুর
যেদিন মন ভালো আমার
তোর মনেতে গান
আমার জন্য কেন রে
তোর মনে এত টান?
আমি তো অমাবস্যা দুপুর সূর্যে
অন্ধকারের কানাকানি আমার সাথে;

বড্ড ভালোবাসিস আমায়?
তবে রাত হ আমার সাথে।

কালো রাত



কালো রাত
- যাযাবর জীবন


কোথায় আছি?
মন ছুটি,
কোথায় যাব?
খুঁজছি;
বন্ধ মনে বন্ধ ঘরে যখনই আলো জ্বালি
শুধুই তুই;
এবার আলোটা নিভিয়ে দেব একেবারে
কালো হওয়ার জন্য খুব দরকার ছিল আলোটার;

চোখ ঘুম হয়ে গেলে
সবই তো রাত।




কুঁড়েঘরে অন্ধকার



কুঁড়েঘরে অন্ধকার
- যাযাবর জীবন


একদিন তুই মেঘ হয়েছিলি আমার আকাশে
এখন আর বৃষ্টিতেই ভিজি না
একদিন সূর্য হয়েছিলি মনের আকাশে
আজ রাত্রিকে করেছি ঠিকানা,
কাঁথামুড়ি প্রেমে আজ তুই কোথাও নেই
নেই বর্ষা-কথনে
নেই শীত-কাহনে
নেই ঘাম-ভেজা গরমে
নেই বসন্ত-নরমে
বালি ওড়া সাগর তীরে বাতাসে শুধু বালিই ওড়ে
আর আধো অন্ধকার আমার কুঁড়েঘরে।



মন তুই


মন তুই
- যাযাবর জীবন


সূর্য উঠতেই মন ভোর
একলা সাগর আমি তোর
একলা আমি কোথায় তুই?
একলা ঘরে মন তুই.......



বোধের কুঁড়েঘর



বোধের কুঁড়েঘর
- যাযাবর জীবন


একটা কুঁড়ে ঘর
একটা সাগর পার
একটা তুই
একটা আমি
না হয় কিছু বোধ সৃষ্টি হলো
তারপর কবিতা ভালোবাসার,
মিলনের কিংবা বিরহের;

কি আসে যায়?




মনে পড়ে মেঘ ছুঁয়ে



মনে পড়ে মেঘ ছুঁয়ে
- যাযাবর জীবন


প্রচণ্ড বৃষ্টি বাইরে
মনে তোলপাড় ঝড়
তোর সাথে ভিজতে চেয়ে জ্যোৎস্নায়
বারবার ভিজেছি কান্নায়,
এখন উড়ে যাওয়া মেঘের ভেলায় দুঃখ ভাসে
আমি হো হো হাসি, কান্নার হাসি
বাতাস হো হো কাঁদে, বেদনায় ভেসে
যখন ঝড় তবলা বাজায় মনে
আমি পায়ে নূপুর গলাই
তারপর বৃষ্টির আলিঙ্গন, কান্না নৃত্যে;

তুই কি আমায় দেখিস কোথাও থেকে?
গালে বাতাস ছুঁয়ে গেলে
তোর শ্বাস ফেলার প্রবল অনুভূতিতে কেঁপে ওঠে মন
অনুভবে;

আজ বড্ড মনে পড়ছে তোকে
মেঘ ছুঁয়ে ছুঁয়ে।


জবাব



জবাব
- যাযাবর জীবন


বাতাসে কতকিছুই তো ওড়ে
বাতাস উড়তে দেখেছে কে?
পাখির মত একটা ডানা লাগানো গেলে
কতই না ভালো হতো
বড্ড ইচ্ছে একবার ঐ দূর আকাশে উড়ে
বাতাস মাখি সারা গায়ে;

আচ্ছা! আকাশের ওপরে কি আছে?
আরেকটা আকাশ?
আরেক পৃথিবী?
আরেক জগৎ?

ওখানেও কি আমি আছি?
তুই আছিস?
ভালোবাসা আছে?
কত প্রশ্ন মনে!
কে জবাব দেবে?

ডানা মেলবি আমার সাথে?
জবাব খুঁজতে?


বুধবার, ১৮ অক্টোবর, ২০১৭

ছুঁয়ে দেয়া ছুঁয়ে থাকা



ছুঁয়ে দেয়া ছুঁয়ে থাকা
- যাযাবর জীবন


চুড়ির কি ভাগ্য!
তোর হাতে থাকে,
টিপের কি ভাগ্য!
তোর কপালে থাকে,
শাড়ির কি ভাগ্য!
তোকে জড়িয়ে রাখে,
আয়নার কি ভাগ্য!
সাজলেই তোকে দেখে;

আমি কোথাও নেই
তোর কাছে,
মাঝে মাঝে বড্ড ইচ্ছে করে বাতাস হতে
ইচ্ছে হলেই ইচ্ছে মত তোকে ছুঁয়ে দিতে;

আমার ছোঁয়া তোর খুব পরিচিত ছিল,
তাই না?
চমকে উঠবি কি অচেনা বাতাস ছুঁয়ে দিলে?
খুঁজবি কি, আগের মত? পুরনো অনুভবে।



গরমে গরম



গরমে গরম
- যাযাবর জীবন


চায়ে ভেজানো ঠোঁট
গরমে গরম কাটে;

আগুন সয় না আমার ঠোঁটে।



চাঁদের ছাতা



চাঁদের ছাতা
- যাযাবর জীবন


ছাতা ধরেছি মাথায়
চাঁদে ভিজব না বলে
ভিজিয়ে দিল চাঁদনি;

এবার ঠিক চুমু খাব অমাবস্যায়
ভেজাতে তোকে।


শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৭

তুই ছাড়া মন



তুই ছাড়া মন
- যাযাবর জীবন


অন্ধকার কোথায়?
কোথায় আলো?

মনে সূর্য থাকে, চাঁদও তো থাকে
দিন আছে, রাতও তো আছে
জাগরণে কিংবা ঘুমে
আমি কোথাও নেই, আছে মন,মনে;

বোবা চোখ দেখেই যায়
অনুভব শুধুই মনে
আমি কিছু চাই বা না চাই,মন চায়
সব চাওয়া মনই চায়;

কি করব এই মন নিয়ে?
তুই ছাড়া।



প্রেমী



প্রেমী
- যাযাবর জীবন


প্রেমে পরতে চাইলে আছাড়ি বিছাড়ি
মনোব্যথায় যাতে রুহ্ কাঁপে
কালব্যাধি ক্যান্সার যাতে ভয়ে দূরে থাকে
আর নয়তো কাঁথামুরি ঘুমোও;

সবাই কি আর প্রেম করতে পারে?
কবিতার জন্ম প্রেমীর মনে।




কর্মজীবী মানুষ



কর্মজীবী মানুষ
- যাযাবর জীবন


সকাল শুরুতেই পাখ-পাখালির কিচিমিচি
দুদ্দাড় ঘুম থেকে জেগে ওঠা
নাস্তার টেবিলে হুড়োহুড়ি
প্যাক করা টিফিন বগলদাবা
চলন্ত বাসে দৌড়ে বাদুড়ঝোলা
প্যাঁ পোঁ হর্নে অভ্যস্ত কান
শার্টে ভেজা ঘাম,
ঝুলন্ত সূর্যের সাথে পাল্লা দিয়ে ঘড়ি ধরে অফিসে পৌঁছে দম নিয়ে হাফছাড়া
চায়ের কাপে ফাইলের চাপে মুখ থুবড়ে সময় পার
সূর্যঘড়িটা বিকেলে হেলান দিলো তো মন উচাটন
সন্ধ্যেটা ঘরে ফেরার,
বাসে, রিক্সায়, হেঁটে ঘর্মাক্ত শরীরে ঘরে ফিরতে ফিরতে
রাতের প্রথম প্রহর পেরিয়ে গেছে
ডিনার শেষে ক্লান্ত দেহ বিছানায় এলায়
কর্মজীবীর সময় কোথায় সপ্তাহ ভর প্রেমের খেলায়?

কখনো সখনো মন উদাস হলে বৃহস্পতির রাতে বিছানায় নৈমিত্তিক কাম
আর নয়তো শুক্রবারটা তো হাতে আছেই
এসব সকলই জীবনের অংশ, বেঁচে থাকার নাম;

মাসে এক আধবার ছুটি ছাটাতে আয়েসি বিকেলে প্রেয়সী পাশে চায়ের কাপে চুমুক
কিংবা বছরে এক আধবার চাঁদের আলোয় খোলা ছাঁদে চুপিচাপি আধলজ্জা চুমু
বাহ! কি সুন্দর কেটে যাচ্ছে জীবন
কর্মজীবী মানুষের মন।

আমার মাঝে মাঝে একদম কর্মহীন হয়ে যেতে ইচ্ছে করে,
মানুষের সব ইচ্ছে কি আর পূরণ হয়?
ক্ষুধা কথা কয়।





কাগজের দাম্পত্য


কাগজের দাম্পত্য
-যাযাবর জীবন


হৃদয়ের মাঝে জড়িয়ে থেকে থেকে কষ্ট কষ্ট দুঃখ
জীবনের সাথে জড়াজড়ি হয়ে হয়ে কষ্ট কষ্ট সুখ
ঘুমঘোরে হাত বাড়িয়ে পাশে তুই, তুই সব
স্পর্শে হাসি স্পর্শে কান্না অনুভূতি অনুভব;

মনে মনে অষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকাই দাম্পত্য
আর নয়তো কাগজের বিয়ে তো যত্রতত্র।


সম্পর্কের একাল সেকাল



সম্পর্কের একাল সেকাল
- যাযাবর জীবন



পুরনো দিনগুলো বড্ড ভালো ছিল রে,
সহজ সরল জলের মত
নদীর মত
মাঠের মত
ঘাসের মত;
তখন আমরা বন্ধু ছিলাম,
হাতে হাত রেখে
দাপাদাপি পিঠে উঠে
কি নিশ্চিন্তে নির্ভাবনায়
সহজ সরল মনে;

যেদিন বললি ভালোবাসিস,
সেদিন থেকেই জীবনটা বড্ড জটিল হয়ে গেল;
আর বন্ধুত্ব ডুবে গেল অন্ধকারের গভীর ।

সম্পর্কের সীমারেখাগুলো কি অদ্ভুত
তাই না?



বন্ধ দরজা


বন্ধ দরজা
- যাযাবর জীবন



অনেক দিন দরজা খোলা হয় না
ঘরের ও মনের;

ভোরে পাখি ডাকে
সকাল হলেই ফেরিওয়ালা
দুপুরটা সুনসান ঝিমধরা
বিকেলে বাচ্চাকাচ্চার হৈ চৈ
আমার কিছুই আসে যায় না,
বন্ধ দরজার এপাশে বেশ নির্লিপ্ত কাটিয়ে দিচ্ছি সময়;

অনেকদিন হয়ে গেলো সন্ধ্যে বেলায় সূর্য ডোবা দেখি না
চাঁদ দেখা হয় না আকাশে
রাত তো সব একই রকম
দরজার এপাশে কিংবা ওপাশে
আমি দরজা বন্ধ করে রেখেছি
ঘরের ও মনের;

একবার ভুল করে দরজা খুলেছিলাম
হুট করে তুই ঢুকে পড়লি জীবনে;

জানিস! প্রথমে না অনেক আলো ছিল,
তোর আভাতে;
তারপর? সেই তো পুরনো অন্ধকার
সেই আগের মতই
সেই প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় ভালোবাসার মত;

আদতে
সব ভালোবাসাই অন্ধকার হয়ে আসে
একটা সময় পরে,
তোর
তার
আর ওর মত
যখনই তোরা একে একে এসেছিস জীবনে;

তারচেয়ে আমার বন্ধ দরজাই ভালো
মন বন্ধ ঘুমের দেশে।



এন্টিক



এন্টিক
- যাযাবর জীবন



চেয়ারটার দিকে তাকা
পুরনো, ভাঙাচোরা, জরাজীর্ণ;
এবার আমার দিকে তাকা
মিল খুঁজে পাচ্ছিস কি?
রাতে সব কিছুই অন্ধকার অন্ধকার লাগে।

এবার একটু দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টা
কি দেখছিস?
চেয়ারটা, এন্টিক পিস;
ঝুড়ি নামা পুরনো বট গাছটা কি সুন্দর, তাই না?
আমাকে দেখতে হবে না, আলো দেখ।



গ্রাস



গ্রাস
- যাযাবর জীবন


এক টুকরো খাল
এক টুকরো নীল
একটুখানি সবুজ
বাকিটা সভ্যতা;

সভ্যতা গ্রাস করেছে নদী
সভ্যতা গ্রাস করছে সবুজ
সভ্যতা ইট কাঠ দালান কোঠা
সভ্যতাই নগর।



আবেগ




আবেগ
- যাযাবর জীবন


আবেগ একটা কালব্যাধি ভাইরাস,
সময়ের সাথে সাথে বাড়তেই থাকে;
আর একা থাকলেই মন খারাপ।

ঘুম ভাঙতেই সূর্যোদয়ের সাথে সাথে মনে আবেগোদয়
দুপুরে রোদ চড়লো! তো আবেগ চড়লো
বিকেলের পড়ন্ত রোদে কোথায় কমলো?
সন্ধ্যায় তো মনখারাপের ঢেউ
আর রাতে? সাগরে উত্তাল কান্না, একা একা।



শনিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৭

অধরা



অধরা
- যাযাবর জীবন


চোখে অন্ধকার বুলালেই তুই রাত
তোকে না ভাবলে চোখ বোজে না চোখ
ক্যানভাসে তুলি বুলালেই তুই চাঁদ
অথচ চাঁদনি আঁকা হলো না আমার;

মনে প্রেম বুলালেই চোখে তুই
তুই বিহনে চোখ কান্না
কাগজে কলম চললেই তুই ভালোবাসা
অথচ কবিতাই লেখা হলো না আমার;

আর কত খুঁড়ব মন
তোকে আঁকতে
আর কত নিব ভাঙবে কলম
কবিতা লিখতে।




শুক্রবার, ৬ অক্টোবর, ২০১৭

কেমন আছিস তুই?



কেমন আছিস তুই?
- যাযাবর জীবন


কেমন আছিস তুই?
জানিস! আকাশে আজ এত্ত বড় একটা চাঁদ,
নিশ্চয়ই অনেক খুশি তুই আজ;

কেমন আছিস তুই?
দেখ, দেখ, ঈশান থেকে একটি দুটি মেঘের ভেলা
বলতো দেখি, বৃষ্টি আসবে কি আজ?

কেমন আছিস তুই?
দেখ, চাঁদটা ঢেকে গেলো মেঘে
মন খারাপ হলো বুঝি তোর?

কেমন আছিস তুই?
বাইরে ঝুম বৃষ্টি নেমেছে
ভিজবি আমার সাথে?

কেমন আছিস তুই?
আমি ভিজছি একা, শরীর ও মনে
তুই কোথায়?


ভাত বন্ধ



ভাত বন্ধ
- যাযাবর জীবন


এক সময় বাবা-মায়ের সাথে রাগ
তো ভাত বন্ধ
এক সময় স্বামী-স্ত্রী মনোমালিন্য
তো ভাত বন্ধ

আপন জনের সাথে রাগ অভিমান
প্রয়োগ ভাতের থালায়,
কার জীবনে ভাত বন্ধ হয় নি, দু চার দশবার?

বাবা-মা রাগ ভাঙায় সন্তানের
স্বামী-স্ত্রী অভিমান ভাঙায় পরস্পরের,

বাবা-মায়ের মনোকষ্ট? কবে বুঝেছিল সন্তান?
কই শুনি নি তো? বাবা-মায়ের ভাত বন্ধ,
কি জানি? হবে হয়তো কোথাও কখনো
দু একটি ঘরের কোনায়
কালে ভদ্রে, কচিত কদাচিৎ;
আলো'তে আসে না কখনো।

কোন একটা সময় কেও থাকে না মনের কষ্ট ভাঙানোর,
পেটের ক্ষুধা টেনে নেয় ভাতের থালা;
চোখেই শুকায়, চোখের জল।








মঙ্গলবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৭

প্রকৃতি ও তুই



প্রকৃতি ও তুই
- যাযাবর জীবন


আকাশটা নীলের সাগর
মেঘের নৌকো ভাসে
কোথাও সাদা কোথাও ধুসর
বৃষ্টির জন্য মন আনচান
কালো বৈঠাটা দেখলাম না কোথাও

চরের মাঠে ঘাসের মেঘ
দুলছে বাতাসে
কোথাও জলজ কোথাও সবুজ
প্রচুর শ্যাওলা বুকপুকুরে
মন আনচান ডুব দিতে

বুকের চাতালে কুলকুল নদী
নূপুর বাজায় জলে,
এর গভীরতা মেপেছে কে?
কোন এক সময় তুই ডুব দিয়েছিলি
সেই থেকে পলি পড়ে গেছে

এই যে আকাশ আর ধুসর ধুসর মেঘ
এই যে সবুজ সবুজ ঘাসের মাঠ
এই ছলছল কলকল নদী
আর এই জরাজীর্ণ পুরনো আমি,
সবই আছে চারিদিকে;

শুধু তুই হারিয়ে গিয়েছিস
সময়ের সাথে সাথে।


সোমবার, ২ অক্টোবর, ২০১৭

ইতিহাস



ইতিহাস
- যাযাবর জীবন


একটা মেয়ে ছিল জীবনের গল্প
আজ জীবন থেকেই হারিয়ে গেলো

একটা মেয়ে ছিল আমার আকাশের সূর্য
অমাবস্যায় আজ তারে কোথায় খুঁজে পাব?

একটা মেয়ে ছিল আমার প্রতি রাতের চাঁদ
কোথায় যে জোনাকি ডানায় উড়ে গেলো?

একটা মেয়ে ছিল রাতভর জ্যোৎস্না
আমার স্পর্শে নিভে গিয়ে রাত হলো

একটা মেয়ে ছিল আমার নেশা
নির্ঘুম চোখ দিয়ে কোথায় পালালো?

একটা মেয়ে ছিল আপাদমস্তক কবিতা
আমার কলমে এখন শুধুই ইতিহাস।














প্রহরান্তে পশু



প্রহরান্তে পশু
- যাযাবর জীবন


আদুরে বিড়ালের চোখে আড়মোড়া ভাঙে সূর্য
প্রতিদিন ভোরে
আমি তখন গভীর ঘুমে
স্বপ্নে সাপ-লুডু তোর সাথে
জানালায় তারস্বরে পাখি ডাকে
আমার স্বপ্ন ভাঙাতে

শীত-নিদ্রার সাপ আলসে গড়ায় দুপুর পর্যন্ত
ঘষটে ঘষটে কচ্ছপ পায়ে রোদ চড়ে মাথার ওপর
সেদিন সূর্যের দিকে তাকাতেই চোখ ঝলসে গিয়েছিল তোতে
ভুলে চোখে ঝাপটা দিয়েছিলাম লবণ জলে
ঠাণ্ডা হতে ডুব দেই কান্না-পুকুরে

রোদ ঝাঁ ঝাঁ দুপুরটা তোর মত তেতে থাকে বাঘচোখে
আমি রোদের হেলানের অপেক্ষায় বিকেল বারান্দায়
মাঝে মাঝে বড্ড ইচ্ছে করে বাঘের গায়ে গা ঘষতে
ইশশ! বাঘটা কেন যে বেড়াল হয় না?
আদর খেতে

বিকেল ছোটে চিতার পিঠে
সূর্যটা ডিম পোচ হয় ফ্রাইপেনে, চোখের নিমিষে
আমি তখন ঘরে ফেরা পাখি আঁকি
রংতুলি দাঁতে খুঁটে
ডিমের কুসুমের সাথে বুকের ক্ষরণে লাল হয় ক্যানভাস
আঁকা আর হয় না তোকে

ধূর্ত শেয়ালের উঁকি সন্ধ্যের ঘরে
শেষ গোধূলিতে শিকার দেখে নিচ্ছে ঈগল চোখে
হানা দেবে রাতে হায়েনার দাঁতে
আলো আড়াল হয় অন্ধকারে

বিশেষ কতগুলো রাত হায়েনার বিষ দাঁত
কারো ব্যাং লাফ তো কারো সর্প-নৃত্য, অন্তর্বাসে
কুকুর-বেড়াল ভেজে কাম-রিপু
লজ্জা পায় ভাদ্রের কুকুর
মানুষের কাণ্ড দেখে

তোমরা দিন দেখ
রাত দেখ,
আমি পশু দেখি হরহামেশায়
আমার চারিদিকে, প্রহরান্তে;
হয়তো আমিও তাদেরই একজন
ভেতর থেকে।












মন চুপের সময়


মন চুপের সময়
- যাযাবর জীবন


এক একটা সময় আসে "মন চুপ"
তখন কারো কথাই ভালো লাগে না,
ভালোবাসার কথা তো অসহ্য।


সংযম



সংযম
- যাযাবর জীবন


পর্দার আবরণে ঢাকা তোর অবয়ব
কালো চশমায় আমার দুচোখ;

প্রেম প্রীতি ভালোবাসা
কাম বাসনা ভোগ লালসা সবই তো আমাদের মনে,
তোর
আমার
তার
ওর
সবার;

পাপ মনে
ব্যবহার শরীরে,
পর্দা দিতে হয় মনে
পাপ ঢাকতে;

আমাদের বড্ড সংযমের অভাব;
কথায় ও আচরণে।

খাদ্য


খাদ্য
- যাযাবর জীবন


কামগন্ধা রাত ম ম
শরীর উনুনে
লকলকে জিহ্বায় টস টসে লালা
খাবার বিছিয়ে আছে নাভিমূলে;

ছুটির রাতের গল্প,
কামুকের;
মদ মচ্ছবে।