বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১১

বিজয় দেখেছি

আজ বিজয়ের ৪০বছর।
বয়সে প্রৌঢ় কি সে খুব বেশি?
হওয়ার কথাতো ছিল তার যেন
রূপ যৌবনে একাদশি।

৭১ এ বিজয় দেখেছি
নিস্পাপ এক শিশু,
৭৫ এ কলংকিত সে
ক্রুশবিদ্ধ যেন যিশু।
৭৭ এ সিপাহি বিপ্লব
রক্তে রাঙ্গানো মাটি,
৮২ এ কেন রাঙ্গা হতে হল
চট্রগ্রামের মাটি।
৮৫ এ এসে হায়না খেদাও
আন্দোলনের ডাক,
৮৭ এ এসে ঝাটাপেটা খেয়ে
বুঝ বুঝি এলো তার।
খোলা মঞ্চে গান গেয়ে গেয়ে
ফাসির কাস্ঠে বিচার,
নূর হোসেনকে জীবন দিতে হল
বুকে একে স্বৈরাচার।

৮৭, ৯২, ৯৭ আর ২০০২
একই রূপ ধরে আসে সরকার
আপনি, তুমি আর তুই।
পালা বদলের চলে একই খেলা
দেশ মাত্রিকাকে ধর্ষন করে তাদের
কাটে যে জীবন বেলা।

প্রতিবারই কাঁপে আন্দোলনে
আকাশ বাতাস মাটি
সরকার হটাও দেশ বাচাও
বেছে নাও সোনা খাঁটি।

বার বার করে পালা বদলের রূপ
এ যেন পুতুল খেলা
দেশ মা আমার গোল্লায় যাক
ভরছে আমার ঝোলা।

শাসক রূপে যে আসে দেশে
দেশ গড়ব ভাব করে যে সে
দেশকে বানাব সোনার ঢেলা
একদম করে খাটি,
কিছু দিন গেলে
বনে যায় সে যে
স্বৈরাচারের ঘাটি ।

দু হাজার পাঁচ,
তত্বাবধায়ক সরকার নামে
দেশে এলো এক অভিশাপ
ছাড়লো কুরশি ছিবড়ে করে
দেশকে করল ফাক।

আজ দেশে নতুন সরকার
বয়স মাত্র সাড়ে তিন
এর মাঝেই শেষ রিজার্ভ টাকা
করতে হচ্ছে তাকে ঋণ।

হায়রে আমার বাংলা মাতা
কত শত বীর সন্তানের জননী তুমি
গর্ব ভরে রত্নগর্ভার
কদমে কদমে চুমি।

শহীদ সালাম, জাব্বার, বরকত আর
কত শত তাদের নাম
আবার দিয়েছ জন্ম কাত শত
রাজাকার আর কুলাংগার সন্তান।

দেশ মা আমার রত্নগর্ভা
গর্বে ভরে যে বুক
যখন দেখি সালাম বরকত আর
জিয়া, মুজিবের মুখ।

সেই মাই আবার প্রসব করে
সর্প যেন তার রূপ
স্বৈরাচার, রাজাকার, হায়নার দল সব
দুঃখে যে ভাঙ্গে বুক।

৭১ এ বিজয় দেখেছি
মায়ের কোলেতে বসে
মায়ের হাসিতেই বিজয় মালা
অনেক আশের আশে।

৭৫ এ কালোরাত এলো
১৫ই অগাস্ট রাত
বাবার চোখেতে দেখেছি কান্না
পাতে নেই নি সেদিন ভাত।

৮২তে এসে কেদেছি নিজে নিজে
অসহায়ত্তের কালো বোঝা বুকে নিয়ে,
যৌবনের প্রথম কান্না ছিল সে যে
দেশ মায়ের তরে
করেছি সেদিন প্রার্থনা
বীর শহীদের অকাল প্রান বধ
বন্ধ কর - আর না, আর না।

৮৫ থেকে ৮৭ পর্যন্ত
আন্দোলনের মাঝে কেটেছে দিন রাত
স্বৈরাচার খেদাও দেশ বাচাও
অবশেষে, স্বপ্ন হয়েছে সাচ।

এর পর থেকে গুটিয়ে গেলাম ‘
দেখলাম রাজনীতি
আসলে সকলেই ফাঁকা বুলি ঝাড়ে
নেইকো কারো কোন নীতি।

আমরা সবাই গুটি, কতক সব
দাবার বোর্ডে সাজানো
রাজা মশাইরা খেলছে একেলা
বড়িগুলো সব আগানো।


মোহরা বানিয়ে খেলছে সবাই
পাইক পেয়াদায় পরিবিস্ঠ
সৈন্য এগিয়ে দেখছে খেলা
কে, কে থাকে তাদের অবশিস্ট।

যৃণা জন্মেছে সেদিন থেকে
যেদিন দেখেছি খেলা
মানুষ নিয়ে খেলছে তারা
বসিয়েছ মরন মেলা।

মানুষ রূপী কুকুর দেখেছি
দেখেছি বুনো হায়না
ডাকিনী দেখেছি শকুনি দেখেছি
আর দেখেছি তাদের অসচ্ছ আয়না।

আমি আয়নার মাঝে দেখেছি সকলই
দু টুকরো মাংসের লড়াই
মানুষ রূপী দুটি কুকুরের
কামড়া কামড়ি লড়াই।

কুকুরেরে ওপর ঝাপা ঝাপি করে
হায়েনার দল সে সব
পেট চিড়ে বের করে খেয়ে
করে তারা উৎসব।

দেখেছি আমি ডাকিনির বেশে
শকুনীর কালো থাবা নিয়ে হিংস্র উল্লাসে
হায়নার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে
পেট চিরে বের করে আনে
নিজের খাদ্যের পরে।
শুধু দু টুকরো মাংসের লোভে,
এরাও মানুষ,
কিংবা মানুষরূপী দানব সকল।

আজ আমার বাংলা মা
প্রৌড়ে পরেছে, ৪০ বয়স হল
নব যৌবনের কমনিয়তা হারিয়েছে
এখন তাকে চিমশানো বুড়ি বল।

আজ বিজয় আমার
দাঁত বের করা লোলুপ হায়েনার
কালো কুৎসিত মন,
আজ বিজয় আমার
আশি বছরের থুথ্থুরী বুড়ির
চিমশানো দুটি স্তন।

আজ বিজয় আমার
প্রি ম্যাচিওরড সন্তানের
আকালে পৃথিবির ডাক,
আজ বিজয় আমার
কুমারী মাতার
অকাল গর্ভপাত;
আর সাথে নিয়ে কিছু
অমানুষ, হায়েনার
দুষিত রক্তস্রাব।

আজ বিজয়েরই মাস
আজ বিজয়েরই দিন
আজ ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস
আমাদের আনন্দের দিন
পেরেছি কি শুধিতে এখনো আমরা
বাংলা মায়ের ঋণ।
আজ আমি বিজয় দেখেছি
বিজয় দেখছি, নির্বাক নয়নে চেয়ে
জানি না সামনে আরো কত শত বাধা
আসছে যে ধেয়ে ধেয়ে।


মঙ্গলবার, ২২ নভেম্বর, ২০১১

অস্তিত্বে তুমি

স্বপ্ন দেখে যাই প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ
তোমাকেই, শুধু তোমাকেই
আর অপেক্ষার প্রহর গুনে যাই
তোমার ফিরে আসার পথ চাই
প্রতিক্ষার প্রহর গুনি বসে অনন্তকাল ধরে।

সাগরের ঢেউগুলো খেলা করে একটি একটি করে
পাহাড়ের বুক চিড়ে পাহাড় খেলা করে সারি বেঁধে
দুধ সাদা মেঘেরা ভেসে বেড়ায় মেঘের ভেলার পড়ে
কিংবা আকাশ জুড়ে হাসে নক্ষত্র রাশি রাশি
প্রতিক্ষার অবসান হল বুঝি এবার, তুমি আসবে বলে।

কাল ছিলে তুমি যেন, কল্পনায় আঁকা ছবি এক
স্বপনেরও মাঝে ঘেরা অস্পস্ট কল্পনায়
একটু একটু করে যেন স্পস্ট হয়ে উঠছে মুখ ছবিখানি
মনের ভেতরের এক গহীন আয়নায়
স্বপ্নেরই দেশে, স্বপ্নে ভেসে ভেসে।

কল্পনার আঁকা রংতুলিতে কার ছবি এঁকে যাই
আপনি আপন হয়ে, একলা মনেতে
ছায়া ছায়া হিম কুয়াশার ওপার তীর হতে
অবয়ব যেন কার স্পস্ট হয়ে ওঠে, মনের কোনেতে
স্বপ্নেরই দেশে, স্বপ্নেরই রেশে।

তুমি আসবে বলে ছাদ রাখিনি আমি মাথার ওপরে
যদি টুপ করে নীলপরী হয়ে
নেমে আস ওই আকাশের বুক চিরে
অপেক্ষার কুয়াশা নেমেছে আজ ঘন হয়ে মাথার পরে
ধোঁয়া ধোঁয়া হয়ে আসে চারিপাশ বিবর্ণ সন্ধ্যা জুড়ে।

অপেক্ষার দীর্ঘ সময় হাত বাড়িয়ে আছি তোমা পানে
শুন্যতায় ভরা হাতে শ্যওলা পড়ে গেছে তাতে
আঙুলে আঙুল এ জড়িয়ে আসা শ্যাওলার স্তর গুনি
একা বসে আনমনে শ্যওলা মাখা হাত ঘসি
তোমার গাল জুড়ে, স্বপ্নকে ঘিরে।

আঙুল পিছলে খেলা করে তোমার খোলা ঠোঁটে, মুখে বুকে
লতানো শ্যওলার মতো একটু একটু করে
তোমার ঠোটের স্পর্শ, একরাশ এলোচুলের বুনো গন্ধ
তোমায় জড়িয়ে ধরার বাসনা রয়ে যায় মনের কোনেতে
তবু প্রাণের স্পন্দন হয়ে রয়ে যাও আমার স্বপ্নেরই ঘোরে।

পাহাড় দাঁড়িয়ে রয় পাহাড়ের কোল ঘেসে
আর নক্ষত্র রাশি জ্বলে ওঠে অন্ধকারের আলোর বেশে
সারি সারি নীল ঢেউ বয়ে চলে এঁকে বেঁকে সাগরের বুক চিরে চিরে
চিরে দেখেছ কি হ্রদয় আমার কভু
ছিলে তুমি আমার কতটা হ্রদয়ের গভীর অস্তিত্ব জুড়ে?

শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১১

তুমি, তুমি আর তুমি

নিঃস্তব্ধতা খেলা করে কোলাহল মুখরিত ব্যস্ত নগরীর ভাজে ভাজে
কোথায় যেন ডাকাতিয়া সুরের করুন আর্তনাত কেঁদে ফেরে
আছরে পড়া কাঁচের ঝনঝন শব্দে ভেংগেচুরে তচনচ করে নিতে
মনের গভীরে বাসা বেঁধে থাকা ওই নিঃস্বংগতা ভেঙ্গে দিতে।

নিঃস্বংগতা রয়ে যায় হাজার মানুষের ভিরের মাঝে মাঝে
কে যেন হাত বাড়িয়ে ডাকে আয় আয় রবে অচিন কোন ভূবন থেকে
ভালোবাসায় ভাসিয়ে দিয়ে চায় যেন মনের ভেতরেতে গেড়ে বসে
হ্রদয়ের গভীর হতে টেনে হিচরে নিঃস্বংগতাগুলি বের করে নিয়ে এসে।

শুন্যতার হাহাকার কথা কয় এক জীবনের সকল পাওয়ার মাঝে থেকে
না দেখা সব স্বপ্নগুলো তবু জেগে রয় নিদ্রাহীন আঁখির পলকে
হাতছানি দিয়ে ডেকে নিয়ে যেতে চায় কে যেন আমায় নিজের করে নিতে
না পাওয়া সব বেদনাগুলির মাঝে বসবাসরত সব শুন্যতাগুলি ভরে দিতে।

একাকীত্ব বয়ে চলে শত নদীর টন টন পানির স্রোতের টানে টানে
না বলা কথামালাগুলো মনে গেথে রয় ফুলোমালা গাঁথা হলো না বলে
সুঁই এ সুতো ভরা হলে ফুলের সন্ধানে কোন পথ পানে ছুটে চলে আনমনে
আমার একাকীত্বের কবর দেয়া হবে বলে ফুলগুলো সব গাছ হতে পেড়ে আনে।





শিরিষ কাগজে ঘসা স্কাল্পচারের মূর্তি খানি দেখি
অনভ্যাস্ত হাত বুলিয়ে চলি ভাস্কর্যের গায়ে
কোন এক বোদ্ধা খোঁজে কিংবা আমি খুঁজে বেড়াই
তোমার স্পর্শ ওই ভাস্কর্যের মূর্তির গায়।

রাতের কোলাহলে ব্যস্ত রাস্তায় কোন পথে হেঁটে চলি
আলো দিতে থাকে মাঝ রাতের সোডিয়াম লাইটগুলি আমার গায়
হলুদ আলোগুলি খুঁজে ফেরে তোমাকে কিংবা আমার আঁখিদুটি
হারিয়ে যাওয়া তোমাকে যদি পাই তাই হেঁটে যাই ক্লান্ত পায়।

অন্ধকারের তারার ভিরে জ্বলে ওঠে চাঁদ আকাশে আলো দিতে
খুঁজে পেতে তোমাকে ওই অন্ধকারের ঘুটঘুটে পথে
অন্ধকারের তারা খোঁজে কিংবা জোনাকি আলো জ্বেলে
তোমার রূপের আলোর দিশা গভীর অন্ধকারের ভিরে।

একটু একটু করে যেব অবয়ব হয়ে ধরা পড় তুমি
ছায়া ছায়া হিম কুয়াশার ওপার তীরে
তোমারই ছায়া যেন খুঁজে ফিরি আমি
আলোর দিশা রূপে আজো অন্ধকারের ভিরে।

স্বপ্নের মাঝে তুমি আছ আছ তুমি আমারই কল্পনায়
হাত বাড়িয়ে আলো আধারে খুঁজি তোমায় তায়
রেখেছিলে আমায় তুমি কতনা ভালোবাসায় মুড়ে
তাইতো আছ তুমি আজো আমার সাড়া অস্তিত্ব জুড়ে।

শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১১

নির্বাসন এ একা

শুভক্ষণে বন্ধু বেশে হয়েছিলে পরিচয় তোমার আমার সাথে
বন্ধুত্বের সীমার মাঝে প্রতিদিন কত কথামালা বাদাম খাওয়ার ফাঁকে
তারপর সময় গড়িয়েছে অনেকখানি বন্ধুত্বের গন্ডি পেরিয়ে
একান্ত কথাগুলো ফাঁকে দিয়েছিলে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে।

পারিনি এড়াতে তোমাকে না পেরেছি তোমার ডাক
তাইতো গিয়েছিলেম ভেসে এসেছিল সে বন্য রাত
উজার করা ভালোবাসার গানে বেধেছিলেম কত সুর দুজনে
তোমাতে ডুবেছিলেম আমি ভালোবাসা নিয়ে প্রানে।

ডাকতে তুমি বন্য হয়ে পারিনিকো থাকতে ছেড়ে
গাছের ডগায় তুলে দিলে আনতে পেড়ে চাঁদ
পারিনি তোমায় শত বোঝাতে বামন আমি
ধরতে চাঁদেরে ওই পর্যন্ত যায়না আমার হাত।

অভিমানে মুখ গুড়িয়ে অন্যদিকে বসে
মনের ঝাল মিটেয়েছ তুমি বস্তাহীন এই পিঠে
তোমার রাগের পুতুল আমি চেয়েছিলেম মাফ
করলে নাতো করুনা আমায় করলে তুমি রাগ।

একটি দুটি মাশুল গুনি ব্যর্থতারই মাঝে
দিনে দিনে দ্বগ্ধ আমি ব্যর্থতাতেই লাগে
মন কি কোমল হয় কখনো? করনিকো ক্ষমা
তবু চেস্টা করে যাচ্ছি যা আছে সব আমা।

চদ্ররাতে একনৌকায় শুয়ে ছিলে বুকে
হঠাৎ উঠেই ধরলে মাতম না পাওয়ার সব শোকে
নিঠুর তুমি ধাক্কা দিয়ে নৌকা থেকে ফেলে
বাচালো আমায় মাঝ দরিয়ার দুঃখি যে এক জেলে।

মধুচন্দ্রিমার আবেশ ঘনা রাতের বেলার হাসি
করে দিলে ঘরের বাহির হাতে বাঁশের বাঁশী
বললে ডেকে আজকে থেকে এ দরজা বন্ধ
তোমার প্রেমে আমি ছিলেম তখনো যে অন্ধ।

ভালোবাসার হাতছানিতে দিয়েছিলে ডাক
করেছি ভুল দিচ্ছি মাশুল নেই জীবনের স্বাধ
ভালোবাসার অবুঝ খেলায় গিয়েছিলেম হেরে
তাইতো তোমার একতরফা ভালোবাসা গেছে মরে।

কোন এক ভুলক্ষনে ভালোবাসা জেগেছিল মনে আমার
সেই থেকে আজ অবধি পারিনি ভুলে যেতে তোমায়
সেই থেকে তুমি, রক্তে মিশে গিয়ে রক্তে মিশে যে আছো
আমাতে আমা হয়ে আমারই হয়ে গেছ।

তবুও তোমাকে খুঁজি কেন জানি না জানি না
ভাবি না কখনো আর পাবো কি পাবো না
যেথা আছ ভালো থেকো আমাকে ভেবো না
তোমাকে ভোলা কভু হলো না হলো না।

বাস্তবতায় হেরে গেছি তবু মনের কাছে বাঁধা
তাইতো এখন কাটছে জীবন তোমার শোকে কাঁদা
ক্লান্ত শরীর ক্লান্ত মনে ক্লান্ত চোখে দেখা
তাই তো আমি পড়ে আছি নির্বাসন এ একা।

তোমায় ফিরে পাওয়া

তোমার দেয়া যত কস্টগুলো তোমার দেয়া যত বেদনাগুলো
তোমার দেয়া ভালোবাসার স্মৃতিগুলো সব
তোমার দেয়া অপমান আর উপেক্ষার ডালি
কেন যে ক্ষরণ জাগায় মনে প্রতি নিয়ত একটু একটু করে।

উড়ে চলা গাংচিলের ডানায় ভর দিয়ে
যদি উড়িয়ে দিতে পারতেম তোমার ভাবনাগুলো
প্রতিনিয়ত যেগুলো কুরে কুরে খাচ্ছে আমায়
তোমায় মনে করে।

বয়ে চলা নদীজলে ঝরা পাতার মত
যদি ভাসিয়ে দিতে পারতেম দুঃখ বেদনাগুলো
বুক ভার করে চেপে ধরে আছে যা বজ্রআটুনির মত
শুধুই তোমার দেয়া অমূল্য উপহার হয়ে।

হিমবাহের গলা বরফগুলোর মত
তোমার হ্রদয় কি কভু গলবে কখনো
অভিমানে দূরে চলে গেলে কত তুচ্ছ কারনে
আমার এই মন ভেংগে দিয়ে।

ফুটন্ত জলীয় বাস্প গুলোর মত
উবে যায় না কেন তোমার দেয়া সব যাতনাগুলো
তোমার যত দেয়া উপহাসের ডালি
ধরে হ্রদয়ে ক্ষরণ আজো, শুকায় কখনো?

পাহাড়ের মত ওই পাথর হ্রদয়ে তোমার
ভালোবাসার কষাঘাতে করেছি জর্জরিত বারে বারে
তবু পাষাণ হ্রদয়ে একটু কি আঁচর
ফেলতে পেরেছিল কখনো?

সাগরের ঢেউ এর মত
কস্টগুলো আছরে পরে অবিরত
যখনি তোমার কথা মনে পড়ে
যখনি তোমার ভাবনা উঁকি মারে।

ধুসর কুয়াশার মত করে
হারিয়ে গেছ ধীরে ধীরে অস্পস্ট হয়ে
আমার জীবন থেকে কোন অভিমানে
ফেলে রেখে আমাকে আজ কোন অন্ধকারে।

বৃষ্টির ঝরা কান্নার মত করে আজ
হ্রদয় কাঁদে কেন শুধু তোমায় মনে করে
এখনো তোমাকে আবার ফিরে পাওয়ার ভাবনা উঁকি মারে কেন
হারিয়ে ফেলেছি যাকে অমাবস্যার সেই গহীন অন্ধকারে।

এলোমেলো রাতের বেলায় কেন যেন এলোমেলো হয়ে যাই আজো আমি
হ্রদয় মেলে তাকিয়ে শুধুই এদিক ওদিক খুঁজে বেড়াই তোমাকেই আজো
কোন এক দূর পানে হাত বাড়িয়ে দেই আমি, এখনো তোমার আশায়
ফিরে পাওয়ার সুপ্ত বাসন যে রয়ে গেছে আজো মনের গহীন কোনো কোনে
তোমাকে ফিরে পাবার
শুধু, তোমাকেই ফিরে পাবার।

বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১১

ভালোবাসার দূরত্ব

যোজন দূ্রের অচিন পাখি
হাত বাড়িয়ে তোমায় ডাকি
দাওনা ধরা মনের ঘরে
একলা আমি রই যে পরে।

এত করে তোমায় ডাকি
দিলে তবু আমায় ফাঁকি
গেলে চলে আমায় তুমি ফেলে
ভালোবাসার মূল্য কি আর দিলে।

জাগরনে একা একা
কেন যে পাই তোমার দেখা
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন আঁকি
সেইখানে তেও তোমায় দেখি।

দিন ভরা যে অনেক কাজ
মনের ভেতর মেঘের সাজ
কাজগুলি সব গেল বয়ে
মনখারাপের কান্না হয়ে।

উড়িয়ে ঘুড়ি দূর আকাশে
ভাসিয়ে দেই আজ মেঘের দেশে
লাটাই থেকে সুতো ছেড়ে
কোন দূরে যায় হাওয়ায় উড়ে।

ঘুরে ঘুরে ভেসে ভেসে
এদিক ওদিক তাকায় যে সে
নেয় কেন ঠাই আপন মনে
তোমার ঘরের কোনে।

জাগরনে ঘুমের ঘোরে
কাজের মাঝে অবসরে
ভাসিয়ে দেয়া ঘুড়ি আমার
আসে না আর ফিরে।

অভিমানে গেলে চলে
একলা ঘরে আমায় ফেলে
একটি বারও পিছু ফিরে
শুনলে না ডাক একটি বারে।

ভালোবাসার মনের ঘরে
ভালোবাসাই বসত করে
একলা আমি রইলাম পরে
যোজন যোজন দূরে।



বুধবার, ১২ অক্টোবর, ২০১১

তোমাতে হারায় মন

মনে মনে ভাবি আমি যেন পাশে আছ তুমি
খাতার পাতা ভরে ওঠে কবিতার কথাগুলি
কলমের আঁচরেতে, একটু একটু রূপে।

মনে মনে ভেবে চলি যেন পাশে আছ তুমি
তুলির টানে আঁকা হয় তোমারই ছবিগুলি
মনের ক্যানভাসে, বহুরূপে বহুরূপে।

কখনো তুমি ঢেকে যাও অন্ধকারে মুখ লুকিয়ে
দুচোখ হারায় তখন অমাবস্যার কালো আঁধারে
কালির প্রলেপ পড়ে যেন তোমারই দুধআলতা গায়ে।

কখনো দিয়ে উঁকি সলজ্জ ধনুকের মত বাঁকা চোখে
লজ্জায় মুখ ঢেকে ফেলো কেন তুমি চোখেরই পলকে
খুশির ঝলক ছুটে চলে রিনঝিন নূপুরের পায়ে পায়ে।

অধির অপেক্ষায় রেখে প্রতি পক্ষে একবার এসে
দেখা দিয়ে যাও তুমি আমাকে, পূর্ণিমায় হেসে
জ্যোৎস্না মেখে চলি আমি সারা গায়ে, সারা গায়ে।

নারকেল পাতার ফাঁক গলে চুইয়ে নেমে আসে সাদা জ্যোৎস্নার হাসি
মনে বড় স্বাদ জাগে স্নান করে নেব আমি সারাগায়ে পূর্ণিমা মেখে
ধুয়ে নেব মনের যত গ্লানিগুলি, পাশে নিয়ে তোমায়।

চাঁদনি রাতে চাঁদের খেলায়, মন যে হারায় মন যে হারায়
জ্যোৎস্না বেলায় তারার মেলায়, আমার এ মন তোমাতে হারায়
যতবার দিয়ে যাও দেখা তুমি প্রতি চন্দ্রবেলায়, প্রতি চন্দ্রবেলায়।

তাইত সারাক্ষণ ভাবি আমি, যেন পাশে আছ তুমি
তোমার কথায় তাই ভরে ওঠে কবিতার খাতাগুলি
কলমের আঁচরেতে, নবরূপে নবরূপে।

আর স্বপ্নেতে জাল বুনি, মনে মনে দেখি তুমি
তুলির টানে এঁকে যাই তোমারই ছবিগুলি
মনের ক্যানভাসে, রংমেখে বহুরূপে।


মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০১১

ডাক

কচ্ছপের পায়ে ভর দিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে সে যে
নিঃশব্দ পায়ে পায়ে, তার পদধ্বনি শুনি
হিম নিঃশ্বাস এর হালকা পরশ পাচ্ছি একটু একটূ করে
ঠান্ডা হয়ে আসা গায়ে, তাই মৃত্যুর প্রহর গুনি।

একটু একটু করে যাত্রা অন্য ভূবনের পানে
ভালো লাগে না আর ধীর পায়ে এগিয়ে চলা
ঢিমা তালে ধীর লয়ে গুনগুনানো মত্যুর গানে গানে
বড্ড ক্লান্তিকর লাগে আজ সুদূর এই পথ চলা।

আলোছায়া খেলা করে আজ জ্যোৎস্না ঢালা রাতে
মেঘের সাথে লুকোচুরি যেন চাঁদের
হাওরে বাতাস বয় গা হিম করা হো হো শব্দে
ওপারের অলুক্ষুনে ডাক পরে আজ তাদের।

কস্টগুলো দানা বেধে আছে ওই দূর আকাশের গাঁয়ে
কখন জানি ঝরে পড়বে বৃস্টিফোটায় ভর করে
ধুয়ে মুছে নিয়ে চলে যাবে গ্লানিগুলি সব
পড়ে ছিল সকলই যা হ্রদয়ের ধার ধরে।

তিল তিল করে এগিয়ে চলা ওই অচেনা ভূবনের পানে
ইচ্ছে করে না চলতে এ পথ হাঁটি হাঁটি পায়ে
এসো হে মরন আলিঙ্গন করি তোমায় একবারে মন প্রানে
মৃত্যুর ঠিকানা লেখা হোক আজ কবরের গায়ে গায়ে।

চোখের ওপরে কালো ছায়া ফেলে আজ শকুনেরা উড়ে চলে
শব হতে তাই মৃত আত্মারা উড়ে যেতে চায় আকাশেতে ডানা মেলে
ওপারের ডাক যেন শুনতে যে পাই একটু একটু করে
কবর যে আজ ডেকেছে আমায়, চলে যেতে হবে দূরে, বহু দূরে।

রবিবার, ৯ অক্টোবর, ২০১১

না বলা কথাগুলি

বলা হয়নি কথাগুলো সব
ছিল যা মনের কোনে,
গুনগুনিয়ে গান গাওয়া হয়নি
তোমারই কানে কানে।

গাঁথা হয়নি কথামালাগুলো
ছিল যা হ্রদয় কোনে
পড়িয়ে দিতে পারিনি যে আমি
ঝুমকো গেঁথে কানে।

হ্রদয়ের কথা হ্রদয়েতে ধরে
ছিলেম চুপটি করে
আশা ছিল মনে বুঝে নেবে তুমি
বুঝনিকো তুমি মোরে।

আশার দুপুর গড়িয়ে বিকেল
সন্ধ্যা নামে পথ চলতে
দ্বিধা ভরা রাত গড়িয়ে সকাল
মুখ ফুটে তবু পারিনি বলতে।

ঠারেঠোরে ইশারাতে
কত কথা বলি যে তোমায়
ভালোবেসেছি যে শুধু তোমাকে
একথাটি কেন বোঝ নিকো হায়।

ভালোবাসি তোমায় এ কথাটি বলতে
এত দ্বিধা ভোগে কেন যে মন
তুমি ছাড়া সেথা আর কেহ নাই
খুলে দেখ হ্রদয়ের প্রতিটি কোন।


শনিবার, ৮ অক্টোবর, ২০১১

প্রতিক্ষার প্রহর আর অপেক্ষার ভোর

প্রতিক্ষার প্রহর কাটে একাকি বসে গান শুনতে শুনতে
আর তারি সাথে মিশে রয় এক অজানা অপেক্ষার ঘোর
প্রতিক্ষার প্রহর কেটে যায় সারারাত ধরে তারা গুনতে গুনতে
আর অপেক্ষার রাত শেষ হতে না হতে নেমে আসে ভোর।

নির্ঘুম কেটে যাচ্ছে একটি একটি করে প্রতিক্ষার দিনরাত্রি
জন্ম জনম কেটে যাচ্ছে এভাবেই যেন এক শুন্যতায় বসবাস
শেষ হয় না যেন আপেক্ষার, আর তারা গোনার কালরাত্রি
জনম জনম কাটে প্রতিক্ষায় তোমার, যেন নিয়তির নির্মম পরিহাস।

সূর্য ওঠে ভোর হয় আবার সূর্য ডোবে, নেমে আসে অন্ধকার
তবু কাটে না যেন প্রহরগুলি তোমার জন্য আমার প্রতিক্ষার
চাঁদ ওঠে জ্যোৎস্না হাসে, নেমে আসে অমাবস্যা নেমে আসে আঁধার
চেয়ে থাকি কোন পথ পানে কাটে না সময় যেন আমার অপেক্ষার।

জন্ম জনম কাটে আমার নিয়ে হাত ঘড়ি, শুধু তোমার প্রতিক্ষায়
জনম জনম গেল হ্রদয় রক্তাক্ত করি, শুধু তোমারই অপেক্ষায়।



শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০১১

ঘৃনা না ভালোবাসা

ঘৃনার অপর পিঠে বাস করে ভালোবাসা
কেও বোঝে, আর কেও বোঝে না
সারক্ষণ মেতে রই অভিনয়ের খেলায়
তবুও কেন জানি মন মানে না।

কাঁচের আয়নায় প্রতিবিম্ব খুব যেন মুখ চেনা
ঘষা পারদের আয়নায় মুখ চেয়েছ কি কভু
হায় মনের ওপারের কালিমাখা অন্ধকার ভুবন
কেন আমায় দেখিয়েছিলে হে প্রভু।

মনের কল্পিত সব ভাবনাগুলির মাঝে
অসচ্ছ এক পর্দা পরে থাকে
ভয় হয় পর্দার ওপারে উঁকি দিতে
কালকেউটেরা সব ফনা তুলে থাকে।

ঘুমঘরে কাটে রাত নির্ঘুম চোখে
তারা গুনে গুনে ভোরের আলো যে ফোটে
ভাবনারা ফনা তোলে ভালোমন্দে মিশে
হায়, এ পোড়া কপালে তবু কি ঘুম জোটে।

মানুষের দেয়া একটি দুটি সব ঘৃনার বীজগুলি
গুনতে গুনতে বয়ে চলে যে কাল
ভালোবাসার সুবাতাসটুকু তারি মাঝ হতে
কখনো খুঁজে পাবে কি মহাকাল।



বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০১১

তারে দেখার স্বাদ

মেঘের কোলে ভাসে যার মুখ
ছায়া পড়ে তার ঘন কালো দীঘির জলে
একটু একটু করে অস্পষ্ট ভাবে দেখা দিতে চায়
রংধনু রঙের অস্পষ্ট আলোর ঝলকানিতে
আমি অপার তাকিয়ে রই যদি একটিবারের তরে
দেখা যায় তারে, মন ভরে মন ভরে।

দেখা যায় তার দূর থেকে ধুসর কুয়াশার মত মুখ
মধ্য দুপুরের কাঠ ফাটার রৌদ্দ্রের মাঝে মিটিমিটি জ্বলে
চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে থাকি আমি
যদি একবারের মত ভালো করে তার
মুখখানি দেখতে পাওয়া যায়।

ঘন বরিষনে বৃষ্টির রিমঝিম শব্দে তার গান শোনা
কিংবা বৃষ্টির মাঝে চশমার কাঁচ ঘশে
তাকে দেখতে পাওয়া চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া
কিংবা জ্যোৎস্না রাতে আলোর আকাশের দিকে তাকিয়ে
তার প্রতিবিম্ব দেখা,
মনে আশা যদি তারে একবার দেখা যায় স্পষ্ট করে।

লাল গাড়ীর ঘন কালো কাঁচ ঘেরা আধো অন্ধকারে
ভুস করে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে কাঁদা পানি ছিটিয়ে
সামনে দিয়ে রানীর মত চলে যায় সে যে
তবুও নির্লজ্জ আমি এক বেহায়া তার পথ চেয়ে
প্রতিদিন তার নীল গেট এ দাঁড়িয়ে প্রতিক্ষার প্রহর গুনি
সাথে করে হ্রদয় গোলাপ আর ভালোবাসার ডালি
যদি মুহূর্তের তরে দেখা যায় তার সাথে।

কি বোকা আমি ছিলেম আজ অবধি
কখনো খুলে দেখিনি আমারই হ্রদয় আয়না খানি
সে যে রয়ে গেছে মোর হ্রদয় কোনের
আলোকিত ওই আয়নাঘরে
যেথা হতে চোখ বুজেই দেখা যায় তারে।

মঙ্গলবার, ৪ অক্টোবর, ২০১১

ভুলের অবসান

ব্যর্থ হয়ে থাকে যদি
প্রণয়ের সব আয়োজনগুলি
এ জীবনের সকল চেস্টা জুড়ে।

বাধ ভাঙ্গার আওয়াজ শুনি
হ্রদয়ের গভীরে একদম ভেতর থেকে
তোমার আমার না হওয়া মিলনের
হ্রদয় ভাঙ্গা মনের ঘরে।

চলে এসো তুমি
আগামী জনমের কালে
রাখব তোমায় মনের ঘরে।

হবে কথোপকথন দুজনে
তোমার আর আমার মাঝে
চোখে চোখ রেখে
সামনা সামনি হলে।

মিটিয়ে নেব সব
ভুল বুঝাবুঝি গুলির
চির অবসান
একসাথে দুজনে মিলে।

জীবনের সেই বাঁকে এসে
যদি সাধ হয়
পড়ে এসো তুমি
আমার দেয়া সেই নীল সারি খানি।

অদ্ভুত এক নীল জ্যোৎস্নায়
বড় সাধ জাগে একবার দেখতে তোমায়
নদী পাড়ে বা সবুজ ঘাসের বনে
যেথায় জোনাক পোকারা সাজায় থরে থরে
মিটমিটে আলো সারি সারি।

নীল সারিতে তুমি সেজে এসো সেদিন কিন্তু
হয়ে আমার নীল পরী।

হবে কথোপকথন দুজনে
তোমার আর আমার মাঝে
চোখে চোখ রেখে
সামনা সামনি হলে।

মিটিয়ে নেব সব
ভুল বুঝাবুঝি গুলির অবসান
চিরতরে আর চিরতরে
একসাথে দুজনে মিলে।

রবিবার, ২ অক্টোবর, ২০১১

তোমাকে মনে পড়ে

কোথায় যেন এক শুন্যতা কাজ করে
যখনি তোমায় মনে পড়ে
কোথায় যেন হারিয়ে যাই শত মানুষেরও ভিরে
যখনি তোমার কথা মনে পড়ে।

হাজার কাজের ব্যস্ততার মাঝে মন সরে রয় দূরে
যখনি তোমায় মনে পড়ে
সোনালী ল্যম্পপোস্টের আলোয় একাকি পথ চলি ফুটপাথ ধরে
যখনি তোমার কথা মনে পড়ে।

মেঘ বৃস্টি হয়ে ঠিক কান্না ঝরায় চারিদিক কালো করে
যখনি তোমায় মনে পড়ে।
চাঁদ ঠিক ঠিক মেঘের কোলে মুখ লুকায় জ্যোৎস্না হারায় দূরে
যখনি তোমার কথা মনে পড়ে।


শয়নে স্বপনে কিংবা জাগরনে মন ছুটে চলে কোন সুদূরে
যখনি তোমায় মনে পড়ে।
পাওয়া আর না পাওয়ার টুকরো বেদনাগুলি হ্রদয় ভার করে
যখনি তোমার কথা মনে পড়ে।

কোথায় হারিয়ে গিয়েছ আজ কোন সীমানার ওপাড়ে
এখন শুধু যে তোমার কথাই মনে পড়ে
আর মনে পড়ে আর মনে পড়ে
সহস্র কাজেরও ভিরে।


শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১১

নির্বাসন এ একা

শুভক্ষণে বন্ধু বেশে হয়েছিলে পরিচয় তোমার আমার সাথে
বন্ধুত্বের সীমার মাঝে প্রতিদিন কত কথামালা বাদাম খাওয়ার ফাঁকে
তারপর সময় গড়িয়েছে অনেকখানি বন্ধুত্বের গন্ডি পেরিয়ে
একান্ত কথাগুলো ফাঁকে দিয়েছিলে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে।

পারিনি এড়াতে তোমাকে না পেরেছি তোমার ডাক
তাইতো গিয়েছিলেম ভেসে এসেছিল সে বন্য রাত
উজার করা ভালোবাসার গানে বেধেছিলেম কত সুর দুজনে
তোমাতে ডুবেছিলেম আমি ভালোবাসা নিয়ে প্রানে।

ডাকতে তুমি বন্য হয়ে পারিনিকো থাকতে ছেড়ে
গাছের ডগায় তুলে দিলে আনতে পেড়ে চাঁদ
পারিনি তোমায় শত বোঝাতে বামন আমি
ধরতে চাঁদেরে ওই পর্যন্ত যায়না আমার হাত।

অভিমানে মুখ গুড়িয়ে অন্যদিকে বসে
মনের ঝাল মিটেয়েছ তুমি বস্তাহীন এই পিঠে
তোমার রাগের পুতুল আমি চেয়েছিলেম মাফ
করলে নাতো করুনা আমায় করলে তুমি রাগ।

একটি দুটি মাশুল গুনি ব্যর্থতারই মাঝে
দিনে দিনে দ্বগ্ধ আমি ব্যর্থতাতেই লাগে
মন কি কোমল হয় কখনো? করনিকো ক্ষমা
তবু চেস্টা করে যাচ্ছি যা আছে সব আমা।

চদ্ররাতে একনৌকায় শুয়ে ছিলে বুকে
হঠাৎ উঠেই ধরলে মাতম না পাওয়ার সব শোকে
নিঠুর তুমি ধাক্কা দিয়ে নৌকা থেকে ফেলে
বাচালো আমায় মাঝ দরিয়ার দুঃখি যে এক জেলে।

মধুচন্দ্রিমার আবেশ ঘনা রাতের বেলার হাসি
করে দিলে ঘরের বাহির হাতে বাঁশের বাঁশী
বললে ডেকে আজকে থেকে এ দরজা বন্ধ
তোমার প্রেমে আমি ছিলেম তখনো যে অন্ধ।

ভালোবাসার হাতছানিতে দিয়েছিলে ডাক
করেছি ভুল দিচ্ছি মাশুল নেই জীবনের স্বাধ
ভালোবাসার অবুঝ খেলায় গিয়েছিলেম হেরে
তাইতো তোমার একতরফা ভালোবাসা গেছে মরে।

কোন এক ভুলক্ষনে ভালোবাসা জেগেছিল মনে আমার
সেই থেকে আজ অবধি পারিনি ভুলে যেতে তোমায়
সেই থেকে তুমি, রক্তে মিশে গিয়ে রক্তে মিশে যে আছো
আমাতে আমা হয়ে আমারই হয়ে গেছ।

তবুও তোমাকে খুঁজি কেন জানি না জানি না
ভাবি না কখনো আর পাবো কি পাবো না
যেথা আছ ভালো থেকো আমাকে ভেবো না
তোমাকে ভোলা কভু হলো না হলো না।

বাস্তবতায় হেরে গেছি তবু মনের কাছে বাঁধা
তাইতো এখন কাটছে জীবন তোমার শোকে কাঁদা
ক্লান্ত শরীর ক্লান্ত মনে ক্লান্ত চোখে দেখা
তাই তো আমি পড়ে আছি নির্বাসন এ একা।

বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১১

প্রাপকের আশায়

পৃথিবীর এই আজব নাটক পাড়ায়
মঞ্চস্থ হচ্ছে কতই না নাটক প্রতিদিন
কত ভালোবাসাবাসি
কত মাখামাখি দুজনে দুজনায়।

কতইনা চিঠি লিখা হয় প্রতিদিন
আনপনের কালিতে বা মনে মনে
ভালোবেসে নীল খামে করে
কত চিঠি পৌছে প্রাপকের কাছে;
কত চিঠি রয়ে যায় পড়ে
পোস্টঅফিসের কোন এক
নির্জন কোনে অবহেলায়।

ঠিকানাবিহীন ঠিকানায় লেখা
এমনই একটি চিঠি পাঠানোর খায়েশ
তোমার কাছে, আমার অনেক দিনের।

দিবা নিশি অপেক্ষায় থাকি
যদি কোনদিন হঠাৎ কখনো ভুল করে পৌছে যায়
আমার চিঠিখানি যথার্থ প্রাপকের কাছে ........


স্বপ্নে তুমি

মনের মাঝে বয়ে চলে
মন খারাপের পাগলা হাওয়া
তোমায় নিয়ে স্বপ্ন আঁকি
স্বপ্ন দেখি তোমায় পাওয়া।

ঘুমের মাঝে স্বপ্ন চুমে
নীলপরী সব ডানা মেলে
সত্যি হবে স্বপ্ন আমার
চোখ খুলে আজ তোমায় পেলে।

লাল হওয়া ঐ আকাশ পানে
সূর্য ডোবা দিনের শেষে
দেখি যেন তোমায় আমি
লাল টুকটুক পরীর বেশে।

জ্যোৎস্না রাতের আলোর ভিরে
খুঁজি তোমায় নদীর তীরে
হাতে হাতে দুহাত রাখি
স্বপ্নে যেন তোমায় দেখি।

অন্ধকারের তারার মেলায়
হারায় যে মন তোমার খেলায়
থাক তুমি যদি পাশে
থাকব বেঁচে তোমার আশে।

বৃষ্টি নামে টাপুর টুপুর
মেঘলা দিনের অলস দুপুর
হাত বাড়িয়ে বৃষ্টি পাওয়া
মনে মনে তোমায় ছোঁয়া।

ঘুম ডাকে যে নিদের দেশে
চোখের মাঝে ঘুমের রেশে
ঘুম কেড়ে নেয় কে যে আমার
নিদ্রাহীন এক পরীর বেশে।

মন ডাকে যে মনটাকে আজ
মন খারাপের কান্না ঝরে
বৃষ্টি ঝরা রাতের শেষে
হাত বাড়িয়ে তোমায় খোঁজে।



তোমাকে বুকে ধরে।

মনের মাঝে হাঠাৎ করেই যেন কার মুখ উঁকি দিয়ে ওঠে
রংতুলি চেয়ে আছে হাতদুটি পানে তৃষ্নার্ত পিপাসা নিয়ে
যদি তুলি খানি হাতে নেয়া যায়
সাদা ক্যানভাস স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে আছে
প্রতিক্ষার প্রহর গুনে
যদি মন চায়, যদি ছবিখানি আঁকা হয়ে যায়।

দ্বিধা দ্বন্দের দোলায় দুলছি আমি
একবার রংতুলির ডাক শুনি
সাদা ক্যানভাসে মনের আয়নার প্রতিচ্ছবি দেখি
মনে দ্বিধা সংশয়, বড্ড ভয় হয় রংতুলি হাতে নিতে
কতবার, কতশতবার রংতুলি আমার হাতের মাঝেই
শুকিয়ে গেছে রঙ এর রঙে রাঙ্গা হয়ে
লাল, নীল, সবুজ, হলুদ
রঙের বাটিতে রঙ গুলে যাই একটির পর একটি
ক্যানভাসে কখনো ফেলতে পারিনি দাগ একটিবারের তরে
স্ট্যান্ডে দাঁড়ানো ক্যানভাস তাই চেয়ে থাকে মুখ ভারে
আমিও দাঁড়িয়ে থাকি অসহায় চোখে সাদা ক্যানভাসের তরে।

মনের আয়নায় ফোটানো ছবির একটি রেখাও
যেন তুলিতে আঁচর কাটতে পারি নি ওই ক্যানভাসের গাঁয়ে
পারি নি একটিবারের তরেও তোমার ওই মুখছবি আঁকতে
দ্বিধা দ্বন্দ ভয় সব এক হয়ে রয়
যদি আমার আঁকা চুলির আঁচরে ফোটে ওঠে অন্য একটি মুখ
সেদিন তোমাকে আমি মুখ দেখাব কিভাবে?

তার থেকে পড়ে থাক রংতুলি আর ক্যানভাস এর ডাক
রঙের ডিব্বে গুলি বন্দি শুকিয়ে যাক
তুমি রয়ে যাও আমার মনের আয়নার মাঝে
আমাতে আমা হয়ে।

একটিবারের দেখা রূপে চিরদিনের তরে
তার থেকে হ্রদয় কুঠোর হতে বের করে এনে
মনের আয়নায় দেখব তোমাকে চিরকাল
যতদিন মনের আয়না ঘষা কাঁচে পরিণত না হয়ে যায়
কিংবা তোমার মুখচ্ছবি ঝাপসা না হয়ে আসে।
আছ তূমি মনের মাঝে মনের আয়নার রাণী হয়ে
থাকো তুমি তাই মোর হ্রদয় কোণে
আমার মনের মানবী হয়ে।
ছবিতে তোমার রূপ কখনোই তুলে আনবো না আর
যতদিন বেঁচে থাকি
তোমাকে বুকে ধরে।

যদি ভুল ছবিটি একে ফেলি
ক্ষমা করতে পারব না নিজেকে নিজে আমি।

বুধবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১১

ষড়রিপুর মাঝে বন্দি

মনের ঘরে কিসের আশা, মনের মাঝে কিসের বাসা
বন্ধ ঘরের কেওর মেলে, বন্ধ মনের গহীন কোনে
একটু খানি উঁকি, চমকে যেন উঠি
হিংস্র যেন দানব আমি, দাবার ঘরের ঘুঁটি।


চলার পথের ষোল বাঁকে, খোঁজে নারী লোলুপ চোখে
চোখের মাঝে লালসা ঝরে, চোঁরা চোখে চেয়ে দেখে
মনে মনে বাহুডোরে একলা ঘরে বন্দি করে
পেতাম যদি একলা নারী একটি বারের সাথী
কাম যখন ওঠে জেগে, বিবেক তখন রয় ঘুমিয়ে
ঘরের মাঝেই বিবি আছে, অপেক্ষারই প্রহর চেয়ে
পেছন ফিরে তাকাই যদি চমকে যেন উঠি
কামের লিপ্সা দানব বানায় দাবার ঘরের ঘুঁটি।


মনের ঘরে ক্রোধের বাসা কোথায় পালায় ভালোবাসা
শ্বশুর বাড়ির টাকা কড়ি মনের মাঝে ওরায় ঘুড়ি
বিবির সাথে মিঠে কথার মালার লহর বুনি
লোলুপ মনের গহীন কোনে কড়ির হিসাব গুনি
না মিটলে লোভের আশা বিদ্ধ যে হয় ভালোবাসা
বউ পেটালো হিংস্র পশু নির্যাতনে দানব শিশু
একটু খানি পেছন ফিরে চমকে যেন উঠি
ক্রোধের ঘরে হলাম দানব দাবার ঘরের ঘুঁটি।


লোভ লালসা থাবা মেলা, টাকার পিছে ছুটে চলা
পাশের বাড়ির খেলার সাথি, হাঁকায় যে আজ বড় গাড়ি
পেছনে পড়ে আছি আমি ছিলেম যে তার সাথি
বিবেকটারে মোচর দিয়ে বোধ বুদ্ধি বিসর্জনে
ছুটে চলি টাকার পিছে পেতে গাড়ি বাড়ি
লোভের থাবা গ্রাস করেছে, বিবেক নিল আড়ি
হঠাৎ করেই পেছন ফিরে চমকে যেন উঠি
লোভের মাঝে হিংস্র দানব দাবার ঘরের ঘুঁটি।


কিসের মোহে অন্ধ হলাম বিবেকটারে বিদায় দিলাম
মদের নেশায় হয়ে চুরচুর শরীরটাতে হয় ভাংচুর
কিবা পেলাম কি হারালাম একটু যদি আগে ভাবতাম
মনের মাঝে হিংসা জাগে বন্ধু আমার চলে আগে
রিপুর কাছে বাঁধা আমি পরশ্রীকাতর এই মন
বোধ বুদ্ধি সকলই যেন দিয়েছিলেম বিসর্জন
মোহ হতে মুখ ঘুরিয়ে চমকে যেন উঠি
মনের মাঝেই দানব আমি দাবার ঘরের ঘুঁটি।


তাইতো এখন শেষের বেলায় জীবন যে পার করেছি হেলায়
অতীতগুলো বড়ই ভাবায় করেছি পার লোভ লালসায়
পুরো জীবন ভাবতে গিয়ে পেছন ফিরে উঁকি দিয়ে চমকে যেন উঠি
ষড়রিপুর মাঝে বাঁধা, আমি যেন এক দাবার ঘরের ঘুঁটি।



সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১১

চাঁদের আলো

চাঁদের গায়ে আলো হাসে
কলংকে তার কি বা আসে
জ্যোৎস্না বিলায় দরাজ হাতে
মেঘ তাকে কি ঢেকে রাখে।

পূর্ণিমার ওই আলোর কিরণ
আলো করে সবারই মন
দাগগুলো তার কালো যত
অন্ধকারে আলো তত।

পাথর হ্রদয় থাক না যতই
অন্ধকারের কালোর মতই
চাঁদ যদি তারে হেসে বলে
পাথর হ্রদয় যায় যে গলে।

জ্যোৎস্না ভরা আলোর মেলায়
পাষাণ হ্রদয় একটু গলায়
কালো গুলো আলো করে
অন্ধকার সব যায় যে সরে।


চন্দ্রকাথার কাব্য

চন্দ্রকাথার কাব্য সব লিখে গিয়েছেন যত মনীষী জন
চাঁদের হাজার রূপের তাতে হয়েছে কি সব বর্ণন?

প্রতি জ্যোৎস্না রাতে সে যেন আসে নব নব সাজে
প্রতি চন্দ্রবেলায় হ্রদয়ে তাই তো নতুন সুর বাজে।

মধ্যরাতের হেসে ওঠা চাঁদের বন্যায়
আঁখি হতে নিদ সব কেড়ে নিয়ে যায়
জ্যোৎস্নার ঢল ভাসায় ধরাচল
তারে দেখিবার তরে আঁখি চঞ্চল।

হ্রদয় বীণায় নব ঝংকারে নতুন নতুন সুর সব বাজে
হারাই হারাই আমি ওই বহুরূপী জ্যোৎস্নারও মাঝে।

প্রতি চন্দ্রবেলায় আঁকি, রূপ যত তার
রঙ সে কি ধরা যায় ওই জ্যোৎস্নার
তুলিতে শুকায় রঙ শুধু ভাবনায়
আঁচর পড়ে না শুধু ক্যানভাসের গায়।

নারকেল পাতার ফাঁক গলে চুয়ে পড়ে জ্যোৎস্না
একটুখানি গা ভেজাবার মনে বড় বাসনা
বালিয়ারি ঢেকে দেয় খোলা সাগর তীরে
জোয়ার এসে আছরে পড়ে ধুয়ে নেয় স্রোতের ভিরে।

জানালার ফাঁক গলে আলো চুমে যায়
ঘুম ভাঙে মাঝরাতে চাঁদের বন্যায়
ছুটে যাই আহ্বানে ঘর থেকে বার
সারা গাঁয়ে মেখে নিতে আলোটুকু তার।

কত আশা বাসা বাঁধে মনে ভাবনায়
একটি বার যদি ওই, জ্যোৎস্না ধরা যায়
অপার্থিব রূপের আঁধার আর আছে কার
আলো যত রূপ ধরে ওই জ্যোৎস্নার।

চাঁদ যদি ঢেকে যায় মেঘেরও ছায়ায়
সুর তোলে বীণার তার, বোবা কান্নায়
পাওয়া আর না পাওয়ার বেদনা যত
চন্দ্রগীতি লেখা হবে হ্রদয়ে তত।

প্রেমিকের ভালোবাসা বাঁচে থাকে যত
জ্যোৎস্নার হাসিতে দেখে হারায় হ্রদয় তত
চন্দ্রকাব্য লেখা হবে তার কলমে অপূর্ণ সব আশায়
প্রতি চন্দ্রবেলায়, হায় প্রতি চন্দ্রবেলায়।



সোমবার, ৮ আগস্ট, ২০১১

মাঝে মাঝে

মাঝে মাঝে তোমার কথা খুব মনে হয়
মাঝে মাঝে তোমার ভাবনা হ্রদয় জুড়ে রয়
মাঝে মাঝে।

মাঝে মাঝে মনের দুয়ার খুলে দেখি
ওখানে যে শুধুই তোমার উঁকিঝুঁকি
মাঝে মাঝে।

মাঝে মাঝে যখনই চোখ বুঁজি
স্বপনেরও মাঝে শুধুই তোমায় দেখি
মাঝে মাঝে।

পথ চলতে গিয়ে হাত বাড়াই মাঝে মাঝে
হাত পড়ে না আজ আর তোমার হাতের মাঝে
মাঝে মাঝে।

বৃস্টির রাতে এখনো একা একা দাঁড়িয়ে রাস্তায় মাঝে মাঝে
কল্পনায় তুমি থাক, সেই আগের মতন করে যেমন ভিজতাম দুজনে
মাঝে মাঝে।

ব্যস্ত সময়গুলো যেন থমকে দাঁড়ায় মাঝে মাঝে
যখনি তোমার কথা মনে হয় কাজের ফাঁকে পথ চলতে
মাঝে মাঝে।

সময় ঘড়ির কাঁটাটা যেন চমকে ওঠে থেমে পড়ে মাঝে মাঝে
যখনি তোমার মুখচ্ছবি ভেসে ওঠে মনের আয়নার ভাজে ভাজে
মাঝে মাঝে।

পথ সিঁড়ির শেষ পথটুকু পাড়ি দিতে আজ বড় ক্লান্ত লাগে মাঝে মাঝে
পথ চলার সাথীরে খুঁজে চলে প্রতিটি সিঁড়ির খাজে খাজে
মাঝে মাঝে।

আজো তাকিয়ে থাকি শেষ বিকেলের সূর্যের পানে মাঝে মাঝে
সেদিনের মত শুধু যদি তুমি থাকতে পাশে
চিরসাথী হয়ে, হ্রদয়েরও মাঝে।

সোমবার, ২০ জুন, ২০১১

মনের আয়না

মনের আয়নাতে কার মুখ ভাসে
মেঘের ভেলায় চাঁদের অস্পস্ট আলোর মতন করে
ভাপ ভাপ ধোঁয়া ওঠে
হ্রদয় পোড়া গন্ধ ছোটে
আয়নাতে ও মুখ দেখে।

মেঘে ঢাকা কালো অন্ধকার আকাশের পানে
চাতকের পিপাসায় তাকিয়ে রয় আঁখি দুটি
খুঁজে ফেরে কার মুখ, মেঘের ভেলার মাঝে
চশমার ঘসা কাঁচ ঝাপসা হয়ে আসে
মনের আয়নার মাঝে যেনো দেখে তোমাকে।

বর্ষার প্রথম কদম ফোটা বৃস্টির ভোরে
ঝিরিঝিরি বারি ঝরে চারিদিক ঘিরে
আঁখি মেলে খোঁজে মন শুধু তোমাকে
বাদল দিনের প্রথম কদম খানি
গুজে দিতে তোমার খোপাতে।

বৃস্টির রাতে শার্শি বেয়ে জলধারা নামে
বাস্প হয়ে আসা কাঁচের ভেতর দিয়ে তাকাই
দূর পানে ঝাপসা কাকে যেনো দেখতে পাই
সে কি তুমি না তোমার ছায়া
মন পড়ে রয় জানি শুধু কার পানে
সে কি তুমি? না মনের গহীন কোনো কায়া?

রবিবার, ১৯ জুন, ২০১১

হ্রদয়ে অনুভবে


কিছু কিছু অনুভব আছে
যা মানুষ চেস্টা করেও অর্জন করতে পারে না
কিছু কিছু অনুভুতি আছে
যার জন্য চেস্টা করতে হয় না।

কিছু কিছু মানুষ আছে
যারা ভালোবাসা বুঝে না
কিছু কিছু মানুষ আছে
যাদের ভালো না বেসে পারা যায় না।

কিছু কিছু বোধ আছে
যা শুধু হ্রদয়ে ধরে
কিছু বোধোদয় আছে
যাতে শুধু কস্ট বাড়ে।

কিছু কিছু দিন আসে
অন্যরকম খুশির দোলে
কিছু কিছু রাত আসে
শুধু অস্রু নিয়ে ঘরে।

কিছু কিছু মন আছে
যাদের দেখলে আনন্দ বাড়ে
কিছু কিছু হ্রদয় আছে
যাতে শুধু কান্না ঝরে।

কিছু কিছু চোখ আছে
যাতে অনন্দ খেলা করে
না বলা কিছু কান্না আছে
ভেসে ওঠে চোখের পরে।

কিছু কিছু ঠোঁট আছে
যেথায় হাসি ঝরে পরে
কিছু কিছু বেদনা আছে
কান্নায় ঠোঁট বাঁকা করে।

কিছু কিছু হ্রদয় আছে
যারা হ্রদয়ে বাস করে
কিছু কিছু মন আছে
দূর থেকেই মন কাড়ে।

কিছু কিছু মানুষ আছে
যার সাথে ভালোবাসা হয় না
কিছু কিছু মানুষ আছে
যাকে ভালো না বাসলেও হয় না।

অপেক্ষার প্রহর কাটে
খুঁজে ফেরে মন
যাকে না ভালোবেসে
আমি আমাতে রইনা।

বুধবার, ১ জুন, ২০১১

আয়না কন্যা

আদরে আদরে প্রায় বাঁদর হয়ে যাওয়া ছোট্ট মেয়ে রূপকথা।

বাবার অতি আদরের মেয়ে, ৫ ছেলের পর বাবার অনেক আশার, অনেক স্বপ্ন দেখার, অনেক দিন গোনার পালা শেষে কোল আলো করে পথিবীতে এসেছে ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান - বাবার কাছে এ যেন এক রূপকথার অধ্যায় তাই মেয়ের নাম রেখেছেন রূপকথা। মা তার এই মেয়েকে কি খেয়াল রাখবে? বাবা যেন একাই মা ও বাবার সব দ্বায়িত্ব এক হাতেই পালন করে যাচ্ছেন। মেয়েকে বিছানায় রাখেন না মশা খাবে বলে, মাটিতে রাখেন না পিঁপড়া কামড়াবে বলে। বাবা যতক্ষন বাসায় থাকেন মেয়ে যেন বাবার কোলে লেপ্টে থাকে। বাবার এই অতি আদরে মায়ের গা জ্বালা, বাবাকে টিপ্পনি কাটতে মা এর একটুকু ভুল হয় না। আদর দিয়ে মেয়েকে বাঁদর বানাবে। মাসের শেষে দিন যায়, দিন গড়িয়ে বছর। এর মধ্যেই মেয়ে বাঁদর থেকে হনুমান এ পরিণত হল। ভাইগুলোর এক মুহূর্ত স্বস্তি নাই, একমাত্র ছোট বোনের যন্ত্রনায় অস্থির সবাই। কোন খেলনা দিয়ে তাকে স্বস্থির রাখা যায় না, শুধু মাত্র আয়না পেলে একমনে খেলে যায় আর নিজে নিজে কথা কয়। যেন আয়নায় কোন রূপকুমারির দেখা পেয়েছে যে তাকে যাদু করেছ। সেই থেকে তার নাম হয়ে গেল আয়না কন্য।

দিন গড়ায়, মাস আসে, বছর যায়। আয়না কন্যার প্রতি বাবার টান কমে না একফোটা বরং দিন দিন যেন কি এক ভাবাবেগে মেয়েকে আরো বেশি করে কাছে টেনে নেন। সারাদিন শত কস্টের মাঝেও অনেক রাতে অফিস থেকে বাসায় ফিরে মেয়ের ঘরে বসে কিছু খুনসুটি না করে ঘুমাতে যান না। আর মেয়েও বাবার জন্য সারাদিন বসে থেকে তার সমস্ত আবেগ অনুভুতি ভালোবাসা কস্ট তার সাথে শেয়ার না করে ঘুমাতে যায় না। বাবা মেয়ের মধ্যে ব্যাখ্যার অতীত এক সম্পর্ক গড়ে ওঠে সময় বাড়ার সাথে সাথে।

আজ রূপকথা ৫ বছর এ পা দিয়েছে, সকাল থেকেই বাড়িতে যেন কি এক পার্বনের উৎসব উৎসব ভাব। সকাল সকাল বাবা এসে মেয়ের ঘুম ভাংগিয়েছেন পাশে শুয়ে। আয়না কন্যা নিজেকে আবিস্কার করল দেয়ালের এপাশ থেকে অপাশ ঘেরা বিশাল এক আয়নার প্রতিচ্ছবিতে। চোখ মেলেই বিছানায় শুয়ে থেকে দেয়ালে দেখতে পায় আয়না কন্যা শুয়ে আছে এক গাদা খেলনার মাঝে, অভিভুত হয়ে একটু তাকিয়ে থেকে জড়িয়ে ধরে তার সবচেয়ে প্রিয় পুতুলটাকে - পাশে শুয়ে খুনশুটি রত বাবাই তার সবচেয়ে প্রিয় পুতুল। সব খেলনা ঠেলে সরিয়ে ধরে বাবা নামক পুতুলটাকে তার ছোট্ট বুকে চেপে ধরে বলে আই লাভ ইউ বাবা। আমার এইসব খেলনা লাগবে না, তুমি আমার সবচেয়ে বড় উপহার। এভাবে সব সময় আমার পাশে থেক ভালোবেসে, আমার আর কিছুই চাই না।

সারাদিন ধরে বাসায় চলে উৎসবের আয়োজন, কত লোক যে আসছে, যাচ্ছে খানা খাচ্ছে তার কোন সীমা নাই। ভাইয়েরা দেখে আর হিংসায় জ্বলে, তাদের কারো জন্মদিনে এতবড় আয়োজন কখনো করা হয় নি। সন্ধ্যায় কেক কাটা হবে, মা, মেয়েকে সাজিয়েছে লাল টুকটুক শাড়ি পড়িয়ে একবারে ছোট্ট বধু বেশে। জন্মদিনে সবাই পড়ে নানা রঙ এর সুন্দর সুন্দর ড্রেস কিন্তু আয়না কন্যার সাজ কি আর অন্য ১০ জনের মত সাধারন হলে চলবে, তাই সে সেজেছে একবারে বধু বেশে। ভাইয়েরা টিপ্পনি কাটছে, মায়ের কাছে বায়না ধরছে - আদরের মেয়েকে বধু সাজিয়েছ যখন চলো ওকে বিয়ে দিয়ে দেই আজ। তাদের হয়তো ধারনা হয়েছে বিয়ে দিয়ে বিদায় দিতে পারলে বাবা মা এর আদরের ভাগ তাদের ভাগ্যে বাড়বে। বাবাকে বলতে ধমক খেল, জন্মদিনে বাবা ডিক্লেয়ার করলেন আমার মেয়ে প্রতি জন্মদিনে বধু বেশে সাজবে কিন্তু সত্যিকার মেয়ের বিয়ে দেব ঢাকা শহরের সমস্ত লোক দাওয়াত দিয়ে ধুম ধাম করে মেয়ে মাস্টার্স ফাইনাল পরিক্ষার পর।

মেঘ, বৃস্টি ও চাঁদ




চাঁদের আকাশেতে কোন বাতি জ্বলে
মেঘ এসে কেন ঢাকে আলো ছায়ে ছায়ে
মেঘের ফাঁকেতে চাঁদ আলো দিতে চায়
মেঘ তবু ঝরে পরে কার কান্নায়।

বুধবার, ১৮ মে, ২০১১

টুকরো কথামালাগুলি ৩

১।

বর্ষার বিকেলেতে বারি ঝরা আকাশে
আনমনে জানালায় ঝিরি ঝিরে বাতাসে
কার কথা পরে মনে মনে জাগে ভাবনা
কার লাগি পুড়ে মন প্রানে দেয় যাতনা।


কতদিন দেখা হয়নি তার সাথে
মুখোমুখি বসে, চোখে চোখ রেখে।

কতদিন কথা হয়নি তার সাথে
হাতে হাত রেখে বসে, চোখে চোখ চেয়ে।

তবু তার উপস্থিতি রয়ে যায় অনুভবে
যেনো পুরোটা অস্তিত্ব জুড়ে।


দানে পূণ্য বাড়ে
প্রেমে কামনা
ধনে লোভ জাগে
ভালোবাসায় যাতনা।



২।

মুখ ফুটে বলতে কত লজ্জা, কত হেয়ালিপনার এই অবুঝ মন
অথচ মনের ভেতরে রয়ে যায় না থাকার শুন্যতা না পাওয়ার বেদনা
অনাস্বাদিত অনুভূতিগুলি গুমরে মরে একা একা মনে মনে
বন্যার মত ধেয়ে আসা আবেগে ভাসিয়ে দেয়া প্রেমের ভেলা
হঠাৎ করেই কারো জন্য মনের ভেতর এক বুনো নিঃস্বার্থ বন্ধুত্ব
কিংবা দিগন্ত রেখার ওপারে একরোখা ভালোবাসা যার জন্য
তার তরে রয়ে যায় আমাদের অপেক্ষার সারাটা জীবন।


৩।

মনের যত আবোলতাবল ভাবনাগুলো
চলে আসে স্বপ্নের মাঝে
ভাবনা গুলি মরে গেলে কি
স্বপ্ন বিদায় নেবে দুচোখ থেকে?

নাহ,
স্বপ্ন মরে গেলে মানুষ বাঁচে কি নিয়ে?
তার থেকে ভাবনাগুলোই
স্বপ্ন হয়ে বেঁচে থাকুক দুচোখ ঘিরে
হ্রদয়ের ধ্বক ধ্বক তো শুনতে পাব তোমার
স্বপ্নের মাঝে কান পাতলে...........................

৪।

কতদিন দেখা হয়নি তার সাথে
মুখোমুখি, চোখে চোখ রেখে
কতদিন কথা হয়নি তার সাথে
মুখোমুখি, চোখে চোখ চেয়ে
তবু তার অস্তিত্ব রয়ে যায় অনুভবে
আমার পুরোটা অস্তিত্ব জুড়ে।


৫।

নক্ষত্ররা একাকি জেগে রয়
একা একা কথা কয়
নক্ষত্র ধেয়ে চলে
নক্ষত্রের পানে।


৬।

কখনো নিরালায় বসে ভেবেছ কি?
আমার হ্রদয়ের কোন অংশ জুড়ে আছ ত্নুমি।
কখনো ভাবনায় এসেছে কি?
আমার অস্তিত্বের কতখানি নিয়ে গেছ তুমি।

৭।

জীবন মানে আজ ধুঁকে ধুঁকে বেচে থাকা
স্মৃতির কারাগারে অসহায় স্বপ্নের কড়াঘাত
কিছু সুখের কিছু দুঃখের, কিছু বা শুধুই তোমার।

সুখ স্মৃতিগুলো এখন আর মনে দোলা দেয় না
কস্টের স্মৃতিগুলো পীড়া দিয়ে যায়
শুধু তোমার স্মৃতিগুলো এখনো হ্রদয় দোলায়।

৮।

কস্ট কস্ট কিছু সুখ নিয়ে বেচে আছি
দুঃখ দুঃখ কিছু অনুভবগুলি হ্রদয়ে ধরে
জীবন চলছে জীবনের মত করে
সুখে দুঃখে হাসি কান্নার ভিরে
ভালোবাসার মানুষগুলো রয় দূরে সরে সরে
জীবনে ভালোবাসা রয়ে যায় অধরা হয়ে।

৯।

চাই না আমি মৃদু আলো চাই না রোদের ঢল
চাই না আমি একটি নদীর আজলা ভরা জল
চাই না আমি সবুজ পাহাড় চাই না হাওয়ার দোলা
চাই না আকাশ তুমি হীনা রংধনুর ওই মেলা।

তোমাকেই চাই শুধু তোমাতেই তুমি তুমি
তোমাকেই নিয়ে আমি, তুমি আর আমি তুমি।


১০।

রাজকন্যা পাহাড়ের এপাড় হতে আরশীতে খোঁজে কার মুখ
রাজকুমার ওপাড় হতে পথ চায় তার
আর চাঁদের আরশীতে খুঁজে ফেরে তার রাজকন্যার মুখ
মাঝে পাহাড় দাঁড়িয়ে থাকে
দু হ্রদয়ের মাঝে, কড়ির বাঁধা হয়ে।

মঙ্গলবার, ১৭ মে, ২০১১

গৃহত্যাগী পূর্ণিমা

আজ পূর্ণিমা
আজ জল জ্যোৎস্না
আজ পথ চলা হারিয়ে যাওয়া পথ ধরে
তোমায় খুঁজে নেয়া, হারানো মানুষের ভিরে
জল জোস্নার আলো অন্ধকারে।

আজ কোজাগরি পূর্ণিমা
বুদ্ধের গৃহত্যাগের পথ ধরে
গৃহত্যাগী হতে মন চায় নিঃশব্দ চরাচরে
তোমার ঐ বাড়ানো দুটি হাত ধরে
নীল জোস্নার আলো আধারে।

আজ অবাক করা এক চাঁদ উঠেছে আকাশে
ভাংগা বেড়ার ফাঁকে ফাঁকে একফালি জ্যোৎস্না
চুইয়ে নামছে আজ ঘুমভাঙ্গা রাতে
চুমছে আখি, হাতছানি দিয়ে ডাকে তার পানে
গৃহত্যাগের হাতছানি কে এড়াতে পারে
এই গৃহত্যাগের রাতে।

আজ পূর্ণিমা
আজ গৃহত্যাগের রাত
আকাশে ঐ এত বড় এক চাঁদ
ডাকে হাত বাড়িয়ে
আয় আয় আয়...............


সোমবার, ১৬ মে, ২০১১

টুকরো কথামালা চন্দ্রবেলা ১

১।

আজ পূর্ণিমা
আজ জল জ্যোৎস্না
আজ পথ চলা
পথ খুজে নেয়ার ভিরে
জল জোস্নার আলো অন্ধকারে।



২।

কিছু কিছু অনুভব আছে
যা মানুষ চেস্টা করেও অর্জন করতে পারে না
কিছু কিছু অনুভুতি আছে
যার জন্য চেস্টা করতে হয় না
কিছু কিছু মানুষ আছে
যারা ভালোবাসা বুঝে না
কিছু কিছু মানুষ আছে
যাদের ভালো না বেসে পারা যায় না
কিছু কিছু বোধ আছে
যা হ্রদয়ে ধরে না
কিছু কিছু মানুষ আছে
যাকে ভালো না বাসলেও হয় না
আমার কাছে তুমি সেই একজন
যাকে না ভালোবেসে
আমি আমাতে রইনা।



৩।

তুমি আর আমি
এক পালতোলা নৌকায় ছিলেম বসে সেদিন
আকাশে একফালি মেঘের ভেলা
ঢেকে দিচ্ছিল জোস্নার আলোকে।

আমি চাইছিলাম বৃস্টি
বর্ষা বিলাশ করব বলে
তুমি জেদ ধরেছিলে চাঁদের জন্য
চাঁদের আলোয় ভিজবে বলে।

সেই থেকে তুমি হয়ে গেলে চাঁদনি
আর আমি হয়ে গেলাম বর্ষা।

এখন দেখো তোমার আকাশে
চাঁদ খেলা করে বারো মাস ধরে
আর আমার আকাশে মেঘ নেমে আসে
তোমায় না পাওয়ার বেদনার
অস্রুগূলি মুছে দিবে বলে।


৪।

আজকের আকাশ-
মেঘ কি ছিলো তাতে?
নাকি নীল মেঘেরা চূড়ি হয়ে ভাসছিলো তোমার হাতে?

আজকের বাতাশ-
আগুনের হলকা ছিল কি তাতে?
নাকি শীতল পরশে ছুঁয়ে গিয়েছিল তোমাকে?

আজকের রাত -
চাঁদ কি ছিলো তাতে?
নাকি নীল চাঁদনি চুমেছিল তোমার গালে?


৫।

এখন আমার আকাশে চাঁদ ডুবে গেছে
আমাকে তারার মেলায় মায়াভরা রাতে ফেলে।


৬।

এখন আমার আকাশে চাঁদ
তোমার অবগাহন কাঠফাটা রৌদ্রে
খানিক বাদ সন্দ্যা ঘনাবে তোমার আকাশে
আমার চাঁদের দিকে তাকিয়ে দেখতো একবার
তখনো কি তোমার এলিয়েন হতে কি ইচ্ছে করে?

নাকি হবে জল জোস্নার রাতে হবে বন হরিনী
তোমার বন হরিণী রূপ দেখি না কতকাল হয়ে গেল
মন কাঁদে আজ তোমায় বন জ্যোৎস্নায় দেখব বলে
তোমাকে তোমা রূপে, তোমা রূপে।

সৌর জগতের ওপার হতে
শত কোটি বছরের পথ পারি দিয়ে
এসেছিল নেমে মর্তের মাটিতে
নীল জোস্নার ছায়া ছায়া দেশে
এলিয়েন ছিল তার আরেক নামের কায়া।

চাঁদের আলো সারা গায়ে মেখে
পথিবীর রূপ রঙ সবি ভালোবেসে
অবাক দস্টিতে তাকিয়ে রয় সুদুর পানে
পথিবীর মানুষ গুলোর ভালোবাসা মেখে
হয়ে যায় সে যে আজ বন হরিণীর মায়া।


৭।

আচ্ছা বলতো দেখি -
চাঁদ বেশি সুন্দর না তুমি?
আচ্ছা বলতো বাবু চাঁদের আলো কোমল
না তোর ভালোবাসার তীব্রতা বেশি।
আমরা চাঁদ কে ভালোবেসে যাই দূর থেকে
আসলে ভালোবাসার মানুষ থাকে আমাদের খুব কাছ ঘেসে।



৮।

আজ যে আমার চাঁদের দেখা পেয়েছি
আজ যে আমার চাঁদনি এসেছিল আকাশে
আজ যে তার ভালোবাসাটুকু ভেসে বেড়ায় বাতাশে
আমি কান পেতে রই তার চুড়ির নিক্কন ধ্বনি শুনব বলে।



৯।

তুই হিমি হ
তুই হি মি হ
জ্যোৎস্নায় হাত ধরে
পথ চলা হিমুর সাথে।

তুই হিমি হ
তুই হি মি হ
হাতে হাত রেখে
কিছু কথা হিমুর সাথে।

বন জোস্নার আলোছায়া রাতে।


১০।

জ্যোৎস্না মেলায় আলোর খেলায়
তারার আলো সব হারিয়ে যে যায়
স্বপ্নগুলো চোখের তারায়
হ্রদয়ে সব বাসনা জাগায়।

হাত বাড়িয়ে খুঁজি ফিরি
হ্রদয় দিয়ে তারেই খুঁজি
অনেক দূরে তারার মেলায়
ভালোবাসাই শুধু পুঁজি।

অনেক দূরে তাকিয়ে থাকি
ভালোবাসার মানুষ খুঁজি
হ্রদয় মাঝেই আছে যে সে
একটু যদি মনে ভাবি।

রবিবার, ১৫ মে, ২০১১

টুকরো কথামালাগুলি ১

১.

সবার জন্য লিখি না
কারো কারো জন্য
যেমন তুমি।

সবার জন্য ভাবি না
কারো কারো জন্য
যেমন তুমি।

সম্পর্কের মালা গুলি
এক এক জনের জন্য একেকরকম গাথা হয়
তোমারটা আজো গাথা হল না।

২.

বন হংসি মনোহারিনী,
তোমার আঙ্গিনার ময়ূর খেলা করে আনমনে
তোমার ছাতিম গাছে ধান শালিখেরা বাসা বাধে নির্ভয়ে
তোমার আকাশে জ্যোৎস্না নেমে আসে আলো হয়ে
তোমারি ছাদে বৃস্টি ঝরে পরে সুর হয়ে...............

আমি অন্ধকারে পড়ে রই
কালো জোস্নার তিমির আঁধারে।


৩.

আজ কি টিপ দিয়েছিলি?
কালো, নাকি লাল?
তাকে ভেবে একটু রাঙা, হলো কি তোর গাল?

আজকের আকাশ-
মেঘ কি ছিলো তাতে?
নাকি নীল মেঘেরা চূড়ি হয়ে ভাসছিলো তোর হাতে?


৪.

বৃত্তের কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে আছি আমি
কুল খুজে পেতে পরিধির দিকে চোখ ধায়
পূরো ব্যাসার্ধ জুড়ে আছ শুধু তুমি
সেই অসীম পর্যন্ত, যতটুকু দেখা যায়।


৫.

আমার হ্রদয়ে আঁকা ছিল যে চাঁদ
রাতের আধারেতে তোমারি বেদনায় ম্লান হয়ে যায় ডুবে
হ্রদয়ে ক্ষরণ রক্ত ঝড়ায়
ভোরের আকাশে লাল সূর্য হয়ে ভেসে ওঠে ওই পূবে।


৬.

ঝড় উঠেছে বনে
ঝড় উঠেছে মনে

বাতাস হয়েছে বাউল
তোমারো বিহনে।


৭.

রক্তের রঙ এক
অস্রু ও তেমনি
মনটা সবার কেন এক হয়না?

কষ্টেরা ছোট বড়
সুখেরা ও তেমনি
ভাবনারা তবু কেন এক হয় না?


৮.

এই আছ এই নাই
মনে ভাবি আছ তাই
চোখ মেলে দেখি নাই
শুন্যতা - একা একা
তুমি নাই পাশে নাই।



৯.

বলতে চাইনি
তবু বলতে হল
দেখত চাইনি
তবু দেখতে হল
বুঝত চাইনি
তবু বুঝতে হল
দিন থেকে রাত হল
রাত কেটে দিন এলো
বলতে চাইনি
তবু বিদায় বলতে হল
তুমি চলে গেলে
তাই একরাশ শুন্যতা রয়ে গেল।


১০.

তোমার ভেতর কে আছে হায়
লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদে !
ধরতে গেলেই পালিয়ে বেড়ায়,
আকাশ হারায় চাঁদে !

১১.

ভাবব না ভাবব না করেও মনে আসে কত ভাবনা
সামনে এগোই এক পা পেছনে টেনে ধর তুমি

রেখে যেতে চাই মনের কোনেতে কিছু
হতে হতেও কেন জানি হলো না
নুয়ে পড়ে আছে এলোচুল কিছু
মাথার পরেতে যত যাতনা

ভাবব না ভাবব না করেও মনে আসে যত ভাবনা
সামনে যে এগোতে পারি না, পেছনে টেনে ধরা আর না আর না।

১২.

বড্ড ইচ্ছে করে তোমাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে
বড্ড ইচ্ছে করে তোমায় সাথে নিয়ে আকাশটাকে ছুঁতে................

জীবনের বেশিরভাগ ইচ্ছেগুলো অপূর্ণই থেকে যায়
স্বপ্নগুলো শুধু ডানা মেলে মনের আকাশে,
অল্প কিছু চাওয়া আর বেশিরভাগ না পাওয়ার যন্ত্রনায় ঘেরা
আমাদের এই যাপিত জীবন।

তবু আমি স্বপ্ন দেখি প্রতিদিন
তোমাকে পাওয়ার
কিংবা যন্ত্রনা ভোগ করি প্রতিক্ষণ
তোমাকে পেয়ে হারাবার।


১৩.

কাছে থাক, মনে হয় আছ তুমি এই
দূরে গেলে মনে হয় কেন তুমি নেই?
পাশে থাক, কথা নাই একা একা আমি,
মনে মনে কথা বলি একটু না থামি।
বাড়ালে দু'হাত তুমি দেইনা ক ছুঁতে
নেই তুমি, হাহাকার ছোঁয়াটুকু পেতে।
ভালবাসি বলিনাকো প্রেম মনে যত
শুনবার তরে মন পোড়ে অবিরত।


১৪.

সময়ে অসময়ে
মনের রংতুলি চলে আনমনে
আকে কার ছবি মনের ক্যানভাসে
একটু একটু করে অবয়ব ফুটে ওঠে কার জানি
তুলির টান থেমে থাকে মাঝপথে
শত দ্বিধা মনের তুলির আচরনে
ছবি শেষ হয়ে ওঠে না কভু
অন্যভুবনে তোমার রূপ যে দেখা হয়নি
দুচোখ ভরে
শুধু অবয়বটুকু রয়ে যায়
মনের পারদবিহীন আরশিতে
অনেক কস্টে দখতে চাওয়া ওই মুখ
মনের দৃষ্টিতে পরে না ধরা
ঝাপসা কাচের মত
ঝাপসা চোখ আর ঝাপসা একটু
অবয়ব মাত্র দেখি
থেমে থাকে মনের ক্যানভাসে আকা ছবি
অবয়ব হয়ে।


১৫.

সেদিনের সেই ছোট্ট বিকেল বেলা
দেখতে দেখতে নেমে এলো সন্ধ্যা
তুমি আর আমি মুখোমুখি
চেয়েছিলেম চোখাচোখি
নীরবে বলেছিলে মনের কথাগুলি সকলি
না বলা সেই কথামালাগুলি
শুধু হাতে হাত রেখে
আর চোখে চোখ চেয়ে.........


১৬.

একলা আমি বাহির হলাম
তাহার অভিসারে
সাথে সাথে কে চলে মোর
নীরব অন্ধকারে।

ছাড়তে চাই যে অনেক করে
ঘুড়ে চলে যাই দূরে
মনে করি আপদ গেছে
মন গেছে তারে ভুলে।

কিন্তু শুধু চোখ বুজলেই
আবার দেখি তারে
হ্রদয় যতই বন্ধ করি
ফিরে আসে সে ঘরে ।


১৭.

পুড়ছে হ্রদয় অনলে
দাউ দাউ জ্বলছে আগুন হয়ে
ভালোবাসাটুকু সামলে ধরে


১৮.

মন নিয়ে খেল না
মনে তুমি আছ .................................



১৯.

জীবনের বৃত্তটা বোধহয় পূর্ণ হতে চলেছে।
অনেক অনেক কাল আগের সেই হারানো মানুষগুলো ফিরে আসছে জীবনে আবার, যাদের স্মতিগূলোও হারিয়ে গিয়েছিল কালের আবর্তে মনের পর্দা থেকে।

একদিকে তাদের ফিরে পাওয়ার আনন্দ আবার আরেকদিকে ভাংগাচোরা বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে যাওয়া মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে কেমন যেন অসহায় বোধ করি। আয়নায় এখন নিজের দিকে তাকাতেও ভয় হয়। কি জানি যদি সামনে দেখা মানুষগুলোর প্রতিবিম্বই দেখি আয়নায়?

এটাই কি জীবনের আসল সত্যি?


২০.

হয়তো তোমায় হারিয়ে দিয়েছি
নয় বা গিয়েছি হেরে
সময়ের কথা সময় বলে দেবে
কে কাকে গিয়েছিলেম ছেড়ে।


২১.

মনের ভেলায় কিছু রঙ ভাসে
হ্রদয়ে দোলা দেয় কিছু ভাবনা
অবাক চেয়ে থাকি আঁখিপানে তার
তারে কিছু কইতে যে মন চায়
কিছু কথা কবিতা হয়ে গুনগুনায়
যখন আঁখিতে আঁখি হারায়।


২২.

একটা পুরো জীবন কেটে যায় প্রতিক্ষায়
খুজে ফিরে আঁখি সারাক্ষণ
শুধু একজন মানুষেরই পথ চায়
জীবনে শুধু একজন মানুষের
মূল্য বোঝার মত একটা শুদ্ধ মন
এক জীবনে, আদৌ কি খুজে পায়?

২৩.

আবার উড়ে চলা কিছু পথ
কিছু পাহাড়ের গা বেয়ে
নীল নীলিমার কোল ছুয়ে
আকাশেতে ডানা মেলা
আবার উড়ে চলা দিগন্তের পানে।

ক্লান্ত জীবন
ক্লান্ত সময়
তবুও ডানা মেলতে হয়
আকাশের গায়
বেচে থাকার তাগিদে
কিংবা নতুনের সন্ধানে
অথবা তোমায় খুঁজে ফিরে।


২৪.


পাহাড়ের কোল ঘেসে পাহাড়
সাড়ি সাড়ি পাথরের দেয়াল
দেখি আর মনে মনে ভাবি
হ্রদয়টা কেন যে পাথরে গড়া হল না!
তাহলে তো আর এলোমেলো ভাবনাগুলি
মনে এসে ঊকি দিত না,
তোমায় বার বার মনে করে
তোমাতে হ্রদয় হারাতো না।


২৫.


মাদল বাজছে পাহাড়ে
পাহাড় ডাকছে আমারে
দ্রিমিত দ্রিমিত পাহাড়ি মাদল
মাদকতা ছড়ায় মনে প্রানে।

পাহাড় ডাকছে আমারে
যেতে হবে দ্রিমিতার কাছে
মহুয়ার দোচোয়ানি
নেশা জাগায় প্রানে।

মাদল বাজছে পাহাড়ে
যেতে হবে আমারে।


২৬.


আয়নাতে নিজেকে খুজে
মনে মনে কি জানি ভাবে
আরশিতে ফুটে ওঠে প্রতিচ্ছবি তার
সে যে এক আয়নাকন্যার মুখ
একটু কি করে আছে ভার?


২৭.


সব সময় মনে একটা ভায় কাজ করে
কি জানি কি ভুল করে ফেলি
আগের কাজ গুলির দিকে নজর দিতে চেস্টা করি
প্রতিনিয়ত খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে চেস্টা করি
আর নিজেকে ছিড়ে খুড়ে রক্তাক্ত করি
তবুও ভুলগুলি সব এক এক করে ভেসে ওঠে চোখের সামনে
শুধু মনকে পীড়া দিতে।

কখনো কি মনকে ক্ষমা করতে পারব
কৃত সব অন্যায়গুলিকে কি শুধরাতে পারব?

বড্ড ভাবনা হয় কেন জানি আজকাল
যদি না পারি
যদি না পেরেই চলে যেতে হয়
তবে আমার ভুলগুলোকে কে শুধরে নিবে?


২৮.


একদিন তোমার জন্য
শীতল হাওয়ায় নৌকা বাওয়া
একদিন তোমায় নিয়ে
নীল দরিয়ায় হারিয়ে যাওয়া।
একদিন তোমার জন্য
অপেক্ষারই কথা বলা
আজো শুধু তোমার জন্যই
একা একা পথ চলা।

২৯.

নীল বেদনা পিছু ফেলে
নীল আকাশের নীলে ভেসে
নীল সাগর সব পাড়ি দিয়ে
নীল জ্যোৎস্না ফিকে করে
দয়িতা, তুমি আমার হবে।


৩০.

বলাকার ডানায় গা ছুয়ে দিয়ে
নীল পরী ভেসে চলে নীলাকাশের পানে
নীল সাগরের পাড় ঘেসে ঘেসে
সবুজ বনরাশি হাতছানি ডাকে
চোখে তার মায়াজাল
ওই দূর তারা দেশের স্বপ্নঘেরা হাতছানি
হাতখানি বাড়িয়ে আছে ধ্রুবতারার পানে
স্বপ্ন ধরবে বলে হাতে।


৩১.

পৃথিবীর এই আজব নাটক পাড়ায়
মঞ্চস্থ হচ্ছে কতই না নাটক প্রতিদিন
কত ভালোবাসাবাসি, কত মাখামাখি দুজনে দুজনায়
কতইনা চিঠি লিখা হয় প্রতিদিন
আনপনের কালিতে বা মনে মনে
ভালোবেসে নীল খামে করে
কত চিঠি পৌছে প্রাপকের কাছে
কত চিঠি রয়ে যায় পড়ে
পোস্টঅফিসের কোন এক নির্জন কোনে
অবহেলায়
ঠিকানাবিহীন ঠিকানায় লেখা এমনই একটি চিঠি পাঠানোর খায়েশ
তোমার কাছে আমার অনেক দিনের

দিবা নিশি অপেক্ষায় থাকি
যদি কোনদিন হঠাৎ একদিন ভুল করে পৌছে যায়
আমার চিঠিটি যথাযথ প্রাপকের কাছে .........


৩২.

পলি পরে গেছে জীবন নদীতে
লিলুয়া বাতাস থেমে গেছে কবে থেকে

আমি আজো অপেক্ষায় কারো পথ চেয়ে
হয়ত তার ফিরে আসা কভু হবে
মেঘগুলো দূরে সরে যাবে
দয়িতা তুমি আমার হবে

পলি পরে গেছে জীবন নদীতে
লিলুয়া বাতাস থেমে গেছে কবে থেকে


৩৩.

সবাই একদিন মাটি হব
মাটিতে সৃষ্টি মাটিতে বিলীন............

৩৪.

মনের ভেতর কুয়াশার মেঘগুলি এত ঘন কেন
কিছুতেই সিগারেটের ধোঁয়ার সাথে সাথে সাথে ওগুলো উড়িয়ে দিতে পারছি না।

৩৫.

আজ আমার লাশের শবচ্ছেদ হবে
আমারই হাতে নির্মম যাতনায়
বের করে নিতে হবে ষড়রিপু সকলি
হ্রদয় থেকে ধুয়ে মুছে

৩৬.

বিজয় আমার
দাঁত বের করা লোলুপ হায়েনার
কালো কুৎসিত মন,
বিজয় আমার
আশি বছরের থুথ্থুরী বুড়ির
চিমশানো দুটি স্তন।

বিজয় আমার
প্রি ম্যাচিওরড সন্তানের
আকালে পৃথিবির ডাক,
বিজয় আমার
কুমারী মাতার
অকাল গর্ভপাত;
আর সাথে নিয়ে কিছু
অমানুষ, হায়েনার
দুষিত রক্তস্রাব।

অসহায় অবলোকন

তুমি যেন সরে গেছ আজ দূরে, বহুদূরে
আমা হতে, আজ আমা হতে।

তুমি ছিলে কালো মেঘের ভেতর যেন এক স্বর্ণালী আলোর কিরণ
যেন মেঘে ঢাকা জ্যোৎস্না রাতের আলো ছায়া খেলা
হয়ে গেছ আজ যেন নক্ষত্রের অস্পষ্ট আকাশ
আরো দূরে সরিয়ে নিচ্ছে তোমায় বৈশাখি ঝড়ো বাতাস
যেন ভাটার টানে সরে যাচ্ছ পাড় থেকে আরো দূরে
বহুদূরে সীমানার ওপারে কোন অচিন বন্দরের কোল ঘেসে
চলে গেছে আরো সরে।

স্বপ্নের মিনায় গড়া স্বপ্নের বাসা
ভেংগে রক্তাক্ত হয় স্বপ্নের ডানা
আমি অসহায় চেয়ে দেখি, আর দেখি, আর দেখি......
ভেংগে গুড়িয়ে যায় আমার স্বপ্নের পৃথিবী
তুমি সরে চলে যাচ্ছ দূরে, আরো দূরে, বহুদূরে
আমা হতে, শুধু আমা হতে।

বুধবার, ১১ মে, ২০১১

টুকরো কথামালাগুলি ২

১.

বর্ষার বিকেলেতে বারি ঝরা আকাশে
আনমনে জানালায় ঝিরি ঝিরে বাতাসে
কার কথা পরে মনে মনে জাগে ভাবনা
কার লাগি পুড়ে মন প্রানে দেয় যাতনা।




২.

স্বপ্নের মিনায় গড়া স্বপ্নের বাসা
ভেংগে রক্তাক্ত হয় স্বপ্নের ডানা
আমি অসহায় চেয়ে দেখি, আর দেখি, আর দেখি......
ভেংগে গুড়িয়ে যায় আমার স্বপ্নের পৃথিবী
তুমি সরে চলে যাচ্ছ দূরে, আরো দূরে, বহুদূরে
আমা হতে, শুধু আমা হতে।

৩.

যখনই সময় পাই
একবার উঁকি দিয়ে যাই
ভোরের সূর্যে বা সাঝের বেলায়
ঘন বরিষণে ঝড়ের খেলায়
মনে আছ তুমি
দু চোখ জুড়ে
চোখ বুজে তোমায় দেখি শুধু স্বপ্নেরও ঘোরে
কালো রাত্রিরে তারার মেলায়
বুনো জ্যোৎস্নায় আলোর খেলায়
হায় চোখ মেললেই স্বপ্ন হারায়
বাস্তবতায়, শুধু শুন্যতা রয়ে যায়।

৪.

ভেবেছিলেম বদলেছে সময়
আসলে কিছুই বদলায় নি
সময়কে আসলে বদলানো যায় না
একই সময় ঘুরে ঘুরে ফিরে আসে
মানুষের জীবনে
শুধু স্মৃতির কস্টগুলিকে আরেকবার করে
ঝালিয়ে নিতে।


৫.

প্রদীপের টিমটিমে আলো
নিভু নিভু করে জ্বলে
হালকা বাতাসে অন্ধকারের সাথে
কেঁপে কেঁপে ঝুঝে চলে।

জীবন প্রদীপের সলতেতে হাওয়া
অন্ধকারের প্রতিচ্ছায়া যেন তারই ফাঁকে হাসে
দোদুল্যমান প্রদীপের জীবন
টেনে নিয়ে যায়, মরনের খুব কাছে।

৬.

তুমি আমায় চিঠি লিখনা হয়ে গেছে সে কতকাল
সময়ের বিবর্তনে আমিও গিয়েছিলেম ভুলে....
প্রতিদিন একটি করে হালকা সবুজ কাগজে
কলমের আকিঝুকি,
কোন মানে ছাড়া তোমার হাবিজাবি সব কথা
প্রতিদিনের দিনলিপিগুলি
কাগজের পৃ্স্ঠাভরে হাজার কথামালা
হালকা সবুজ কাগজে, ভরে নীল রঙ এর খামে
ভুল হত না তোমার পাঠাতে প্রতিদিন
একটি করে
মনে পড়ে?

৭.

আকাশে যখন চাঁদ না থাকে
তখন জ্যোৎস্না খুঁজো
জ্যোৎস্নাকে না পেলেও
পেয়ে যেতে পারো আমায়
অমাবস্যা আর আমার মধ্যে
পার্থক্য কতটুকু?


৮.

বেচে আছি আজ দুটি সত্বার ভিরে
আনন্দ ও বিষাদের মিস্রনের সুরে
কাজ আর অবসাদ এ যাপিত জীবন
তিলে তিলে করে যাই অপেক্ষার মরণ।

সাদা আর কালোর কি অপূর্ব বাধন
হলো না শুধু আমারই ভজন সাধন
ইচ্ছে আর অনিচ্ছের লাল নীল ঘুড়ি ওড়ে আকাশে
নাচে আমায় ঘিরে ঘিরে, একসাথে মিলেমিশে।

আমি অসহায় চেয়ে দেখি
দুটি আলাদা সত্বার বেচে থাকা মরনের ভিরে
একই দেহে, আমাকে ঘিরে, আমাকে ঘিরে।


৯.

একদিন আমি চলে যাব পৃথিবীর মায়া ছেড়ে
কোন দূর সুদূরের দেশে
আর পথ চেয়ে বসে থাকব তোমার অপেক্ষায়
তুমি আসবে বলে
এভূবনের সকল না পাওয়া
আর চাওয়া গুলোর ডালি সাজিয়ে
হে আমার অমরাবতি।


১০.

পাহাড় ডাকে
পাহাড় ডাকে
পাহাড়ি নদী ডাকে
পাহাড়ি ঝর্ণা ডাকে
এত ডাক উপেক্ষা করার মত
মানসিক বল আমার কোথায়?
তাই চলি নীল পাহাড়ের দেশে
সাথে নিয়ে তোমার স্মৃতিগূলো
একটি একটি করে খুলে দেখব
নীল পাহাড়ের গায়ে হেলান দিয়ে
তোমার স্মৃতিতে আমার স্থান কোথা।

পাহাড় ডাকে
পাহাড়ি নদী ডাকে
পাহাড়ি ঝর্ণা ডাকে
তোমার স্মৃতি নিয়ে অবগাহন করব সেথা।


১১.

মন ডাকে যে মনটাকে আজ
মন খারাপের কান্না ঝরে
বৃষ্টি ঝরা রাতের শেষে
হাত বাড়িয়ে তোমায় খোঁজে।


১২.

লাল আর হলুদের কিছু কিছু রং
তারি সাথে মিলেমিশে সবুজেরও ঢং
লালে আঁকা আলপনা সারা হাত জুড়ে
চুড়িগুলো অবহেলায় পাশে রয় পড়ে
মনের লালে সে যে রং মেখে খুশিতে একাকার
পরী সেজে বসে আছে জুড়ি মেলা ভার।

১৩.

তোমায় আমি ডাকি বলে
থাক তুমি সরে
তোমায় ভালোবাসি বলে
আমায় রাখ দূরে।


১৪.

তুমি আর মন খারাপের রাত
মিলে মিশে একাকার
তাই তো আকাশে আজ এত মেঘের আনাগোনা
কিন্তু বৃস্টি টা কেন জানি আসি আসি করেও
আর এলো না
ঠিক তোমারই মত
প্রতিক্ষার প্রহর গোনাই সার হল শুধু।


১৫.


ঘুম কে ডাকি চোখে
আমার মন খারাপের রাতে
ঘুম এসে যাক চোখে
তোমার মন খারাপের রাতে।


১৬.

বৃষ্টি হলে বুকের ভেতর দ্রিমিক দ্রিমিক মাদল বাজে
বৃষ্টি হলে টিনের চালে রিমঝিম ঝিম বাদল নামে
বৃষ্টি হলে ধানের ক্ষেতে পাগলা হাওয়ার দোল
বৃষ্টি হলে মনের ক্ষেতে হয় যে গন্ডগোল।

বৃষ্টি হলে সব ভুলে যাই
ঘোর বারিষে মনকে হারাই
কালো আকাশ উদাস বাতাস
মনে লাগায় দোল।

১৭.


তোমায় যতই ধরতে যাই
টুকরো জুড়ে জুড়ে,
ছায়ার মত পিছোও তুমি
ক্রমশ আরো দূরে।

হাত বাড়িয়ে তোমায় খুঁজি
হ্রদয় খুলে দেখবে তুমি!
যতই তোমায় কাছে টানি
ততই যে যাও সরে।

ছায়ার মত পিছোও তুমি
ক্রমশ আরো দূরে।

১৮.

শুন্যে ডানা মেলে শুন্যতা খুঁজে ফিরে
চাতক মন
শুন্য মনে শুধু শুন্যতা জেগে ওঠে
ভেসে ওঠে সেই
পেয়ে হারাবার ক্ষণ
শুন্যতায় শুন্য হয়ে যায় মন।

১৯.


রজনী হইস না অবসান
আজ নিশিথে আসতে পারে
বন্ধু প্রিয় প্রান।

ও চাদ যাসনে ওরে ডুবে
একটু জেগে রইস রে তুই
রবি উঠবে পূবে।

ও চাদ দেখরে আখি মেলে
কুড়ে আমার ভাইসা গেল
জ্যোৎস্না ঘরে খেলে।

রজনী হইস না অবসান
আজ নিশিথে শুনব আমি
তাহার যত গান।


২০.

তুমি আমায় চিঠি লিখনা হয়ে গেছে কতকাল
সময়ের বিবর্তনে আমিও গিয়েছিলেম ভুলে
প্রতিদিন একটি করে হালকা সবুজ কাগজে
নীল কালির আকিঝুকি
কোন মানে ছাড়া তোমার হাবিজাবি সব কথা
প্রতিদিনের দিনলিপিগুলি
কাগজের পৃ্স্ঠাভরে হাজার কথামালা
ভরে নীল রঙ এর খামে
ভুল হত না তোমার পাঠাতে প্রতিদিন
একটি করে
মনে পড়ে?

পুরোনো সেই সব দিনের কথা
আবার তোমায় মনে করে দিলেম
তুমি যেন ভুলে যেও না এবারও
চিঠি লিখার কথা ছিল তোমারই
প্রতিদিন একটি করে নীল রঙা খামে।

২১।

প্রদীপের টিমটিমে আলো
নিভু নিভু করে জ্বলে
হালকা বাতাসে অন্ধকারের সাথে
কেঁপে কেঁপে ঝুঝে চলে।

জীবন প্রদীপের সলতেতে হাওয়া
অন্ধকারের প্রতিচ্ছায়া যেন তারই ফাঁকে হাসে
দোদুল্যমান প্রদীপের জীবন
টেনে নিয়ে যায়, মরনের খুব কাছে।

২২।

মন ভালো নাই
কেন যেন আজ মন ভালো নাই......

মনকে শুধাই
মনকে শুধাই
কার বারিতে খুশিকে পাই
একটু খানি হাসতে যে চাই
সংগে তুমি থাকো।

মনের কাঠ এ ঘুন ধরেছে
মনের রঙ এ নীল এসেছে
তুমি পাশে নাই
মন ভালো নাই
তাই যেন আজ মন ভালো নাই......

সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০১১

স্বপ্ন

স্বপ্ন দেখতে ভালোবাসি তাই স্বপ্ন দেখে যাই
স্বপ্নেতে বাস করি তাই স্বপ্ন খুঁজে বেড়াই
স্বপ্নতে গান গাই আমি স্বপ্নে তুলি যে সুর
স্বপ্ন দেখে রাত কাটাই হায়
বাস্তব অনেক দূর।


স্বপ্ন দেখার রাত ফুরোলে
সূর্য উঁকি মারে
দুমোঠো দুই চালের খোঁজে
হন্য জীবন হা রে
বাস্তবতার কঠিন জীবন
সংগ্রাম প্রতিক্ষণ
স্বপ্নগুলো চুর চুর হয়
ভেংগে যায় সেই মন।


স্বপ্নেতে তুমি রোজ আসো বলে
জেগে স্বপ্ন দেখি
হাত বাড়ালেই দূরে সরে যাও
স্বপ্ন ভেঙ্গে তাই উঠি।
স্বপ্নে কেন যে এত ভালোবাসাবাসি
সামনে তোমায় দেখে
বাস্তবতার নির্মম ঠেলায়
ভালোবাসা যায় ভেসে।

শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০১১

তুমি ও আমি

তোমার আঙ্গিনার ময়ূর খেলা করে আনমনে
তোমার ছাতিম গাছে ধান শালিখেরা বাসা বাধে নির্ভয়ে
তোমার আকাশে জ্যোৎস্না নেমে আসে আলো হয়ে
তোমারি ছাদে বৃস্টি ঝরে পরে সুর হয়ে...............

আমি অন্ধকারে পড়ে রই
কালো জোস্নার তিমির আঁধারে।

বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১১

অপেক্ষার শুন্যতা

টুকরো টুকরো অনেকগুলো স্মৃতি ভাসে চোখে
চোখ দুটোতে কেন জানি লবন জল আসে
তোমারি কথা মনে হয় শুধু
একটা রাতও কি আমাকে ঘুমাতে দিবে না আমায় তুমি?
ভালোবাসায় শুধুই কি মরন হয় মনের
কিংবা তিল তিল করে প্রতিদিন শুধু অপেক্ষার শুন্যতা?

শনিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১১

ভাবব না

ভাবব না ভাবব না করেও মনে আসে কত ভাবনা
সামনে এগোই এক পা পেছনে টেনে ধর তুমি

রেখে যেতে চাই মনের কোনেতে কিছু
হতে হতেও কেন জানি হলো না
নুয়ে পড়ে আছে এলোচুল কিছু
মাথার পরেতে যত যাতনা

ভাবব না ভাবব না করেও মনে আসে যত ভাবনা
সামনে যে এগোতে পারি না, পেছনে টেনে ধরা আর না আর না।

শুক্রবার, ৮ এপ্রিল, ২০১১

চিঠি

তুমি আমায় চিঠি লিখনা হয়ে গেছে সে কতকাল
সময়ের বিবর্তনে আমিও গিয়েছিলেম ভুলে
প্রতিদিন একটি করে হালকা সবুজ কাগজে
কলমের আকিঝুকি,
কোন মানে ছাড়া তোমার হাবিজাবি সব কথা
প্রতিদিনের দিনলিপিগুলি
কাগজের পৃ্স্ঠাভরে হাজার কথামালা
হালকা সবুজ কাগজে, ভরে নীল রঙ এর খামে
ভুল হত না তোমার পাঠাতে প্রতিদিন
একটি করে
মনে পড়ে?

পুরোনো সেই সব চিঠির কথা
আবার যখন মনে করিয়ে দিলে
তুমিও যেন ভুলে যেও না আবার
চিঠি লিখার কথা ছিল তোমারই
প্রতিদিন একটি করে নীল রঙা খামে।

শুক্রবার, ২৫ মার্চ, ২০১১

আজকের স্বাধীনতা, বাংলার স্বাধীনতা

আজ স্বাধীনতা দিবস
স্বাধীনতার ৪০বছর পার হয়ে গেছে
তবু কি পেরেছি আমরা স্বাধীন হতে?
পরাধীনতার নাগপাশ আজো কেন
বুকে চেপে আসে চারি দিক হতে।
আজকের এই দিনেও কেন এত হাহাকার
এত না পাওয়ার বেদনা
ঝড় হয়ে ওঠে।

আজো রাজাকার আল বদরের দল
ঘুরে বেড়ায় খোলা আকাশের নিচে
উন্নত শিরে
বুক টানটান করে।
আজো বিচারের আশায় ঘুরে ফিরে
শহীদের বিধবা বৌ
কোর্ট কাছারির দ্বারে দ্বারে।
হায় স্বাধীনতা!!!!!!!!!!!!!!!!

আজো বিনিদ্র রজনী কাটে ভুক পিপাসায়
৭১ এর মুক্তিযোদ্ধা করিম মাঝির
নভেম্বরের গেরিলা অপারেশনে হাত হারিয়েছিল সে যে
প্রান বাঁচাতে গিয়ে তারি সহযোদ্ধা এক তরুন যুবকের
আর গুলি খেয়েছিল হাতে পালাতে গিয়ে
ঈদ্রিস আলি রাজাকারের ইশারায়।
সেই থেকে নৌকা বাওয়ার পালা হয়েছিল সাঙ্গ
বেচে আছে আজো ধুকে ধুকে সে যে
দুমুঠো ভাতের জন্য দয়ার ভিখ মেগে মেগে
আজকের দাপুটে ঈদ্রিস আলি চেয়ারম্যানের রাজ্যে।
হায় স্বাধীনতা!!!!!!!!!!!!!!!!


আজকের দিনটিতেও
গলি মুখে ভিক্ষা করে ফেরে এক অন্ধ ভিক্ষুক
আশায় বুক বেধে বেধে

যদি অন্য দিনের চেয়ে বেশি কড়ি পড়ে
তার ভিক্ষার ঝুলিতে!
আর অন্ধ চোখে স্বপ্ন দেখে ফেলে আসা সোনালী দিনগুলোর
যখন দুহাত ভরে ফসল ফলিয়েছিল
সোনার বাংলার মাটিতে।
জমি জমা সব ছিল একদিন যার,
গ্রামে ছিল তার সোনার সংসার
নদীর কাল ভাঙ্গনে ওলোট পালোট করে দিয়েছিল
জীবন করে দিয়েছিল ছিন্ন ভিন্ন একাকার
আজ ভিক্ষা মাগে পড়ে থেকে এক কোনে রাস্তার

চিকিৎসার অভাবে চোখ হারিয়ে তার।
হায় স্বাধীনতা!!!!!!!!!!!!!!!!



ঢাকা মেডিক্যাল এর বার্ন ইউনিটে
ভর্তি হয়েছে এক বাচ্চা ছেলে
আগুনের কারখানায় ঝলসে গেছে সে যে
বড়লোক এক মালিকের টাকার পাহাড় গড়তে গিয়ে
নিস্ঠুর মালিক মেতে আছে কোনো অন্ধকার লালসায় কামনায়
শিশ্নের ক্ষুধা মিটাতে
কিংবা বসে আছে বন্ধুদের সাথে মদের আড্ডায়

সামনে জুয়ার টেবিলে তাসের পসরা বিছিয়ে,
সময় কোথায় তার বাচ্চা ছেলেটির খবর নেবার?
আশে পাশের কিছু সহমর্মী লোকজন ধরাধরি করে

নিয়ে আসে তাকে মেডিক্যাল কলেজের বার্ণ ইউনিটে
ইন্টার্নি এক নতুন ছাত্রী ডাক্তার ব্যস্ত হয়ে ওঠে তাকে নিয়ে
একটু ভালো চিকিৎসা দেবার আশায়
হন্যে হয়ে খোঁজে তার সিনিয়ার প্রফেসারকে কিছু

উপদেশের আশায়।
আর প্রফেসার স্যার?
সারা মেডিক্যাল জুড়ে কোথাও নেইকো সেই প্রফেসর স্যার
ব্যস্ত সে তার ক্লিনিক নিয়ে টাকার পাহাড় গড়তে।

মেডিক্যাল কলেজের ফালতু ডিউটি কয় পয়সা দেবে তার।
রোগী মরলে দায় জুনিয়র ডাক্তার বা ইর্ন্টানীর
অথচ রোগী মরে প্রতিদিন
মশার মত, মাছির মত

রাস্তার ছাল ওঠা সব কুকুরের মত
বলার কে আছে

এই স্বাধীন বাংলাদেশে ?
হায় স্বাধীনতা!!!!!!!!!!!!!!!!

অপুষ্ট দেহ আর ক্ষুধা সাথে নিয়ে
অন্ধকার রাস্তায়
হাসিনা, সখিনা, জরিনারা ফেরি করে নরমাংস
নারিলোলুপ হায়েনাদের কাছে।
নোংরা শিশ্নের ক্ষুধা মিটিয়ে তবেই মেটায় জঠোরের ক্ষুধা
আর পৈশাচিক আনন্দের মাসুল গোনে জঠোরে ধরে অনাগত আরেক আবৈধ সন্তান
পিশাচের নোংরা বিরজে জন্ম
এক নতুন অনিশ্চিত ভবিষ্যত নাগরিক
স্বাধীন বাংলার নাগরিক
হায় আমার বাংলার স্বাধীনতা !!!!!!!!!!!!!

এই আমার দেশ
এই আমার আজকের বাংলাদেশ
স্বাধীনতার ৪০ বছর পর
যেভাবে দেখি আমাদের আজকের স্বাধীনতা,

পেটে ভাত নেই, পরনে কাপড় নেই
একটু পানের মত বিশুদ্ধ পানি নেই
আর ওদিকে বড় সাহেবদের গোয়ানস্টকে
সারি সাই চালের বস্তা শোভা পায়
চালের দাম আরো বাড়ুক
না খেতে পেয়ে অই ভিক্ষুকের ঝাড়ের
১৫টাকার চাল বিক্রি হয় ৪৫টাকা দরে
১০০০কোটি মুনাফা তুলে নিয়ে কালোবাজারী ব্যবসা থেকে
১লাখ টাকার চাল বিলিয়ে যায় বুভুক্ষের মাঝে
১০০০০কোটি টাকার ভোট ব্যাঙ্ক এর দুরাশায়
কিংবা গরিবের মাঝে চাল বিলিয়ে কিছু পূন্নের আশায়।
কেউ বা তারা কোটি টাকার গারমেন্টস একসপোরট করে
কারখানা জ্জবালিয়ে দেয় আরো শতকোটি টাকার ফায়দায়
ইন্সুরেন্সের টাকা তুলে নেয় শতগুনে একটি ফোনের কল্যানে
ইন্সুরেন্সের বড় বাবুকে সুন্দরী এক দেহপসারিনী ঘুষের বিনিময়ে
আর সেই ফ্যাক্টরির দিন আনা খেটে খাওয়া মানুষগুলো পরে রয়
অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পানে, দিন কাটে অনাহারে।
ঘরে আজ বিদ্যুত নেই বাতি জ্বালানোর মত

কিংবা চৈত্রের গরমে ফ্যান চালানোর মত
তাতে কি হয়েছে?
ছোট ছোট বাচ্চাদের পরীক্ষা সামনে
রাতের আধার কাটাতে চাই একটু আলোর দিশা
১৮ ঘন্টা খেটে খাওয়া মানুষের রাতের এক চিলতে ঘুম
অস্থির গরমে একটু পাখার হাওয়া
কিবা এসে যায় বিদ্যুত না থাকলে বংগে
আমাদের নেতাদের পুত্রের আই পি এস ব্যবসাতো আজ তুংগে।
হায় স্বাধীনতা!!!!!!!!!!!!!!!!


স্বাধীনতা নামের সোনার হরিণ
আজ আমাদের মুঠোর ভিতর।

আজ স্বাধীনতা এসেছে ভাত কাপড় বিহীন ভুখা নাংগার বেশে
কিন্তু স্বাধীনতার চেয়ে বড় বাণিজ্য আজ আর কিছু নেই এদেশে

স্বাধীনতার বুলি নিয়ে উচ্চকন্ঠ,
রাজনীতিবিদ, আমলা বুদ্ধিজীবি
কবি-সাহিত্যিক ও সাংবাদিক
শুধু বুলি, বুলি আর বুলি
বড় বড় কথার মালা
স্বাধীনতার বাণিজ্য বসে
রেডিও টিভি আর চ্যানেল গুলোয়
মাইক হাতে নিয়ে আজ
গলা ফাটিয়ে চিল্লায়
ওই একাত্তুরের কষাইরূপী খবিশ
রাজাকারের বেশ ছেড়ে আজ হয়েছে যে

প্রথিতযশা রাজনিতিবিদ ।
হায় স্বাধীনতা!!!!!!!!!!!!!!!!

হায় স্বাধীনতা!!!!!!!!!!!!!!!!
হায় আমার আজকের স্বাধীনতা।
হায় আমার বাংলার স্বাধীনতা।

ঘৃণা




২৫শে মার্চ
কালরাত্রি নেমে এসেছিল জীবনে এক
অনেক অনেক কাল আগে
সেই ১৯৭১ এ।

বর্বর কিছু নরপশুদের তান্ডব
হায়েনা রূপী মানুষের নগ্ন উল্লাস
কেড়ে নিয়েছিল সেদিন হাজার লাখো প্রাণ
ছিল তারা আমারই চারিপাশের মানুষগুলো
কিংবা আমাদের পূর্বপূরুষ
তারা হয়তোবা আমাদেরই কারো বাবা
কারো ভাই, কারো বোন বা কারো মা
ঘূনিত নরপশুদের তান্ডবলীলায়
সাংগ হয়েছিল কিছু প্রস্ফুটিত জীবন
আর লাখো বিধবার মনে চিরতরে
একে দিয়েছিল শহীদের রক্তের তাজা লাল ঘা।

রাজারবাগ পুলিশ লাইনের
হাজারো পুলিশ ভাইয়েরা সেদিন
মেশিনগানের শব্দে তালাবদ্ধ কান
লুটিয়ে পরছে এদিক সেদিক
বোবা চাউনিতে চেয়ে আছে
পাশের সৈনিকের
ঢলে পড়া লাশখানি বুকে করে
হয়তো নিজের বুক বেচেছিল
বুলেটের ঝাঝরা আঘাত হতে।

ভারী ট্যাঙ্কের ঘরঘর ঘসটে চলা
ঢাকার রাজপথ দিয়ে
কার্জন হল, শহীদ মিনার
ঢাকা ভারসিটির বুক চিরে
কান ঝালাপালা করা গুলির শব্দ
থেমে গিয়েছিল হাজারো নিরাপরাধ
খেটে খাওয়া মানুষের প্রান
স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল কত শত না
তরুন তরুনীর হাস্যোজ্জল মুখগুলি চিরতরে
ওই হিংস্র হায়েনাদের নরতান্ডবের মাঝে।

আমি বেচে আছি আজো
বেচে আছ তোমরাও
যে যার মত করে
হ্রদয়ের গভীর থেকে কি একটিবার
ঘৃণা উদ্গিরন করেছি আমরা
ওই নরপশুদের তরে?

আজো খেলার মাঠে দেখি
পাকিস্তানের ফ্ল্যাগ হাতে
আমারই দেশের মানুষ
উল্লাসে মেতে ওঠে
ওইদেশেরই বিজয় আনন্দে
যার বাবা বা চাচা
শহীদ হয়েছিল ১৯৭১এ
হয়তোবা এই খেলোয়ারদেরই
কোন পূর্ব পূরুষের হাতে।

ধিক জানাই আমি
ঘৃণা ভরা মনে
আমার দেশের ওই সব মানুষের তরে
যাদের হাতে আজো ওড়ে
পাকহানাদের ঝান্ডা
হোক সে খেলার মাঠে
কিংবা অন্য কোথা।

বুধবার, ২৩ মার্চ, ২০১১

অবয়ব




মনের ক্যানভাসে কার ছবি ভাসে?
সময়ে অসময়ে
মনের রংতুলি চলে আনমনে
আঁকে কার ছবি মনের ক্যানভাসে
একটু একটু করে অবয়ব ফুটে ওঠে কার জানি
তুলির টান থেমে থাকে মাঝপথে
শত দ্বিধা মনের তুলির আচরনে
ছবি শেষ হয়ে ওঠে না কভু
তোমার রূপ যে দেখিনি কভু
অন্যভুবনে দুচোখ ভরে
কিংবা অন্যরূপে মনের ঘরে
শুধু অবয়বটুকু রয়ে যায়
মনের পারদবিহীন আরশিতে
অনেক কস্টে দেখতে চাওয়া ওই মুখ
মনের দৃষ্টিতে পরে না ধরা
ঝাপসা কাচের মত
ঝাপসা চোখ আর ঝাপসা একটু
অবয়ব মাত্র দেখি
থেমে থাকে মনের ক্যানভাসে আঁকা ছবি
অবয়ব হয়ে।

মনের রংতুলিগুলি
ভেজা জলে মেশে
নোনা হয়ে আসা
ঝাপসা দৃষ্টিতে
রংধনুও রঙ হারায়
ধীরে ধীরে শেষে
সাদা কালো হয়ে ওঠে
মনের ক্যানভাসে
অবয়বটুকু থেকে যায়
তবু মনের কোনেতে
আবছায়ার মত করে
শুধু অবয়ব হয়ে।

ঋণ

ধুলায় ধুসর মেঠোপথ খানি
খেতের আল ঘেসে পায়ে হাটা পথ
চলে গেছে কোন সুদুরের পানে
ছোট্ট একটি গাঁয়ের দিকে
ছোট ছোট সব গাঁ
যেথায় বাস দশ কোটি বাংগালির সেথা
মনে নিয়ে দশ কোটি অভিলাশ।

আর ঠিক পাশাপাশি গড়ে ওঠা
ইট কংক্রিটের সাড়ি
গড়ির ধোয়া, রিক্সার টুংটাং গান
গায়ে গা লাগিয়ে মানুষের পথ চলা
তথাকথিত নগর সভ্যতা
যেথায় বাস করে ছয় কোটি প্রান
ছয় কোটি বাংগালির বসবাসের নগরী
সাথে নিয়ে ছয় কোটি বাসনা।

গ্রাম বা শহরে মিলে মিশে
ষোল কোটি প্রান
ষোল কোটি আশা
একটি তার ভাষা
আমরি বাংলা ভাষা।

ষোল কোটি ঘুম
শুধু একটি স্বপ্ন দেখে
ষোল কোটি মুখে
শুধু একটি নাম জপে
মনে মনে প্রানে প্রানে
মুখে মুখে একটি ডাক আসে
পঞ্চান্ন হাজার বর্গমাইল জুড়ে
মা মা
সে যে আমাদের বাংলা মা
মনে জাগে একটি দেশ
সে যে আমার সোনার বাংলাদেশ।

রাহুগ্রস্থ আজ শুধু ষোলশ মানুষের হাতে
কিংবা হয়তো ষোল হাজার মাত্র
চল্লিশ বছরেও কুকুর রূপী ওই রাহুগুলির
ধ্বংশিবার তৈরী হয়নি আজো কোন ক্ষেত্র?

তিরিশ লক্ষ শহীদের ঋণ
শুধিবার সময় কি হয়নি আজো?

শুক্রবার, ৪ মার্চ, ২০১১

রাতের অভিসার

প্রতিদিন রাত হলে
ঘর হতে বের করে নিয়ে আস তুমি মোরে
হাতে হাত রেখে স্বপ্নেরও ঘোরে
নিয়ে যেতে চাও তুমি
কোন অভিসারে!

চোখ বন্ধ করে পথ চলি আমি
তোমার হাত দুটি ধরে
রেললাইনের পাত ধরে হেটে চলে যাই
নীল জ্যোৎস্নারও রাতে
বহুদূর পথ হেটে
চোখ মেললেই দেখি তুমি নাই
পথ চলছি একা আমি
হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে
এক নিঃসীম অন্ধকারে।

বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ, ২০১১

আত্ম সন্ধান

প্রতি দিন যেন আমি নিজেকে খুঁজে ফিরি
সূর্যের আলোতে, ঝা ঝা রৌদ্দুর মাথায় করে
গায়ের মেঠো পথ ধরে একা একা পথ চলে
সবুজ ধানক্ষেতের আল ধরে হেটে হেটে
পানসি নৌকার বৈঠা হাতে করে
নদী নালা খাল বেয়ে
ধান শালিকের পাখায় ভর দিয়ে
দূর নীলাকাশের গায়ে।


প্রতি রাতে আমি তোমায় খুঁজে ফিরি
নীল জোস্নার মায়াময়ী রূপের ভাজে
সহস্র তারা ভরা আলোছায়ায়
দূর আকাশের গায়ে গায়ে
লাখো ফসফরাস জ্বলে ওঠা সমুদ্রের
ঢেউয়ের মাঝে
নির্জন বালুকাবেলায় পড়ে থাকা সব
ঝিনুকের বুক চিরে চিরে খুঁজে ফিরি
তুমি নামে আমার
সেই একটি মুক্তোদানা খানি।

আর নিজেকে চিনে নিতে হ্রদয় খুড়ে চলি
নির্মম কষাঘাতে।
অসংখ্য না পাওয়া সব চাওয়াগুলোর
করুণ হাহাকারে
প্রতি রাতে আমি আমার কবর খুড়ে চলি
বিজন অন্ধকারে।

বুধবার, ২ মার্চ, ২০১১

জীবন বৃত্ত

জীবনের বৃত্তটা বোধহয় পূর্ণ হতে চলেছে।
অনেক অনেক কাল আগের সেই হারানো মানুষগুলো ফিরে আসছে জীবনে আবার, যাদের স্মতিগূলোও হারিয়ে গিয়েছিল কালের আবর্তে মনের পর্দা থেকে।

একদিকে তাদের ফিরে পাওয়ার আনন্দ আবার আরেকদিকে, ভাংগাচোরা বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে যাওয়া মানুষগুলোর দিকে তাকিয়ে কেমন যেন অসহায় বোধ করি। আয়নায় এখন নিজের দিকে তাকাতেও ভয় হয়। কি জানি যদি সামনে দেখা মানুষগুলোর প্রতিবিম্বই দেখি আয়নায়?

এটাই কি জীবনের আসল সত্যি? আসলেই কি একটি বৃত্ত পূর্ণ হয়ে গেছে? হাতে কি তবে আর বেশি সময় নেই? কি জানি কবে ডাক চলে আসে ওপারের কুঠুরি হতে.......................................

শুক্রবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

যেদিন আমি রইব না

কোন একদিন হয়তো
জীবনে আসবে সেদিন আমার
যেদিন না দেখা স্বপ্নগুলো
ভেসে ওঠবে চোখের পরে
না পাওয়া যত চাওয়াগুলো হবে পূর্ণ।

অনেক প্রতিক্ষার প্রহর গুনে গুনে
হয়তো সেদিন সে আসবে ঘরে
হয়তো থাকবে সে আমার খুব কাছাকাছি
রাখতে চাইবে হাতে হাত দুটি
চলতে চাইবে কিছু পথ
চরণে চরণ এক সাথে মিলে
স্পন্দিত বুকে মাথা রেখে আবেগে
মিশে যেতে চাইবে আমাতে আমা হয়ে।

হায় সে দিন হয়তো আমি আর
থাকব না তার হয়ে
হাত দুটি মোর বুকের পরে
পড়ে রইবে আড়াআড়ি
পা দুটি টান টান হয়ে দক্ষিণমুখী
হ্রদয় স্পন্দন শুন্য।

সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

তার ভাবনা

যত ভাবি তাহার কথা
হ্রদয় ওঠে ভরে

যত দেখি তাহার স্বপন
আরো প্রানে বাজে

আমার মন কেমন করে
আমার প্রান কেমন করে

দয়িতা

নীল বেদনা পিছু ফেলে
নীল আকাশের নীলে ভেসে
নীল সাগর সব পাড়ি দিয়ে
নীল জ্যোৎস্না ফিকে করে
দয়িতা, তুমি আমার হবে।

ভুল

সব সময় মনে একটা ভায় কাজ করে
কি জানি কি ভুল করে ফেলি
আগের কাজ গুলির দিকে নজর দিতে চেস্টা করি
প্রতিনিয়ত খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে চেস্টা করি
আর নিজেকে ছিড়ে খুড়ে রক্তাক্ত করি
তবুও ভুলগুলি সব এক এক করে ভেসে ওঠে চোখের সামনে
শুধু মনকে পীড়া দিতে।

কখনো কি মনকে ক্ষমা করতে পারব
কৃত সব অন্যায়গুলিকে কি শুধরাতে পারব?

বড্ড ভাবনা হয় কেন জানি আজকাল
যদি না পারি
যদি না পেরেই চলে যেতে হয়
তবে আমার ভুলগুলোকে কে শুধরে নিবে?

পাহাড় ডাকে

মাদল বাজছে পাহাড়ে
ডাকছে পাহাড় আমারে
দ্রিমিত দ্রিমিত মাদল
মাদকতা ছড়ায় মনে প্রানে।

পাহাড় ডাকছে আমারে
যেতে হবে দ্রিমিতার কাছে
মহুয়ার মাতাল হাওয়া
প্রানে তোলে নেশার ছায়া।

মাদল বাজছে পাহাড়ে
যেতে হবে আমারে।

পাথর হ্রদয়

পাহাড়ের কোল ঘেসে পাহাড়
সাড়ি সাড়ি পাথরের দেয়াল
দেখি আর মনে মনে ভাবি
হ্রদয়টা কেন যে পাথরে গড়া হল না!
তাহলে তো আর এলোমেলো ভাবনাগুলি
মনে এসে ঊঁকি দিত না,
তোমায় বার বার মনে করে
তোমাতে হ্রদয় হারাতো না।

খুঁজে ফিরা


ডানা মেলে দিয়ে
আকাশের গা ঘেসে
উড়ে চলা কিছু পথ
পাহাড়ের গা ভেসে
নীল নীলিমার কোল ছুঁয়ে
উড়ে চলা দিগন্তের পানে।

ক্লান্ত জীবন
ক্লান্ত সময়
তবুও ডানা মেলতে হয়
আকাশের গায়
বেচে থাকার তাগিদে
কিংবা নতুনের সন্ধানে
অথবা তোমায় খুঁজে ফিরে।

খোঁজ

একটা পুরো জীবন কেটে যায় প্রতিক্ষায়
খুজে ফিরে আঁখি সারাক্ষণ
শুধু একজন মানুষেরই পথ চায়
জীবনে শুধু একজন মানুষের
মূল্য বোঝার মত একটা শুদ্ধ মন
এক জীবনে, আদৌ কি খুঁজে পায়?

নিঃস্বঙ্গতা

নিঃস্তব্ধতা খেলা করে আজ
মনের কবিতার ভিরে
নিঃস্বঙ্গতা ঘিরে রাখে সারা মন
শুধু, তুমি থাক মন জুড়ে
আপনার চেয়ে আপন যে জন
পড়ে আছে আজ দূরে
বারে বারে তারে মনে পড়ে পড়ে
মন যে কেমন করে।

হ্রদয়েতে তুমি


সাগরে পানি বয়
আকাশেতে চাঁদ
মেঘেতে বারি ঝরে
পাহাড়ে তুষার।

ঝিনুকে মুক্তো ধরে
হ্রদয়েতে তুমি
হারিয়েছি তোমাতে আমায়
ভালোবেসে আমি।

ভালোবাসার পরিনাম - মাটির ঘর

সময় বয়ে চলে ঝড়ের গতিতে
তোমার জীবনে
সুখের আবেশে কাজের মাঝে
সকাল না হতেই বেলা বয়ে যায়
দুপুর গড়িয়ে আসে
রোদ মাথার উপর উঠতে না উঠতেই
বিকেল গড়ায়
সন্ধ্যা নামে ধড়াচড়ে
নেমে আসে নিষক কালো রাত
সময় বয়ে যায়
সুখের সময়টুকু তোমার
দিনের ব্যস্ততায় কেটে যায়
আর রাত কেটে যায়
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখায়
সুখের হাতছানি তোমার কপলে
স্পর্শ বুলায়
আমার কথা ভাবার সময় কোথায় তোমার?

সন্ধ্যার আলো নিভে আসে যখন
অন্ধকার গভীর হতে হতে গহীনে নেমে পড়ে
যখন তারগুলোও মিটমিট করা বন্ধ করে দেয়
যখন চাদ মুখ লুকোয়া সূর্যের অপর পৃস্ঠ গিয়ে
আমাকে আলো দিতে হবে বলে
তখন আমার দিন শুরু হয়
তোমার কথা ভেবে
তোমার ব্যথায়
হ্রদপিন্ডের নিলয়ে বয়ে চলা লাল রক্তগুলি
বেদনায় নীল হয়ে
শুধু তোমার কথা ভেবে।
ঘোর অমাবস্যায় জীবনটাকে ঢেকে দিয়ে
যে রাতের কোন আদি নাই, অন্ত নাই
শুধুই কালো রাত রয়ে যায়
আলোর আশায়
তোমার প্রতিক্ষায়।
আমি অনেক চেস্টা করে যাই
পাথরে পাথর ঠুকি, করে হাত রক্তাক্ত
যদি একটু আলোর ঝলকানি দেখা পাই
হায় সেথা হতে শুধু রক্তই ঝরে পরে
নীল বেদনায় কালো কালো অন্ধকারের
রূপ নিয়ে।
আচ্ছা বলতো, পাহাড় কি আর ঠেলে সরানো যায়
একা একা, যদি হাত না বাড়াও
কিংবা পাথর কি আর ভাংগা যায় মাথা ঠুকে
যদি না ভালোবাসার ঢাল নিয়ে দাড়াও পাশে
কিংবা কাঠ ফাটা রোদ্দুরে একটু ছায়া
যদি না মাথার ওপর তোমার আচল বিছাও।

আচ্ছা বলতো সাগড়ে কতটা জল আছে
কিংবা আকাশে কতগুলি তারা
হিমালয় বেয়ে নেমে আসে কতটুকু বরফ
আর এন্টারটিকায় বরফ গলে নেমে আসে
কতটুকু পানি?
কখনো মেপে দেখেছ কি?
তাহলে কোন সাহসে আমার ভালোবাসার
পরিমাপ কর তুমি
সুখের নিদ্রায় শুয়ে শুয়ে
সাথী কে সংগে করে নিয়ে
আমাকে অপেক্ষায় রেখে
আরেকজনের ঘর হতে ডেকে নিয়ে
পরিমাপ যন্ত্র হাতে দিয়ে
তোমার জন্য ভালোবাসার পরিমাপ
লিখে আনতে বল আজ।
আমি সেদিনও বলেছিলেম তোমায়
আজো বলি,
আমার ভালোবাসায় পরিমাপ করতে চাও তো
মেপে নাও আকাশের পরিমাপ
কারন নীলাকাশ জানে আমার ভালোবাসার নীল দুঃখগুলোকে
যেগুলোকে বুকে ধরে ধরে সে হয়ে ওঠে গাড় নীল মাঝে মাঝে

আর বিস্তৃতি ছড়াতে ছড়াতে গিয়ে
ঠেকে সপ্তাকাশ পানে
শুধু আমার ভালোবাসাকে তার বুরকে ধরে রাখতে।

তাই তো তোমাকে বলি শুখের ঘরে
সোনার পালংকে শুয়ে আমার ভালোবাসায়
পরিমাপ করতে যেও না কখনো;
আমার ভালোবাসার গভীরতা বুঝতে পারবে
যেদিন আমাকেও শোয়া পাবে তোমার মত করে
সাড়ে তিন হাত মাটির ঘরে।

বাংলা আমার বাংলা


মনের ভেলায় কিছু রঙ ভাসে
হ্রদয়ে দোলা দেয় কিছু ভাবনা
অবাক চেয়ে থাকি আঁখিপানে তার
তারে কিছু কইতে যে মন চায়
কিছু কথা কবিতা হয়ে গুনগুনায়
যখন আঁখিতে আঁখি হারায়।

আহ কি সুখ
আমি লিখছি বাংলায়
মনের কথাগুলিকে তুলে ধরছি বাংলা তুলির আচরে
বাংলা ক্যানভাসে।

লক্ষ কোটি সালাম জানাই
আজ ভাষা শহীদদের
যারা আমাদের দিয়ে গিয়েছিল
প্রানখুলে বাংলায় লেখার স্বাধীনতা
তাদের রক্তের বিনিময়ে।

আসলে কি তারা শহীদ হয়েছে
নাকি বেচে আছে আজো হ্রদয় মাঝে
১৫কোটি বাংগালীর হ্রদয় জুড়ে।

মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১১

ভালোবাসা

আজো কেন জানি
ভালোবাসা শেখা হল না
কেমন করে ভালোবাসা হয় বলতে পার কি?

সেই কোন ছোট্টবেলায় তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখতাম ঘর বাধার
মনের আয়নায় আকতাম তোমার লাল টুকটুকে বউ সাঁঝ
পুতুল খেলার ছলে প্রতিদিনই তোমার কাছ ঘেসে বসতাম
নিতেম তোমার এলোচুলের গন্ধটুকু প্রানভরে
বেলিফুল কিছু তোমার মাথার পরে ছড়িয়ে দিয়ে
তুমি বিরক্ত হয়ে বলতে দুস্টুমি করো নাতো সবসময়, সরে বস আমার কাছ থেকে!
আবার দুদিন বেলি না তুলে আনলে কথা শোনাতে ছাড়তে না কিন্তু অভিমান ভরে।
বলতে, কিগো পুতুল বর, বেলির দিন কি শেষ হয়ে গেছে?
বাগানে কি ফুল ফোটে নি আজ?
তোমার ভাষা আমি বুঝতে পারিনি সেদিন
যেমন বুঝি না আজো

তাই তো তোমায় আমার ভালোবাসার কথা মুখ ফুটে বলা হয় নি কখনো
আসলে অনেক ভিতু ছিলেম সেদিন, যেমন আছি আজো ।
শুধু তোমার কাছে ভালোবাসার প্রকাশ করতে না পারায়,
ভালবাসা হল না আমার আজো।
ভালোবাসতে পারি নি মনে হয় আজো সঠিক ভাবে
ঠিক যেভাবে মেয়েরা চায়, বা তুমি চেয়েছিলে হয়তো
আমার মুখফুটে ভালোবাসার কথা শুনতে।

যেদিন কাকভোরে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলে
কুয়াশা ভেজা সূর্যকিরণ গায়ে মাখাতে
শিশির ভেজা ধান খেত ধরে হেটে গিয়েছিলে আমার হাত দুটি ধরে
আর মনে মনে গুনগুনিয়েছিলে নদীপারের ধারে
আমি কিছুই বুঝি নি সেদিনও
ঐরাবতি নদীতীর ধরে হেটে চলেছিলেম তোমার কোমল হাত দুটি ধরে
তুমি হয়তো কিছু আবেশে কাধে মাথা রেখে হেটে চলেছিলে আমার পাশে পাশে ঘেষে
কিংবা সেদিন তুমি আমাকে টেনে হিচরে নিয়ে চলেছিলে চন্দ্রনাথা পাহাড় বাইতে
আমি এক পা দু পা করে তোমার সাথে সাথে তাল রেখে রেখে
হেটে চলে এসেছিলেম চন্দ্রানাথের মাথায়
ওই অত ওপর থেকে, ঝাউবন ঘেড়া সাগর দেখে উচ্ছলে আমায় জড়িয়ে ধরেছিলে
কানের কাছে কিছু গান গুনগুনিয়েছিলে
কি জানি বুঝাবার তরে।
আমি বুঝতে পারি নি তোমার গাওয়া রবিঠাকুরের ওই প্রেমের বানীগুলি
যা গান হয়ে বেজে ওঠেছিল সুরের অপার্থিব ঝংকারে তোমার কন্ঠ নির্গত হয়ে।

মনে আছে সেই যে আরেক বিকেলে কিছুটা জোর করে
ছেলেমানুষের মত আমায় সাগরবেলায় নিয়ে গিয়েছিলে
সেই বিকেল থেকে সন্ধ্যাবধি হাতে হাত রেখে সারাটা বীচ জুড়ে
হেটে বেড়ালে নানা ঢঙ এর কথা বলে
কতই না আবোল তাবল কথা বলতে,
কিছু বা ভালোবাসার কথা কিছু বা অবুঝকে বুঝ দিয়ে পাশে ডাকার প্রলোভন।
আমি সেদিনও বোকা ছিলেম, আজো ঠিক তেমনি বোকা আছি
তোমার মনের ভাব না বুঝে
তাইতো আজো ভালোবাসা হল না তোমায় মন ভরে
কল্পনাকে করে নিয়ে পরিনত বাস্তবে।

তোমার কি মনে আছে?
রেললাইনের দুপাশে স্লিপারএ পা রেখে আমার হাত ধরে হেটে যেতে
যতক্ষন একপাশ থেকে একটি রেলগাড়ির কু-ঝিক ঝিক শোনা যেত
তুমি আমার হাত ছাড়তে চাইতে না,
বলতে যাক না দেখি রেলগাড়িটা আমাদের মাড়িয়ে দিয়ে
ভিতু আমি ভয়ে সরে গিয়ে নেমে পড়তাম রেলের স্লিপার থেকে,
তুমি ঠিকই হেটে চলে যেতে একদম রেল গাড়ির সামনে,
ঠিক দুহাত ফারাকে নেমে যেতে আস্তে করে রেললাইনের পাথর ধরে,
আর আমাকে বলতে,
ডরপোক তুমি, তোমার সাথে নাকি আমি মরতে ভয় পাই।
আসলে কি তাই?
আমি তো মনে মনে আজো
তোমায় নিয়ে রেলের পাত ধরে হেটে চলি
ঠিক রেললাইনের সমান্তরাল পথে
তোমায় নিয়ে ঢুকে পরে রেলের ইঞ্জিনের ভেতরে,
হাতে হাত ধরে।
যেথায় কয়লার গনগনে আগুন আমার বুকের আগুন নিভিয়ে
ভাসাবে তোমার প্রেমের সরবরে।
আসলেই আমি প্রেম করতে শিখি নি,
জানি না কিভাবে ভালোবাসতে হয়
বা ভালোবাসার কথা বলতে হয়।

মনে আছে কি তোমার
পাশের বাসার ছোট্ট মেয়েটা যখন আমায় জড়িয়ে ধরত
খেলার ছলে ভাইয়া ভাইয়া করে
তুমি কেন জানি অগ্নিদৃস্টি হেনে তাকিয়ে থাকতে
আমার দিকে দুদিনের আড়ি নিয়ে
আর কথা বলতে গেলেই বলতে – যাও ওর পুতুল বর হও গিয়ে আমাকে বাদ দিয়ে
আমি ছাই সেদিন কি বুঝেছিলেম তুমিও আমায় ভালোবাসতে নিজের মত করে
আর জ্বলে পুরে ছাই হতে আমার পাশে অন্য কাওকে পেলে
তখন তোমার এসব মান, অভিমান, রাগ, অনুরাগের ভাষা বুঝিনি
বুঝতে পারি নি যে তুমিও আমায় ভালোবাস তোমার নিজের মত করে।
ক্ষমা করে দিও হে প্রিয়তমা,
আমার ছোট্টবেলার খেলার সাথি তোমায় বুঝতে পারি নি বলে
আর তোমার মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারি নি
তোমাতে তোমারই হয়ে।

আজ এতদিন পড়ে,
মরনের কালে যখন পুরো জীবন ফ্লাসব্যাক এর মত জ্বলে উঠেছে,
মনে হয় তোমাকে একটু একটু বুঝতে প্রেরেছি অথবা
বুঝেছি তোমার ভালোবাসার আকুলতা আমাকে ঘিরে
এই শেষ বয়সে এসে সেদিনের সেই ভাবনা গুলি কি
আজো তোমার মাঝে উকি দিয়ে যায় হে প্রিয়তমা?
আজো কি সেই ভালোবাসাটুকু বেচে আছে তোমার হ্রদয়গভীরে?
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।

সেদিনও আমি তোমার ভালোবাসা বুঝি নি
আজো তুমি রয়ে গেছে আমার কাছে অমাবস্যার চাঁদ হয়ে
কিন্তু শুধু জেনে রেখ, তোমায় আমি ভালোবেসেছিলেম সেদিনও
যেমন ভালোবেসে যাই আজো।

শুধু আমার ভালোবাসা শেখা হল না সেদিনও আর আজও
তোমাকে পাওয়ার মত করে।