বুধবার, ২৯ এপ্রিল, ২০১৫

উদাস



উদাস
- যাযাবর জীবন

বৃদ্ধ আমার চোখ
প্রাগৈতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি
এ যুগের প্রেম দেখব কিভাবে?
কিংবা তোকে;

বাঁশঝাড়ে লটকে থাকা থোকা থোকা বিষণ্ণ রৌদ্দুরে
সুঁইচোরা পাখির কি এসে যায়?
মন উদাস হলেই সে রমণে মত্ত হয়
মাটির ঢালের ঘুলঘুলি বাসায়;

আমি বৃদ্ধ চোখে মেঘ দেখি
বৃষ্টির অপেক্ষায়।




শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৫

কবিতা



কবিতা
- যাযাবর জীবন

একটা গল্প লিখতে শুরু করেছিলাম
তোকে নিয়ে;
তোর দুঃখ
তোর কষ্ট
তোর রাগ
তোর অভিমান
তোর ছেলেমানুষি
তোর ভালোবাসা
আমাদের প্রেম
ইত্যাদি ইত্যাদি;
অনেক বার চেষ্টা করেছি একটা গল্প লেখার
তোকে নিয়ে,
হয়ে আর ওঠে নি;
আমার কি করার আছে বল?
তোকে নিয়ে গল্প লিখতে বসলেই কবিতা হয়ে যায়!

তুই যে নিজেই বিশাল এক খাতা কবিতা।




ই-বুক



ই-বুক
- যাযাবর জীবন

ঝড়ো বাতাস
টুপ টাপ আম পড়ছে
আমতলায় বাচ্চাদের হৈ হৈ ছুটোছুটি
এই নামলো ঝুম বৃষ্টি
বাচ্চাগুলোর হুল্লোড় ঝাপাঝাপি
কাঁদায় মাখামাখি
সেই দিনগুলো আজ কোথায়?
স্বপ্ন দৃশ্যগুলো আজো রয়ে গেছে আমার মাথায়।

আজো ঝড় হয়
আম পড়ে
বৃষ্টি ঝরে
শুধু ছোট ছোট বাচ্চাগুলোর ছেলেবেলা
হারিয়ে গিয়েছে কম্পিউটার মনিটরে।

বৈশাখের রৌদ্র দুপুরে বেল দিয়ে টক আমের ভর্তা
কিংবা তেঁতুল দিয়ে মুচি ভর্তা
কাড়াকাড়ি হাতচাটা,
এক সময় ইতিহাস হয়ে রবে আদি যুগের
বই নামক ছাপা অক্ষরে,
অধুনা ই-বুকে হয়তোবা এগুলোর কিছু বর্ণনা রয়ে যাবে;
সে যুগের বাচ্চাগুলো হয়তো একসময় ই-বুকে চোখ বুলিয়ে বলবে
দাদা পরদাদারা
কি সব ফানি কাজ করত, কাঁদায় গড়াগড়ি; ইয়াক;
কি সব অদ্ভুত সব খাবার খেত; মুচি ভর্তা; OMG!




বৃহস্পতিবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৫

সংকীর্ণতা



সংকীর্ণতা
- যাযাবর জীবন

সময়ের সাথে সাথে
আমাদের মন সংকীর্ণ হতে হতে
আজ চার প্রকোষ্ঠে বন্দী,
সাধ্য কোথায় ভালোবাসার মত বিশালতা ধরে রাখার?
তাইতো ইদানীং দেহের সাথে যত সখ্যতা তার;

প্রেম ধুয়ে যায় বৃষ্টির জলে
কাম পেঁচিয়ে রয় দেহ জুড়ে।




বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৫

প্রেম



প্রেম

- যাযাবর জীবন

কলম আর কালি'তে কি প্রেম করা যায়?
খুব বেশি হলে না হয় কিছু কবিতা আঁকা যায়,
প্রেম কিংবা বিরহের
ভালোবাসা এবং বিচ্ছেদের
মিলন আর দহনের,
শব্দ যন্ত্রণায় সহবাস হয় না;

প্রেম করে নর আর নারী।



মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৫

আড়াল



আড়াল

- যাযাবর জীবন

মন আনচান
কাপড়ে ঢাকা সৌন্দর্য
বোতামে আড়াল করা;

সব বোতাম কি আর খোলা যায়?
কিছু না খুলেই উপভোগ করতে হয়;

বোতাম তো সবারই থাকে
জামার কিংবা স্তনের।

প্রেম



প্রেম
- যাযাবর জীবন

প্রেমের সূত্রপাত মনে
সমাপ্তি দেহে
তোর
আমার
তার
সবার;
কেও মানে কেও মনরে চোখ ঠারে
তুই
আমি
সে
সবাই।



আমা'তে তুই



আমা'তে তুই
- যাযাবর জীবন

আশার একটা ভোর
তুই,
মন খারাপের একটা দুপুর
তুই,
বিষণ্ণতার একটা বিকেল
তুই,
মন ভাঙার একটা সন্ধ্যা
তুই,
কান্নার একটা রাত
তুই;

প্রেমময় একটা দিন
তুই,
প্রেমহীন একটা দিন
তুই;

দিন রাত্রির অষ্টপ্রহর
আমা'তে তুই।




উত্তপ্ত দুপুরের হিবিজিবি ভাবনা



উত্তপ্ত দুপুরের হিবিজিবি ভাবনা

- যাযাবর জীবন

আলসে দুপুরের গায়ে বড্ড রোদ লেগেছে
চিড়বিড়ে গরমে ভাপ ওঠে বাতাসে; (প্রকৃতি)

রাগের ভাপে মন পুড়ে কয়লা
অভিমানের ভাপে পুড়ছে হৃদয়
দমকে দমকে মুখে টক লালা
ভালোবাসার ঢেকুর বড্ড বেয়ারা; (তুই)

চোখ খুললে রোদ পুড়ে যায়
চোখ বন্ধ করলে শুধুই তুই
অলস দুপুরে বড্ড লাগে একা
হৃদয় জুড়ে কেমন জানি ফাঁকা; (আমি কিংবা তুই)

জলের স্বাদে নুন-লবণ
দুপুরের রোদে লাল ক্ষরণ। (ভালোবাসা)





সোমবার, ২০ এপ্রিল, ২০১৫

গতানুগতিক



গতানুগতিক

- যাযাবর জীবন

প্রেমের বজ্রপাত এক মেঘহীন চৈত্রের দুপুরে
তোর মনে
বজ্রাহত আমি
পুড়েছিলি তুই;
চাতক চোখ আকাশের দিকে চায়
বৈশাখী বৃষ্টির অপেক্ষায়
তুই ঠাণ্ডা হতে
আমি ভিজে যেতে,
তারপর গতানুগতিক;

কালের স্রোতে
সময় গড়ায়
রোদ উঠে
বৃষ্টি নামে
ঝড় আসে
তারপর আবার বজ্রপাত
আকাশ থেকে মাথায়
তোর কিংবা আমার;
তারপর একদিন টুপ করে ভালোবাসা নিভে যায়
কোন এক কালবৈশাখী ঝড়ে;
গতানুগতিক প্রেমের গতানুগতিক সমাপ্তি।



রবিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০১৫

লজ্জা



লজ্জা
- যাযাবর জীবন

রূপবতী হেঁটে যায় রাস্তায়
লাফালাফি অনুভব জীপারের তলায়
কেও কেও বলে বাঘের থাবা,
আমার অনুভবে আসে কুকুরের জিহ্বা;
মানুষ হলে তো মায়ের কথা একবার মনে হতো।

দূরে কোথাও রোদ উঠেছে
কোথা থেকে জানি লু বাতাস ভেসে আসে
গরমে শরীর জ্বলে যায়
তপ্ত অনুভূতি জীপারের তলায়
যদি মানবিক অনুভূতি একটু থাকতো অনুভবে
বোন'টা বেঁচে যেত লজ্জার হাত থেকে।

নপুংসকরা যা খুশি তাই করে
নারী এদের কাছে পণ্য মাত্র
সে মা হোক, বোন হোক কিংবা নিজের মেয়ে হোক;
এরা মায়ের শাড়ি পড়ায় দোষ ধরে
বোন'কে বেআব্রু করে
এরা মেয়ে'কেও বেঁচে দিতে পারে
নির্বিকারে;

পুরুষ লজ্জা পায়
নর নামক নরপশুদের কর্মকাণ্ডে।



বৃহস্পতিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৫

হিসাবের ভয়



হিসাবের ভয়
- যাযাবর জীবন

মশার কামড় সইতে পারি না
মাটির কামড় সইব কিভাবে?
একটু গরমে এসি না হয় ফ্যান
মাটির গরম সইব কিভাবে?
একটু ঠাণ্ডায় লেপ কম্বল
মাটির ঠাণ্ডা সইব কিভাবে?
একটু নাক বন্ধে শ্বাসরোধ
মাটির তলায় রইব কিভাবে?
একা যে আমার বড্ড ভয়
একলা সেখানে রইব কিভাবে?

তবুও থাকতে হবে সেখানে
ঐ মাটির ঘরে
অনন্তকাল একা
আমাকেই;
বড্ড ভয় করে, যদি ভুল হয়ে যায়?
কড়ায় গণ্ডার হিসাবে
শেষ বিচারের দিনে।



হিসাব



হিসাব

- যাযাবর জীবন

আমি একজন স্বার্থপর মানুষ,
আমার বেঁচে থাকা খুব একান্ত ছেলেমানুষী কিছু স্বপ্ন দেখে
খুব নিজস্ব কিছু স্বপ্ন নিয়ে
খুব আপন কিছু স্বপ্ন ঘিরে
ভালো আর মন্দের মেশানো একঘেয়ে জীবন ঘিরে;
আমি এক স্বার্থপর মানুষ,
কোন এক দিন হুট করে মরে যাব
প্রিয়জনদের কাঁদিয়ে
তারপর ঘুমিয়ে রইব মাটির নীচে একলা ঘরে;
মানুষ মাত্রই স্বার্থপর প্রাণী
মানুষ মাত্রই স্বপ্ন দেখে
মানুষ মাত্রই হুট করে মরে যায় হর হামেশায়
সময়ে আর অসময়ে
কারণে আর অকারণে;

আমি আবার ঘুম ভেঙ্গে উঠবো
পুনরুত্থানের দিনে
সেদিন হয়তো আরও বেশী স্বার্থপর হয়ে যাব
চিনব না এ ভুবনের কাওকেই
চিন্তিত এক সময় কাটাবো শুধুই নিজেকে নিয়ে;
আমার হিসাব তো আমাকেই দিতে হবে
শুধুই আমাকে,
ভালো বা মন্দ যাই করেছিলাম এক জীবনে।



বুধবার, ১৫ এপ্রিল, ২০১৫



ভুল
- যাযাবর জীবন

চশমাটা নিল, নিল
ঐ যে কাকে নিয়ে নিল
আমি চিলের পেছনে দৌড়ে মরি
আমার চোখ গেল
তোকে দেখব কি করে রে হতভাগিনী
আমার চশমাটা যে হারিয়ে গেলো!

সবই হারিয়ে যায় জীবন থেকে
ইচ্ছা আর অনিচ্ছায়
সময়ের ভুল পথে সময় হারায়
মানুষ'কে ভুল বুঝে মানুষ হারায়
ভুল ভালোবাসায় প্রেম হারায়
দুঃখের ডানায় ভেসে সুখ হারায়
অসুখে ধুঁকে ধুঁকে জীবন হারায়;

সহজ সমাধানগুলো আমাদের চোখের সামনে হাতছানি ডাকে
সাদা চোখে চেয়ে দেখার অপেক্ষায়;
কি লাভ?
আমরা চোখে রঙ্গিন চশমা লাগিয়ে সহজ জীবনটা'কে ঘোলা দেখি
আমরা সাদা চোখ রেখে ক্যামেরার ভিউ ফাইন্ডারে তাকিয়ে থাকি
ক্রমাগত দৌড়ে বেড়াই ভুলের পেছনে ভুল পথে
আমি ভুল না করলে চিলে কি করে চশমা নেবে?
আরে আরে!
আমার চশমাটা কাক এ নিল রে
তোকে দেখব কি করে?









মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৫

বৈশাখ



বৈশাখ
- যাযাবর জীবন

আজকে পাখি ডাকতেই সূর্য লাল
চোখ মেলতেই ভোর লাল
আয়নায় নজর পড়তেই চোখ লাল
ঘর থেকে বের হতেই দুচোখে লালের ধাক্কা
আজ হলোটা কি?
চারিদিকে যতদূর চোখ যায় শুধুই লাল শাড়ী;

চৈত্রের আগুন বৈশাখে নিভবে কি?
একটা ঝড় আসুক আমাদের ধুয়ে নিতে
শরীর আর মনের সমস্ত কালিমাগুলোকে
তারপর নাহয় নতুন বছরে নতুন জীবন গড়ি।


সোমবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১৫

দম্পতি কথকতা


দম্পতি কথকতা
- যাযাবর জীবন

সুখী দম্পতির ক্ষেত্রে:

স্বামীর চোখে তার বৌ পৃথিবীর সবচেয়ে লক্ষ্মী নারী;
স্ত্রীর চোখে পৃথিবীর সবচেয়ে সুপুরুষ তার স্বামী।

অসুখী দম্পতির ক্ষেত্রে:

স্বামীর চোখে তার বৌ পৃথিবীর সবচেয়ে মুখরা রমণী;
স্ত্রীর চোখে পৃথিবীর সবচেয়ে চরিত্রহীন পুরুষ তার স্বামী।

উভয় ক্ষেত্রে ভেতরের কথা:

পরের বৌ সব স্বামীদের চোখেই অপ্সরা,
বৌ পাশে হাত ধরা তবুও দৃষ্টি পর নারীতে হরহামেশা
পুরুষ বলে কথা,
ব্যতিক্রম হাতেগোনা;

বেশীরভাগ স্ত্রীদের অত সময় কোথায়?
সময় তো কেটে যায় হাঁড়ি ঠেলায়,
আদতে নারী স্বামীর মাঝে খোঁজে নির্ভরশীলতা
ব্যতিক্রম হাতেগোনা।


জীবনের স্তর



জীবনের স্তর
- যাযাবর জীবন

একটা বয়সে বাবা-মায়ের ভালোবাসায় বাঁচা
বাবা-মায়ের ভালোবাসার জন্য বাঁচা
বাবা-মা'কে ভালোবেসে বাঁচা;

একটা বয়সে যৌবন আসে, সবকিছু রঙিন লাগে
বাবা-মা'র কথা বিরক্ত লাগে
তখন বন্ধুবান্ধবের জন্য বাঁচা
ভালোবাসার জন্য বাঁচা
প্রেমের জন্য বাঁচা
প্রেমিক-প্রেমিকার জন্য বাঁচা;

একটা বয়সে সংসার ধর্ম
বল্গাজীবনের রাশ টানা
থিতু হয়ে বসা
স্বামী-স্ত্রী'র ভালোবাসা
পরস্পরের জন্য বাঁচা
সন্তানকে ভালোবেসে বাঁচা
সন্তানের জন্য বাঁচা;

একটা বয়সে প্রৌঢ়ত্ব মাথার পরে
সন্তান দূরে সরে
স্বামী-স্ত্রী দুজনই যদি বেঁচে থাকে
পরস্পরকে আঁকড়ে ধরে
নতুবা একাকীত্ব ঘিরে ধরে;

একটা বয়সে বার্ধক্য জড়িয়ে ধরে
একটা বয়সে সন্তান সন্ততি অনেক দূরে
কারো দিন কাটে সন্তানের অবহেলায় ঘরের কোনে
আর নয়তো বৃদ্ধাশ্রমে
ভালোবাসা মায়া হরিণ হয়ে থাকে, জীবনের বিভিন্ন স্তরে।



রবিবার, ১২ এপ্রিল, ২০১৫

ইচ্ছেগুলো


ইচ্ছেগুলো
- যাযাবর জীবন


ইচ্ছেগুলোকে বাঁধ দেয়া যায় না
কত রকম ইচ্ছে যে মনপুকুরে সাঁতার কাটে!
সম্ভব আর অসম্ভব ইচ্ছের বাস মনের ঘাটে
মাছেরও তো মাঝে মাঝে স্নান করতে ইচ্ছে করে!

আমি মাঝে মাঝে লিখে ফেলি
মনের কথা
আমি মাঝে মাঝে এঁকে ফেলি
মনের ব্যথা
আমারও তো প্রেম করতে ইচ্ছে করে!

আমি লিখি না
কলম লিখে
মনের যত হিবিজিবি ইচ্ছেগুলোর কথা।


বৈশাখ বিলাস



বৈশাখ বিলাস
- যাযাবর জীবন

একটু ঝড়ো বাতাস
টাপুর টুপুর আম পড়ার শব্দ
দামাল ছেলেমেয়েদের বৃষ্টিতে ভিজে আমকুড়ানো বৈশাখ;
সেই সোনাদিন গুলো আজ কোথায় হারিয়ে গেছে?
জড় জঞ্জালের নগর সভ্যতা ছিনিয়ে নিয়েছে আমকুড়ানো শৈশব।

আজো বৈশাখী ঝড় বয়ে যায় ইটকাঠের নগর জুড়ে
পুরনো পিড়ি জানালা খুলে নস্টালজিয়ায় ভোগে
আম কুড়ায় মনোজগতে;
নতুনেরা এসি ছেড়ে ভার্চুয়াল জগতে
কাসুন্দি মাখা কাঁচা আমের স্বাদ, তারা কি জানে!




আনাড়ি



আনাড়ি
- যাযাবর জীবন

আকাশে সূর্যের রূপার থালা
চোখে দুপুরের জ্যোৎস্না
ভ্রম তো হতেই পারে
নারী চিনে নিতে;

দৃষ্টি পেতে ও দিতে আমি চিরকালের আনাড়ি।



শনিবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৫

ধার



ধার
- যাযাবর জীবন

তুই চলে যেতেই রোমান্স ভুলে গেছি
কত দিন হয়ে গেছে প্রেম করি না -
চাঁদের সাথে
জ্যোৎস্নার সাথে
রাতের সাথে
তারার সাথে,
এখন আর মনে প্রেম আসে না
এখন আর কবিতা লেখা হয় না;

আমায় কিছু রোমান্স ধার দে
একটি প্রেমের কবিতা লিখি।


প্রেম পার্থক্য



প্রেম পার্থক্য
- যাযাবর জীবন

ভাদ্রের কুকুর জিহ্বার লালা ঝরে না বৈশাখে
কাম'লালা ঝরছে মানুষের বার মাস
গ্রীষ্মের দাবদাহ বড্ড মানিয়ে যায় শিমুলের লালে
ক্ষরণের লালে প্রেমিক রঙ্গিন বছর ধরে
পশুপাখিতে শুধুই রমণ চলে
প্রেম আর কামের পার্থক্য কেবল মানুষই জানে;

সেদিনের স্পর্শে ছিল কামের অনুভব
প্রেম বুঝিনি।



দৃষ্টি



দৃষ্টি

- যাযাবর জীবন

দৃষ্টি'তো এখানে সেখানে ঘুরবেই
নদী নালা খাল বিল বেয়ে
চোখ আটকে যায়
ঐ পাহাড় চুড়ায়;

বড্ড অশালীন চোখের ভাষা
পুরুষের দৃষ্টি বলে কথা।


শুক্রবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৫

ভালোবাসার রং



ভালোবাসার রং

- যাযাবর জীবন

অস্পষ্ট কিছু ছবি
অদৃশ্য হাতছানি
অচেনা অনুভূতি
অপূর্ণ ইচ্ছেগুলি
অপূর্ণ তুই
অপূর্ণ আমি
অপূর্ণ ভালোবাসা;

আমি বদলে গেছি
বদলে গেছিস তুই
বদলেছে সম্পর্ক
বদলেছে সময়
স্পষ্ট হয়েছে অনুভূতি
ঐ তো ভালোবাসা দেখা যায়;

অনুভূতিতে স্পষ্ট দৃশ্যমান ভালোবাসার রং
অপূর্ণতায় এখন আর মন কাঁদে না।



বৃহস্পতিবার, ৯ এপ্রিল, ২০১৫

মাটির ডাক



মাটির ডাক

- যাযাবর জীবন

শরীরে ছুরির পোঁচ
রক্ত বের হয়
ব্যথা লাগে
মাটির শরীর বলে কথা;

মাটিতে কোদালের কোপ
রক্ত কোথায়?
ব্যথা লাগে কি?
আমি জানি না;

মাটির গভীর থেকে
মাটির ডাক ভেসে আসে
ছোট ছোট মাটির ঘরগুলোর
পাশ দিয়ে হেঁটে যেতে;

তৈরি আমি
মাটিতে বিলীন হতে
মাটি হয়ে;
যখনই শব হব
মাটি খুঁড়ে নিও
কোদালে শাবলে।




বুধবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৫

বিবেক



বিবেক
- যাযাবর জীবন

যখন পাশের বাড়ির বিধবার ছোট ছোট শিশুগুলো
ক্ষুধায় কাতরায় হর হামেশায়
তখন আমার কানে তুলো,
বিবেক'কে ঘুম পারিয়ে, আমিও গভীর ঘুমে;
বিধবা মাগী যখন দেহ বেঁচে সন্তানের পেট ভরে
বিবেক আমার মাথার ওপর লুঙ্গি তুলে নাচে
পাড়া মহল্লা মাথায় ওঠে,
আরে আভাগীর বেটিরে মহল্লা থাইক্কা জলদি বাইর কর,
এইটা ভদ্দরনোকের পাড়া;

রাতের অন্ধকারে আভাগী মাগীর ডেরায় হানা
বিবেক লুঙ্গি খোলে,
আরে না, না,
অন্ধকারে আমারে যায় না চেনা;
শিশ্নের ময়লা, পানিতে ধুয়ে নিলেই বিবেক পরিষ্কার;

আহহারে, বিধবার কি কষ্ট, কি কষ্ট; এ কি সহ্য হয়?
এতিম বাচ্চাগুলোর একদিনে খাদ্যের সংস্থান'তো হলো আমার বদৌলতে;
ওহে বাবা বিবেক;
ভালোই তো ছিলে লুঙ্গির তলায় ঘুমিয়ে।


মঙ্গলবার, ৭ এপ্রিল, ২০১৫

পিছু ডাক



পিছু ডাক
- যাযাবর জীবন

কোথাও গেলেই তোর কথা মনে পড়ে
কোথাও গেলেই তোর ডাক কানে বাজে;

পাহাড়ে যাই পাহাড় ডাকে তোর সুরে
নদীতে যাই স্রোত ডাকে তোর সুরে
সমুদ্রে গেলে ঢেউ ডাকে তোর সুরে
গাঁয়ের মেঠো পথে হেঁটে যেতে
পাখির ডাকে তোর ডাক;
চমকে ফিরে চাই
এদিক ওদিক তাকাই
কোথাও তুই নেই
শূন্যতায় শুধুই ভ্রম,
কোথাও যেতে পারি না
তোর পিছু ডাকে;

বড্ড ইচ্ছে করে
তোকে নিয়ে একবার সমুদ্রে যাই।


ধার



ধার
- যাযাবর জীবন

ঠোঁট ভেজাব না কথার ভেজা চুমুতে
জলজ নই এখন আর
দু হাতে ছুঁড়ে দেয়া বিলানো চুমু
সে তো সবার জন্য;

তুই যখন কথার ছুরি চালাস
কাকগুলো তখন ঘিলু ঠোকরায়
যখন প্রেমের দংশন
তখন ঠোঁটে জমাট রক্ত;
দাঁতের ধার আমার থেকে ভালো আর কে পরখ করেছে?
কথার ছুরিতে সেই কবেই তো প্রেমের সাজঘর ভেঙ্গে গেছে।

অনেক দিন আমার মগজ কাটেনি তোর কথার ছুরি
অনেক দিন তোর দাঁতের স্পর্শ পায়নি আমার ঠোঁট
কতটুকু ধারালো হয়েছে আগের থেকে
বড্ড জানতে ইচ্ছে করে।


সোমবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৫

অন্ধকার রাস্তা



অন্ধকার রাস্তা
- যাযাবর জীবন

তোর রাস্তায় আমার প্রবেশ নিষেধের সাইনবোর্ড দেখেছি;
আমলে নেই নি, ঢুকে পড়েছি;
অন্ধকার রাস্তার অভিশাপ আগে বুঝিনি,
গলিত মোমবাতিটার দিকে চেয়ে
লোডশেডিং অট্টহাসে
এরপর আলো কে দেবে?
তুই তো সেই কবেই আলো হাতে তার ঘরে
নিষেধের অন্ধকার রাস্তায় কে আসলো আর কে গেলো,
তাতে তোর কি যায় আসে?

মৃদু হ্যারিকেনের আলোতে দুটি ছায়া এক হয়
তোদের ঘরে
খাটের ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ মগজে আঁচর কাটে;
আমার স্বপ্নে অন্ধকার হাসে।





রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০১৫

ষোড়শী চাঁদনি



ষোড়শী চাঁদনি
- যাযাবর জীবন

আকাশ ভাঙ্গা চাঁদ মেঘের ওপর নেচে যায়
চাঁদনির বাস এ ভুবনে কোথায়?
এ ভুবনে তো জ্যোৎস্না নিয়ে কাব্য-গাথা
মনের মাঝে কবিতার রঙধনু এঁকে যায়;
আমি চাঁদনি খুঁজি চাঁদের মাঝে
জ্যোৎস্নাগুলো তোকে দিলাম
আকাশে দেখ আজ ষোড়শী চাঁদ
আমি চাঁদনিতে মন হারালাম।


সেলফি



সেলফি
- যাযাবর জীবন

কি সৌভাগ্য ক্যামেরার!
বেটা জড় জঞ্জাল কোথাকার
সবাই উঁকি মারে তোর চোখে সেলফির ঝোঁকে
ছবি পোস্ট করে ভার্চুয়ালে
আজকাল সেলফির যুগ
আসল না মেকি?

আহহারে! এমন প্রাণ খুলে যদি উঁকি দিত
দুজন দুজনার চোখে
প্রেমিক প্রেমিকা
কিংবা স্বামী স্ত্রী
কাঁদতে হত ক্যামেরা বেটার ভার্চুয়ালে
মনের ভিতরকার ছবি হতো রিয়্যালিটি।





শনিবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৫

বস্ত্র



বস্ত্র

- যাযাবর জীবন

নারী বলে সাম্যের কথা
সুর মেলায় নর
তুমি আমি সমানে সমান
বাহির কিবা ঘর;
লেখা পড়া কিবা চাকরি
টক্কর সমানে সমান
হোক বিবাহ কিংবা বিচ্ছেদ
অধিকার তাতেও হয়েছে আজকাল প্রায় সমান;
শুধু পরিধানের বস্ত্রে কেন এত ফারাক?
হে নারী!
নর আপাদমস্তক কাপড়ে থাকে ঢাকা
নারী'র সংক্ষিপ্ত হতে হতে টুকরো'তে যায় মাপা;

সাম্যের যুগে শরীর ঢাকতে কাপড় কেন কম পড়ে যায় তোরই?
হে নারী!




মানুষ



মানুষ
- যাযাবর জীবন

আমরা ভাবি এক হয় আরেক
বলি এক করি আরেক;
আমাদের দু রকম হয়েই যায়
প্রতিনিয়ত,
ইচ্ছে বা অনিচ্ছায়
দিনে ও রাত্রে
কথায় ও কাজে
ভেতর ও বাইরে;

মানুষ বলে কথা।


শুক্রবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৫

হাড়িভাঙ্গার খেলা



হাড়িভাঙ্গার খেলা

- যাযাবর জীবন

সংসারের এপার আর ওপার
মধ্যখানে কাজীর কলম খাতা
চিন্তিত প্রেমিক প্রেমিকা
লাড্ডু খাবে কি খাবে না;

ঠোঁটের এপার আর ওপার
মধ্যখানে দাঁতের রেখা
চিন্তিত ভালোবাসা
চুমু খাবে কি খাবে না;

খাটের এপার আর ওপার
মধ্যখানে বাসর শয্যা
চিন্তিত ফুলগুলো
নিষ্পেষিত হবে কি হবে না;

প্রেমিক ভাবল
এবার আমার লেজ কাটল
প্রেমিকা বললো
আর কতকাল কুমারী থাকব বল?

যাহ্‌ বিয়েটা বুঝি হয়েই গেলো
শুরু হোক এবার তবে হাড়িভাঙ্গার খেলা।


বৃহস্পতিবার, ২ এপ্রিল, ২০১৫

ঘুমঘোরে রঙ্গিন স্বপ্ন




ঘুমঘোরে রঙ্গিন স্বপ্ন

- যাযাবর জীবন

ফিঙ্গে রঙের ঘুমে কোকিল পরীটা স্বপ্নে বসতেই
কাকের ডানায় ভর দিয়ে মন উড়ে তোর ঘরে
তোর আগমন কেন শুধুই ঘুমঘোরে?
বৌ কথা কও এর মধুর ডাক কানে যেতেই
ঘোলাটে জন্ডিস রঙের বিচ্ছেদ আমায় জড়িয়ে ধরে
স্বপ্ন ভাংতেই সূর্য চোখের পরে;

কে সত্যি বলতো দেখি?
তুই না স্বপ্ন?



বুধবার, ১ এপ্রিল, ২০১৫

দোষ



দোষ
- যাযাবর জীবন

তোকে দেখতে গিয়ে স্বপ্ন দেখে ফেলেছিলাম
সে তো আমারই দোষ
স্বপ্নের কি করার আছে?
কিংবা তোর?

যে কোন সময়ই তো ভিজে যেতে পারে
মাটি কিংবা মন
কথা বললেই ভিজে যেতি তুই
যখন তখন।

মেঘের দোষ দিয়ে আর কি হবে?
বৃষ্টিতো হতেই পারে যে কোন সময়
আকাশে
কিংবা চোখে।