শুক্রবার, ২৯ মে, ২০২০

মৌনতার চিৎকার



মৌনতার চিৎকার
- যাযাবর জীবন


চুপ,
নৈঃশব্দ্যতা,
মৌনতা,
এগুলোর কি কোন অর্থ আছে?
তবে আমার কানে কেন নৈঃশব্দ্যতার চিৎকার বাজে?
বুকের ভেতরের সমস্ত না বলা কষ্টগুলোর মৌনতাই কি চুপ করে থাকা এক ভয়ংকর চিৎকার?

যখন বুকের ভেতরের চিৎকার অসহ্য হয়ে ওঠে
আমি পাহাড়ে যাই
সুনসান নীরবতার চিৎকার শুনি
নৈঃশব্দ্যতার গান শুনি
তবুও পাহাড়ের বুক ফেটে কান্না বের হয়
তোমরা তাকে ঝর্না নামে ডাকো
পাহাড়ের অশ্রুতে গোসল কর
কখনো পাহাড়ে কান্না শুনেছ কি?
নাকি জানতে চেয়েছ তার নৈঃশব্দ্যতার হাহাকার!
আমার পাথর হয়ে পড়ে রই পাহাড়ের বুকে
তারপর ঐ নীল আকাশটাকে দেখি দুজনে মিলে
পাহাড় কাঁদে ঝর্না হয়ে
আমি নিঃশব্দে;

যখন চোখের ভেতর লবণ লবণ লাগে
আমি সাগরে যাই লবণ ধুতে
সাগরের গর্জন শুনি
ঢেউগুলোর আছড়ে পড়া শব্দ
জানিস! সাগর না সবকিছু বুকে ধরে রাখে
আমার দুঃখ, আমার কান্না, এমনকি আমাকে
আমি ধীরে ধীরে ডুবে যেতে থাকি সাগরে
অথচ আমাকে সে ডুবতেও দেয় না তাতে
একটু পরে ভাসিয়ে এনে আলতো করে তীরে রাখে
চোখের লবণ ধুয়ে নিয়ে নিজে আরেকটু লবণাক্ত হয়
তারপর আমায় ঢেউয়ের গান শোনায়
আমরা দুজন শুয়ে থাকি ওপরের দিকে চেয়ে
আকাশের নীল দেখি দুচোখ ভরে;

জানিস! আমার বোধহয় কখনো আকাশে যাওয়া হবে না
কিন্তু বড্ড আকাশ ধরতে ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে ঐ আকাশের নীলে তোকে আঁকতে
আমি পাহাড়কে বলেছিলাম ইচ্ছের কথা
পাহাড় বলে তার সবুজে তোকে আঁকতে
কিন্তু তুই তো সবুজ নোস
আমি সাগরকে বলেছিলাম ইচ্ছের কথা
সাগর বললো তার সবুজাভ নীলে তোকে আঁকতে
কিন্তু তুই তো সবুজাভ নীল নোস;
তুই আকাশের মত নীল
আমি নীলের মৌনতা দেখি
দেখি আকাশের চুপ করে থাকা
আমার নৈঃশব্দ্যতার চিৎকার আকাশে পৌঁছে কি?
না হলে তোকে আঁকব কোন নীলে?

একদিন দেখিস! ঠিক আমি আকাশে যাব
পৃথিবীতে আর না হয় নাই ফিরর!
তবুও তো নীলে নীল হয়ে রব!

তুই এখান থেকে আকাশ দেখিস
এখান থেকে আমায়
তারপর খুব কান্না পেলে চলে যাস পাহাড়ের কাছে
মৌনতার চিৎকার শুনতে,
নতুবা চলে যাস সাগরের কাছে
অগুনতি ঢেউ গুনতে
কোন একটা ঢেউ হয়তো আমার পায়ে আছড়ে পড়েছিলো কোন একদিন,
যদি চিনতে পারিস ঢেউটা হাতে তুলে নিস
তারপর ছড়িয়ে দিস নীলে।



২৮ এপ্রিল, ২০২০




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন