শুক্রবার, ২৯ মে, ২০২০

দাম্পত্যের নির্ভরতা



দাম্পত্যের নির্ভরতা
-যাযাবর জীবন


আজকাল সময়গুলো খুব খারাপ যাচ্ছে
শুধু আমার সময়ই নয়, চারিদিকের সময়
তবে এই যে সেদিন, লকডাউনে যখন চারিদিক বন্ধ
কোন কারণ ছাড়াই হুট করে অচেতন পড়ে গেলাম
দৌড়ে এলো সবাই, হৈ চৈ কান্নাকাটি
কি ভেবেছিলো ওরা? হয়তো মরে গেছি!
খুব বেশীক্ষণ অচেতন ছিলাম না, চেতন ফিরে ভয়ার্ত মুখগুলোকে দেখছিলাম
আচ্ছা! আমি কি মরে গিয়েছিলাম? উঁহু! তাহলে কিভাবে চোখ খুললাম!
ইশশ! এবার মরে গেলে ভালোই হতো!
দুদিন কাঁদতো, দিন পনরো মন খারাপ করে থাকতো
তারপর তো সেই চিরাচরিত জীবন যাপন
মৃতকে সেভাবে আর মনে রাখে কে?

রাখে, কেও কেও রাখে
- বাবা মা যদি বেঁচে থাকে, আহহারে বলে বিলাপ করে, যখনই মৃত সন্তানের কথা মনে পড়ে
তাও কতদিন? দুমাস, ছমাস খুব বড়জোর বছর।

- সন্তানরা মনে করে, খুব মাঝে মাঝে, যখন অন্য কোন ছেলেমেয়েকে দেখে বাবার হাত ধরে হাঁটতে;
তাও খুব বেশী দিন নয়, মৃত্যুর অল্প কিছুদিন মাত্র; খুব বড়জোর মাস ছয়েক।

- একমাত্র মনে রাখে স্ত্রী, কারণে আর অকারণে যখনই মনে পড়ে; কোন একটা ভালোমন্দ কিছু রান্না করলে, খাওয়ার টেবিলে।
রাতের একলা প্রহরে বড্ড কাঁদে, হাত বাড়িয়ে আমার বদলে বালিশ ছুঁয়ে ছুঁয়ে;
স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে যখন ভালোবাসা থাকে, স্বামীস্ত্রীর সম্পর্ক যখন পবিত্র হয়।
আর না হলে কে বাঁচলো আর কে মরলো কার তাতে কি যায় আসে!

সেদিন থেকে রাতে ঘুম ভাংলেই হাত বাড়াই,
হাত বাড়িয়েই হাতের স্পর্শ পাই,
আছে! পাশে কেও আছে! খুব মমতায় জড়িয়ে আছে আমার পাশেপাশে
আধো ঘুমে তাকাই, আধো অন্ধকারে ওকে দেখি, তারপর আবার নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে যাই।
এই যে স্পর্শ! এ শুধু স্পর্শ নয় এক নির্ভরতা, এক বিশ্বাস
যে পাশে আছে, যে কাছে আছে, যে জড়িয়ে আছে নির্ভরতায়, জড়িয়ে আছে মমতায়
সে থাকবে, সেই থাকবে আমার প্রয়োজনে; আমার দুর্দিনে পরম ভালোবাসায়
সে আর কেও নয়, আমার স্ত্রী
এই যে দুজন দুজনার ভালোবাসা!
এই যে দুজন দুজনার নির্ভরতা!
এটাই তো দাম্পত্য, তাই না?

আর বাকি সব মধ্যবিত্তের আয় ব্যয়ের সামঞ্জস্য
দৈনন্দিন বাজার সদাই, রান্নাবাটি
বাবা মার দেখাশোনা
সন্তান সন্ততি পড়ালেখা
বাড়ি ভাড়া, এটা ওটা বিভিন্ন ছোটখাট টাকা পয়সার হিসাব কিতাব
আর অন্যান্য খুঁটিনাটির সংসার।


৫মে, ২০২০


#কবিতা









কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন