স্তরে স্তরে মানুষের জীবন
জীবনের স্তরে স্তরে আনন্দ
স্তরে স্তরে বেদনা
স্তরে স্তরে সমস্যা
সমস্যার মধ্যে দিয়ে যে যায়, শুধু সেই জানে
বাইরে থেকে কেও বোঝে না;
একটা সময় মানুষের জীবন কাটে দুর্দান্ত দাপটে
দেবার মত কত কিছুই না থাকে তখন তার কাছে!
সন্তানের জন্য উপার্জন
তাদের যথাযথ শিক্ষা
পরিবারের ভরন পোষণ
বছরের ছুটি ছাটায় সামর্থ্য অনুযায়ী ভ্রমণের আয়োজন,
সে সময়টা শুধুই দেবার
বাবা-মায়ের জন্য
পরিবারের জন্য
সন্তানের জন্য
ভাই-বোনের জন্য;
তারপর কালের স্রোতে সময় যায়
ধীরে ধীর মানুষ নত হতে থাকে বয়সের কাছে
কর্মক্ষমতা কমতে কমতে কোন একটা সময় শূন্যের কোঠায়
বিলুপ্ত হয় দেবার ক্ষমতা
জরা ব্যাধি ভর করে শরীরে
একটা সময় মানুষকে হারতেই হয় বয়সের কাছে,
সে সময়টা বড্ড করুণ;
সারাজীবন যে দিয়ে এসেছে তার এবার নেবার পালা
এক সময়ের দুর্দান্ত প্রতাপের সন্তান এখন অসহায় বাবা-মা
একটা বয়সের বাবা-মা জীর্ণ হয়
একটা সময় চোখের জ্যোতি কমে যায়
একটা সময় তাদের লাঠির প্রয়োজন হয়
প্রয়োজন পথ্য সেবার
কিন্তু কে দেবে?
তিল তিল করে মানুষ করা সন্তান, আবার কে?
আরে সে তো এখন উড়াল ডানায়
উল্কার বেগে সংসার চাকায়
তার নিজের সংসার,
বুড়ো বাবা-মাকে কজন করে?
দিন দিন মনের সংকোচনে আজকাল কে কার তরে!
একটা বাবার আহাজারি শুনবে?
বাবা’রে তোর সন্তান বড় হচ্ছে, এক ঘরে তোর আর কুলোয় না
আমি বুঝি, তাই তো আমার ঘরটাও তোকে ছেড়ে দিয়েছি
ঐ দু রুমের ফ্ল্যাটটাই তো সম্বল ছিলো সারাজীবনের সঞ্চয়ে
আপাতত ড্রইংরুমে বেশ তো মানিয়ে নিয়েছি তোর মা’কে নিয়ে
তোষক বিছিয়ে
আর তো কিছু সঞ্চয় নেই তোকে দেবার,
শোন না বাবা! তোর মায়ের ঔষধ শেষ হয়ে গেছে সপ্তাহ হলো
আমার চশমার কাঁচ ভেঙে ফেলেছে তোর ছেলে মাসের উপর হলো
মাথার ওপর ফ্যানটা সারারাত বড্ড ঘটঘট আওয়াজ করে
তোর মার ঘুমাতে বড্ড কষ্ট হয়
তোর সাথে এক টেবিলে বসে খাই না কতদিন হয়ে গেছে!
তোর কি বাবা একটুও সময় হয় না!
আচ্ছা, তবুও ভালো থাকিস তোরা
যেভাবে থেকে সুখ পাস
আমাদের অনেক ভাগ্য এখনো রেখেছিস ড্রইং রুমে
ঐ যে আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধুটা! তোর ঐ চাচার কথা মনে আছে?
তার ছেলেটা তোর চাচাকে রেখে এসেছে বৃদ্ধাশ্রমে;
বাবাদের বয়স হলে দেবার মত কিছুই থাকে না
মিনি মাগনায় উপদেশ শোনার সময় তো তোদের আজকাল হয় না
উপদেশ তোদের ভালোও লাগে না;
একটা অনুরোধ করব, রাখবি?
আমি মরে গেলে তোর মা’কে বাকি জীবনটা ড্রইং রুমে থাকতে দিবি?
ও বেচারির যে কেও নেই, আমি ছাড়া।
একটা মায়ের আহাজারি শুনবে?
না থাক, সইতে পারবে না।
০৩ আগস্ট, ২০২০
#কবিতা
আজকের বাস্তবতা
- যাযাবর জীবন
ছবিঃ নেট থেকে সংগৃহীত, এডিট করা।
জীবনের স্তরে স্তরে আনন্দ
স্তরে স্তরে বেদনা
স্তরে স্তরে সমস্যা
সমস্যার মধ্যে দিয়ে যে যায়, শুধু সেই জানে
বাইরে থেকে কেও বোঝে না;
একটা সময় মানুষের জীবন কাটে দুর্দান্ত দাপটে
দেবার মত কত কিছুই না থাকে তখন তার কাছে!
সন্তানের জন্য উপার্জন
তাদের যথাযথ শিক্ষা
পরিবারের ভরন পোষণ
বছরের ছুটি ছাটায় সামর্থ্য অনুযায়ী ভ্রমণের আয়োজন,
সে সময়টা শুধুই দেবার
বাবা-মায়ের জন্য
পরিবারের জন্য
সন্তানের জন্য
ভাই-বোনের জন্য;
তারপর কালের স্রোতে সময় যায়
ধীরে ধীর মানুষ নত হতে থাকে বয়সের কাছে
কর্মক্ষমতা কমতে কমতে কোন একটা সময় শূন্যের কোঠায়
বিলুপ্ত হয় দেবার ক্ষমতা
জরা ব্যাধি ভর করে শরীরে
একটা সময় মানুষকে হারতেই হয় বয়সের কাছে,
সে সময়টা বড্ড করুণ;
সারাজীবন যে দিয়ে এসেছে তার এবার নেবার পালা
এক সময়ের দুর্দান্ত প্রতাপের সন্তান এখন অসহায় বাবা-মা
একটা বয়সের বাবা-মা জীর্ণ হয়
একটা সময় চোখের জ্যোতি কমে যায়
একটা সময় তাদের লাঠির প্রয়োজন হয়
প্রয়োজন পথ্য সেবার
কিন্তু কে দেবে?
তিল তিল করে মানুষ করা সন্তান, আবার কে?
আরে সে তো এখন উড়াল ডানায়
উল্কার বেগে সংসার চাকায়
তার নিজের সংসার,
বুড়ো বাবা-মাকে কজন করে?
দিন দিন মনের সংকোচনে আজকাল কে কার তরে!
একটা বাবার আহাজারি শুনবে?
বাবা’রে তোর সন্তান বড় হচ্ছে, এক ঘরে তোর আর কুলোয় না
আমি বুঝি, তাই তো আমার ঘরটাও তোকে ছেড়ে দিয়েছি
ঐ দু রুমের ফ্ল্যাটটাই তো সম্বল ছিলো সারাজীবনের সঞ্চয়ে
আপাতত ড্রইংরুমে বেশ তো মানিয়ে নিয়েছি তোর মা’কে নিয়ে
তোষক বিছিয়ে
আর তো কিছু সঞ্চয় নেই তোকে দেবার,
শোন না বাবা! তোর মায়ের ঔষধ শেষ হয়ে গেছে সপ্তাহ হলো
আমার চশমার কাঁচ ভেঙে ফেলেছে তোর ছেলে মাসের উপর হলো
মাথার ওপর ফ্যানটা সারারাত বড্ড ঘটঘট আওয়াজ করে
তোর মার ঘুমাতে বড্ড কষ্ট হয়
তোর সাথে এক টেবিলে বসে খাই না কতদিন হয়ে গেছে!
তোর কি বাবা একটুও সময় হয় না!
আচ্ছা, তবুও ভালো থাকিস তোরা
যেভাবে থেকে সুখ পাস
আমাদের অনেক ভাগ্য এখনো রেখেছিস ড্রইং রুমে
ঐ যে আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধুটা! তোর ঐ চাচার কথা মনে আছে?
তার ছেলেটা তোর চাচাকে রেখে এসেছে বৃদ্ধাশ্রমে;
বাবাদের বয়স হলে দেবার মত কিছুই থাকে না
মিনি মাগনায় উপদেশ শোনার সময় তো তোদের আজকাল হয় না
উপদেশ তোদের ভালোও লাগে না;
একটা অনুরোধ করব, রাখবি?
আমি মরে গেলে তোর মা’কে বাকি জীবনটা ড্রইং রুমে থাকতে দিবি?
ও বেচারির যে কেও নেই, আমি ছাড়া।
একটা মায়ের আহাজারি শুনবে?
না থাক, সইতে পারবে না।
০৩ আগস্ট, ২০২০
#কবিতা
আজকের বাস্তবতা
- যাযাবর জীবন
ছবিঃ নেট থেকে সংগৃহীত, এডিট করা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন